Blog

  • গোপালগঞ্জে কার-ফিউ শিথিল থাকলেও ব-ন্ধ ছিলো বেশিরভাগ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, জনমনে গ্রে-প্তার আ-তঙ্ক

    গোপালগঞ্জে কার-ফিউ শিথিল থাকলেও ব-ন্ধ ছিলো বেশিরভাগ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, জনমনে গ্রে-প্তার আ-তঙ্ক

    কে এম সাইফুর রহমান, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

    গোপালগঞ্জে গত ১৬ জুলাই অনুষ্ঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে হামলা, সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনার পর গোপালগঞ্জ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশে জারি করা কারফিউ শনিবার (১৯ জুলাই) ভোর ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১৪ ঘণ্টার জন্য শিথিল করা হয়েছে। কারফিউ শিথিল হলেও জনমনে এখনো আতঙ্ক বিরাজ করছে। জরুরি প্রয়োজনেও ঘর থেকে বের হচ্ছেন না অনেকে। শহরের বেশিরভাগ দোকান বন্ধ রয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে মোতায়েন রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

    শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। লঞ্চঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায় কিছু যানবাহন দাঁড়িয়ে আছে। তবে যাত্রী খুব একটা নেই। কিছু মানুষ এদিক-সেদিক যাচ্ছেন। লঞ্চঘাট এলাকায় দু-একটি দোকান ছাড়া বাকি দোকানগুলো বন্ধ দেখা গেছে। শহরের বড়বাজার, চৌরঙ্গী, বটতলা, কালিবাড়ী, বিসিক শিল্পনগরী সহ থানাপাড়া এলাকায়ও একই চিত্র দেখা গেছে। জরুরি প্রয়োজনে কিছু মানুষ আর কিছু দিনমজুর ঘর থেকে বের হয়েছেন। এর মধ্যে দিনমজুরের সংখ্যাই বেশি।

    জেলা শহরের বড়বাজার এলাকায় বাজার করতে আসা এক গৃহিণীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ৩ দিন পর অনেকটা নিরুপায় হয়েই আজ বাজার করতে এসেছেন তিনি, দোকানপাট খুব একটা খোলা নেই, বাজার করেছেন, পণ্যের সরবরাহ কম থাকায় তুলনামূলক ভাবে দাম কিছুটা বেশি তবুও কিনে নিয়েছি, যদি আবার কারফিউম শুরু হয় তাহলে তো সমস্যায় পড়বো।

    বিসিক শিল্পনগরী এলাকার স্বনামধন্য ভাই ভাই বেকারির ম্যানেজারের সাথে কথা হলে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, কারফিউ তুলে নিয়েছে ভেবে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে আমাদের কর্মচারী হাসিব চৌধুরী (১৬), শামীম শেখ (২০), কালীন শেখ (১৬), সাহেবুল শেখ (১৮) কাজ শেষ করে বেকারির ১০ গজ দূরে বিসিক শিল্পনগরী মসজিদের সামনে বসে একটু বিশ্রাম নিচ্ছিলো এর মধ্যেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে গাড়িতে তুলে নেন। খবর পেয়ে তাদেরকে বুঝিয়ে বললেও কোন লাভ হয়নি পরবর্তীতে সদর থানায় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং প্রমাণাদি নিয়ে গেলেও তাদেরকে না ছেড়ে কোর্টে চালান করে দেয়। শ্রমিকেরা খুবই নিরীহ, পেটের দায়ে তারা পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে এখানে কাজ করতে এসেছে। তাদের পরিবারের অবস্থাও খুব একটা ভালো নয়। কি একটা সমস্যায় পড়লো চারটা পরিবার যা খুবই দুঃখজনক। প্রকৃত দোষীদেরকে আইনের আওতায় নিক আমরাও সেটা চাই কিন্তু নিরীহ লোকজন ধরে হয়রানি তা কারোরই কাম্য নয়।

    প্রবীণ এক ব্যক্তির সাথে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা হলে তিনি বলেন, কারফিউ নেই শহরে লোকজনের আনাগোনা একদমই নেই। বাজার করেছি, তবে ভেতরে ভেতরে আতঙ্ক বিরাজ করছে কখন কি হয়।

    এক অটোবাইকের চালক বলেন, গত তিন দিন ধরে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে গাড়ি বের করতে পারি নাই। কিস্তি ও সংসারের ব্যয় মেটাতে অনেকটা নিরুপায় হয়েই শহরে আজ গাড়ি নিয়ে। বেরিয়েছে। এসে জানলাম আজ কারফিউ নেই, ভেবেছিলাম তাহলে কিছু ইনকাম হবে কিন্তু শহরে লোকজন খুব একটা না থাকায় তেমন কোন ইনকামও নেই। কারফিউ চলাতে আমাদের মত খেটে খাওয়া গরিব মানুষদের খুব কষ্ট হচ্ছে।

    এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়েরকৃত একাধিক মামলায় জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতারকৃতদেরকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে তা স্পষ্ট না করায় পরিবার ও স্বজনদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাদের দাবি প্রকৃত দোষীদেরকে আইনের আওতায় নেওয়া হোক। কিন্তু অসহায় ও সাধারণ মানুষকে যেন কোনভাবে হয়রানি না করা হয়।

    এদিকে জেলার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সমস্ত জেলা জুড়ে বিশেষ বিশেষ স্থানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োজিত রয়েছে। গোপালগঞ্জ শহরতলীর বিভিন্ন পয়েন্টেও নিয়োজিত রয়েছেন বিপুল সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যরা। শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় মোতায়েন রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেখানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ড. রুহুল আমিন সরকার। তার সঙ্গে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা হলে তিনি বলেন, পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। কারফিউ নেই, যার কারণে সাধারণ মানুষ অনেকেই ঘর থেকে বের হচ্ছেন। আমরা অভিযানও পরিচালনা করছি। তবে অভিযানে নিরপরাধ কেউ যেন আটক না হয় সে বিষয়ে খেয়াল রেখে কাজ করছি।

    এদিকে গোপালগঞ্জ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশক্রমে শনিবার (১৯ জুলাই) রাত ৮ টা থেকে আগামীকাল রোববার (২০ জুলাই) ভোর ৬টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

  • অর্থের অ-ভাবে চিকিৎসা ও লেখাপড়া অনিশ্চিত এবারের এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ অর্জন করা মাছুরার

    অর্থের অ-ভাবে চিকিৎসা ও লেখাপড়া অনিশ্চিত এবারের এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ অর্জন করা মাছুরার

    এম এ আলিম রিপন,সুজানগরঃ ভালো ফলাফল বা সফলতা অর্জনে দারিদ্র যে অন্তরায় হতে পারে না জিপিএ ৫ পেয়ে তা প্রমাণ করেছে মাছুরা খাতুন। এ বছরের এসএসসি পরীক্ষায় পাবনার সুজানগর উপজেলার মালিফা হাবিবুর রহমান বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। কিন্তু তার এই কৃতিত্বে শিক্ষক ও এলাকাবাসী খুশি হলেও তাদের পরিবারে এখন আনন্দের পাশাপাশি দুশ্চিন্তাও ভর করেছে। টাকার অভাবে তার ভবিষ্যৎ শিক্ষা ও তার চোখের টিউমার এবং কিডনীতে পাথর ধরা পড়ায় চিকিৎসা নিয়ে চিন্তিত পরিবারের সবাই।
    সুজানগর উপজেলার মানিকহাট ইউনিয়নের মালিফা গ্রামের ভ্যানচালক মাসুদ শেখ ও গৃহিণী হাসিনা দম্পতির দুই সন্তানের মধ্যে ইমরান মাছুরা বড়। সারা দিন ভ্যান চালিয়ে মাছুরার বাবা যে টাকা উপার্জন করেন তা সংসার চালাতেই শেষ হয়ে যায়। তাই মেয়ের পড়াশোনার খরচ বহন করা তার পক্ষে অসম্ভব। এরপর আবার মাছুরার শরীরের কিডনীতে পাথর ও চোখে টিউমার ধরা পড়ায় চিকিৎসা করতে যে অর্থের প্রয়োজন সেটিও নেই অসহায় এ পরিবারটির।
    কলেজে মাছুরার ভর্তি ও পড়াশোনা চালানোর জন্য এবং তার চিকিৎসায় যে টাকা দরকার তা তার বাবার পক্ষে জোগান দেওয়া সম্ভব নয়। মাসুরার বাবা কান্নাজড়িত কন্ঠে জানান, পড়াশোনায় তার আগ্রহ ও এসএসসির ফল দেখে পরিবার মাসুরাকে নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। তবে যখন তারা জানতে পারে উচ্চশিক্ষায় এবং মেয়ের চিকিৎসায় অনেক টাকার প্রয়োজন হবে, তখন থেকেই তারা দুশ্চিন্তায় আছেন। চিকিৎসক জানিয়েছেন মাছুরার চিকিৎসায় প্রায় ৭০ হাজার টাকা লাগতে পারে।
    মাসুরা বলেন, আমার বাবা দরিদ্র ভ্যান চালক। সংসার সামলে আমার চিকিৎসা ও পড়াশোনা করাতে বাবার অনেক কষ্ট হচ্ছে। আমি চাই সামনে আরও ভালো পড়াশোনা করে মেডিকেলে ভর্তি হব। চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছে আমার। তাই আমি সরকারসহ সমাজের সবার সহযোগিতা চাই।
    মাসুরার মা বলেন, মাসুরা খুব কষ্ট করে পড়াশোনা করেছে। ওর স্কুলের শিক্ষকদের সহযোগিতায় আজ সে এই ফল করেছে। সামনে যে আবার কলেজে ভর্তি হবে সেখানে এবং চিকিৎসায় অনেক টাকা খরচ হবে। এটা নিয়ে আমরা চিন্তিত। ওর পাশে আপনারা থাকবেন।
    মালিফা হাবিবুর রহমান বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ফজলুর রহমান বলেন, ‘চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় মাসুরা গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়েছে। তার লেখাপড়ার বিষয়ে আমাদের সব শিক্ষকই সার্বিক সহযোগিতা করেছে। সে দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তাই সমাজের সবাইকে তার পাশে দঁাড়ানোর আবেদন জানাই। মাছুরার পরিবারের সাথে যোগাযোগের মোবাইল নং- ০১৭৭৫-৭১৮৮০২।

    এম এ আলিম রিপন
    সুজানগর(পাবনা)প্রতিনিধি।

  • আশুলিয়ায় দুই প্রবাসীর স্ত্রীর কাছে পৃথকভাবে চাঁ-দা দাবি না পেয়ে বাড়ি ঘর ভাং-চুর, থানায় অভি-যোগ

    আশুলিয়ায় দুই প্রবাসীর স্ত্রীর কাছে পৃথকভাবে চাঁ-দা দাবি না পেয়ে বাড়ি ঘর ভাং-চুর, থানায় অভি-যোগ

    হেলাল শেখ ঃ ঢাকার আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের (ফকির বাড়ি বটতলা) এলাকার জাকির হোসেনের মেয়ে প্রবাসী বাবুল হোসেনের স্ত্রী মোছাঃ নিলুফা বেগম বাড়িতে একা থাকার সুযোগে এলাকার মাদক সন্ত্রাসী মোঃ সুজন (৩০) বিভিন্ন সময় তাকে বিরক্ত করে এবং ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আর সেই দাবিকৃত চাঁদার টাকা না দেয়ায় বাড়ি ঘর ভাংচুর করে সুজনসহ তার লোকজন। অন্যদিকে আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের ইয়ারপুর গ্রামের প্রবাসী হযরত আলী’র স্ত্রী ইয়াসমিন এর বাড়ি ঘর ভাংচুর করে লুটপাট করার পর ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী চাঁদাবাজরা আবারও বিভিন্ন হুমকি ধামকি দেয়ার অভিযোগ, প্রবাসীর পরিবার এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আদালতে মামলা ও থানায় জিডি করেও কোনো ফায়দা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন এই ভুক্তভোগী পরিবার।
    শনিবার (১৯ জুরঅই ২০২৫ইং) সকালে জানা গেছে, ঢাকার আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামীম আহমেদ সুমন ভুঁইয়া ছাত্র জনতা হত্যা মামলার আসামী হয়ে ভারতে পালিয়ে আছেন, তার বাহিনীর সদস্য থেমে নেই মোঃ সুজন (৩০), পিতা মৃতঃ হাবিব স্থানীয় (ফকির বাড়ি বটতলা), জামগড়া, আশুলিয়া ঢাকাগং আরো ৪-৫জন মাদক সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ মাদকের টাকার জন্য বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে। এসবের টাকা না পেয়ে মানুষের বাড়ি ঘর ভাংচুর করে। কেউ এসব ব্যাপারে প্রতিবাদ করলে তাদেরকে হত্যা করে গুম করার হুমকি প্রদান করে সন্ত্রাসীরা।
    এ ব্যাপারে প্রবাসী বাবুল হোসেনের স্ত্রী ভুক্তভোগী মোছাঃ নিলুফা বেগম আশুলিয়া থানায় মামলা করার জন্য একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। এই অভিযোগে নিলুফা বেগম জানান, আমি গৃহিনী, আমার স্বামী প্রবাসী মোঃ বাবুল হোসেন (৪৫) এর আশুলিয়া থানাধীন ইয়ারপুর ইউনিয়ন জামগড়া ফকির বাড়ি বটতলা এলাকায় ক্রয় করা ৫ শতাংশ জমি আছে। উক্ত জমি সম্পত্তির উপর ৮টি রুম আছে, সেখানে আমিসহ আমার পরিবার সুখে শান্তিতে বসবাস করে আসছি। উক্ত বিবাদী মোঃ সুজন এলাকার স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা সুমন ভুঁইয়ার বাহিনীর সদস্য সুজন প্রতিনিয়ত মাদকদ্রব্য সেবন করে এবং বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। সে কোনো অপরাধ করলেও তার ভয়ে মানুষ কেউ মুখ খুলে না। সুজন আমার অতিরিক্ত বিরক্ত করে এবং ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে, তার দাবিকৃত টাকা দিলে সে আর বিরক্ত করবে না বলে। আমি একজন প্রবাসীর স্ত্রী বাড়িতে একা থাকি এখন নিরাপত্তাহীনতায়। আমি তাকে টাকা না দেয়ায় আমার বাড়ি ঘর ভাংচুর করেছে, আমি এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই।
    অন্যদিকে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন ঢাকার আশুলিয়ার ইয়ারপুর গ্রামের প্রবাসী হজরত আলীর স্ত্রী ইয়াছমিন এর বাড়ি ঘর ভাংচুরের ঘটনার পর জমি দখলের চেষ্টা করে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা মোল্লা নাজিম উদ্দিন (৪১)সহ তাদের লোকজন। প্রবাসীর স্ত্রী মোছাঃ ইয়াসমিন (৪১) ও তার ছোট ছেলে কলেজ পড়–য়া ছাত্র আশরাফুল (১৭) এর বয়স ২০ বছর দিয়ে উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়েছে নাজিম মোল্লা। সূত্রঃ সি. আর. মামলা নং ৮৩২/২০২৩ইং। ধারাঃ ১৪৩/৪৪৭/ ১০৯/৩২৩/৩২৫/৩০৭/৩৭৯/৫০৬। এলাকাবাসী জানায়, নাজিম মোল্লা মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে মামলা করেছে প্রবাসী হজরত আলীর বৌ ও ছেলেদের নামে এর আসল কাহিনী হলো মাদক সন্ত্রাসী চাঁদাবাজদের একটি জমি দখল নেয়ার চেষ্টা।
    আশুলিয়ার ইয়ারপুর গ্রামের প্রবাসী হজরত আলীর স্ত্রী ইয়াছমিন বেগম বলেন, আগে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা আমার বাড়ি ঘর ভাংচুর ও লুটপাট করেছে, এখন তারা পলাতক থাকলেও তাদের ভাড়া করা সন্ত্রাসী বিএনপির পরিচয় দিয়ে আবারও বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছে, এতে আমি নিরাপত্তাহীনতায় জীবনযাপন করতাছি, আমি একজন প্রবাসীর স্ত্রী হয়ে কারো কাছে কোনো বিচার না পেয়ে আদালতে মামলা করেছি, এর আগে আওয়ামীলীগ সরকারের সময় আওয়ামীলীগ নেতারা আমার বাড়িঘর ভাংচুর করে লুটপাট করেছে এতে আমার প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি করেছে তারা, আমি এ বিষয়ে সাংবাদিক, পুলিশ ও এলাকাবাসী সবার সহযোগিতা কামনা করছি, কোথাও বিচার পাইনি। প্রবাসীর স্ত্রী ইয়াছমিন বেগম অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামীলীগ নেতা মুসার ভাই নাজিম আমার বাড়ি ঘর ভাংচুর করে লুটপাট করার সময় আমার সম্মানহানী করেছে এবং উল্টা আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে অনেক হয়রানি করছেন, আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি, এ বিষয়ে সঠিক তদন্ত দাবী করছি, দোষীদের আটক করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবী জানাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, এখন আবার অন্য দলের লোকজনকে ভাড়া করে আমার বসবাসরত বাড়িসহ জমি দখলের চেষ্টা করছে তারা। আশুলিয়া থানায় আমাকে কাগজপত্র নিয়ে যেতে বলেন পুলিশ অফিসার কিন্তু আদালতে মামলা চলমান রয়েছে, আদালত যে রায় দিবেন আমি তা মেনে নিবো।
    উক্ত বিষয়ে এসবি পুলিশ অফিসার, আশুলিয়া থানা পুলিশ ও র‍্যাব জানায়, আদালতে মামলা চলমান রয়েছে সেখানে আমাদের আদালতের আদেশ মেনে কাজ করতে হবে, প্রবাসীর স্ত্রী তাই মানবিক দিক চিন্তা করে বিষয়টি তদন্ত করে আদালতে রিপোর্ট দেয়া হবে বলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানান। আশুলিয়া থানার (এসআই) আকরাম বলেন, নিলুফা বেগমের অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।##

  • তারেক রহমানকে নিয়ে অ-পপ্রচারের প্রতি-বাদে সুজানগরে বিক্ষো-ভ মি-ছিল

    তারেক রহমানকে নিয়ে অ-পপ্রচারের প্রতি-বাদে সুজানগরে বিক্ষো-ভ মি-ছিল

    এম এ আলিম রিপন.সুজানগর : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য, মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে পাবনার সুজানগরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।শনিবার দুপুরে উপজেলা যুবদল,স্বেচ্ছাসেবকদল ও ছাত্রদলে উদ্যোগে বের হওয়া বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পৌর কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।পরে উপজেলা যুবদলের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান পিন্টুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব রিয়াজ মন্ডলের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাজারী জাকির হোসেন চুন্নু, পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ন আহ্বায়ক অধ্যাপক আব্দুল মোনায়েম, উপজেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক অধ্যক্ষ নাদের হোসেন, বিএনপি নেতা আহম্মদ আলী প্রামানিক লাটু, মোহাম্মদ আলী টুকু, সুজানগর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও উপজেলা কৃষকদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান খোকন, উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক শফিউল আলম বাবু, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জাকির হোসেন, সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, হারুন মন্ডল, তোফাজ্জল হোসেন তোফা,হাফিজুর রহমান হাফিজ, ভঁায়না ইউনিয়ন বিএনপি নেতা সান্টু, উপজেলা যুবদলের যুগ্ন আহ্বায়ক প্রভাষক মনিরুজ্জামান মনি, প্রভাষক রাশেদ খান ,যুগ্ন আহ্বায়ক শফিউল আযম শফি, আবু জাকারিয়া তরঙ্গ, পৌর যুবদলের সদস্য সচিব ফজলুর রহমান ফজলু, যুগ্ন আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, পৌর যুবদলের যুগ্ন আহ্বায়ক সাহেব আলী মন্ডল, রতন বিশ্বাস, স্বেচ্ছাসেবকদল সুজানগর পৌর শাখার সদস্য সচিব বিপুল প্রামানিক, ছাত্রদল নেতা সাকিবুল ইসলাম, গাজী মাজাহারুল ইসলাম, আফতাব উদ্দিন, আলম শেখ, আব্দুস সবুর জয়,সংগ্রামসহ বিএনপি’র অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।এসময় বক্তারা বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিগত ১৭ বছর ধরে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে অনেক আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে। আজ তাকে নিয়ে অপপ্রচার ও কুরুচিকর মন্তব্য করা হচ্ছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। এছাড়া দেশে পরিকল্পিতভাবে বিএনপি নেতাদের মানহানি করার অপচেষ্টা চলছে।বক্তারা আরোও বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন, মহান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। একটি গোষ্ঠী শহীদ জিয়ার ছবি অবমাননা করে দেশের মুক্তিযুদ্ধ ও ইতিহাসকে বিকৃত করার চেষ্টা করছে। যা একটি গভীর চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের নমুনা। আমরা বেঁচে থাকতে এই চক্রান্ত সফল হতে দেব না। বক্তারা এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রাজপথ থেকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সকল নেতাকর্মীর প্রতি আহ্বান জানান।

    এম এ আলিম রিপন
    সুজানগর(পাবনা)প্রতিনিধি।।

  • তানোরে আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলু-প্ত প্রায় হাটুরে সেলুন

    তানোরে আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলু-প্ত প্রায় হাটুরে সেলুন

    আলিফ হোসেন,তানোরঃ
    রাজশাহীর তানোরে আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্তপ্রায় হাটুরে সেলুন। এক সময় উপজেলার গোল্লাপাড়া, কালীগঞ্জ, কৃষ্ণপুর, মুন্ডুমালা, তালন্দসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে হাটবারে হাটুরে সেলুন বসতে দেখা যেতো।কিন্ত্ত এখন কালের বিবর্তন ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় সেই দৃশ্যে তেমন দেখা যায় না। মানুষ নিজেকে সুন্দর রাখতে কতো কিছুই না করে থাকে। সেই প্রাচীন কাল থেকে মানুষ নিজেকে অপরের সামনে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করে আসছে। আর পুরুষ মানুষকে সুন্দর করে তোলা যাদের কাজ তাদেরকে বলা হয়, নরসুন্দর। আমরা আঞ্চলিক ভাষায় বলে থাকি নাপিত বা শীল।
    জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে এক সময় কাঠের পিড়িতে বসে চুল-দাঁড়ি কাটতে গেলেও ভিড় জমিয়ে অপেক্ষা করতে হতো হাটুরে সেলুনে। নরসুন্দর বা শীলরা তাদের পায়ের হাটু দিয়ে চাপ দিয়ে ধরে মানুষের চুল-দাড়ি কাটতো। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে তানোের উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে পিড়িতে বসা ওই সকল হাটুরে সেলুন। আধুনিক সভ্যতার ক্রমবিবর্তনে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের গতিধারায় এসেছে পরিবর্তন। লেগেছে নতুনত্বের ছোঁয়া। তাই আজ হাট-বাজারে কড়াই বা বটবৃক্ষের ছায়ায়, খেয়াঘাট ও ফুটপাতে কিংবা গ্রামগঞ্জের জল চৌকিতে বা ইটের ওপরে সাজানো পিড়িতে বসে নাপিতের কাছে গ্রামবাংলার মানুষের চুল দাঁড়ি কাটার সেই দৃশ্য এখন আর চোখে পড়ে না।
    এদিকে জাকজমকপূর্ণ সেলুন সংস্কৃতির ঢেউ এখন শহর থেকে গ্রামের সবখানে।এমনকি শীতাতাপনিয়ন্ত্রণ (এসি) সেলুন এখন গ্রাম-গঞ্জের হাট-বাজারে দেখা যায়।
    যার ফলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন এই পেশা নির্ভর গ্রামাঞ্চলের নরসুন্দররা। তারপরও কিছু সাধারণ মানুষ আজও অবলীলায় ইটে কিংবা জল চৌকিতে বসে হাটুর কাছে এখনো মাখা পেতে দেন বলেই কয়েকজন হাটুরে নরসুন্দর বেঁচে আছেন এই প্রাচীন পেশা ধরে। তানোরের কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) মালার মোড়ে এখনো বাপ দাদার পেশা আজও আকড়ে ধরে আছেন এক নরসুন্দর। বহু বছর ধরে এ কাজ ধরে রেখেছেন। আগে এ পিড়িতে বসে কাজ করিয়ে ভালো মতো তাদের সংসার চললেও বর্তমানে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে এ নরসুন্দরের। আধুনিকত্বের ছোঁয়া বাদ দিয়ে বাপ দাদার ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন রণজিৎ শীল ও ভুপেন শীল। চৌবাড়িয়া হাটে হঠাৎ করেই রণজিৎ শীলের এই হাটুরে সেলুন দেখে দীর্ঘক্ষণ আলাপ হয় এই প্রতিবেদকের সঙ্গে। এসময় নরসুন্দর রণজিৎ শীল জানান, প্রায় ৪০ বছর যাবত বাপ-দাদার ঐতিহ্য পেশা ধরে রেখে পিড়িতে বসিয়ে মানুষের চুল-দাঁড়ি কামাচ্ছি। বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় মানুষজন সেলুনমুখী হয়ে গেছে। মাটিতে বসে চুল-দাঁড়ি কাটতে চায়না, এখন খুব কমই মিলে। আয় রোজগার তেমন নেই। বলতে পারেন বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রেখেছি মাত্র।
    চৌবাড়িয়া হাটের অপর এক হাটুরে নরসুন্দর কমল শীলের চুল কাটার দৃশ্য, প্রায় ৪০ বছর ধরে পিড়িতে বসিয়ে মানুষের চুল দাঁড়ি কামানোর কাজ করছেন। তিনি জানান, মাটিতে এভাবে বসে কেউ আর চুল দাঁড়ি কাটাতে চায়না, কারণ সেলুনে চেয়ারে বসে কাটতে পারে। তারপরও বাপ-দাদার পেশা ছাড়তে পারি না। তবে দিন শেষে প্রায় ৩ থেকে ৪শ” টাকা কামাতে পারি। বয়সের ভারে এখন আর তেমন কাজ করতে ইচ্ছে হয় না।
    শুধু ঐতিহ্যটাকে ধরে রেখেছি। চুল দাঁড়ি কাটতে আসা দিনমজুর তৈয়ব আলী বলেন, আমি প্রায় ১০ বছর যাবত দাদার এখানে চুল দাঁড়ি কামাতে আসি। চুল দাঁড়ি কামাতে আমার বাবাও সকাল বেলা নিয়ে যেতো দাদার কাছে। পিড়িতে বসে কাটানোর অভ্যাসটি হয়তো আর ছাড়তে পারবো না। আবার টাকাও কম লাগে। চুল দাঁড়ি কাটাতে আসা ওবাইদুর নামে অপর এক শ্রমিক জানান, দীর্ঘদিন যাবত দাদার এখানে চুল দাঁড়ি কাটাই। মাত্র ৪০ টাকা দিতে হয়। আধুনিক সেলুনে কাটালে ৮০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। আয় রোজগার কম তাই এখানে চুল দাঁড়ি কাটাতে চলে আসি। পুরুষের সৌন্দর্য বর্ধন করার কৌশলগত কারণে শীলদের প্রয়োজনীয়তা ও কদর ফুরাবেনা। কিন্তু হাট বাজারে সাজানো পিড়িতে বসে চুল দাঁড়ি কাটার সেই দৃশ্য কালের বিবর্তনে হয়তো এক সময় হারিয়ে যাবে।তবে স্মৃতির পাতা থেকে নরসুন্দররা কখনো হারিয়ে যাবে না।#

  • বেসরকারী মাধ্যমিক  শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের বিকল্প নেই

    বেসরকারী মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের বিকল্প নেই

    লেখকঃ মোঃ হায়দার আলীঃ মহান ও নিবেদিত পেশা হিসেবে শিক্ষকতা সর্বজন স্বীকৃত। মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবেই মনে করা হয় শিক্ষকদের। পাঠদানে আত্ম-নিয়োগ, শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিহিত থাকা সুপ্ত মেধা জাগ্রত করা, দুঃস্থ ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের নিজের অর্থ ব্যয়ে দেশ সেরা হিসেবে গড়ে তোলা শিক্ষকও দেশে বিরল নয়।

    এ জন্যই সমাজে শিক্ষকরা সবচেয়ে বেশি সম্মানিত, শিক্ষার্থীরাও যুগে যুগে স্মরণ রাখেন তাদের। একটি জাতির অগ্রগতি কিংবা উন্নতির প্রধান সোপান হলো শিক্ষা। শিক্ষার ওপর নির্ভর করেই সে জাতি গড়ে ওঠে। তাই বলা হয়, ‘শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড।’ এ জন্য বিশিষ্টজনেরা বলেন, একটি জাতিকে ধ্বংস করতে হলে সে জাতির শিক্ষাব্যবস্থাকে আগে ধ্বংস করতে হবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশ বা জাতির দিকে তাকালেই বোঝা যাবে তাদের অগ্রগতির পেছনে শক্তি হিসেবে শুধু অস্ত্র-সমারস্ত্র কাজ করেনি; বরং কাজ করেছে তাদের শিক্ষাদীক্ষা। আর এই শিক্ষা শব্দটির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে শিক্ষকতা নামক মহান পেশা।

    আমাদের দেশে শিক্ষাব্যবস্থা তিন স্তরবিশিষ্ট। প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষা বা বিশ্ববিদ্যালয় স্তর। দেশের সকল প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণ বা সরকারী করা হয়েছে। বিগত বছর গুলিতে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা জাতীয়করণের দাবীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালাঝুলিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে ব্যানার, পোস্টার নিয়ে তাঁরা আন্দোলন করছেন। যে যুক্তি দাঁড় করিয়ে তাঁরা আন্দোলন করছেন, সেগুলোকে তাঁরা নায্য অধিকার হিসেবে মনে করছেন। তাদের দাবীর সাথে সহমত প্রকাশ করে শিক্ষাবিদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, আইনজীবি, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ। কিন্তু অবস্থার কোন উন্নতি হয় নি। সবই ছিল পদত্যাগ করা প্রধানমন্ত্রী, স্বৈরাচারী শেখ হসিনা ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী, বর্তমানে রিমান্তে ডা. দিপু মনির নাটক।

    বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে স্কুলে তালা ঝুলিয়ে গত ২০২৩ ইং বছর ১১ জুলাই থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন এমপিও শিক্ষকরা। কর্মসূচির শুরুর পর পুলিশ শিক্ষকদের লাঠিচার্জ করে সরিয়ে দেওয়ারও চেষ্টা করে। তারপরও শিক্ষকরা কর্মসূচিতে অনড় থাকেন। এর মধ্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি তাদের সঙ্গে বৈঠক করে ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানালেও তাতে সাড়া দেননি শিক্ষকরা। টানা ২১ দিন অবস্থান কর্মসূচির পর ১ আগস্ট থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষকরা। ঘোষণা অনুযায়ী- ১ আগস্ট কাফনের কাপড় পরে অনশন করেন তারা। ওইদিন রাতে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ারের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শিক্ষক নেতারা।

    বৈঠকে শিক্ষকদের জাতীয়করণ বা বৈষম্য নিরসনের আশ্বাসে অনশন স্থগিত করে ক্লাসে ফেরার ঘোষণা দেন বাংলাদেশ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) নেতারা। তারা গত বছর (২ আগস্ট) মধ্যে শিক্ষকদের ঢাকা থেকে এলাকায় ফেরার এবং বৃহস্পতিবার থেকে পুরোদমে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা দেন। ঘোষনা অনুযায়ী তারা ক্লাসও করেছিলেন। এ আন্দোলনের ফসল হিসেবে বেসরকারী মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করনের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ২ টি কমিটি গঠন করা হয়েছে, কর্মশালা হয়েছে, ৫% প্রণোদনা প্রদান করা হচ্ছে, এবারই প্রথম দেশে সরকারীভাবে সরকারি খরচে শিক্ষক দিবস পালন হতে যাচ্ছে, কিন্তু বেসরকারী শিক্ষকদের ভাগ্যে কোন পরিবর্তন হয় নি। সরকার আসে সরকার যায় কিন্তু বেসরকারী শিক্ষকদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন নাহি হয়। চিহ্নিত কিছু দালাল শিক্ষক নেতা হয়েছেন যারা শিক্ষকদের ১০% কর্তনকৃত টাকা লুটপাট করে নিজের পকেট মোটা করেন। নিজদের ভাগ্যের উন্নয়নের জন্য বাড়ি গাড়ী করেন, বিলাসবহুল জীবন যাপন করেন। আর অবসর গ্রহনের পর শিক্ষক কর্মচারীগণ বছরের পর বছর অপেক্ষা করেন কিন্তু উৎকোচ দেয়ার পরেও অবসর কল্যাণের টাকা পান না। ওই সব টাকা না পেয়ে কেউ কেউ চিকিৎসা, খাদ্যাভাবে মৃত্যু বরন করেন। বেসরকারি শিক্ষক সমাজ কতটা অবহেলিত তা সহজে অনুমান করা যায়। জাতীয়করন ছাড়া শিক্ষার মান উন্নয়ন কোনভাবেই সম্ভাব নয়। বেসরকারী শিক্ষক সমাজ ৫০ ভাগ ঈদ বোনাস পায়, সরকারী স্কুল, কলেজ মাদ্রাসা, অন্য সব সরকারী বিভাগে কর্মরত কর্মকর্তা, কর্মচারীগণ পূনাঙ্গ ঈদ বোনাস পেয়ে থাকেন। তারা বেতনের সময় বোনাস পেয়ে থাকেন। আর বেসরকারী শিক্ষকদের প্রতি বিমাতাসুলভ আচারণ ছাড়া কিছুই নেই।

    বিশ্বের এমন কোন দেশে নেই যেখানে এটা করা হয়। বেসরকারী শিক্ষক সমাজের জন্য এটা জাতীয় লজ্জা। পূনাঙ্গ উৎসব ভাতা, বাড়ীভাড়া ৪৫/৫০ ভাগ, মেডিক্যাল সরকারিদের মত দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হলে বেসরকারি শিক্ষক সমাজ প্রধান উপদেষ্টাসহ উপদেষ্টা পরিষদের সকল সদস্যগণকে ধন্যবাদ জানাবে, আনন্দ মিছিল করবেন, উনার জন্য জায়নামাজে দাঁডিয়ে দোয়া করবেন। বিগত দিনে দালাল কিছু আমলা, মন্ত্রী, এমপি’, পা চাঁটা, তেলবাজ নেতা যাদের কারনে বেসরকারী মাধ্যমিক শিক্ষক কর্মচারীগণ তাদের নায্য অধিকার থেকে বছরের পর বছর বঞ্চিত হচ্ছেন। ওইসব তেলবাজ পা চাঁটা ব্যক্তিত্বহীন লোকগুলি শিক্ষক সমাজের কাছে সারাজীবন মীরজাফর ও ঘোষটি বেগম হয়ে থাকবেন।

    এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, দেশে সর্বমোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৬৫ হাজার ৫৬৫ টি। সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা: ৬৮৪ টি। সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজের সংখ্যা: ৬৩ টি। সরকারি কলেজের সংখ্যা: ৫৪ টি, সরকারি ডিগ্রি (পাস), অনার্স কলেজের সংখ্যা: ৪৪৬ টি।

    সরকারি স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) কলেজের সংখ্যা: ১৯৮ টি এবং সরকারি স্নাতকোত্তর (কামিল) মাদ্রাসার সংখ্যা : ০৩ টি।

    দেশে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২০ হাজার ৯৬০ টি। বিপরীতে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৬৮৪ টি। সরকারি-বেসরকারি মিলে মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ১২ লাখ। শিক্ষক প্রায় সাড়ে ৫ লাখ। ৯৭ ভাগ শিক্ষার্থী বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়া-লিখা করে।। মাধ্যমিক শিক্ষকদের যে বেতন-ভাতা, তা দিয়ে দ্রব্যমূল্যের অগ্নি বাজারে পরিবার চালানো বেশ কষ্টসাধ্য। এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা বেতনের ৫০ শতাংশ উৎসব ভাতা, ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া এবং ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। একই কারিকুলামের অধীনে থেকেও সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষকদের মধ্যে বিশাল বৈষম্য। দেশের ৯৭ ভাগ শিক্ষার্থীগণকে পাঠদানকারী শিক্ষক কর্মচারীরা বর্তমানে সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছে। তাদের দৈন্যদশায় রেখে শিক্ষার বাস্তব উন্নয়ন কোনভাবে সম্ভাব নয়। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এখান থেকে বেরিয়ে বেসরকারী শিক্ষকদের অর্থনৈতিক মর্যদা বৃদ্ধি করতেই হবে।

    শিক্ষাকে জাতির মেরুদন্ড আর শিক্ষকরা সেই মেরুদন্ডের রূপকার। তাদের শেখানো পাঠপঠনে আগামী দিনের ভবিষ্যৎ হয়ে ওঠে শিক্ষার্থীরা। মুখে ‘শিক্ষকতা মহান পেশা’ স্বীকার করে শিক্ষকদেরও যে সংসার আছে, মৌলিক চাহিদা আছে, সেদিকে তাকানোর সময় হয় নি কোন সরকার বাহাদুরের। জাতীয়করণের ব্যপারে সাবেক শিক্ষামন্ত্রীন। ডা. দীপু মনি প্রায় বলে থাকেন এটা ব্যাপক গবেষনার ব্যপার। ওই সব শিক্ষকদের ব্যপারে অসত্য, বিভ্রাট কথা বলতেন তিনি। বাংলাদেশের শিক্ষা জাতীয়করণ নিয়ে আলোচনা-আন্দোলন-গবেষণা বহুদিনের। দিনে দিনে তা কেবল জটিল হচ্ছে।

    বেসরকারি শিক্ষকরা সেই সরকারি তিরিশ টাকা অনুদান দিয়ে শুরু করে আজ মূল বেতনের একশ’ ভাগ সরকারি কোষাগার থেকে পাচ্ছেন। ১০০০ টাকা বাড়ী ভাড়া, ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা, স্কেলের ৫০ ভাগ ঈদ বোনাস এটিও সহজে হয়নি, কোনো সরকার ইচ্ছে করেই এটি দিয়ে দেয়নি। এটি শিক্ষকদের বহুদিনের আন্দোলনের ফসল।

    দেশে প্রাইমারি শিক্ষা জাতীয়করণের গোড়া পত্তন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে। তখন আমাদের জিডিপির আকার ছিল প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার, এখন তা ৫০০ বিলিয়নের ওপর। বহু বছর ধরে মাত্র ৩১৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছিল সরকারি। সরকার যেসব উপজেলায় সরকারি বিদ্যালয় ছিল না সেগুলোকে সরকারি ঘোষণা করায় বর্তমানে সংখ্যাটি ৬৮৪। অর্থাৎ এগুলোর পুরো দায়-দায়িত্ব সরকারের, বাকি প্রায় বিশ হাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয় বেসরকারি।

    মাধ্যমিক পর্যায়ের আরো ৯ হাজারের মতো মাদ্রাসাও রয়েছে। দেশের শিক্ষার দায়িত্ব সরকারের। অথচ দেখা যায়, ১৬ বছর ক্ষমতায় থেকে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকার এমন কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সরকারি করেছেন যেগুলি তার বাপ, মা , ভাইয়ের নামে ওই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সরকারী করার কোন যোগ্যতা নেই। অথচ করা হয়েছে। মন্ত্রী এমপি কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজী করে নিজের খেয়াল খুশিমত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারীকরণ করেছেন। এলাকার কোনো প্রভাবশালী নেতা তার এলাকার কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তার অবস্থা যতই খারাপ থাকুক না কেন জাতীয়করণ করে ফেলেছেন। তা আরেক ধরনের ব্যাপক বৈষম্য তৈরি করেছে।

    গ্রামীণ এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বেশি অবহেলার শিকার। এগুলোর অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নয়, নির্দিষ্টসংখ্যক শিক্ষক নেই। ভালো শিক্ষকরা সেখানে যেতেও চান না। জাতীয়করণ করা হলে অবহেলিত এই জনগোষ্ঠীর শিক্ষার অধিকার ও মান নিশ্চিত সম্ভব হবে বলে একটি মত রয়েছে।

    আবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত উপযুক্ত শিক্ষা গ্রহণের অন্তরায়। যতদিন পর্যন্ত একটি শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২০ হতে ৩৫ এ সীমাবদ্ধ রাখতে ব্যর্থ হবো ততদিন আমরা শিক্ষার শতভাগ সুফল পাবো না। শুধু তাই নয়, অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগ না করে দুই বা ততোধিক শাখায় পাঠদানের ফলেও শিক্ষার মান ক্রমশ নিন্মগামী হচ্ছে। দেশে প্রচলিত কিন্ডারগার্টেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ইংরেজি ভার্সনের উপর সরকারের যথাযথ নিয়ন্ত্রণ নেই। এইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল কারিকুলামের বাইরে গিয়ে স্বেচ্ছাধীনভাবে অতিরিক্ত বিষয়ের পাঠদান করে শিক্ষার্থীদের মেধা-মনন নষ্ট করছে। উপরন্ত বাজারের গাইড বইগুলো

    শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল প্রতিভার প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করছে। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর দেখভালের দায়িত্ব কখনো রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের উপর কখনো স্থানীয় সমাজপতিদের উপর দেয়ার কারণে সঠিক তত্ত্বাবধান ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখা বাঞ্ছনীয়।

    শিক্ষকদের জীবনমানের বৈষম্যের অবসান না ঘটিয়ে শিক্ষার উন্নয়ন কী একটি তথাকথিত নতুন কারিকুলাম শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকের উপর চাপিয়ে দিয়ে শিক্ষার উন্নয়ন করে সম্ভব? মোটেই সম্ভাব নয়। আমরা ভুলে যাই, মায়ের পুষ্টি সাধন নিশ্চিত না করলে, শিশু অপুষ্টির শিকার হবে। হচ্ছেও তাই। সে কারিকুলাম বর্মান সরকার বাতিল করা পূর্বের সিলেবাসে ফিরে আসার জন্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী অভিভাবকদের নিকট হতে প্রশাংসা পেয়েছেন। এই বৈষম্যের কারণে শিক্ষকতায় মেধাবীরা আসছে না। বৈষম্য বিনাশ না হলে এ জাতি মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারবে না। নির্ভর করতে হবে অন্যের ওপর। আর আমাদের শিশুদের নিয়ে চলতে থাকবে নতুন নতুন এক্সপেরিমেন্ট। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, যেখানে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমগাছ চট্টগ্রামে রোপণ করলে ফলের গুণাগুণ বজায় থাকে না, সেখানে আমাদের কর্তা ব্যক্তিরা কীভাবে ভাবলেন, ইউরোপ আমেরিকার শিক্ষা পদ্ধতি আমাদের দেশে খুব সহজেই খাপ খাইয়ে নেবে। তাছাড়া জমিতে ভালোভাবে চাষাবাদ না দিয়ে ফসল রোপণ করে ভালো ফসল আশা করা দিবা স্বপ্নের নামান্তর।

    যতদিন নীতি-নির্ধারকগণ শিক্ষাকে উত্তম বিনিয়োগ মনে করবেন না, ততদিন শিক্ষার বেহাল দশা কাটবে না।

    আমরা প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকার তাগিদে মাতৃভাষার পুষ্টি সাধন না করে বিদেশি ভাষা চর্চায় ব্যস্ত আছি, যা আমাদের মেরু-অস্থির ক্ষয় সাধন করছে। শিক্ষা যে আমাদের মৌলিক অধিকার, এটি প্রায়শই উপেক্ষিত। শিক্ষাকে সর্বজনীনভাবে গড়ে তুলতে না পারলে জাতীয় উন্নয়ন সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে হবে না। রুচিশীল জাতি গঠনের জন্য দৃশ্যমান উন্নয়নের চেয়ে মনোজাগতিক উন্নয়ন বেশি প্রয়োজন, আমাদের তা বুঝতে হবে।

    শিক্ষা উপেক্ষিত হলে আমাদের পাশ্চাত্যের দাস হয়ে কাল কাটাতে হবে। এক হিসাব বলছে, দেশের ৩০ হাজার প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করা হলে সরকারের অতিরিক্ত এক হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। আশি ও নব্বইয়ের দশকে আন্দোলনের সময় প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের চেয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের স্কেল অনুযায়ী শতভাগ বেতন প্রদান এবং অন্যান্য আর্থিক সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর বিষয়টিই বেশি গুরুত্ব পায়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয় মেয়াদে (২০০৯-১৪) সরকার গঠন করলে এমপিওভুক্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণের বিষয়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে এবং জাতীয়করণ করা হলে সরকারের অতিরিক্ত ৪০ হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন হবে। এসব হিসাব আলোচনাতেই থেকেছে। সমস্যার সমাধান হয়নি। হিসাবের নিষ্পত্তিও হয়নি।

    বিভিন্ন সময় আন্দোলনে আরো নানান কথা যোগ হয়েছে। আন্দোলনকারীরা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ ও আলোচনা করে কোনো সাফল্যের নিশানা না দেখে এখন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতপ্রার্থী হয়ে ব্যর্থ হয়েছিলেন। সেই পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত আসে । এ রকম সময়ে আকস্মিকভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিল করে দেয়া হয়েছিল। আন্দোলকারী শিক্ষকরা একে তাদের আন্দোলন মাঠে মার খাওয়ানোর অভিসন্ধি বলে ভাবেছিলেন।

    বাংলাদেশি নাগরিকদের শিক্ষার প্রতি রাষ্ট্রীয় দায়িত্বগুলো বর্ণনা করা হয়েছে সংবিধানে। সেসব বিবেচনা করে রাষ্ট্র শিক্ষকদের দিকে তাকিয়ে তাঁদের অধিকার, দাবিদাওয়ার বিষয়টি আরও গুরুত্বসহকারে দেখে সব ধরনের বৈষম্য নিরসনে দ্রুত শিক্ষা জাতীয়করণের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, এমন প্রত্যাশা রইল। শুধু দেশই নয় বরং সারাবিশ্বে ড. মোহম্মদ ইউনুসের গ্রহণযোগ্যতা অপরিসীম। আশাকরি দেশের সর্বস্তরের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক নিজেদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে সক্ষম হবে। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সকল ধরনের অসঙ্গতি নিরসন এবং একটি গ্রহণযোগ্য ও জনসমর্থিত শিক্ষা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত হবে বলে দেশবাসীর দৃঢ় বিশ্বাস। উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তাঁরা প্রত্যেকেই যোগ্য ও উচ্চ মেধার অধিকারী, তাদের নেতৃত্বে দেশ নতুন আঙ্গিকে সজ্জিত হবে। সকল বেসরকারী মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করে পাহাড়সম বৈষম্য দূর করতে পারেন, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী, শিক্ষক থেকে দেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস আর এ সাহসী পদক্ষেপটি ঘোষনার অপেক্ষায় বেসরকারী শিক্ষক সমাজ তীর্থের কাঁকের ন্যয় চেয়ে আছেন।

  • তেঁতুলিয়ায় অ্যাডিশনাল ডিআইজির মতবিনিময় সভা

    তেঁতুলিয়ায় অ্যাডিশনাল ডিআইজির মতবিনিময় সভা

    মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম, তেতুলিয়া প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় সকল শ্র্রেণি-পেশার মানুষের সাথে অ্যাডিশনাল ডিআইজির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৮ জুলাই) সকালে তেঁতুলিয়া মডেল থানার আয়োজনে থানা চত্বরে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। তেঁতুলিয়া মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নজির হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অ্যাডিশনাল ডিআইজি (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ফিন্যান্স) রংপুর রেঞ্জ মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন।

    এসময় পঞ্চগড় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. শইমী ইমতিয়াজ, তেঁতুলিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মুসা মিয়া প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপজেলার জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, ইমাম, ব্যবসায়ী, এনজিওকর্মী, সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতা ও নানা শ্রেণি পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত সবাই তাদের নিজ নিজ এলাকার সমস্যাগুলো সুনির্দিষ্টভাবে তুলে ধরেন এবং পুলিশের সহযোগিতায় তা সমাধানের আশা প্রকাশ করেন।

    জানা যায়, মতবিনিময় সভায় সকলের উদ্দেশ্য একটাই সীমান্তবর্তী উপজেলায় অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে পাথর উত্তোলন বন্ধ করা, মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধ এবং কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমকে আরও কার্যকর করা।

    সভায় প্রধান অতিথির তার বক্তব্যে বলেন, ‘সীমান্তবর্তী তেঁতুলিয়ায় শান্তি বজায় রাখতে পুলিশের পাশাপাশি জনগণের অংশগ্রহন একান্ত প্রয়োজন। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া টেকসই শান্তি সম্ভব নয়। আমরা শুধু আদেশ দিয়ে নয়, শুনে, বুঝে, একসঙ্গে কাজ করতে চাই।’

    তিনি আরও জানান, পুলিশ জনগণের সমস্যা শুনছে, বুঝছে এবং তা সমাধানের পথ খুঁজছে। এ সময় তিনি উপস্থিত জনসাধারণকে আহ্বান জানান, সক্রিয়ভাবে কমিউনিটি পুলিশিংয়ে অংশগ্রহন করতে।

    তেঁতুলিয়ার মতো প্রান্তিক উপজেলায় এই ধরণের উদ্যোগ কেবল আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণই নয় বরং সামাজিক সচেতনতা তৈরিতেও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন।

    মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম।।

  • নড়াইলে নাশ-কতা মামলার আ-সামি যুবলীগ নেতা গ্রে-প্তার

    নড়াইলে নাশ-কতা মামলার আ-সামি যুবলীগ নেতা গ্রে-প্তার

    উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে:
    নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা মো:উকিল মোল্লা কে নাশকতা মামলায় আটক করেছে লোহাগড়া থানা পুলিশ। উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে জানান, শুক্রবার (১৮জুলাই) শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে উকিল মোল্লা কে লুটিয়া গ্রাম থেকে আটক করেছে থানা পুলিশ।
    আটককৃত উকিল মোল্লা লুটিয়া গ্রামের দুলাল মোল্লার ছেলে,
    সূত্রে জানা গেছে উকিল মোল্লা দিঘলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করতেন। বিগত সময় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচী পথসভা হতো ইউনিয়নে উকিল মোল্লার নেতৃত্বে। এছাড়াও উকিল মোল্লার বিরুদ্ধে লোহাগড়া থানায় হত্যা,নাশকতা মামলা সহ ৬ টা মামলা রয়েছে।
    নাম প্রকাশ্য অনিচ্ছুক লুটিয়া গ্রামের কয়েকজন জানান এই উকিল মোল্লা বিগত আওয়ামী লীগের আমলে তার এলাকার মেম্বার ফিরোজ ও তার ভাই যুবলীগ নেতা সাগর শেখের ছায়াতলে থেকে বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াতেন। ভয়ে এলাকার মানুষ মুখ খুলতে পারতেন না,
    এবিষয়ে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো: শরিফুল ইসলাম, উকিল মোল্লাকে আটকের বিষয় নিশ্চিত করে বলেন আসামিকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে।

  • পীরগঞ্জে প্রতিব-ন্ধী  ও দূর্ঘ-টনায় আ-হত ব্যাক্তি মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ

    পীরগঞ্জে প্রতিব-ন্ধী ও দূর্ঘ-টনায় আ-হত ব্যাক্তি মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ

    পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে প্রতিবন্ধী, বয়স্ক ও দূর্ঘটনায় আহত ব্যাক্তি মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
    গতকাল শনিবার সকালে পূর্ণিমা কমিউনিটি সেন্টারে ইমপ্যাপ্ট ইনিশিয়েটিভ এর সহযোগতিায় বেসরকারি সংস্থা পীরগঞ্জবাসী কল্যাণ সমিতির আয়োজনে উপকারভোগীদের মাঝে ৩০টি হুইল চেয়ার বিতরণ করেন। এ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ।
    এ সময় বক্তব্য রাখেন, পীরগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ বদরুল হুদা, পীরগঞ্জ সার্কেল এসপি আব্দুল হাই সরকার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুল ইসলাম, সমাজসেবা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, পীরগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি জয়নাল আবেদীন বাবুল ও সাধারণ সম্পাদক নসরতে খোদা রানা প্রমুখ।

  • নেতৃত্বে আশার আলো মিছিলেই জনতার ঢল

    নেতৃত্বে আশার আলো মিছিলেই জনতার ঢল

    শহিদুল ইসলাম,
    নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম |

    বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদীয় আসনের এমপি পদপ্রার্থী সফিউল আলম-এর নেতৃত্বে নিউমুরিং বড় মাঝিপাড়া মসজিদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত গণসংযোগ ও আলোচনা সভায় জনতার ঢল নামে। সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রমাণ করে, পরিবর্তনের পক্ষে এখন জনমত স্পষ্ট।

    সভায় সংক্ষিপ্ত আলোচনা পেশ করে সফিউল আলম বলেন,
    “গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠাই আমাদের অঙ্গীকার। আমরা মানুষের জন্য রাজনীতি করি, ক্ষমতার জন্য নয়।”
    তিনি আগামীর বাংলাদেশে নৈতিক নেতৃত্ব ও মূল্যবোধভিত্তিক রাজনীতির বিকাশের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

    অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন:
    ৩৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদপ্রার্থী অ্যাডভোকেট সাহেদ আলী,
    থানা যুব বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফখরুল ইসলাম,ওয়ার্ড সভাপতি ওমর ফারুক,স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি জিএম রাসেল, আব্দুর রহমান বিশ্বাস ও দারুস সালাম ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি মোঃ মিজান খান।

    নেতৃবৃন্দ মসজিদসংলগ্ন এলাকায় গণসংযোগকালে স্থানীয়দের সাথে কুশল বিনিময় করেন এবং নানা সামাজিক ও নাগরিক সমস্যা নিয়ে তাদের মতামত শোনেন।

    জনগণের মুখে মুখে একটাই কথা:
    “আসল পরিবর্তনের জন্য আমরাই এবার জামায়াতের পাশে দাঁড়িয়েছি।”রাজনীতির মাঠে ফিরছে আস্থা—জেগে উঠছে জনতা