Blog

  • বৈষম্যমুক্ত নীতিমালায় পদন্নোতি চায় জনতা ব্যাংক কর্মকর্তা কর্মচারীরা

    বৈষম্যমুক্ত নীতিমালায় পদন্নোতি চায় জনতা ব্যাংক কর্মকর্তা কর্মচারীরা

    আরিফ রববানী ময়মনসিংহ
    রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের সদ্য অনুমোদিত পদোন্নতি নীতিমালা ঘিরে ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন নীতিমালাটি একতরফা এবং বৈষম্যমূলক। যেখানে দক্ষতা ও নৈতিকতার পরিবর্তে গুরুত্ব পেয়েছে শুধু জ্যেষ্ঠতা এবং অতীতের বিতর্কিত নিয়োগ। তাই সদ্য অনুমোদিত নীতিমালা পরিহার করে বৈষম্যমুক্ত নীতিমালায় পদন্নোতি চায় জনতা ব্যাংক কর্মকর্তা কর্মচারীরা।।

    সম্প্রতি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে নীতিমালাটি অনুমোদনের পরই এটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ ব্যাংকের ভেতরে-বাইরে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। এ ছাড়া, ব্যাংকটির চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগও করেছে কর্মীরা।

    অভিযোগ উঠেছে-যোগ্যতা দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পদোন্নতি পাচ্ছেন না। দীর্ঘদিন পদোন্নতি না পাওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁরা। এমন ঘটনা প্রায়ই শোনা যায় যে, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারী পদোন্নতিবঞ্চিত হয়েছেন। এটি একটি জটিল সমস্যা, যা রাজনৈতিক বা স্বজনপ্রীতির প্রভাব: অনেক সময় পদোন্নতির ক্ষেত্রে মেধা ও যোগ্যতার চেয়ে রাজনৈতিক বিবেচনা বা ব্যক্তিগত সম্পর্ক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেছিল। এর ফলে যোগ্য দক্ষ প্রার্থীরা বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

    প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ নীতিমালার অভাব, সংশোধন বা দুর্বলতা: অনেক প্রতিষ্ঠানে পদোন্নতির জন্য নীতিমালা থাকলেও রয়েছে ত্রুটিপূর্ন দুর্বলতা সংশোধন হয়েছে একাধিকবার জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা অনেক সময় পদোন্নতির জন্য উপযুক্ত শূন্য পদ না থাকার কারণেও অনেককে বঞ্চিত হতে হয়।

    ১৯৯৮ সালে একই ব্যাচে সিনিয়র অফিসার (৯ম) গ্ৰেড ও অফিসার (১০ম) গ্ৰেড পদে যোগদানকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে একটি বিরাট বৈষম্যের সৃষ্টি হয়েছে তাদের মধ্যে সিনিয়র অফিসার হিসেবে যোগদানকৃতদের অনেকেই জিএম. ডিজিএম পদে পদোন্নতি পেলেও শুধু অফিসার পদে যোগদান করার কারণে সকল যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাদের অনেকেই এখনো এসডিও পদেই রয়ে গেছেন।

    একইভাবে ১৯০৮-০৯ ব্যাচে যোগদান করা সিনিয়র অফিসারগণের প্রায় সকলেই এ পর্যন্ত তিনটি পদোন্নতি পেয়ে জিএম হয়েছেন আরও ৩-৪ বছর আগে। তারা এ পদে বিজিএম পদের জন্য পদপ্রার্থী । অথচ একই বছরে যোগদান করা অভিসার (১০ম গ্ৰেড) পদের কর্মকর্তাগণ এ পর্যন্ত মাত্র একটি পদোন্নতিতে প্রিন্সিপাল অফিসার হয়েছেন। এমনকি অনেকেই মাত্র একটি পদোন্নতি পেয়ে সিনিয়র অফিসার পদে রয়ে গেছেন। যদিও সকল যোগ্যতার মাপকাঠিতে ২০০৮-০৯ সালে যোগদান করা সিনিয়র অফিসারগণ (৯ম গ্ৰেড) যদি জিএম পদের জন্য এ বছর ভাইবা দেন তাহলে ওই একই বছরের অফিসার (১০ম গ্ৰেড) পদে যোগদান করা কর্মকর্তাগণের এ বছর তাদের একধাপ নিচে অর্থাৎ এজিএম পদের জন্য বাইবা যাওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে সকল যোগ্যতা একই হওয়া সত্ত্বেও তারা এখনো লড়াই করছে প্রিও, এসপিও হওয়ার জন্য। বিষয়টি একটি বড় বৈষম্যের সৃষ্টি করেছে এবং কর্মকর্তাদের মধ্যে চরম ক্ষোভ হতাশার সৃষ্টি করেছে। এখানে অবস্থায় স্বৈরাচারী বিগত সরকার বিদায়ের পরবর্তী সময়ে একটি স্বচ্ছ গঠনমূলক সর্বজনগৃহীত আস্থাশীল নিয়ম নীতিমালা প্রনয়ণ করা আবশ্যক। বর্তমানে জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তাগণকে ২০২৪ সালভিত্তিক পদোন্নতি প্রদানের জন্য একটি খসড়া পদোন্নতি নীতিমালা প্রস্তুত করে অনুমোদনের জন্য ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদে উপস্থাপন করলে একটি অসাধুচক্র তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার ছড়িয়ে দিয়ে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে এতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও ব্যাংক কর্মকর্তাদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

    খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রস্তাবিত পদোন্নতি নীতিমালায় বেশিরভাগ কর্মকর্তা উপকৃত হলেও কতিপয় অসাধু ও বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমলে বিভিন্নভাবে সুবিধা পাওয়া ও পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাগণ তা নিয়ে অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে বিগত ১৬ বছরের স্বৈরাচার সরকারের আমলে অন্যান্য ব্যাংকের মতই জনতা ব্যাংকের যোগ্য ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি বঞ্চিত করে সময়ে সময়ে তাদের মত করে নীতিমালা সংশোধন করে অযোগ্য ও অদক্ষ ব্যক্তিদের পদোন্নতি প্রদান করা হয়েছে এ নিয়ে কর্মরত কর্মকর্তাদের মধ্যে চাঁপা ক্ষোভ দীর্ঘদিনের।

