Blog

  • বিগত ২৯ বছরে যে সকল সাংবাদিক হ-ত্যার শি-কার হয়েছে তাদের স্মৃ-তির প্রতি শ্র-দ্ধা

    বিগত ২৯ বছরে যে সকল সাংবাদিক হ-ত্যার শি-কার হয়েছে তাদের স্মৃ-তির প্রতি শ্র-দ্ধা

    আরিফ রব্বানী,

    নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

    সাংবাদিকদের সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন সময়ের দাবী অভিলম্বে সাংবাদিক হত্যা নির্যাতন বন্ধ করতে হবে।
    বিগত ২৯ বছর অর্থাৎ ১৯৯৬ সাল থেকে এযাবৎ যে সকল সাংবাদিক হত্যার শিকার হয়েছে তাদের একটি খসড়া তালিকা প্রণয়ন শুরু করেছে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএমইউজে), নিম্নে বর্ণিত নিহত সাংবাদিক ছাড়াও যদি আরো কোন সাংবাদিক খুন গুম, নিখোঁজ হয়ে থাকে তাহলে সেই সকল সাংবাদিক এর নাম পরিচয় সহ আমাদেরকে তথ্য উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করার আহবান জানাচ্ছি।

    এসকল হত্যাকান্ডের অধিকাংশ ঘটনা নিরবে নিভৃতে বিচারহীনতায় পরিবার গুলো নিঃস্ব হয়েছে। আমরা বিএমইউজে সংগঠনের পক্ষ থেকে সকল নিহত সাংবাদিকদের সাংবাদিকতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। তাদের নামের তালিকা সংরক্ষণ করার উদ্যোগ নিয়েছেন বিএমইউজে।

    ১৯৯৬ সালের ৮ জুন সাতক্ষীরার পত্রদূত সম্পাদক শ ম আলাউদ্দীন খুন হন। এর দুই বছর পর ৩০ আগস্ট যশোরের দৈনিক রানার সম্পাদক সাইফুল আলম মুকুল খুন হন। ২০০০ সালের ১৬ জুলাই দৈনিক জনকণ্ঠের যশোর প্রতিনিধি শামছুর রহমান কেবলকে নিজ কার্যালয়ে সন্ত্রাসীরা হত্যা করে। ২০০২ সালের ২ মার্চ খুন করা হয় খুলনা থেকে প্রকাশিত দৈনিক পূর্বাঞ্চলের সিনিয়র রিপোর্টার হারুন অর রশিদকে।

    এর চার মাস পর খুন হন খুলনার অনির্বাণ পত্রিকার সাংবাদিক শুকুর হোসেন এবং আগস্টে শ্রীমঙ্গলে খুন হন দৈনিক পূবালী বার্তার সাংবাদিক সৈয়দ ফারুক আহমেদ। ২০০৪ সালের ১৫ জানুয়ারি খুলনা প্রেস ক্লাবের সামনে সন্ত্রাসীদের বোমা হামলায় নিহত হন দৈনিক সংবাদের খুলনা ব্যুরো প্রধান এবং প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি মানিক সাহা।

    একই বছরের ২ মার্চ কেরানীগঞ্জে দ্য নিউএজের সাংবাদিক আব্দুল লতিফ পাপ্পু নিহত হন। ওই বছরের ২৭ জুন নিজের অফিসে নিহত হন খুলনার দৈনিক জন্মভূমির সম্পাদক হুমায়ূন কবির বালু। ২২ আগস্ট চট্টগ্রামে খুন হন আজকের কাগজের সাংবাদিক কামাল হোসেন। এর দুই মাসের মাথায় অক্টোবরে বগুড়া থেকে প্রকাশিত দৈনিক দুর্জয় বাংলার নির্বাহী সম্পাদক দীপংকর চক্রবর্তী নিজ বাসায় নিহত হন।

    ওই বছরই খুন হন দৈনিক সংগ্রামের খুলনা প্রতিনিধি বেলাল হোসেন। ২০০৫-এর ২৯ মে কুমিল্লার দৈনিক মুক্তকণ্ঠের সাংবাদিক গোলাম মাহমুদ, ওই বছরের ৫ নভেম্বর দৈনিক সমকালের ফরিদপুর ব্যুরো চিফ গৌতম দাসকে হত্যা করা হয়।

    এ ছাড়া ২০১১ সালের ২৮ জানুয়ারি পল্টনের নিজ বাসায় খুন হন দৈনিক জনতার সহসম্পাদক ফরহাদ খাঁ ও তার স্ত্রী রহিমা খাতুন। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় এনটিভির ভিডিও এডিটর আতিকুল ইসলাম আতিক, জুলাই মাসে ঢাকার পাক্ষিক মুক্তমনের স্টাফ রিপোর্টার নুরুল ইসলাম ওরফে রানা, আগস্টে গাজীপুরে সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক সময়ের নির্বাহী সম্পাদক এমএম আহসান হাবিব বারি এবং ডিসেম্বরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সংবাদদাতা ও রূপগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সহসভাপতি আবুল হাসান আসিফ খুন হন।

    ২০১০ সালের ৯ মে গুপ্তহত্যার শিকার হন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলার সিনিয়র ক্যামেরাম্যান শফিকুল ইসলাম টুটুল। একই বছরের ২৮ এপ্রিল সাপ্তাহিক ২০০০-এর সিলেট প্রতিনিধি ফতেহ ওসমানী এবং ২৩ ডিসেম্বর প্রকাশ্যে খুন হন বরিশালের মুলাদী প্রেস ক্লাবের সভাপতি মনির হোসেন রাঢ়ী।

    ২০১১ সালের ৭ ডিসেম্বর গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে গলা কেটে হত্যা করা হয় দৈনিক ভোরের ডাকের গোবিন্দগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি ফরিদুল ইসলাম রঞ্জুকে। ওই বছরের এপ্রিলে চট্টগ্রামের পোর্টকলোনিতে দৈনিক আজকের প্রত্যাশার সাংবাদিক মাহবুব টুটুলকে হত্যা করা হয়। একই বছরের এপ্রিলে উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর সড়কে ১০ নম্বর বাসা থেকে সাপ্তাহিক বজ্রকণ্ঠের সাংবাদিক আলতাফ হোসেনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

    ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি নিজ বাসায় খুন হন মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনি। ওই ঘটনার পর সাংবাদিক সমাজ আন্দোলন চালিয়ে গেলেও এক যুগের বেশি সময় ধরেও মামলার তদন্ত শেষ করা হয়নি। ওই বছরের ১৫ জুন যশোরে খুন হন সাংবাদিক জামাল উদ্দিন।
    ২০১৪ সালের ২১ মে চুয়াডাঙ্গায় খুন হন দৈনিক মাথাভাঙা পত্রিকার সাংবাদিক সদরুল আলম নিপুল এবং ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে রংপুরে খুন হন যুগের আলো পত্রিকার সাংবাদিক মশিউর রহমান উৎস, ২০১৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে খুন করা হয় দৈনিক সমকালের প্রতিনিধি আবদুল হাকিম শিমুলকে। ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জে খুন হন দৈনিক বিজয় পত্রিকার সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন। পরের বছর ১৯ ফেব্রুয়ারি নোয়াখালীতে খুন হন বাংলাদেশ সমাচারের সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন মোজাক্কির।

    ২০২২ সালের এপ্রিলে দৈনিক কুমিল্লার ডাকের সাংবাদিক মহিউদ্দিন সরকার নাইম খুন হন। একই বছরের ৩ জুলাই নিখোঁজের পর লাশ মেলে কুষ্টিয়ার সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রুবেলের।

    সিরাজগঞ্জে নিহত সাংবাদিক আবদুল হাকিম শিমুলের স্ত্রী নুরুন্নাহার খাতুন বলেন, তার স্বামীর হত্যাকাণ্ডে জড়িত তৎকালীন পৌর মেয়র হালিমুল হক মিরুসহ তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার করা হলেও সবাই কারাগার থেকে বেরিয়ে গেছে। তিনি ৬ বছর ধরে অপেক্ষা করেও এখন পর্যন্ত স্বামী হত্যার বিচার পেলেন না। মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সাগর -রুনি, জামালপুরের নাদিম ও শেলু আকন্দ ও সর্বশেষ ৭ আগষ্ট -২৫ রাত ৮ টায় গাজীপুর চান্দনা চৌরাস্তা মসজিদ মার্কেটে সামনে খুন হয় সাংবাদিক আসাদুজ্জামা তুহিন তার বাড়ী ফুলবাড়িয়া উপজেলায়।

  • কুমিল্লা মহানগরের অধিকাংশ স-ড়ক এখন ম-রণফাঁদে পরিনত

    কুমিল্লা মহানগরের অধিকাংশ স-ড়ক এখন ম-রণফাঁদে পরিনত

    কুমিল্লা থেকে,তরিকুল ইসলাম তরুন,

    কুমিল্লা নগরীতে প্রবেশ পথের প্রধান সড়কগুলো যেন এখন মরণফাঁদে রূপ নিয়েছে। কান্দিরপাড়-আলেখারচর, টমছমব্রিজ-বাখরাবাদ, কান্দিরপাড়-ধর্মপুর এবং টমছমব্রিজ-কোটবাড়ি, 

    সড়কে জায়গায় জায়গায় বিশাল গর্ত, উঠে যাওয়া কার্পেটিং, ভাঙাচোরা পিচ ও জলাবদ্ধতা জনদুর্ভোগের নতুন নাম হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন হাজারো যাত্রী, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, অটোরিকশা ও ভারী যানবাহন এসব ঝুঁকিপূর্ণ পথে চলাচল করছে চরম ঝুঁকি নিয়ে। বৃষ্টির পানিতে গর্ত ঢেকে গিয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা আরও বাড়ছে। স্থানীয়রা বলছেন, এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর এমন করুণ দশা কর্তৃপক্ষের অবহেলারই প্রমাণ। দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন জনসাধারণ। যদিও বর্ষার দোহাই দিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সড়কগুলোর সংস্কার নিয়ে দায়সারা কথা বলছেন দৈনিক বাংলার  প্রতিবেদকের সঙ্গে। সরজমিনে ঘুরে  ভোগান্তির কথা তুলে ধরা হলো – 

    কান্দিরপাড়-আলেখচর সড়ক এখন মরণফাঁদ-

    কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় থেকে শহরতলীর শাসনগাছা হয়ে আলেখারচর বিশ্বরোডের অন্তত এক কিলোমিটার জুড়ে বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত, উঠে যাওয়া পিচ ঢালাই, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পাথর সব মিলিয়ে সড়ক নয়, যেন মরণফাঁদে রূপ নিয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন গণপরিবহনের চালক ও যাত্রীরা। মাঝেমধ্যে ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনাও। অথচ এই সড়কটি নগরের অন্যতম ব্যস্ততম সড়ক। এখানে রয়েছে কুমিল্লা নগরের বৃহত্তম বাসস্ট্যান্ড ‘শাসনগাছা বাস স্ট্যান্ড’। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ঢাকা চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রায় হাজার হাজার মানুষের চলাচল৷ 

    স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, কুমিল্লা নগরে প্রবেশের অন্যতম এই ব্যস্ত সড়কটির কথা ভুলেই গিয়েছেন প্রশাসন। দীর্ঘদিন ধরে এই গর্তগুলো সড়কে ভোগান্তি ও দুর্ঘটনার সৃষ্টি করছে। এক সময় গর্তগুলো ছোট ছোট থাকলেও এখন সেগুলো এখন বড় হয়ে রূপ নিয়েছে মরণফাঁদে,

    দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় সড়কের সর্বত্র সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ। বর্ষার পানিতে সেই ক্ষত আরও বেড়ে ভয়াবহ রূপ নেয়। পানিতে গর্তগুলো ঢেকে যাওয়ায় না বুঝে গাড়ি সেখান দিয়ে চলাচল করলেই ঘটে দূর্ঘটনা।

    বুধবার সকালে  সরেজমিনে কুমিল্লা নগরী থেকে শহরতলীর শাসনগাছা হয়ে দুর্গাপুর এলাকার দিঘীরপাড় বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারটির প্রবেশমুখেই সড়কের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্তই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা,

     দুরবস্থার কারণে চালকরা গর্ত এড়িয়ে এঁকেবেঁকে গাড়ি চালাতে বাধ্য হচ্ছেন। এছাড়াও, গর্ত থাকায় হেলে দুলে চলছে গাড়িগুলো। এতে গাড়ির ভিতরে থাকা যাত্রীরা পোহাচ্ছেন ভোগান্তি। রোগী বহনের ক্ষেত্রেও এই সড়ক প্রায় অচল। অথচ এটি কুমিল্লার উত্তরাঞ্চলের প্রায় ৩০ লাখ মানুষের অন্যতম যোগাযোগপথ।

    এই সড়কের সবচেয়ে খারাপ অবস্থা পাসপোর্ট অফিস পার হয়ে ওষুধ মার্কেট এলাকা, শাসনগাছা ফ্লাইওভারের দুই পাশে, দুর্গাপুর দিঘিরপার বাজার ও আলেখারচর এলাকায়। প্রতিদিন গড়ে এক হাজারের বেশি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, শত শত বাস, ট্রাক, পণ্যবাহী গাড়ি ও তেলের লরি এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

    যাত্রীদের অভিযোগ, এত গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ না নেওয়ায় বর্ষায় তা মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এতে কর্মজীবীদের কর্মস্থলে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

    এই সড়ক দিয়ে চলাচলে ভোগান্তির শিকার হওয়া অন্তত পাঁচজন পথচারী এই প্রতিবেদককে ক্ষুদ্ধ হয়ে বলেন, বড় যানবাহন কষ্ট করে চললেও অটোরিকশা নিয়ে চলা প্রায় অসম্ভব। অধিকাংশ সময় অটোরিকশা হেলে পড়ে, এতে যাত্রীরা আহত হন। কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। মালামাল নিয়ে যাতায়াত এখন অনেকটাই অসম্ভব। এগুলো দেখার কি কেউ নেই। 

    স্থানীয়দের দাবি, যাত্রী ও যানবাহনের নিরাপত্তার স্বার্থে দ্রুত সড়কটির সংস্কার করা  এই সড়ক দিয়ে চলাচলত যাত্রীদের মনে হয় ‘ভোগান্তির আরেক নাম টমসমব্রীজ-বাখরাবাদ সড়ক। বড় বড় গর্তে জমে থাকা পানি দেখে মনে হয় সড়ক নয়, যেন জলাশয়। প্রতিদিন অসংখ্য অ্যাম্বুলেন্স, রোগীবাহী যান, পোশাককর্মী ও শিক্ষার্থী এ পথে চলাচল করেন। পথে রয়েছে ইবনে তাইমিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ইপিজেড, পিবিআই, সদর উপজেলা পরিষদ, বাখরাবাদ গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড,সহ বহু সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এই সড়ককে নগরীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও বলা চলে।

    এই সড়কে কাজ শুরু হয়েছে এমন আশার দৃশ্য সিটি কর্পোরেশন থেকে দেখানো হলেও বর্ষার দোহাই দিয়ে সেটিও বন্ধ হয়েছে বেশ কিছুদিন আগে। এতে খানাখন্দ যেন আরো বেড়ে গিয়েছে। যদিও সিটি কর্পোরেশন বলছে আগের তুলনায় এই সড়ক অনেক বেশি চলাচল উপযোগী হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। 

    বুধবার সকালে সরেজমিনে এই সড়কে গিয়ে দেখা যায়, কুমিল্লা ইবনে তাইমিয়া স্কুল এন্ড কলেজের সামনে থেকে শুরু হয়ে ইপিজেড ১ নং গেইট পর্যন্ত সড়ক যেন দাঁড়িয়েছে মরণফাঁদ হয়ে। এই সড়ক দিয়ে গাড়িগুলো চলছে একপ্রকার বাধ্য হয়ে। বড় বড় গর্তে পড়ে মাঝে মাঝে বন্ধ হয়ে যায় গাড়ির ইঞ্জিন। এতে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। এছাড়াও রোগীবাহী এম্বুলেন্স সাইরেন বাজিয়েও সঠিক সময়ে রোগী নিয়ে পৌঁছাতে পারেন না মেডিকেলের জরুরী বিভাগের সামনে। এতে অনেক সময় রোগীর জীবনের ঝুঁকির কারণও হয়ে দাঁড়ায়। 

    টমসমব্রীজ-মেডিকেল সড়কে প্রতিদিন চলাচল করা অন্তত ১০ জন যাত্রী এই প্রতিবেদককে বলেন, এই সড়কে রোগী নিয়ে গেলে গর্তে ধাক্কা খেয়ে অনেক সময় রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। বৃষ্টির সময় তো গর্ত দেখা যায় না, তখন দুর্ঘটনার ঝুঁকি দ্বিগুণ। পানি ময়লা, আবার সড়ক পিচ্ছিল। এতে যাত্রীদের অনেক সময় পড়ে যাওয়ারও ভয় থাকে। এই সড়ক দিয়ে মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে রোগী আসলে রোগীর সাথে যারা আসে তারাও অসুস্থ হয়ে যায়। দ্রুত এই সড়ক পূর্ণাঙ্গ সংস্কার প্রয়োজন।

    হেলে দুলে গাড়ি চলছে নগরীর কান্দিরপাড়-ধর্মপুর সড়কে-

    দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে ভোগান্তী চরমে  কুমিল্লা নগরীর প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড় থেকে রাণীর বাজার হয়ে ধর্মপুর সড়ক। নগর বাসীর দাবি দ্রুত সড়ক গুলো মেরামত করা হোক, এবং অবৈধ দখল, পার্কিং,অবৈধ

  • ২৬ বছর ধরে এমপিও বঞ্চি-ত সলঙ্গা মহিলা ক-লেজ

    ২৬ বছর ধরে এমপিও বঞ্চি-ত সলঙ্গা মহিলা ক-লেজ

    এম এ সালাম,
    সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি :
    ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সুতিকাগার সিরাজগঞ্জ সলঙ্গা থানা সদরের প্রাণকেন্দ্রে দাঁড়িয়ে আছে একটি স্বপ্ন “সলঙ্গা মহিলা কলেজ”।১৯৯৯ সালে কতিপয় বিদ্যানুরাগীর হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজটি নারীদের জন্য উচ্চশিক্ষার আশার প্রদীপ।আজ সেই প্রদীপ এখনও জ্বলছে,কিন্তু শিখা যেন ধুঁকছে অভাবের হাওয়ায়।
    ২৫ জন শিক্ষক ও কর্মচারী আর প্রায় ৩০০ জন ছাত্রী নিয়ে ২৬ বছরের দীর্ঘ পথ পেরিয়েছে কলেজটি। এ পর্যন্ত ২৪টি ব্যাচ বের হয়েছে, ফলাফলও ছিল সন্তোষজনক।অথচ বাস্তবতা হলো এখনো পর্যন্ত কলেজটি এমপিওভুক্ত হয়নি। ২০১৩ সাল থেকে শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের ন্যায্য দাবী চালিয়ে যাচ্ছেন,কিন্তু প্রতিশ্রুতির আলো জ্বলেনি।
    ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. মমিনুল ইসলাম ক্ষোভ ও কষ্ট মিলিয়ে বলেন, এমপিও ভুক্তির জন্য দুইবার আবেদন করেছি,কিন্তু কোনো উত্তর মেলেনি। এমপিওভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষক-কর্মচারীরা মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। অনেকেই অন্য চাকরির সুযোগ হারাচ্ছেন,শূন্যপদে নিয়োগ বন্ধ হয়ে গেছে।অথচ আমরা জানি এই লড়াই ন্যায্য, তাই আমরা থামবো না।শিক্ষকদের কেউ কেউ জানালেন, মাসের পর মাস বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। তবুও তারা ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ গড়তে প্রতিদিন ক্লাসে আসেন,যেন দুঃখ-কষ্ট ভুলে গিয়ে শুধু পড়াতে পারেন।নারী শিক্ষার প্রাণকেন্দ্র সলঙ্গা মহিলা কলেজ শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, এটি আমাদের মেয়েদের মুক্তির সিঁড়ি।এই প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে এলাকার নারী শিক্ষার বড় ক্ষতি হবে।”
    ২৬ বছরের পুরনো একটি স্বপ্ন এখন সরকারের একটিমাত্র স্বাক্ষরের অপেক্ষায়। শিক্ষকদের চোখের পানি নিয়ে আশা করছেন,হয়তো কোন একদিন সেই কাগজে স্বাক্ষর হবে,আর সেদিন তারা বলবেন, “অবশেষে আমাদের লড়াই সফল হলো”।
    স্থানীয়দের দাবি অতিদ্রুত কলেজটি এমপিওভুক্ত করে শিক্ষার মান বৃদ্ধি করা হোক।

  • পঞ্চগড় ঘাগড়া সী-মান্ত দিয়ে নারী-শিশুসহ আরও ২৩ জনকে পুশ-ইন

    পঞ্চগড় ঘাগড়া সী-মান্ত দিয়ে নারী-শিশুসহ আরও ২৩ জনকে পুশ-ইন

    পঞ্চগড় প্রতিনিধি।।

    পঞ্চগড়ের ঘাগড়া সীমান্ত দিয়ে নারী, শিশুসহ আরও ২৩ জনকে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রাতে নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের আওতাধীন উপজেলা সদরের হাড়িভাসা ইউনিয়নের ঘাগড়া সীমান্তের মেইন পিলার ৭৫৭ এর ২ নং সাব পিলার এলাকা দিয়ে তাদের পুশইন করে বিএসএফ। পরে আটকদের সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে বিজিবি। 

    বিজিবি ও পুলিশ জানায়, বুধবার সকালে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে স্থানীয়রা তাদের আটক করে হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যান। খবর পেয়ে বিজিবি তাদের আটক করে ঘাগড়া সীমান্ত ফাঁড়ির ক্যাম্পে নিয়ে যায়। এদের মধ্যে ১৩ জন নারী, ৯ জন পুরুষ ও একজন শিশু। তারা যশোর, সাতক্ষীরা, লালমনিরহাট ও নড়াইল জেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে।

    সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ হিল জামান বলেন, পুশইন সংক্রান্ত আটক ২৩ জনকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগসহ পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে। বাংলাদেশি পরিচয় নিশ্চিত হলে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

    তারেক ও মাসুদ-মিশুক মুনীরের মৃত্যুবার্ষিকীতারেক ও মাসুদ-মিশুক মুনীরের মৃত্যুবার্ষিকী

    এর আগে তিন মাসে ১১ দফায় পঞ্চগড়ের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে নারী, শিশুসহ ১৬৬ জনকে জোর করে বাংলাদেশে পাঠায় বিএসএফ।

  • থানচিতে বালিকা ফুটবল টুর্নামেন্ট শুভ উ-দ্বোধন

    থানচিতে বালিকা ফুটবল টুর্নামেন্ট শুভ উ-দ্বোধন

    থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি: মথি ত্রিপুরা।

    বান্দরবানের থানচিতে উপজেলা পর্যায়ে স্কুল ভিত্তিক বালিকা ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে।
    বুধবার বিকেল ৪ ঘটিকায় উপজেলা মিনি স্টেডিয়ামে বলিপাড়া নারী কল্যাণ সমিতি (বিএনকেএস) আয়োজনে, ডিয়াকোনিয়া বাংলাদেশ সহযোগীতায়, উপজেলা পর্যায়ে স্কুল ভিত্তিক বালিকা ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়।
    বালিকা ফুটবল টুর্নামেন্ট শুভ উদ্বোধন করেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ–ফয়সাল। উদ্বোধনী খেলায় অংশগ্রহণ করেন, সেন্ট ফ্রান্সিস উচ্চ বিদ্যালয় বনাম থানচি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। খেলার পরিচালনায় প্রধান রেফারি দায়িত্ব পালন করেন, মংপ্রু মারমা, সহযোগী রেফারি পলাশ মল্লিক ও উথোয়াইন শুয়ে মারমা।
    এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, থানচি থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ নাসির উদ্দিন মজুমদার, থানচি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূর মোহাম্মদ, থানচি প্রেসক্লাবের সভাপতি মংবোওয়াংচিং মারমা অনুপম, বিএনকেএস এনজিও উপ পরিচালক উবানু মারমা ও উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার মোঃ নিজাম উদ্দিন প্রমুখ।
    উদ্বোধনী খেলায় ৬০ মিনিট খেলার শেষে সোন্ট ফ্রান্সিস উচ্চ বিদ্যালয়কে ০-৪ খোলে ব্যবধানে হারিয়ে থানচি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় জয়লাভ করে। একই সাথে ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে দলটি।
    উল্লেখ্য, উপজেলা পর্যায়ে স্কুল ভিত্তিক বালিকা ফুটবল টুর্নামেন্টের মোট ৪টি দল অংশগ্রহণ করেন। আগামীকাল থানচি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় বনাম বলিপাড়া বাজার উচ্চ বিদ্যালয় বিকেল ৪ ঘটিকায় খেলার অনুষ্ঠিত হবে।

  • মোংলা উপজেলা পানি ক-মিটি গঠন – নূর আলম সভাপতি মনীন্দ্র সম্পাদক

    মোংলা উপজেলা পানি ক-মিটি গঠন – নূর আলম সভাপতি মনীন্দ্র সম্পাদক

    বায়জিদ হোসেন, মোংলাঃ বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা উত্তরণ এর উদ্যেগে ফিশনেট প্রকল্পের আওতায় বাগেরহাট জেলার মোংলা উপজেলায় ‘উপজেলা পানি কমিটি’ গঠন করা হয়। বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা উত্তরণ’র বাস্তবায়নে ইউকে ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের আর্থিক সহযোগীতায় ১৩ আগষ্ট বুধবার সকালে মোংলা উপজেলা কৃষি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে এই পানি কমিটি গঠন করা হয়।
    বুধবার সকাল ১১টায় পরিবেশযোদ্ধা মোঃ নূর আলম শেখ’র সভাপতিত্বে কমিটি গঠন সভায় প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন ফিসনেট প্রকল্প ব্যবস্থাপক বিলকিস খাতুন। এসময়ে উপজেলা পানি কমিটি গঠনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন ফিসনেট প্রকল্প ‘উত্তরণ’ এর এডভোকেসি অফিসার মো: মিজানুর রহমান । তিনি বলেন ‘উত্তরণ’ এর পানি কমিটি একটি সামাজিক সংগঠন। ১৯৮০ সালে প্রথম পানি কমিটি গঠিত হয় এবং জলাবদ্ধতা দূর করার আন্দোলন ও সরকারের সাথে পরামর্শ করে আসেছে। তিনি পানি কমিটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি সভায় পানি কমিটির গঠনতন্ত্র উপস্থাপন করেন। এরপর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটি গঠন করা হয়। আলাপ আলোচনা ও প্রস্তাবনার মাধ্যমে ২২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠিত হয়। কমিটি হলো- সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বিশিষ্ট পরিবেশবাদী কর্মী, সাংবাদিক ও মোংলা উপজেলা পরিষদ এর সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান মোঃ নুর আলম শেখ। সহ-সভাপতি- আঃ মালেক হাওলাদার ও শিখা হালদার, সম্পাদক-মনিন্দনাথ রায়, যুগ্ম-সম্পাদক-মিতালী মন্ডল, সাংগঠনিক সম্পাদক-মোঃ নাজমুল হক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক- মোঃ নান্টু গাজী। দপ্তর সম্পাদক-মেহেদী হাসান। কমিটির অন্যান্য সদস্যগণ হলেন- এ্যড. সার্বভৌম রায়, মোঃ বায়জিদ হোসেন, ওয়াশিংটন হালদার, মিরা রায়, দুলালী সরদার, আঃ রশিদ হাওলাদার, কনিকা মন্ডল, ফাতেমা জান্নাত, ফারজানা খাতুন, অসীমা বিশ্বাস, বৃষ্টি সরকার, মাসুদা আক্তার, ইয়াসমিন বেগম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উত্তরণ ফিসনেট প্রকল্পের এরিয়া ম্যানেজার মোঃ মোখলেুর রহমান কামাল।

  • প্রথিতযশা সাংবাদিক গোলাম সারওয়ার’র মৃ-ত্যুবার্ষিকীতে বানারীপাড়ায় দো-য়া মো-নাজাত

    প্রথিতযশা সাংবাদিক গোলাম সারওয়ার’র মৃ-ত্যুবার্ষিকীতে বানারীপাড়ায় দো-য়া মো-নাজাত

    আব্দুল আউয়াল
    বানারীপাড়া(বরিশাল)প্রতিনিধি: 

    বরিশালের বানারীপাড়ায় একুশে পদক প্রাপ্ত দৈনিক সমকাল ও যুগান্তরের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক প্রয়াত গোলাম সারওয়ারের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বানারীপাড়ায় পারিবারিকভাবে দোয়া মোনাজাতের আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষে বানারীপাড়ার বেগম ফজিলাতুন্নেছা এতিমখানা ও বানারীপাড়া এতিমখানায় কোরানখানী ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া মোনাজাত শেষে ওই দুই এতিমখানায় এতিমদের মাঝে দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। দোয়ায় অংশ নেন গোলাম সারওয়ারের মেঝ ভাই বানারীপাড়া সাবেক পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম সালেহ্ মঞ্জু মোল্লা ও মহসীন আকন নান্টু, গোলাম সারওয়ারের ভাতিজা গোলাম কিবরিয়া সৈকত, আজকের পত্রিকা বানারীপাড়া প্রতিনিধি সাংবাদিক আব্দুল আউয়াল অন্যান্য আরো উপস্থিত ছিলেন মোঃ মিন্টু, রাহাত হোসেন, হৃদয় প্রমুখ।

    প্রসঙ্গত গোলাম সারওয়ার ১৩ আগস্ট ২০১৮ সালের এই দিনে ৭৫ বছর বয়সে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ।গোলাম সারওয়ার ষাটের দশকে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। তখন থেকে টানা পাঁচ দশকের বেশি সময় তিনি এ পেশায় মেধা, যুক্তিবোধ, পেশাদারিত্ব, দায়িত্বশীলতা, অসাম্প্রদায়িক চিন্তা-চেতনার নিরবচ্ছিন্ন চর্চার মাধ্যমে নিজেকে এবং বাংলাদেশের সংবাদপত্রকে অনন্য উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত করেন। মরহুম গোলাম কুদ্দুস মোল্লা ও মরহুম সিতারা বেগমের জ্যেষ্ঠ সন্তান গোলাম সারওয়ার বাংলাদেশের মুক্তচিন্তা, প্রগতিশীল মূল্যবোধ আর মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে আজীবন সোচ্চার ছিলেন।
    দেশের সাংবাদিকতায় প্রতিষ্ঠানতুল্য ব্যক্তিত্ব গোলাম সারওয়ার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতক সম্মানসহ এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। ঢাবিতে ছাত্র অবস্থায় ১৯৬২ সালে চট্টগ্রামের দৈনিক আজাদীর বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা হিসেবে সাংবাদিকতা পেশায় তাঁর অভিষেক। একই বছর দৈনিক সংবাদের সহ-সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন তিনি। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পর্যন্ত সংবাদে কর্মরত ছিলেন। এরপর মহান মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধে তিনি নিজ এলাকা বরিশালের বানারীপাড়ায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।মুক্তিযুদ্ধের পর কয়েক মাস বানারীপাড়া ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশনে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭২ সালে দৈনিক ইত্তেফাকে জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক হিসেবে যুক্ত হন। ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত যথাক্রমে প্রধান সহ-সম্পাদক, যুগ্ম বার্তা সম্পাদক ও বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। গোলাম সারওয়ার দৈনিক যুগান্তরেরও প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক।দেশের দৈনিক সংবাদপত্রগুলোর সম্পাদকদের প্রভাবশালী সংগঠন বাংলাদেশ সম্পাদক পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন গোলাম সারওয়ার। মেধা, নিষ্ঠা ও দক্ষতায় উৎকর্ষের কারণে গোলাম সারওয়ারকে অনেকেই ‘সাংবাদিকদের শিক্ষক’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি ছিলেন এ দেশের সংবাদপত্রে সাফল্য ও পেশাদারিত্বের প্রতীক।

    সৃজনশীল সাহিত্যেও ছিল তাঁর সাবলীল বিচরণ। তিনি ছিলেন একজন দক্ষ ছড়াকার। তাঁর লেখা বইয়ের মধ্যে রঙিন বেলুন, সম্পাদকের জবানবন্দি, অমিয় গরল, আমার যত কথা এবং স্বপ্ন বেঁচে থাক উল্লেখযোগ্য।

    সাংবাদিকতায় অনন্য ভূমিকার জন্য ২০১৪ সালে একুশে পদক, ২০১৬ সালে কালচারাল জার্নালিস্টস ফোরাম অব বাংলাদেশের (সিজেএফবি) আজীবন সম্মাননা ও ২০১৭ সালে আতাউস সামাদ স্মারক ট্রাস্ট আজীবন সম্মাননা লাভ করেন তিনি।

    আব্দুল আউয়াল
    বানারীপাড়া(বরিশাল)প্রতিনিধি।।

     

  • বানারীপাড়ায়  জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যু-ব দিবস উদযাপন

    বানারীপাড়ায়  জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যু-ব দিবস উদযাপন

    মোঘল সুমন শাফকাত, বানারীপাড়া। 

    প্রযুক্তি নির্ভর যুবশক্তি, বহুপাক্ষিক অংশীদারত্বে অগ্রগতি” এমন প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বানারীপাড়ায়  জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুব দিবস উদযাপন উপলক্ষে রেলি ও আলোচনা সভা এবং  যুব ঋণের চেক বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১২ আগস্ট মঙ্গলবার সকাল ১০টায় উপজেলা চত্বরে রেলি শেষে উপজেলা মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা যুব উন্নয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা  আঃ রহমান সন্যমতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ বায়েজিদুর রহমান। উপজেলা সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন শাহিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন 

    উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহ্ আলম মিঞা,সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ মৃধা,থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোস্তফা, পৌর বিএনপি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম, উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মোকাম্মেল হোসেন মোজাম্মেল, পৌর জামায়াতের আমির মোঃ কাওসার হোসেন,প্রেসক্লাবের সভাপতি ইলিয়াস শেখ, সিনিয়র সাংবাদিক সাইদুল ইসলাম। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল মল্লিক, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল আলম মিঠু, 
    প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঘল সুমন শাফকাত  (শুভ), সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ পলাশ, সাংবাদিক জাকির হোসেন প্রমূখ। আলোচনা সভায় বক্তারা যুবসমাজের উন্নয়ন, দক্ষতা বৃদ্ধি ও জাতি গঠনে তাদের ভূমিকা সহ তরুণ প্রজন্মকে শিক্ষা, সততা ও দেশপ্রেমের মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়নে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

  • ইন্দোনেশিয়া থেকে রামপাল তাপ বি-দ্যুৎ কেন্দ্রের ক-য়লা  নি-য়ে মোংলা বন্দরে ভি-ড়েছে এম,ভি রয়েল ইমেজ

    ইন্দোনেশিয়া থেকে রামপাল তাপ বি-দ্যুৎ কেন্দ্রের ক-য়লা নি-য়ে মোংলা বন্দরে ভি-ড়েছে এম,ভি রয়েল ইমেজ

    মোংলা প্রতিনিধি
    মোংলা বন্দরে ভিড়েছে ইন্দোনেশিয়া থেকে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা নিয়ে বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজ এম,ভি রয়েল ইমেজ। জাহাজটি মঙ্গলবার বিকেলে বন্দরের পশুর চ্যানেলের হাড়বাড়ীয়ায় ভিড়ে। এরপর বিকেলেই শুরু হয় জাহাজটি হতে কয়লা খালাস ও পরিবহনের কাজ।

    জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট টগি শিপিং লাইন্স’র ম্যানেজার (অপারেশন) হুসাইন ইমাম জানান, ইন্দোনেশিয়া থেকে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ২৮ হাজার ৪শ মেট্টিক টন কয়লা নিয়ে এম,ভি রয়েল ইমেজ নামক জাহাজটি মঙ্গলবার বিকেলে মোংলা বন্দরের হাড়বাড়ীয়ার ১১ নম্বর নোঙ্গর করে। বিকেল থেকেই জাহাজটি হতে কয়লা খালাসের কাজ শুরু হয়। খালাসকৃত কয়লা লাইটারে (কার্গো জাহাজ) করে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে নেয়া হচ্ছে। এ লাইটার জাহাজ রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে ভিড়ার পর সেখানকার স্বয়ংক্রিয় বেল্টের মাধ্যমে তা সংরক্ষণ করা হচ্ছে কেন্দ্রের স্টোরে।

  • ব-জ্রাপাত থেকে র-ক্ষা পেতে  তালগাছসহ উচ্চু বৃক্ষ রোপনের বি-কল্প নেই

    ব-জ্রাপাত থেকে র-ক্ষা পেতে তালগাছসহ উচ্চু বৃক্ষ রোপনের বি-কল্প নেই

    লেখকঃ মো: হায়দার আলীঃ তালগাছ সম্ভাবত দেশের সবচেয়ে উচ্চু গাছ। তাল গাছ ও তালের উপকারের কথা লিখার চেষ্টা করবো। তালগাছ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে, আকাশের বাজ/ বিদ্যুৎ থেকে মানুষের প্রাণ বাঁচান । তাল দিয়ে বিভিন্ন রকম খাবার, তাল গাছ অনেক উপকারে আসে যা লিখে শেষ করা যাবে না। তালের ইংরেজি নাম Pump tree। তালপঞ্চবিংশতি অথবা, পঁচিশ রকমের তাল আছে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই ছড়াটি তোমরা কে না পড়েছ? মনে পড়ে ‘তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে, সব গাছ ছাড়িয়ে, উঁকি মারে আকাশে।’ পাবনার শাহজাদপুরে আসার সময় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রচুর তালগাছ দেখতেন। বিশেষ করে যখন পালকি করে আসতেন। তখন নাকি তিনি এই কবিতাটি লেখেন। আসলেই তালগাছের মতো লম্বা গাছ আর নেই। পাঁকা ফল ঢিপঢাপ করে গাছের তলায় পড়ে বলেই এর নাম তাল। তালের জন্ম মধ্য আফ্রিকায়। তোমরা কি জানো, মানুষের মতো তালগাছেরও মেয়ে গাছ আর ছেলে গাছ আছে। ছেলে গাছের মাথায় লম্বা লাঠির মতো জটা হয়, কোনো ফল হয় না; মেয়ে গাছে ফল হয়- অর্থাৎ তাল ধরে। এখন এসো, আমরা শুনি তালের যত কথা।

    তালের রস : ছেলে গাছের লম্বা লাঠির মতো জটা কেটে কেটে তালের রস নামানো হয়। গরমকালে তালের রস হয়। তালের রস খুব মিষ্টি, বিশেষ করে রাতের বেলা খেতে খুব মজা লাগে।

    তালের বড়া : ছোটবেলা থেকেই শুনছি, “তালের বড়া খাইয়া নন্দ নাচিতে লাগিল”। তালগোলা তেলে ভাজলে বড়া খুব মুখরোচক হয়। তালগুড় : তালের রস জ্বাল দিলে হয় তালের গুড়। তালগুড় থেকে হয় তালের পাটালি। তালমিছরি : তালের রস জ্বাল দিয়ে যেমন গুড় হয়, তেমনি বিশেষ পদ্ধতিতে এর গাদ বা ময়লা ফেলে দিয়ে স্বচ্ছ স্ফটিকের মতো তালমিছরি তৈরি করা হয়। সর্দি-কাশি সারাতে তালমিছরি খুব উপকারী।

    কচি তালের শাঁস : কচি অবস্থায় তাল ফলের ভেতরে যে বীজ হয়, তা থাকে খুব নরম। একে বলে তালশাঁস। গরমকালে কচি তালের শাঁস খেতে খুব মজা। তালগোলা : কচি তালের রং সবুজ; কিন্তু পাঁকলে রং হয় কালো। ভাদ্র মাসে তাল পাঁকে। অন্য সময়ও কিছু তাল পাঁকতে দেখা যায়। সেগুলোকে বলে বারোমাসি তাল। কালো পাঁকা তাল থেকে সুঘ্রাণ বের হয়। পাঁকা তাল টিপ দিলে একটু নরম লাগে। মোটা প্লাস্টিকের মতো কালো খোসা টান দিলে উঠে আসে। ভেতরে পাটের আঁশের মতো কমলা রঙের তালের আঁশ ভর্তি থাকে তালগোলায়। আঁশ চিপলে সেই গোলা বের হয়। তালগোলা কাঁচা ও জ্বাল দিয়ে খাওয়া যায়। তালপাটালি : ঘন তালগোলার সঙ্গে একটু পান খাওয়ার চুন মিশিয়ে একটা থালায় আধা ইঞ্চি পুরু করে ঢেলে রাখলে কিছুক্ষণের মধ্যেই তা জমে শক্ত হয়ে যায়। ঢালার সময় এর ওপর অল্প কিছু শুকনো চিঁড়া ছিটিয়ে দিলে তা খেতে সুস্বাদু হয় ও চিঁড়া তালগোলার অতিরিক্ত জল শুষে পাটালিকে শক্ত করে। পাটালি চাকু দিয়ে বরফির মতো কেটে খাওয়া যায়।

    তালের ফোঁপা : তাল থেকে গোলা বের করার পর বিচি বা আঁটি গাদা করে রেখে দেওয়া হয়। আশ্বিন-কার্তিক মাসে সেসব আঁটি থেকে গ্যাজ বা অঙ্কুর বের হয়। এরূপ বিচি দুই ফালা করে কাটলে ভেতরে নারিকেলের ফোঁপড়ার মতো তালের ফোঁপড়া পাওয়া যায়। চিবিয়ে খেতে তালের ফোঁপড়া বেশ মজা লাগে। বেগুনির মতো তালের ফোঁপড়া ও চালের গুঁড়ো জলে গুলে মাখিয়ে, তেলে ভেজে খাওয়া যায়।
    তালপিঠা : একসময় গ্রামে গ্রামে ধূম পড়ত তালপিঠা বানানোর। তালের রস দিয়ে বানানো হতো মজার মজার পিঠা। কী নাম সেসব পিঠার- কানমুচড়ি, তেলপিঠা, পাতাপিঠা, তালমুঠা, তালবড়া, পাতাপোড়া ও তেলভাজা। আরো কত কি! ভাদ্র-আশ্বিন মাসে তাল দিয়ে পিঠা বানিয়ে আত্মীয়বাড়ি পাঠানোর রেওয়াজও ছিল।

    তাল ক্ষীর : তালের গোলা নারিকেল, গুড় ও দুধ দিয়ে জ্বাল দেওয়া হয়। একে বলে তাল ক্ষীর। তাল ক্ষীর দিয়ে মুড়ি বা রুটি খেতে খুব মজা লাগে। তালসুপারি : পাঁকা তালের আঁটির ভেতর নারিকেলের মতো যে শাঁস হয় তা কেউ কেউ শুকিয়ে কুচি কুচি করে কেটে পানের সঙ্গে সুপারির মতো খায়। একে বলে তালসুপারি। তবে তালসুপারি নামে আরো একটা গাছও কিন্তু আছে এ দেশে। এর ফলও সুপারির মতো, তবে অনেক ছোটো।
    তালের তেল : ফোঁপড়া তোলার পর আঁটির ভেতরে নারিকেলের মতো যে শক্ত শাঁস থাকে, তা তুলে রোদে শুকিয়ে ঘানিতে পিষে তেল বের করা যায়।

    তালের ডোঙা বা নৌকা : এখনো গ্রামের অনেক মানুষ বিলে-ঝিলে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়ার জন্য তালের ডোঙা নৌকার মতো ব্যবহার করে। তালগাছের গোড়ার লম্বা একটা খ- দুই ফালি করে চিরে ভেতরের শাঁস তুলে খোলার মতো করে এই ডোঙা বানানো হয়। একটা তালগাছে দুটির বেশি ডোঙা বানানো যায় না। তালপাখা : শহরে যারা বড় হয়েছে, তাদের অনেকেই হয়তো তালপাখা দেখেনি। তালগাছের পাতা রোদে শুকিয়ে তারপর বানানো হয় পাখা। তীব্র গরমে তালপাখার শীতল বাতাসে প্রাণ জুড়ায় মানুষ। বাঁশের কাঠির ফ্রেমে তালাপাতা মেলে দিয়ে বানানো হয় তালপাখা। একেকটি তালপাতায় চার থেকে পাঁচটি পাখা হয়। যেভাবে অব্যাহতভাবে লোড শেডিং চলছে এখন মানুষের তালপাখা একমাত্র ভরসা। তালকাঠ : তালগাছের থামের মতো বয়স্ক কাণ্ড করাত দিয়ে চিরে তালকাঠ বানানো হয়। তালকাঠ খুব মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী। টিনের ঘর বানাতে রুয়ো-বাতা হিসেবে তালকাঠ ব্যবহার করা হয়।
    তালপাতার ঘর : তালপাতা দিয়ে ঘরও বানানো যায়। দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের গরিব মানুষ তালপাতা দিয়ে ঘর বানিয়ে থাকে। ঘরের ছাউনি, বেড়া- সবই তালপাতা দিয়ে হয়।

    তালপাতার বাঁশি : সেই গানটা কি তোমরা শুনেছ? ‘আমি মেলা থেকে তালপাতার এক বাঁশি কিনে এনেছি।’ তালপাতা দিয়ে আসলে খুব সুন্দর বাঁশি বানানো যায়, আর সুর করে মুখে ফুঁ দিয়ে তা বাজানো যায়। তালপাতার পুঁথি : এখন তোমরা যেমন কাগজে লেখো, প্রাচীনকালে সেরকম কাগজ ছিল না। কাগজ আবিষ্কারের আগে কয়েকটা তালপাতা বেঁধে খাতা বানানো হতো। তাতে কঞ্চির কলম দিয়ে লেখা হতো। এখনো অনেক জাদুঘরে তালপাতার পুঁথি সংরক্ষিত আছে। তালের টুপি : তালের কাণ্ড জলে পঁচিয়ে এর ভেতর থেকে সেমাইয়ের মতো আঁশ তোলা হয়। সেসব আঁশ দিয়ে সুন্দর করে বুনে তালের টুপি, ঝুড়ি, সাজি ইত্যাদি বানানো হয়। বীরভূম বা বাঁকুড়াতে গেলে তোমরা এসব জিনিস দেখতে পারবে।

    তাল নবমী : জন্মাষ্টমীর পরদিন নবমী তিথিকে বলা হয় তালনবমী তিথি। এ দিনটি হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বিশেষভাবে উদযাপন করেন। বারুইরা তাঁদের পানের বরজে এ দিন পূজা দেন।
    তালপুকুর : তালের প্রবাদ ও বাগধারাও আছে। কেউ কেউ ব্যঙ্গ করে অনেক সময় বলে ‘তালপুকুর’। তাল শব্দটি বড় অর্থে ব্যবহৃত হয়। তার মানে তালপুকুর হবে বড় কোনো পুকুর বা দীঘি। কিন্তু বিদ্রƒপ করে অনেক সময় বলা হয়, ঘটি ডোবে না আবার তার নাম তালপুকুর। তিল থেকে তাল : এর অর্থ সামান্য বিষয়কে বড় করে তোলা।

    তালপাতার সিপাই : এর অর্থ রুগ্ন বা ছিপছিপে। কেউ রোগা হলে তাকে বলা হয় তালপাতার সিপাই। তালগাছের আড়াই হাত : এর অর্থ কষ্টকর বা কঠিন কাজ। তালগাছে যারা ওঠে তারা জানে, এর মাথার আড়াই হাত ওঠা কত কষ্টকর।
    তালকানা : এর অর্থ বেতাল হওয়া।
    তালের গুণাগুণ : তাল অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। ফলে এটি ক্যানসার প্রতিরোধে সক্ষম। এছাড়াও স্মৃতিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্য ও অন্ত্রের রোগ ভালো করতে তাল ভালো ভূমিকা রাখে।
    তালে মজুত ভিটামিন বি, নানা রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
    এই ফলে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস আছে, যা দাঁত ও হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধে সহায়ক। গা বমিভাব দূর করতে পাকা তাল কার্যকরী। যদি দীর্ঘদিনের কাশিতে ভোগেন, তাহলে তাল খেয়ে উপকার পাবেন।
    তালে রয়েছে ভিটামিন এ, বি ও সি, জিংক, পটাসিয়াম, আয়রণ ও ক্যালসিয়াম সহ আরও অনেক খনিজ উপাদান।
    কাঁচা তালও অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। এতে ভিটামিন এ, সি, বি, কপার, আয়রণ, পটাশিয়াম, ফসফরাস, জিংক, ফাইবার, ক্যালসিয়াম ও অ্যান্টি- অক্সিডেন্ট যৌগ রয়েছে। পুষ্টিগুণ ও পরিবেশ সুরক্ষায় তালগাছের জুড়ি নেই। বাংলাদেশের অত্যন্ত সুপরিচিত একটি ফলজ বৃক্ষ। এটি পাম গোত্রের অন্তর্গত একটি উদ্ভিদ। ভাদ্র মাসে পাঁকা তালের রস দিয়ে বিভিন্ন মুখরোচক পিঠা তৈরি আবহমান বাংলার চিরায়ত বৈগলগাছ থেকে উৎপন্ন কচি ও পাকা ফল, তালের রস ও গুড়, পাতা, সবই আমাদের জন্য উপকারী।
    কচি তালবীজ সাধারণত তালশাঁস নামে পরিচিত যা বিভিন্ন প্রকার খনিজ উপাদান ও ভিটামিনে পরিপূর্ণ। মিষ্টি স্বাদের কচি তালের শাঁস শুধু খেতেই সুস্বাদু নয় বরং পুষ্টিতে ও ভরপুর। শরীরবৃত্তীয় কাজে অংশ নেয়া এই তাল শাঁসের পুষ্টিগুণের পরিমাণ সারণি দ্রষ্টব্য। এসব পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরকে নানা রোগ থেকে রক্ষা করাসহ রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। যেমন :
    তালের শাঁসে প্রায় ৯৩% বিভন্ন প্রকার ইলেকট্রোলাইট সমৃদ্ধ পানি ও প্রাকৃতিক জিলেটিন থাকে। জ্যৈষ্ঠ মাসের গরমে পরিশ্রান্ত কর্মজীবী মানুষেরা তালের শাঁস খেলে দেহকোষে অতিদ্রুত ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্সের মাধ্যমে শরীরে পুনরুদন প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং আমাদের শরীরকে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা দূর করে প্রাকৃতিকভাবে ক্লান্তিহীন রাখে। এ কারণে তালের শাঁসকে অনেক পুষ্টিবিদ প্রাকৃতিক শীতলীকারকও বলে থাকেন।

    অতিরিক্ত রোদে ও গরমের কারণে ত্বকে বিভিন্ন র‌্যাশ বা এলার্জিতে দেখা দিলে তালের শাঁস মুখে লাগাতে পারেন। তাছাড়া সানবার্ন থেকে মুক্তি পেতে তালের শাঁসের খোসা ব্যবহার করা যায়। কচি তালের শাঁসে থাকা ভিটামিন সি ও বি কমপ্লেক্স আপনার পানি পানের তৃপ্তি বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়, বমিভাব দূর করে, খাওয়ার রুচি বাড়ায়। তাছাড়া লিভারজনিত বিভিন্ন সমস্যা দূর করতেও তালের শাঁস বেশ কার্যকর। তালের শাঁসের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অনেক কম (৩৫%) হওয়ায় ডায়বেটিস রোগীর জন্য এটি একটি চমকপ্রদ খাদ্য উপাদান। অতিরিক্ত ওজনের কারণে কি খাবেন এ নিয়ে যারা দুশ্চিন্তায় ভুগছেন তারাও অনায়েসে খাদ্য তালিকায় তালের শাঁস রাখতে পারেন কেনানা এটি তুলনামূলক কম ক্যালরিযুক্ত একটি খাবার। তালের শাঁস অধিক আঁশসমৃদ্ধ হওয়ায় যারা কোষ্ঠকাঠিন্যসহ অন্যান্য পেটের পীড়ায় ভুগছেন তালেরশাঁস হতে পারে তাদের জন্য প্রকৃতি প্রদত্ত এক ঔষধ। এতে থাকা ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, অ্যান্টি- অক্সিডেন্ট ও অন্যান্য খনিজ উপাদান হাড় ক্ষয়, উচ্চ রক্তচাপ, রক্ত স্বল্পতা ও ক্যান্সারসহ নানাবিধ শারীরিক সমস্যায় বেশ উপকারী ভূমিকা পালন করে।
    খেজুর গুড়ের ন্যায় তালের রস জ্বাল দিয়ে তৈরিকৃত তালমিছরিও আমাদের দেশে অতি পরিচিত একটি খাদ্য উপকরণ, যা সাধারণত বিভন্ন অসুখবিসুখে পথ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তালমিছরি গুণাগুণ বর্ণনা করতে গেলে প্রথমত এর পুষ্টিগুণ বিবেচনা করতে হয়। এতে রয়েছে ভিটামিন বি১, বি২, বি৩, বি৬ বি১২, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক ও ফসফরাস। সর্দি-কাশি, রক্তস্বল্পতা ও পেটের পীড়াসহ নানাবিদ রোগের চিকিৎসায় এটি বেশ কার্যকর। যাদের ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার ভয় রয়েছে বিশেষত কাশি, গলায় জমে থাকা কফ, শ্লেষ্মা দূর করতে হালকা গরম পানিতে গোলমরিচ গুঁড়া ও তালমিছরি গুলে খাওয়ালে বেশ উপকার হয়। তাছাড়া তুলসী পাতার রসের সাথে তালমিছরি গুলে খেলে পুরানো সর্দি-কাশি অতি দ্রুত নিরাময় হয়। চিনির তুলনায় গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশ কম হওয়ায় ডায়াবেটিক রোগীর পাশাপাশি সব বয়সের মানুষের জন্য চিনির বিকল্প হিসেবে এটি বেশ নিরাপদ। মিছরি ক্যালসিয়াম ও আয়রনসমৃদ্ধ হওয়ায় হাড় ক্ষয় ও রক্তস্বল্পতায় ভুগা রোগীরা খাদ্য তালিকায় মিছরি রাখতে পারেন। উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা ও অনায়াসে মিছরি খেতে পারেন কেননা মিছরিতে রয়েছে অধিক পরিমাণে পটাশিয়াম এবং উচ্চ রক্তচাপের জন্য দায়ী সোডিয়াম প্রায় নেই বললেই চলে।
    বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনে কারণে সৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলায় সর্বত্র অধিকহারে তাল গাছ রোপণ এখন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

    বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ মাসে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বজ্রপাতের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে প্রতি বছর সারা বিশ্বে ২০০০-২৪০০ জন মানুষ বজ্রপাতের কারণে মারা যায় এবং ৫০ হাজারেরও অধিক মানুষ মারাত্মকভাবে আহত হয়।
    দেশে বজ্রপাতের মৃত্যুর হিসাব নিয়ে বেসরকারি সংস্থা ডিজাস্টার ফোরাম বলছে, বজ্রপাতে ১৪ বছরে (২০১০-২০২৪ সাল) প্রাণ গেল ৪ হাজার ১৫৮ জনের। নিহতদের মধ্যে শিশু ৭৭৪ জন, নারী ৫৪১ জন এবং পুরুষ ২ হাজার ৮৪২ জন। সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ২০২১ সালে। সেবছর ৩৬২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আর এককভাবে সর্বোচ্চ পুরুষের মৃত্যু ঘটেছে ২০২০ সালে। যার সংখ্যা ২৭১ জন।
    তথ্য বলছে, ২০১০ সালে বজ্রপাতে প্রাণ হারান ১২৩ জন, যা ধীরে ধীরে বেড়ে ২০২১ সালে দাঁড়ায় ৩৬২ জনে। এরপর ২০২২ সালে কিছুটা হ্রাস পেলেও মৃত্যু হয়েছে ৩১৬ জনের। ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বজ্রপাতে মারা গেছেন ২৮৮ জন, যা আগের বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি। এছাড়া, ১৪ বছরে বজ্রপাতে মারা যাওয়া ৪ হাজার ১৫৮ জনের মধ্যে পুরুষ ২ হাজার ৮৪২ জন, যা মোট মৃত্যুর প্রায় ৬৮ শতাংশ। নারী ও শিশুর সংখ্যা যথাক্রমে ৫৪১ ও ৭৭৪ জন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুরুষদের কৃষিকাজ, মাছ ধরা, গবাদি পশু পালনসহ বহিরাঙ্গন কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার ফলে মৃত্যুর হারও বেশি। বজ্রপাতের ফলে আহতের সংখ্যাও উদ্বেগজনক। এই সময়কালে বজ্রপাতজনিত আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৩৪ জনে। ২০১৬ সালে সবচেয়ে বেশি আহত হন ১৯৬ জন। এছাড়া, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরও সারা দেশে বজ্রপাতের মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। বিশেষ করে এপ্রিল ও মে এই বজ্রপাত মৌসুমে প্রাণহানির ঘটনা চোখে পড়ার মতো বেড়েছে। মাত্র একদিনেই, অর্থাৎ গত ২৮ এপ্রিল বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছেন ২৩ জন।

    আর এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে, বছরে দেশে গড়ে মৃত্যু ৩০০’র বেশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ বজ্রপাতে দেশের ১৩টি জেলায় মৃত্যু বেশি। জেলাগুলো হলো সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, নওগাঁ, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নেত্রকোনা, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, সিলেট, গাইবান্ধা, পাবনা ও দিনাজপুর। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। হিলিয়ন জার্নালে প্রকাশিত ‘জিআইএস-বেজড স্পেশাল অ্যানালাইসিস ফর লাইটিনিং সিনারিও ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণায় দেখা যায়, ২০১৫-২০২২ সালে ৮ বছরে বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি ১৪০ জন মারা গেছেন সুনামগঞ্জে। একই সময়ে ১১১ জনের মৃত্যু নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে হবিগঞ্জ জেলা। এরপরই নওগাঁয় ৮২, কিশোরগঞ্জে ৭৮ এবং ময়মনসিংহে ৭৭ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যায়। এছাড়াও একই সময়ে বজ্রপাতে রাজশাহীতে ৬৭, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৬৫, সিরাজগঞ্জে ৬৪, নেত্রকোনায় ৬৩, সিলেটে ৬১ এবং পাবনা ও গাইবান্ধায় ৫৩ জন করে মারা গেছেন। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, ২০১৫ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বজ্রপাতে দেশে ২১৪২ জন মারা গেছেন এবং আহত হয়েছেন ৫৩৮ জন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে পাওয়া জেলাভিত্তিক মৃত্যুর তথ্যের সঙ্গে এসব তথ্যের মিল পাওয়া যায়। অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে, দেশে প্রতিবছর বাড়ছে বজ্রপাতে মৃত্যু। ২০১৯ সালে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৯৮ জন, ২০২০ সালে তা ছিল ২৫৫ জন। কিন্তু ২০২১ থেকে ২০২৩ সাল-তিন বছরে বজ্রপাতে গড়ে মৃত্যুর সংখ্যা ৩০০ জনের অধিক ছিল। তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর ১৯ মে পর্যন্ত বজ্রপাতে মারা গেছেন ৫৬ জন এবং আহত হয়েছেন ১৩ জন।

    বাংলাদেশের বজ্রপাতবিষয়ক আরেক গবেষণায় বলা হয়েছে, ১৯৯০ থেকে ১৯৯৯ সালে দেশে বজ্রপাতে গড়ে মারা গেছেন ৩০ জন আর আহত হয়েছেন ২২ জন। ২০০০ থেকে ২০০৯ সালে গড়ে মারা গেছেন ১০৬ জন এবং আহত হয়েছেন ৭২ জন। অন্যদিকে ২০১০ থেকে ২০১৭ সালে প্রতিবছর গড়ে মারা গেছেন ২৬০ জন এবং আহত হয়েছেন ২১১ জন। জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতিবছর ৩০০ জন মারা যান এবং এ সংখ্যা অনেক। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর বজ পাতে ২০ জনের কম মারা যান।

    বিশেষজ্ঞারা বলছেন, তালগাছে কার্বনের স্তর বেশি থাকায় তা বজ্রপাত নিরোধে সহায়তা করে। কারণ, তালগাছের বাকলে পুরু কার্বনের স্তর থাকে। তালগাছের উচ্চতা ও গঠনগত দিক থেকেও বজ্রপাত নিরোধে সহায়ক।
    মাত্রাতিরিক্ত বজ্রপাতের কারণে মৃত্যুঝুঁকির কথা বিবেচনা করে বাংলাদেশ সরকার ২০১৬ সালে বজ্রপাতকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করে এবং এর প্রতিকারে করণীয় নির্ধারণে তৎপর হয়। বজ্রপাতের কারণে অতি উচ্চ ভোল্টেজ সম্পন্ন বিদ্যুৎ সাধারণত ভূ-পৃষ্ঠের সবচেয়ে উঁচু স্থাপনা বা বস্তুতে আঘাত হানে। এজন্য পরিবেশ বিজ্ঞানী ও আবহাওয়াবিদগণ পরিবেশ সুরক্ষায় বিশেষ করে বজ্রপাতের হাত থেকে বাঁচার জন্য অধিকহারে তালগাছ রোপণের উপর গুরুত্ব দিয়ে সরকারকে পরামর্শ দিচ্ছেন। তালগাছ সাধারণত ৩০ মিটার (৯৮ ফুট) পর্যন্ত লম্বা হয়, এই বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণে এটি বজ্রপাতে সৃষ্ট অতি উচ্চ ভোল্টেজ সম্পন্ন বিদুৎ পরিবহন করে মাটিতে পৌঁছে দিয়ে বজ্রাহতের হাত থেকে রক্ষা করে। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সরকার ইতোমধ্যে সারা দেশব্যাপী কয়েক মিলিয়ন তালগাছ রোপণও করেছে। তাছাড়া, ভাঙ্গন ও মাটি ক্ষয়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায়ও তালগাছের জুড়ি মেলা ভার।
    তালগাছ গুচ্ছমূলীয় হওয়ার কারণে নদীর ভাঙ্গন ও মাটির ক্ষয়রোধে এর রয়েছে বিরাট ভূমিকা। প্রতি বছরই এইসব অঞ্চলে রাস্তা ও বাঁধ পুন:নির্মাণে জন্য মোটা অংকের রাজস্ব ব্যয় হয়। এ সমস্ত বন্যাপ্রবণ এলাকার রাস্তা ও বাধের দুই পাশে তালগাছ রোপণ করে ভাঙ্গনের হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।
    এ জন্য বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট বজ্রপাত, বন্যাসহ নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে পরিত্রাণের জন্য সরকারের পাশাপাশি সামাজিক ও ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগী হয়ে আমাদের সকলকে পরিবেশবান্ধব এই বৃক্ষ রোপণে সচেষ্ট হতে হবে।
    বজ্রপাত প্রতিরোধক পরম বন্ধু তালগাছ
    বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে বজ্রপাতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ব্যাপক প্রাণহানি ঘটছে। বাংলা ও বাঙালির জনপ্রিয় ফল তাল। ভাদ্র মাসের তাল না খেলে কালে ছাড়ে না বলে বাঙালি সমাজে প্রবাদও রয়েছে। তালগাছের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

    আবহাওয়াবিদ ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বজ্রপাত হলো একটি প্রাকৃতিক বৈদ্যুতিক নির্গমন প্রক্রিয়া, যা মূলত আকাশে জমে থাকা বিশাল পরিমাণ ইলেকট্রিক চার্জের হঠাৎ মুক্তি। এটি তখন ঘটে যখন মেঘের ভেতরে কিংবা মেঘ থেকে ভূমির মধ্যে পজিটিভ ও নেগেটিভ চার্জের মধ্যে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়।

    পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে সারা দেশে রাস্তার দুই পাশে তালগাছের চারা-আঁটি রোপণের
    বিকল্প নেই।

    বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যুহার নামিয়ে আনতে দেশের সর্বত্র বেশি করে উঁচু গাছ যেমন তাল, নারিকেল, সুপারি, খেজুরগাছ লাগাতে হবে। উন্মুক্ত স্থানে বসাতে হবে লাইটনিং টাওয়ার বা উঁচু ধাতব পোস্ট। খোলা স্থানে উঁচু টাওয়ারে আরথিং করে নিলে বজ্রপাতের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে। বজ্রপাত সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করে তুলতে পারলে এ ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৃত্যু কমিয়ে আনা সম্ভব হতে পারে। কিন্তু বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধবে কে?