Blog

  • সুন্দরবনের দু-র্ধর্ষ ডা-কাত আ-সাবুর বাহি-নীর ২ সহযোগী আ-টক

    সুন্দরবনের দু-র্ধর্ষ ডা-কাত আ-সাবুর বাহি-নীর ২ সহযোগী আ-টক

    শেখ তৈয়ব আলী,খুলনা।

    বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের অভিযানে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সহ সুন্দরবনের দুর্ধর্ষ ডাকাত আসাবুর বাহিনীর ২ সহযোগী আটক করেন।

    বুধবার ০৬ আগস্ট ২০২৫ সকালে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।

    তিনি বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট ২০২৫ তারিখ মঙ্গলবার সুন্দরবনের কুখ্যাত ডাকাত আসাবুর বাহিনীর সদস্যরা ডাকাতির উদ্দেশ্যে সুন্দরবনের শিবসা নদী সংলগ্ন শরবতখালী এলাকায় গমন করবে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ৫ আগস্ট ২০২৫ তারিখ মঙ্গলবার বিকাল ৫ টায় কোস্ট গার্ড বেইস মোংলা কর্তৃক উক্ত এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন ডাকাতির প্রস্তুতিকালে কোস্ট গার্ড আভিযানিক দল ডাকাতদের ধাওয়া করে। ডাকাতরা পালানোর চেষ্টা করলে আভিজানিক দল আত্মসমর্পণ আহ্বানের উদ্দেশ্যে ২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে। পরবর্তীতে আভিযানিক দল ৩ টি একনলা বন্দুক, ১০ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, ৫ রাউন্ড ফাঁকা কার্তুজ এবং অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামাদিসহ সুন্দরবনের কুখ্যাত ডাকাত আসাবুর বাহিনীর ২ সহযোগীকে আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আটককৃত ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন যাবৎ কুখ্যাত ডাকাত আসাবুর বাহিনীর সঙ্গে ডাকাতি এবং ডাকাত দলকে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও রসদ সরবরাহের মাধ্যমে সহযোগিতা করে আসছিলো।

    আটককৃত ডাকাত মোঃ বাদশা গাজী (৪৫) ও মেহেদী হাসান (২৭) উভয়ই খুলনা জেলার পাইকগাছা থানার বাসিন্দা।

    আটককৃত ডাকাত ও জব্দকৃত সকল আলামতের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

    তিনি আরও বলেন, সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করতে কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এই ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।

  • সড়ক দুর্ঘ-টনায় নি-হত ৭ জন, প্রবাসীর কা-ন্নার জন্য পরিবা-রে কেউ থা-কলেন না

    সড়ক দুর্ঘ-টনায় নি-হত ৭ জন, প্রবাসীর কা-ন্নার জন্য পরিবা-রে কেউ থা-কলেন না

    হেলাল শেখঃ একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের সাত জন নিহতের ঘটনায় এক প্রবাসীর কান্নার জন্য আর কেউ থাকলেন না। আড়াই বছর পর ওমান থেকে দেশে আসেন প্রবাসী বাহার উদ্দিন। তাকে আনতে পরিবারের ১১ সদস্য মাইক্রোবাসে রাজধানীতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাইক্রোবাস খালে পড়ে ৭ সদস্য মারা যান। এখন কান্না করার মতো কেউ নেই পরিবারে। তবে আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা শোকে কাতর হয়ে পড়েছেন।

    বেঁচে ফেরা প্রবাসী বাহার উদ্দিন ও আব্দুর রহিম জানান, ঘুম চোখে নিয়ে মাইক্রোবাস চালাচ্ছিল চালক রাসেল। বারবার বলা শর্তেও গাড়ি থামিয়ে সামান্যও বিশ্রাম নেননি তিনি। এর আগে কুমিল্লায় দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে আসে। কিন্তু বাড়ি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার আগেই ঘুমন্ত চালক গাড়িটি সড়কের পাশে খালে ফেলে দেয়। গাড়ি তাৎক্ষণিক ডোবেনি, ধীরে ধীরে ডুবছিল। তখন চালককে গাড়ির লক খুলতে বললেও খুলে দেয়নি। তবে সে নিজে গাড়ির কাঁচ নামিয়ে বের হয়ে পালিয়ে যায়। কাউকে বাঁচানোর চেষ্টাও করেনি।

    একপর্যায়ে গাড়ি থেকে প্রবাসী বাহার, তার বাবা আব্দুর রহিম, শ্বশুর ইস্কান্দার মীর্জা, ভাবি সুইটি ও শ্যালক রিয়াজ বের হয়ে আসে। তবে বাঁচতে পারেনি বাহারের স্ত্রী কবিতা আক্তার (২৪), মেয়ে মীম আক্তার (২), মা মুরশিদা বেগম (৫০), নানী ফয়জুন নেছা (৭০), ভাতিজি রেশমা আক্তার (৯), লামিয়া আক্তার (৮) ও বড় ভাইয়ের স্ত্রী লাবনী আক্তার (২৫)। নিহতরা লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের চৌপল্লী এলাকার কাশারি বাড়ির বাসিন্দা।
    বুধবার (৬ আগস্ট ২০২৫ইং) ভোর রাতে নোয়াখালী বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়াপুর ইউনিয়নের পূর্ব বাজার এলাকায় লক্ষ্মীপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে খালে পড়ে দুর্ঘটনাটি ঘটে। এর আগে মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাতে বাহারকে আনার জন্য মাইক্রোবাসে পরিবারের সদস্যরা বিমানবন্দরে যান।

    চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোবারক হোসেন ভূঁইয়া বলেন, চালক ঘুমিয়ে পড়ায় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে যায়। কয়েকজন বের হতে পারলেও ৭জন ভেতরে আটকা পড়ে মারা যান। মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, ময়নাতদন্তের পর দাফন করা হবে ইনশাআল্লাহ।

  • কুড়িগ্রাম আদালতে  ৪টি প্রতিষ্ঠানের বিরু-দ্ধে মা-মলা দায়ের

    কুড়িগ্রাম আদালতে ৪টি প্রতিষ্ঠানের বিরু-দ্ধে মা-মলা দায়ের

    প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

    বিএসটিআই বিভাগীয় কার্যালয়, রংপুর এর উদ্যোগে রংপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সার্ভিল্যান্স অভিযান পরিচালনার সময় বিএসটিআই আইন- ২০১৮ এর ১৫ ও ২১ ধারা লংঘনের কারণে অনুযায়ী ০৬ আগস্ট ২০২৫ খ্রি: তারিখে নিম্ন বর্ণিত ০৪টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট, কুড়িগ্রাম বরাবর মামলা দায়ের করা হয়।