    মতিঝিল ব্যাংক পাড়ায় বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অনেকের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায় এ অবস্থার কারণে ব্যাংক সেক্টরে এক কালো মেঘ অধ্যায় অতিক্রম করলেও এখনো পতিত সরকারের দোসর তাদের পূর্বপরিকল্পনা বহাল রাখতে এবং বাস্তবায়নে মরিয়া এ অবস্থায় ব্যাংক সেক্টরকে রক্ষা করতে সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে অন্যথায় আবারো সেই কালো মেঘ আছড়ে পড়ে ব্যাংকগুলোকে ধ্বংস করতে না পারে সকল ব্যাংকের পর্ষদ উপস্থাপন স্বচ্ছতার সাথে কাজ করে ব্যাংক সেক্টরের উন্নয়ন আরো ব্যগবান করার মানসিকতা যেন কমতি না থাকে বিষয়টি রাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ে থেকে যেন সজাগ দৃষ্টি রাখা হয় এমনটাই প্রত্যাশা করছেন জনতা ব্যাংকের কর্মদক্ষ কর্মকর্তা কর্মচারীগন। (চলবে)

  • মোংলা পৌর বিএনপির কাউন্সিলকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ

    মোংলা পৌর বিএনপির কাউন্সিলকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ

    মোংলা প্রতিনিধি
    মোংলা পৌর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিলকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন প্রার্থীরা। সোমবার দুপুর ১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ। এ সময় পৌর বিএনপির সভাপতি পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন পৌর বিএনপির আহবায়ক ও সাবেক পৌর মেয়র মোঃ জুলফিকার আলী। এছাড়াও সভাপতি পদে মনোনয়ন সংগ্রহ করেন মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন। সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন পৌর বিএনপির সদস্য সচিব মোঃ মাহবুবুর রহমান মানিক, যুগ্ম আহবায়ক এমরান হোসেন, খোরশেদ আলম ও পৌর যুবদলের সাবেক আহবায়ক মোঃ মাহমুদ রিয়াদ। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মনোনয়ন কিনেছেন ফকির শাহজাহান, তালুকদার নাসির উদ্দিন, বাবুল শরীফ, মোঃ মাহবুবুর রহমান টুটুল, গোলাম নুর জনি, বাবলু ভূইয়া, ফারুকুল ইসলাম মানিক, শহীদুল গাজী, শহীদুল ইসলাম ও মোঃ তাজিম উদ্দীন।

    পৌর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল পরিচালনা কমিটির আহবায়ক হলেন জেলা বিএনপি যুগ্ম আহবায়ক কামরুল ইসলাম গোরা ও সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করছেন পৌর বিএনপির ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোঃ আঃ রাজ্জাক।

    পৌর বিএনপির আহবায়ক ও পৌর বিএনপির সভাপতি প্রার্থী মোঃ জুলফিকার আলী বলেন, আগামী ২৭ কিংবা ২৮ জুলাই পৌর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। এ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে চালনা বন্দর সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা মাঠে। কাউন্সিলে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ৬৩৯জন ভোটার তাদের ভোটারাধিকার প্রয়োগ করবেন। তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ ২০ বছর পর পৌর বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তাই নেতা-কর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে।

  • আশুলিয়ার কা-ঠগড়ায় স্ত্রীর প-রকীয়ায় ইলিম সরকার হ-ত্যার বি-চার ৫ বছরেও হয়নি

    আশুলিয়ার কা-ঠগড়ায় স্ত্রীর প-রকীয়ায় ইলিম সরকার হ-ত্যার বি-চার ৫ বছরেও হয়নি

    হেলাল শেখঃ ঢাকার আশুলিয়ার কাঠগড়ায় পরকীয়ার কারণে ডিস ব্যবসায়ী ইলিম হত্যা মামলার ৩নং আসামী নিহতের স্ত্রী আদালত থেকে জামিনে এসে বাহিরে সুন্দর ভাবে জীবনযাপন করছেন। বহুল আলোচিত ইলিম সরকার হত্যা মামলার আসামী কেমিলির হুমকিতে নিহতের মা বাবা ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে আশুলিয়া থানায় জিডি করেছেন। জনমনে প্রশ্ন নিহতের মা বাবা সঠিক বিচার পাবেতো?। ৫ বছরেও এই হত্যার বিচার হয়নি।
    আশুলিয়া থানার মামলা সূত্রে জানা গেছে, আশুলিয়া থানাধীন কাঠগড়া সরকার পাড়ার নিহত ইলিম সরকারের পিতা হাজী মোঃ ফজল সরকার (৭০) নিহতের স্ত্রী কেমেলী ও তার বাবা কালু’র বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ ও মামলা করেছেন। অন্যদিকে সুলতানা আক্তার কেমেলি কিছুদিন পূর্বে কারাগার থেকে জেল খেটে আদালতের মাধ্যমে জামিনে এসে নিজের অপরাধ আড়াল করতে নিহতের বাবা ও ভাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেছেন।
    জানা গেছে, গত ২৭/০৩/২০২১ইং তারিখ দিবাগত রাত আনুমানিক ১০ টার দিকে প্রতিদিনের ন্যায় রাতের খাবার খাওয়া শেষে ইলিম সরকার (৩৬), তাহার স্ত্রী সুলতানা আক্তার কেমেলিসহ তাদের পূর্ব ভিটার ঘরের দক্ষিনের বেড-রুমে শুইয়া থাকেন, উত্তরের রুমে তাহাদের পুত্র মোঃ কাইফ সরকার (১০), ও মেয়ে মোছাঃ কাসফিয়া সরকার (০৬) শুইয়া ঘুমাইয়া থাকে। এরপর সুলতানা আক্তার কেমেলি ২৮/০৩/ ২০২১ইং তারিখ সকাল ৮টার দিকে ঘুম থেকে জেগে জরুরী প্রয়োজনে বাহিরে আসেন। এসময় ইলিম সরকারসহ তাহার ছেলে মেয়েরা ঘুমিয়ে ছিলো। পরিবারের সদস্যদের দাবি- অদ্য ২৮ মার্চ ২০২১ইং তারিখ সকাল ১০টার দিকে তাহাদের বাড়িতে ফিরিয়া ইলিম সরকারের রক্তাক্ত দেহ দেখতে পায় তার স্ত্রী, বিষয়টি রহস্যজনক। নিহতের গলার নিচে ১টি, পেটে ১১টি ও পিঠে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে কাটা গুরুতর রক্তাক্ত জখম হইয়া মৃত্যু বরণ করিয়াছে মর্মে দেখিতে পাইয়া তখন ডাক চিৎকার করিয়া কান্নাকাটি করিতে থাকায় লোকজন ইলিম সরকারের বাড়িতে গিয়া খাটের উপরে তাহার মৃতদেহ দেখতে পায়। এরপর আশুলিয়া থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়ে দেন।
    নিহত ইলিম সরকারের বাবা ফজল সরকার জানান, আমার ছেলে ইলিম সরকারের হত্যার বিচার চেয়ে আমি বাদি হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছি। মামলা নং ৬৮/ ধারা ৩০২/৩৮০/৩৪। তিনি অভিযোগ করে বলেন, এ মামলার আসামী কেমেলি জামিনে এসে ইলিমের ব্যবসা, বাড়ি ঘরসহ সবকিছু দখল করে নিয়েছে এবং আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হত্যার হুমকি দিচ্ছে, তার ভাইদেরকে দিয়ে আমাদের হত্যা করবে বলে হুমকি দিয়ে আসছে। এখনও তারা বিভিন্ন ভাবে আমাদের পরিবারের লোকজনকে হুমকি দিচ্ছে। আমার পরিবারের ছোট বড় সবাই এখন নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। আমার ছেলে ইলিম সরকার হত্যার আসামীদের ফাঁসি চাই।
    নিহতের স্ত্রী সুলতানা আক্তার কেমেলি বলেন যে, আমার স্বামী হত্যার সাথে আমি জড়িত না, তবুও আমি কারাগারে বন্দী থেকে জেল খাটছি, আমার স্বামী অনেক দিন ধরে অসুস্থ্য ছিলেন, আমার বিয়ের পর থেকে কোনো সুখ শান্তি পাইনি তবুও কোনো অভিযোগ করিনি। তিনি আরও বলেন, আমার স্বামীর বাড়ি ঘর ব্যবসা বাণিজ্য হাতিয়ে নেওয়ার জন্য পরিকল্পনা করে এই হত্যাকান্ডটি ঘটিয়েছে যারা তাদের কঠিনতম শাস্তি চাই, আমার স্বামী মৃত্যুর পর তার রেখে যাওয়া দুই সন্তানকে নিয়ে আমি অনেক কষ্টে জীবনযাপন করছি। আমার স্বামীর বাড়িতে আমি থাকতে পারিনি, ভয় লাগে আমার। আমাদের দোকানপাট ব্যবসা সব আমার স্বামী ইলিম সরকারের ভাই সেলিম সরকার দখল করে নেওয়ার চেষ্টা করছে।
    নিহতের একমাত্র বড় ভাই সেলিম সরকারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার ছোট ভাই ইলিম সরকারের সাথে আমার কোনো বিবাদ ছিলো না। সে কোথাও গেলে তার ব্যবসা দেখতাম আমি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার ভাইয়ের স্ত্রী সুলতানা আক্তার কেমেলি আমার ভাইকে হত্যা করে এই মামলায় আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিলো। তিনি আরও বলেন, আমার ভাইয়ের অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে তার স্ত্রী পরকীয়া করে আমার ভাইকে হত্যা করেছে। আমার ভাইয়ের স্ত্রী কেমেলি’র বাবা কালু’র বিরুদ্ধে আদালতে একাধিক মামলা থাকলেও তার কিছুই হচ্ছে না, কারণ, তিনি একজন মামলাবাজ বটে। তার পরিবারের লোকজন মোটেই ভালো না বলে সেলিম দাবী করেন।
    এলাকাবাসী জানায়, ইলিম হত্যা মামলাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে এখনও বিবাদ চলমান, নিহতের স্ত্রী আগে বাড়ি থেকে গিড়ে উত্তরা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন, এখন সাভারের কোথায় থাকে জানিনা। উক্ত নিহত ইলিম সরকার একজন সফল ব্যবসায়ী ছিলেন কিন্তু তিনি মাদকের সাথে জড়িত ছিলো বলে সূত্র জানায়, এ ঘটনার দিন সকাল ৮টা থেকে ১০টা, মাত্র দুই ঘন্টা সময়ের মধ্যে ইলিম হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে এবং ওই বাড়িতে সিসি টিভি ক্যামেরা ছিলো, ৬ মাসের বেশি সময় লেগেছে আসামীদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করতে। এরপর স্বামী হত্যা মামলায় জড়িত থাকায় পিবিআই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে জেল খেটে জামিনে এসে আরও শক্তিশালী ভুমিকায় রয়েছে নিহতের স্ত্রী কেমেলি। পুরো বিষয়টি রহস্যজনক বলে মনে করছেন এলাকাবাসী ও সচেতন মহল।
    নিহতের শশুর কালু সাহেবের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার মেয়ে কেমেলি’র সাথে অনেকদিন হচ্ছে যোগাযোগ নাই। ইলিম হত্যা মামলার ১নং আসামী পিন্টু ও ২নং আসামী সাইফুল এবং কেমেলি ৩নং আসামী আমার মেয়ে কেমেলি, আমি আদালত থেকে কেমেলিকে জামিন করেছি তার দুইটি বাচ্চার মুখের দিকে তাকিয়ে, এখন আমার সাথে যোগাযোগ নাই, আমি মরে গেলেও সে যেন আমার দেখতে না আসে বলে দুঃখ প্রকাশ করেন নিহতের শশুর কালু। উক্ত বিষয়ে ধারাবাহিক ভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।

  • দেশের বিপুলসংখ্যক ডে-থ রেফারেন্স মাম-লার জ-টিলতা

    দেশের বিপুলসংখ্যক ডে-থ রেফারেন্স মাম-লার জ-টিলতা

    হেলাল শেখঃ দেশের উচ্চ আদালতে বিপুলসংখ্যক ডেথ রেফারেন্স মামলা দীর্ঘদিনেও নিষ্পত্তি না হওয়ার কারণে ভুক্তভোগীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বলে তাদের পরিবারের সদস্যদের দাবি, বরং বিভিন্ন ডেথ রেফারেন্স মামলার সংখ্যা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। ফলে বিচারপ্রার্থী আসামীরাও হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন। সেই সাথে অন্যান্য মামলারও জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে।
    সূত্র জানা গেছে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের মামলার বিচার শেষ করতে বছরের পর বছর লেগে যাচ্ছে, আসামিদের বেশিরভাগই কনডেম সেলে মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়। তুলনামূলক ভাবে উচ্চ আদালতে বর্তমানে ডেথ রেফারেন্স মামলার সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে প্রায় ৮শতাধিক মামলা। ডেথ রেফারেন্স মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় প্রায় ২ হাজারের বেশি আসামী বছরের পর বছর ধরে কনডেম সেলে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। ডেথ রেফারেন্স মামলা নিষ্পত্তির আশায় দিনের পর দিন প্রহর গুনছেন বিচারপ্রার্থী ও আসামীরা। আদালত এবং আইন পেশা সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। অনেক সংবাদপত্রে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে বলে সূত্র জানায়।
    সূত্র মতে, উচ্চ আদালতে বিগত ২০১০ইং সালে ডেথ রেফারেন্স মামলা ছিলো ৫৮৫টি। তার মধ্যে মাত্র ৪৩টির নিষ্পত্তি হয়েছে, বিচারাধীন রয়েছে ৫৪২টি। ২০১১ সালে মামলার সংখ্যা বেড়ে ৬০৯টিতে দাঁড়ায় আর নিষ্পত্তি হয় ৭৪টি। ২০১২ সালে মামলা ছিলো ৫৯৫টি আর নিষ্পত্তি হয় ১৪৫টি। ২০১৩ সালে ৫১৩টি মামলার মধ্যে নিষ্পত্তি হয় ১১১টি। ২০১৪ সালে ৪৯৮টি মামলার মধ্যে নিষ্পত্তি হয় ১৩৫টি। ২০১৫ সালে ৪৭৭টি মামলার মধ্যে নিষ্পত্তি হয় মাত্র ৫৮টি। ২০১৬ সালে মামলা ছিলো ৫৮০টি, নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র ৪৫টি। ২০১৭ সালে মামলা ছিলো ৭০৬টি, নিষ্পত্তি হয় মাত্র ৬৬টি। ২০১৮ সালে মামলার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৭১১টিতে কিন্তু নিষ্পত্তি হয় মাত্র ৮৩টি। বিগত ২০১৯ইং সালের ৭ এপ্রিল পর্যন্ত ৭২১টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। ২০২৫ সাল এখন পর্যন্ত ডেথ রেফারেন্স মামলা বেড়েই চলেছে এবং অন্যান্য মামলার জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। তবে সংশ্লিষ্টদের দাবি-দ্রুত এই জটিলতার সমাধান হবে।
    সূত্র জানায়, নিম্ন আদালতে বিগত ২০১৫ ও ২০১৬-২০২৫ সালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি বর্তমানে হাইকোর্টে চলছে। একই সঙ্গে যে সমস্ত মামলার পেপারবুক তৈরি হয়েছে সেগুলোর শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। বিচারের এ সমস্ত মামলায় হাইকোর্ট যদি কোন আসামীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে তাহলে মামলার চুড়ান্ত নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত আসামিদের কমপক্ষে ১৬-১৮ বছর কনডেম সেলে থাকতে হচ্ছে। অবশ্য এ্যাটির্নি জেনারেল অফিস থেকে বলছেন, আদালতগুলোতে ডেথ রেফারেন্স মামলার শুনানি পুরোদমে শুরু হয়েছে, যা বর্তমানে চলমান।
    সূত্র আরও জানায়, এসব মামলার আরেকটি দীর্ঘসূত্রতার কারণ হচ্ছে ডেথ রেফারেন্স মামলার পেপারবুক তৈরি করতে অনেক সময় লেগে যায়। পেপারবুক তৈরির পর হাইকোর্ট শুনানি, তারপর আপিল বিভাগ। এ সমস্ত ধাপ পেরিয়ে আসতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। বিচারে যে সাজা হয়েছে সেই সাজা বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতার কারণে আসামীদের জন্য যেমন যন্ত্রণাদায়ক, আবার বাদীপক্ষের জন্যও হতাশাজনক। অনেকেই দাবি করেন, পেপারবুকের পাশাপাশি ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য বেঞ্চ বাড়ানোও প্রয়োজন। তাতে করে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল শুনানি দ্রুত হবে।
    এ প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুবুনালের প্রসিকিউটর গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন যে, ডেথ রেফারেন্স মামলাগুলো দ্রুত শুনানি হওয়া দরকার। বিচারিক আদালতে যাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় তারা কনডেম সেলে থাকেন। অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে ডেপুটি এ্যাটির্নি জেনারেল গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, বিচারিক আদালতের রায়ের পরে হাইকোর্ট ও আপীল বিভাগে শুনানি করতে বেশ সময় লাগে। করোনার কারণে বিচার পক্রিয়া স্থগিত ছিলো। অনেকেই বলছেন যে, থানা থেকে নতুন আসামী গ্রেফতার হলে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের অনেকেই আবার দ্রুত জামিনে মুক্তি পাচ্ছেন কিন্তু যারা বছরের পর বছর বিচারের অপেক্ষায় দিন গুনছেন তাদের অপেক্ষা যেন শেষ হচ্ছে না বলে অনেকেই দুঃখ প্রকাশ করেছেন। আশুলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় হত্যা মামলা মাসের পর মাস এবং বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও আসামী গ্রেফতার হচ্ছে না। আবার আসামী গ্রেফতার হলেও হাজতবাস করছেন তারা কিন্তু বিচার কাজ শেষ না হওয়ায় ভুক্তভোগীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বলে ভুক্তভোগী পরিবার জানান। উক্ত বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ভুক্তভোগীসহ সচেতন মহল।

  • জাতি জানতে চায় নতুন বাংলাদেশে কি বৈ-ষম্য থেকে যাবে?

    জাতি জানতে চায় নতুন বাংলাদেশে কি বৈ-ষম্য থেকে যাবে?

    হেলাল শেখঃ বাংলাদেশ কোথায় ছিলো? পূর্ব পাকিস্তান থেকে বিভক্ত-আলাদা করে “১৯৭১ইং সালে মু্ক্তিযুদ্ধের পর দেশ স্বাধীনতায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন থেকে ২০২৪ ও ২০২৫ইং চলমান পরিস্থিতি কেমন এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেমন হবে তার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের চাওয়া পাওয়ার হিসাব চলছে, জাতি জানতে চায় নতুন বাংলাদেশে বৈষম্য কি থেকে যাবে???
    বিশেষ করে ১। প্রজাতন্ত্র-বাংলাদেশ একটি একক, স্বাধীন ও সার্বভৌম প্রজাতন্ত্র, যাহা “গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ নামে পরিচিত”। ২। প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানা-প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানার অন্তভুর্ক্ত হইবে। ১৯৭১ সালের পর চলমান ঘটনার আড়ালে অনেক রহস্য। ১৭ বছর আগের পুলিশ প্রশাসন ও বর্তমান পরিস্থিতি আলাদা। দেশে সাংবাদিক, পুলিশ প্রশাসনসহ বেশিরভাগ মানুষ এখন সততার সাথে কাজ করছেন, সৎ ও সাহসীকতার সাথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে যারা কাজ করে যাচ্ছেন তাদেরকে সবাই সহযোগিতা করা দরকার বলে মনে করেন অনেকেই। আপনারা জানেন যে, বর্তমান সময়ে সাংবাদিকদের দায়িত্ব এবং ভুমিকা কি? এ নিয়ে আলোচনায় পরে আসি।
    বাংলাদেশের ইতিহাসঃ তথ্য সুত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে প্রথমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় এক ছাত্র সভায়, তথ্যসূত্র-কমপিউটার বিসিএস প্রিলিমিনারী গাইড এর ৮৭নং পাতা। যার ডাকে বাংলার মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধে গিয়েছিলেন, তিনিও আজ আমাদের মাঝে নেই। এখন আমরা স্বাধীনভাবে বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারছি, স্বাধীনভাবে পথ চলছি, একবারও কি তাদের আত্মার মাফেরাতের জন্য আমরা দোয়া করি? সবাই সবার জন্য দোয়া করা দরকার, এই দেশ আপনার আমার সবার, তাই কেউ আমরা দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারেন না। ১৯৭১ সালে যারা শহীদ হয়েছেন আনুমানিক ৩০ লাখ মানুষ আর দুই লাখ মা বোনের ইজ্জত হারিয়েছেন। ২০২৪ইং ৫ আগষ্টে শেখ হাসিনা দেশে থেকে পালিয়ে যাওয়ার আগে বা পরে ৩২০০ পুলিশ সদস্য ও ৬ শতাধিক ছাত্র-জনতার অকালে মৃত্যু হয়েছেন, এখনও মানুষ নিরাপদ নয় বলে অনেকেই অভিমত প্রকাশ করেছেন।
    বিশেষ করে আপনার আমার বা আমাদের পরিবার, সমাজ, দেশ ও দেশের সম্পদ রক্ষা করতে আমাদেরকেই সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। যে জাতি যতো সচেতন হবেন-সেই জাতি ততই উন্নতির দিকে যাবেন। আমরা কেউ কারো হিংসা ও নিন্দা না করি, বিবাদ সৃষ্টি না করি, যার যে কাজ ওই কাজের দায়িত্ব সঠিকভাবে গুরুত্বসহকারে করার চেষ্টা করবো। আমরা দুইদিনের মেহমান, আজ আছি, আগামীকাল হয়তো থাকবো না। খারাপ কাজ করা সহজ কিন্তু ভালো কোনো কাজ করে দেখাই যে, এই কাজটি আমরা মানবতার কল্যাণে করেছি। ভালো কিছু করতে বেশি অর্থ লাগেনা, ভালো মন মানুষিকতা হলেই চলে। হে মানুষ তোমার সবকিছুরই চাহিদা আছে সত্য কিন্তু যৌবনের চাহিদা আর পেটের খাবারের চাহিদা না থাকলে কোনো কাজ করার দরকার হইতো না। যৌবন মানব জীবনের এক শ্রেষ্ট সম্পদ তাকে অস্বীকার করা যায় না, দেহগত যৌবন আর মানুষিক যৌবন একরকম নয়। যৌবন অস্থায়ী আর মানুষিক আত্মার অভাব হলে সেই মানুষটি ভালো হতে পারবেন না। আমরা যে মানুষ, যে ধর্ম পালন করি না কেন, একদিন বিচারকের সামনে হাজির হতেই হবে। আমরা অন্যের জন্য সবকিছু করছি, নিজের জন্য কি সঞ্চয় করলাম তা কেউ ভাবছেন? বুঝতে পারলে সেই বুদ্ধিমান।
    মানুষের জন্মের পর ধর্ম-কর্ম নিয়ে মানুষের জীবন। কারো মনে কষ্ট দিয়ে বা কারো ক্ষতি করে কেউ কি লাভবান হওয়া যায়? আসুন আমরা সত্যের সন্ধ্যানে মানবতার কল্যাণে কাজ করি। বাংলাদেশের মানুষ আমরা আমাদের সঠিক ইতিহাস জানা দরকার। অবশ্যই আইন মেনে কাজ করতে হবে, সেজন্য সচেতন মহল ও সাংবাদিকদেরকে বেশি বেশি আইনের বই পড়তে হবে। বাংলাদেশের সংবিধান মানতে হবে। সংবাদকর্মী বা সাংবাদিক হলে তার আগে সাংবাদিকতার আদর্শলিপি বই পড়তে হবে। প্রতিদিন সংবাদ সংগ্রহ করে তা সংশ্লিষ্ট মিডিয়াতে প্রকাশ করতে হবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ম্যানুয়েল বই পড়তে হবে। জনগণের নাগরিক সমস্যা আছে কি-না তা সচেতন মহলকে দেখতে হয়। বাস্তবতা অনেক কঠিন, আশা করি সবাই বুঝতে পারছেন? আমাদের সবার জন্য সঞ্চয় দরকার, তবে সেই সঞ্চয় অর্থ বা সম্পদ নয়। সবকিছুরই হিসাব দিতে বাধ্য হবেন সবাই, আকাশের দিকে থুথু ফেললে নিজের শরীরে পড়তে পারে তাই সাবধানে চলতে হবে। ১৭ বছর আগের পুলিশ প্রশাসন ও সাংবাদিক আর বর্তমান সময়ের পুলিশ প্রশাসন একরকম নয়। ২০২৫ইং চলমান পরিস্থিতি যেমনই হোক দেশে ধর্ষণ বাড়ছে, চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই বাড়লেও তবে হত্যার সংখ্যা কম আর রাজনৈতিক জটিলতা বাড়তে শুরু করেছে-বাকিটা ইতিহাস। দেশের মানুষ কেমন আছেন তা জাতি জানতে চায় আর সবক্ষেত্রে কি বৈষম্য দূর হয়েছে? এমন কেউ বলতে পারেন যে, বৈষম্য থেকেই যাচ্ছে। দেশ কারো বাবার সম্পদ নয় এই দেশ প্রায় ১৮ কোটি জনগণের, আর সেই জনগণের দুহাই দিয়ে সবাই রাজনৈতিক বক্তব্য দেন কিন্তু জনগণের চিন্তা কে করেন।

  • গোদাগাড়ীতে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে মেধা বৃত্তি প্রাপ্তদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত

    গোদাগাড়ীতে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে মেধা বৃত্তি প্রাপ্তদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত

    নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহীঃ রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদ অডিটারিমে পারফরমেন্স বেজড প্র্যান্টস ফর সেকেন্ডারি ইন্সটিটিউশনস স্কিম, এসইডিপি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষামন্ত্রণালয় কতৃক উপজেলা পরিষদ অডিটারিমে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

    ২১ জুলাই সোমবার সকাল ১১ টার সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফয়সাল আহমেদ এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, রাজশাহী অঞ্চলের উপ-পরিচালক মোঃ আবদুর রশিদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আব্দুর রশিদ,
    পিরিজপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তিতুমিরের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আমিরুল ইসলাম। এসএসসি পর্যায়ের রাজবাড়ীহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাদমান ইসলাম, এইচএসসি পর্যায়ের গোদাগাড়ী সরকারী স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী মনিরা পারভীন। অভিভাবকগনের পক্ষে থেকে তাহেরা খাতুন, প্রধান শিক্ষকদের পক্ষ থেকে মাহাফুল আলম তোতা।

    উপস্থিত ছিলেন, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান, অভিভাবক, শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, সুধীজন উপস্থিত ছিলেন।

    বক্তাগণ বলেন, ২০২২ ইং ও ২০২৩ ইং ৪০ জন শিক্ষা মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্রেস্ট বিতরণ করা হয়। ইতি পূর্বে এসএসসি/ সমমানের পরীক্ষাথীদের ১০ হাজার টাকা করে এইচএসসি /সমমানের পরীক্ষায় ২৫ হাজার টাকা করে মোবাইল ব্যাংকের মাধ্যমে প্রদান করা হয়েছে।

    বক্তাগণ আরও বলেন, নরসিংদীর নাছিমা কাদির মোল্লা হাই স্কুল অ্যান্ড হোমস এ ৩২০ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাই জিপিএ-৫ পেয়েছে, বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৩১৭ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। ওই সব কৃতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়মনীতি অনুসারণ করতে হবে। সাফল্যের গল্প শুনাতে হবে।

    আজকে যদেরকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়েছে। অনেক অভিভাবকগন শিক্ষার্থীদের এ+ ভাল ফলাফলের জন্য প্রেসার দিয়ে থাকেন, এটা ঠিক নয়, এ+, বৃত্তি পাওয়া বড় বিষয়টি বড় কথা নয় সবার আগে মানুষের মত ভাল মানুষ হতে হবে। পিতা মাতা, শিক্ষক, বড়দেশকে সম্মান করতে শিখতে হবে। দেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করতে হবে। এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা প্রদান করা হচ্ছে। উপজেলায় যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষার্থীরা ভাল ফলাফল করেছেন তাদেরকে সংবর্ধনা দেয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনকে আয়োজন করার অনুরোধ করা হয়। এ অনুষ্ঠানটি যখন হচ্ছে তখন অনেক শিক্ষার্থীর পাবলিক পরীক্ষা হচ্ছে। অনেকে আসতে পারেননি। শিক্ষা প্রধানদের নির্দেশনা ও অনুরোধ করে বলেন, আপনাদের গতিশীল সঠিক নেতৃত্বে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক, এলাকার সুধিজন নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। যুমানা নদীর ওপারে শিক্ষার্থী পরিশ্রমে থাকে, তাদের শিক্ষার মান উন্নত। ভাল রেজাল্ট, জিপিএ-৫ পাবার জন্য পড়া লিখা করা হয় এটা ঠিক না। বেশীর শিক্ষার্থীর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ডাক্তার, প্রকৌশলী হবার। দেশের ভাল শিক্ষার্থীদের সরকারীভাবে পুরস্কৃত করচ্ছি। কিন্তু এসব শিক্ষার্থীরা হারিয়ে যাচ্ছে। ভারত, জাপান, চীন থেকে লোক নিয়ে আসতে হচ্ছে কেন?। চিকিৎসা বিভাগে ভাল ভাল ডাক্তার থাকা শর্তেও হাজার হাজার মানুষ কেন ভারতে চিকিৎসা নিতে যেতে হচ্ছে কেন? মেধাবী শিক্ষার্থীরা পাঠ্যসূচির বই ঠিকভাবে পড়া শুনা করে না।
    কলিটি শিক্ষা অর্জন করতে হবে, সৃজনশীল কিছু সৃষ্টি করতে হবে।
    পরিশেষে, কৃতি শিক্ষার্থীদের ক্রেস্ট ও সনদপত্র তুলে দেন অতিথিবৃন্দ।

    মোঃ হায়দার আলী
    নিজস্ব প্রতিবেদক,
    রাজশাহী।

  • পাইকগাছায় কৃষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে ৮ হাজার বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা বিতরণ

    পাইকগাছায় কৃষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে ৮ হাজার বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা বিতরণ

    পাইকগাছা ( খুলনা) প্রতিনিধি ।।

    খুলনার পাইকগাছায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মাঝে তাল, জাম, বেল, কাঁঠাল, নিম ও আম সহ বিভিন্ন প্রজাতির ৮ হাজার গাছের চারা বিতরণ করা হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে আমন ধান, গ্রীষ্মকালীন সবজি, তাল, জাম, বেল, কাঁঠাল, নিম ও আম ফসল আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক / শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রণোদনা কর্মসূচি বাস্তবায়ন এর আওতায় বিনা মূল্যে গাছের চারা ও চারা সংরক্ষণের উপকরণ বিতরণ করা হয়। সোমবার সকালে উপজেলা কৃষি অফিস চত্বরে বিতরণের আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ একরামুল হোসেন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন।

    অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা এসএম মনিরুল হুদা, সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওহাব, উপ সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ দাশ, উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শেখ তোফায়েল আহমেদ তুহিন, এসএম মফিজুল ইসলাম আবুল কালাম আজাদ, উত্তম কুন্ড, এনামুল হক, দেবাশীষ রায়, আফজাল হুসাইন, কমলেশ দাশ, শিক্ষক ফাতেমা খাতুন, ছায়রা খাতুন, শিক্ষার্থী সুমাইয়া তাবাসসুম ও তাওসিন আক্তার।

    ইমদাদুল হক,
    পাইকগাছা,খুলনা

  • নেছারাবাদে বেপরোয়া দ্রুত গতির বৌগাড়ীর ধাক্কায় মো: আব্দুল মান্নান হাওলাদার নামে এক বৃদ্ধের মৃ-ত্যু

    নেছারাবাদে বেপরোয়া দ্রুত গতির বৌগাড়ীর ধাক্কায় মো: আব্দুল মান্নান হাওলাদার নামে এক বৃদ্ধের মৃ-ত্যু

    নেছারাবাদ উপজেলা সংবাদদাতা।।

    নেছারাবাদে বেপরোয়া দ্রুত গতির বৌগাড়ীর ধাক্কায় মো: আব্দুল মান্নান হাওলাদার(৬৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। কুনিয়ারি ব্রীজের উত্তর পাশে রাস্তা ক্রসিং এর সময় পেছন থেকে এসে বৌগাড়িটি সজোরে ধাক্কা দিলে তিনি পাকা রাস্তার উপর পড়ে গিয়প মাথা ফেটে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সেই বৌগাড়িতে করে হাসপাতালে নিয়ে যায় পথিমধ্যে তিনি মারা যান।

    ২১জুলাই রোজ সোমবার নেছারাবাদ উপজেলার কুনিয়ারিতে, বরিশাল স্বরূপকাঠি মহাসড়কে ঐ দুর্ঘটনা ঘটে। আব্দুল মান্নান ৩নং স্বরূপকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোঃ মাজেদ মেম্বার এর বড় ভাই ও আসমান আলীর বড় ছেড়ে।

    স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, আব্দুল মান্নান সকাল ১১টার সময় রাস্তা পার হওয়ার সময় পেছন থেকে এসে বৌগাড়িটি তাকে ধাক্কা দিলে তিনি রাস্তার উপর পড়ে যায় এবং তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় সেখানে সে মারা যায়।

    নিহত আব্দুল মান্নান এর ছেলে সোহাগ জানান, বাবা বাসা থেকে রাস্তায় বের হয়। এমন সময় পিছন থেকে এসে একটি দ্রুতগামির বৌগাড়ী ধাক্কায় দেয়। এতে তার পিতা মাথায় আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়ে। হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

    নেছারাবাদ থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) মো. বনি আমিন জানান, আমি একটু বাহিরে আছি। ড্রাইভার এবং গাড়ী থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। আইনি পদক্ষেপ চলমান রয়েছে।

    আনোয়ার হোসেন
    নেছারাবাদ উপজেলা সংবাদদাতা।

  • নড়াইল জেলার চার থানায় অনলাইন জিডি সাধারণ ডায়েরি উদ্বোধন করলেন এসপি

    নড়াইল জেলার চার থানায় অনলাইন জিডি সাধারণ ডায়েরি উদ্বোধন করলেন এসপি

    উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে:
    নড়াইলে অনলাইন জিডি সাধারণ ডায়েরি উদ্বোধন করেন এসপি এহসানুল কবীর। প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনার আলোকে পুলিশি সেবা সহজীকরণের অংশ হিসেবে থানায় সশরীরে উপস্থিত না হয়েও ঘরে বসে সকল ধরনের জিডি করার সুবিধা চালু করছে বাংলাদেশ পুলিশ। উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে জানান, সোমবার (২১ জুলাই) বর্তমানে অনলাইনে শুধুমাত্র হারানো এবং প্রাপ্তি সংক্রান্ত জিডি করা যায়। এখন থেকে অনলাইনে সকল ধরনের জিডি করা সম্ভব হবে। নড়াইল সদর থানায় অনলাইন জিডি (সাধারণ ডায়েরি) উদ্বোধন করেন নড়াইল জেলা পুলিশ সুপার কাজী এহসানুল কবীর। এখন থেকে নড়াইল জেলার চার থানায় সাধারণ জনগণ অনলাইনে জিডি করতে পারবে।
    অনলাইন জিডি উদ্বোধন করার ফলে সাধারণ মানুষ এখন খুব সহজেই এই সেবা ব্যবহার করে হুমকি, হারানো, পারিবারিক দ্বন্দসহ এসব বিষয়েও ঘরে বসেই থানায় জিডি করা যাবে বা প্রাপ্তি সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে পুলিশের কাছে তথ্য জানাতে পারবে। অনলাইন জিডি করার জন্য প্রথমে গুগোল প্লে স্টোর থেকে “অনলাইন জিডি” নামের অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে। এরপর নিবন্ধন সম্পন্ন করে প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করে অনলাইনে জিডি করা যাবে। এই পদ্ধতিতে জিডি করার ফলে জনগণের সময় ও শ্রম সাশ্রয় হবে এবং পুলিশও দ্রুত সেবা প্রদান করতে পারবে এবং জনগনের ভীতি দুর হবে। জিডি এন্ট্রি করার পর জিডির তদন্তকারী অফিসার যিনি হবেন তার নাম ও ফোন নম্বর এসএমএস এর মাধ্যমে সেবা গ্রহনকারীর মোবাইলে জানানো হবে।
    এছাড়াও, এই অনলাইন জিডি সিস্টেমের মাধ্যমে মানুষ তার আবেদন করা জিডির অবস্থা অর্থ্যাৎ ড্রাফট তদন্তাধীন ও নিস্পত্তি কোন অবস্থায় আছে তা জানতে পারবে ঘরে বসেই।

    উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে।

  • নড়াইলের লক্ষ্মীপাশায় প্রায় চারশ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির

    নড়াইলের লক্ষ্মীপাশায় প্রায় চারশ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির

    উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে:
    নড়াইলের লক্ষ্মীপাশায় প্রাচীন নিদর্শন ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির। ইতিহাস আর ঐতিহ্যের ধারক শতাব্দী প্রাচীন লোহাগড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র লক্ষ্ণীপাশার শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালীমাতা মন্দির। প্রাচীন নিদর্শন আর ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে সগৌরবে আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে স্থাপনাটি। উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে জানান, নবগঙ্গা নদীর দক্ষিণ পাড়ে প্রায় চারশ বছরের পুরনো এই কালী দেবী ‘ শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী’ নামে পূজিত হয়ে আসছেন। প্রতিদিন এ পুণ্যস্থানে পূজা-অর্চনা, নিত্য ভোগরাগ, পাঠাবলিসহ অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি পালিত হয়ে আসছে।
    বাংলা ভাষাভাষি অধিকাংশ সনাতন ধর্মাবলম্বী নর-নারী লক্ষ্ণীপাশার এই শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী দেবীকে নিজেদের ‘ত্রাণকর্ত্রী’ হিসেবে মনে করেন। প্রতিদিন শত শত ভক্তের আগমন ঘটে এই পুণ্যস্থানে। প্রায় ১৮৩ শতক জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত মন্দিরটি আজও স্বমহিমায় ভাস্বর। কালের স্বাক্ষী শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালীমাতা মন্দির অন্যতম প্রাচীনতম নিদর্শন।
    মূল মন্দিরে স্থাপিত শ্বেত পাথরের ফলক, ইতিহাস, প্রতিষ্ঠানের গঠনতন্ত্র থেকে সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, ইংরেজি ১৬৪৩ সাল, বাংলা আনুমানিক ১০২৫ বঙ্গাব্দে যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার ঝাঁপা মম্মিননগর গ্রামের রত্নেশ্বর চক্রবর্তীর ছেলে কামদেব চক্রবর্তী সংসার জীবন ছেড়ে তীর্থ ভ্রমণে বের হন। বিভিন্ন তীর্থ ভ্রমণ শেষে জয়পুর পরশমনি মহাশ্মশানে ‘কালী’ সাধনায় ব্রত হন তিনি।
    কামদেব চক্রবর্তী ছিলেন সাধক প্রকৃতির মানুষ। তিনি স্বীয় সাধনাবলে সিদ্ধিলাভ করেন এবং শ্মশানের অপর প্রান্তে নবগঙ্গা নদীর দক্ষিণ পাড়ে লক্ষ্ণীপাশা গ্রামে বর্তমান মন্দির প্রাঙ্গণে ছোটো একটি মন্দির নির্মাণ করে শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালীমাতার ‘বিগ্রহ’ বা ‘মূর্তি’তে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে কামদেব মাতৃ পূজায় মগ্ন হন।
    এখানে আজও হরিতকি, বহেরা, আমলকি, তমাল ও বট-পাঁকুড় গাছের সংমিশ্রণে একটি প্রাচীন বেদি রয়েছে যেটি ‘কামনাবৃক্ষ’ বলে পরিচিত। সেখানে ধর্মপ্রাণ মানুষ তাদের মনোবাসনা পূর্ণ করার জন্য শিবমূর্তি অঙ্কিত ‘টালি’ (মাটির তৈরি) বেঁধে দেন এবং মনোবাসনা পূর্ণ হলে সেই টালি খুলে নেন।
    ১৮১৮ সালে পাইকপাড়া এস্টেটের ফৌজদার বোলাকি সিংহ দাস নীলকর সাহেবদের পত্তনী হতে মুক্ত করার কাজে লোহাগড়ায় আগমন করে এই মন্দিরে অবস্থান করেন। ১৮৪৪ সালে বোলাকি সিংহ দাস নিজে উদ্যোগী হয়ে স্থানীয় অধিবাসীদের সহযোগিতায় বর্তমান পাকা মন্দিরটি নির্মাণ করেন। ইংরেজি ১৯০১ ও বাংলা ১৩০৮ সালে শ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালীমাতা মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা কামদেবের বংশধর শীতল চন্দ্র চক্রবর্তী মূল মন্দিরের পূর্ব পাশে শিব মন্দির নির্মাণ করেন। এরপর তিনি ১৯১৯ সালে মূল মন্দিরের প্রবেশ দ্বারের পশ্চিম পাশে যাত্রী নিবাস ও নবগঙ্গা নদীতে পাকা ঘাট নির্মাণ করেন।
    প্রায় ৪৬ বছর পর ১৯৩৫ সালে মন্দিরটির পুনঃসংস্কার করে তৎকালীন লক্ষ্ণীপাশা গ্রামের কর্মকার বংশধররা মন্দিরের দক্ষিণ প্রান্তে জমি দান করেন। এরপর দানকৃত জমিতে একটি বড় পুকুর খনন করে পাশের কাশিপুর গ্রামের নলিনী মুখার্জি ও রমনী মোহন মুখার্জি নামে দুই ভাইয়ের অর্থায়নে পুকুরের ঘাট পাকা করা হয়।
    নব্বইয়ের দশকে মন্দিরটির পরিচালনা কার্যক্রম পারিবারিক বলয় থেকে বের হয়ে সর্বজনীন রূপ নেয় এবং স্থানীয় ধর্মানুরাগীদের সহযোগিতায় মন্দির পরিচালনার জন্য একটি গঠনতন্ত্র ও একটি পরিচালনা পরিষদ গঠন করা হয়।
    তিন বছর মেয়াদী পরিচালনা কমিটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে এলাকাবাসী এবং ভক্তবৃন্দের সহযোগিতায় এই মন্দিরে প্রতিদিনকার নিত্য পূজা-অর্চনার পাশাপাশি বাৎসরিক কালী পূজা, দূর্গাপূজা, মহানামযজ্ঞানুষ্ঠান, জন্মাষ্টমী অনুষ্ঠান, বৈশাখী পূর্ণিমা তিথি উদযাপনসহ অন্যান্য ধর্মীয় পূজার আয়োজন করা হয়।
    ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হিসেবে পদাধিকার বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বর্তমান পরিচালনা পরিষদের অধীনে নাট মন্দির, শিব মন্দির, বলিঘর সংস্কার, কেন্দ্রীয় রন্ধনশালা এবং সরকারি অর্থায়নে মায়ের ভোগরাগের জন্য একটি ‘ভোগমন্দির’ পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে।
    কথা হয় শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালীমাতা মন্দির পরিচালনা পর্ষদের সহ-সম্পাদক বলেন, এতদাঞ্চলের মানুষের কাছে শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালী মাতা মন্দিরটি ভক্তি, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার নিদর্শন। এলাকাবাসী ও ভক্তবৃন্দের সার্বিক সহযোগিতায় এই মন্দিরটি আজ অনন্য উচ্চতার আসনে আসীন। প্রাচীন এই মন্দিরের পবিত্রতা, সংরক্ষণ, নিরাপত্তা এবং সার্বিক উন্নয়নের জন্য তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
    মন্দির পরিচালনা পরিষদের বর্তমান সভাপতি ও লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রিয়াদ বলেন, এ অঞ্চলে অনেক প্রাচীন নিদর্শনের মধ্যে শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালীমাতা মন্দির অন্যতম। মন্দিরের সংরক্ষণ ও পবিত্রতা রক্ষা করার দায়িত্ব সবার।

    উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে।