সাতক্ষীরার তালায় গভীর রাতে প্রতিমা ভাংচুর,পরিদর্শনে প্রশাসন

মোঃআজিজুল ইসলাম(ইমরান)
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার জেয়ালা নলতা সাহাপাড়া রাধা গোবিন্দ সার্বজনীন মায়ের মন্দিরের দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। বৃহষ্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে।

জেয়ালা নলতা সাহাপাড়া রাধা গোবিন্দ সার্বজনীন মায়ের মন্দিরের দুর্গা পুজা পরিচালনা কমিটির সভাপতি অসিত কুমার সাহা জানান, ১৯৭৩ সাল থেকে তাদের মন্দিরে রাধাগোন্দি পূজা ও কালীপুজাসহ দুর্গাপুজা হয়ে আসছে। এক সময় টিনের চাল দিয়ে মন্দিরের চাল নির্মিত হলেও ২০১৮ সালে মন্দিরের ছাদ দেওয়া হয়। তবে মন্দিরটির পূর্ণ সংস্কার করা সম্ভব হয়নি আজো।

তিনি আরো জানান, গত ২০ আগষ্ট থেকে তাদের মন্দিরের দুর্গা প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয়। আশাশুনি উপজেলার বামনডাঙা গ্রামের সুশান্ত ঢালী ১৪ হাজার টাকায় প্রতিমা নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। শনিবার থেকে প্রতিমায় রং দেওয়ার কথা ছিল। বৃহষ্পতিবার সাপ্তাহিক নামকীর্তণ পরিবেশনা শেষে রাত ১১টার দিকে তিনিসহ এলাকার সকলে বাড়িতে চলে যান। দুর্গা মন্দিরের অংশে কোন তালা লাগানোর ব্যবস্থা নেই।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে গ্রামের মুদি ব্যবসায়ি বলরাম সাহা মন্দিরে প্রণাম করতে এসে নির্মাণাধীন প্রতিমা ভাঙচুর করা দেখে তাকে খবর দেন। তিনি বিষয়টি স্থানীয় খলিলনগর ইউপি চেয়ারম্যান প্রণব ঘোষ বাবলু ও থানাকে অবহিত করেন। ঘটনাস্থলে এসে তিনি লক্ষী প্রতিমার মুন্ডু মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন।

এ ছাড়া সরস্বতী, কার্তিক, দুর্গা মাথা মুড়িয়ে ও মহিষাশুরের হাত, গণেশের হাত, সরস্বতীর হাত মুড়িয়ে ভাঙা অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে সাংসদ এড. মুস্তফা লুৎফুল¬াহ, সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজীব খান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস, উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন। তারা যে কোন মূল্যে পুজা শান্তিপূর্ণভাবে করার জন্য সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।

তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু জিহা ফকরুল আলম খান শুক্রবার দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি স্পর্শকাতর। তবে যেভাবে ভাঙা হয়েছে তাতে মনে হয়েছে পরিকল্পিত। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুক্রবার বিকেল তিনটা পর্যন্ত এ নিয়ে থানায় কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

তালা-কলারোয়া-১ আসনের সাংসদ এড. মুস্তফা লুৎফুল¬াহ বলেন, এটি কোন সংঘবদ্ধ চক্রের কাজ নয়। এ ব্যাপারে তিনি ওই মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে পৃথক ভাবে বসেছেন। তারা কাউকে দায়ী করেনি। তবে মন্দিরের ছাদে রাত দেড়টা থেকে দুটো পর্যন্ত যুবকরা থাকার পর চলে যায়। সেক্ষেত্রে রাত দুটোর পর থেকে ভোর ৫টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটতে পারে।

পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব ও পিবিআই তদন্ত করছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত যেই হোক না কেন তাকে গ্রেপ্তারের জন্য বলা হয়েছে। ওই মন্দিরের পুজা শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে প্রয়োজনে তিনি দুই থেকে তিন দিন সেখানে যাবেন। তাদের পুজার জন্য সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *