Category: কৃষি

  • নড়াইলে দিন দিন বস্তা পদ্ধতিতে সবজি চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে

    নড়াইলে দিন দিন বস্তা পদ্ধতিতে সবজি চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে

    উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি
    নড়াইলে দিন দিন বস্তা পদ্ধতিতে সবজি চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। জলাবদ্ধ ও পতিত জমিতে কম খরচে বেশি মুনাফা পাওয়ায় কৃষকরা ঝুঁকছেন বস্তা পদ্ধতিতে সবজি চাষে। আর এ পদ্ধতিতে অপার সম্ভাবনা দেখছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা। উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি জানান, মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পৌরসভার ধোপাখোলা গ্রামে নড়াইল-ফুলতলা সড়কের পাশে বস্তা পদ্ধতিতে সবজি চাষের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা। মাটিভরা বস্তায় সবজি গাছ লাগানো হয়েছে। সারি সারি বস্তা শোভা পাচ্ছে রাস্তার পাশে। আর তার উপরে মাচায় ঝুলছে করলা, লাউ, কুমড়া, চিচিঙ্গাসহ নানা প্রকার সবজি।
    ধোপাখোলা গ্রামের কৃষক স্বপন বিশ্বাস বলেন, এ পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে আমি অনেক লাভবান হয়েছি। চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ৩০ কেজি মাটির সাথে পরিমাণ মতো জৈব সার, খৈল ও রাসায়নিক সারের মিশ্রণ বস্তায় ভরে প্রায় তিন ফুট উঁচু করা হয়। কয়েক দিন পর তাতে লাউ, চিচিঙ্গা, উচ্ছে, করলা, ঝিঙেসহ বিভিন্ন প্রকার সবজির বীজ বপন অথবা চারা রোপণ করা হয়। বস্তা ও ডিপির ৪ থেকে ৬ ফুট উঁচুতে তৈরি করা হয় বাঁশের চালি বা মাচা।
    নড়াইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্যান) কৃষিবিদ বলেন, জলাবদ্ধ, অনাবাদি, চাষ অনুপযোগী পতিত জমিতে কম খরচে বেশি মুনাফা পাওয়ায় ধোপাখোলা গ্রামের কৃষকরা বস্তা পদ্ধতিতে সবজি চাষে ব্যাপক সফলতা পেয়েছে।
    ইতোমধ্যে কেউ কেউ বাণিজ্যিকভাবে এ পদ্ধতিতে সবজি চাষ শুরু করেছেন। এভাবে সবজি চাষে একদিকে যেমন ভালো ফলন হচ্ছে, অপরদিকে বাজারের চাহিদাও মিটছে। কৃষকদের দিন দিন বস্তা পদ্ধতিতে সবজি চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

  • পাইকগাছায় ফল মেলা অনুষ্ঠিত  ও ফলজ গাছের চারা বিতরণ

    পাইকগাছায় ফল মেলা অনুষ্ঠিত ও ফলজ গাছের চারা বিতরণ

    পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি।।
    পাইকগাছায় দিনব্যাপী ফল মেলা অনুষ্ঠিত ও শিক্ষার্থীদের মাঝে ফলজ গাছের চারা বিতরণ করা হয়েছে। সোমবার সকালে উপজেলা কৃষি অফিস চত্বরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর আয়োজন করে। মেলায় বিভিন্ন প্রজাতির সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল প্রদর্শন করা হয়। এছাড়া মেলায় স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থীদের মাঝে বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ গাছের চারা বিতরণ করা হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন এর সভাপতিত্বে মেলা ও গাছের চারা বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান আনন্দ মোহন বিশ্বাস। স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অসীম কুমার দাশ। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবাল মন্টু, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সম আব্দুল ওয়াহাব বাবলু, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান অনিতা রাণী মন্ডল ও সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ ইফতেখারুল ইসলাম শামীম, বি এ ডি সি’র সিনিয়র সহকারী পরিচালক নাহিদুল ইসলাম । উপস্থিত ছিলেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম সিদ্দিকুর রহমান তালুকদার, উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ বিষ্ণু পদ বিশ্বাস, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সৈকত মল্লিক, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা এস এম মনিরুল হুদা, সহকারী সম্প্রসারণ কর্মকর্তা শাহজাহান আলী, খাদ্য নিয়ন্ত্রক হাসিবুর রহমান, শিক্ষা কর্মকর্তা বিদ্যুৎ রঞ্জুন সাহা, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস, সমাজ সেবা কর্মকর্তা অনাথ কুমার বিশ্বাস, সমবায় কর্মকর্তা হুমায়ূন কবির, সহকারী প্রোগ্রামার মৃদুল কান্তি দাশ, ইউ আর সি ইন্সট্রাক্টর ঈমান উদ্দিন, একাডেমিক সুপার ভাইজার মীর নূরে আলম সিদ্দিকী, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপক জয়ন্ত ঘোষ, সহকারী অধ্যাপক ময়নুল ইসলাম, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শেখ তোফায়েল আহমেদ তুহিন, বিশ্বজিৎ দাশ, এনামুল হক, সরাজ উদ্দিন মোড়ল, আফজাল হোসাইন, সুব্রত দত্ত, আবুল কালাম আজাদ, ইয়াসিন আলী, নাহিদ মল্লিক, এস এম মফিজুর রহমান, ইমরান হোসেন, উত্তম কুমার কুন্ডু, ফয়সাল আহমেদ, সুমিত দেবনাথ, জান্নাতুল ফেরদৌস মুনিয়া, আব্দুল্লাহ, আতাউল্লাহ, মৃণাল সরকার, আনোয়ার হোসেন, রুবাইয়া খাতুন, কমলেশ দাশ, শামীম আফজাল, তাপস সরকার, দেবদাস রায়, তারিফুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, সোহাগ হোসেন, আকরাম হোসেন, শিক্ষার্থী মুক্তা খাতুন, নয়ন মনি বিশ্বাস, তুরানি আক্তার রাসা, পম্পা চক্রবর্তী, পূজা মন্ডল ও ফারজানা ইয়াসমিন।

  • বানারীপাড়ায় বিশারকান্দিতে ৫০ বছর ধরে ভাসমান সবজি চাষে সফল চাষীরা

    বানারীপাড়ায় বিশারকান্দিতে ৫০ বছর ধরে ভাসমান সবজি চাষে সফল চাষীরা

    আব্দুল আউয়াল
    বানারীপাড়া(বরিশাল)প্রতিনিধি:

    বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার বিশারকান্দি ইউনিয়নে স্বাধীন হওয়ার পর থেকে প্রায় ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে ভাসমান সবজি চাষ করে এখানকার কৃষকরা সফলভাবে লাভবান হয়েছে। বানারীপাড়ার প্রত্যন্ত অঞ্চল বিশারকান্দি ইউনিয়ন ভাসমান সবজি চাষের কারণে বহুল আলোচিত। এ ইউনিয়নের বেশিরভাগ মানুষ কৃষিপণ্য ও ভাসমান সবজি উৎপাদনের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।
    বাংলাদেশের অনেক জেলার দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতা-ব্যবসায়ীরা সবজি ও সবজির চারা কিনতে আসেন। বানারীপাড়া উপজেলার পাশাপাশি ঢাকা-চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, গলাচিপা,ঝালকাঠি, উজিরপুর, বিভিন্ন স্থান থেকে এই সবজি কেনার জন্য ব্যবসায়ীরা আসেন। এখান থেকে পাইকারি মূল্যে সবজিচারা ও সবজি কিনে থাকেন বিভিন্ন ব্যাবসায়ীরা। এখানে বিভিন্ন ধরনের চারা লাউ,করল্লা ,মিষ্টি কুমড়া,সিম,ঢেঁড়স, পেঁপে, বরবটি, কাঁচা মরিচ, টমেটো ইত্যাদি উৎপাদন করা হয়। ভাসমান সবজি চাষ করার জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে সিজনে কচুরিপানা ধরে রেখে মেদা বানাতে হয়। এ ছাড়া খরকুটো, পাটকাঠি, বাঁশের কঞ্চি ও জৈব সার দ্বারা সবজি চাষ করা হয়। সবজি বিলে ও খালে, পুকুরেও মেদা বেঁধে চাষ করা হয়। চাষিদের দেখে এই অঞ্চলের শিক্ষিত বেকার যুবকদের পাশাপাশি নানা শ্রেণী পেশার
    পেশাজীবীরা ও অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা অবসর সময়ে ভাসমান সবজি চাষে সম্পৃক্ত হয়েছেন। বিশারকান্দি বটতলা বাজার এলাকার কৃষক সামছুল হক হাওলাদার জানান, ভাসমান সবজিচারা ও সবজি উৎপাদন করে আমার বছরে কয়েক লাখ টাকা লাভবান হয়েছে । উমারের পাড়ের কৃষক এমরান হোসেন বলেন,আমার প্রধান জীবিকা নির্বাহের কাজই হলো কৃষি। এই সবজি চাষ করে পরিবার-পরিজন পিতা মাতার ভরণপোষণ ও সন্তানদের লেখাপড়া খুব ভালোভাবেই চলে যাচ্ছে। পদ্মবুনিয়া গ্রামের কৃষক আসলাম জানান ভাসমান সবজি চাষের সাথে আমার বাপ দাদা থেকে শুরু করে আমি ও বর্তমানে চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছি। বিশারকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম শান্ত বলেন, ‘ভাসমান সবজি চাষ এই ইউনিয়নের একটি পুরনো ঐতিহ্য। যা বর্তমানে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এ ইউনিয়নে প্রায় ২০০০ পরিবারের ও বেশি ভাসমান সবজির ওপর নির্ভরশীল হয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। সিজনালি ৫ হাজারের বেশি চাষি সরাসরি এ কাজে যুক্ত। এ সবজি দেশ-বিদেশে রপ্তানি করে কৃষকরা লাভবান হবে। এছাড়া তিনি আরো বলেন,আমি জনগণের সেবকের পাশাপাশি আমিও এই সবজি চাষে যুক্ত আছি। বানারীপাড়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মাহফুজুর রহমান মুঠো ফোনে জানান,বিশারকান্দি ইউনিয়নের ভাসমান সবজিচারা ও সবজি উৎপাদন করে এই এলাকা বেশ আলোচিত হয়েছে। এই ইউনিয়নের কৃষকদের আমরা বিভিন্ন সহায়তা ঔষধ ও সার বিতরণ পোকামাকড় প্রতিরোধে পরামর্শ ও প্রদর্শন করে থাকি। এছাড়াও আমাদের একটি ভাসমান বেড সবজির প্রকল্প রয়েছে তা থেকে ও বিভিন্নভাবে সহযোগিতা আমরা করে থাকি।

  • নার্সারি পেশাই বদলে গেছে পাইকগাছার গদাইপুর গ্রামের মানুষের ভাগ্য ;রপ্তানি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে

    নার্সারি পেশাই বদলে গেছে পাইকগাছার গদাইপুর গ্রামের মানুষের ভাগ্য ;রপ্তানি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে

    ইমদাদুল হক, পাইকগাছা (খুলনা)।।
    পাইকগাছা উপজেলার গদাইপুর নার্সারি গ্রাম নামে খ্য্যাত। এ গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়ি যেন একটি নার্সারি। কোথাও অনাবাদি নেই এক চিলতে জমি। নার্সারি পেশাই গদাইরের মানুষের ভাগ্য বদলে দিয়েছে। গ্রামটিতে নীরব অর্থনৈতিক বিপ্লব ঘটে গেছে। নার্সারি ব্যবসা করে এখানকার অনেক মানুষ সফল হয়েছে। শূন্য থেকে কোটিপতিও হয়েছে। ইজারা নিয়ে নার্সারি গড়ে তুলে পরবর্তী সময়ে জমি ও বাড়ির মালিক হয়েছে। তাদের দেখাদেখি গ্রামের ক্ষেতের পর ক্ষেত গড়ে উঠেছে নার্সারি।
    উপজেলার গদাইপুর গ্রামের মেইন সড়কের দুই পাশে নার্সারিতে নানা প্রজাতির গাছের চারার দৃশ্য নজর কাড়ে। রাস্তার পাশে যতদূর দৃষ্টি যায় ফুল, ফল, মসলা ও বনজের চারা দেখা যায়। যেগুলোর গোড়ার মাটি পলি প্যাকেটে আবদ্ধ। চলতি পথে নার্সারিগুলোয় কর্মব্যস্ততার দৃশ্য চোখে পড়ে। কেউ নিড়ানি দিয়ে আগাছা বাছা ও ঝাঁজরি দিয়ে চারায় পানি দিচ্ছেন। আবার কেউ ভ্যান, নছিমন, ট্রাক ও পিকআপে চারা তুলে দিচ্ছেন। দেশী প্রজাতির পাশাপাশি বিদেশী ফলের চারারও উৎপাদন হয় পুরে। এখানে স্ট্রবেরি, রাম্বুটান, ড্রাগন, থাই পেয়ারাসহ ৩০-৪০ প্রজাতির বিদেশী ফলের চারা তৈরি হয়। এছাড়া দেশী প্রজাতির সকল ফলের চারা নার্সারিগুলোয় পাওয়া যায়। এসব ফলের প্যাকেট চারা বছরজুড়ে পাওয়া যায়। প্যাকেটে রোপণ করা চারার পাশাপাশি টবে লাগানো ফুল-ফলের চারাও এখানে বিক্রি হয়। চুই, লবঙ্গ, তেজপাতা, দারুচিনি, গোলমরিচ, এলাচসহ বেশ কয়েক প্রজাতির মসলার চারা উৎপাদন ও বিক্রি হয়।
    গদাইপুরে ঢুকলে চোখে পড়ে ক্ষেতের পর ক্ষেত নার্সারি। বাড়ির সামনে-পেছনে ও আশপাশে নার্সারি গড়ে তুলেছেন সবাই। সব নার্সারির সানের সাইনবোর্ড লাগাানো। নানা রকমের ফুল, ফল ও মসলার চারা বাড়িগুলোর সামনে। বাড়ির ভেতরে গড়ে তোলা নার্সারিতে চারা কেনাবেচার দৃশ্যও নজর কাড়ে। কেবল বর্ষা মৌসুমেই এ গ্রামের কয়েকশ নার্সারিতে ৬কোটি টাকার চারা বিক্রি হয়। আর সারা বছরের বিক্রি ১২কোটির বেশি।
    উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ছোট-বড় প্রায় ৫ শতাধিত নার্সারী গড়ে উঠেছে। যার উল্লেখযোগ্য সংখ্যা রয়েছে গদাইপুর গ্রামে। মৌসুম শুরুতে চারা তৈরীর জন্য নার্সারী মালিক ও কর্মচারীরা ব্যস্ত হয়ে ওঠে। বর্ষা শুরু হলে গুটি কলম তৈরী করা হবে। উপজেলার বিভিন্ন নার্সারীতে চলতি মৌসুমে কুলের প্রায় ১ কোটি কলম তৈরী হচ্ছে। গদাইপুর গ্রামের নার্সারী মালিক হাবিবুর রহমান জানান, তিনি নার্সারীতে ৭০ লাখ চারা উৎপাদনে ব্যস্ত রয়েছে। গদাইপুর গ্রামের অবস্থিত সততা নার্সারীর মালিক অঞ্জনা রানী পাল জানান তার নার্সারীতে বিভিন্ন জাতের কুলের প্রায় ৮ লাখ কলম তৈরী করছেন। তবে কলম তৈরীর সময় পার হয়ে গেলে এ মৌসুমের আর কলম তৈরী করা যাবে না। সে কারনে কলম তৈরীতে অধিক পয়সা খরচ হচ্ছে। তাছাড়া নার্সারীতে বিভিন্ন জাতের হাইব্রীড জাত কাটিমন আম ২০ হাজার, মাল্টা ২ লাখ, পিয়ারা ৫০ হাজার, সফেদা ৫০ হাজার, জামরুল ৩০ হাজার। এ সব কলমের মধ্যে থাই পেয়ারা, জামরুল, মালাটা, কদবেল, কমলালেবু, আম সহ বিভিন্ন জাতের কলম রয়েছে।নার্সারি ব্যবসায়ীরা জানান, গদা পুরে নার্সারি ব্যবসার যাত্রা হয় রিক্তা নার্সারি হাত ধরে। সওকত মলঙ্গী স্বাধীনতা-পূর্ববর্তী সময়ে তিনি নার্সারির ব্যবসা শুরু করেন। তার ছেলেরা এখন সেই নার্সারি ব্যবসার হাল ধরেছেন। তাদের নার্সারি ব্যবসা দেখে সামছুর রহমানসহ অনেকে নার্সারির ক্ষেত গড়ে তোলেন।
    পাইকগাছা উপজেলা নার্সারী মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অশোক কুমার পাল জানান, কলম তৈরীর শ্রমিক ঠিকমত না পাওয়ায় উচ্চ মূল্যে শ্রমিক নিয়ে কলম তৈরী করতে হচ্ছে। কারণ সময় চলে গেলে এ মৌসুমে আর কলম তৈরী করা যাবে না। গদাইপুর এলাকার তৈরী কলম বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, রংপুর, সিলেট, বরিশাল, কুমিল্লা, রাজশাহী সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হচ্ছে। তবে ঠিকমত বাজার দর না পাওয়ায় নার্সারী মালিকরা আশানারুপ ব্যবসা করতে পারছে না। নার্সারী ব্যবসায়ীরা জানান, চারা উৎপাদনে সরকারি ভাবে লোনের ব্যবস্থা করলে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে নার্সারী শিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
    এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অসিম কুমার দাশ জানান, পাইকগাছার নার্সারী শিল্প খুলনা জেলা শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছে। নার্সারী ব্যবসায়ীরা চারা বিক্রি করার আশানারুপ বাজার ধরতে না পারায় তারা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। নার্সারী ব্যবসা করে মালিক, ব্যবসায়ীরা সাবলম্বী হচ্ছে। তেমনি নার্সারীতে নিয়জিত হাজার হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হচ্ছে। নার্সারীতে উৎপাদিত চারা সবুজ বননায়নে উল্লেখ যোগ্য ভূমিকা রেখে পরিবেশের ভারশাম্য রক্ষা করছে। তেমনি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে রাখছে বড় অবদান।

    ইমদাদুল হক,
    পাইকগাছা, খুলনা।

  • পাইকগাছায় জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ওলকচু চাষ

    পাইকগাছায় জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ওলকচু চাষ

    ইমদাদুল হক, পাইকগাছা (খুলনা)।।
    পাইকগাছায় কম খরচে বেশি ফলন পাওয়ায় বাণিজ্যিক ভিত্তিক ওলকচুর চাষ দিন দিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। পাইকগাছা উপজেলার মাটি ওলকচু চাষের উপযোগী। চলতি বছর উপজেলাতে প্রায় ৩ হেক্টর জমিতে ওলকচু চাষাবাদ করেছেন কৃষকরা।
    জানা গেছে, চৈত্র মাসে জমিতে ওল কচুর বীজ রোপণ করতে হয়। ওল কচুর পূর্ণতা পেতে পুরো ৬ মাস সময় লাগে। সেই হিসেবে জমি থেকে ভাদ্র মাসে ওল কচু উত্তোলন করা যাবে। এ সময়ে ওলকচু চারা ওজনের ৪/৫ গুন বৃদ্ধি পেয়ে একেকটি ওলকচু ৮/ ১০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। বাণিজ্যিক ভাবে চাষাবাদ করা ওলকচু অত্যন্ত সুস্বাদু। কোন রকম গলা জ্বালা করে না। এ কারণে বাজারে এ ফসলের চাহিদা রয়েছে অনেক।
    সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের হিতামপুরর গ্রামের রফিকুল ইসলাম ২০শতাংশ জমিতে মাদ্রাজী শ্বেতী জাতীয় ৪০০টি ওলকচু চাষাবাদ করেছেন। নিয়মিত পরিচর্যার মাধ্যমে ওলকচুর গাছগুলো ২/৩ হাত লম্বা হয়েছে। ওলকচু চাষি রফিকুল বলেন, ২০ শতাংশ জমি থেকে প্রায় ১০০মণ ওলকচু বিক্রি করতে পারবো। কচুর পাশাপাশি বীজও সংগ্রহ করে বিক্রি করে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা দেখছি। বর্তমান বাজারে ওলকচুর চাহিদা ব্যাপক রয়েছে।
    উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ওল কচু গাছে তেমন কোনো রোগ হয় না, তবে পাতা ও কাণ্ড পচা রোগ দেখা যেতে পারে। ওলকচুর ক্ষেত্রে কীট পতঙ্গ তেমন কোন সমস্যা নেই। নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার, গোড়া উঁচু করে দেয়া ও গোড়ায় খড় বা আচ্ছাদন দিয়ে ঢেকে দিলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। জৈব সার বেশি ব্যবহার করা ভালো। তবে রাসায়নিক সার যেমন ইউরিয়া, পটাশ, টিএসপি সারও কিছু দেওয়া যায়। গাছ লাগানোর ৭-৯ মাস পর যখন ৮০% গাছের পাতা হলুদ হয়ে যাবে, তখন ওল সংগ্রহ করতে হবে।
    উপজেলা কৃষি আফিসার কৃসিবিদ অসিম কুমার দাশ বলেন, সঠিক পরিচর্যা অব্যাহত রেখে চাষ করলে ওলকচু চাষিরা প্রতি শতাংশে ৫/৬মন ওলকচু সংগ্রহ করতে পারবে। ফলে তাদের সংসারে যেমন সচ্ছলতা আসছে তেমনি কৃষকরা ওল চাষের প্রতি দিন দিন আগ্রহী উঠছেন।

    ইমদাদুল হক,
    পাইকগাছা, খুলনা।

  • পাইকগাছায় চলতি মৌসুমে  তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে

    পাইকগাছায় চলতি মৌসুমে তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে

    ইমদাদুল হক, পাইকগাছা (খুলনা)।।
    পাইকগাছায় চলতি মৌসুমে তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। ১৪৪৫ হেক্টর জমিতে ৫৫ হাজার মেট্রিক টন তরমুজ উৎপাদিত হয়েছে। এসব তরমুজের বাজারমূল্য ৭৭ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে দাবি করছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। উৎপাদিত এসব তরমুজ উচ্চমূল্যে বিক্রি করতে পেরে খুশি কৃষক। গত বছরের বৃষ্টিতে তরমুজ চাষের ক্ষতি পুষিয়ে এবার লাভবান চাষিরা। তরমুজের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
    উপকূল এলাকার চারপাশে লবণপানি, বেড়ীবাধের মধ্যে মিষ্টি পানির আঁধার তৈরি করে পাইকগাছার দেলুটি,গড়ুইখালী ও চাদখালী ইউনিয়ানে তরমুজ চাষে হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় এ বছর তরমুজের আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৪ শত ৪৫ হেক্টর জমিতে।হেক্টর প্রতি ফলন ৩৮ থেকে৪২ টন।মোট ফলন ৫৪ হাজার ৯১০টন।যার বাজার মূল্য ৭৬ কোটি ৮৭ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার বেশী হবে। পাইকগাছায় ১০টি ইউনিয়ন মধ্য ৩টি ইউনিয়নে তরমুজ চাষ হয়। এর মধ্যে গড়ুইখালী, দেলুটি ও চাদখালীতে তরমুজ চাষ হয়। সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে দেলুটি ইউনিয়নে।উপকূরের লবণ পানির এলাকায় গড়ুইখালী ইউনিয়নের ঘোষখালী নদী ও দেলুটি ইউনিয়নের ডিহিবুড়া খাল খননে বৃষ্টির (মিষ্টি) পানি সংরক্ষণ করে তরমুজের চাষ করা হয়েছে।
    সরেজমিনে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠ তরমুজ ক্ষেত। চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে তরমুজ।আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। ক্ষেত থেকে তরমুজ তুলে জড়ো করে রেখেছেন বিক্রির জন্য। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যাপারীরা তরমুজ কিনতে ক্ষেতে গিয়ে চাষিদের সঙ্গে দরদাম করে ক্ষেতে কিনে নিচ্ছেন। এই তরমুজ ক্ষেত থেকে ট্রলি বোঝাই করে ট্রাক ও কার্গ ভর্তি করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো হচ্ছে। শ্রমিকরা ক্ষেত থেকে তরমুজ তুলে ট্রলিতে করে এনে ট্রাক ও কার্গ লোড করছে। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই ক্ষেত থেকে তুলে বাজারজাত করার জন্য ব্যস্ত চাষি ও ব্যাপারীরা। বাজার দাম ভালো পাওয়ায় খুশি কৃষকেরা। কেউ খেত হিসাবে তরমুজ বিক্রি করছেন আবার কেউবা পাইকারি বাজারে তরমুজ বিক্রি করছেন। এতে উৎপাদন খরচ পুষিয়ে লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা। ইতিমধ্যে ৬০ শতাংশ তরমুজ খেত বিক্রি হয়ে গেছে। ৪০ শতাংশ তরমুজ কৃষকের খেতে রয়েছে।প্রতিদিন পাইকগাছা ও পাশের আমাদি থেকে ২ থেকে ৩ শত ট্রাক তরমুজ ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যাচ্ছে ব্যাবসাহীরা।
    স্থানীয় কৃষকেরা জানান, বিগত বছরে তরমুজ চাষে আর্থিকভাবে লোকসান হলেও এবার লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা।তবে অনাবৃস্টির কারণে পানি দিতে অধিক টাকা খরচ হয়েছে। দেলুটি ইউনিয়নের লোচন সরকার বলেন, আমি ৫ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গত বছরের তুলনায় এ বছর তরমুজের ফলন ভালো হয়েছে। আমার বিঘা প্রতি ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রতি বিঘা তরমুজ ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা বিক্রি হবে বলে আশা করছি। গড়ুইখালী ইউনিয়নের কানাখালী গ্রামের বিজন কুমার মণ্ডল বলেন, আমি চার বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। আমার জমিতে খরচ বাদে দেড় লাখ টাকা লাভ থাকবে বলে আশা করছি।
    এ বিষয়ে পাইকগাছা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অসিম কুমার দাশ জানান, এ বছর তরমুজের ফলন ভালো হয়েছে।তবে মিষ্টি পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় তরমুজ চাষে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। এসব এলাকায় খাল খনন করে মিষ্টি পানি সংরক্ষণ করতে পারলে তরমুজের চাষ আরও বাড়ানো যেত। এখন পর্যন্ত বাজারে তরমুজের দাম সন্তোষজনক।ইতিমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন ক্ষেতের ৬০ ভাগ তরমুজ বিক্রি হয়ে গেছে। এ বছর বাম্পার ফলন হওয়ায় আগামীতে তরমুজ চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

  • পাইকগাছায় মুকুলে ভরে গেছে আশফল গাছ

    পাইকগাছায় মুকুলে ভরে গেছে আশফল গাছ

    ইমদাদুল হক পাইকগাছা (খুলনা)।।
    চৈত্রের হাওয়ায় আশফল গাছের পল্লবে মুকুলে মুকুলে ভরে গেছে। সোনালি রঙের মুকুলে ঢেকে গেছে গাছ। বাতাসে আশফলের মুকুলের মৌ মৌ গন্ধ। বাগান জুড়ে শুধু মৌমাছির গুঞ্জন। গাছে গাছে মুকুলের এ সৌন্দর্য আর মৌমাছির গুন গুন শব্দে সবার মন কাড়ছে। চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে মুকুলের পাগল করা ঘ্রান। বাতাসে মিশে সৃষ্টি হচ্ছে মৌ মৌ গন্ধ। ফুলে ফুলে মৌমাছি উড়ে উড়ে মধু সংগ্রহ করছে আর এতে পরাগায়ন হচ্ছে ফুলের। বসন্তের নানা ফুলের সঙ্গে সৌরভ ছড়াচ্ছে গাছে গাছে আশফলের মুকুল। আর এ মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণে মৌ মৌ করছে প্রকৃতি। মনকে করে তুলছে আরো প্রাণবন্ত।
    দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অঞ্চলের স্থানীয় উদ্ভিদ আঁশফল গাছ বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের পথের ধারে অনেক স্থানেই দেখা যায়। তবে আমাদের দেশের স্থানীয় আঁশফল এর ফল আকারে ছোট এবং রসালো অংশ খুবই কম। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট সম্প্রতি বারি আঁশফল-১ এবং বারি আঁশফল-২ নামে আঁশফলের দুটি উন্নত জাত বাংলাদেশের সর্বত্র চাষের জন্য মুক্তায়ন করেছে।আঁশফল এক প্রকার লিচু জাতীয় সু-স্বাদু ফল। এটি লংগান ও কাঠ লিচু নামে পরিচিত। এটি দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার উদ্ভিদ। যার ক্রান্তীয় অঞ্চলের বৃক্ষ। আঁশফল গাছ মধ্যমাকারের চির সবুজ বৃক্ষ। যা ৬ থেকে ১০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। বেলে মাটিতে এই গাছ জন্মে।
    আশফল শারীরিক দুর্বলতা তাড়াতে অতুলনীয়। অবসাদ দূর করতেও এর দারুণ সুনাম। হৃদযন্ত্র সুরক্ষা এবং সক্রিয় রাখতে আঁশফল উপকারী ভূমিকা পালন করে। স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে আঁশফল খাওয়া উচিত। পেটের অসুখ দূর করতেও এতে থাকা আঁশ উপকারী। আঁশফলে থাকা লৌহ দেহের ক্ষয়পূরণে সহায়ক। দেহের মাংসপেশির ক্ষয় রোধ করতে আঁশফল খুবই উপকারী। কোনো ধরনের ফ্যাট না থাকায় ওজন কমাতেও এ ফল সাহায্য করে। আঁশফলের ভিটামিন ‘সি’ নানা ধরনের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধে দেহকে শক্তিশালী করে তোলে।
    চলতি মৌসুমে পাইকগাছায় আঁশফল গাছে ব্যাপক ফুল হয়েছে। উপজেলার গদাইপুর, রাড়ুলী, হরিঢালী ও কপিলমুনি ইউনিয়নে ছড়ানো ছিটানো আঁশফলের গাছ রয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অসিম কুমার দাশ জানান, এলাকার আঁশফলের গুণগতমান খুব বেশি ভাল না হলেও চাহিদা রয়েছে প্রচুর।প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে চলতি মৌসুমে আশফলের ভালো ফলন হবে। পরিত্যাক্ত জায়গায় আঁশফলের আবাদ করা যায় এবং কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। এ জন্য এলাকার কৃষকদেরকে আঁশফল চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

  • পাইকগাছায় আমের মুকুলে গুটি না হওয়ায় আমচাষী ও বাগান মালিকরা হতাশ

    পাইকগাছায় আমের মুকুলে গুটি না হওয়ায় আমচাষী ও বাগান মালিকরা হতাশ

    ইমদাদুল হক, পাইকগাছা (খুলনা)।।
    পাইকগাছায় আম গাছে মুকুলে গুটি না হওয়ায় আমচাষী ও বাগান মালিকরা হতাশ। আমের গুটি বিহিন গাছ দেখলে মনে হবে ঝলসে গেছে।গাছে আম ছাড়া ন্যাড়া শিস দেখা যাচ্ছে। গাছে আমের গুটি না ধরায় আমচাষি, বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
    পাইকগাছাসহ উপকুল এলাকায় চলতি বছর অনেক দেরিতে আম গাছে মুকুল বের হয়েছে। অধিকাংশ গাছের মুকুল ছোট ও চিকন হয়। কোন গাছের একটি দুইটি ডালে মুকুল বের হয়েছে আর বাকী ডালের পল্লবে মুকুল হয়নি। অনেক গাছে কোন মুকুলই বের হয়নি। তবে কিছু কিছু গাছে প্রচুর পরিমান মুকুল বের হয়েছে।কোন কোন গাছে গুটি ধরার পরে ঝরে পড়েছে। তীব্র শীত ও কুয়াশার কারণে আমের মুকুল দেরিতে বের হওয়ায় আমের গুটি আশনারুপ হয়নি বলে কৃষি অফিস জানান।আম বাগানে বিনিয়োগকৃত টাকা ফিরে পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। এমন পরিস্থিতে আমচাষি, বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।
    পাইকগাছার কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মধ্যে ৪টি ইউনিয়ন গদাইপুর, হরিঢালী, কপিলমুনি, রাড়ুলী ও পৌরসভা ছাড়া বাকি ইউয়িনগুলোতে সীমিত আমের গাছ রয়েছে। উপজেলায় ৫শত ৮৫ হেক্টর জমিতে মোট আম গাছ রয়েছে। গাছের সংখ্যা প্রায় ৩৫ হাজার। কিছু কিছু পরিকল্পিত আম বাগান রয়েছে।এবছর নাবিতে গাছে মুকুল ধরেছ। অধিকাংশ গাছের মুকুল ছোট ও চিকন হয়েছে। কোন গাছের একটি দুইটি ডালে মুকুল বের হয়েছে আর বাকী ডালের পল্লবে মুকুল হয়নি। অনেক গাছে কোন মুকুলই বের হয়নি। ৪০ ভাগ আম গাছে নাবিতে মুকুল বের হয় আর এসকল গাছে কোন গুটি ধরেনি। তবে আগাম কিছু গাছে মুকুল ভালো বের হয় সে সব গাছে আমের গুটিও ভালো হযেছে। তবে তার পরিমান খুবই সিমিত।
    উপজেলার কপিলমুনি,গদাইপুর, হরিঢালী, রাড়ুলী, পৌরসভা, চাঁদখালীসহ বিভিন্ন এলাকা আম বাগানের গাছে মুকুল ভালো হয়নি সে কারণে আমের গুটিও হযনি। আম বাগান ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে। গদাইপুরের আম চাষি মোবারক ঢালী বলেন, বাগানের আম গাছে মুকুলে তেমন গুটি ধরেনি। আমের মুকুলে গুটি না ধরায় তিনি হতাশ।ধার করে বাগান কেনা টাকা ফিরে পাবেনা বলে মহা বিপাকে পড়েছেন। হরিঢালীর আকবর হোসেন, তকিয়ার মুজিবর গাজীসহ বিভিন্ন এলাকার আম ব্যবসায়ীরা জানান, ঋণ করে আগাম আম বাগান নিয়েছে। অনেক চাষী আম বিক্রি ঋণের টাকা পরিশোধ করবে। গাছে আশানারুপ মুকুল বের না হওয়ায় গুটি ধরেনি্ এতে তারা ক্ষতিগ্রস্থ হবে এমন আশাংকায় হতাশ হয়ে পড়েছে।
    উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অসিম কুমার দাশ জানান, শেষের দিকে কয়েক দিনের ঘন কুয়াশার কারণে আমের মুকুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পাইকগাছায় নাবি করে গাছে মুকুল এসেছিলো, নাবিতে আসা মুকুল পুস্ট হযনি, সে কারণে অনেক গাছে গুটি ধরেনি তবে আগাম মুকুল বের হওয়া গাছে আমের গুটি ভালো ধরেছে। আমের গুটি আশানারুপ না ধরায় উপজেলায আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পুরণ হবেনা আর চাষিরা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে তিনি জানান।

  • পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় গমের জাত প্রদর্শনী মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত

    পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় গমের জাত প্রদর্শনী মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত

    মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম, তেতুলিয়া প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় দানাজাতীয় ফসল উৎপাদন প্রযুক্তির ২০২৩-২৪ অর্থবছরের দিনাজপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় গমের জাত প্রদর্শনী কৃষক মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে।

    সোমবার (১ এপ্রিল) দুপুরের দিকে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের মান্দুলপাড়া গ্রামের বুড়াবুড়ি ব্লকে ডব্লিউএমআরআই-ওয়ান জাত গমের এই মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়।

    উপজেলা কৃষি অফিসার তামান্না ফেরদৌস এর সভাপতিত্বে উক্ত মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শর্স্য) মোঃ সাইফুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার জীবন ইসলাম।

    প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, সরকার কৃষির উন্নয়নে সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছে। কৃষির ফসল প্রদর্শনী একটি মডেল। আধুনিক চাষাবাদে কৃষকদের এগিয়ে আসতে হবে। এছাড়াও তিনি কৃষক-কৃষাণীদের উদ্দেশ্যে গমের বিভিন্ন দিক নির্দেশনা মূলক আলোচনা করেন।

    মাঠ দিবসে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মোজাম্মেল হক, সঞ্চালনায় ছিলেন, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ এনামুল হক এসময় সহযোগিতায় ছিলেন, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল হাসান।

    মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম।।

  • কুড়িগ্রামে বানিজ্যিকভাবে গ্লাডিওলাস ফুল চাষ

    কুড়িগ্রামে বানিজ্যিকভাবে গ্লাডিওলাস ফুল চাষ

    মোঃ ফিরোজ মিয়া :

    কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের তালুক কালোয়া গ্রামে বানিজ্যিক ভাবে দক্ষিণ আফ্রিকার গ্লাডিওলাস ফুল চাষ শুরু  করছেন কৃষক মোঃ নুরবখত আলী। গ্লাডিওলাস ফুলের পাশাপাশি তার জমিতে গাঁদা ফুল, সূর্যমুখি ফুল চাষ হচ্ছে।৫০ শতক জমিতে গ্লাডিওলাস ফুল চাষ করে প্রায় লক্ষাধিক টাকার বিক্রির আশা করছেন তিনি। ফুলের কালার ভেদে প্রতিটি গ্লাডিওলাস ফুলের স্টিক ৫-২৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন।

    বানিজ্যিক ভাবে কুড়িগ্রাম জেলা শহর ছাড়াও লালমনিরহাটে এই গ্লাডিওলাস ফুল বিক্রি করছেন বলে জানান তিনি। কথা হয় গ্লাডিওলাস ফুল চাষি মোঃ নুর বখতের সাথে তিনি  বলেন,গ্লাডিওলাস ফুল চাষ সম্পর্কে আমার কোন ধারনা ছিল না।

    কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি থেকে ২০১৮-১৯ সালে প্রদর্শনী প্লট করি। ওই প্রর্দশনী প্লটে ফুলের সমাহার দেখে পরের বছর ফুল চাষে উদ্বুদ্ধ হই। এখন প্রায় তিন একর জমিতে প্রচলিত কৃষি আবাদ না করে তেল বীজ ও ফুল জাতীয় চাষ করছি। কেননা ধান,পাট আলু চাষের চেয়ে এ জাতীয় আবাদে খরচ কম লাভ বেশি। বিশেষ করে কম সময়ের মধ্যে ক্ষেত থেকে গ্লাডিওলাস ফুল বাজারজাত করা সম্ভব। বাজারে সারা বছর ফুলের চাহিদা থাকে। প্রতি স্টিক ৫-২৫ টাকা দরে বিক্রি করছি।এ ফুল চাষে বাড়তি খরচ ও পরিচর্যার ঝামেলা নেই। সামান্য সেচ, সার ও কীটনাশক ব্যবহার করে এই ফুল চাষ করা সম্ভব।

    তিনি আরো বলেন, গ্লাডিওলাস বীজ রোপণের ৭৫ দিনের মধ্যে ফুল সংগ্রহ করা যায়। গ্লাডিওলাস গাছে তেমন বালাই নেই।কেরাডে ও এন্টকল কীটনাশক ব্যবহার করে গ্লাডিওলাস গাছ ফুলের যত্ন নেয়া হয়।বাজারে এ ফুলের চাহিদা থাকায় আগামীতে বড় পরিসরে গ্লাডিওলাস ফুল চাষ করবেন বলে জানান তিনি।

    নুরবখতের ছেলে মোঃ শাহাজাহান আলী বলেন, গ্লাডিওলাস ফুল চাষ করে লাভবান হচ্ছি।অনান্য আবাদের চেয়ে এই ফুল চাষে খরচ কম লাভ বেশি। সঠিক সময়ে ক্ষেত থেকে ফুল তুলতে পারলে ভালো দাম পাওয়া যায়।

    কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, আর্থ সামজিক উন্নয়নে কৃষকদের নতুন নতুন চাষাবাদে কৃষি বিভাগ উদ্বুদ্ধ করে আসছে।অনান্য আবাদের পাশাপাশি ব্যতিক্রমী ও লাভজনক চাষাবাদে আমরা কৃষকদের সহযোগিতা করছি।

    গত কয়েক বছর হলো কুড়িগ্রামে গ্লাডিওলাস ফুল চাষ প্রদর্শনী করি।জেলায় কয়েকজন চাষ শুরু করেছে। নুর বখতের গ্লাডিওলাস ফুলের বানিজ্যিক চাষ দেখে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে। আগামীতে জেলায় এই ফুল চাষের পরিধি আরো বাড়বে বলে জানান তিনি।