Blog

  • ঝিনাইদহ হিরা বেকারিকে ৪০ হাজার টাকা জ-রিমানা

    ঝিনাইদহ হিরা বেকারিকে ৪০ হাজার টাকা জ-রিমানা

    ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতাঃ
    বাজার তদারকিমূলক অভিযান ২৭-০৮-২০২৫, তারিখ বুধবার চানপাড়া, আরাপপুর, ঝিনাইদহ সদর উপজেলা, ঝিনাইদহ জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, জেলা কার্যালয়, ঝিনাইদহ এবং বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, জেলা কার্যালয়, ঝিনাইদহ এর যৌথ অভিযান।
    এসময় খাদ্য পণ্যের মোড়কে উৎপাদন ও মেয়াদ উত্তীর্নের তারিখ, বিক্রয়মূল্য ও অন্যান্য তথ্য উল্লেখ না করা, বিভিন্ন টেক্সটাইল রং ও কেমিক্যাল ব্যবহার করে খাদ্য পণ্য প্রস্তুত, বিক্রয় ও সংরক্ষণ ও অন্যান্য অপরাধে ০১টি প্রতিষ্ঠানকে (হিরা বেকারী) ২টি ধারায় প্রশাসনিক ব্যবস্থায় ৪০,০০০/- (চল্লিশ হাজার) টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়। জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঝিনাইদহ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জনাব নিশাত মেহের এর নেতৃত্বে পরিচালিত বাজার তদারকিমূলক অভিযানে সহযোগিতায় ছিলেন জনাব সাধন সরকার, নিরাপদ খাদ্য অফিসার, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, জেলা কার্যালয়, ঝিনাইদহ এবং অন্যান্য সহায়ক সদস্যবৃন্দ। এই অভিযানে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত ঝিনাইদহ জেলা পুলিশের একটি টিম। জনস্বার্থে এই তদারকি চলমান থাকবে।

    আতিকুর রহমান
    ঝিনাইদহ।

  • আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের  ৪৯ তম মৃ-ত্যুবার্ষিকী

    আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯ তম মৃ-ত্যুবার্ষিকী

    লেখকঃ মো: হায়দার আলীঃ কি নিয়ে লিখবো ভাবছিলাম, যেন ঠিক করতে পারছিলাম না। আজ বুধবার টিভি, স্থানীয় ও জাতীয়, অনলাইন পত্রিকা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাবে প্রচারিত হচ্ছিল বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯ তম মৃত্যু বাষির্কী বিষয়ে। তাই এবিষয়ে আল্লাহর নাম নিয়ে লিখা শুরু করলাম। জানি না পাঠকগন কতটা উপকৃত হবেন।

    আজ ১২ ভাদ্র, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী। বাংলার বিদ্রোহী কবি নামে পরিচিত কাজী নজরুলের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ কুমিল্লা। নজরুলের রাজনীতি, প্রেম, বিয়ে, ব্যক্তিজীবন, সঙ্গীত ও সাহিত্যের বর্ণিল অধ্যায় জুড়ে রয়েছে কুমিল্লা।

    কাজী নজরুল ইসলাম তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো কাটিয়েছেন শিক্ষা-সাহিত্যের পাদপীঠ কুমিল্লায় ১৯২১ সালের এপ্রিলে প্রথমবারের মতো কুমিল্লায় এসেছিলেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। এরপর ১৯২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি কুমিল্লায় মোট পাঁচবার এসেছেন। প্রায় তিন বছরে পাঁচবার কুমিল্লায় এসে অবস্থান করেছেন ১১ মাসেরও বেশি সময়। কুমিল্লায় বিভিন্ন সময় অবস্থানকালে সৃষ্টিশীল নানা গান, কবিতা লিখেছেন তিনি। কবি নজরুলের রাজনৈতিক জীবনেও কুমিল্লার প্রভাব রয়েছে। তিনি ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ কবিতা লিখে শহরের রাজগঞ্জে গ্রেফতার হয়েছিলেন। কবি নজরুলের প্রাণের শহর কুমিল্লায় নজরুল প্রেমিরা কবিকে স্মরণ করে আপন মহিমায়।

    কবি নজরুলকে কেন্দ্র করে কুমিল্লায় সাংস্কৃতিক কর্মকা- ১৯৪৫ সালের মাঝামাঝিতেই শুরু হয়। এর আগে ১৯২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে কুমিল্লা ঈশ্বর পাঠশালায় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা আবৃত্তি ও নজরুল সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। কুমিল্লার সঙ্গে কবি নজরুলের সম্পর্কগুলো স্মৃতিফলক ও নামকরণে আজও চিরজাগরুক হয়ে আছে। কবি নজরুল কুমিল্লার মুরানগরসহ শহরের যেসব এলাকায় অবস্থান করেছেন, আড্ডা দিয়েছেন, গল্প করেছেন, সঙ্গীত-সাহিত্য চর্চা করেছেন সেসব স্থানে নামফলক, স্মৃতিফলক নির্মাণ করে চেতনায় কবি নজরুলকে ধারণ করে আছে কুমিল্লাবাসী।

    ১৯৮৩ সালে কুমিল্লার তৎকালিন জেলা প্রশাসক সৈয়দ আমিনুর রহমানের উদ্যোগে নজরুল স্মৃতিরক্ষা পরিষদের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় কুমিল্লায় কবির স্মৃতিবিজড়িত স্থানে স্থাপন করা হয় স্মৃতিফলক। এরমধ্যে মুরাদনগরের দৌলতপুরে কবি নজরুল মঞ্চ, মুরাদনগরের কোম্পানীগঞ্জ-নবীনগর সড়কের পাশে নজরুল তোরণ, আলী আকবর খানের দ্বিতল বাড়ি আঙ্গিনায় ‘আম তলা’ (যেখানে বসে কবি বাঁশি বাজাতেন), কুমিল্লা শহরের ঝাউতলা মসজিদের কাছে, ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের উচ্চমাধ্যমিক শাখার পূর্ব-দক্ষিণ কোণে (রানীর দিঘির পাড়ে), নজরুল এভিনিউ সড়কের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে, ফরিদা বিদ্যায়তনের সামনে, দারোগা বাড়ি, মুরাদপুর জানু মিয়া চৌধুরীর বাড়ি, দারোগা বাড়ি, চর্থায় শচীন দেববর্মনের বাড়ি, কান্দিরপাড় বসন্ত স্মৃতি পাঠাগারসহ বিভিন্ন এলাকায় স্মৃতিফলক রয়েছে।

    অবিভক্ত বাংলার (বর্তমানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ) বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া গ্রামে তিনি জন্মেছিলেন। তাঁর ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুন।

    প্রেমের, বিরহ-বেদনা ও সাম্যের কবি নজরুল বাংলা সাহিত্য-সংগীত তথা সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান পুরুষ। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে তার লেখনী ধূমকেতুর মতো আঘাত হেনে ভারতবাসীকে জাগিয়ে দিয়েছিল। তিনি পরিণত হন বিদ্রোহী কবিতে। সাম্ররাজ্যবাদ, ফ্যাসিবাদ, নিপীড়ন, অনাচার, বৈষম্য, শোষণ ও পরাধীনতার বিরুদ্ধে অগ্নিকণ্ঠে সোচ্চার হয়ে কবি লিখে গেছেন অসংখ্য কবিতা, গল্প, উপন্যাস, গান।
    চির প্রেমের কবি নজরুল। তিনি যৌবনের দূত। তিনি প্রেম নিয়েছিলেন, প্রেম চেয়েছিলেন। মূলত তিনি বিদ্রোহী, কিন্তু তার প্রেমিক রুপটিও প্রবাদপ্রতিম। তাই তিনি অনায়াসে বলে গেছেন, ‘আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন খুঁজি তারে আমি আপনায়।’ পৃথিবীতে এমন কম মানুষই আছেন যিনি প্রেমের টানে রক্তের সম্পর্কে অস্বীকার করে পথে বেরিয়ে পরতে পারেন।
    বাংলা কবিতায় নজরুলের আবির্ভাব একেবারেই উল্কার মত। হঠাৎ করে একদিন তিনি বাংলা সাহিত্যে আবির্ভুত হয়ে সমস্ত আকাশকে কীভাবে রাঙ্গিয়ে গেলেন অথবা উজ্জ্বল করে দিলেন তা নিয়ে এখনো গবেষণা হতে পারে।
    কোন সঞ্জীবনি মন্ত্রে তিনি উচ্চকন্ঠে বলতে পারেন ‘বল বীর, বল উন্নত মম শির’ অথবা মহা-বিদ্রোহী রণ-ক্লান্ত/ আমি সেই দিন হব শান্ত/ যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না /অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণভূমে রণিবে না’।
    বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের বস্তুনিষ্ঠ জীবনী লেখার ইচ্ছে অনেক দিনের, অনেকেই লিখেছেন কিন্তু আমার সময় হয়ে উঠেনি। বর্ণাঢ্য কবিজীবনকে সব শ্রেণির পাঠকের জন্য সহজ করে, প্রামাণ্যতা অক্ষুন্ন রেখে উপস্থাপনের চেষ্টা মাত্র। তাঁর নজরুল জীবনকথা (প্রথমা প্রকাশন, প্রথম প্রকাশ ২০১৬, ২য় মুদ্রণ, মার্চ ২০১৭) বইয়ে। ৩২টি অধ্যায়ে সাতাত্তর বছরের এক মহাজীবনকে তিনি ধাপে ধাপে বর্ণনা ও ব্যাখ্যা করেছেন।

    নজরুলের জন্মগ্রাম চুরুলিয়ার নিকটবর্তী সাঁওতাল পরগনার বিদ্রোহী প্রতিবেশকে লেখক বিদ্রোহী নজরুলের প্রাথমিক চেতনাভূমি হিসেবে শনাক্ত করেন: ‘নজরুলের জন্মের দশ বছর আগেই এই অঞ্চলে ঘটে মুন্ডা বিদ্রোহ। এসব বিদ্রোহের গল্প ও গান চুরুলিয়া ও এর আশপাশের অঞ্চলের, বিশেষ করে একটু বেশি বয়সী মানুষের মুখে মুখে ফিরত। বিদ্রোহী কবি নজরুল তাঁর ছোটবেলায় এসব লড়াই-সংগ্রামের গল্প শুনেছেন বলে মনে হয়। তাঁর মনের গঠনে নিশ্চয়ই তা কমবেশি প্রভাব ফেলেছিল।’
    শিয়ারশোল স্কুলের দুজন শিক্ষক-সতীশচন্দ্র কাঞ্জিলাল ও হাফিজ নূরন্নবীর কথা আমাদের বিশেষভাবে মনে করিয়ে দেন লেখক; যাঁদের কাছ থেকে হিন্দুপুরাণ ও মুসলিম ঐতিহ্যের সমন্বয়ী সুর উপহার পেয়েছেন কবি।
    এ বছরের ডিসেম্বরে নজরুলের ‘বিদ্রোহী’ কবিতা রচনার শতবর্ষ পূর্ণ হবে। ১০০ বছর আগে এই কবিতা লেখার সেই স্মরণীয় রজনী যেন ছবির মতো অক্ষরে এঁকেছেন মোরশেদ শফিউল হাসান:
    ‘বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির যে ঘরটিতে নজরুল ও মুজফফর আহমদ থাকতেন, সেখানে বসেই ১৯২১ সালের বড়দিনের ছুটির সময় এক রাতে নজরুল তাঁর “বিদ্রোহী” কবিতাটি লেখেন। কবিতাটি তিনি প্রথমে লেখেন পেনসিল দিয়ে। সেকালে বলপেন এমনকি ফাউন্টেন পেনেরও চল ছিল না। দোয়াতে বারবার কলম ডুবিয়ে লিখতে হতো। মুজফফর আহমদের মতে, এভাবে লিখতে গিয়ে পাছে তাঁর ভাবনায় ছেদ পড়ে, তাই নজরুল পেনসিল দিয়েই পুরো কবিতাটি লিখেছিলেন।’

    এ বছর নজরুলের কুমিল্লা আগমনেরও শতবর্ষ। তাঁর জীবন ও সৃষ্টিতে ‘কুমিল্লা’ এক বিশিষ্ট অধ্যায় হয়ে আছে। ১৯২১ সালে কয়েক দফা কুমিল্লা আগমন ও অবস্থান, দুই ভুবনের দুই নারীÑনার্গিস ও প্রমীলার সঙ্গে সহৃদয় সংযোগের পাশাপাশি তৎকালীন কুমিল্লার বিপ্লবী আবহে লেখক তুলে ধরেছেন নজরুল ইসলামকে:
    ‘সময়টা তখন অসহযোগ আন্দোলনের। মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সারা দেশে ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়েছে। সে আন্দোলনের ঢেউ ত্রিপুরার মহকুমা শহর কুমিল্লাতেও এসে লেগেছে। নজরুলকেও এ সময় রাজনৈতিক নানা সভা-মিছিলে অংশ নিতে দেখা গেল। মিছিলের সামনে গলায় হারমোনিয়াম ঝুলিয়ে নিজের লেখা গান গাইতে গাইতে শহর প্রদক্ষিণ করছেন তিনি। সেই গানের কথা ছিল:
    ভিক্ষা দাও! ভিক্ষা দাও!
    ফিরে চাও ওগো পুরবাসী
    সন্তান দ্বারে উপবাসী…’
    লেখক নজরুলের জীবনী লিখতে গিয়ে তাঁর সমসাময়িক কাল সম্পর্কেও সম্পূর্ণ সচেতন। তাই ধূমকেতু পত্রিকায় ১৯২২-এর ১৩ অক্টোবর ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতা চেয়ে লেখা নজরুলের সম্পাদকীয় প্রবন্ধের কথা উল্লেখ করতে ভোলেননি উর্দু কবি ও রাজনীতিক হসরত মোহানির প্রসঙ্গ, যিনি এর আগে ১৯২১-এর ডিসেম্বরে একই দাবি উত্থাপন করেছিলেন: ‘যত দূর জানা যায়, বাঙলা দেশে নজরুলই প্রথম, এমনকি সমগ্র ভারতবর্ষেও মওলানা হসরত মোহানির পর দ্বিতীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি, যিনি প্রকাশ্যে পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি জানান।’
    হুগলিতে বসবাসকালে হুগলি, নৈহাটির শ্রমিকদের কবিতা পড়ে শোনানো, তাঁদের শ্রান্তি বিনোদনের জন্য বাংলা ও হিন্দি গান গাওয়া, চটকল শ্রমিকদের ধর্মঘটের সমর্থনে মিছিলে নামার তথ্য প্রমাণ করে নজরুল শুধু লেখাতেই নয়, বাস্তবেও ছিলেন মাটির কাছাকাছি কবি। ১৯২৭ সালে গণ-বাণী পত্রিকায় ‘অন্তর-ন্যাশনাল সঙ্গীত’ শিরোনামে শ্রমিকশ্রেণির আন্তর্জাতিক সংগীতের নজরুল-কৃত বাংলা রূপান্তর প্রকাশ পায়: ‘জাগো অনশন-বন্দী, ওঠ রে যত/ জগতের লাঞ্ছিত ভাগ্যাহত।’
    নজরুলের প্রাণছোঁয়া অনুবাদ বিষয়ে লেখকের পর্যবেক্ষণ: ‘এই অনুবাদটি করার সময় নজরুল ইউজেন পত্তিয়েরের লেখা মূল ফরাসি গানটির কিংবা তার ইংরেজি বা অন্য কোনো অনুবাদের নোটেশন বা স্বরলিপি দেখার সুযোগ পাননি। তার পরও নজরুলের অনুবাদ সম্পর্কে মুজফফর আহমদ বলেছেন: “বাংলা ভাষায় সর্বোৎকৃষ্ট তো বটেই, আমার বিশ্বাস ভারতীয় ভাষাগুলিতে যতসব অনুবাদ হয়েছে সে-সবের সেরা”।’
    নজরুল-জীবনের অনেক অজ্ঞাত বা স্বল্পজ্ঞাত তথ্যের সমাহার এই বই। যেমন ১৯২৯ সালে এক কৃষক সম্মেলনে কুষ্টিয়া সফরকালে চারণকবি মুকুন্দ দাসের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ ও সখ্যের বিবরণ পাই: ‘নজরুলের কুষ্টিয়া অবস্থানকালীন কুমারখালীতে তাঁকে একটি সংবর্ধনা দেওয়া হয়। চারণকবি মুকুন্দ দাস সে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সংবর্ধনার উত্তরে দেওয়া বক্তৃতায় নজরুল মুকুন্দ দাসকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, “যাঁরা গান বা বক্তৃতা দ্বারা দেশের জাগরণ আনতে চেষ্টা করেন তাঁরা সকলেই চারণ। আপনি, আমি, আমরা সবাই চারণ, তবে আপনি আমাদের স¤্রাট, অর্থাৎ চারণস¤্রাট”।’
    বাংলা গানের বুলবুল নজরুলের সংগীতজীবন নিয়ে তিনি বিশদ ও মনোহর আলোচনা করেছেন। নজরুলের রাগরাগিণীর তত্ত্বীয় প্রসঙ্গের সমান্তরালে অনায়াসে আসে ১৯৩৪ সালে কলকাতার বিবেকানন্দ রোডে ‘কলগীতি’ নামে নজরুলের গ্রামোফোন যন্ত্র ও রেকর্ড বিক্রির দোকান খোলার অনুষঙ্গ। দাবা খেলার আমুদে খতিয়ানের সঙ্গে সঙ্গে এসেছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষার গুরুদায়িত্ব পালনের কথাও। রঙ্গমঞ্চের নজরুলও থাকেননি অনালোচিত। নজরুল জীবনকথায় পাই সর্বত্রগামী এমন নজরুলকে:
    ‘নজরুলের লেখা গীতিনাট্য মধুবালার অভিনয় দিয়েই ১৯৪০-এর দশকের গোড়ায় নাট্যভারতী থিয়েটার তার যাত্রা শুরু করে। এতে গানগুলোতে কণ্ঠ দিয়েছিলেন হরিমতী ও রাধারাণী দেবী। মধুবালা যে চল্লিশ রজনী চলেছিল, তা এই গানগুলোর আকর্ষণেই।’
    এই বইয়ে কিছু প্রচলিত ভ্রান্তি দূর করেছেন মোরশেদ শফিউল হাসান। ‘যদি আর বাঁশি না বাজে’ শিরোনামে ১৯৪১-এর এপ্রিলে বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির রজতজয়ন্তী উৎসবে প্রদত্ত সভাপতির অভিভাষণকে অনেকেই তাঁর জীবনের শেষ ভাষণ বা বক্তৃতা হিসেবে চিহ্নিত করে থাকেন। তবে নজরুল জীবনকথায় লেখক জানাচ্ছেন, এর কয়েক মাস পর ১৯৪১-এর সেপ্টেম্বরে হাওড়ায় রবীন্দ্র-স্মরণ অনুষ্ঠানে এবং একই সালের ২৯ নভেম্বর হাজী মোহাম্মদ মুহসীনের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সভাতেও তিনি বক্তৃতা প্রদান করেন।
    এরপর ৩৫ বছরের নিস্তব্ধতা। নজরুল বেঁচেছিলেন ১৯৭৬ পর্যন্ত কিন্তু ১৯৪২ থেকেই তাঁর অসুস্থতার শুরু। লেখক এই সময়কালে নজরুলের চিকিৎসা তৎপরতা এবং ১৯৪৭-এ বিভক্ত বাংলার দুই অংশে নজরুলচর্চার আদ্যোপান্ত তুলে ধরেছেন। একদিকে কায়েমি স্বার্থবাদী পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর খ-িত নজরুলকে সাম্প্রদায়িক অভিসন্ধিতে ব্যবহারের চেষ্টা আর অন্যদিকে পঞ্চাশ ও ষাটের দশকজুড়ে পূর্ব বাংলার স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়-পাড়া-মহল্লায় ‘রবীন্দ্র-নজরুল-সুকান্তজয়ন্তী’ পালনের মধ্য দিয়ে অসাম্প্রদায়িক জাতীয়তাবাদী চেতনা শাণিত করার বিষয়টিও উঠে এসেছে।
    ১৯৭২ সালের ১১ জ্যৈষ্ঠ ‘জ্যৈষ্ঠের ঝড়’ নজরুল কলকাতা থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় আসেন। ঝোড়ো জীবনের শেষভাগে ঢাকায় অবস্থান, সংবর্ধনা ও কবিকে ঘিরে জনতার বিপুল আগ্রহের কথা সবিস্তার এসেছে বইয়ের শেষ দুই অধ্যায়ে। ঢাকার বাইরে কবিকে প্রদত্ত দুটো সংবর্ধনার কৌতূহলোদ্দীপক বিবরণ দিয়েছেন লেখক:
    ‘১৯৭৪ সালেই ঢাকার বাইরে টাঙ্গাইলে ও নারায়ণগঞ্জেও কবিকে দুটি সংবর্ধনা দেওয়া হয়। নারায়ণগঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটির আয়োজক ছিল সেখানকার “শাপলা” নামক একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন। নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে রণেশ দাশগুপ্ত, অধ্যাপক করুণাময় গোস্বামী প্রমুখ বক্তব্য দেন। সেদিন কবিকে দেখতে আসা মানুষের ভিড়ের চাপে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের দেয়াল ভেঙে পড়েছিল।’
    বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পরই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশে তাঁর বসবাসের ব্যবস্থা করেন। ধানমন্ডিতে কবির জন্য একটি বাড়ি প্রদান করেন।
    ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের শোকাবহ ঘটনার এক বছর পর ১২ই ভাদ্র ১৯৭৬ সালের শোকের মাসেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (সাবেক পিজি হাসপাতাল) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন নজরুল।
    কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। এখানেই তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন।
    কবি নজরুল তাঁর ৭৭ বছরের জীবনকালের ৩৪ বছরই ছিলেন নির্বাক (১৯৪২-১৯৭৬)। বেঁচে থাকার জীবন সংগ্রাম, অভাব-অনটন, নানা প্রতিকূলতা, জেলজুলুম ও হুলিয়ার মধ্যেই তাঁর সাহিত্যচর্চার সময় ছিল মাত্র ২৪ বছর (১৯১৯-১৯৪২)।
    এই ২৪ বছরে নজরুল সৃষ্টি করে গেছেন ২২টি কাব্যগ্রন্থ, সাড়ে ৩ হাজার, মতান্তরে ৭ হাজার গানসহ ১৪টি সংগীত গ্রন্থ, ৩টি কাব্যানুবাদ ও ৩টি উপন্যাস গ্রন্থ, ৩টি নাটক, ৩টি গল্পগ্রন্থ, ৫টি প্রবন্ধ, ২টি কিশোর নাটিকা, ২টি কিশোর কাব্য, ৭টি চলচ্চিত্র কাহিনীসহ অসংখ্য কালজয়ী রচনা।
    তাই তো একাধারে তিনি ছিলেন কবি, গল্পকার, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, শিশু সাহিত্যিক, অনুবাদক, প্রাবন্ধিক, সম্পাদক, সাংবাদিক, গীতিকার, সুরকার, স্বরলিপিকার, গীতিনাট্যকার, গীতালেখ্য রচয়িতা, চলচ্চিত্র কাহিনীকার, চলচ্চিত্র পরিচালক, সঙ্গীত পরিচালক, গায়ক, বাদক, সঙ্গীতজ্ঞ ও অভিনেতা।

  • ঢাকায় আনসার গার্ড ব্যাটালিয়ানের ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ-যাপিত

    ঢাকায় আনসার গার্ড ব্যাটালিয়ানের ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ-যাপিত

    ।।এ কে খান ও গোলাম মোস্তফা রাঙ্গা।।

    বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর বিশেষায়িত ইউনিট, আনসার গার্ড ব্যাটালিয়ন (এজিবি), তাদের পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সম্প্রতি অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপন করেছে। রাজধানীর ভাটারা এলাকায় অবস্থিত এই ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ, এসজিপি, বিএএম, এনডিইউ, এএফডব্লিউসি, পিএসসি।

    অনুষ্ঠানের শুরুতে একটি চৌকস দল মহাপরিচালককে “গার্ড অব অনার” প্রদান করে। এরপর মহাপরিচালক কেক কেটে এবং বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর শুভ উদ্বোধন করেন। প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত দরবারে মহাপরিচালক এজিবি’র সকল সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, একটি বিশেষায়িত ইউনিট হিসেবে এজিবি’র সদস্যদের আরও দক্ষ, পেশাদার এবং শারীরিক ভাবে সক্ষম করতে প্রশিক্ষণের মানোন্নয়নের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, এজিবি’র সদস্যরা ইতোমধ্যেই সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করে প্রশংসিত হয়েছে। মহাপরিচালক শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী কোনো কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য সকল সদস্যকে কঠোর নির্দেশনা দেন। বাহিনীর সদস্যদের মৌলিক চাহিদা পূরণের প্রতি তার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে মহাপরিচালক বলেন, তিনি সবসময় সদস্যদের প্রাপ্য অধিকার নিশ্চিতে কাজ করে যাবেন। তিনি সকল সদস্যকে পেশাগত দায়িত্ব ও ব্যক্তিগত জীবনে সচেতনতা, সততা ও শৃঙ্খলার সাথে পথ চলার নির্দেশ দেন। অনুষ্ঠানে সদর দপ্তরের উপমহাপরিচালক (অপারেশন্স) মোঃ সাইফুল্লাহ রাসেল, বিএএম, পিএএমএস, বিভিএমএস, এজিবি’র অধিনায়ক ও পরিচালক রাসেল আহমেদ, বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কর্মচারী বিভিন্ন পদবির সদস্য এবং গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শেষে আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে অধিনায়ক মহাপরিচালক-কে একটি বিশেষ সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সদস্যদের জন্য বিশেষ প্রীতি ভোজেরও আয়োজন করা হয়

  • বুড়িচংয়ে গ্রামের নাম পরি-বর্তন করে ভু-য়া শিক্ষক নি-য়োগের অ-ভিযোগ

    বুড়িচংয়ে গ্রামের নাম পরি-বর্তন করে ভু-য়া শিক্ষক নি-য়োগের অ-ভিযোগ

    তরিকুল ইসলাম তরুন,
    কুমিল্লা প্রতিনিধি:
    কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার বাকশিমুল ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী কালিকাপুর গ্রামে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া শিক্ষক নিয়োগ দেখিয়ে সরকারি রাজস্ব খাত থেকে বেতন ভোগের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। গ্রামবাসীর অভিযোগ—একটি কুচক্রী মহল সু-কৌশলে গ্রামের নাম পরিবর্তন করে “উত্তর কালিকাপুর” দেখিয়ে হাফিজিয়া মাদ্রাসাকে স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা হিসেবে চালানোর পাঁয়তারা করছে।

    সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালে এ ধরনের প্রতারণার ঘটনা প্রথম প্রকাশ পায়। বিষয়টি প্রকাশিত হয় জাতীয় দৈনিক রূপসী বাংলা (১৯ আগস্ট ২০১৯) এবং দৈনিক যুগান্তর (২৩ আগস্ট ২০১৯)-এ। একই বছর জেলা প্রশাসক কার্যালয়, কুমিল্লা থেকে স্মারক নং-১৯৮০১ (শিক্ষা), তারিখ ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ খ্রিস্টাব্দে প্রাপ্ত ডকেটের ভিত্তিতে ঘটনাটি অনুসন্ধানে নেয়া হয়। তখন অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়, গ্রামের কবরস্থানের জমিকে মাদ্রাসার নামে দেখিয়ে এবং ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে মাত্র ৫টি পরিবার থেকে ৫ জনকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেখানো হয়েছিল।

    স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সরকারি তদন্তে ভুয়া কাগজপত্র ধরা পড়ার পর গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে কালিকাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক গণসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রতারণায় জড়িতরা ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং মুরব্বি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জামশেদুল আলমের নিকট ভুয়া কাগজপত্র জমা রাখে। তখন সিদ্ধান্ত হয়—ভবিষ্যতে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের উদ্যোগ নিলে তা গ্রামবাসীর মতামত ও সরকারি নিয়মনীতি মেনে করা হবে।

    তবে অভিযোগ রয়েছে, সম্প্রতি পুনরায় ওই চক্রটি মাদ্রাসার নামে শিক্ষক নিয়োগ দেখিয়ে সরকারি বেতন ভোগের চেষ্টা করছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, ভুয়া শিক্ষক হিসেবে যাদের নাম ব্যবহার করা হচ্ছে তারা হলেন—
    ১) মোহাম্মদ শহিদ উল্লাহ (কথিত প্রধান শিক্ষক)
    ২) আফজাল হোসেন (সহকারী প্রধান শিক্ষক)
    ৩) নুরে তামজিদ (সহকারী জুনিয়র শিক্ষিকা)
    ৪) কানিজ ফাতেমা (সহকারী জুনিয়র শিক্ষিকা)
    ৫) নাজমা আক্তার (সহকারী জুনিয়র শিক্ষিকা)

    গ্রামবাসীর দাবি, “উত্তর কালিকাপুর” নামে কোনো গ্রামের অস্তিত্ব নেই। অথচ আদি গ্রাম কালিকাপুরের নাম পরিবর্তন করে প্রতারণামূলকভাবে কাগজপত্র জমা দেয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে হাজার বছরের কবরস্থানের জায়গার পবিত্রতা নষ্ট করা হচ্ছে এবং অযোগ্য লোকদেরকে ভুয়া শিক্ষক নিয়োগ দেখিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করার চেষ্টা চলছে।

    কালিকাপুর গ্রামের সচেতন মহল বলছে—এটি একটি শিক্ষানুরাগী গ্রাম, যেখানে ইতোমধ্যে সরকারি ডিগ্রি কলেজ, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিন্ডারগার্টেন, হাফিজিয়া মাদ্রাসা, ইউপি অফিস ও ভূমি অফিস রয়েছে। সমাজের মানুষ পরস্পরের সহযোগিতায় উন্নয়নের পথে গ্রামকে এগিয়ে নিয়েছে। তাই গ্রামের নাম পরিবর্তন ও ভুয়া শিক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে সরকারি রাজস্ব খাত থেকে অর্থ আত্মসাৎ করার ষড়যন্ত্র কোনোভাবেই মেনে নেয়া হবে না।

    উপরোক্ত বিষয়ে মাদ্রাসার কথিত প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শহিদ উল্লাহ অভিযোগগুলো মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতার সঙ্গে অভিযোগকারীদের পূর্বে বিরোধ ছিল। সম্ভবত সেই বিরোধের কারণেই তারা এমন অভিযোগ করছে। মাদ্রাসার নামকরণ করেছেন প্রতিষ্ঠাতা, যিনি ইতোমধ্যে মৃত। নামকরণ নিয়ে আমি কিছু জানি না, আমি এখানে কেবল শিক্ষাদান করি। শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও মাদ্রাসা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হয়েছে।”

    তিনি আরও বলেন, “আপনারা সরেজমিনে আসুন, গ্রামের আরও অনেক মানুষ আছেন। তাদের কাছ থেকেও বিস্তারিত জেনে তারপর সংবাদ প্রচার করুন।”

    গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক কুমিল্লার নিকট আবেদন জানানো হয়েছে—বিষয়টি পুনরায় সুষ্ঠু অনুসন্ধানপূর্বক প্রতারণা ও জালিয়াতির হাত থেকে গ্রামকে রক্ষা করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।

  • পাইকগাছায় ভাসমান বীজতলায় সফ-লতা পেয়েছে কৃষক

    পাইকগাছায় ভাসমান বীজতলায় সফ-লতা পেয়েছে কৃষক

    ইমদাদুল হক,পাইকগাছা (খুলনা)।।
    খুলনার পাইকগাছায় অতিবৃষ্টি ও জলাবদ্ধতা মোকাবেলায় কলাগাছের ভেলায় ভাসমান ধানের বীজতলা তৈরি করে সফলতা পেয়েছে কৃষক পরিবার। অতিবৃষ্টি, নদীভাঙন ও জলাবদ্ধতায় নাকাল উপকূলের পাইকগাছার কৃষক। সর্বশেষ টানা বর্ষণে শুধু খুলনায়ই ফসল,সবজি ও আমনের বীজতলা নষ্ট হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১৩ সহস্রাধিক কৃষক। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় ভাসমান ধানের বীজতলা তৈরি করে সফলতা পেয়েছে খুলনার এক কৃষক পরিবার।চলতি বর্ষা মৌসুমে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতে কয়েক দফা বীজতলা নষ্ট হওয়ায় এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেন পাইকগাছা উপজেলার নোয়াকাটি গ্রামের কৃষক রোকেয়া পারভীন। দেবর আব্দুল কুদ্দুসকে নিয়ে ফেলে দেওয়া কলাগাছ, বাঁশ ও মাটি ব্যবহার করে তৈরি বীজতলা এখন দুর্যোগকবলিত কৃষকদের আশার আলো দেখাচ্ছে।কৃষাণী রোকেয়া পারভীন বলেন, বৃষ্টির জন্য কয়েক দফায় প্রায় ১০০ কেজি বীজ ধান নষ্ট হয়ে গেছে। কোনো কূল-কিনারা পাচ্ছিলাম না। অ্যাওসেডের কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে কলাগাছের ভেলা বানিয়ে কাদামাটি তুলে ব্রি-৭৫ আমন ধানের বীজ ফেলছি। একটি বীজও নষ্ট হয়নি, মাত্র ১৫ দিনে চারা রোপণের মতো হয়েছে। এখন আশপাশের কৃষকরা ভাসমান বীজতলায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন।রোকেয়ার দেবর আব্দুল কুদ্দুস বলেন, প্রথমে আমাদের কাজ দেখে সবাই পাগল বলত। বলত কলাগাছের ভেলায় ধান হলে তো কারো জমির দরকার ছিল না। কিন্তু এখন সবাই অবাক। এখানে কোনো সার-কীটনাশকও লাগেনি। জমিতেও এমন ধানের চারা আর কখনো হয়নি।শুধু আমরা না, গ্রামের সবাই খুশি।নোয়াকাটি গ্রামের কৃষক কবির মোড়ল বলেন, মাত্র ১০ দিনে তিন-চার ইঞ্চি ধানের চারা। যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না। অথচ আমার বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। কৃষক আবদুল্লাহ মোড়ল জানান, চলতি আমন মৌসুম বৃষ্টির কারণে এক মাস দেরি হয়েছে। সামনে আর সমস্যা হবে না। কলার ভেলা, কচুরিপানা ও প্লাস্টিকের ড্রামের মাধ্যমে মাচা তৈরি করে ধানের বীজতলা করা যাবে।বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অটোক্রোপ কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, কলাগাছের ভেলায় ধানের বীজতলা কৃষকদের স্বপ্ন দেখাবে। ভাসমান ভেলায় ধানের বীজতলা তৈরিতে প্রত্যক্ষভাবে কাজ করেছেন অ্যাওসেডের কমিউনিটি মোবালাইজার শুভঙ্কর বিশ্বাস। তিনি বলেন, এবার পাইকগাছাসহ খুলনা অঞ্চলে আমনের বীজতলা কয়েকবার নষ্ট হয়ে যায়। এ অবস্থা থেকেই ভাসমান বীজতলা তৈরির ভাবনা, কৃষকরা যার সফল বাস্তবায়ন করেছেন।পাইকগাছা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ একরামুল হোসেন বলেন, ইতিপূর্বে পাইকগাছায় ভাসমান বীজতলা তৈরির প্রয়োজন পড়েনি। চলতি বর্ষা মৌসুমে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতে কৃষকের বীজ তলা একাধিকবার নষ্ট হয়েছে। এর মধ্যেও কৃষকরা উচু জায়গায় বীজ তলা তৈরি করেছে। বিগত ২০ বছরে এমন বৃস্টি হয়নি। এনজিও অ্যাওসেডের উদ্যেগে উপজেলার নোয়াকাটিতে কলাগাছের ভেলায় একটি বীজতলা করা হয়েছে।খুলনার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন, এটি ভালো উদ্যোগ। কৃষকের ঝুঁকি কমাতে উঁচু স্থানে বা ভেলা বিকল্পভাবে বীজতলার ব্যবস্থা করতে হবে।

    ইমদাদুল হক
    পাইকগাছা খুলনা।

  • ভালুকায় ৩ দিনব্যাপী বৃক্ষরোপণ অ-ভিযান ও বৃক্ষ মেলার উ-দ্বোধন

    ভালুকায় ৩ দিনব্যাপী বৃক্ষরোপণ অ-ভিযান ও বৃক্ষ মেলার উ-দ্বোধন

    আরিফ রববানী ময়মনসিংহ।।
    বৃক্ষ দিয়ে সাজাই দেশ, সমৃদ্ধ করি বাংলাদেশ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ময়মনসিংহের ভালুকায় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও ৩দিনব্যাপী বৃক্ষ মেলা ২০২৫ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে।

    মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিকাল ৩টায় ভালুকা উপজেলা প্রশাসন ও বন বিভাগ ভালুকা উপজেলার যৌথ আয়োজনে ভালুকা উপজেলা পরিষদ চত্বরে আয়োজিত মেলার ফিতা কেটে এবং বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে উদ্বোধন করেন ময়মনসিংহ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ নূরুল করিম।

    উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা পরিবেশ ও বন উন্নয়ন কমিটির সভাপতি হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন- সহকারী কমিশনার ভূমি ইকবাল হোসেনসহ উপজেলা প্রশাসন, বন বিভাগ এবং স্থানীয় রাজনৈতিক সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

    এসময় বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বনজ সম্পদ সংরক্ষণ ও বৃক্ষরোপণ অপরিহার্য। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিরাপদ বাংলাদেশ উপহার দিতে হলে প্রত্যেকেরই অন্তত একটি করে গাছ রোপণ করা উচিত। তাঁরা আরও বলেন, বৃক্ষই মানুষের অকৃত্রিম বন্ধু- যা আমাদের খাদ্য, আশ্রয়, জ্বালানি ও অক্সিজেন সরবরাহ করে। তাই পরিকল্পিত বনায়ন ও নার্সারিগুলোকে সমৃদ্ধ করার আহবান জানান।

    বৃক্ষ রোপনে সকলকে উৎসাহী করার আহবান জানিয়ে প্রধান অতিথি কাজী মোহাম্মদ নূরুল করিম বলেন, বৃক্ষ হচ্ছে শস্য ভান্ডার। খাদ্যশস্যের প্রধান উৎস হচ্ছে এই গাছ। গাছ স্বজীবী আমরা পরজীবী। এটি আমাদের অক্সিজেন ও খাবার দিচ্ছে। গাছ লাগানো সওয়াবের কাজ। আপনারা মেলা থেকে অন্তত একটি করে গাছ কিনবেন। বৃক্ষমেলা প্রকৃতপক্ষে গাছ লাগানোর একটি সামাজিক আন্দোলন, একটি ক্যাম্পেইন। সবাইকে সারাবছর গাছ লাগানোর আহবান জানান প্রধান অতিথি।

    মেলায় প্রায় শতাধিক স্টল স্থান পেয়েছে। ভালুকা অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গার নির্ধারিত নার্সারি মালিকরা এ স্টলগুলোতে বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ নিয়ে এসেছেন।

    বৃক্ষ ও বৃক্ষমেলার গুরুত্ব তুলে ধরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা পরিবেশ ও বন উন্নয়ন কমিটির সভাপতি হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, আমরা মানবজাতি কতোটা নির্বোধ। নির্বিচারে গাছ কাটছি, বন ধ্বংস করছি। যে গাছ কিনা মানবজাতির জন্য খাবার তৈরি করছে। বিপরীতে আমরা কিছু তৈরি করতে পারিনা। ঔষধি গাছগুলো মানুষের ঔষধ তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে। আমরা যে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত করছি সেটা গাছ শোষণ করে নিচ্ছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করে গাছ লাগানোর ব্যাপারে আমাদের সচেতন হওয়া দরকার। বায়ু দূষণ রোধ করার একমাত্র উত্তম উপায় হচ্ছে বেশি করে গাছ লাগানো। তিনি সকলকে বেশী করে গাছ লাগানোর আহবান জানান।

  • জলাশয় অ-বৈধভাবে বন্দোবস্ত দেওয়ায় রেল কর্মকর্তা রাশেদের বি-রুদ্ধে ত-দন্ত শুরু

    জলাশয় অ-বৈধভাবে বন্দোবস্ত দেওয়ায় রেল কর্মকর্তা রাশেদের বি-রুদ্ধে ত-দন্ত শুরু

    এম এ সালাম,
    সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি :
    বাংলাদেশ সরকারের রেল আইন ভঙ্গ করে রেল কর্মকর্তার পিতার নামে রেলের জলাশয় বন্দোবস্ত দেওয়ায় অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে পাকশী রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পাকশী রেল অঞ্চলের সহকারী ভু সম্পত্তি কর্মকর্তা মামুন অর রশীদের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি লাহিড়ী মোহনপুর টু দিলপাশার স্টেশনের মধ্যবর্তী উল্লাপাড়া উপজেলার পশ্চিম বংকিরাট মৌজার দিলপাশার রেলসেতুর নিচের বিবাদমান জলাশয় পরিদর্শন করেন তদন্ত কমিটি। এ সময় কমিটির অপর দুই সদস্য উল্লাপাড়া রেলস্টেশনের কর্মরত কাকন গো শরিফুল ইসলাম এবং পাকশী হেড কোয়াটারের অফিস সহকারী আহসান হাবীব উপস্থিত ছিলেন।
    অভিযোগকারী তুহিনের অভিযোগে জানা গেছে, ১৯৭০ সাল থেকে উল্লাপাড়া উপজেলার পশ্চিম বংকিরাট মৌজার সীমান্তে দিলপাশার রেলসেতুর নিচে সি এস-২৫ (টিপি নং-১৫৪/৫ থেকে ১৫৪/৬) দাগে ১ দশমিক ৫২ শতাংশ জলাশয় মৎস্য আহরণের জন্য রেল আইন মেনে খাজনা পরিশোধ করে উল্লাপাড়া উপজেলার বংকিরাট গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ মির্জা ও তার ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লায়েক মির্জা উভয়ে এই জলাশয়ের পাশ্ববর্তী জমির মালিক হওয়ায় ৫৫ বছর ধরে জলাশয়টি বন্দোবস্ত নিয়ে ভোগ দখল করেন। তাদের অবর্তমানে লায়েক মির্জার সন্তান মির্জা কে. ই তুহিন ভোগ দখলে রয়েছেন। কিন্তু চলতি বছরে খাজনা পরিশোধ করতে গিয়ে তুহিন দেখতে পান তাদের ভোগ- দখলী জলাশয়টি কোন রকম নোটিশ ব্যতীত অবৈধ উপায়ে কতৃপক্ষ জনৈক আলী আকবর নামের এক ব্যক্তিকে নতুন করে গত ২৮ জুলাই- ২০২৫ ইং তারিখে বাংলাদেশ রেলওয়ে (পশ্চিমাঞ্চল) রাজশাহীতে কর্মরত সংস্থাপন কর্মকর্তা তার পিতার নামে বন্দোবস্ত দিয়েছেন। এই সুচতুর, দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী এস. এম রাশেদ ইবনে আকবর তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে সম্পূর্ণ অন্যায় ভাবে স্বজনপ্রীতি করে তার পিতা আলী আকবর (বাসা ১০/৫, মোল্লাপাড়া রোড, খালিশপুর, খুলনার নামে অবৈধভাবে খাস আদায় করেছেন। এটা রেলওয়ে আইনের নিয়ম ও বিধিবর্হিভুত। মির্জা কে. ই তুহিন ব্যবস্থা চেয়ে বাংলাদেশ রেল মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মহাপরিচালক এবং পাকশী মহাব্যবস্থাপক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে এই তদন্ত কমিটি গঠন করেন কতৃপক্ষ।

    মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের দাবি অবৈধ ইজারা বাতিল পুর্বক পুনরায় প্রকৃত ইজারদাদের নিকট হস্তান্তর করে শান্তি স্থাপন করার অনুরোধ জানান তারা।

    তদন্ত কমিটির প্রধান পাকশী সহকারী ভু- সম্পত্তি কর্মকর্তা মোঃ মামুন অর রশিদ গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। বিষয়টি আরও অধিক তদন্ত সাপেক্ষে রির্পোট প্রদান করা হবে।

    এ ব্যাপারে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহা- পরিচালক মোঃ আফজাল হোসেন মুঠোফোনে জানান, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • খেলার মাঠ র-ক্ষায় মান-ববন্ধন ও র‍্যালি

    খেলার মাঠ র-ক্ষায় মান-ববন্ধন ও র‍্যালি

    দিনাজপুর প্রতিনিধি- দিনাজপুরের বীরগঞ্জ শহীদ মিনার চত্বরে ২৭ই আগস্ট বুধবার দুপুর ১২ টায় পশ্চিম ভোগডোমায় খেলার মাঠ রক্ষায় মানববন্ধন করেন স্থানীয় জনগণ।

    মানববন্ধনে বক্তাগণ বলেন, উপজেলার পাল্টাপুর ইউনিয়নের পশ্চিম ভোগডোমায় আদিবাসী ও স্থানীয় মুসলিম জনতার দীর্ঘদিনের খেলার মাঠের ফুটবল গোল পোস্ট ভেঙ্গে ফেলে হ্যারো দিয়ে চাষ করে ঐ এলাকার মৃত সোহরাব আলীর ছেলে নুরুন্নবী, তার ভাই মাসুদ, মামুনসহ অন্যরা বলে মানববন্ধনে অংশ নেয়া প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভূমিদস্যর লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সেখানে সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে কলার চারাগাছসহ বনজ বৃক্ষের চারাগাছ লাগানোর চেষ্টা করে। কিন্তু আদিবাসী প্রতিবাদি ইয়ংস্টার ক্লাবের সদস্যগন এবং গ্রামবাসীরা তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ভূমিদস্যরা পিছু হটতে বাধ্য হয়।

    ঐ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইয়ং স্টার ক্লাবের পক্ষে সভাপতি বাবু লাল মুর্মু ও সাধারণ সম্পাদক রুবেল বাস্কে জেলা প্রশাসক বরাবর ভূমি দস্যুদের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন বলেও তারা জানায়।

    মানববন্ধনে অবিলম্বে ভূমির দস্যু নূরনবী সহ অন্যান্যদের গ্রেপ্তারের দাবী জানিয়ে বক্তব্য রাখেন আব্দুল জব্বার, বাবুল ইসলাম, আদিবাসী নেতা জোসেফ হেমরম পাথরাজ কিস্কু, বাজুন বেসরা, অ্যাড ওয়াড হেমরম, পিউস মুরমু। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নারী পুরুষ সহ অসংখ্য গ্রামবাসী।

    মানববন্ধন শেষে র্যলি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরে গিয়ে অভিযোগ দেন।

    এ সময় বীরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, পৌর বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব আমিরুল বাহার সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এলাকাবাসীর পক্ষে অবস্থান নিয়ে যৌক্তিক দাবী দীর্ঘ দিনের খেলার মাঠ রক্ষার জন্য সু দৃষ্টি কামনা সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে সহযোগিতার জন্য অনুরোধ জানান।

    এ ব্যাপারে পাল্টাপুর ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী আব্দুল মান্নান জানায়, পশ্চিম ভোগডোমা মৌজার খাস খতিয়ান ভুক্ত ৬১৪, ৬১৫ ও ৬১৬ দাগের ৩ একর জমি স্থানীয় জনগণের ব্যবহার্য খেলার মাঠ। বিতর্কিত জায়গা সরকারী তবে খেলার মাঠ হিসেবে বহুল পরিচিত।

    উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর আহমেদের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি ইতিমধ্যে আমলে নিয়ে সরকারি জমিতে সাইন বোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। ভূমি দস্যুদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

  • বিএনপির ৪৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে গৌরনদীতে প্র-স্তুতি সভা অনুষ্টিত

    বিএনপির ৪৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে গৌরনদীতে প্র-স্তুতি সভা অনুষ্টিত

    কে এম সোয়েব জুয়েল,
    গৌরনদী প্রতিনিধি।
    বাংলাদেশ জাতীয় দল (বিএনপি)র ৪৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গৌরনদী উপজেলা পৌর ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে এক প্রস্তুতি সভা বুধবার সকালে বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতা আকন কুদ্দুসুর রহমানের মেদাকুলস্থ বাসভবনে অনুষ্ঠিত হয়। গৌরনদী উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল জেলা কমিটির সদস্য জহুরুল ইসলাম জহিরের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি) কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সহসংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান। এতে বক্তব্য রাখেন বরিশাল জেলা বিএনপির সদস্য মনজুর হোসেন মিলন, তাইফুর রহমান কচি, হোসনেআরা বেবি, বাটাজোর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আক্তার হোসেন বাবুল, সাবেক পৌর কাউন্সিরর ও বিএনপি নেতা মোঃ আলাউদ্দিন, মোঃ নাসির সরদার, মোঃ আবু বকর, দুলাল আকন, আমজাদ হোসেন ঝিন্টু, মশিউর রহমান লিটন, জেলা যুবদল নেতা মাসুদ হাসান মিঠু, এম, এ গফুর, মোঃ মাসুম হাওলাদার, উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি মোঃ রুবেল গোমস্তা, পৌর ছাত্রদলের সভাপতি মোঃ রাসেল হাওলাদার, কলেজ ছাত্রদল নেতা মোঃ আলী প্রমূখ। আসছে ১ সেপ্টেম্বর গৌরনদী কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে বর্নাঢ্য র্যােলী ও সমাবেশ সফল করার বিভিন্ন সিদ্বান্ত গ্রহন করা হয়।

  • পটিয়ায় ভ্রা-ম্যমান আদালতের অ-ভিযানে ৪৯ হাজার টাকা জ-রিমানা

    পটিয়ায় ভ্রা-ম্যমান আদালতের অ-ভিযানে ৪৯ হাজার টাকা জ-রিমানা

    মহিউদ্দীন চৌধুরী।।
    চট্টগ্রামের পটিয়ায় ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে ৪৯ হাজার টাকা জরিমানা করে আদায় করা হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে পটিয়া পৌরসভার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে এ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমান আদালতের ম্যাজিষ্ট্রেট ফারহানুর রহমান। এসময় উপস্থিত ছিলেন- পটিয়া পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা মো: নেজামুল হক, সহকারি প্রকৌশলী মিজানুর রহমান খন্দকার, লাইসেন্স পরিদর্শক বিধান দাশ, অরজিত কুমার বসু দে, নক্সাকার আবুল ফাতা আল মামুন। সড়কে ও ফুটপাতে অবৈধভাবে দোকানের মালামাল, ভবন নির্মাণের মালামাল রাখাসহ বিভিন্ন কারনে ১৫জনকে ৪৯ হাজার টাকা জরিমানা করে আদায় করা হয়েছে।

    পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানুর রহমান জানান, পৌরসভার অর্থায়নে ড্রেন কাম ফুটপাত করা হয়। গুরুত্বপূর্ণ এ ড্রেন দখল করে বিভিন্ন স্থানে স্থাপনা রাখা হয়েছে। যার কারণে চলাচলে মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। সড়কে ও ফুটপাতে অবৈধভাবে দোকানের মালামাল, ভবন নির্মাণের মালামাল রাখা, পৌরসভার অনুমোদিত নকশা/নকশা অনুমোদন ব্যতীত স্থাপনা নির্মাণ, ট্রেড লাইসেন্স হালনাগাদ না থাকা, ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘনজনিত অপরাধে সংশ্লিষ্ট আইনে জরিমানা করা হয় এবং মালামাল জব্দ করে পৌরসভার জিম্মায় নেওয়া হয়। অভিযান চলমান রাখা হবে বলে জানান।