পাইকগাছা উপজেলা হাসপাতাল সড়কের বেহাল দশা,দূর্ভোগে রোগীসহ জনসাধারণ

ইমদাদুল হক,পাইকগাছা,খুলনা।।পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ ও বেহাল অবস্থায় পরিণত হয়েছে। সড়কটির বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং (পিচ) উঠে গিয়ে গর্ত ও খাদ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে যাতায়াতে চরম ভোগান্তি হচ্ছে হাসপাতালের রোগী সহ জনসাধারণের।
সড়কের ১ কিলোমিটার দ্রুত সংস্কারের পাশাপাশি উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থার জন্য প্রশস্থ করা জরুরী হয়ে পড়েছে। উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কের মধ্যে হাসপাতাল সড়কটি অন্যতম। এটি ইতোপূর্বে অভ্যন্তরীন সড়ক হিসেবে বিবেচনা করা হলেও বর্তমানে সড়কটি উপজেলা সদরের প্রধান সড়কের কালিবাড়ী থেকে হাসপাতাল ও মহিলা কলেজ হয়ে পূর্ব ওয়াপদার সাথে যুক্ত হয়ে হাড়িয়া ব্রিজ পার হয়ে লতা ইউনিয়নের সাথে যুক্ত হয়েছে।
এছাড়া সড়কের ১ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ফসিয়ার রহমান মহিলা কলেজ। হাসপাতাল মোড়ে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ফার্মেসী সহ নানা ধরণের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। সড়কের সাথে যুক্ত রয়েছে পৌরসভার ৫ ও ৬নং ওয়ার্ড। এ দুটি ওয়ার্ডে সময়ের সাথে সাথে বেড়েছে ঘন বসতি। যার ফলে অত্র সড়ক দিয়ে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ যানবাহন সহ জনসাধারণ যাতায়াত করে থাকে।
বিশেষ করে হাসপাতালে রোগী আনা-নেওয়া এবং মহিলা কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে অত্র সড়কটি। কালিবাড়ী থেকে পূর্ব ওয়াপদা পর্যন্ত ১ কিলোমিটার সড়ক দীর্ঘদিন সংস্কার করা হয়নি। যার ফলে সড়কের বিভিন্ন স্থানে পিচ উঠে গিয়ে গর্ত ও খাদ সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া সড়কটি প্রয়োজনের তুলনায় প্রশস্থও কম। সড়কে রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক।
সবমিলিয়েই সড়কটির এখন বেহাল অবস্থা। যার কারণে যাতায়াতে চরম ভোগান্তি হচ্ছে রোগী সহ জনসাধারণের। নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) উপজেলা শাখার সদস্য মাসুম বিল্লাহ জানান, এটি এখন কোন সাধারণ সড়ক নয়, একদিকে লতা সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের সঙ্গে সড়কটি যুক্ত হয়েছে। এছাড়া পৌর এলাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহ বসতি বেড়েছে। রয়েছে হাসপাতাল এবং মহিলা কলেজ। সে অনুযায়ী সড়কটি সেই মানের উপযোগী করা হয়নি। এসব বিষয়গুলি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে সড়কটি সংস্কার করার পাশাপাশি প্রশস্থ করা প্রয়োজন। ফসিয়ার রহমান মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ রবিউল ইসলাম জানান, আমাদের কলেজের প্রায় শতভাগ শিক্ষক, শিক্ষার্থীকে অত্র সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। সড়কের অবস্থা বর্তমানে এতটাই খারাপ আমরা অনেক সময় বাধ্য হয়ে অনেক পথ ঘুরে বিকল্প সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে থাকি। জনস্বার্থে সড়কটির আধুনিকায়ন জরুরী হয়ে পড়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নীতিশ চন্দ্র গোলদার জানান, আমাদের দুর্ভোগের আরেক নাম অত্র সড়কটি। হাসপাতালের চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারী সহ সব ধরণের রোগীকে অত্র সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার কিংবা উন্নয়ন করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার অবহিতও করেছি।
এটি আমাদের জন্য একটি ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক। বিশেষ করে জরাজীর্ণ সড়কের কারণে গর্ভবতী, ডেলিভারী ও অপারেশন রোগীদের জন্য চরমভোগান্তি হচ্ছে। খুব দ্রুত এটি সংস্কার ও উন্নয়ন করা প্রয়োজন। উপজেলা প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান খান জানান, ১ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর স্কীম পাঠিয়েছি এবং স্কীম অনুমোদনও হয়ে গেছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম জানান, হাসপাতাল ও মহিলা কলেজের জন্য সড়কটি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। সড়কটি যাতায়াতের যথাযথ উপযোগী করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খুব দ্রুত টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে উন্নয়ন কাজ শুরু করা সম্ভব হবে বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানিয়েছেন।

ইমদাদুল,
পাইকগাছা,খুলনা

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *