Blog

  • আশুলিয়ায় দুই ছিন-তাইকারীকে গ্রেফ-তার ও দেশীয় অ-স্ত্র উদ্ধার!

    আশুলিয়ায় দুই ছিন-তাইকারীকে গ্রেফ-তার ও দেশীয় অ-স্ত্র উদ্ধার!

    হেলাল শেখঃ ঢাকার আশুলিয়ায় রিকশা থামিয়ে ধারালো অস্ত্রে মুখে জিম্মি করে এক নারী যাত্রীর কাছ থেকে মোবাইল ও টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগে মিন্টু প্রামানিক (৪৫) ও ইউসুফ আলী (৪২) নামে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। এসময় তাদের হেফাজত থেকে লুন্ঠিত মোবাইল উদ্ধারসহ ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত ধারালো চাকু ও লাঠি জব্দ করা হয়।

    শুক্রবার (২০ জুন ২০২৫ইং) বিকালে আশুলিয়া থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহীনুর কবির।

    এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গাজীপুর জেলায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে আশুলিয়া থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম।

    পুলিশ জানায়, চলতি মাসের ১৬ জুন সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে আশুলিয়ার বাইশমাইল এলাকার ঘোড়াপীর মাজার সড়কে রিকশা থামিয়ে ছন্দা আক্তার নামের এক নারী যাত্রীকে ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অজ্ঞাত চার দুর্বৃত্ত। এসময় ওই নারীর কাছ থেকে নগদ ১৫০০ টাকাসহ একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ও একটি বাটন মোবাইল লুট করে নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। পরে এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় মামলা রুজু হলে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করে ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত দুই জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হোন।

    গ্রেফতারকৃত মিন্টু প্রামানিকের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ডাকাতি ও দস্যুতার ৮টি এবং ইউসুফ আলীর বিরুদ্ধে ৩টি মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানায়। তাদের বাড়ি নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলায়।

    ঢাকা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহীনুর কবির জানান, ধারালো অস্ত্রে মুখে জিম্মি করে এক নারীর কাছ থেকে মোবাইল ও টাকা ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত ৪ জনের মধ্যে দুই জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া বাকি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

    এর আগে আশুলিয়ার জামগড়া মোল্লা বাড়ি রোডে সোহেল এর বিকাশের দোকানে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটেছে, তার প্রায় লক্ষাধিক টাকা চুরি হয়েছে বলে তিনি জানান। এরপর গত বৃহস্পতিবার দিনে দুপুরে তালা খুলে একই ভাবে জামগড়া হেয়ন গার্মেন্টস রোডে হাসান ভুঁইয়ার মুদিখানা দোকানে তালা খুলে প্রায় লক্ষাধিক টাকা চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

  • জীবননগর থানার বিশেষ অভি-যানে সা-জাপ্রাপ্তসহ ৫ আ-সামি গ্রেফ-তার

    জীবননগর থানার বিশেষ অভি-যানে সা-জাপ্রাপ্তসহ ৫ আ-সামি গ্রেফ-তার

    আল আমিন মোল্লা
    চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি।

    চুয়াডাঙ্গার জীবননগর থানার পুলিশ কর্তৃক পরিচালিত বিশেষ অভিযানে সাজা প্রাপ্ত ১ জনসহ মোট ৫ জন পরোয়ানাভুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

    চুয়াডাঙ্গা জেলার সম্মানিত পুলিশ সুপার জনাব খন্দকার গোলাম মওলা, বিপিএম-সেবা মহোদয়ের সার্বিক দিকনির্দেশনায় এবং জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জনাব মামুন হোসেন বিশ্বাসের নেতৃত্বে এই বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে অংশগ্রহণ করেন এএসআই (নিঃ) মোঃ জসিম উদ্দিন, এএসআই (নিঃ) এসএম রাসেল, এএসআই (নিঃ) মোঃ হেমায়েত উদ্দিন হিমু, এএসআই (নিঃ) মোঃ হুমায়ুন কবীর এবং এএসআই (নিঃ) মোঃ রেজা হাসমত সহ সঙ্গীয় ফোর্স।

    অভিযানকালে যেসব আসামিদের গ্রেফতার করা হয়: ১। সাজাপ্রাপ্ত আসামি মোঃ ইন্তাজুল হক (সিআর-২১৬/২২, এসসি-১৫১৫/২২), পিতা-মোঃ আঃ ছাত্তার, সাং-পাকা।
    ২। মোঃ ইব্রাহিম খলিল (৪৫), কোট সিআর-৪৪১/২৪ এর পরোয়ানাভুক্ত, পিতা-মশিয়ার রহমান, সাং-তরফদার মেডিসিন হাউজ।
    ৩। মোঃ উসমান আলী, মহেশ সিআর-২৪/২৫ এর পরোয়ানাভুক্ত, পিতা-মোঃ মতিয়ার রহমান, সাং-মনোহরপুর।
    ৪। মোঃ ইমামুল মল্লিক (৪৫), জিআর-২৭/২৫ এর পরোয়ানাভুক্ত, পিতা-মোঃ মুংলা মল্লিক, সাং-মুক্তারপুর।
    ৫। মোছাঃ রুবিয়া খাতুন, সিআর-৬২০/২৩ এর পরোয়ানাভুক্ত, স্বামী-মোঃ কামাল হোসেন, সাং-সদরপাড়া (দক্ষিণপাড়া)।

    উল্লেখ্য, সকল আসামিকেই যথাযথ পুলিশ স্কটের মাধ্যমে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

    জীবননগর থানা পুলিশের এই বিশেষ অভিযানকে এলাকার জনগণ সাধুবাদ জানিয়েছেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের এমন উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

  • ভারত পু-শইন করে দেশকে অস্থি-তিশীল করতে চায় পঞ্চগড়ে-রাশেদ প্রধান

    ভারত পু-শইন করে দেশকে অস্থি-তিশীল করতে চায় পঞ্চগড়ে-রাশেদ প্রধান

    মোঃ বাবুল হোসেন. পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি: জাতীয় গনতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার সহ সভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান বলেছেন, দিল্লীর সেবাদাস ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার গদি হারিয়ে এবং বাংলাদেশকে ভারতের করদ রাজ্য বানাতে না পেরে হিন্দুস্থান পুশইনের আশ্রয় নিয়েছে বলে আমরা মনে করি। বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য পুশইনের মাধ্যমে ভারতীয় বিএসএফ বাংলাদেশী এবং রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি ভারতীয় সন্ত্রাসীদের প্রবেশ করাচ্ছে বলে আমরা মনে করছি।

    তিনি শুক্ররবার (২০জুন) সকালে পঞ্চগড় জেলা জাগপা আয়োজিত ঈদ পরবর্তী মত বিনিময় অনুষ্ঠানে বক্তব্যে এসব কথা বলেন।জেলা জাগপার সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা আনছার আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা জাগপার সাধারন সম্পাদক শাহরিয়ার বিপ্লব, সিনিয়র সহসভাপতি মফিদার রহমান , সহসভাপতি সামুসজ্জামান নয়ন সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল হোসেন পাটোয়ারী জেলা জাগপার আহবায়ক কামরুজ্জামান কুয়েত ,জেলা জাগপা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাদত হোসেন প্রমূখ।

    রাশেদ প্রধান বলেন, বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল আওয়ামীলীগ ও ভারত কর্তৃক পূর্ব নির্ধারিত ছিল। গনহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার বিচার করতে হবে। দল হিসেবে সন্ত্রাসী অপরাজনৈতিক অশুভ শক্তি আওয়ামীলীগের বিচার করতে হবে। ভারতীয় আগ্রাসন এবং আধিপত্যবাদকে রুখে দিতে হবে।দেশের জনগন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে পছন্দের জনপ্রতিধি বেছে নিতে মুখিয়ে আছে সে কারণে উৎসবমূখর নির্বাচন ও লেভেল প্লেইং ফিল্ড নির্বাচন প্রয়োজন।তাই আমরা আশা করি আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে অবাধ ,সুষ্ঠু , গ্রহনযোগ্য এবং ভারতের প্রভাবমুক্ত।তিনি বলেন জুলাই বিপ্লবে যারা প্রাণ হারিয়েছে সেই শহীদদের শ্রদ্ধা ভরে স্বরণ করছি। যাদের আতœত্যাগের বিনিময়ে আমরা দিল্রীর সেবাদাস ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা এবং আওয়ামীলীগের অপরাজনীতি থেকে মুক্ত হয়েছি। গনতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে জাতীয় নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই। বিলম্ব হলেও অন্তবর্তী সরকার প্রথমে এপ্রিল এবং পরবর্তীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে বৈঠকের পর রমজানের আগে অর্থাৎ ফেব্রয়ারী মাস জাতীয় নির্বাচনের জন্য নির্ধারণ করেছে। যদিও ফেব্রয়ারী মাসের কথা শর্ত সাপেক্ষে বলা হয়েছে। তবুও বিএনপি এবং অন্তবর্তী সরকারের মাঝে সংঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছিল সেখান থেকে বের হয়ে আসতে পেরেছি। তবে বাংলাদেশের নিবার্চনের প্রস্তাবিত তারিখ দেশের বাইরে থেকে ঘোষনা করা এবং সরকার ও একটি দলের যৌথ বিবৃতি আমাদেরকে অবাক করেছে। যা নজিরবিহীন একটি ঘটনা। আমরা মনে করি এই ধরনের রাজনৈতিক, কূটনৈতিক প্রশাসনিক সংষ্কৃতি সরকারকে বির্তকিত করেছে।রাশেদ প্রধান আরো বলেন আমরা বিশ্বাস করি আমাদের সমাজে ৪ টি পেশার মানুষের নিরপেক্ষ হওয়া খুবই প্রয়োজন। তারা হলেন চিকিৎসক, সাংবাদিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং বিচারক। মানব দেহের রোগের জন্য যেমন ভালো চিকিৎসক প্রয়োজন, সমাজের রোগ নির্ধারণ এবং নিরপেক্ষভাবে তুলে ধরার জন্য তেমনি ভালো সাংবাদিক প্রয়োজন, আর অন্যায় প্রতিরোধ ও বিচারের জন্য প্রয়োজন ভালো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আর বিচারক। সমাজ আপনাদের কাছে ফ্যাসিস্ট হাসিনামুক্ত বাংলাদেশে নিরপেক্ষ এবং প্রকৃত সংবাদ আশা করে। আমি বিশ্বাস করি নতুন বাংলাদেশে আপনারা সেই ভূমিকা পালনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।তিনি বলেন, জাগপা আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সাংঠনিক জেলাগুলোতে প্রচারণা কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে আমরা স্পষ্ট ভাষায় উচ্চারণ করতে চাই, নির্বাচনের পূর্বে প্রয়োজনীয়, গুরুত্বপূর্ণ, মৌলিক সংস্কার হতে হবে।

  • সেনাবাহিনীর সহায়তায় কেএনএফ-এর অ-ত্যাচারে পা-লিয়ে যাওয়া বম পরিবার  ফিরল নিজ গ্রামে

    সেনাবাহিনীর সহায়তায় কেএনএফ-এর অ-ত্যাচারে পা-লিয়ে যাওয়া বম পরিবার ফিরল নিজ গ্রামে

    বান্দরবান( থানচি) প্রতিনিধি মথি ত্রিপুরা।

    বান্দরবানে ৬৯ পদাতিক ব্রিগেড এর অধীনস্থ ১৬ ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সহায়তায় দীর্ঘ ১ বছর পর রুমা ও থানচি উপজেলা সীমান্তে রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নের থান্দুইপারা (বম পাড়া) ১টি পরিবারের ৭ জন সদস্যসহ নিজ বাড়িতে ফিরেছেন।

    আজ (শুক্রবার ) ২০ জুন ২০২৫, দুপুরে রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নের থান্দুইপারা (বমপাড়া) প্রবেশ করেন তারা। এ সময় পাড়াবাসীকে সেনাবাহিনীর বাকলাই পাড়া সেনা ক্যাম্পের সেনাসদস্যগন কর্তৃক প্রস্তুতকৃত সুস্বাদু খাবার পরিবেশন করা হয়। এছাড়াও আগত পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা , চিকিৎসা সহায়তা ছাড়াও তাদের মাঝে শুকনা রসদ( পরিবারকে চাল ১০ কেজি, আটা ৩ কেজি, চিনি ২.৫ কেজি, তেল ২ কেজি, ডাল ২ কেজি, লবণ ১ কেজি চা-পাতা ১ কেজি ও মসলা সামগ্রী) প্রদান করা হয়।

    আরও জানান,থান্দুইপারা পাড়ার কারবারি “২০২৩ সালে মাঝামাঝি হতে পাড়ায় সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সদস্যদের অত্যাচার এবং নিপিড়নে ক্রমানয়ে পাড়ায় হতে অনেক পরিবার জীবন রক্ষার্থে পলায়ন করে। পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ১৯ মার্চ ২০২৫ তারিখে পুনরায় ৫ টি পরিবারের মোট ২৩ জন সদস্য আমরা পাড়া পুনর্গঠন শুরু করি। এরই মাধ্যমে একটি একটি করে পরিবার পাড়ায় ফিরে আসছে। সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় পুনরায় পাড়াটিকে আগের মত সুন্দর করতে পারব বলে আশ্বাস দেন ।

    নিজ বসতবাড়িতে ফিরে লাল বিয়াক সাং বম (৪০ বছর) বলেন, দীর্ঘ ১ বছর ধরে তাঁরা পাড়ায় আসতে পারেন নি। সেনাবাহিনীর কারণে নিজ থান্দুইপাড়ায় পরিবারসহ ফিরতে পেরে খুব আনন্দবোধ করছেন।

    অধিনায়ক, ১৬ ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট জানান, বম জনগোষ্ঠীর প্রত্যাবর্তন, পুনর্বাসন ব্যবস্থা ব্যবস্থা, আর্থিক সহযোগিতা ,চিকিৎসা সহযোগিতা এবং প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ ইত্যাদি ব্যাপারে বাংলাদেশ

    সেনাবাহিনী সর্বদা সচেষ্ট ছিল, আছে এবং থাকবে। এছাড়াও নিরাপত্তা সংক্রান্ত সকল বিষয়ে গুরুত্তারোপ করা হয়েছে বলে তিনি ব্যক্ত করেন।

  • গোদাগাড়ীতে তিনদিনব্যাপী ক্লাইমেট স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি মেলা শুরু-চলবে ২১ জুন পর্যন্ত

    গোদাগাড়ীতে তিনদিনব্যাপী ক্লাইমেট স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি মেলা শুরু-চলবে ২১ জুন পর্যন্ত

    রাজশাহী থেকে মোঃ হায়দার আলীঃ রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে শুরু হয়েছে তিনদিনব্যাপী ক্লাইমেট স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি মেলা-২০২৫। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের “ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার এন্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প (ডিএই অংশ)”-এরআওতায় গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এ মেলার আয়োজন করা হয়।

    রাজশাহী ভ্রমণ গাইড বৃহস্পতিবার (১৯ জুন ২০২৫) সকালে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাজশাহী অঞ্চলের উপপরিচালক মোছা: উম্মে ছালমা।

    গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফয়সাল আহমেদের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাজশাহী অঞ্চলের উপপরিচালক মোছা: উম্মে ছালমা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা কৃষি অফিসার মরিয়ম আহমেদ।

    প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোছা: উম্মে ছালমা
    বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় কৃষি খাতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার সময়ের দাবি। ক্লাইমেট স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তির মাধ্যমে যেমন কৃষকের উৎপাদনশীলতা বাড়বে, তেমনি টেকসই কৃষি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।” তিনি আরও বলেন, মেলায় ক্লাইমেট স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি, পানি সাশ্রয়ী সেচ ব্যবস্থা, জৈব সার উৎপাদন ও ব্যবহারের কলা-কৌশল, উন্নত মানের বীজ, বছরব্যাপী চাষযোগ্য প্রযুক্তি, এবং টেকসই কৃষির উদ্ভাবনী ধারণা নিয়ে সবাই কাজ করছেন।

    মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার মরিয়ম আহমেদ। তিনি বলেন, “এই মেলার মাধ্যমে কৃষকরা জলবায়ু সহনশীল কৃষি প্রযুক্তি ও আধুনিক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে পরিচিত হবেন, যা তাদের ফসল উৎপাদনে দক্ষতা ও সচেতনতা বাড়াবে।”রাজশাহী ভ্রমণ গাইড

    তিনি বলেন, “সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে প্রশাসন, কৃষি বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট সকলের মধ্যে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। এই মেলা সেই লক্ষ্যে একটি কার্যকর উদ্যোগ।”বিভিন্ন প্রদর্শনী স্টল স্থাপন করা হয়। এতে কৃষক, কৃষি উদ্যোক্তা, শিক্ষার্থী ও সুধীজনসহ সর্বস্তরের মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। মেলার উদ্বোধন শেষে অতিথিরা স্টলসমূহ ঘুরে দেখেন এবং অংশগ্রহণকারী কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

    অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন গোদাগাড়ী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অহেদুজ্জামান, উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মুনসুর রহমান, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, কৃষি উদ্যোক্তা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
    এই মেলা গোদাগাড়ীর কৃষি ব্যবস্থাকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় প্রস্তুত করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মত দেন সংশ্লিষ্টরা।

    মোঃ হায়দার আলী
    নিজস্ব প্রতিবেদক,
    রাজশাহী।

  • ময়মনসিংহে মা-দক সন্ত্রা-স ও অপ-রাধ নির্মূলে বিরা-মহীন ছুটে চলেছেন অতিঃ পুলিশ সুপার মামুন

    ময়মনসিংহে মা-দক সন্ত্রা-স ও অপ-রাধ নির্মূলে বিরা-মহীন ছুটে চলেছেন অতিঃ পুলিশ সুপার মামুন

    আরিফ রববানী ময়মনসিংহ।।
    বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে মাদক,ছিনতাই, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাস। বাংলাদেশের পুলিশ প্রশাসন চাঁদাবাজ,সন্ত্রাস ও মাদকের বিস্তার রোধকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায়, ময়মনসিংহ জেলা পুলিশে কর্মরত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) আবদুললাহ আল মামুন ময়মনসিংহ নগরীর শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা, মাদক-সন্ত্রাস ও বিভিন্ন অপরাধ নির্মূলে কঠোর ভূমিকায় নিরলস কাজ করছেন।

    তিনি ময়মনসিংহে যোগদানের পর থেকেই মাদক, সন্ত্রাস,চাঁদাবাজ চুরি, ছিনতাই, ইভটিজিং ও কিশোর গ্যাং সহ সবধরণের সামাজিক অপরাধ নির্মূলে জনগণকে সচেতন করতে বিরামহীন ভাবে ছুটে চলেছেন। চুরি ও ছিনতাই হওয়া উদ্ধার সহ এ চক্রের হোতা অসংখ্য আসামী গ্রেফতার, আন্তঃ জেলা গরু চোর চক্রের সদস্য গ্রেফতারসহ বিভিন্ন মালামাল উদ্ধারে তার পরিচালিত অভিযান এখন টক অফ দ্যা ময়মনসিংহে পরিণত হয়েছে। ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র ও পিকআপ সহ আন্তঃ জেলা ডাকাত সদস্য গ্রেফতার, ক্লুলেস হত্যার রহস্য উদঘাটন সহ মুল আসামী গ্রেফতারসহ বিভিন্ন অপরাধ দমনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখায় বিভিন্ন শ্রেণী পেশা মানুষের কাছে প্রশংসনীয় হয়ে উঠেছেন।

    অসাম্প্রদায়িকতার চেতনা ধারণ করে তিনি এই ময়মনসিংহে আওতায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের মসজিদ, মন্দির, হাটবাজার, জনসমাগম এলাকাসহ তিনি প্রতিনিয়ত জনগণের সাথে সরাসরি সভা, সেমিনার ও উঠান বৈঠক করেছেন। সমাজের নানারকম সমস্যা সমাধানের জন্য জনগণের দোরগড়ায় পৌঁছে যাওয়ার বিষয়টি হৃদয় দিয়ে বরণ করেছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষগুলো। জনগণকে তিনি বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে, সমাজে যারা খারাপ কাজের সাথে জড়িত তাদের সংখ্যা খুবই কম। সমাজে ভালো মানুষের বসবাস এখনো অনেক বেশি। তাই সবাইকে সমাজের তথা দেশের কল্যানে কাজ করতে হবে। এই কমসংখ্যক খারাপ মানুষ সমাজটাকে অস্থিতিশীল করে তোলে। কারন একটাই! আমরা সমাজের মানুষগুলো প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারছিনা। আমরা প্রতিবাদ না করায় দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছি। স্থানীয় জনগণ যদি পুলিশকে সহযোগিতা করে তাহলে সমাজ থেকে এসব অপরাধীদের নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া সম্ভব হবে বলে জনগনকে আশ্বস্থ করেন।

    ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম এর সার্বিক দিক-নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন তার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ময়মনসিংহ শহরের অলিগলিতে কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ কখনো সমন্নয় করে অভিযান করে চলছেন,আবার কখনো পৃথক পৃথক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে । তার নেতৃত্বে চোর, ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ী ধরতে পুলিশ হয়েছে ব্যাপক তৎপর। সারা শহর চষে বেড়াচ্ছে তিনি। ইতি মধ্যে বেশ কয়েকজন ছিনতাইকারী গ্রেফতারও করেছেন। নগরীর অলাকা নদী বাংলা মোবাইলের দোকানে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনায় আনুমানিক কোটি টাকার মোবাইল নিয়ে যাওয়ার খবর শুনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম মোঃ আব্দুললাহ আল মামুন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে দোকানে যান এবং তদন্ত শুরু করেন এবং তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে অচিরেই চোরকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করার অঙ্গীকার করায় তার প্রতি ব্যাপক খুশী হয়েছেন দোকান মালিক রিদয়। তার জনকল্যাণমুখী কর্মকান্ডে জনগণের কাছে আস্থা তৈরী করতে সক্ষম হয়েছেন। পুলিশি সেবা কে জনকল্যাণে জনগণের দোরগোড়ায় পৌছে দেওয়ার মাধ্যমে পুলিশ
    জনগণের বন্ধু প্রমাণ করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) আবদুললাহ আল মামুন।

    অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) আবদুললাহ আল মামুন জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের যেকোন সমস্যা সরাসরি পুলিশকে জানান, তাহলে পুলিশ আপনাদের সহযোগিতা করতে পারবে। তিনি মা-বোনদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা যারা রাস্তায় বিভিন্ন কাজে চলাফেরা করেন তারা অবশ্যই থানার নম্বর ও স্থানীয় বিট পুলিশিংয়ের নম্বর সঙ্গে রাখবেন। বখাটে ছেলেরা আপনাদের উত্যক্ত করলে চুপ থাকবেন না বরং প্রতিবাদ করবেন। পুলিশ আপনাদের সহোযোগীতায় পাশে আছে। তিনি বলেছেন, ইভটিজিংয়ের শিকার হলে স্থানীয় বিট পুলিশিংয়ের সহযোগিতা নিতে অথবা সরাসরি তার নম্বরে যোগাযোগ করতে।

    এছাড়াও যেসব মানুষ বিপদে পড়বেন বা সমস্যার সম্মুখীন হবেন সরাসরি নিকটস্ত থানায় চলে আসবেন। থানার ওসির কক্ষের দরজা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। কাউকে কোন তদবির করতে হবেনা, কোন মানুষ সঙ্গে আনতে হবেনা। এক কথায় আপনারা যে কোন রকম সমস্যায় পড়লে পুলিশের শরনাপন্ন হবেন পুলিশ আপনার সমস্যাটা নিজের মনে করে আপনাদের সেবা দেবে। সেই সাথে যুবকদের দৃষ্টি আকর্ষন করে বলেন, আপনারা সকলে বাবা মায়ের সেবা করবেন। বাবা মা কোন সন্তানের বিরুদ্ধে কোন ধরনের অভিযোগ পুলিশের কাছে আনলে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে চুল পরিমান ছাড় দেওয়া হবেনা। তিনি এই এলাকার মানুষকে পুলিশকে সহযোগিতা করার আহবান জানান।

    এলাকার একাধিক জনসাধারণের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তিনি এখানে যোগদানের পূর্বে এলাকায় মাদক চোরাকারবারি সহ বিভিন্ন অপরাধ মূলক কাজ তুঙ্গে উঠেছিল। তিনি এসে পর্যায়ক্রমে মাদক কারবারি ও সেবনকারী সহ সকল অপরাধ মূলক কাজকে প্রায় ৯০ ভাগ কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন। এজন্য তিনি ইতিমধ্যে এলাকার আপামর জনতার কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন।

    এখানকার মানুষের জান-মালের নিরাপত্তার সার্থে রাতে জেলার বিভিন্ন থানায় দায়িত্বরত পুলিশ অফিসার ও ফোর্সদের সর্বদা সজাগ রাখা ও সার্বিক তদারকির পাশাপাশি তিনি নিদ্রা পরিত্যাগ করে সারারাত জেগে টহল দেওয়ার আহবান জানান। তিনি নিজেও রাত জেগে বিভিন্ন এলসকায় টহল দেন। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও পাড়া-মহল্লার ভিতরে পায়ে হেঁটে টর্চলাইট নিয়ে পর্যবেক্ষণ করে পাহারাদারের ভূমিকাও পালন করে আসছেন তিনি। পুলিশি সেবায় বিচক্ষণ, দূরদর্শী এবং বন্ধুসূলভ ব্যবহারে পুলিশ কর্মকর্তা থেকে জনসাধারনের বন্ধুতে পরিণত হয়েছেন তিনি।তার নিরলস প্রচেষ্টা ও ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে জনগণকে পুলিশি সেবা দিতে স্বাচ্ছন্দে কাজ করে যাচ্ছেন অধীনস্থ থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্যরা।

    আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ দমনে দ্রুত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ রাখতে সর্বদা অধীনস্থ পুলিশ সদস্যদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন।

    কাঙ্ক্ষিত সেবা পাওয়ায় পুলিশের প্রতি আমার দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন হয়েছে বলে নগরীর কয়েকজন বাসিন্দা জানান- নির্দ্বিধায় পুলিশ সুপার অফিসে গিয়ে আমরা সমস্যার কথা বলে সুষ্ঠু সমাধান পেয়েছি। একজন জানান- আমি গরিব মানুষ, তারপরও এএসপি স্যারের আচরণে আমি মুগ্ধ হয়েছি। বর্তমানে এই জেলার এসপি-এএসপি এবং সকল পুলিশ সদস্য খুবই ভালো এবং আন্তরিক। আমি তাদের জন্য দোয়া করি।

    একজন রাজনৈতিক নেতা বলেন, বর্তমান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) খুবই ইন্টেলিজেন্ট মানুষ। ওনি এখানে যোগদানের পরে চুরি-ডাকাতি সহ যাবতীয় অপরাধ কমে গেছে এবং ইতিমধ্যে তিনি ক্লুলেস মার্ডারের তথ্য উদঘাটন, চুরি হওয়া মালামাল উদ্ধার, আসামি গ্রেপ্তারসহ আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখায় সর্বমহলে আস্থাশীল ও প্রশংসনীয় হয়েছেন। যেহেতু আমরা রাজনীতি করি, সে সুবাদে আমাদের কাছে অনেক তথ্য আসে। বর্তমান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) আবদুললাহ আল মামুন সাহেবের কাছে সেবা প্রত্যাশী কোন জনগণ অর্থনৈতিক বা কোন প্রকার হয়রানির শিকার হয়নি। তিনি যথেষ্ট আন্তরিক। জনসাধারণের সার্বিক সমস্যা আন্তরিকতার সহিত সমাধানের চেষ্টা করেন এবং এখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালোই আছে। তার কর্মদক্ষতায় আমাদের নগরীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই ভালো রেখেছেন । তার কাছে ধনী-গরীবের কোন ভেদাভেদ নেই। অপরাধ ও দুর্নীতি প্রতিরোধে তিনি সর্বদাই তৎপর। এখানে সাধারণ মানুষ রাত-বেড়াত নির্বিঘ্নে ও নিরাপদে চলাচল করতে পারে।

    অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) আবদুললাহ আল মামুন এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি এ জেলায় যোগদানের পর থেকেই জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম স্যার এর নেতৃত্বে ও সার্বিক দিক-নির্দেশনায় মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, কিশোর গ্যাং, নারী ও শিশু নির্যাতন দমনে নিষ্ঠার সাথে কাজ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। গত পবিত্র ইদুল আযহা ও ইদুল ফিতরেও ব্যবসায়ী ও জনসাধারণের হয়রানি প্রতিরোধ এবং যানজট নিরসনের লক্ষ্যেও কাজ করছি।

    তিনি আরও বলেন, মাননীয় পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম স্যার একজন জনবান্ধন ও মানবিক পুলিশ অফিসার। তার নেতৃত্বে এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানে পুলিশি সেবার পাশাপাশি বিভিন্ন মানবিক কাজও করা হয়। তার ব্যক্তিগত অর্থায়নে অসহায়, দুস্থ ও গরিব-দুঃখীদের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণসহ বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক কাজ করা হয়। তাকে অনুসরণ করে এসকল ভালো কাজ করার অনুপ্রেরণা মাননীয় পুলিশ সুপার মহোদয়ের নিকট থেকেই আমি পেয়েছি।

    শেরপুর জেলার কৃতি সন্তান ৩০ তম বিসিএস ব্যাচে উত্তীর্ণ পুলিশের এই জনবান্ধব কর্মকর্তা গত ২০১৩ সালে কিশোরগঞ্জ জেলায় প্রথম শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন।পরে সেখান থেকে পুলিশের এসবি শাখায় কাজ করে সুনাম অর্জন করায় তাকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন, (পিবিআই) এর দায়িত্ব দেওয়া হয়। ময়মনসিংহ জেলায় যোগদানের পুর্বে তিনি টাঙ্গাইল জেলাতে কর্মরত ছিলেন। চলতি বছরের ১৩ ই এপ্রিলে ময়মনসিং জেলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন। তিনি আগামী দিনে পুলিশ কে জনবান্ধব হিসাবে গড়ে তুলতে সকলের দোয়া ও সহযোগীতা প্রত্যাশা করেন।

  • বরেন্দ্র অঞ্চলে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার আমের বানিজ্য হবে

    বরেন্দ্র অঞ্চলে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার আমের বানিজ্য হবে

    রাজশাহী থেকে মোঃ হায়দার আলীঃ আমের বৈজ্ঞানিক নাম ম্যাঙ্গিফেরা ইন্ডিকা, সংস্কৃতে আম্র, বাংলায় আম, ইংরেজিতে ম্যাংগো, মালয় ও জাভা ভাষায় ম্যাঙ্গা, তামিল ভাষায় ম্যাংকে এবং চীনা ভাষায় ম্যাংকাও। আম অর্থ সাধারণ। সাধারণের ফল আম। রসাল বা মধু ফলও বলা হয় আমকে। রামায়ণ ও মহাভারতে আম্রকানন এবং আম্রকুঞ্জ শব্দের দেখা মেলে।
    ধারণা করা হয়।

    আম প্রায় সাড়ে ৬০০ বছরের পুরনো। আমের জন্মস্থান নিয়ে রয়েছে নানা তর্ক-বিতর্ক। বৈজ্ঞানিক ‘ম্যাঙ্গিফেরা ইন্ডিকা’ নামের এ ফল ভারতীয় অঞ্চলের কোথায় প্রথম দেখা গেছে, তা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও আমাদের এ জনপদেই যে আমের আদিবাস এ সম্পর্কে আম বিজ্ঞানীরা একমত। ইতিহাস থেকে জানা যায়, খ্রিস্টপূর্ব ৩২৭-এ আলেকজান্ডার সিন্ধু উপত্যকায় আম দেখে ও খেয়ে মুগ্ধ হয়েছিলেন। এ সময়ই আম ছড়িয়ে পড়ে মালয় উপদ্বীপ, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জ ও মাদাগাস্কারে।

    চীন পর্যটক হিউয়েন সাং ৬৩২ থেকে ৬৪৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এ অঞ্চলে ভ্রমণে এসে বাংলাদেশের আমকে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিত করেন। ১৩৩১ খ্রিস্টাব্দ থেকে আফ্রিকায় আম চাষ শুরু হয়। এরপর ১৬ শতাব্দীতে পারস্য উপসাগরে, ১৬৯০ সালে ইংল্যান্ডের কাচের ঘরে, ১৭ শতাব্দীতে ইয়েমেনে, উনবিংশ শতাব্দীতে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে, ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে ইতালিতে আম চাষের খবর জানা যায়। ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের মাটিতে প্রথম আমের আঁটি থেকে গাছ হয়। এভাবেই আম ফলটি বিশ্ববাসীর দোরগোড়ায় পৌঁছে যায়।

    জানা যায়, মোগল সম্রাট আকবর ভারতের শাহবাগের দাঁড়ভাঙায় এক লাখ আমের চারা রোপণ করে উপমহাদেশে প্রথম একটি উন্নত জাতের আম বাগান সৃষ্টি করেন। আমের আছে বাহারি নাম বর্ণ, গন্ধ ও স্বাদ। ফজলি, আশ্বিনা, ল্যাংড়া, ক্ষীরশাপাতি, গোপালভোগ, মোহনভোগ, জিলাপিভোগ, লক্ষণভোগ, মিছরিভোগ, বোম্বাই ক্ষীরভোগ, বৃন্দাবনী, চন্দনী, হাজিডাঙ্গ, সিঁদুরা, গিরিয়াধারী, বউভুলানী, জামাইপছন্দ, বাদশভোগ, রানীভোগ, দুধসর, মিছরিকান্ত, বাতাসা, মধুচুসকি, রাজভোগ, মেহেরসাগর, কালীভোগ, সুন্দরী, গোলাপবাস, পানবোঁটা, দেলসাদ, কালপাহাড়সহ চাঁপাইনবাবগঞ্জে পাওয়া যায় প্রায় ৩০০ জাতের আম। তবে অনেকগুলো এখন বিলুপ্তপ্রায়।

    বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রধান বৈশিষ্ট হলো লাল মাটি। এই লাল মাটি নিয়ে এক যুগ আগেও বিপাকে ছিলেন কৃষকরা। উঁচু-নিচু টিলার মতো ভূমিতে এক যুগ আগেও শুধুমাত্র ধান ছাড়া তেমন কোনো ফসল বা ফলচাষ ভালো হয় না বলে ধারণা ছিল কৃষকদের। বোরো ধানচাষ করতে গিয়ে প্রচুর পানির ব্যবহারের ফলে ক্রমেই পানির স্তর নামতে নামতে এখনো সুষ্ক মৌসুমে মরুভূমির মতো খাঁ খাঁ হয়ে উঠে বরেন্দ্র অঞ্চল। তবে সেই ধারণা পাল্টে দিয়ে বরেন্দ্রভূমিতে ফলছে সুস্বাদু আম। আর আমচাষীদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে।

    সহায়ক প্রকৃতি ও অনুকূল আবহাওয়ায় চলতি মৌসুমে রাজশাহী অঞ্চলে আমের ভালো ফলন হয়েছে। মৌসুমের শুরু থেকে পরিপক্ব হওয়া পর্যন্ত স্বল্প বিরতিতে প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত হওয়ায় এ বছর আমের আকার বড় ও পুষ্ট হয়েছে। আমের গুণগত মানও বেশ ভালো। এ বছর রাজশাহী অঞ্চলের বাগানগুলোতে গাছে গাছে আম ঝুলতে দেখে চাষিরা আশায় বুক বেঁধেছিলেন। আম বিক্রি করে ভালো পয়সা পাবেন। প্রচন্ডগরম, ঈদুলআজহার ছুটিতে কোরিয়ার সার্ভিস বন্ধ থাকা, অফিস ছুটিসহ বিভিন্ন কারণে এবার ১৫/২০ দিন আমের কাঙ্ক্ষিত দাম পায় নি আম চাষিরা। গরমের কারনে আম একসাথে পেঁকে সামান্য বৃষ্টি, বাতাসে বেশীর ভাগ আম পড়ে গেছে। কুরবানির সময় মাংশ খেয়ে আমের প্রতি মানুষেন চাহিদা কম থাকায় আমচাষিরা আমের নায্য মূল্য পায় নি।
    চাষি, বাগান ও মোকাম পর্যায়ে গত বছরের তুলনায় এবার সব ধরনের আমের দাম প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। এতে চাষিদের পাশাপাশি মৌসুমি বাগান ব্যবসায়ীরাও বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন। তবে বর্তমানে সবধরণের আমের দাম চড়া।

    আমের রাজধানী বলতে চাঁপাই নবাবগঞ্জ বলা হয় আর আমের বড় বাজার বলতে কানসাট বাজার বলা হয়। এখানে আমের মৌসুমে কয়েক হাজার কোটি টাকার আমের বানিজ্য হয়ে থাকে। রাজশাহী চাঁপাইনবাগঞ্জ অঞ্চলে এখন হাজার হাজার বেকার মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করেছে এই আমগাবান। আর চলতি আমের মৌসুমে আমকেন্দ্রিক লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। রাজশাহীর গোদাগাড়ী, তানোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের, শিবগঞ্জ, নাচোল, গোমস্তাপুর, নওগাঁ জেলার সাপাহার, নিয়ামতপুর, মহাদেবপুর, পোরশা উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় গড়ে উঠেছে শত শত একর জমিতে আমবাগান। ছোট-বড় আমবাগানে কপাল খুলেছে হাজার মানুষের। একেবারে শূন্য থেকেও কেউ হয়েছেন কোটিপতি হয়েছেন অনেকে আমের বাগান, আমের ব্যবসা করে।
    শুধু আমচাষী নয় এর সাথে যুক্ত রয়েছেন, আম ব্যবসায়ী, দিনমজুর, চুক্তিভিত্তিক মজুর, কীটনাশক ব্যবসায়ী, পরিবহণ শ্রমিক, কুরিয়ার ব্যবসায়ী, ভ্যাচালক, অটোচালক, ট্রাক শ্রমিক-মালিক, কুলি, হাটের ইজারাদার, আমের আড়ৎদার, আমের দোকানের কর্মচারীসহ আরও বিভিন্ন ধাপের মানুষ। এই সময়ে আমকেন্দ্রীক এসব মানুষের মধ্যে অনেকের ভাগ্যের চাকাও বদলে যায়। বিশেষ করে আম চাষি ও ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা প্রতি বছর এই সময়ে মোটা অংকের অর্থ পকেটে পুরতে পারেন। এতে অনেকেই নতুন করে স্বপ্ন দেখাও শুরু করেন। সেই স্বপ্ন থেকে অনেকেই আবার নতুন করে বাগান বৃদ্ধি করেন। আবার কেউ কেউ সেই অর্থ দিয়ে বাড়ি-গাড়িও করেন।

    গোদাগাড়ী উপজেলার রিশিকুল এলাকার আমচাষি আনছার আলী জানালেন, ‘৮-১০ বছর আগেও যেখানে এক বিঘা জমি থেকে কৃষক পেতেন বড় জোর ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার ধান। সেখানে এখন তারা প্রতি বিঘা জমি থেকে বছরে আম বিক্রি করেই পাচ্ছেন ৫০ হাজার থেকে লক্ষাধিক টাকা। আমের কারণেই বর্তমানে এই এলাকার মানুষের মুখে ফুটে উঠেছে হাসি। জীবন যাত্রার উন্নয়ন হয়েছে। অনেকেই জমি আমচাষের জন্য বর্গা দিয়েই বছরে লাখ টাকা আয় করছেন। বিঘাপ্রতি এখন ২০-৩০ হাজার টাকা হারে জমি বর্গা নিয়ে আমচাষিরা আমচাষ করছেন।

    গোদাগাড়ীর কাঁকনহাট এলাকায় প্রায় ৫৫ বিঘা জমিতে আমের বাগান করেছেন সরকারি চাকরিজীবী সোহেল রানা। তিনি বলেন, ৫ বছর আগে আম্রপালি ও বারি ফোর জাতের আমের চারা রোপন করেছিলাম। গত বছর প্রায় ১১ লাখ টাকার আম বিক্রি করেছি। এবার বিক্রি করেছি ২২ লাখ টাকার। আমসহ বাগান বিক্রি করে করে দিয়েছি। ব্যবসায়ীরা আম পেড়ে নিয়ে চলে যাবেন। আম পাড়া শেষ হলে আমি আবার পরিচর্যা করে আগামী বছরের জন্য প্রস্তুতি নিব। আগামী বছর ৫০ লাখ টাকার কাছাকাছি আম বিক্রি হবে বলে আশা করছি।’ ভাল জাতের আম ২০০০ টাকা থেকে ৩৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে।

    গত বছর এই সময়ে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের মোকামগুলোতে ক্ষিরসাপাতি আম মানভেদে প্রতিমন ১ হাজার ৮০০ থেকে শুরু করে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাজশাহী অঞ্চলের প্রধান প্রধান মোকামে ক্ষিরসাপাতি আম মানভেদে প্রতিমন সর্বোচ্চ ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আবার চাষি ও বাগান পর্যায়ে ক্ষিরসাপাতি আম বিক্রি হচ্ছে প্রতিমন ২ হাজার ৪০০ টাকায়। ন্যাংড়া জাতের আম বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা প্রতিমন।

    চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাট বাজারের আড়তদার সাহেব আলী বলেন,“এই মুহূর্তে হিমসাগর বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৭০০ টাকা মনে, যা কেজিতে পড়ে মাত্র ৬৭ টাকা। গতবার যা ছিল অনেক বেশি।”

    বাজারে ভালো মানের হিমসাগর বিক্রি হচ্ছে ২৮০০ থেকে ৩০০০ টাকা মণে, আর নিম্নমানের আম ১৬০০ টাকা মণে। ল্যাংড়া বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকায়।

    চাষিরা বলছেন, ঈদের ছুটি, গরমে আগাম পাঁকা আম, এবং অনলাইন ক্রেতাদের অনুপস্থিতি- সব মিলিয়ে দাম কমেছে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত।
    অন্যদিকে, আমের নতুন রাজধানীখ্যাত নওগাঁয় জেলা প্রশাসনের নির্ধারিত সময়ের আগেই বাজারে এসেছে আম্রপালি ও অন্যান্য জাতের আম। এতে করে আমের সরবরাহ বেড়েছে কয়েকগুণ, অথচ চাহিদা নেই তেমন।

    এদিকে নওগাঁর বাজারে ল্যাংড়া বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা মণে, আম্রপালি ২ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা, আর নাক ফজলি ২ হাজার ৪০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা দরে। অথচ গত বছর এই সময় এসব আমের দাম ছিল দ্বিগুণের কাছাকাছি।

    চলতি মৌসুমে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে আয়োজিত বৈঠকে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কেজিতে আম ক্রয়-বিক্রয়ের নির্দেশনা দেওয়া হলেও এর বাস্তবায়ন এখনো লক্ষনীয় হয় নি। সরেজমিনে রাজশাহী বিভাগের বড় বড় আমের হাট রোহনপুর, ভোলাহাট, কানসাটের বাজারে কোথাও কেজিতে আম ক্রয়ের কোন বাস্তবায়নের চিত্র দেখা যায় নি। কোথাও ৫২ কেজিতে আবার কোথাও ৫৪ এবং ৫৫ কেজিতেও মন হিসেবে আম কেনা হচ্ছে । বর্তমানে আমের দাম এবং ওজন ও বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের রয়েছে চরম অসন্তোষ।
    নওগাঁর সাপাহার আমের হাট ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি মণ হিমসাগর ১৮০০-২৬০০ টাকা, নাক ফজলি ১৫০০-১৯০০ টাকা, ল্যাংড়া ১২০০-১৫০০টাকা, ব্যানানা ম্যাংগো ৩৫০০-৪২০০ টাকা, হাড়ি ভাংগা ১৫০০-২৫০০ টাকা এবং আম্রপালি ১৮০০-৩৫০০ টাকা মণ হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।
    আমের হাটে আম বিক্রি করতে আসা আমচাষি কালাম বলেন, এবছর আমের দাম অনেক কম। গত বছর যে আম ৪০০০-৪৫০০ টাকায় বিক্রি করেছি সে আম এ বছর ২২০০-২৫০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে । এ দামে আম বিক্রি করে কীটনাশক খরচ ই উঠবে না। এভাবে চলতে থাকলে লোকসান গুনতে হবে।
    সাপাহার উপজেলা আম আড়ৎদার সমবায় সমিতি লিমিটেডের সহ সভাপতি জয়নাল আবেদীন বলেন, তুলনামূলকভাবে এবছর আমের ফলন কম হলেও আমের সাইজ অনেক ভালো হয়েছে। ইতিমধ্যে আমের বেপারীরা কেনা বেচা শুরু করে দিয়েছে। ওজন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,পাশ্ববর্তী রোহনপুর, ভোলাহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং কানসাটের ব্যবসায়ীরা ৫০ থেকে ৫২ কেজিতেই মণ হিসেবে আম ক্রয় করছেন। যার কারণে এ বাজারে আম ক্রয় করতে আসা অন্য ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখে পড়ছেন। তাই ওজনের বিষয়টি যদি সারাদেশে একই রকম রাখা হয়, তাহলে আম চাষী ও আড়ৎদারের সুবিধা হবে। বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

    রাজশাহী জেলা সদর থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে গোদাগাড়ী-সাপাহার রাস্তার ধারে সাওর গ্রামেই হুমায়ন আলীর আমবাগানটিতে গিয়ে দেখা যায়, গোটা বাগানে পাঁকা ঝুলছে। পাইকারগণ বাগানে এসে আম কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বাগানে পানি সেঁচের জন্য একটি গভীর টিউবওয়েলও বসিয়েছেন তিনি। মোটর দিয়ে সেই টিউবয়েল থেকে পানি উত্তোলন করে সুষ্ক মৌসুমে পানি সেঁচও দেন বাগানে। তবে এখন আর তেমন পানির প্রয়োজন হচ্ছে না।
    এককই এনামুল বলেন আমি আগে লোকের বাগানে কাজ করতাম এখন আমার আমবাগানেই প্রতিদিন অন্তত ৬০ জন শ্রমিক কাজ করে। আমাকেও আর পরের জমিতে কাজ করতে হয় না। আমার জমিতে কাজ করেও অনেকেই সাবলম্বি হচ্ছেন।’ এখন আম শ্রেণীভেদে প্রতিমন আম ২০০০ টাকা থেকে ৩৫০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ভাল দাম পেয়ে আম চাষিরা দারুন খুশি।

    চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটের আমচাষি ফরহাদ উদ্দিন জানালেন, ‘বাপ-দাদার আমল থেকেই আম চাষ করেন তাঁরা। তবে গত প্রায় ১০ বছর ধরে এখন আরো বেশি করছেন। তাঁর নিজের বাগানই আছে ৩০ বিঘা জমিতে। অপর দুই ভাইয়ের আছে আরও প্রায় ৪০ বিঘা। অথচ তাদের বাপের ছিল ১৫ বিঘা জমিতে আম বাগান। বছরে আম বিক্রি করেই অন্তত ৩০ লাখ টাকা আয় করেন ফরহাদ উদ্দিন। এর মধ্যে জমি বর্গাসহ বিভিন্ন খাতে খরচ হয় অন্তত ১৩ লাখ টাকা। বাকি টাকা লাভ থাকে।’

    কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলায় সবমিলিয়ে এ বছর আম চাষ হয়েছে ৮৭ হাজার ৩০৭ হেক্টর জমিতে। এখান থেকে প্রায় ১০ লাখ টন আম উৎপাদন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে কৃষি বিভাগ। যা থেকে আয় হবে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। যা অতিতের সব রেকর্ড ভাঙবে এবার। আম বাজারজাত শুরু হওয়ায় এরই মধ্যে এ অঞ্চলের অর্থনীতিও চাঙ্গা হতে শুরু করেছে বলেও দাবি করেন অর্থনীতিবিদরা।

    তারা আরও বলছে, রাজশাহী অঞ্চলে গত ১০ বছর আগেও আমচাষ ছিল ৩০ হাজার হেক্টরের নিচে। গত প্রায় এক যুগ ধরে এই অঞ্চলে আমচাষ বাড়তে থাকে। এখন আমচাষে যেন বিপ্লব এনেছেন কৃষকরা। বারি-৪, বারি-১৩, বারি-১১, আম্রপালি, ব্যানানা, বারোমাসি কাঠিমণসহ উচ্চ ফলনশীল নানা জাতের আমচাষ হচ্ছে এখন। পাশাপাশি দেশি জাতের গোপাল ভোগ, লক্ষণভোগ, হিমসাগর, ফজলি, আশিনা, রানি প্রসাদ বা রানী পছন্দ, গৌড়মতি, গুটি বা আঁঠিসহ নানা জাতের আমও চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে তুলনামূলক হারে বেশি চাষ হচ্ছে আম্রপালি জাতের আম। এ আম প্রচুর মিষ্টি, আঁশ না থাকা এবং ফলন বেশি হওয়ায় রাজশাহী অঞ্চলের কৃষকরা গত ১৫-২০ বছর ধরে চাষ শুরু করেন। এমন কৃষক আছেন একাই দেড়-দুইশ বিঘা জমিতে এ আমের চাষ করেছেন। এর পর একসঙ্গে শত বিঘা জমিতে চাষ হচ্ছে বারি-৪ জাতের আম। আমপ্রালির পরে একেবারে শেষদিকে ফজলির পাশাপাশি সময়ে বাজারে আসে এ আম। ফলে দামও ভালো পাওয়া যায়।

    এদিকে, রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের উপপরিচালক উম্মে সালমা বলছিলেন, এ বছর জেলায় ১৯ হাজার ৬০৩ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। এখান থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ২ লাখ ৬০ টন। আশ করছি, চাষিরা এবার আমের ফলন ভালো পাবেন। এ আম থেকে এবার অন্তত ২ হাজার কোটি টাকা আয় হবে চাষিদের।

    নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানচ্ছিলেন, এ বছর জেলায় ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আমচাষ হয়েছে। এবার ৩ লাখ ৮৭ হাজার টন আমের উৎপাদন আশা করা হচ্ছে। এ হিসাবে এ বছর নওগাঁ থেকে প্রায় চার হাজার কোটি টাকার আম বাণিজ্যের সম্ভাবনা রয়েছে।

    চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. ইয়াছিন আলী বরছিলেন, এ জেলায় ৩৭ হাজার ৫০৪ হেক্টর জমিতে নানা জাতের আমচাষ হয়েছে। চলতি বছর আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৮৬ হাজার ২৯২ টন। এখান থেকে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা আয় হবে বলেও তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। গত ১০ বছরে প্রায় ১৩ হাজার ২৪৪ হেক্টর জমিতে আমচাষ বেড়েছে এ জেলায়।

    জেলার আম গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোখলেসুর রহমান বলছিলেন, জেলার চাষিরা আমের চাহিদা মিটিয়ে প্রতিবছর প্রায় দুই থেকে তিন লাখ টন আম দেশের বিভিন্ন স্থানে বাণিজ্যকভাবে সরবরাহ করেন। এছাড়া কয়েক বছর ধরে এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের কয়েকটি দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে এ জেলার আম। গত বছর জেলা থেকে এক হাজার ৩৩ টন আম রপ্তানী হয়েছে বিদেশের মাটিতে।

    ইউরোপ-আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানির পর বৃহত্তর রাজশাহীর আম এবার যাবে চীনেও। গত বছর শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকেই এশিয়ার ১১টি দেশ, মধ্যপ্রাচ্যের তিনটি এবং ইউরোপের সাতটি দেশে আম রপ্তানি করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২৮ এপ্রিল চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনসহ আমদানিকারকরা চাঁপাইনবাবগঞ্জের কয়েকটি আমবাগান পরিদর্শন করেছেন।

    কৃষি সস্প্রসারণ অধিদপ্তর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপপরিচালক ড. ইয়াছিন আলী জানান, চলতি বছর এ জেলায় ৩৩৯ হেক্টর জমিতে ১২২ জন আমচাষি (উত্তম কৃষিচর্চা) মেনে রপ্তানিযোগ্য আমচাষ করেছেন। এখান থেকে বিপুল পরিমাণ আয় আসবে দেশে।

    আমকেন্দ্রীক রাজশাহীর অর্থনীতির প্রভাব নিয়ে বলছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল ওয়াদুদ। তাঁর মতে, প্রায় দশ হাজার কোটি টাকা আয়ের সম্ভাবনা রাজশাহী অঞ্চলের মানুষের জন্য বড় ধরনের আর্থ-সামাজিক সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে। যদি এই বিপুল অর্থের একটি বড় অংশ আমচাষিদের হাতে পৌঁছায় এবং তারা ন্যায্য মূল্য পায়, তাহলে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। চাষিরা তখন তাদের পরিবারে খাদ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং বাসস্থান খাতে আরও বেশি ব্যয় করতে পারবে, যা সামগ্রিকভাবে গ্রামীণ অর্থনীতিকে গতিশীল করবে।

    রাজশাহীর জেলার সবচেয়ে বড় আমের হাট পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর বাজারে। এখানে হাট থেকে আম কিনে বিভিন্ন মোকামে নিয়ে যান পাইকাররা। এই মোকামগুলোতে প্রায় শতাধিক ব্যবসায়ী রয়েছেন। দীর্ঘদিন থেকে এই ব্যবসায়ীরাই সিন্ডিকেট করে স্থানীয় আমচাষি ও বিক্রেতাদের ঠকাচ্ছে। চক্রটি কয়েক বছর ধরেই ঢলন ও শোলা প্রথার নামে চাষিদের নানাভাবে ঠকাচ্ছে। কিন্তু একাধিকবার সমাধানের জন্য আলোচনা করেও সিন্ডিকেটের লাগাম টেনে ধরতে পারছে না খোদ প্রশাসনও। রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে ঢলন প্রথা বাতিল করে কেজি দরে আম কেনা-বেচার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে ৪০ কেজিতে মণ ক্রয় করা নির্দেশ দেওয়া হলেও জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আড়ৎদাররা আম ক্রয় করছেন ৫০-৫২ কেজিতে মণ হিসেবে। প্রতি মণে ঢলন নেওয়া হচ্ছে ১০ থেকে ১২ কেজি।

    আম চাষিরা বলছেন, বাজারের আম ব্যবসায়ীদের কাছে তাঁরা একরকম জিম্মি। তাঁরা যেভাবে পারছেন বিক্রেতাদের লুটছেন। প্রতি মণে ঢলন দিতে হচ্ছে ১০-১২ কেজি। জেলা প্রশাসক কেজি দরে আম কেনার নির্দেশ দিলেও কোনো সুফল মিলছে না তারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আম পচনশীল তাই ঢলন নেওয়া হয়। কৃষকের কাছ থেকে আম কেনার পর আম পচে যায়, নষ্ট থাকে, ছোট আম বের হয় আবার পেকে গেলে ওজন কমে যায়। সে কারণে ঢলন নেওয়া হয়।

    এ বিষয়ে বাংলাদেশ ফল গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, রাজশাহী অঞ্চলে বিদ্যমান উচ্চ তাপমাত্রা ও বৃষ্টিহীনতার কারণে আমের ক্ষেত্রে ‘ফোর্স রাইপেনিং’ সিনড্রোমের ঘটনা ঘটেছে। বৃষ্টিহীনতার কারণে আমের বোঁটায় থাকা ফ্লুইড শুকিয়ে আপনা-আপনি গাছ থেকে ঝরে পড়ছে আম। তিনি আরও বলেন, নামলা জাতের আমগুলোও নির্ধারিত টাইম লাইনের দুই সপ্তাহ আগেই গাছে পেকে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে চাষিরা পাকা আম দ্রুত গাছ থেকে নামিয়ে মোকামে তুলছেন। আমরাও খবর নিয়ে দেখেছি এবার অন্য বছরগুলোর তুলনায় মোকামগুলোতে আমের দাম কিছুটা কম। তবে দু-একদিনের মধ্যে যদি বৃষ্টি হয় সেক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের আমের স্থায়িত্ব আরও কিছুদিন বাড়বে।

    চাঁপাইনবাবগঞ্জ ম্যাঙ্গো ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব ও বাণিজ্যিক আমচাষি আহসান হাবিব বলেন, অত্যধিক তাপমাত্রা ও গরমের কারণে সব শ্রেণির আম একসঙ্গে পেঁকেছে। দ্বিতীয়ত, ঈদের দীর্ঘ ছুটির কারণে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় বড় নগর-শহরের মানুষ একটানা ১০ থেকে ১৫ দিন গ্রামে অবস্থান করেছেন। এ সময়ে কুরিয়ার সার্ভিসহ পরিবহণ চলাচল সীমিত ছিল। প্রতিবছর ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলো থেকে দলে দলে চালানি ব্যাপারীরা আম কিনতে বৃহৎ আমের মোকাম চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাট বা রাজশাহীর বানেশ্বরে আসতেন। এবার চালানি ব্যাপারীর সংখ্যা খুবই কম। শনিবার থেকে বাইরের চালানি ব্যাপারীরা দু-একজন করে আসছেন এবং তারা আম কিনছেন।

    কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে দেশে ২৮ লাখ টন আম ফলনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এর মধ্যে রাজশাহী অঞ্চলের চার জেলায় ১২ লাখ ৫৫ হাজার টন আম ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলাভেদে এবারও আম উৎপাদনে শীর্ষস্থানটি রয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার। এ জেলায় চলতি মৌসুমে ৪ লাখ ৫৮ হাজার টন আম ফলনের আশা করা হচ্ছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আম উৎপাদনের জেলা নওগাঁয় ৩ লাখ ৭৮ হাজার টন আমের ফলন হওয়ার আশাবাদ থাকলেও হাইব্রিড জাতের আম্রপালির ফলন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কিছু কম উৎপাদন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া রাজশাহীতে ২ লাখ ৮৫ হাজার ৮৪৩ টন ও নাটোর জেলায় ১ লাখ ৪৩ হাজার টন আম ফলনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

    কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক ড. আজিজুর রহমান বলেন, রাজশাহী অঞ্চলে এবার আমের ফলন বেশ ভালো। তবে তাপপ্রবাহ, অত্যধিক গরম ও একটানা কিছুদিন বৃষ্টিহীনতার কারণে আম দ্রুত পেকে যাচ্ছে। ঈদের লম্বা ছুটির কারণে আম চালান ও পরিবহণে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। এতে আমের দাম কিছুটা কমেছে। এরপরও ফলন যেহেতু ভালো হয়েছে ফলে চাষিরা সেই ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারবেন।

    মোঃ হায়দার আলী
    নিজস্ব প্রতিবেদক,রাজশাহী ।

  • সুজানগরে তিন দিনব্যাপী জাতীয় ফল মেলার উদ্বোধন

    সুজানগরে তিন দিনব্যাপী জাতীয় ফল মেলার উদ্বোধন

    এম এ আলিম রিপন,সুজানগর : ‘দেশী ফল বেশি খাই, আসুন ফলের গাছ লাগাই’-প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে পাবনার সুজানগরে তিন দিনব্যাপী ফল মেলা শুরু হয়েছে।
    উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় সুজানগর উপজেলা কৃষি অফিস চত্বরে এ মেলার উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ। এ সময় উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাফিউল ইসলাম, অতিরিক্ত কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ফারুক হোসেন চৌধুরী, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ জাহিদ হোসেনসহ স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
    জাতীয় ফল মেলা উদ্বোধনকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ বলেন, ফলের মাধ্যমে বৈচিত্র‍্যময় হয় মানুষের খাদ্যাভ্যাস। নিয়মিত ফল খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তাই নিয়ম করে সকল ঋতুতে দেশীয় মৌসুমী ফল খেতে হবে। ফলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে বাড়ির আঙিনায় বা ছাদে এবং সম্ভাবনাময় সকল ক্ষেত্রে ফলের গাছ রোপন করতে হবে। মেলার এমন আয়োজনের মাধ্যমে দেশি ফলের চাষ ও গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়বে বলেও জানান তিনি।
    দেশি ফলের পুষ্টিগুণ, পরিবেশ সংরক্ষণে এর ভূমিকা ও ফলচাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার বিষয় তুলে ধরে সুজানগর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাফিউল ইসলাম বলেন, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ফল আমাদের পুষ্টির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবেও সহায়তা করে। ফলচাষের মাধ্যমে শুধু পুষ্টির চাহিদাই পূরণ হয় না, এটি কৃষি অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ও সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে ফল উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব বলেও জানান তিনি।
    বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, ও কৃষকদের উপস্থিতিতে প্রাণবন্ত হয়ে উঠা এ মেলার স্টলে প্রদর্শিত হচ্ছে স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত বিভিন্ন দেশীয় ও মৌসুমি নানা জাতের দেশি ফল। এছাড়াও ফলচাষ সংক্রান্ত তথ্য, চারা উৎপাদন ও রোপণ পদ্ধতি নিয়েও পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তারা। মেলা চলবে আগামী ২১ জুন পর্যন্ত। মেলা উদ্বোধন শেষে অতিথিরা প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন এবং ফলচাষে কৃষকদের উৎসাহিত করেন।

    এম এ আলিম রিপন
    সুজানগর প্রতিনিধি।।

  • পীরগঞ্জে বিশ্ব শিশুশ্র-ম প্রতিরো-ধ দিবসে চিত্রাংকন

    পীরগঞ্জে বিশ্ব শিশুশ্র-ম প্রতিরো-ধ দিবসে চিত্রাংকন

    পীরগঞ্জ(ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে র‍্যালি ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

    গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বে-সরকারি উন্নয়ন সংস্থা গুডনেইবারস বাংলাদেশ এর আয়োজনে সুর্য্যপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হলরুমে এই প্রতিযোগিতা হয়।

    গুডনেইবারস শিশু পরিষদের সভাপতি পুজা রাণী রায়ের সভাপত্বিতে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের প্রশিক্ষক ফেন্সী বেগম, গুডনেইবারস পীরগঞ্জ সিডিপি’র ম্যানেজার বিধান মণ্ডল, সুর্য্যপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোরঞ্জন রায়, সাংবাদিক বিষ্ণুপদ রায়, সংস্থার প্রোগ্রাম ম্যানেজার শান্ত চিরান সহ আর অনেকে।

    আলোচনা শেষে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা বিজয়দের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

  • নেছারাবাদে খালে অজু করতে গিয়ে নব্বই বছর বয়সী বৃদ্ধ মহিলার মৃ-ত্যু

    নেছারাবাদে খালে অজু করতে গিয়ে নব্বই বছর বয়সী বৃদ্ধ মহিলার মৃ-ত্যু

    নেছারাবাদ উপজেলা সংবাদদাতা।।

    নেছারাবাদের চামি এলাকায় খালে অজু করতে গিয়ে নব্বই বছর বয়সী বৃদ্ধ মহিলার মৃত্যু হয়েছে। বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল ঘটনা স্থল থেকে ঐ মহিলার মরদেহ উদ্ধার করে।

    বুধবার রাত ১১টার সময় চামি একতা বাজারে ৩নং ওয়ার্ডে ঐ ঘটনা ঘটে এবং বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার সময় তার মরদেহ ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজন মিলে উদ্ধার করে।

    এলাকাবাসীর দেয়া তথ্য মতে জানা যায়, মোসাম্মৎ মতিউননেছা চামি ৩নং ওয়ার্ডের মৃত সেকান্দার আলীর স্ত্রী তার বয়স নব্বই বছর। মোসাম্মৎ মতিউননেছা রাত আনুমানিক রাত ১১টার সময় বাথরুমের কাজ শেষে ঘরের পাশের খালে অজু করতে যায়। ফিরে আসতে দেরি হওয়ায় তার ছেলে মেয়ে তাকে খোঁজ করতে বের হয়। অনেক ডাকাডাকি করে খুঁজে না পাওয়া গেলে ঘাটের কাছে যায় গিয়ে দেখে জুতা পড়ে আছে।

    অনেক খোঁজাখুঁজি করেও না পাওয়া গেলে। সকালে নেছারাবাদ উপজেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে খবর দিলে নেছারাবাদ উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ঘটনায় স্থলে যায় এবং বরিশালের ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে থেকে ডুবুরি দল আসে। প্রায় ০৩ ঘণ্টা ডুবুরী দলের চেষ্টায় ভিকটিম মোছাম্মৎ মতিউননেছাকে দুপুর ১২.৩০ মিনিটের সময় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

    এ বিষয়ে নেছারাবাদ ফায়ার স্টেশন মাস্টার মনিরুল ইসলাম বলেন, সকালে আমাদের খবর দিলে আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং বরিশালের ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে থেকে ডুবুরি দল আসে। প্রায় ০৩ ঘণ্টা ডুবুরী দলের চেষ্টায় ভিকটিম মোছাম্মৎ মতিউননেছাকে দুপুর ১২.৩০ ঘটিকার সময় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

    নেছারাবাদ থানা অফিসার ইনচার্জ বনি আমিন জানান, আমরা খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে অফিসার পাঠিয়েছি। ঘটনার বর্নান শুনে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি অজু করতে গিয়ে খালে পড়ে মৃত্যু হয়েছে তবে কারো কোন অভিযোগ পাইনি।

    আনোয়ার হোসেন
    নেছারাবাদ উপজেলা সংবাদদাতা।।