    মামলা দায়েরকৃত প্রতিষ্ঠানগুলি হচ্ছে:
    ০১। সাবিনা জাফরী (৪৬), মেসার্স টেস্টি স্ন্যাকস এন্ড বেকারী, হোল্ডিং- ৮৬৭, কলেজ রোড, সদর, কুড়িগ্রাম; পণ্য- কেক, মিস্টি ও ফার্মেন্টেড মিল্ক, মামলা নং- ৬৯৯/২৫
    ০২। মোঃ আলমগীর গাজী (৩৫), মেসার্স আতিফা ফুড প্রোডাক্টস, পূর্ব কল্যাণ বেলগাছা (বিসিক শি/ন), সদর, সদর, কুড়িগ্রাম; পণ্য- চিপস, মামলা নং- ৭০০/২৫
    ০৩। মোঃ এরশাদুল হক (৩৭), মেসার্স এরশাদুল ট্রেডার্স, ভেলাকোপা, মাঠেরপাড়, সদর, সদর, কুড়িগ্রাম; পণ্য- সয়াবিল তেল ও আচার, মামলা নং- ৭০১/২৫
    ০৪। মোঃ বেলাল হোসেন (২৭), মেসার্স আল-আকসা আইসক্রিম ফ্যাক্টরী, টাপুরচর, বুড়িরহাট, হলোখানা, সদর, সদর, কুড়িগ্রাম; পণ্য- ফার্মেন্টেড মিল্ক ও আইসললি, মামলা নং- ৭০২/২৫

    জনস্বার্থে বিএসটিআই বিভাগীয় কার্যালয়, রংপুরের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

  • জুলাই গ-ণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষ্যে তেঁতুলিয়ায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

    জুলাই গ-ণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষ্যে তেঁতুলিয়ায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

    মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম, তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস-২০২৫ উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকালে উপজেলা পরিষদ হলরুমে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এই আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়।

    উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফরোজ শাহীন খসরু’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মুসা মিয়া, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হোসেন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহাদৎ হোসেন রঞ্জু, উপজেলা জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব আবু বক্কর সিদ্দিক সবুজ, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) উপজেলা প্রধান সমন্বয়কারী মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান হাবিব, হযরত আলী, ওবায়দুল হক, সাংবাদিক এমএ বাসেত, জাবেদুর রহমান জাবেদ প্রমূখ।

    এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা জীবন ইসলাম, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সীমান্ত কুমার বসাক, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর আবাসিক মেডিকেল অফিসার(ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ মো. শাকিল রহমান, উপজেলা মৎস্য অফিসার মো. মাহবুবুর রহমান, উপজেলা প্রকৌশলী ইদ্রিস আলী খান, উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী মিঠুন কুমার রায়, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মাইদুল ইসলাম শাহ, উপজেলা আইসিটি অফিসার ও বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক নবীউল কারিম সরকার সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, ছাত্র, শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।

    সভায় বক্তারা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পলায়নে দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। আগামী সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাইদ, শহীদ মুগ্ধসহ সব শহীদকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।

    এদিকে দিনের সুবিধাজনক সময়ে উপজেলার প্রতিটি মসজিদে শহীদগণের রুহের মাগফিরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনা করে বিশেষ দোয়া এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রার্থনা করতে বলা হয়েছে।

    মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম।।

  • ঝিনাইদহে জুলাই গ-ণঅভ্যুত্থানের বিজয় র‌্যালিতে জন-তার ঢল

    ঝিনাইদহে জুলাই গ-ণঅভ্যুত্থানের বিজয় র‌্যালিতে জন-তার ঢল

    ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতাঃ
    জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বিজয় র‌্যালি করেছে ঝিনাইদহ জেলা বিএনপি। কেন্দ্রীয় কর্মসুচির অংশ হিসেবে বুধবার দুপুরে শহরের উজির আলী হাইস্কুল মাঠ থেকে বিজয় র‌্যালি শুরু হয়। র‌্যালিটি শহরের গুরুত্বপুর্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে চুয়াডাঙ্গা বাসষ্ট্যান্ড এলাকার স্বাধীন চত্বরে এসে শেষ হয়। র‌্যালির নেতৃত্ব দেন ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড এম এ মজিদ। বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মীদ বিজয় র‌্যালিতে অংশগ্রহণ করেন।

    দিবসটি উদযাপন উপলেক্ষ্যে সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতাকর্মীরা উজির আলী হাইস্কুল মাঠে জড়ো হতে থাকে। দুপুর নাগাদ মাঠটি লোকে লোকরণ্য হয়ে ওঠে। র‌্যালিতে নেতাকর্মীরা বাদ্যযন্ত্র, রংবেরঙ্গের প্লাকার্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে অংশ গ্রহন করেন। তবে র‌্যালিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের অংশগ্রহন ছিল চোখে পড়ার মতো।

    র‌্যালি শেষে স্বাধীন চত্বরে সংক্ষিপ্ত সাবেশে অন্যান্যের মধ্যে কেন্দ্রীয় নেতা আমিরুজ্জামান খান শিমুল, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড এম এ মজিদ, সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা, জেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক এ্যাড এস এম মশিয়ূর রহমান, মুন্সি কামাল আজাদ পাননু, আব্দুল মজিদ বিশ্বাস, আলমগীর হোসেন আলম, আনোয়ারুল ইসলাম বাদশা, কৃষকদল নেতা মীর ফজলে ইলাহী শিমুল, যুবদল নেতা আহসান হাবিব রণক, আশরাফুল ইসলাম পিন্টু, ছাত্রদল নেতা সোমেনুজ্জামান সোমেন ও মুশফিকুর রহমান মানিক বক্তব্য রাখেন।

    ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড এম এ মজিদ তার সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে পৃথিবীর অন্যতম স্বৈরশাসক হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের আকাশে উদিত হয় নতুন সুর্য্য। দুই হাজার মানুষের আত্মদানে রচিত হয় ইতিহাসের মহাসোপান।

    তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্টেক হোল্ডারদের মধ্যে নানা মত ও পথ থাকবে। কিন্তু ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াইয়ের ক্ষেত্রে আমরা সবাই এক।

    আতিকুর রহমান
    ঝিনাইদহ।

  • বাংলাদেশে বিলু-প্ত হওয়া রাসেল ভাই-পারসহ বি-ষধর কিছু সা-প ফিরে এসেছে ভং-ঙ্কররুপে

    বাংলাদেশে বিলু-প্ত হওয়া রাসেল ভাই-পারসহ বি-ষধর কিছু সা-প ফিরে এসেছে ভং-ঙ্কররুপে

    লেখকঃ মোঃ হায়দার আলীঃ সিংহভাগ মানুষের আক্বীদা-বিশ্বাসের উপর আঘাত হানার জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে নাস্তিক্যবাদী যে চক্রান্ত অব্যাহত ছিল, তার একটি বাস্তব দৃষ্টান্ত হ’ল বিগত বছর গুলিতে এদেশের শিক্ষাব্যবস্থা। বৃটিশদের চাকরিজীবী, পেশাজীবী ও কেরানী তৈরি করার লক্ষ্যে নিবেদিত ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের দর্শনে পরিচালিত শিক্ষাব্যবস্থা এদেশের আম জনমানুষের শাখায়-প্রশাখায় এমনভাবে পাশ্চাত্যের ভোগবাদী জীবনাদর্শকে ঢুকিয়ে দিয়েছিল, যা থেকে পরিত্রাণের কোনো উপায় যেন ছিল না। স্বাধীনতার পর যতগুলো শিক্ষাক্রম এসেছে, প্রতিটি শিক্ষাক্রমেই একটু একটু করে গেড়ে দেয়া হয়েছে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের বীজ, আর পাল্লা দিয়ে কমানো হয়েছে মুসলিম হিসাবে আত্মপরিচয় গঠনের সুযোগগুলো। এ বিষয়ে লিখার জন্য চিন্তা ভাবনা করলাম, কিন্তু টিভি, জাতীয়, স্থানীয়, অনলাইন পত্রিকা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষধর সাপে কামড়ে মানুষের মৃত্যু কয়েকগুন বেড়েছে। রীতিমতো বিভিন্ন এলাকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। বেশ কিছু বিষধর রাসেল ভাইপারসহ বিভিন্ন সাপ মানুষ মেরে ফেলেছেন।

    বিষধর রাসেলস ভাইপারসহ বিভিন্ন সাপের কামড়ের বিষাক্ত ছোবলে, ব্যবসায়ী, শিশু, কিশোর, শ্রমিক, কৃষক, শিক্ষার্থীসহ কিছু মানুষ মারা গেছেন এবং এধরনের অনেক সাপকে মানুষ মেরে ফেলেছে যা ফেসবুকে ছবি পোস্ট করছেন। আতঙ্কিত মানুষের কথা চিন্তা করে লিখার থিম পরিবর্তন করে । আল্লাহর নাম নিয়ে বিষধর সাপ সম্পর্কে লিখার চেষ্টা করচ্ছি।
    বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কয়েকটি এলাকায়, বিশেষ করে পদ্মা তীরবর্তী কয়েকটি জেলা ও চরাঞ্চলে, গত কিছুদিন যাবত বিষাক্ত রাসেলস ভাইপার সাপের কামড়ে অনেক কয়েকজন আহত হয়েছেন,

    গত বছরের এ সময়ের কয়েকগুন বেশী মানুষ মারা গেছে। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে ঝোপঝাড়ে থাকা সাপগুলো লোকালয়ে চলে আসছে। ফলে অনেক এলাকায় সাপের উপদ্রব বেড়ে গেছে। গ্রামের মানুষ কুসংস্কারে বিশ্বাসী হওয়ায় ওঝা কিংবা কবিরাজের কাছে আগে যাচ্ছে। দেরি করে হাসপাতালে যাওয়ার কারণে সাপে কাটা রোগীদের বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না।

    রাসেলস ভাইপার সাপ বাংলাদেশে চন্দ্রবোড়া বা উলুবোড়া নামেও পরিচিত। বাংলাদেশে যেসব সাপ দেখা যায় সেগুলোর মধ্যে এটিই সবচেয়ে বিষাক্ত। এই সাপের কামড়ে শরীরের দংশিত অংশে বিষ ছড়িয়ে অঙ্গহানি, ক্রমাগত রক্তপাত, রক্ত জমাট বাঁধা, স্নায়ু বৈকল্য, চোখ ভারী হয়ে যাওয়া, পক্ষাঘাত, কিডনির ক্ষতিসহ বিভিন্ন রকম শারীরিক উপসর্গ দেখা যেতে পারে।

    তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, সাপের এই প্রজাতিটি বাংলাদেশ থেকে বহু বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছিল। কিন্তু গত ১০-১২ বছর আগে থেকে আবারো এই সাপের কামড়ের ঘটনার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। এই প্রজাতির সাপ এই অঞ্চলে আবার কীভাবে ফিরে আসছে, তা নিয়ে বাংলাদেশে গবেষণা চলছে।

    কীভাবে ফিরে আসছে রাসেলস ভাইপার : বাংলাদেশে রাসেলস ভাইপারের পুনরাবির্ভাব ও এই সাপ থেকে মানুষের ঝুঁকির বিষয়ে গবেষণা করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আহসান মনসুর। ২০১৩ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ২০টি রাসেলস ভাইপার দংশনের ঘটনা বিশ্লেষণ করে, করা গবেষণাটি ২০১৮ সালে প্রকাশিত হয় জার্নাল অব দি এশিয়াটিক সোসাইাটি, বাংলাদেশে। সেসময় ঐ গবেষণায় উঠে আসে যে বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ১৭টি জেলাতেই রাসেলস ভাইপারের উপস্থিতি রয়েছে। ঐ গবেষণায় পাওয়া তথ্য অনুযায়ী উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতেই এই সাপের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছিল। ঐ গবেষণায় উঠে আসে যে এই প্রজাতির সাপের সবচেয়ে বেশি উপস্থিতি ছিল রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়। তবে বর্তমানে আরো বেশি এলাকায় এই প্রজাতির সাপের উপস্থিতি রয়েছে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। মি. আহসান ধারণা প্রকাশ করেন যে, বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় স্বল্প সংখ্যক রাসেলস ভাইপার সবসময়ই ছিল, কিন্তু বংশবিস্তারের মত পরিবেশ ও পর্যাপ্ত খাদ্য না থাকায় এই সাপের উপস্থিতি তেমন একটা বোঝা যায়নি।

    সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে এই সাপের সংখ্যা বাড়ার অন্যতম প্রধান কারণ একই জমিতে বছরে একাধিক ফসল ফলানো – বিবিসি বাংলার সাথে কথা বলার সময় মন্তব্য করেন ফরিদ আহসান। “আগে কৃষিজমিতে বছরে একবার বা দুইবার ফসল ফলানো হত এবং বাকি সময় পানির অভাব থাকায় জমি পরিত্যক্ত পড়ে থাকতো। ৯০’ এর দশকে সেচ পদ্ধতির উন্নতির সাথে সাথে কৃষকরা বছরে দুই থেকে তিনটি ফসল ফলানো শুরু করেন এবং জমি কম সময় পরিত্যক্ত থাকতে শুরু করে।” “সারা বছর ক্ষেতে ফসল থাকায় জমিতে ইঁদুরের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যা এই সাপের প্রধান খাদ্য। আর ইঁদুর বাড়ার সাথে সাথে সাপ পর্যাপ্ত খাদ্য পেতে শুরু করে এবং বংশবিস্তারের জন্য যথাযথ পরিবেশ পেতে থাকে,” বলেন মি. আহসান। ঘন ঝোপ আর পরিত্যক্ত জমি অপেক্ষাকৃত কমে যাওয়ায় এই সাপ কৃষি জমিতেই থাকে, যার ফলে যারা মাঠে কৃষিকাজ করেন তারা রাসেলস ভাইপারের দংশনের সবচেয়ে বেশি শিকার হয়ে থাকেন। এছাড়া বর্ষাকালে নদীর পানি বাড়ার ফলে ভারতের নদ-নদী থেকে ভেসেও এই সাপ বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে বলে জানান মি. আহসান। “এখন পর্যন্ত পদ্মা অববাহিকায় এই সাপ সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে। আমরা দেখেছি যেসব জায়গায় এই সাপ পাওয়া গেছে তার অধিকাংশ জায়গাতেই কচুরিপানা রয়েছে, আবার কচুরিপানার মধ্যেও এই সাপ পাওয়া গেছে। কাজেই আমরা ধরে নিতে পারি কচুরিপানার ওপরে ভেসে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় এই সাপ বিভিন্ন অঞ্চলে পৌঁছেছে।”
    মূলত বাংলাদেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে রাসেলস ভাইপারের উপস্থিতির সবচেয়ে বেশি প্রমাণ পাওয়া গেলেও সম্প্রতি দক্ষিণাঞ্চলের জেলা পটুয়াখালীতেও এই সাপের দেখা মিলেছে বলে জানান অধ্যাপক ফরিদ আহসান। এছাড়া ২০১৪ ও ২০১৫ সালে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কয়েকটি চর এলাকায় বিভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ধার করা অন্তত পাঁচটি রাসেলস ভাইপার সাপ অবমুক্ত করা হয়। তবে অধ্যাপক আহসান মনে করেন অবমুক্ত করা অল্প কয়েকটি সাপ বাংলাদেশে এই প্রজাতির সংখ্যা বাড়ানোর পেছনে খুব বেশি ভূমিকা রাখেনি। কতটা

    মারাত্মক এই সাপের দংশন: বাংলাদেশে রাসেলস ভাইপারের দংশনের হার খুব বেশি না হলেও ভারতে প্রতি বছর যে পরিমাণ সর্প দংশনের ঘটনা ঘটে তার মধ্যে অন্তত ৪৩% এবং শ্রীলঙ্কায় প্রতি বছর মোট সর্প দংশনের ঘটনার ৩০-৪০% রাসেলস ভাইপারের কারণে হয়ে থাকে। সাধারণত কৃষি জমিতে থাকে বলে মানুষ অনেক সময়ই সাপের গায়ে পা দেয় বা না জেনে একে বিরক্ত করে থাকে। আর রাসেলস ভাইপার বিপন্ন বোধ করলে আচমকা আক্রমণ করে থাকে। এই প্রজাতির সাপের কামড়ের কিছুক্ষণ পরই দংশিত স্থানে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। ব্যাখ্যার পাশাপাশি দংশিত স্থান দ্রুত ফুলে যায় এবং ঘণ্টা খানেকের মধ্যে দংশিত স্থানের কাছে শরীরের আরো কয়েকটি অংশ আলাদাভাবে ফুলে যায়।

    দ্রুত চিকিৎসা না করা হলে নিম্ন রক্তচাপ, কিডনি অকার্যকর হওয়া সহ বিভিন্ন ধরণের শারীরিক সমস্যা তৈরি হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৮ সালের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ৫৪ লাখ মানুষ সাপের দংশনে দংশিত হয়, যার মধ্যে প্রতি বছর অন্তত এক লাখ মানুষ মারা যায়। আর সাপের দংশনে আহত হয়ে বছরে প্রায় ৪ লাখ মানুষের অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয় অথবা পঙ্গুত্ব বরণ করেন। সংস্থাটির ২০১৯ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতি বছর অন্তত ৫ লাখ ৮০ হাজার মানুষ সাপের কামড়ের শিকার হন এবং বছরে অন্তত ছয় হাজার মানুষ মারা যান।

    স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০২৪ সালে হাসপাতালে সাপের ছোবল খেয়ে চিকিৎসা নিতে আসা ২৪ হাজার ৪৩২ জনের মধ্যে ১১৮ জন মারা গেছেন। পরিসংখ্যান আরও বলছে, সাপের ছোবলের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে বরিশালে, তবে মৃত্যুর হার বেশি পদ্মাপাড়ের বৃহত্তর ফরিদপুর ও রাজশাহীতে, যেখানে বিষধর সাপ বেশি দেখা যায়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, গত বছর সাপের কামড়ে মারা যাওয়া রোগীদের অধিকাংশকেই প্রথমে ওঝা বা বৈদ্যর কাছে নেওয়া হয়েছিল। দ্রুত সময়ের মধ্যে আধুনিক চিকিৎসা নিলে এদের মধ্যে ৯০ শতাংশ রোগীকেই বাঁচানো যেত।

    স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ২০২১ সালের পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি বছর ৪ লাখেরও বেশি মানুষ সাপের ছোবলের শিকার হন, যার মধ্যে প্রায় ৯৬ হাজার ৫০০টি বিষধর সাপের ছোবল। এই বিষধর সাপের ছোবলে বছরে সাড়ে ৭ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।

    বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাপের ছোবলে এই ভয়াবহ মৃত্যুর হার দেশের স্বাস্থ্য খাতে এক নীরব সংকট তৈরি করেছে। তারা বলছেন, সাপের ছোবলে আক্রান্তদের ২০ থেকে ২২ শতাংশের মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো সমন্বিত চিকিৎসার অভাব এবং সময়ক্ষেপণ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তি দ্রুত সময়ের মধ্যে হাসপাতালে না গিয়ে ওঝা বা বৈদ্যের শরণাপন্ন হন।

    বিষধর সাপের এর দংশনে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়। তবে ২০১৮ সালের পর থেকে দেশের বিভিন্ন উপজেলায় অ্যান্টিভেনম পাওয়া যায়। কালাস, গোখরা এবং রাসেলস ভাইপারের কামড়ে অ্যান্টিভেনম নিতেই হবে।

    স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক জানান, সাপের ছোবলের ঘটনা বেশি ঘটে বর্ষাকালে, অর্থাৎ—জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসে। আর সাপের প্রজনন মৌসুম ‘অক্টোবর’ মাসে। দেশে এই দুই সময়ে সাপের ছোবলের ঘটনা বেড়ে যায়। তিনি বলেন, আমাদের দেশে ব্যবহৃত অ্যান্টিভেনমগুলো শত বছরের পুরোনো প্রযুক্তিতে তৈরি এবং দক্ষিণ ভারতের চার ধরনের সাপ থেকে সংগৃহীত বিষে তৈরি হওয়ায় সব ধরনের সাপের বিষের বিরুদ্ধে এটি কার্যকর নয়। অ্যান্টিভেনম প্রয়োগের পরও ২০ থেকে ২২ শতাংশ রোগীর মৃত্যু হয়।

    পদ্মার চরাঞ্চলে ভয়ংকর রাসেল ভাইপারের উপদ্রব, রাসেল ভাইপার সম্পর্কে বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা বলেন, “আইইউসিএনের ২০১৫ সালের লাল তালিকা অনুযায়ী রাসেলস ভাইপার বাংলাদেশে সংকটাপন্ন প্রাণীর তালিকায় রয়েছে। এটি ইঁদুর ও টিকিটিকি খায়। বসতবাড়ির আশেপাশে এদের প্রাচুর্যতা বেশি থাকায় খাবারের খোঁজে রাসেলস ভাইপার অনেক সময় লোকালয়ে চলে আসে এবং মানুষকে দেখে আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে কখনও কখনও আক্রমণও করে।”

    এ সাপ চেনার উপায়, বিষদাঁত, আক্রান্ত রোগির অবস্থাঃ বাংলাদেশের অত্যন্ত বিষধর সাপের মধ্যে একটি দেশে যতগুলি বিষধর সাপ আছে তার মধ্যে একটি রাসেলস ভাইপার। এটি ‘চন্দ্রবোড়া’ নামেও পরিচিত।

    রাসেল ভাইপারের কামড়ে ৯০ শতাংশ রোগী মারা যাচ্ছেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। বিষধর এই সাপটি চিনতে না পারায় চিকিৎসা নিতে দেরি করায় মৃত্যর ঘটনা বাড়ছে। শুধু বাংলাদেশে নয়, পুরো বিশ্বে প্রতি বছর সাপের কামড়ে যত মানুষ মারা যায়, তার উল্লেখযোগ্য একটি অংশ কেবল এ সাপের কামড়েই মারা যায়। বিশ্বজুড়ে রাসেলস ভাইপারের দুর্নাম রয়েছে।

    ভারতের মোদিনীপুর বিষয়ক ওয়েবসাইট মিডনাপুর ডট ইন-এর বন্যপ্রাণী বিষয়ক উপদেষ্টা রাকেশ সিংহ দেব বিস্তারিত একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন এ সাপের ওপর। সাপটির শনাক্তের বিষয়ে তিনি জানিয়েছেন, রাসেলস ভাইবার সাপের দেহ মোটাসোটা, লেজ ছোট ও সরু হয়ে থাকে। মাথা চ্যাপ্টা ত্রিকোণাকার। মাথার তুলনায় ঘাড় অনেকটাই সরু। শরীরের রঙ বাদামি, হলদে বাদামি অর্থাৎ কাঠ রঙের হওয়ায় শুকনো পাতার মধ্যে এই সাপ নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পারে। সাপটির জিহ্বার রঙ বাদামি বা কালো। সারা গায়ে স্পষ্ট বড়ো গাঢ় বাদামি গোলগোল দাগ থাকে, এই দাগগুলোর মাথা ছুঁচালো। অনেকসময় দাগগুলো একসঙ্গে দেখতে শিকলের মতো লাগে। গোলাকার দাগগুলো দেখতে অনেকটাই চাঁদের মতো। দাগগুলোর চারপাশে কালো রঙের বর্ডার থাকে, তার মধ্যে সাদা বা হলুদের ছিটে লক্ষ্য করা যায়। পেটের দিকের আঁশ এর রঙ সাদা। এদের বিষদাঁত লম্বা। বিষদাঁতের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৫-১৬ মিমি পর্যন্ত হয়ে থাকে। রাসেলস ভাইপারের বিষদাঁত পৃথিবীতে দ্বিতীয় সবচেয়ে বৃহৎ দাঁত।

    গায়ের রঙ এবং প্যাটার্নের মিল থাকায় অনেকেই বিষহীন বালুবোড়া সাপের সঙ্গে বিষাক্ত রাসেলস ভাইবারকে গুলিয়ে ফেলেন। এছাড়া অনেকে ছোট অজগর ভেবে ভুল করেন। কিন্তু ভালো করে পর্যালোচনা করলে সহজেই সাপ দুটোর মধ্যে পার্থক্য করা যায়।

    সাধারণত সব সাপ মানুষকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে, কিন্তু রাসেলস ভাইপার সাপের স্বভাব ঠিক উল্টো। এরা সচরাচর পালিয়ে যায় না। নিজেদের বিপন্ন মনে করলে আক্রমণ করে বসে। বিষধর সাপ হিসেবে পৃথিবীতে রাসেলস ভাইপারের অবস্থান পঞ্চম। কিন্তু হিংস্রতা আর আক্রমণের দিক থেকে এর অবস্থান প্রথম। আক্রমণের ক্ষেত্রে এই সাপ এত ক্ষিপ্র যে, ১ সেকেন্ডের ১৬ ভাগের ১ ভাগ সময়ের ভেতরে কামড়ের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারে। এরা প্রচণ্ড জোরে হিস হিস শব্দ করতে পারে।

    ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন-এ প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, রাসেলস ভাইবার সাপের কামড়ের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তাৎক্ষণিকভাবে কিংবা কয়েক ঘণ্টা পরে শুরু হতে পারে। প্রতিক্রিয়া শুরু হওয়ার বিষয়টি কামড়ের গভীরতা, বিষের মাত্রা, সাপের দৈর্ঘ্য ও বয়সের ওপর নির্ভর করে।

    মিডনাপুর ডট ইন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাসেল ভাইবার সাপের কামড়ে তীব্র জ্বালাযন্ত্রণা শুরু হয়। কামড়ের জায়গা দ্রুত ফুলতে থাকে, দংশনের স্থান থেকে চুঁইয়ে রক্ত বের হতে পারে। চোখের কোণ, দাঁতের মাড়ি, নাক বা যে কোনো কাটা অংশ থেকে, থুতুর সঙ্গে, বমি, প্রস্রাব বা পায়খানার সঙ্গে রক্ত আসতে পারে। চোখ লাল হয়ে যায়, কোমরের দিকে ও পাঁজরের নিচের দিকে ব্যথা শুরু হয়। সারা শরীর বিশেষ করে পা ফুলতে থাকে।

    সাপে কামড়ালে আতঙ্কিত না হয়ে শান্ত থাকতে হবে। যে জায়গা কামড়েছে, সেই জায়গা খুব বেশি নড়াচড়া করানো যাবে না। সাপে কামড়ানোর পর প্রথম ১০০ মিনিট খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওই সময়ের মধ্যে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া গেলে রোগী সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন। যেহেতু রাসেলস ভাইপার সাপের কামড়ে রোগীর কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, তাই রোগীকে এমন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত যেখানে ডায়ালাইসিসের সুব্যবস্থা রয়েছে।

    ৪ সেপ্টেম্বর সকাল ১০ ঘটিকার সময় বিষধর কালাচ সাপের কামড়ে নাটোরের রামশার কাজীপুর কান্দিপাড়া নলডাঙ্গা এলাকার মোঃ নসির উদ্দিন কালুর দ্বিতীয় ছেলে কৃষক মোঃ মিজানুর রহমান (মিনু) (৩৫) বৈকাল ৬টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্তেকাল করিয়াছেন।

    সাপটি যখন তাকে কামড়ায় সে নিজে হাতে সাপটিকে মেরেছে। আবার সেই সাপটিকে বাড়িতে নিয়ে এসেছে। অথচ সে নিজেও বুঝতে পারেনি যে এই সাপের কামড়ে তার মৃত্যু হবে সে।। পাট খেতে পাট কাটার পর পানিতে দেওয়ার জন্য মাথায় করে নিয়ে যাচ্ছিল। পাটের আটির মধ্যেই সাপটি ছিল। তখন সাপটি তাকে কামড় দেয়। আর সাপটিকে নিজেই হাতেই মেরে বাড়িতে আনে।

    গত ২ আগষ্ট শনিবার চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় সাপের কামড়ে নায়মা খাতুন ( ১৩) নামে এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। সে আনোয়ারার রায়পুর ইউনিয়নের সরেঙ্গা গ্রামের বক্সি মিয়াজিবাড়ির মোহাম্মদ হাসানের মেয়ে। সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। রাতে খাওয়াদাওয়া সেরে মা ও ছোট বোনের সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিল নাঈমা। রাত তিনটার দিকে সাপের ছোবলে তার ঘুম ভাঙে। বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের জানালে তাকে উদ্ধার করে রাতেই আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। তবে ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক নাঈমাকে মৃত ঘোষণা করেন।

    গত ১ আগষ্ট চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় বিষধর সাপের কামড়ে মুহাম্মদ তাওসীব (১৬) নামের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। ওই দিন সন্ধ্যায় বাড়ির উঠানে তাকে সাপে কামড় দেয়। তাওসীব উপজেলার পুটিবিলা ইউনিয়নের সড়াইয়া গ্রামের পল্লি চিকিৎসক মো. ইব্রাহিমের ছেলে।

    গত ৩০ জুলাই কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে বিষধর সাপ ধরতে গিয়ে সেই সাপের কামড়েই এক সাপুড়ের মৃত্যু হয়েছে।
    নিহত ওই সাপুড়ের নাম বয়েজ উদ্দিন। তিনি ওই ইউনিয়নের ডাক্তার পাড়া এলাকার বাসিন্দা।’
    স্থানীয়রা জানান, ওই দিন সকালে ইমরান আলীর বাড়িতে একটি বিষধর সাপ দেখতে পায় পরিবারের লোকজন। পরে সাপটি ধরতে স্থানীয় সাপুড়ে বয়েজ উদ্দিনকে খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে সাপুড়ে ওই বাড়িতে এসে স্থানীয়দের সহায়তায় বিষধর সাপটি ধরে। বেশ কিছুক্ষণ লেজ ধরে সাপটিকে ঝুলিয়ে রাখার পর বস্তুায় ভরানোর সময় হাতে কামড় দেয় তার। এর কিছুক্ষণ পর শরীরে বিষোক্রিয়া শুরু হলে হাসপাতালে নেয়ার পর তার মৃত্যু হয়।

    এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১১ দিনে সাপের কামড়ে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বিভিন্ন পত্রপত্রিকার প্রকাশিত খবরে জানা গেছে।
    গত ৯ জুলাই বুধবার ভোর সোয়া ৫টার দিকে বাড়ির পাশে জমিয়ে রাখা বালু আনতে যান। সেখানে একটি সাপ শাহিদা বেগমকে ছোবল মারে। হাসপাতালে না নিয়ে তাকে নেওয়া হয় দেড় কিলোমিটার দূরে এক ওঝার কাছে। বিষ নেই বলে ওঝা তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেন। তারপর বিষক্রিয়ায় ছটফট করতে থাকলে তাকে নেওয়া হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শাহিদা চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের আব্দুল্লাহীল কাফির স্ত্রী।

    শুধু শাহিদা নন, এমন অসচেতনতার ফলে ১১ থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত জেলার তিন উপজেলায় সাপের ছোবলে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে গোমস্তাপুর উপজেলার বাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের সন্তোষপুর গ্রামের ভিম কুমার ঘোষ নামের এক যুবক ১১ জুলাই দুপুরে বাড়ির পাশে জমিতে ঘাস কাটছিলেন। হঠাৎ তাকে একটি সাপ ছোবল মারে। তারপর বাড়িতে ফিরে প্রতিবেশী এক ওঝার কাছে যান তিনি। খবর পেয়ে ভিমের মামাতো ভাই কমলেশ কুমার ওরফে মিলন তাকে নিয়ে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। কিছুক্ষণ পরই মৃত্যু হয় ভিমের। মিলন বলেন, দেরি করে হাসপাতালে যাওয়ার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। ১৫ জুলাই গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর পৌর এলাকার ধুলাউড়ি মহল্লার আবেদ আলী, ১৯ জুলাই একই উপজেলার পার্বতীপুর ইউনিয়নের টিকরামপুর গ্রামের নাইমা খাতুন নামের এক গৃহবধূ, ২১ জুলাই সদর উপজেলার গোবরাতলা এলাকায় গুনির মোড়ে নাচোল উপজেলার সানপুর গ্রামের কাসেম আলী, একই দিন সদর উপজেলার ঘুঘুডিমা এলাকার কৃষক রুস্তম আলী এবং ২৩ জুলাই নাচোল উপজেলার কসবা ইউনিয়নের রেললাইন পাড়ার লতিফা খাতুনের মৃত্যু হয় সাপের ছোবলে।
    গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও নাচোল উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একই দায়িত্বে (অতিরিক্ত দায়িত্ব) থাকা ডা. আব্দুল হামিদ বলেন, জুলাই মাসে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৫ জন সাপে কাটা রোগী ভর্তি হয়েছিল। তারমধ্যে একজনকে রেফার করা হয়। আর একজন মৃত রোগী এসেছিল, বাকিরা সুস্থ হয়েছে।

    গতবছর ৬ মে রাসেল ভাইপারের দংশনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। নিহত শিক্ষার্থীর নাম শাকিনুর রহমান সাব্বির। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি ছিল রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায়। এ বিষয়ে সাব্বিরের বন্ধু রাকিবুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, মাগরিবের নামাজ শেষে কয়েক বন্ধু মোক্তার বাজার সংলগ্ন পদ্মার পাড়ে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। সেখানে সবাই জিলাপি খাচ্ছিলাম। জিলাপি খাওয়া শেষে আমাদের মধ্যে একজন কাগজের প্যাকেটটা ছুড়ে ফেলে দেয়। সাব্বির হাত মোছার জন্য ঐ প্যাকেটের কাগজটা তোলার সময় বিষধর রাসেল ভাইপার তাকে কামড় দেয়। তখন সাপটিকে মেরে আমরা বন্ধুরা তাকে আধাঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু শেষমেশ তাকে আর বাঁচানো গেল না। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহম্মেদ বলেছিলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের যে শিক্ষার্থী মারা গেছেন তার মৃত্যুর কারণ রাসেল ভাইপার সাপের দংশন। এই সাপে কাউকে দংশন করলে তার বাঁচার সম্ভাবনা খুবই কম। তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। তবে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার গোদাগাড়ী ইউনিয়নের চম্পকনগর গ্রামের বাসিন্দা সামাউন গত (৫ মে বুধবার) পদ্মা নদীর ওপারে পাঁকা ধান কাটতে গিয়ে রাসেল ভাইপারের কামড়ে সাথে সাথে তার মূত্যু হয়।

    গত বছর ৭ মার্চ ফরিদপুর জেলার চরভদ্রাসন উপজেলায় বিষধর ‘রাসেলস ভাইপার’ সাপের কামড়ে অসুস্থ হয়ে মো. বিশা প্রামাণিক (৫৪) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। সাপের কামড়ের এক মাস ছয় দিন পর তিনি মারা যান। ফরিদপুর, ঢাকার হাসপাতালসহ বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা নিয়েছেন কৃষক বিশা প্রামাণিক। তিনি চরভদ্রাসন উপজেলা সদর ইউনিয়নের টিলারচর গ্রামের ডেঙ্গুর প্রামাণিকের ছেলে।

    বরেন্দ্র অঞ্চলে এই সাপের আক্রমণ বেশী হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে সে এলাকার মাটি এবং রাসেল ভাইপারের গায়ের রঙ প্রায় এক তাই অনেক সময় না দেখেই মানুষ কাছে চলে যায়। এই সাপকে দেখলে নিরাপদে সরে যাওয়াই উত্তম তবে কিছু বিষয়ে সচেতন থাকলে এর থেকে বাঁচা সম্ভব। আশেপাশের পুরাতন পরে থাকা গাছের নিচে খেয়াল না করে হাত না দেওয়া। ধান কাটার সময় গামবুট ব্যাবহার করা।
    ধান কাটা শুরুর আগে হাড়ি-পাতিল বা অন্য কিছু দিয়ে প্রচণ্ড শব্দ করা যেন সে ভয়ে পালিয়ে যায়। যেহেতু এরা খুবই হিংস্র তাই যে সব এলাকায় বেশী দেখা যায় সে সব এলাকায় সচেতনভাবে চলাফেরা করা এবং উপস্থিতি লক্ষ্য করলে সামনে থেকে সরে যাওয়া। রাসেল ভাইপার খুবই হিংস্র এদের থেকে বাঁচতে হলে সচেতন হতে হবে।

  • দোয়ারাবাজার টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে বৃক্ষরোপণ কর্মসূ-চি অনুষ্ঠিত

    দোয়ারাবাজার টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে বৃক্ষরোপণ কর্মসূ-চি অনুষ্ঠিত

    দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার কৃষি ব্যাংক এর উদ্যোগে দোয়ারাবাজার টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচির আওতায় কলেজ ক্যাম্পাসে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। পরিবেশ রক্ষা ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখার লক্ষ্যে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

    বুধবার (৬ আগষ্ট) সকালে দোয়ারাবাজার টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন কালে উপস্থিত ছিলেন, দোয়ারাবাজার কৃষি ব্যাংক ব্যবস্থাপক (ম্যানাজার) মো. শহিদুল্লা,
    দোয়ারাবাজার টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এর শিক্ষক মো. রসুল আমিন,ইন্সট্রাক্টর (গণিত),কৌশিক বনিক্,ইন্সট্রাক্টর (বাংলা),মো. মাহফুজুর রহমান,ইন্সট্রাক্টর (পদার্থ), হাদিউজ্জামান রতন,জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর(এপারেল),মো. মোজাহিদুল ইসলাম, জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর (আইটি), আব্দুল্লাহ আল -নুমান,জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর(আইটি),নূরনবী মিয়া রানা,জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর (এপারেল) দোয়ারাবাজার কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তা সুমন মিয়া, সেন্টু মান্দা প্রমুখ। বৃক্ষরোপণ শেষে একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনার মাধ্যমে কর্মসূচির সমাপ্তি হয়।

  • মসজিদ,  মাদ্রাসা,  সমাজ সংস্কারক ১০৭ বছর বয়সী কামাল উদ্দীনের  ই-ন্তেকাল ও দা-ফন সম্পন্ন

    মসজিদ, মাদ্রাসা, সমাজ সংস্কারক ১০৭ বছর বয়সী কামাল উদ্দীনের ই-ন্তেকাল ও দা-ফন সম্পন্ন

    নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী।। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মহিশালবাড়ী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সিনিয়র সাংবাদিক, কলামিস্টদ মোঃ হায়দার আলী দাদা শশুর, হরেজ মাষ্টার, আজমাল হোসেনের বাবা কামাল উদ্দীন ( ১০৭) ৫ আগষ্ট, দিবাগত মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩ টার সময় ইন্তেকাল করেছেন। ( ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন)।
    চাঁপাই জেলার সদর উপজেলার আলিনগর নিজ বাসভবনে তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তিনি ৫ ছেলে, ৩ মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। কিছুদিন পূর্বে ২ মেয়ে ইন্তেকাল করেছেন।

    সকাল ১১ টা ৩০ মিনিটের সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার
    খালঘাট গোরস্থানে নামাজের জানাজা শেষে দাফন করা হয়। মরহুমের নামাজের জানাজায় ইমামতি করেন ৩য়. ছেলে মোঃ বাবর আলী। মরহুম কামাল উদ্দীন মসজিদ, মাদ্রাসা, সমাজ সংস্কারক হিসেবে পরিচিত ছিলেন, ধার্মিক, নামাজ ও ইসলামের পথে সবাই আহ্বান করতেন। তার জানাজায় গণমানুষের উপস্থিতি প্রমান করে তিনি কতটা ভাল মানুষ ছিলেন। সবচেয়ে বয়স্ক মানুষটির মৃত্যুর খবরে এলাকার আশে পাশের বাতাস ভারী হয়ে উঠে, কে কাকে শান্তনা দিবে যেন ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন।

    বড় ছেলে হরেজ আলী মাষ্টার ও ছোট ছেলে মেহেদী জানান, ১০৭ বছর বয়সে আমাদের বাবা তেমন কোন ঔষুধ গ্রহন করে নি। ঠিকভাবে চলা ফেরা, করতেন, কোন প্রকার অসুবিধা হতো না। খাওয়া দাওয়া করতেন কোন অসুখ ছিল না। জলকর, পুকুর, মাছের ব্যবসা করতেন। ভারত ও দেশের অনেক লোক আমার আব্বাকে চিনতেন। ব্যবসার কারনে বাড়ী আসতেন তিনিও তাদের বাড়ীতে যেতেন। মা নিগারজান বেগম ২০০২ ইং সালে মারা জান। আমরা ৫ ভাই ও ৫ বোনসহ আত্নীয়স্বজন বাবার বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছিলাম। বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করতে কোন সময় রাজি হন নি। বাবা সব সময় বলতেন, আমার সাথে আমার মায়ের দোয়া আছে। আল্লাহ আমাকে সুস্থ্য রেখেছেন, ছেলে মেয়েসহ সবাই আমার সে, খাবার দেয়া, সেবা যত্ন করছেন দ্বিতীয় বিয়ের প্রয়োজন নেই। ছোট আবস্থায় গ্রামে কলেরা হয়েছিল, তিনিও কলেরায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। ওই সময় অনেক লোক মারা গিয়েছিল, কামাল উদ্দীনের মা আল্লাহর নিকট প্রার্থানা আল্লাহ আমার প্রাণের বিনিময়ে আমার ছেলেকে সুস্থতা দান করুন। বিধাতার লিখন না যায় খন্ডন। আল্লাহ মায়ের দোয়া কবুল করে নিয়ে মাকে পৃথিবী থেকে তুলে নিয়ে ছেলে কামাল উদ্দীনকে সুস্থতা দান করেছিলেন। এটাই মা ছেলে ভালবাসা। আল্লাহ সব কিছু করতে পারেন। সবার নিকট আব্বার জন্য একটায় চাও দোয়া যেন আব্বকে আল্লাহ জান্নাতবাসী করেন।

    মোঃ হায়দার আলী
    নিজস্ব প্রতিবেদক,
    রাজশাহী।

  • নড়াইলে শিশু নু-সরাত হ-ত্যা মা-মলায় সৎ মায়ের যা-বজ্জীবন কা-রাদণ্ড

    নড়াইলে শিশু নু-সরাত হ-ত্যা মা-মলায় সৎ মায়ের যা-বজ্জীবন কা-রাদণ্ড

    উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে:

    নড়াইলে শিশু নুসরাত হত্যা মামলায় সৎ মায়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
    নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় তিন বছরের শিশু নুসরাত জাহান রোজা হত্যার ঘটনায় সৎ মা জোবাইদা বেগমকে (২০) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
    উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে জানান,
    বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুরে নড়াইল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শারমিন নিগার এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি জোবাইদা বেগম আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
    নড়াইল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট আজিজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
    দণ্ডপ্রাপ্ত জোবাইদা বেগম লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের গিলাতলা গ্রামের সজীব কাজীর স্ত্রী।
    আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে মামলার বাদী আবুল খায়ের কাজীর ছেলে সজীব কাজীর সঙ্গে তার প্রথম স্ত্রী রুপা খাতুনের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের পর সজীবের দুই সন্তান; পাঁচ বছর বয়সী ছেলে ইয়াসিন ও তিন বছর বয়সী মেয়ে নুসরাত জাহান রোজা; দাদার (আবুল খায়ের) সঙ্গে বসবাস করতে থাকে। পরবর্তীতে সন্তানদের কথা চিন্তা করে সজীব কাজী দ্বিতীয় বিয়ে করেন জোবাইদা বেগমকে।
    ঘটনার দিন ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে নুসরাতকে তার বড় ভাই ইয়াসিন মারধর করলে সে কান্না শুরু করে। এরপর সৎ মা জোবাইদা বেগম তাকে ঘরের একটি কক্ষে নিয়ে যান। শিশুটি কান্না থামাচ্ছিল না দেখে একপর্যায়ে জোবাইদা তার মুখ চেপে ধরেন, যার ফলে শ্বাসরোধে নুসরাতের মৃত্যু হয়। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর শিশুটিকে একটি কম্বল দিয়ে মুড়িয়ে শ্বশুর মো. খায়ের কাজীর ঘরের বারান্দার খাটে রেখে দেন তিনি।
    পরে দাদা খায়ের কাজী বাড়িতে ফিরে নুসরাতকে গোসল করাতে ডাকাডাকি করেন। কিন্তু তাকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে স্ত্রী পান্না বেগমকে বিষয়টি জানান। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে পান্না বেগম জোবাইদাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, নুসরাত বারান্দায় ঘুমাচ্ছে। সেখানে গিয়ে দাদী শিশুটিকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। পরে পরিবারের সদস্যরা পুলিশে খবর দেয়।
    খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে প্রথমে লোহাগড়া থানায় এবং পরে ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ওই দিনই সজীব কাজী ও জোবাইদা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ। তবে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না থাকায় সজীব কাজীকে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।
    এ ঘটনায় পরদিন নিহত শিশুর দাদা মো. খায়ের কাজী লোহাগড়া থানায় জোবাইদা বেগমকে একমাত্র
    আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে বুধবার দুপুরে আদালত মামলার রায় ঘোষণা করেন।

    উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে।

  • রাজশাহীর হু-ন্ডি মু-কুল কক্সবাজারে গ্রে-ফতার

    রাজশাহীর হু-ন্ডি মু-কুল কক্সবাজারে গ্রে-ফতার

    নিজস্ব প্রতিবরদক, রাজশাহীঁঃ গত বছরের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রাজশাহীতে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার একাধিক মামলায় আসামী হয়ে দীর্ঘদিন থেকে আত্মগোপনে ছিলেন হুন্ডি মুকুল নামে পরিচিত ব্যবসায়ী মোখলেসুর রহমান মুকুল। বুধবার (৬ আগস্ট) ভোর ছয়টার দিকে কক্সবাজারের সুগন্ধা বিচ পয়েন্ট থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

    কক্সবাজার সদর থানার ওসিইলিয়াস খান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

    রাজশাহী নগরীর কাঁঠালবাড়িয়া গোবিন্দপুর মহল্লার বাসিন্দা মুকুলের নামে ২০১৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তৎকালীন পুলিশ প্রধানের কাছে পাঠানো প্রতিবেদনে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাচারের তালিকায় রাজশাহীর মূল হোতা হিসেবে মুকুলের নাম ২ নম্বরে ছিল।

    এক দশক আগেও পাড়ায় মুদিদোকান চালাতেন মুকুল। এখন তিনি হাজার কোটি টাকার মালিক। আওয়ামী লীগের আমলে তাকে আগলে রেখেছিলেন সাবেক সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ।

    মুকুল তার কালো টাকা সাদা করতে ঠিকাদারী ব্যবসায় নাম লিখিয়েছিলেন। গত কয়েক বছরে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রায় ৩০০ কোটি টাকার কাজ করেছেন তিনি। এছাড়া সাবেক এমপি আসাদকে গাড়ি উপহার দিয়ে বাগিয়ে নিয়েছিলেন গোদাগাড়ী উপজেলার একটি বালুমহাল।

    আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও এবার বালুমহালটি ইজারা পেয়েছেন মুকুল। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় ডিসি অফিসে গিয়ে বালুমহাল ইজারার চুক্তিপত্রে স্বাক্ষরও করেছিলেন। বিষয়টি জানাজানি হলে সে সময় রাজশাহীতে বিক্ষোভও হয়েছিল।

    মোঃ হায়দার আলী
    নিজস্ব প্রতিবেদক,
    রাজশাহী।