Blog

  • আশুলিয়ায় ৫ লক্ষ টাকা ছিন-তাই গু-লাগুলি ও পৃথক স্পটে কিশোর গ-্যাং সন্ত্রা-সীদের হাম-লায় আহ-ত-৫

    আশুলিয়ায় ৫ লক্ষ টাকা ছিন-তাই গু-লাগুলি ও পৃথক স্পটে কিশোর গ-্যাং সন্ত্রা-সীদের হাম-লায় আহ-ত-৫

    হেলাল শেখঃ ঢাকার আশুলিয়ার নবীনগরে দিনে দুপুরে নগদ ৫ লাখ টাকা ছিনতাই, একই দিন গাজিরচট এলাকায় বিএনপির দুই পক্ষের সাথে গুলাগুলি ও চিত্রশাইল, জামগড়ায় পৃথক স্পটে কিশোর গ্যাং মাদক মাদক সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হয়েছেন ৫ জন, আহতদের মধ্যে ৩ জনকে চিকিৎসার জন্য সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার। বর্তমানে পুরো এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
    সোমবার (৩০ জুন ২০২৫ইং) দুপুরে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, একটি মহল আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করছে, আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হান্নান সাহেবসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানান, সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধারের জন্য আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। সূত্র জানায়, ঢাকার আশুলিয়ায় মামলা বাণিজ্যসহ বিভিন্ন কারণে ১০ মাসে ৫জন ওসি ক্লোজ বা বদলির ঘটনার পর এবার আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হান্নান নবনিযুক্ত হয়েই তার নেতৃত্বে কিশোর গ্যাং মাদক সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধারের জন্য অভিযান চলমান রেখেছেন।
    দেশে বর্তমানে মামলার সংখ্যা ৪৫ লাখ ৭১ হাজার ১৬৮টির মধ্যে ঢাকার আশুলিয়ায় সবচেয়ে বেশি মামলা বাণিজ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে মামলা নিষ্পত্তির তুলনায় দায়ের বেশি। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসেই বেড়েছে ৫৪ হাজার মামলা, এসব মামলার মধ্যে আশুলিয়ায় সবচেয়ে বেশি মামলা বাণিজ্য করেছে দালাল চক্র। গত বছর শেষে এ সংখ্যা ৪৫ লাখ ১৭ হাজার ২০১। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মামলা নিষ্পত্তির তুলনায় দায়েরের সংখ্যা বেশি হওয়ায় মামলার জট বেড়েই চলেছে। পাশাপাশি মামলার তুলনায় বিচারকের সংখ্যা কম থাকায় নিষ্পত্তিও বাড়ছে না। তাই এখনই মহাপরিকল্পনা করে পাহাড়সম এ মামলার জট নিরসন করতে হবে। বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে মামলাজট নিরসনে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। এসব বিষয়ে একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে, তথ্যগুলো সংরক্ষিত।
    অন্যদিকে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে একটি চক্র বিভিন্ন এলাকায় জমি দখল, ব্যবসা দখল, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করছে, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সাংবাদিকদের কাজে বাঁধা সৃষ্টি করছে তারা। ভুয়া বাদী হয়ে মিথ্যা মামলায় সাধারণ মানুষের নাম দিয়ে মামলা বাণিজ্য করছে মামলাবাজরা, গত ৫ আগষ্টে ছাত্র-জনতা হত্যাকারীরাই অনেকেই মামলা বাণিজ্য করছে, ওরা জাতীয় মামলাবাজ। অপরাধীদের নাম প্রকাশসহ থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসছে। কোনকিছুতে সুবিদা না পেয়ে “সৈরাচারমুক্ত সুবিদাবাদ বিরোধী এক্সপ্রেস” নামে ফেসবুক ফেইক আইডিসহ একাধিক আইডি থেকে সম্মানিত থানার ওসি অফিসার, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতাদের বিভিন্ন ছবি পোস্ট করে অপপ্রচার চালাচ্ছে। ভুক্তভোগীসহ সচেতন মহল জানায়, এসব ফেইক আইডিসহ যেসকল আইডি থেকে ফেসবুকে অপপ্রচার চালাচ্ছে যারা, তাদেরকে আটক করে আইনের আওতায় এনে কঠিন সাজা দিলে আর কেউ এমন সাহস করবে না। সূত্র জানায়, সৈরাচারমুক্ত সুবিদাবাদ বিরোধী এক্সপ্রেস ফেসবুক আইডি আশুলিয়া থেকে চালানো হচ্ছে অপপ্রচার।
    রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন থানা ও পুলিশের কাছ থেকে লুট হওয়া সরকারি অস্ত্রগুলো পুরোপুরি ভাবে উদ্ধার কেন হচ্ছে না, সেই সাথে বাংলাদেশ পুলিশসহ ছাত্র-জনতা হত্যাকারীরাও কেন গ্রেফতার হচ্ছে না তা জাতি জানতে চায়। ঢাকার আশুলিয়ার বাইপাইলে ৫ আগষ্ট হত্যাকাণ্ডের ঘটনার আড়ালে কি ঘটনা ঘটছে তা জাতি জানতে চায়। কারা করছে হত্যাকাণ্ড আর কারা হলেন এসব মামলার আসামী, কারা হয়রানির শিকার হচ্ছেন আর কারা আটক হলেন? এবং এসব মামলার বিষয়ে পুলিশ ও প্রকৃত সাংবাদিকের কাজে বাঁধা সৃষ্টি করছে কারা?। মামলা সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার আশুলিয়া থানার ইয়ারপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের শরীফ মার্কেট এলাকার মোঃ ওয়াহেদ মোল্লার ছেলে মোঃ শরিফুল ইসলাম ওরফে শরীফ মোল্লার বিরুদ্ধে মাদক, চাঁদাবাজি, প্রতারণা ও ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার উপর হামলায় হত্যা চেষ্টা এবং হত্যা মামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলা থাকলেও পুলিশ কেন তাকে গ্রেফতার করছেন না তা জাতি জানতে চায়। আশুলিয়া থানার স্বারক নং ৫২৯০(৪)১ তারিখ: ২২/০৯/২০২৪ইং ধারাসহ অপরাধ এবং লুণ্ঠিত দ্রব্যাদি সংক্ষিপ্ত বিবরণ, ১৪৭/১৪৮/১৪৯/৩০২/ ১১৪/৩৪ প্যানাল কোর্ট, ১৮৬০পরস্পর যোগসাজসে অস্ত্রে সস্ত্রে সজ্জিত হইয়া দাঙ্গা হাঙ্গামা করতঃ মারপিট ও গুলিবর্ষণ করিয়া হত্যা করাসহ হুকুম প্রদানের অপরাধ,আশুলিয়া থানায় এই হত্যা মামলার ২০ নং আসামী মোঃ শরিফুল ইসলাম মোল্লা। তার বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় একাধিক জিডি, অভিযোগ ও হত্যা মামলা থাকলেও পুলিশ কেন তাকে গ্রেফতার করতে পারছে না তা জাতি জানতে চায়। অনেকেই জানায়, শরিফুল ইসলাম মোল্লার বাড়িতে আশুলিয়া থানা পুলিশ ও (পিবিআই) পরিদর্শন করেছেন, মনে হয় পুলিশ মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে শরিফুল ইসলাম মোল্লাকে গ্রেফতার করছে না। অনেকেই বলেন, এই শরীফ মোল্লা তার মা ও বোনের জমির বিষয়ে মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়ে প্রতারণা করার অভিযোগও রয়েছে, সে এলাকার প্রভাবশালী ও শীর্ষ সন্ত্রাসী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পায় না।
    আশুলিয়া থানার (এ এসআই) নাজমুল ইসলাম বলেন, গত ৫ আগষ্টে হত্যা চেষ্টা ও হত্যা মামলার তদন্ত করতে গেলে পুলিশ ও প্রকৃত সাংবাদিকদের কাজে বাঁধা সৃষ্টি করে একটি মহল। কিছু দালাল ও সুবিধাবাদী লোকজন তাদের মামলা বাণিজ্য করে মোটা অংকের অর্থ কামাচ্ছে, তারা দেশ ও জাতির শক্র, এদের আটকের চেষ্টা চলমান রয়েছে বলেও তিনি জানান। জানা গেছে, ৫ আগষ্ট: ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় প্রথম আশুলিয়া প্রেসক্লাবে হামলা ভাংচুর শুরু করা হয়, এরপর দুইজন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করে লাশ প্রকাশ্যে ওভার ব্রীজের উপর ঝুঁলিয়ে রাখা হয়। যা ১৯৭১ সালেও এই এলাকায় ঘটেনি তা ২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট ঢাকার আশুলিয়ার বাইপাইলে ঘটিয়েছে মানুষ হত্যাকারী ওরা কারা? সূত্র জানায়, ভাড়া করা সন্ত্রাসী যারা প্রথমে প্রেসক্লাব দখল করেছে তারাই দুই পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করে সেই লাশ ঝুঁলিয়ে রাখে ওভার ব্রীজের সাথে। তারাই ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে পুলিশের ভ্যানে থাকা ৬ লাশ পুড়িয়ে গুম করার চেষ্টা করে, এমনকি থানায় ডুকে সরকারি অস্ত্রসহ বিভিন্ন মালামাল লুট করে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী গত ৯-১০ মাসেও পুরোপুরি ভাবে লুট হওয়া সরকারি অস্ত্র উদ্ধার ও হত্যাকারিদের গ্রেফতার করতে পারেননি।
    পুলিশ ও বিভিন্ন সূত্র জানায়, আশুলিয়া প্রেসক্লাব ভাংচুর করে আগুন দেওয়ার পর আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক এমপি মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম তার বাইপাইল মার্কেটের উপর থেকে গুলিবর্ষণ করে, সেই সাথে আশুলিয়া থানা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মইনুল ইসলাম ভুঁইয়া’র নেতৃত্বে করিম সুপার মার্কেট থেকে ৪০-৫০ জনের একটি সন্ত্রাস বাহিনী ছাত্র-জনতার উপর নৃশংস হামলা ও গুলি করে, এরপর পুলিশ বিভিন্ন স্থান থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ ভ্যানে রাখেন আর সেই লাশগুলো গুম করতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে হত্যাকারীরা এদের মধ্যে শরিফুল ইসলাম মোল্লাসহ তার বাহিনীর লোকজন ছিলো। ওইদিন আশুলিয়ার বাইপাইলে ঘটে যায় নতুন ইতিহাস। সেই গণহত্যার ঘটনা আড়াল করতে এসব হত্যাকারীরা নতুন কৌশলে জানা অজানা ও অচেনা লোকজন দিয়ে শুরু করে নিহত ও আহতদের নিয়ে মামলা বাণিজ্য। এখন তদন্তে গিয়ে বেড়িয়ে আসছে থলের বিড়াল। এই মামলা বাণিজ্যের সাথে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কিছু নেতা সরাসরি জড়িত, তাদের মধ্যে রয়েছে আশুলিয়া ইউনিয়নে আনারস মার্কায় চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা রাজু গ্রুপের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ, তার বাহিনীর সদস্য সায়েব আলী জলিল। আশুলিয়ার বাইপাইলে ১০ থেকে ১২জন ব্যক্তি।
    জানা গেছে, ঢাকার আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আশুলিয়া প্রেসক্লাবে হামলা, ভাংচুর ও গুলি করে ছাত্র-জনতাকে হত্যার পর ৬ লাশ পোড়ানো ঘটনাঃ দেশ টিভি ও যমুনা টিভিসহ বিভিন্ন টিভিতে নিউজ প্রকাশ হয়েছে এবং জাতীয় দৈনিক পত্রিকাসহ গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ- বেসরকারি হিসেবে এই এলাকায় শহীদের সংখ্যা ৫৩ হলেও গ্রেজেটে সবার নাম আসেনি এবং মামলায় এসেছে ভুল ঠিকানাও। কিভাবে ঠিকানা পাল্টে গেলো, কিভাবে আপন মামা বাবা হয়ে গেলেন? আর কিভাবে জীবিত স্বামীকে মৃত বানিয়ে হত্যা মামলা করা হলো? কিভাবে আত্মীয় পরিচয় দিয়ে ভুয়া বাদিরা একাধিক মামলায় নাম দিয়ে নির্দোষী মানুষদেরকে হয়রানি করেছে? এসব ভুয়া বাদী সায়েব আলী জলিলসহ এই চক্রের সবাই দেশ ও জাতির শক্র, এসব মামলায় মোটা অংকের অর্ধ যাচ্ছে ভুক্তভোগীদের পকেট থেকে। একাধিক মামলার আসামী সায়েব আলী জলিলরা ভুয়া বাদী হয়ে নির্দোষী মানুষকে হয়রানি করছে, এবার “বেড়িয়ে আসছে থলের বিড়াল”।
    জানা যায়, ঢাকার আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫৩ জনকে পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যার পর সেই লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ, কয়েকজন সাবেক এমপি মন্ত্রী, পুলিশ সদস্য ও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তদন্ত সংস্থায় গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ ও মামলা দায়ের করাসহ আশুলিয়া থানায় অসংখ্যক মামলা করা হয়েছে। জানা গেছে, গত ২০২৪ সালের ৫ আগষ্টের পর আশুলিয়া থানায় ৭১টি রাজনৈতিক মামলা হয়েছে, ৪১টি হত্যা মামলা, ৮টি ডাকাতি মামলা হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কিছু ব্যক্তিকে আটক করলেও অন্যদেরকে এখনও আটক করতে পারেনি পুলিশ। উক্ত অপরাধের ধরণে বলা হয়েছে, এক থেকে পাঁচ ও সাত থেকে ১০ নং আসামিদের নির্দেশ পরিকল্পনায় অন্যান্য আসামিরা দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ নিরস্ত্র ছাত্র জনতাদের হত্যা করে তাদের সমূলে বা আংশিক নিমুর্ল করার উদ্দেশে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘঠনের অপরাধ করে। (যাদেরকে আসামি করা হয়েছে), তারা হলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুহাম্মাদ আলী আরাফাত, ঢাকা-১৯, সাভার-আশুলিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, তৎকালীন সরকারের কতিপয় মন্ত্রী, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি হারুন অর রশিদ, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ, সাবেক আইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, ঢাকা জেলার অতিরিক্ত এসপি মোবাশ্বিরা জাহান, সাবেক অতিরিক্ত এসপি আব্দুল্লাহহিল কাফি, ঢাকা জেলা উত্তরের সাবেক ডিবি পরিদর্শক আরাফাত হোসেন, আশুলিয়া থানার (ওসি) এএফএম সায়েদ, (ওসি তদন্ত) নির্মল চন্দ্র, এসআই আফজালুল, এসআই জলিল, এসআই রাকিবুল, এসআই আবুল হাসান, এসআই হামিদুর রহমান, এসআই নাসির উদ্দিন, এসআই আব্দুল মালেক, এএসআই সুমন চন্দ্র গাইন, এএসআই বিশ্বজিৎ রায়, কনস্টেবল মুকুল, কনস্টেবল রেজাউল করিমসহ কতিপয় পুলিশ সদস্য। এছাড়াও আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হাসান তুহিন, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামী সহযোগী সংগঠনের সদস্যরাও আসামী হয়েছে এসব মামলায়। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট আশুলিয়ার বাইপাইলে ছাত্র-জনতার মিছিলে ১ থেকে ১২ নম্বর আসামির নির্দেশে ১৩ থেকে ৩৬ নং আসামিরা নির্বিচারে গুলি চালালে আহনাফসহ ৫৩জন গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন। গুলিবিদ্ধ লাশগুলো ১৩ থেকে ১৬ নং আসামীসহ অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্যরা ময়লার বস্তার মতো করে ভ্যানে তোলেন। থানার পাশে পুলিশের একটি গাড়িতে পেট্রোল দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে নিহতদের লাশ পুড়িয়ে দিয়ে গণহত্যার নির্মম ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এর আগে হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় অনেক হত্যা মামলা করা হয়, আশুলিয়া থানায় একটি মামলা নং ২৬। তারিখ: ২২/০৮/২০২৪ইং। ছাত্র-জনতা সূত্র জানায়, আশুলিয়ার বাইপাইলে গত ৫ আগস্ট ২০২৪ইং আশুলিয়া প্রেসক্লাব ভাংচুর ও লুট করা থেকে শুরু করে দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর, ছাত্র-জনতা ও পুলিশ সদস্যসহ প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় একাধিক হত্যা মামলা হয়েছে কিন্তু ভুয়া বাদী মামলাকারীরা মামলা বাণিজ্য করেছে। এসব মামলার আসামি কিছু পুলিশ সদস্য, এমপি, মন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সাংবাদিকসহ নির্দোষ অনেক মানুষও রয়েছেন।
    এ ব্যাপারে অনেকেই ধারণা করছেন যে, আশুলিয়া প্রেসক্লাব ভাংচুর দখল, আশুলিয়া থানা ভাংচুর ও সরকারি অস্ত্র লুট অগ্নিসংযোগকারীরা এসব হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এসব ঘটনায় অনেকেই অপপ্রচার চালায় ওমুকের গুলি লাগছে, ওমুকে আহত হয়েছেন, এসব লোকজনের গুলিবিদ্ধ কোনো চিত্র পাওয়া যায়নি, তারা গুলিবিদ্ধ হয়ে কোথায় কি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন? পুরো বিষয়টি রহস্যজনক বলে মনে করছেন শহীদ হওয়া ভুক্তভোগী পরিবারসহ সচেতন মহল। সূত্র জানায়, আশুলিয়ার বাইপাইলে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে, তাদের কাছে পুরো আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকার মানুষ জিম্মি। কিছু অপরাধী আছে যারা নিজের অপরাধ আড়াল করতে অপহরণ, হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত করে, তারা আবার থানায় গিয়ে পুলিশ প্রশাসনের সরকারি কাজে বাঁধা সৃষ্টি করে এমন তথ্য রয়েছে। আশুলিয়ার বাইপাইলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার উপর গুলিবর্ষণ করে যারা এই গণহত্যার মতো ঘটনা ঘটিয়েছে তাদেরকে শনাক্ত ও গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা জরুরী বলে মনে করেন সচেতন মহল। এই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন সেই শহীদদের পরিবার সঠিক বিচার পাবেতো?। প্রায় ১০ মাস অতিবাহিত হলো, কিছু অপরাধীদেরকে গ্রেফতার করা হলেও যারা নির্দোষী মানুষকে হয়রানি করছে তাদেরকে আটক করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। যেমন: তাদের মধ্যে সায়েব আলী ওরফে আব্দুল জলিল পৃথক ব্যক্তি নাকি সায়েব আলীই জলিল? আর সায়েব আলী জলিলের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে, এর আগে র‍্যাব-৪ ও আশুলিয়া থানা পুলিশ জলিলকে গ্রেফতার করেন এবং আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়, এরপর জামিনে এসে এলাকায় চুরি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে গত ১৩ মার্চ২০২৫ইং আদালতে অস্ত্র মামলায় হাজিরা দিতে গেলে আব্দুল জলিলকে কারাগারে পাঠায় আদালত। এর আগে হত্যা মামলার ভুয়া বাদী আব্দুল জলিল এর বিরুদ্ধে দেশ টিভি’র ৫ মিনিট ৩ সেকেন্ডের নিউজ প্রকাশ হয় এবং এরপর যমুনা টিভি’র ৩৮ মিনিট ২ সেকেন্ডের বিস্তারিত সংবাদ প্রকাশ করা হয়। সেই সাথে একাধিক জাতীয় সংবাদপত্রে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। তার ভুয়া মামলার একটি সূত্রঃ সি, আর মামলা নং ১১৪৬/২০২৪ ধারাঃ ৩০২/১০৯/১১৪/১২০(খ)/৩৪ দণ্ডবিধি। আশুলিয়া থানার মামলা নং ১৫। তারিখ ০৮/০৯/২০২৪। এখানে মোঃ সাহেব আলী (৪৪) পিতা মোঃ আনজুর প্রামানিক, মাতা-মোছাঃ রাবেয়া খাতুন, সাং সাভার ফরিদপুর, পোঃ বওয়ারী পার, থানা ফরিদপুর, জেলা পাবনা। বর্তমান- খেজুরবাগান, থানা আশুলিয়া, জেলা-ঢাকা। জাতীয় পরিচয়পত্র নং-৩২৮১৩৮২৭৩৩। মোবাইল নং-০১৬৪১১৪৮৬০১। আশুলিয়া থানা পুলিশ ও র‍্যাব জানায়, অপরাধীদের আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এইসব প্রতারকদের গ্রেফতার করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান ভুক্তভোগী পরিবারসহ সচেতন মহল। আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের জামগড়া এলাকার বাসিন্দা মাহি নামের এক ভুক্তভোগী জানান, আমি কোনো রাজনীতি করিনা, আমার কোনো পদ পদবী নেই, একটি মামলায় ২০ নং আসামী করেছে দালাল চক্র। এই মামলার বাদীকে মোবাইল ফোনে কল করলে রিসিভ করেন না, অনেকেই বলছে এটা ভুয়া বাদী তাই ফোন রিসিভ করেন না। পিবিআই ও আশুলিয়া থানা পুলিশ এ ব্যাপারে তদন্ত করেছেন, তারা মানবিক পুলিশ তাই আমাকে বলেছেন যে, আপনার কোনো চিন্তা নাই, আমরা তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের আটক করে আইনের আওতায় আনবো আর যারা দোষী না তাদেরকে হয়রানি করা হবে না।
    আশুলিয়ার বাইপাইলে গত ৫ আগস্ট শহীদ হন আশুলিয়ার সিটি ইউনিভাসিটির টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং (বিএসসি) প্রথম বর্ষের ছাত্র- সাজ্জাদ হোসেন সজল। সজলের মা মোছাঃ শাহিনা বেগম এর কাছে তার ছেলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার একমাত্র ছেলে সজলকে যারা হত্যা করেছে তাদের কঠিন শাস্তি দাবী করছি। সেই সাথে আমার ছেলেসহ যাদেরকে হত্যা করা হয়েছে সেই হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানাই। উক্ত ব্যাপারে (পিবিআই), ডিবি, পুলিশ ও র‍্যাব জানায়, তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের আটক করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আশুলিয়া থানায় ৫ আগষ্টের পর ৪-৫ জন ওসি রদবদল হয়েছেন, তাদের মধ্যে দুইজন ওসি ক্লোজ, একজন হত্যা মামলার আসামী হলেও চট্রগ্রামে চাকরি করছে, চলমান ওসি মনিরুল হক ডাবলু ছাত্রদল ও ছাত্রলীগ থেকে পুলিশে আসছেন এমন তথ্যের ভিত্তিতে জটিলতা সৃষ্টি হয়, এরপর তার পরিবর্তে সোহরাব আল হোসাইন ওসি আশুলিয়া থানায় আসার দেড় মাসের মাথায় চলে যেতে হয়েছে। সচেতন মহলের দাবী-ভুয়া বাদীর মামলা বাতিল করাসহ অপপ্রচারকারী ও ভুয়া বাদী প্রতারক চক্রকে আটক করে আইনের আওতায় আনা হোক। বিশেষ করে যারা ছাত্র আন্দোলন করেছেন তারা এখন রাজনৈতিক নেতা হয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন বলে সমন্বয়ক থেকে পদত্যাগ করেছেন, অনেকেই অভিমত প্রকাশ করেন, দেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তিন হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন, ছাত্র-জনতা প্রায় ৬ শতাধিক শহীদ বা নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ, যাদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তারা কি এই ক্ষতিপুরুণ পাবেন? যারা সাধারণ মানুষ মামলায় হয়রানি হয়েছেন এবং মোটা অংকের টাকা খরচ করেছেন, তাদের জন্য সরকার কি কোনো সহযোগিতা করবেন?। বর্তমানে আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোহরাব আল হোসাইন না থাকায় (ওসি তদন্ত ভারপ্রাপ্ত) কামাল দায়িত্ব পালন করছেন, অপরাধী সে যেইহোক না কেন তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলে পুলিশ জানায়।
    আশুলিয়া থানার সিনিয়র (এসআই) মাসুদ আল মামুন বলেন,ওসি স্যার হঠাৎ চলে যাওয়ায় একটু সমস্যা হয়েছে, এখন আশুলিয়া থানায় যেকোনো অভিযোগ ও মামলার ব্যাপারে তদন্ত করে দোষীদের আটকের পর আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি আরও বলেন, অপরাধী কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। র‍্যাব জানায়, মানুষ হত্যাকারী অপরাধী সে যেইহোক না কেন তাদেরকে আটক করে আইনের আওতায় আনা হবে। বাংলাদেশে মোট মামলার সংখ্যা ৪৫ লাখ ৭১ হাজার ১৬৮টি এর মধ্যে আশুলিয়ায় সবচেয়ে বেশি মামলা বাণিজ্য হয়েছে, এখানে ভুয়া বাদির ভুয়া মামলায় সাধারণ মানুষের নাম দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীসহ সচেতন মহলের দাবী। এবার দেখা যাবে আশুলিা থানার নবনিযুক্ত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হান্নান সাহেব কতদিন এই আশুলিয়া থানায় দায়িত্ব পালন করতে পারেন, আশুলিয়াবাসী তার কাছে ভালো কিছু প্রত্যাশা করছেন।

  • দুদ-কের বিশেষ অভি-যানেও ব-ন্ধ হয়নি বিআরটিএ কর্মকর্তা ও নির্বাচন অফিসের অনি-য়ম দুর্নী-তি

    দুদ-কের বিশেষ অভি-যানেও ব-ন্ধ হয়নি বিআরটিএ কর্মকর্তা ও নির্বাচন অফিসের অনি-য়ম দুর্নী-তি

    হেলাল শেখঃ সারাদেশে দুদকের বিশেষ অভিযানেও বন্ধ হয়নি বিআরটিএ কর্মকর্তাসহ নির্বাচন অফিস ও ইউনিয়ন পরিষদে অনিয়ম দুর্নীতি। ঢাকাসহ সারাদেশে ৩৫টি অফিসে দুদকের অভিযানেও কর্মকর্তাদের কৌশলগত অনিয়ম দুর্নীতি এখনো কমেনি। কর্মকর্তাদের দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করার পর দুদকের অভিযান চলমান রয়েছে, সংবাদ প্রকাশ করায় এর মধ্যে সংবাদ কর্মীদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিচ্ছে দালাল চক্র। ড্রাইভিং লাইসেন্স ও যানবাহনের ফিটনেস সার্টিফিকেট নিতে গিয়ে দালালদের মাধ্যমে ঘুষ লেনদেন এবং নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে ঢাকাসহ দেশের ৩৫টি বিআরটিএ (বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কতর্ৃপক্ষ) অফিসে একযোগে অভিযান চালায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সেই সাথে নির্বাচন অফিস ও ইউনিয়ন পরিষদে অনলাইনে নাম বয়স সংশোধনের ক্ষেত্রে কিছু হয়রানির অভিযোগ পাওয়া যায়।
    সোমবার (৩০ জুন ২০২৫ইং) জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে দুদক নিয়মিত অভিযান চালালেও বিআরটিএ কর্মকর্তারা অনেকেই নতুন কৌশলে ঘুষ বাণিজ্য শুরু করেছে। জানা যায়, গত (৭ মে ২০২৫ইং) সকালে দুদকের প্রধান কার্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন জেলা কার্যালয় থেকে অভিযান শুরু করেন দুদক কর্মকর্তারা। রাজধানীর উত্তরা ও ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ অফিস ছাড়াও গাজীপুর, নারায়নগঞ্জ, চট্রগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, পাবনা ও সিলেটসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিআরটিএ অফিসগুলোতে অভিযান চালানো হয়। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা তাসজির আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান, গত বুধবার সারাদেশে ৩৫টি বিআরটিএ অফিসে একযোগে অভিযান চালানো হয়। এরপর আবারও অভিযান চালায় দুদক কিন্তু কোনো ভাবেই বন্ধ হচ্ছে না অনিয়ম দুর্নীতি।
    সুত্র জানায়, অনেক অফিসেই দালালদের সরব উপস্থিতি ও সেবা দিতে গিয়ে ঘুষ দাবি করার প্রমাণ মিলেছে। অভিযোগ রয়েছে, সাধারণ মানুষ দালাল ছাড়া সহজে কোনো সেবা পাচ্ছেন না। অভিযানের আওতায় অন্যান্য জেলা অফিসের মধ্যে রয়েছে বাগেরহাট, বরিশাল, কক্সবাজার, কুমিল্লা, যশোর, পাবনা, ঠাকুরগাঁও, টাঙ্গাইল নেত্রকোনা, নীলফামারী, গোপালগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, মেহেরপুর ও শেরপুরসহ আরো অনেক জায়গায়। এর আগেও ২৯ এপ্রিল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ৩৬টি অফিস এবং গত ১৬ এপ্রিল দেশের ৩৫টি সাব-রেজিস্ট্রার অফিসেও অনিয়মের অভিযোগে অভিযান চালিয়েছিলো দুদক। এ অভিযানগুলো সরকারি সেবা সংক্রান্ত দুর্নীতির বিরুদ্ধে ধারাবাহিক পদক্ষেপের অংশ বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির কর্মকর্তাগণ। উক্ত ব্যাপারে আমাদের রিপোর্টার মোঃ সাইফুল ইসলাম জয় (হেলাল শেখ) এর অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের ধারাবাহিক ভাবে চলবে।
    এর আগে বিআরটিএ অফিসের কর্মকর্তার অনিয়ম দুর্নীতির সংবাদটি প্রকাশ করা হয়, বিশেষ করে ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ ও সাভারে বিআরটিএ অফিসের কুখ্যাত দুনীতিবাজ মোটরযান পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম খান গোপালগঞ্জ এলাকায় বিয়ে করে জামাই হওয়ার সুবাদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ শীর্ষ নেতাদের সাথে ছিলো সুসম্পর্ক আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ঢাকাসহ নিজ এলাকায় বাড়ি গাড়িসহ অনেক সম্পদ গড়ে তুলেছেন। এমনকি সংশ্লিষ্ট দালাল চক্রের সদস্যরাও একাধিক বাড়ি গাড়ির মালিক বুনে গেছেন। সূত্র জানায়, সাভারের আশুলিয়ার জামগড়া পেঁয়ারা বাগান এলাকায় বাড়ি করেছে মোস্তফা কামাল নামের এক সক্রিয় দালাল। জানা গেছে, বিআরটিএ কর্মকর্তা মোটরযান পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম খান তার অফিসে সঠিক সময় আসেন না। অফিসের সংশ্লিষ্ট লোকজন জানায়, তাদের সাথেও তিনি মাঝে মধ্যে খারাপ ব্যবহার করেন, টাকার গরমে মানুষকে মানুষ মনে করেন না বলে অফিসের লোকজন অনেকেই জানান। অফিস সূত্রে জানা গেছে, আমিনুল ইসলাম অনিয়ম দুর্নীতি করে ঢাকায় ফ্ল্যাট বাসা বাড়ি গাড়ি করে শত শত কোটি টাকার মালিক বুনে গেছেন। এ ব্যাপারে একাধিক জাতীয় দৈনিক পত্রিকাসহ গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। দুদক কর্মকর্তা বিভিন্ন অফিসে অভিযান করলেও সাভারে অভিযান করার বিষয়ে নিশ্চিত নয়।
    জানা গেছে, আমিনুল ইসলাম খানের কয়েক বছর আগে তেমন কিছু ছিলো না, বিআরটিএ’র অফিসে অনিয়ম দুর্নীতি ও ঘুষ গ্রহণ করে ( ব্ল্যাক মানি) কালো টাকার মালিক বুনে গেছেন। সূত্র জানায়, বর্তমান সময়ে আলোচিত ও সমালোচিত কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে ঢাকা বিভাগীয় বিআরটিএ অধিনস্থ ঢাকা জেলা সার্কেলের মোটরযান পরিদর্শক মোঃ আমিনুল ইসলাম খান। দেখা যায়, দূর-দূরান্ত থেকে আগত মোটরযানের কাগজপত্র নিয়ে সেবা পেতে আসা সেবাগ্রহীতাদের কৌশলে জিম্মি করে ভুলবাল বুঝিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও পরীক্ষায় পাস-ফেলের গ্যাড়াকলে ফেলে দালাল নিযুক্ত সদস্য দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। প্রতিনিয়ত বিআরটিএ পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়, এ যেন মহা ঘুষ বাণিজ্য ও বিআরটিএ অফিসের ভেলকিবাজি। ভুক্তভোগীরা জানায়, আমরা এই অফিসের কর্মকর্তার কাছে একরকম জিম্মি হয়ে আছি, তাদেরকে ঘুষ দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ফেল করে হয়রানি করে। পাস-ফেল তাদের হাতে, কৌশলে জিম্মি করে গ্যারাকলে ফেলে পরীক্ষায় ফেল করা হয় বলে অনেকেই জানান।
    জানা গেছে, মাসের পর মাস ঘুরানো হয় ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে আসা লোকজনকে। অতিরিক্ত টাকা দিলে কম সময়ে লাইসেন্স পাওয়া যায় আর তা নাহলে হয়রানির শেষ নাই। এ ভাবেই চলছে অনিয়ম দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের মহোৎসব। কারণ, উক্ত অফিসের মোটরযান পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম গোপালগঞ্জের মানুষের কথিত জামাই। এখন আবার বিএনপি’র শীর্ষ নেতার আত্মীয়, নিজে আবার নাকি ছাত্র দল করতেন, তবে তার কোনো প্রমান পাওয়া যায়নি, তিনি একজন সুবিধাবাদী মানুষ বলে অনেকেই অভিমত প্রকাশ করেন। সূত্র জানায়, বিআরটিএ ঢাকা জেলা সার্কেলের অধিনস্থ সাভার বিআরটিএ অফিসে যোগদান করার পর থেকে তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক অভিযোগ। সরকারি সাইনবোর্ডের আড়ালে থেকে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করেই যাচ্ছেন তিনি। সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিজের মতো করে ভাবনিয়ে অফিস চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেক গাড়ির মালিকের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে, গাড়িপ্রতি ফিটনেস বাবদ ঘুষ গ্রহণ করেন ৫ হাজার টাকা, এই ঘুষ দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে গাড়ির মালিকের ভোগান্তির মাত্রা আরো বেড়ে যায়। জানা গেছে, গাবতলী- টাঙ্গাইল মহাসড়কে এবং সাভারের ঢাকা-আরিচা পাটুরিয়া সড়কে হাজার হাজার মোটরযান চলে, এসব মোটরযানের বেশিরভাগই ফিটনেসবিহীন, এসব গাড়ি থেকে প্রতিবছর সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।
    গোপালগঞ্জের জামাই বিআরটিএ মোটরযান পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম খানের সাথে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি। এ দিকে বিআরটিএ দালাল চক্রের সদস্য সাভারের আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার মোস্তফা কামাল এর মোবাইল নাম্বারে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ফোন রিসিভ না করে তার ছেলের দিয়ে রিসিভ করে বলায় যে, বাবার জ্বর আসছে কথা বলতে পারবেন না। এর আগে উক্ত ব্যাপারে একাধিক সংবাদপত্রে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। উক্ত ব্যাপারে ৩৫টি অফিসে দুদক অভিযান চালালেও বিআরটিএ অফিসের ঘুষ বাণিজ্য কোনো ভাবেই বন্ধ হচ্ছে না। জানা যায়, অনিয়ম দুর্নীতি ধরা পড়লেই অন্য জেলায় বদলি করা হয় সেই কর্মকর্তাকে, এই কারণে তাদের আর সমস্যা হয় না। উক্ত বিষয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।##

  • পরিশ্রমী এক মানবিক চিকিৎসক ডা. হাসান মাহমুদ

    পরিশ্রমী এক মানবিক চিকিৎসক ডা. হাসান মাহমুদ

    দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
    দোয়ারাবাজার উপজেলার দুর্গম হাওরাঞ্চলে তিনি শুধু একজন চিকিৎসক নন—তিনি হয়ে উঠেছেন মানুষের নির্ভরতার অন্য নাম। নদীঘেরা জনপদে, যেখানে যাতায়াতের উপায় নৌকা, আর বর্ষা মানেই বিচ্ছিন্নতা, সেখানেই জীবনের এক নিবেদিত গল্প লিখে চলেছেন ডা. হাসান মাহমুদ।

    ২০০৮ সালে কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার হিসেবে দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদানের পর থেকেই তিনি হাওরের প্রতিটি জনপদের পাশে থেকেছেন নীরবে, নিবেদনে। ঘরে ঘরে গিয়ে, নৌকায় ভেসে, কাদামাটি পেরিয়ে—চিকিৎসা পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। আশ্রয়কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে দিয়েছেন সাহস হয়ে, রোগীর শিয়রে বসে শোনেন তাদের জীবনের গল্প। মহামারিকালে যখন সবকিছু স্থবির, তখনও তিনি ছিলেন প্রথমসারিতে—নিজেকে ঝুঁকিতে রেখে মানুষের পাশে।

    বন্যার সময় শুধু ওষুধ নয়, মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন খাবার, স্যানিটারি সামগ্রী, ও এক চিমটি স্বস্তির বাতাস। সেবার পরিধি তাঁর কাছে হাসপাতাল-ঘরের বাইরেও বিস্তৃত।

    নোয়াখালী জেলা সদরের মাস্টারপাড়া গ্রামে জন্ম তাঁর। পিতা রহমত উল্লাহ’র, মা মৃত হাসিনা আক্তারের আদর্শে মানুষ হয়ে ওঠা।

    উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের ভুজনা গ্রামের সাবিনা আক্তার বলেন,
    ‘হাসপাতালে কাউকে না পেলেও ডা. হাসান মাহমুদকে পাওয়া যায়। তিনিই আমাদের নির্ভরতা। শুধু ডাক্তার নয়, তিনি আমাদের একজন আত্মার মানুষ।’

    স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী আবু সালেহ মো. আলাউদ্দিনের ভাষায়—
    ‘তিনি একজন পেশাজীবী চিকিৎসকের চেয়েও বড় কিছু—একজন হৃদয়ের মানুষ। দোয়ারাবাজারের হাওরজুড়ে একটাই নাম: মানবিক ডাক্তার—ডা. হাসান মাহমুদ।’

  • পাইকগাছা-সাতক্ষীরার গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণের কাজ ফে-লে পালি-য়েছেন ঠিকাদার

    পাইকগাছা-সাতক্ষীরার গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণের কাজ ফে-লে পালি-য়েছেন ঠিকাদার

    ইমদাদুল হক,পাইকগাছা ( খুলনা ) ।।

    খুলনার পাইকগাছা সীমান্তবর্তী সাতক্ষীরার-তালা উপজেলার সাথে যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণের কাজ ফেলে পালিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার।গত পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি সাতক্ষীরার তালা উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগের এই গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি। দীর্ঘদিন অর্ধঅবস্থায় পড়ে থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যেনো কোন মাথাব্যথা নেই।

    স্থানীয়রা জানান,পাইকগাছা ও তালা উপজেলার সীমান্তবর্তী রাড়ুলী ইউনিয়নের কাটিপাড়া-খেশরা গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কপোতাক্ষ নদ নব্বয়ের দশকে ভরাট হয়ে সরু খালে পরিণত হয়। ১৯৯৮ সালে খেশরা ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান এমএম ফজলুল হক ও রাড়ুলী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের উদ্যোগে একটি বাসের সাঁকো নির্মাণ করা হয়। এ সময় জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার জন্য ওই স্থানটিতে পাকা রাস্তা নির্মাণ করা হয়।

    ২০১৩ সালে পাখিমারা টিআরএম ও কপোতাক্ষ পুনঃখনন প্রকল্পের আওতায় নদীটি খনন করার সময় রাস্তাটি ভেঙে ফেলা হয়। তখন থেকে জনগণের দুর্ভোগ শুরু হয়। জনসাধারণের সাময়িক চলাচলের জন্য স্থানীয় জনগণ খেশরা ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান এসএম লিয়াকত হোসেন ও খেশরা পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জের সমন্বয়ে একটি ঘাট কমিটি তৈরি করে নিজেদের অর্থায়নে সেখানে একটি সাঁকো তৈরি করেন।

    সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ১৯ অক্টোবর কপোতাক্ষ নদের ওপর পাইকগাছার সীমান্তবর্তী শালিখা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। প্রায় ৭ (সাত) কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল এই সেতুটি।পাইকগাছা উপজেলাধীন বাঁকা জিসি-পাটকেলঘাটা জিসি সড়কে ৭১০০মি: চেইনেজে শালিখা নদীর উপর ৬৬.০০ মিটার দীর্ঘ আরসিসি গার্ডার ব্রীজটি গত ২০২৩ সালের ৩১ আগস্ট শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সেটা শেষ হয়নি। ব্রীজের ৬০% কাজ করার পর ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে কাজ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন ও যন্ত্রপাতি হঠাৎ করেই রাতের আঁধারে সাইট থেকে উধাও করে দেয়।

    স্থানীয় সরকার পাইকগাছা প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) থেকে সর্বশেষ ২০২৫ সালে এস এ-জেডটি(জেভি), দক্ষিণ টুটপাড়া ক্রস রোড-২ খুলনা কে বারংবার তাগিদ প্রদান করার পরেও কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ফলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কোন ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায়, গত ২০২৩ সালের মার্চ মাসের ১০ তারিখে নির্বাহী প্রকৌশলী খুলনা বরাবর ব্রীজ নির্মাণ কাজে ২৮ দিনের চুড়ান্ত নোটিশ প্রদান এবং কাজ বাতিলের কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করে স্থানীয় প্রকৌশলী অধিদপ্তর পাইকগাছা।

    পাইকগাছা-সাতক্ষীরার এই গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে। গত বছরের ৫ আগস্ট তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরবর্তী সময়ে হঠাৎ করে উধাও হয়ে গেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘এস এ-জেডটি(জেভি)’। ফলে তালা উপজেলার খেশরা ইউনিয়নের শালিখা ও পাইকগাছার কাটিপাড়া সড়কের নদীর ওপর ভাঙাচোরা সাঁকো দিয়ে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত পার হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ, পার হচ্ছে সাইকেল, ভ্যান, ইঞ্জিনভ্যান ও মোটরসাইকেল।গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটিতে ব্রিজের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় প্রতিনিয়ত জনসাধারণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ তালা উপজেলার শালিখা, খেশরা, বালিয়া,জালালপুর ও মাগুরা ইউনিয়নের মানুষ কাটিপাড়া বাজার, বাঁকা বাজার, পাইকগাছা, কয়রা, আশাশুনি উপজেলা ও সাতক্ষীরা জেলা শহরে যাতায়াত করে থাকেন।

    কাটিপাড়া বাজারে বস্ত্র ব্যাবসায়ী গোবিন্দ বলেন, আমাদের তালা উপজেলার হরিহর নগর বাজারে বস্ত্র ব্যাবসা রয়েছে। সেখানে প্রতিদিন আসা-যাওয়া করতে হয়। যখন বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হতে হয় তখন ভয় হয় না জানি ভেঙে নদীতে পড়তে হয়। তিনি আরো বলেন ব্যবসায়ী কাজ শেষ করে যেতে অনেক রাত হয়।এই বৃষ্টি কাঁদার সময় মটরসাইকেল পার হতে গেলে চাকা পিছলে যায়।

    কাঁচা মাল ব্যবসায়ী, তারক চন্দ্র বলেন, আমি সকালে কাটিপাড়া বাজারে কাঁচা মাল বিক্রয় করে দুপুরে পর ওই পারে হরিহর নগর বাজারে মাল বিক্রয় করতে যায়। ভ্যান করে মাল নিয়ে বাসের সাঁকো পার উঠলে শরীরটা কেপে উঠে। নড়বড়ে সাঁকো দোল খায়, মনে হয় ভ্যান সহ নদীতে ভেঙে পড়বে।

    তালা উপজেলার শালিখা গ্রামের শিক্ষার্থী রাসেল সরদার, হরিহর নগরের মাছুম বিল্লাহ, মুড়াগাছা গ্রামের শাকিবুর রহমান, আফসানা মিমি ও বালিয়া গ্রামের সুমন দাশ জানান, কাটিপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও রাড়ুলী কলেজে পড়েন এই শিক্ষার্থীরা, প্রতিদিন তাদের স্কুল কলেজে এ বাসের সাঁকো পার হয়ে আশা-যাওয়া করতে হয়।এই নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে পার হতে গেলে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বৃষ্টির সময় সাইকেল নিয়ে পার হতে গেলে সাইকেলের চাকা সরে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কমলমতি শিক্ষার্থীদের দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে এই সেতুর কাজ শেষ করার।

    এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এস এ-জেডটি(জেভি)’র স্বত্বাধিকারী জিয়াউল আহসান মুঠোফোনে জানান, আগামী সপ্তাহে কাজ শুরু হবে।

    পাইকগাছা উপজেলা প্রকৌশলী মো. শাফিন শোয়েব জানান, শালিখা সেতুর কাজ শেষ করতে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে একাধিকবার নোটিশ দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু বারবার তাগাদা দিয়েও তার পক্ষ থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায়। তাই বাধ্য হয়ে, গত ২০২৩ সালের মার্চ মাসের ১০ তারিখে নির্বাহী প্রকৌশলী খুলনা বরাবর ব্রীজ নির্মাণ কাজে ২৮ দিনের চুড়ান্ত নোটিশ প্রদান এবং কাজ বাতিলের কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাঠানো হয়েছে।তিনি আরো বলেন, ঠিকাদার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে আবারও কাজ শুরু হবে।

    খুলনার পাইকগাছা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহেরা নাজনীন বলেন, সেতুটি দুই জেলার সংযোগ স্থাপনকারী অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো। এলজিইডির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    ইমদাদুল হক
    পাইকগাছা,খুলনা।।

  • মহেশপুর সীমান্তে ফের ভারতীয় নারী আ-টক

    মহেশপুর সীমান্তে ফের ভারতীয় নারী আ-টক

    ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতাঃ
    ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত থেকে আবারও এক ভারতীয় নারীকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। ২৯ জুন রাত ১০টা ২০ মিনিটে মহেশপুর ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ খোশালপুর বিওপির নিয়মিত টহল দলের সদস্যরা তাকে খোশালপুর মোড় এলাকায় সীমান্ত থেকে প্রায় ৯০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থেকে আটক করে।আটককৃত নারীর নাম ফাল্গুনী রায় (২৮)। তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বনগাঁ থানার আরশিংড়ী গ্রামের বাসিন্দা। তার পিতার নাম মৃত বিশ্বনাথ রায়। বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, তার কাছে বৈধ ভারতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে।

    বিজিবি জানায়, ফাল্গুনী রায় দুই বছর আগে যশোর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে যশোর জেলার গদখালী এলাকায় তার খালার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল তিনি কুমিল্লাপাড়া সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে ফেরার চেষ্টাকালে প্রথমবার আটক হন এবং ওই ঘটনায় মহেশপুর থানায় মামলা (নং-৯৪) দায়ের করে তাকে সোপর্দ করা হয়। জানা গেছে, প্রথমবার আটক হওয়ার পর তিনি ৫০ দিন কারাভোগ করেন এবং ১৬ জুন ২০২৫ তারিখে মুক্তি পান। এরপর ২৯ জুন তিনি আবারও অনুপ্রবেশের চেষ্টা করলে ফের বিজিবির হাতে আটক হন।

    বিজিবির সহকারী পরিচালক ও মহেশপুর ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত কোয়ার্টার মাস্টার মুন্সী ইমদাদুর রহমান জানান, ফাল্গুনী রায়ের বিরুদ্ধে পূর্ববর্তী মামলার উল্লেখসহ নতুন করে মামলা দায়ের করে তাকে মহেশপুর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
    তিনি আরও বলেন, সীমান্ত এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে বিজিবি’র নজরদারি ও টহল আরও জোরদার করা হয়েছে।

    আতিকুর রহমান
    ঝিনাইদহ

  • ঝিনাইদহের বংকিরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচী’২৫ পালিত

    ঝিনাইদহের বংকিরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচী’২৫ পালিত

    ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতাঃ
    জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা ও সবুজ ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে বিভিন্ন ধরনের বৃক্ষ রোপণ করা হয়। বিদ্যালয়ের সভাপতি সাকিব মোহাম্মদ আল হাসান এর সভাপতিত্বে বৃক্ষ রোপণে অংশ গ্রহণ করেন জেলা শিক্ষা অফিসের সম্মানিত পরিদর্শক জনাব মোফাজ্জল হোসেন পলাশ, প্রধান শিক্ষক খসরুল আলম, সহকারী প্রধান শিক্ষক আশাদুল কবির, ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম মনসাদ, বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি আতিয়ার রহমান ফারাজী, এনামুল হক ডালু, প্রাক্তন শিক্ষক বজলুর রহমান, আলহাজ্ব হায়দার আলী জোয়ার্দার, ডা: ফজলুর রহমান, ডা: বোরাক হোসোন, আব্দুল লতিফ ও আশানুর রহমান । বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মাসুদুর রহমান, আনোয়ার পাশা বিদ্যুৎ, আনোয়ার জাহিদ, শহিদুল ইসলাম, মদন কুমার দে, মানোয়ার হোসেন সহ সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীবৃন্দ
    আয়োজনটি সার্বিক বাস্তবায়ন করেন কমিটির আহবায়ক, সিনিয়র মো: নাসির উদ্দিন, সদস্য মাহবুবুর রহমান ও আশরাফুল ইসলাম।

  • তেঁতুলিয়ায় বিবিজি প্রকল্প কাজে ব্যাপক অ-নিয়ম, অফিস নেয় লাখে ২৫ হাজার

    তেঁতুলিয়ায় বিবিজি প্রকল্প কাজে ব্যাপক অ-নিয়ম, অফিস নেয় লাখে ২৫ হাজার

    মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম, তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়ন পরিষদে ইউনিয়ন পরিষদ উন্নয়ন সহায়তা থোক বরাদ্দ (বিবিজি) ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১ম ও ২য় কিস্তি প্রকল্পের বাউন্ডারি ওয়াল, ইউ ড্রেন, প্রাইমারী ইউ ড্রেন ও আরসিসি ক্রোস ড্রেন কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এস্টিমেট অনুযায়ী কাজ না করে নিম্নমানের ইটসহ নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে প্রকল্প সম্পন্ন করা হচ্ছে এবং কতগুলো সম্পন্ন হয়েছে বলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে।

    সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের শিবচন্ডি কমিউনিটি ক্লিনিকের বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ কাজে ব্যবহার হচ্ছে একেবারেই নি¤œমানের ইট, রড ব্যবহার হচ্ছে সকল ক্ষেত্রে ১০ মিলিমিটারের। এছাড়া নির্মাণ মিস্ত্রি বলতে পারেননি কাজের ধরন সম্পর্কে। ৫নং ওয়ার্ডের মাগুরমারী আজিবরের বাড়ির সামনে ইউড্রেন নির্মাণ কাজে ব্যবহার হয়েছে নিম্নমানের পুরোনো ইট, ৮নং ওয়ার্ডের সরকারপাড়া রবিউলের বাড়ির পশ্চিমে আরসিসি ক্রোস ড্রেন নির্মাণে বোটম স্লাবে ৮.৮৫ইঞ্চি ঢালাইয়ের স্থলে সাড়ে ৫ইঞ্চি ঢালাই করা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য প্রকল্প স্কিমগুলোতে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রীসহ এস্টিমেট অনুযায়ী কাজ করা হয়নি বলে প্রতিবেদকের বক্তব্য।

    জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদ উন্নয়ন সহায়তা থোক বরাদ্দ (বিবিজি) ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১ম ও ২য় কিস্তির প্রকল্পের ১১টি স্কিমে ১৩ লাখ ৯৭ হাজার ৪০০টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে দুটি স্কিমের ২লাখ টাকা শিক্ষা উপকরণ বিতরণ বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

    দেবনগড় ইউনিয়নের পরিষদের ১নং ওয়ার্ড সদস্য এ.কে.এম তৈয়ব আবুল বলেন, ‘বরাদ্দের মধ্যেই ২৫হাজার টাকা আলাদা খরচ হয়। এই ২৫ হাজার টাকার মধ্যে ইউপি সচিব আগেই ৭ হাজার টাকা নেয় সেসঙ্গে প্লেট বনানো বাবদ আলাদা ১হাজার টাকা নেয়, এলজিইডি অফিসকে বিল উত্তোলনের পর নগদে ১৭হাজার দিতে হবে বলে জানান।’ তিনি আরও বলেন, তার বাউন্ডারি ওয়ালে নি¤œমানের ইটের বিষয়ে কাউকে না জানাতে এবং বাড়াবাড়ি না করতে।
    ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল মমিন বলেন, ইটগুলো আমার আগের কেনা ছিল সেখান থেকে এনে কাজে লাগিয়েছি। এগুলো পুরোনো ইট না। ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আশরাফুল ইসলাম বলেন, এস্টিমেট অনুযায়ী কাজ হচ্ছে।

    এ বিষয়ে ইউনিয় পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, তিনি টেকনিক্যাল বিষয়ে অভিজ্ঞ না। প্রকল্পের কাজে অনিয়ম হচ্ছে কিনা যারা কেটনিক্যাল বিষয়ে জানেন তারাই বলতে পারবে। উপজেলা এলজিইডি এ বিষয়টি দেখবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

    উপজেলা এলজিইডির সার্ভেয়ার জয়নাল আবেদীন বলেন, আমরা কেবল এস্টিমেট করে দিই কাজ করার দায়িত্ব ওদের। আমরা দেখাশুনার দায়িত্ব পালন করিনা, চেয়ারম্যান মেম্বাররা নিজেরাই করেন। ঢালাইয়ের ক্ষেত্রে ডাকলে ফ্রি থাকলে দেখতে যায়।

    ব্লক গ্রান্ট কো-অর্ডিনেশন কমিটি(বিজিসিসি) এর সদস্য-সচিব ও উপজেলা প্রকৌশলী ইদ্রিস আলী খান বলেন, আমরা কেবল এস্টিমেট করে দিই, বাস্তবায়ন করেন ইউনিয়ন পরিষদ। সেখানে আমাদের অফিসের কোনো সহি-স্বাক্ষর লাগেনা। তবে ইউএনও মহোদয়ের সার্টিফাইট লাগে আমার জানামতে। টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেখানে আমাদের কোনো স্বাক্ষরের প্রয়োজন হয়না সেখানে এমনটি হওয়ার কথা না। তবে কেউ টাকা নিয়ে থাকলে বিষয়টি দেখবেন জানিয়েছেন।

    এ ব্যাপারে ব্লক গ্রান্ট কো-অর্ডিনেশন কমিটি(বিজিসিসি) এর সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফরোজ শাহীন খসরু বলেন, তিনি অনিয়মের বিষয়টি সরেজমিনে গিয়ে দেখার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন জানিয়েছেন।

    মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম।।

  • রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারা-গারে খুদে শিক্ষার্থীদের নিয়ে তারুণ্যের উৎসব ও আলোচনা সভা অনিষ্ঠিত

    রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারা-গারে খুদে শিক্ষার্থীদের নিয়ে তারুণ্যের উৎসব ও আলোচনা সভা অনিষ্ঠিত

    নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহীঃ রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে তারুণ্যের উৎসব – ২০২৫ তারুণ্যের প্রেরণায় নতুন বাংলাদেশ এবং মাদকমুক্ত সমাজ গড়ার লক্ষ্যে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

    ৩০ জুন সোমবার সকালে কারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিরাজুন নাজনীনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোঃ শাহ আলম খান, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত কারা উপ – তত্ত্বাবধায়ক
    নূর মোহাম্মদ মৃধা।

    প্রধান অতিথির সিনিয়র জেল সুপার মোঃ শাহ আলম খান বলেন, “এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই। এই মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে দেশের অন্যতম রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আগামী দিনে দেশ গঠনে ভূমিকা রাখবে। সমাজের অমূল্য সম্পদ ছাত্রছাত্রীরা দেশ গঠনের দায়িত্ব তাদেরকেই একদিন নিতে হবে। তরুণরা আগামীর ভবিষ্যৎ মাদক থেকে দূরে রেখে তাদের যথাযথভাবে গড়ে তুললে তারা দেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। এদিকে বর্তমান যুগের সথে তাল মিলিয়ে তাদের সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। ফলে তারা দেশের জন্য সম্পদে পরিনত হবে ইনসাল্লাহ।

    মোঃ হায়দার আলী
    নিজস্ব প্রতিবেদক,
    রাজশাহী।

  • অ-বৈধ সম্পদ অর্জন: স্ত্রী-পূত্রসহ বালুব্যবসায়ী রাজশাহী মহানগর আ.লীগ নেতা বেন্টুর বিরু-দ্ধে দুদ-কের মা-মলা

    অ-বৈধ সম্পদ অর্জন: স্ত্রী-পূত্রসহ বালুব্যবসায়ী রাজশাহী মহানগর আ.লীগ নেতা বেন্টুর বিরু-দ্ধে দুদ-কের মা-মলা

    নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী : অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে স্ত্রী, পূত্রসহ রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল আলম বেন্টুর (৫৩) নামে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা করেছে। গত রোববার সকালে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলার বাদী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মামলার প্রধান আসামি হলেন আজিজুল আলম বেন্টু।

    মামলার নথিতে উল্লেখ করা হয়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একচেটিয়া বালু ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেছেন। প্রভাব খাটিয়ে অল্প টাকায় বালুমহাল ইজারা নেওয়ার অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে। বালুমহাল থেকেই তিনি বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। বৈধ আয়ের উৎসা না থাকলেও বিপুল সম্পদের মালিক তাঁর গৃহিনী স্ত্রী নাসিমা আলম (৪৮) ও বেকার ছাত্র রুহিত আমিন (২৯)। দুদকের মামলায় তাদেরও আসামি করা হয়েছে।

    দুদক সূত্রে জানা গেছে, এই পরিবারের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান শুরু হয় আওয়ামী সরকারের আমলেই। আজিজুল আলম বেন্টু, তার স্ত্রী নাসিমা আলম ও ছেলে রুহিত আমিনের নামে দুদক ৩৬টি দলিল মূলে ৯ দশমিক ৪০০৮১৮৯ একর জমি পেয়েছে। অনুসন্ধানে তাদের মোট ১৮ কোটি ৪৩ লাখ ১৭ হাজার ৪৫৮ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। অথচ সম্পদ বিবরণীতে তথ্য গোপন করে দুদককে ৭ কোটি ৬৪ লাখ ২৬ হাজার ৯৪৫ টাকার সম্পদের বিবরণ দেন। ফলে তাঁর আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১০ কোটি ৪৬ লাখ ৪৪ হাজার ৬৮১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ দেখা যায়।

    অপরদিকে অনুসন্ধানকালে দুদক দেখেছে, বেন্টুর স্ত্রী নাসিমা আলম একজন গৃহিনী হলেও তার নামে আয়কর নথি খোলা হয়েছে। তার টিআইএন নম্বর- ৫৮৫৬৫৯৪৭৫১৯৬। নাসিমা আলমের ২০২৩-২৪ করবর্ষে দাখিলকৃত আয়কর নথি অনুযায়ী, তার নামে মোট সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৫৭ লাখ ৮৪ হাজার ৯৬৭ টাকার। অনুসন্ধানকালে নাসিমা আলমের আয়ের বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। স্বামী বেন্টুর অর্জিত সম্পদ তার নিজের আয়কর ফাইলে দেখিয়ে আয়কর নথি খোলা হয়েছে।

    ছেলে রুহিত আমিনের পেশা ছাত্র হলেও তার নামেও আয়কর নথি খোলা হয়েছে। তার টিআইএন নম্বর-৫৯২৮১৫৩২০৬০৩। ২০২৩-২৪ করবর্ষে দাখিলকৃত আয়কর নথি অনুযায়ী, তার নামে মোট সম্পদ ৭৮ লাখ ৫২ হাজার ৭৫৯ টাকার। অনুসন্ধানকালে তারও আয়ের বৈধ কোনো উৎস পাওয়া যায়নি। বাবা বেন্টুর অর্জিত সম্পদ তার আয়কর ফাইলে দেখিয়ে নিজ নামে আয়কর নথি খোলা হয়েছে। আয়কর নথিতে দেখা যায়, বেন্টু তার স্ত্রী এবং পূত্রকে গাড়ি কেনার জন্য ৬৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকাও দিয়েছেন।

    দুদক বলছে, নাসিমা আলম তার স্বামী আজিজুল আলম বেন্টুর অর্জিত জ্ঞাত আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ নামে আয়কর নথি খুলে সম্পদ অর্জন দেখিয়েছেন। একইভাবে ছেলে রুহিত আমিনও তার বাবা আজিজুল আলম বেন্টুর অর্জিত অবৈধ সম্পদ বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ নামে আয়কর নথি খুলে সম্পদ অর্জন দেখিয়েছেন। এসব অবৈধ সম্পদ নিজেদের নামে রেখে ও ভোগদখল করে তারাও অপরাধ করেছেন। তাই মামলায় আজিজুল আলম বেন্টু ছাড়াও স্ত্রী ও পূত্রকে আসামি করা হয়েছে।

    মামলার বাদী দুদকের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন জানান, মামলটি দায়েরর পর রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে নথি পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।

    মোঃ হায়দার আলী
    নিজস্ব প্রতিবেদক,
    রাজশাহী।

  • সরকারী নির্দেশে ৭ ব-ন্দীর সা-জা মওকুফ, রাজশাহী  কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি

    সরকারী নির্দেশে ৭ ব-ন্দীর সা-জা মওকুফ, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি

    রাজশাহী থেকে মোঃ হায়দার আলী : রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৭ বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে সরকার। কারাবিধির ৫৬৯ ধারা অনুযায়ী সাজা মওকুফ করে সোমবার (রাত ৮টার দিকে) তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। তারা ৯ মাস ১৬ দিন থেকে সর্বোচ্চ ২ বছর ৮ মাস ১৪ দিন পর্যন্ত মেয়াদ কমিয়ে মুক্তি পেয়েছেন।

    মুক্তিপ্রাপ্তরা হলেন, নওগাঁ, রাজশাহী ও বগুড়ার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। তাদের প্রত্যেকেই হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ছিলেন।

    রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শাহ আলম খান জানান, প্রস্তাবিত ১২৫ জন বন্দীর মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে ১৩ জনের সাজা মওকুফের সিদ্ধান্ত দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাদের মধ্যে ৪ জন আগেই মুক্তি পেয়েছেন এবং ২ জন অন্য কারাগারে থাকায় সেখানে চিঠি পাঠানো হয়েছে। রাজশাহী থেকে বাকি ৭ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়।

    মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন থাকায় স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাকে কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    মোঃ হায়দার আলী
    নিজস্ব প্রতিবেদক,
    রাজশাহী।