Blog

  • বানারীপাড়ায় শের-এ-বাংলা স্পোর্টস একাডেমির আয়োজনে ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত

    বানারীপাড়ায় শের-এ-বাংলা স্পোর্টস একাডেমির আয়োজনে ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত

    “মাদককে না বলো, মাদক ছেড়ে মাঠে চলো”—এই স্লোগানকে সামনে রেখে বানারীপাড়া হাইস্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হলো মিনিবার ফুটবল টুর্নামেন্ট। শের-এ-বাংলা স্পোর্টস একাডেমির উদ্যোগে আয়োজিত এই টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী খেলায় মুখোমুখি হয় এসএসসি ব্যাচ ২০২০ বনাম এসএসসি ব্যাচ ২০২৪।

    তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচটি নির্ধারিত সময়ে গোলশূন্য ড্র হলে খেলা গড়ায় ট্রাইব্রেকারে। সেখানে ১-০ গোলে এসএসসি ব্যাচ ২০২৪ বিজয়ী হয়।
    বায়েজিদুর রহমান।

    শের-এ-বাংলা স্পোর্টস একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা গোলাম মাহমুদ মাহবুব মাস্টার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ বায়েজিদুর রহমান, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ সৌরভ, যুবদল নেতা সোহাগ মুন্সি, রাব্বি সরদার, আকিব হাওলাদার এবং উপজেলা শ্রমিক দলের প্রচার সম্পাদক মোঃ আব্দুস সালাম।

    খেলাধুলার মাধ্যমে মাদক থেকে দূরে থেকে তরুণ সমাজকে গঠনমূলক কাজে উদ্বুদ্ধ করার এই প্রচেষ্টাকে অতিথিরা সাধুবাদ জানান এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের আরও উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।

  • ‎মধুপুরে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলীর কর্মীসভা অনুষ্ঠিত 

    ‎মধুপুরে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলীর কর্মীসভা অনুষ্ঠিত 

    মধুপুর টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ

    ‎টাঙ্গাইলের মধুপুরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র একাংশের কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।  

    ‎শনিবার (২১ জুন) বিকেলে জেলা পরিষদের মধুপুর অডিটোরিয়ামে এ কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

    ‎বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র কেন্দ্রীয় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বাধীন কর্মীদের  এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।  মধুপুর পৌর বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ পান্না এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন 

    ‎বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জিয়া ফাউন্ডেশনের পরিচালক টাঙ্গাইল -১ (মধুপুর ও ধনবাড়ী)  আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী। কর্মী সভায়   প্রধান বক্তা ছিলেন মধুপুর উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সদস্য ও বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন। 

    ‎বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পৌর বিএনপি’র সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি  অধ্যাপক মো. গোলাম মোস্তফা, উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সহ-সভাপতি জয়নাল আবেদীন খান বাবলু, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ূন কবির তালুকদার, পৌর বিএনপি’র সাবেক সহ-সভাপতি ফজলুল হক মনি,  উপজেলা যুবদলের সাবেক আহবায়ক এম এ মান্নান, পৌর যুবদলের সাবেক আহবায়ক মো. মিনজুর রহমান তালুকদার (নান্নু), মেহেদী হাসান মিনজু, সোহেল রানা মাছুম, মারফত আলী, আ: হামিদ সরকার, মো. শামছুল হক বাবলু, সরকার মনি, খন্দকার মারুফ আহমেদ, হামিদা খাতুন, আব্দুর রহমান, রানা চৌধুরী, জায়েদ হাসান জনী, শ্রাবণ হাবীব রুবেল প্রমূখ। 

    ‎উক্ত অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সরকার আসাদুজ্জামান আসাদ। কর্মী সভার  মিডিয়া সহযোগিতায় ছিলেন সাবেক  যুবনেতা মনিরুজ্জামান আসিফ।

    ‎পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত দিয়ে শুরু করা কর্মীসভায় প্রয়াত বিএনপি নেতা আব্দুল মালেক ও গত আগস্টের হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে দোয়া করা হয়। তাঁদের স্মরণে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

    ‎কর্মীসভায় মধুপুর ও ধনবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী সহ পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতা কর্মীগন উপস্থিত ছিলেন।

  • রায়গঞ্জে বিএনপি জামায়াতের পা-ল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন

    রায়গঞ্জে বিএনপি জামায়াতের পা-ল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন

    সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি :
    সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে বিএনপি’র ভিত্তিহীন অভিযোগের প্রতিবাদে জামায়াতের পাল্টা সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

    আজ রবিবার (২২ জুন) বিকেল ৩ টায় রায়গঞ্জ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে ধানগড়া পল্লী বিদ্যুৎ মোড় দলীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

    সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, “উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মো. আলী মর্তুজা।
    তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে নওগাঁ শাহ শরীফ জিন্দানী মাজার মসজিদে আমরা জুমার নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে পৌঁছাই। সেখানে বিএনপির কয়েকজন এমপি প্রার্থী নেতা-কর্মীসহ মোটরসাইকেল শোডাউন নিয়ে পৌঁছালে আমরা অভ্যর্থনা জানাই। 
    ইমাম সাহেবের অনুরোধে খুতবা প্রদান ও ইমামতি করেন, জামায়াতের এমপি প্রার্থী ড. আব্দুস সামাদ। নামাজে সর্বস্তরের মানুষ একসঙ্গে অংশগ্রহণ করেন। শেষে আগত বিএনপির নেতাকর্মীরা স্লোগানের মাধ্যমে পরিবেশ উত্তপ্ত করার চেষ্টা করেন। যা সাধারণ মুসল্লিদের মধ্যে অস্বস্তির সৃষ্টি করে। আমরা জানতে পারি কেন্দ্রীয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যের নামে একটি বিশেষ মহল দাড়িপাল্লা মার্কা স্লোগান ব্যবহার করে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছে।” সেখানে জামায়াতে ইসলামীর কোন নেতা কর্মীরা কোন স্লোগান ও মিছিল করে নাই।
    আমরা স্পষ্টভাবে বলছি, জামায়াত জুলাই আন্দোলনের চেতনা ধারণ করে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের কোনো আওয়ামী পুনর্বাসন প্রকল্প নেই। আমরা মনে করি, রায়গঞ্জে বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে একটি স্বাভাবিক, সৌহার্দ্যপূর্ণ ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা করা হয়েছে। আমরা বিএনপি নেতৃবৃন্দকে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বজায় রাখা এবং বিভ্রান্তিকর বক্তব্য পরিহারের আহ্বান জানাই।”

    এ সময় রায়গঞ্জ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর মো. আবুল কালাম বিশ্বাস, সেক্রেটারি ডা: মো. মুনছুর আলী, রায়গঞ্জ পৌর সভার সাবেক মেয়র মোশাররফ হোসেন আকন্দ, পৌর আমির হোসেন আলী, উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি ডা: কামরুল ইসলাম, উপজেলা কর্মপরিষদ সদস্য খোরশেদ আলম, নজরুল ইসলাম,সুমন আহমেদসহ পৌর এবং ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামী ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

  • তরুণ প্রজন্মদের এআই প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষতা উন্নয়নের বিকল্প নেই- ইউএনও আরিফুল ইসলাম প্রিন্স

    তরুণ প্রজন্মদের এআই প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষতা উন্নয়নের বিকল্প নেই- ইউএনও আরিফুল ইসলাম প্রিন্স

    আরিফ রববানী ময়মনসিংহ 
    ময়মনসিংহের সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুল ইসলাম প্রিন্স বলেছেন, ‘আগামীর বিশ্ব হবে এআই প্রযুক্তিনির্ভর। দিন দিন প্রযুক্তি আরো উন্নত হবে। আমরা এরই মধ্যে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে পদার্পণ করেছি। তাই এখন এআই প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষতা উন্নয়নের বিকল্প নেই। তিনি বলেন-দেশের তরুণ সমাজের ৮৪ শতাংশের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি পরিচালনার দক্ষতা নেই। তরুণদের অনেকেই জানেন না, এআই কী এবং কীভাবে কাজ করে। অথচ তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে এআই দক্ষতা থাকা অতি জরুরি। চাকরিপ্রার্থীদের জন্য এ বিষয়ে দক্ষতার বিকল্প নেই বলেও জানান তিনি।
    রবিবার(২২ জুন) ময়মনসিংহ সদর উপজেলা হল রুমে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর, ময়মনসিংহ সদর এর আয়োজনে তারুণ্যের দক্ষতা উন্নয়নে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ( এআই) ভূমিকা বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব কথা বলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
    উপজেলা আইসিটি অফিসার হাবিবুল্লাহ এর সভাপতিত্বে উক্ত সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক  শিক্ষা অফিসার বেলায়েত হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ময়মনসিংহ জেলার শাখার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক, মাজহারুল ইসলাম।
    এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার তরুণ প্রজন্ম কে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার ও বর্তমান বিশ্বের সাথে নিজেদের কে তাল মিলিয়ে চলার জন্য এআই এর বিষয়ে জ্ঞান ও দক্ষতা বাড়ানোর বিষয় কে বিশেষ গুরুত্ব দেন। তিনি আরো বলেন আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরো বেশি প্রযুক্তি নির্ভর ও আধুনিক করতে এআই এর সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। এ বিষয়ে তরুণ প্রজন্ম কে আরো বেশি চিন্তাশীল হওয়ার আহবান জানান তিনি।
    সেমিনারে মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও কারিগরিসহ নগরীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উক্ত সেমিনারে উপজেলা আইসিটি অফিসার এআই এর উপর একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এর পর অংশগ্রহণকারীরা তাদের মতামত প্রকাশ করেন এবং এই ধরনের সেমিনার বেশি করে আয়োজন করার জন্য কতৃপক্ষের নিটক অনুরোধ জানান।

  • পঞ্চগড়ে সর্বজনীন পেনশন মেলা : ভবিষ্যৎ নিরাপত্তায় সচেতনতা বৃদ্ধির আয়োজন

    পঞ্চগড়ে সর্বজনীন পেনশন মেলা : ভবিষ্যৎ নিরাপত্তায় সচেতনতা বৃদ্ধির আয়োজন

    পঞ্চগড় প্রতিনিধি :

    “সার্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে ভবিষ্যৎ জীবন”—এই প্রতিপাদ্যে পঞ্চগড়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে সর্বজনীন পেনশন মেলা-২০২৫। রবিবার দুপুরে জেলা প্রশাসন ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের যৌথ আয়োজনে জেলা সদরস্থ সরকারি অডিটোরিয়াম চত্বরে এই মেলার উদ্বোধন করা হয়।

    অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের যুগ্মসচিব আ ফ ম ফজলে রাব্বি বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন। এসময় জেলা প্রশাসক সাবেত আলী, সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সুমন চন্দ্র দাশসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

    উদ্বোধনী পর্ব শেষে অতিথিরা মেলায় স্থাপিত ২৭টি স্টল পরিদর্শন করেন। এসব স্টলে ব্যাংক, বীমা, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ও ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা সেন্টারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সর্বজনীন পেনশন স্কিম সম্পর্কিত তথ্য ও সেবা প্রদর্শন করে।

    এরপর সরকারি অডিটোরিয়াম হলরুমে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও কর্মশালা। জেলা প্রশাসক সাবেত আলীর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন যুগ্মসচিব আ ফ ম ফজলে রাব্বি। বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান, ছাত্র প্রতিনিধি ফজলে রাব্বি, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চু, জেলা জামায়াতের আমির ইকবাল হোসাইন প্রমুখ। 

    সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (উপসচিব) সিরাজুম মনিরা। তিনি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার মাধ্যমে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের বিভিন্ন দিক ও সুবিধা তুলে ধরেন।

    প্রধান অতিথির বক্তব্যে আ ফ ম ফজলে রাব্বি বলেন, “এই মেলার উদ্দেশ্য হলো সাধারণ মানুষের মধ্যে পেনশন সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি এবং অংশগ্রহণ বাড়ানো। সরকার পরিচালন ব্যয় বহন করলেও পেনশন স্কিমের সমস্ত মুনাফা গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়, যা একে আরও লাভজনক করে তুলেছে।”

    তিনি আরও জানান, চলমান চারটি স্কিম—প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতা—তে গ্রাহকরা আগ্রহের ভিত্তিতে অংশ নিতে পারেন। এবারের বাজেটে গ্রাহক জমা ও কর্তৃপক্ষের বিনিয়োগের ওপর কর অব্যাহতি এবং জমার ৩০ শতাংশ এককালীন উত্তোলনের সুযোগ সংযোজন—এ স্কিমকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।

    আলোচনা ও কর্মশালায় অংশ নেন সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী ও সর্বস্তরের জনগণ।

    মোঃ বাবুল হোসেন পঞ্চগড়

  • বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি সারদায় টিআরসি সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত

    বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি সারদায় টিআরসি সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত

    চারঘাট প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর চারঘাটে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমী সারদায় ১৬৮তম টিআরসি ব্যাচের মনোজ্ঞ প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২২ জুন) সকালে এ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়।

    অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ব্যারিস্টার মো. জিল্লুর রহমান।

    অনুষ্ঠানে তিনি কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ, কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও বিভিন্ন বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী টিআরসিদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।

    প্রশিক্ষণে ৩৫৭ জন প্রশিক্ষণার্থীর মধ্যে মো. সাব্বির হোসেন বেস্ট টিআরসি ও বিষয়ভিত্তিক শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারীদের মধ্যে বেস্ট একাডেমিক হিসেবে নির্বাচিত হন। এছাড়া বিষয় ভিত্তিক শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারীদের মধ্যে বেস্ট ইন ফিল্ড এক্টিভিটিজ মো. রকি হাসান এবং বেস্ট শ্যুটার মো. নুরনবী মিয়া নির্বাচিত হন। এ সময় প্রধান অতিথি নবীন পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন।

    অনুষ্ঠানে উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তারা এবং রাজশাহী বিভাগের পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাসহ রাজশাহী ও পার্শ্ববর্তী জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারী ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি টিআরসিদের মাঝে সার্টিফিকেট বিতরণ করেন।

  • খা-নাখন্দে ভরা ফুলবাড়িয়ার পলাশতলীর সেই রাস্তা

    খা-নাখন্দে ভরা ফুলবাড়িয়ার পলাশতলীর সেই রাস্তা

    মো. সেলিম মিয়া ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : দিন, মাস, বছর, যুগ পেরিয়ে গেলেও আশ্বাসের কোনদৃশ্যমান সাড়া না পাওয়া যায় হতাশ স্থানীয়রা। বলছিলাম ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ১১ নং রাধাকানাই ইউনিয়নের বয়ারমারা টু আছিম সড়কের কথা। জনপ্রতিনিধিরা কথা না রাখলেই বা ভোক্তভোগিদের কী করার আছে? তবে বৈষম্যহীন বাংলাদেশে কী ঐ এলাকার মানুষ কোন আলোর দেখা পাবে?
    জানা যায়, রাধাকানাই ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গ্রামের নাম পলাশতলী। পলাশতলীর সুনাম জাতীয় পর্যায় ছাড়িয়ে এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনের অপেক্ষায়। খ্যাতির উন্নয়ন যদি এমন হয়, তাহলে বিষয়টা কেমন হয়ে গেল নাহ! এ গ্রামের লাল চিনি জিআই পন্য হিসাবে শুধু প্রজ্ঞাপনের অপেক্ষায়। কৃষকের কাছে মওজুত চিনি সারা বছর বিক্রি হয়। কৃষকেরা ভালো দামের আশায় প্রয়োজনে বিভিন্ন সময় এটি বিক্রি করে থাকে। আর পাইকাররা তা গ্রাম হতে সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে। রাস্তা খারাপ হওয়ায় চিনির দাম প্রান্তিক পর্যায় থেকে ভোক্ত পর্যায়ে অনেক পার্থক্য হয়। কারণ সংগ্রহ খরচ অনেক বেশি হয়।
    স্থানীয়রা বলছেন, গ্রামে-গঞ্জে অহরহ গাড়ী চলাচলের কারণে আমাদের রাস্তাগুলো এত খারাপ হয়ে যায়। এ রাস্তা গিয়ে আমাদের এলাকার প্রাচীনতমবাজার পলাশতলী বাজারে যেতে হয় হাজার হাজার মানুষকে। পলাশতলী বাজারে ২টি হাই স্কুল, ১টি মাদ্রাসা, ১ টি প্রাইমারি স্কুল সহ বেশ কয়েকটি কিন্ডার গার্ডেন রয়েছে। প্রতিদিন এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হাজার হাজার ছেলে মেয়েরা আসা যাওয়া করে। চলাচল অনুপযোগি রাস্তায় অনেক মেয়েরা ইভটিজিং এর শিকার হয়। কারণ কাঁদা মাড়িয়ে যাওয়ার সময় পড়নের ড্রেস অনেক সময় এলোমেলো হয়। এতে এক শ্রেণির ছেলেরা মেয়েদের সাথে কথা বলার সুযোগ পায়। প্রায় ৩ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তাটি পলাশতলী বয়ারমারা মোড় থেকে শুরু করে
    পলাশতলী বাজার পর্যন্ত অন্যদিকে বয়ারমারা মোড় থেকে ফুলবাড়ীয়া টু আছিম রাস্তায় মেইন সড়কে সংযোগ। যা বর্তমানে খানাখন্দে ভরা। বর্ষার সময় কাদা-পানিতে রাস্তাটি এতটাই নাজুক হয়ে পড়ে, স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলাও কঠিন হয়ে ওঠে। লাল মাটি অধ্যুষিত রাস্তায় বর্ষা মৌসুমে, এই রাস্তার ছোট বড় গর্তে পানি জমে যায়। তখন গাড়ি চলাচল তো দ‚রের কথা, পায়ে হেঁটেও চলাচল করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। শুকনো মৌসুমে ধুলাবালিতেও চলাচল করা কঠিন। তা ছাড়া রাস্তার ছোট-বড় গর্তে ঘটছে দুর্ঘটনা। অসুস্থ রোগিকে জরুরি অবস্থায় হাসপাতালে নিতে গেলে কোন প্রকার যানবাহন পাওয়া যায় না। এ রাস্তার পাশেই পলাশতলী পুর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
    স্থানীয় নাজমুল হোসেন জানান, রাস্তায় অনেক খানাখন্দ থাকায় প্রতিদিনই ছোট-বড় দুঘর্টনা ঘটছে। দোকানের মালামাল আনতে অটোরিকশা পাওয়া গেলেও গুনতে হয় অতিরিক্তি ভাড়া। এ রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে সুস্থ-সবল মানুষেরও নাভিশ্বাস ওঠে যায়।
    স্থানীয় ইউপি সদস্য আমিনুল এহেসান উজ্জল বলেন, রাস্তাটি চলাচলে মানুষের দুর্ভোগের স্বীকার। রাস্তাটি হেরিংবোন বন্ড (ইটের সোলিং) করে দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান।
    পলাশতলী আমিরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ.কে.এম সায়ফুল ইসলাম কাজল বলেন, বহু বছর ধরে এই রাস্তাটি উন্নয়ন কর্মকা- থেকে বঞ্চিত। শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন কাঁদা-পানিতে ভিজে স্কুলে আসে, অনেকে পড়ে গিয়ে আহত হয়, আবার অনেক সময় স্কুলে পৌঁছানোই সম্ভব হয় না। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ হাতে জুতা নিয়ে পায়ে হেঁটে স্কুলে আসে ।

  • তানোরে মৃৎশিল্প বিলু-প্তপ্রায়

    তানোরে মৃৎশিল্প বিলু-প্তপ্রায়

    তানোর প্রতিনিধি।।
    রাজশাহীর তানোরে ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প বিলুপ্তপ্রায়।কালের বিবর্তন,আধুনিকতার ছোঁয়া ও মানুষের রুচির পরিবর্তনের ফলে মাটির তৈরি সামগ্রীর স্থান দখল করে নিয়েছে প্লাস্টিক, মেলামাইন, স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি নানা রকম আধুনিক সামগ্রী। এ কারণে চাহিদা কম, কাঁচামালের দুস্প্রাপ্যতা, শ্রমিক সংকট ও চড়ামূল্য, সর্বোপরি পুঁজির অভাবে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে তানোরের ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প।
    জানা গেছে, ইতিহাস ঐতিহ্যের পাতায় চোখ রাখলেই দেখা যাবে, মৃৎশিল্পের জন্য তানোর একসময় ছিল খুবই পরিচিত। কিন্তু কালের আবর্তে আজ তা বিলীন হতে চলেছে। ক্রমেই ঘনিয়ে আসছে এ পেশার আকাল। হয়তো বা এমন দিন আসবে, যেদিন বাস্তবে এ পেশার অস্তিত্ব মিলবে না। শুধুমাত্র খাতা-কলমেই থাকবে সীমাবদ্ধ।
    এদিকে তানোর পৌরসদরের পালপাড়া মহল্লায় গিয়ে দেখা যায়, এ পেশার অনেকেই এখন পৈতৃক পেশা ছেড়ে দিয়ে কেউ মুদিদোকান, চা স্টল, ফার্ম্মেসী আবার কেউ দিনমজুরের কাজ করছেন। উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) কামারগাঁ পালপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে,একইচিত্র।স্থানীয়রা জানান, যারা বংশপরম্পরায় এখানো এ পেশা ছাড়তে পারেননি, তাদের অনেকেই শিক্ষা, চিকিৎসাসহ আধুনিক জীবনযাত্রার সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
    মৃৎশিল্পীরা জানান, বর্তমানে মানুষের ব্যবহারিক জীবনে মৃৎশিল্পের আর বিশেষ ভুমিকা নাই।অথচ একটা সময় ছিল যখন মাটির তৈরি হাঁড়ি- পাতিল, থালা-বাসন, সানকি, ঘটি, মটকা, সরা, চারি, কলস, সাজ, ব্যাংক, প্রদীপ, পুতুল, কলকি, দেবদেবীর মূর্তি, টাইল ও ঝাঝরের বিকল্প ছিল না। ঋণ প্রদানে অনীহা ও প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা আর প্রযুক্তি বিকাশের এ যুগে এ শিল্পের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ সাধিত না হওয়ায় তা আজ আর প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। ফলে বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে অনেকে অন্য পেশার দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। আগেকার দিনে মৃৎশিল্পের প্রয়োজনীয় উপকরণ যেমন এঁটেল মাটি, রঙ, যন্ত্রপাতি ও জ্বালানি ছিল সহজলভ্য। কিন্তু বর্তমানে এসব প্রয়োজনীয় উপকরণের দুমূর্ল্যের কারণে তারা হিমশিম খাচ্ছেন। পূর্বে যেখানে বিনামূল্যে মাটি সংগ্রহ করা যেত, বর্তমানে এ মাটিও অগ্রিম টাকায় কিনতে হচ্ছে।
    সাধারণত মৃৎপাত্রগুলো কুমার পরিবারের নারী- পুরুষ উভয়ে মিলেমিশে তৈরি করে থাকেন। তৈরিকৃত সামগ্রী বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা এসে কিনে নেন। অনেকে আবার বাড়ি বাড়ি ফেরি করে বিক্রি করেন। বর্ষা মৌসুমে কাজ বন্ধ থাকায় মৃৎশিল্পীদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ যায়। এ সময় কুমাররা সারা বছর কাজ করার জন্য এঁটেল মাটিসহ প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সংগ্রহে নেমে পড়েন। তবে যাদের নৌকা আছে তারা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে মাটির তৈরী তৈজসপত্র বিক্রি করেন।অন্যদিকে
    পুঁজির অভাবে অনেকে মহাজনের কাছ থেকে চড়াসুদে টাকা ঋণ নেন। শুষ্ক মৌসুমে কাজ করে যা উপার্জন হয় তার বেশির ভাগই চলে যায় মহাজনের ঋণ পরিশোধ করতে। এভাবে মৃৎশিল্পীরা যুগযুগ ধরে থেকে যাচ্ছেন সহায় সম্বলহীন হয়ে।
    এদিকে কালের বিবর্তনে মৃৎশিল্পের ঐতিহ্য আজ বহুলাংশে বিলুপ্ত হচ্ছে। শুধু তানোর নয়, গোটা বরেন্দ্র অঞ্চলে এ পেশায় নেমে এসেছে নেমে এসেছে এক চরম বিপর্যয়। এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখার ব্যাপারে কারো কোনো মাথাব্যথা নেই। অথচ এ শিল্পের মাধ্যমে একদিকে যেমন আমরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবো, তেমনিভাবে প্রাচীন সভ্যতায় স্মরণীয় হয়ে থাকবে এ পেশাটি। এর মাঝেই জাতির ইতিহাস খুঁজে পাবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।#

  • সুজানগর পৌর প-শুরহাটের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে প-শু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

    সুজানগর পৌর প-শুরহাটের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে প-শু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

    এম এ আলিম রিপন: সুজানগর পৌর পশুরহাট জাকজমকপূর্ণ ভাবে পুনরায় সচল করার লক্ষ্যে ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২০ জুন ) বিকাল ৫ টায় পৌর পশুরহাট চত্বরে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
    সুজানগর পৌরহাট ইজারাদার ইসমাইল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সুজানগর পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ।
    অনুষ্ঠানে সুজানগর থানা অফিসার ইনচার্জ মজিবুর রহমান, পৌর বিএনপি’র সভাপতি ও পৌরসভার সাবেক মেয়র কামাল হোসেন বিশ্বাস, পৌর বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক মঞ্জু শেখ, উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক শাজাহান আলী শেখ, উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব রিয়াজ মন্ডল, বিএনপি নেতা কামাল শেখ, লেবু খা, আব্দুল হালিম শেখ, পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আবুল কালাম আজাদ সহ পশু ব্যবসায়ীরা বক্তব্য রাখেন।

  • নিষে-ধাজ্ঞা শেষ হলেও ও প্রাকৃতিক দূর্যো-গে দিশে-হারা উপকূলের জেলেরা

    নিষে-ধাজ্ঞা শেষ হলেও ও প্রাকৃতিক দূর্যো-গে দিশে-হারা উপকূলের জেলেরা

    রফিকুল ইসলাম, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী)
    গত ১২ জুন, ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে মাছ ধরার অনুমতি মিললেও এখনো স্বস্তি ফেরেনি উপকূলের হাজারো জেলে পরিবারে। বঙ্গোপসাগরে বৈরী আবহাওয়ার কারণে অনেকে সমুদ্রে নামতেই পারেননি। আবার যারা গিয়েছেন, তাদের অনেকেই ফিরেছেন খালি হাতে। ফলে জেলেদের জীবনে জমেছে হতাশা, বাড়ছে ঋণের বোঝা। বৈরী আবহাওয়া আর একের পর এক সরকারি নিষেধাজ্ঞায় দিশেহারা উপকূলের হাজারো জেলে পরিবার।

    ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা আশায় বুক বেঁধেছিলেন—এবার রূপালী ইলিশে ভরবে তাদের জাল, ফিরবে সুখের দিন। কিন্তু সাগরে পা দিতেই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ঝড়ো হাওয়া আর উঁচু ঢেউ। পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী, কলাপাড়ার জেলেরা জানিয়েছেন, অনেকে এখনও সাগরে নামার ঝুঁকি নিতে পারছেন না।
    রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজের জেলে রফিক হাওলাদার বলেন, পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকার বাজার করে ১৫ দিনের উদ্দেশ্যে গভীর সমুদ্রে পারি দিয়েছিলাম। কিন্তু সাগরে মাছ নাই। ঢেউয়ের জন্য জালই ঠিকভাবে ফেলা যায় না, মাছ থাকবেইবা কি করে? তিন-চার বার জাল ফেলছি। প্রতিবারই একই অবস্থা। তাই সমুদ্র থেকে জাল উঠিয়ে চলে আসছি।
    তবে রাঙ্গাবালী উপজেলা মেরিন ফিশারিজ অফিসার এস এম শাহাদাত হোসেন রাজু জানান, নিষেধাজ্ঞার পর সাগরে মাছ থাকার সম্ভাবনা থাকলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে জেলেরা ঠিকমতো জাল ফেলতে পারছেন না। ফলে কাঙ্ক্ষিত মাছ ধরা পড়ছে না। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে মাছ ধরা বাড়বে বলে আমরা আশা করছি।”

    নিষেধাজ্ঞা আর দুর্যোগে বছরজুড়ে বিপর্যস্ত জেলেরা:
    উপকূলীয় অঞ্চলে বছরে গড়ে ৮–৯ মাস জেলেদের মাছ ধরা কার্যত বন্ধ থাকে। সরকারি নিষেধাজ্ঞা ছাড়াও ঘূর্ণিঝড়, নিম্নচাপ, কালবৈশাখীসহ নানা দুর্যোগে প্রায়ই বন্ধ হয়ে যায় সমুদ্রযাত্রা। প্রতিবছর ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত সামুদ্রিক মাছ ধরায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকে — মোট ৫৮ দিন। ১৩ অক্টোবর – ৩ নভেম্বর: মা ইলিশ সংরক্ষণে ২২ দিন। মার্চ ও এপ্রিল দুই মাস পটুয়াখালীর তেতুলিয়া নদী সহ দেশের ৬ অভায়শ্রমে ইলিশের প্রজননকেন্দ্রগুলোতে মাছ ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকে। ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ৮ মাস জাটকা (ছোট ইলিশ) ধরায় নিষেধাজ্ঞা চলে। যদিও এটি অঞ্চলভেদে কার্যকর হয়, তবুও বাস্তবে উপকূলের বড় একটা অংশেই এই সময় মাছ ধরা বন্ধ থাকে।
    সব মিলিয়ে বছরে প্রায় ২৫০–২৭০ দিন পর্যন্ত কোনো না কোনো কারণে মাছ ধরা বন্ধ থাকে উপকূলীয় এলাকায়। এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ে পটুয়াখালী, ভোলা ও বরগুনার নিম্নআয়ের মাছনির্ভর পরিবারগুলোর ওপর।
    উপকূলীয় অঞ্চলে এভাবেই গড়ে প্রতি বছর কয়েক লাখ পরিবার আয়হীন সময় পার করেন।

    আয়ের পথ বন্ধ, ঋণের বোঝা বাড়ছে:
    পটুয়াখালী জেলার সমুদ্রসংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলোতে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত মিলে প্রায় দেড় লাখ জেলে রয়েছেন। বারবার নিষেধাজ্ঞা আর আবহাওয়ার কারণে আয় না থাকায় অনেক পরিবারই ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়েছেন। খাদ্য সহায়তা অপ্রতুল হওয়ায় জীবন চালানোই হয়ে উঠেছে কঠিন। রাঙ্গাবালী বড়বাইশদিয়ার জেলে আলাউদ্দিন মাঝি বলেন, “জেলে পেশাটারে অনেকেই এখন ছাড়তে চাইতেছে। কিন্তু ছাড়বে কেমনে, অন্য কাজ তো নাই। অন্য কোন কামকাইজ পাইলে মাছ ধরা ছাইড়া দিমু।’
    রাঙ্গাবালীর কোড়ালীয়া মৎস্য ঘাটের জেলে হারুন মাঝি বলেন, ‘৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা ছিলো, তহন ঘরে বসে আছিলাম। ঠিকমতো বাজার সদায় করতে পারি নাই। এ্যাহন আবার আবহাওয়ায় জ্বালাইতেছে। একটার পর একটা ঝামেলা লাইগাই আছে। এরম অইলে কেমনে বাঁচমু। মাছ ধরা ছাইড়াইবা কি করমু। ছোটকাল থেইকা শিখছি এইডা, অন্যকিছু পারিওনা। মাছ ধরতে না পারায় মহাজনও আমাগো টাকা দিতে পারে নাই। তাই আবার ঋণ করে নিজের সংসারের জন্য বাজার কিনছি। এইভাবে আর কত? মরি বাঁচি মাছ ধইরাই খাওয়া লাগবো। তাই চিন্তা করছি আবহাওয়া যতই খারাপ হউক, কালই সাগরে যামু।’

    মানুষ না বাঁচলে, মাছও টিকবে না:
    শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিন ফিশারিজ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলেপেশা নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করা সহযোগী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, “আমাদের উপকূলীয় অর্থনীতি দীর্ঘদিন ধরে মূলত প্রাকৃতিক সম্পদনির্ভর এবং অরক্ষিত। জেলেদের জীবন-জীবিকা এখন মূলত অনির্দেশ্য আবহাওয়ার সঙ্গে একটি অনিয়মিত ছকের মধ্যে আটকে আছে। সরকার বছরে কয়েক দফা মাছ ধরা বন্ধ রাখে — যা পরিবেশ ও প্রজননের দিক থেকে প্রয়োজনীয়। কিন্তু এই সময়টিতে জেলেদের জন্য বিকল্প জীবিকা, পর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তা বা সহজ শর্তে ঋণপ্রাপ্তির কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেই। ফলে তারা অনেকে মহাজনের কড়চায় জড়িয়ে পড়ে আরও নিঃস্ব হয়ে পড়েন।”
    তিনি বলেন, “দীর্ঘমেয়াদে উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর জন্য টিকে থাকার পথ একটাই—প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা। আমাদের উচিত হবে জেলেদের জন্য একটি ‘লাইভলি হুড সিকিউরিটি প্যাকেজ’ নিশ্চিত করা, যাতে নিষেধাজ্ঞার সময় তাদের খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা ও বিকল্প আয়ের উৎস স্থায়ীভাবে গড়ে তোলা যায়। একই সঙ্গে জলবায়ু সহনশীল মাছ চাষ, উপকূলীয় কৃষি বা অন্যান্য পেশায় প্রশিক্ষণ দিয়ে ধাপে ধাপে তাদের জীবনমান উন্নয়নের উদ্যোগ নিতে হবে।”
    অধ্যাপক মীর আলীর মতে, শুধু নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ইলিশ বা সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষা সম্ভব নয়, যদি মানুষ বাঁচতে না পারে। “মানুষ বাঁচলেই প্রকৃতি বাঁচবে। সাগরের মাছ রক্ষার আগে সাগরের মানুষকে রক্ষা করতে হবে।”

    রফিকুল ইসলাম
    রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা।।