ধনবাড়ীতে প্রশাসনের নাকের ডগায় মেলাকে কেন্দ্র করে ‘অশ্লীল নৃত্য’

হাফিজুর রহমান,
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী নওয়াব ইনস্টিটিউশন মাঠে (মেলার মাঠ) শুরু হয়েছে জাঁকজমকপূর্ণভাবে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ মেলা। মেলার নামে প্রকাশ্যে টানা কয়েকদিন ধরে চলছে মেলার মাঠে ও বাসষ্ট্যান্ডের আনন্দ ভুবন বিনোদন কেন্দ্রে অর্ধলঙ্গ হয়ে ‘অশ্লীল নৃত্য’ আর বিকট শব্দের গান। এসব অশ্লীল নৃত্য দেখে বিপথগামী হচ্ছে শিক্ষার্থী, যুবক ও উঠতি বয়সের ছেলেরা। অশ্লালীন কর্মকাণ্ড দ্রুত বন্ধের দাবি জানিয়েছে সচেতন মহল। স্থানীয় প্রশাসন ও নেতাকর্মীদের মেনেজ করেই এ কর্মকাণ্ড হচ্ছে স্থানীয়দের এই অভিযোগ।

মেলায় জাদু খেলার নামে প্যান্ডেলের ভেতরে চলে অশ্লীল এই নৃত্য। নৃত্যের জন্য আনা হয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে উঠতি বয়সী পতিতা। বিকেল থেকে শুরু হয় নৃত্য চলে পুরো রাতজুড়ে। ১‘শ টাকার টিকিটে লাইন ধরে ঢোকানো হয় দর্শনার্থীদের। দর্শনার্থীর তালিকার বড় একটি জায়গায় রয়েছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন বয়সী যুবকেরা।

মেলায় দোকান নিয়ে আসা রহিম মিয়া,আব্বাস উদ্দিন, সিদ্দিক হোসেন ও শরাফত আলী বলেন, ‘ধনবাড়ীর মেলার ঐতিহ্য হারিয়ে গেছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগে দোকানীরা আসতো সামগ্রী নিয়ে। এখন আসে না। মেলায় দোকান বসালেই ৩ থেকে ৬ হাজার টাকা, জায়গা যেমন ঝুড়ি’র দোকানে বেশী জায়গা নিলে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা নেয় কমিটির লোকেরা। এই টাকা তো সরকারের ঘরে জমা হয় না। মেলার নামে চলছে এখন অশ্লীল নৃত্য।

ধনবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ মেলাটি ধনবাড়ীর ঐতিহ্য।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। এগুলো বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

জানা গেছে, ‘ধনবাড়ীর নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী ব্রিটিশ সরকারের নিকট বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি ১ম উত্থাপন করে ছিলেন। বাংলার প্রতি অঘাত ভালোবাসার নিদর্শন স্বরূপ ১৯২১ সালে বাংলা নববর্ষে ১লা বৈশাখে ধনবাড়ীর বৈশাখী মেলার সূচনা করেন। মেলাকে প্রসারিত করতে ১লা বৈশাখে বিভিন্ন হস্ত, কুটিরশিল্প ও পালাগানের উৎসব চালু করেন। সেই থেকেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে গ্রমীণ মেলা।’

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *