হেলাল শেখঃ ঢাকার আশুলিয়াসহ সারাদেশে শিশু খাদ্যসহ বিভিন্ন বেকারী খাদ্যপণ্য অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করে বিক্রির করার অভিযোগ। বেকারী ও মিষ্টিজাত পণ্যের কারখানার মালিকরা এসব তৈরি করে বাজারজাত করছে।এসব খাদ্যপণ্যের কারখানাগুলোতে সরেজমিনে গিয়ে মালিকদের দেখা পাওয়া যায় না। একদিকে শিশুদের খাবারে মেডিসিন দেওয়া হয়, অন্যদিকে ভেজাল খাদ্যপণ্য তৈরি করে বিক্রি করায় শিশুসহ সকল বয়সের মানুষ অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে শিশুসহ সবাই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকার আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় বেকারী কারখানা ও মিষ্টির কারখানায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যপণ্য তৈরি করে তা বাজারে বিক্রি করছে। বিশেষ করে বেশিরভাগ মানুষ সকালে চায়ের সাথে বিস্কুট, কেক, রুটিসহ নানারকম বেকারীজাত খাবার খেয়ে থাকেন। সেই সাথে অনেকের প্রিয় মিষ্টি ও মিষ্টিজাত খাবার পছন্দ করেন। এসব খাবারের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এছাড়া বাসা বাড়িতে আত্মীয়স্বজন আসলে মেহমানদারিতে এসব খাদ্যপণ্য অন্যতম। জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি এসব খাবারের চাহিদাও ব্যাপক ভাবে বেড়েছে। দেশের ৮টি বিভাগ, ৬৪ জেলা ও উপজেলায় প্রায় এলাকায় ব্যাঙের ছাতার মতো বেকারী ও মিষ্টির কারখানা স্থাপন করে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যপণ্য তৈরি করা হয়।
জানা গেছে, চট্রগ্রাম-নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, গাজীপুর, ময়মনসিংহ ও আশুলিয়াসহ সারাদেশে এখন অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশে খাদ্যপণ্য তৈরি করে এসব পণ্য বাজারজাত করছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। এইসব অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার কারণে মানুষের বিভিন্ন রোগ হচ্ছে। ঢাকার আশুলিয়ার জামগড়া, টুইন টাওয়ারের পাশে অবস্থিত ঢাকা বেকারী, কাঠগড়া এলাকায় হজরত শাহজালাল বেকারী, ভাই বন্ধু বেকারীতে সরেজমিনে গিয়ে মালিককে পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে বরিশাল, ভোলা ও চরফ্যাশন, খুলনা, বাগেরহাট, ফরিদপুর, রাজবাড়ি, পাবনা, সুজানগর, আমিনপুর, বেড়া কাশিনাথপুর, পাবনার চাটমহর, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, তাড়াশ, বগুড়া, সোনাতলা, গাবতলী, গাইবান্ধা, পলাশবাড়ি, রংপুর, দিনাজপুর, অন্যদিকে সিলেট বন্দর বাজার, জিন্দাবাজার, কাজলশাহ, আম্বরখানা, নয়াসড়ক, এদিকে উত্তরাসহ প্রায় সারা দেশের জেলা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বেশিরভাগ বেকারী ও মিষ্টির কারখানাগুলোতে নোংরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যপণ্য তৈরি করে তা হাট-বাজার ও দোকানে বিক্রি করা হয় বলে জানা যায়।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ঢাকা জেলা সহকারি পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডল বলেন, অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশে খাদ্যপণ্য তৈরি ও বিক্রি করা অপরাধ, এ অপরাধ করে কেউ ছাড় পাবে না। অফিস সূত্রঃ সতর্কীকরণঃ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসন ভোক্তা-অধিকার সমুন্নত রেখে ভোক্তা-অধিকার বিরোধী কার্যাবলী প্রতিরোধের লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তারা। শুধুমাত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ‘ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯’ বাস্তবায়নের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত রয়েছেন, অভিযান অব্যাহত আছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান।
সাম্প্রতিককালে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের গোচরীভূত হয়েছে যে, অধিদপ্তরের নামের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ নাম রেখে অবৈধ সংগঠন তৈরি করে কতিপয় অসাধু ব্যক্তি সম্মানিত ব্যবসায়ীগণকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে তাদের সাথে প্রতারকরা প্রতারণা করে। আদালতে শুনানীতে উপস্থিতি হওয়ার জন্য নোটিশ দেয়া হচ্ছে এবং বিভিন্ন উপায়ে ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ দাবী করা হচ্ছে-যা দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী দ-নীয় অপরাধ।
টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা তানজিন অন্তরা বলেন, অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশে কোনো প্রতিষ্ঠান বা কোনো অসাধু ব্যক্তি যদি খাদ্যপণ্য তৈরি করে বিক্রি করেন, তাহলে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী দ-নীয় অপরাধ, এ অপরাধ করে কেউ ছাড় পাইবে না। তিনি আরও বলেন, অপরাধী সে যেইহোক না কেন, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। এ ব্যাপারে র্যাব জানান, র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকের জেল জরিমানা করা হচ্ছে, এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সারাদেশে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যপণ্য তৈরি ও বিক্রি-স্বাস্থ্যঝুঁকিতে শিশুসহ সবাই

Leave a Reply