এম এ আলিম রিপন,সুজানগর : পাবনার সুজানগর পৌর বাজারে অননুমোদিতভাবে সার ও কীটনাশক বিক্রির অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। এসময় পৌরবাজারের কৃষি বীজ ভান্ডার, মহিত বীজ ভান্ডার ও মন্ডল বীজ ভান্ডার নামে ৩টি দোকানকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করার পাশাপাশি৩০ বস্তা সার জব্দ করে উপজেলা প্রশাসন। শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ ।অভিযানে সহযোগিতা করেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার জাহিদ হোসেন। এছাড়া উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাইদুল ইসলামসহ অন্যান্য উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ এবং থানার এসআই আবুল বাশার ও আনসার সদস্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।অভিযান পরিচালনাকালে সুজানগরের সার ডিলার আব্দুল কাদের রোকনের স্যারের গোডাউনেও অভিযান চালানো হয়। এ সময় স্যার ডিলার আব্দুল কাদের রোকনের কাছ থেকে সরাসরি কৃষকদের কাছে সরকার নির্ধারিত মূল্যে সার বিক্রয়ের সকল তথ্য নেওয়া হয়।ইউএনও মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ বলেন, ‘আমরা খবর পাই, নিবন্ধিত ডিলারের বাইরেও কিছু খুচরা বিক্রেতা অননুমোদিত ভাবে সার বিক্রি করে আসছে। অভিযানে দেখতে পেলাম লাইসেন্স নেই অননুমোদিত বেশ কিছু ব্যবসায়ী ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। কোনো প্রকার অনুমোদন ছাড়া সার বিক্রির দায়ে ৩টি সার ও কীটনাশকের দোকান মালিককে মোট ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি ৩০ বস্তা জব্দকৃত ডিএপি, এমওপি ও ইউরিয়া সার সরকার নির্ধারিত মূল্যে খোলা বাজারে কৃষকদের নিকট বিক্রি করে সেই অর্থ রবিবার সরকারি কোষাগরে জমা দেওয়া হয় ।এছাড়া, সরকারি অনুমোদন ছাড়া সার ও কীটনাশক বিক্রি না করার জন্য ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। এ সময় তিনি আরো বলেন, স্যার ডিলার আব্দুল কাদের রোকনের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত মূল্যে কৃষকদের কাছে সার বিক্রয়ের ভাউচারসহ সকল তথ্য নেওয়া হয়েছে আমরা তার দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে কোন ধরনের অনিয়ম পেলে তার বিরুদ্ধেও কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইউএনও মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ আরো জানান, কৃষকদের স্বার্থে এবং সঠিক বাজারব্যবস্থা নিশ্চিত করতে এ ধরনের অভিযান নিয়মিত চলবে।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আসাদুজ্জামান বলেন, যাদের কাছে অনুমোদনহীন সার রয়েছে তারা যেন আর বিক্রয় না করে। অনুমোদনহীন ব্যবসা থেকে ফিরে আসে যেনো। সকল ডিলারের প্রতি অনুরোধ, তারা যেন কৃষকদের নিকট নির্ধারিত মূল্যে সার বিক্রয় করে।
Blog
-
গোদাগাড়ীর ইউএনওর ব-দলীর আ-দেশ স্থ-গিতের দাবীতে বিশাল মা-নববন্ধন ও বিক্ষো-ভ
নিজস্ব প্রতিবেদক রাজশাহী: রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার, মানবিক ফয়সাল আহমদের হটাৎ বদলীর আদেশ স্থগিতের দাবীতে গোদাগাড়ীর সর্বস্তরের জনগনের ব্যনারে বিশাল মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে।
শনিবার সকাল ১১ টার সময় রাজশাহী গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফয়সাল আহমেদ এর বদলি আদেশ স্থগিত করে বর্তমান কর্মস্থলে রাখার লক্ষ্যে উপজেলার জনসাধরণের প্রাণের দাবি চলমান উন্নয়নমূলক কাজগুলো সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত গোদাগাড়ী উপজেলায় নির্বাহী অফিসার হিসেবে দেখতে চান গোদাগাড়ীবাসী। জনস্বার্থে সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের প্রতি সুদৃষ্টি কামনা করেছেন মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনকারীগন।
গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফয়সাল আহমেদ এর ৭ মাসে ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রমের বেশ কিছু চিত্র মানববন্ধনে শোভা পায়।
চাঁপাই নবাবগঞ্জ মহানগরী সড়কের দুপাশে সুশৃঙ্খলভাবে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করেন হাজার খানিক নারী, পুরুষ, ছাত্র, ছাত্রী, শিক্ষক, কিশোর কিশোরী, ব্যবসায়ী, প্রতিবন্ধী, বিধবা, স্বামীপরিত্যক্তা, মুক্তিযুদ্ধা এবং তাদের সন্তান, বিভিন্ন খেলোয়াড়, কৃষক, শ্রমিক, ভ্যানচালক, রিকসা চালক, অটোচালক, চাকুরীজীবি, জনপ্রতনিধিসহ সর্বস্তরের জনগন।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, ইউএনও ফয়সাল আহমেদ এর হঠাৎ বদলীতে মাদক ব্যবসায়ী, খাসপুকুর, ভেজাল সিন্ডিকেটের সদস্যগণ খুশি হলেও গোদাগাড়ী পৌরসভা ও উপজেলাবাসী খুশি হতে পারেন নি। তারা রীতিমতো হতাশ হয়েই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন। তার বদলীর আদেশ স্থগিত করা না হলে আরও কঠিন কর্মসূচি পালন করবে বলে জানান।
মাত্র সাত মাসে গোদাগাড়ীর গরীব, দুস্থ, বিধবা, মুক্তিযুদ্ধা, বৈষম্য বিরোধী ছাত্রসমাজ, নির্যাতিত মানুষ, সাংবাদিক, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, সাংস্কৃতিক কর্মী, যুবসমাজের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠা মানবিক ইউএনওর এমন বদলী কোনভাবেই সাধারণ জনগণ মেনে নিতে পারছেন না। তারা গোদাগাড়ীর গনমানুষের উন্নয়ন ও ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য সরকারের উদ্ধর্তন কতৃপক্ষের নিকট দাবী করছেন আরও কয়েক মাস উপজেলা নিবাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সুযোগ দিয়ে সাড়ে ৪৫০ খাসপুকুর ইজারা দিয়ে সরকারের কোটি কোটি রাজস্ব আয় করার ব্যবস্থা করা। মাদকের বিরুদ্ধে আরো কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার।
বদলিতে বিষন্নতা নেমে এসেছে সাধারন মানুষের মাঝে। তার অফিসে কারো অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন হয় নি। বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা, গরীব, দুস্থ মহিলা, ছাত্র, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, আদিবাসী সবাই অফিসে যেতেন ইউএনও ফয়সাল আহমেদ মনোযোগ সহকারী সবার কথা শুনতেন। সমাধান দিতেন। বাল্য বিয়ে, যৌতুক, মাদক,
দখলবাজী, চাঁদাবাজী, চুরি, ছিনতাই অনেক অংশে কমে এসেছিল। ভেজাল বিরোধী অভিযানে তিনি শতভাগ সফল। তিনি একজন প্রশাসক হিসেবে নয়, সামাজসেবক, গোদাগাড়ীবাসীর কামলা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন, সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার, শনিবারও অফিসে কাজ করতেন, দিন রাত পরিশ্রম করতেন, ভেজাল, মাদক, বাল্যবিয়ে, অবৈধভাবে পুকুর খননকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতেন।নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরির জন্য নিয়েছেন বিভিন্ন রকম প্রশিক্ষণ, সেলাই, মালি, মুচিদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা।
চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়ন বাসীর জন্য করেছেন স্পিড বোর্ডের ব্যবস্থা যেখানে চর থেকে পার হতে সময় লাগতো প্রায় ১ ঘন্টা সেখানে ১০/১৫ মিনিট জরুরী সেবার ব্যবস্থা করেছেনআইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে পৌর সদরসহ গোল চত্তরে করেন সিসি ক্যামেরায় স্থাপন। যুবকদের মাদক থেকে সরিয়ে আনতে খেলাধুলার উপর গুরুত্ব দিয়ে ২ পৌরসভা, ৯ ইউনিয়নে ৯৯ টি ক্লাব গঠন, খেলধুার সামগ্রী বিতরণ করেছেন। প্রতিটি ইউনিয়ন, প্রতিটি পৌরসভায় শিশুদের বিনোদনের মিনি শিশুপার্ক তৈরী করছেন। তিনি গোদাগাড়ী উপজেলায় যোগদানের পর থেকে ছুটে গিয়েছেন গোদাগাড়ীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে।
নিজ কার্যালয়ে বসে গণশুনানি করে মিটিয়েছেন অনেক বড় বড় বিরোধ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরে ইউএনওর বদলির আদেশটি ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই হতাশা প্রকাশ করে বলেন, গোদাগাড়ীবাসী হারালেন একজন যোগ্য প্রশাসক ও অভিভাবক।
সাধারণ গোদাগাড়ীবাসী বলছেন আরও কয়েক মাস সময় ইউএনও ফয়সাল আহমেদ সুযোগ পেলে উন্নয়ন কসর্মকাণ্ডগুলোর সুফল পেত, আসার আলো দেখত গোদাগাড়ীবাসী। অবিলম্বে বদলীর আদেশ স্থগিতের জোর দাবী জানাই।
তিনি মাদকপ্রবন এলাকা গোদাগাড়ীতে এসে প্রথমেই শুরু করেন মাদকের বিরুদ্ধে জোরালো অভিযান,বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ, ভেজাল খাদ্য, ভেজাল তেল, নমেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ, পুকুর খনন, রাস্তা চলাচলে প্রতিবন্ধকতাসৃষ্টকরীদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনা করে গোদাগাড়ীর আইকনে পরিনত হয়েছন। গোদাগাড়ীর শিক্ষার উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করা।
গোদাগাড়ী পৌরসভার জন্মলগ্নে শিক্ষাবৃত্তি চিল না। চালুকরে নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।তবে বদলির বিষয়ে কথা হয় গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল আহমেদ এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা সরকারি কর্মকর্তা দেশের স্বার্থে দেশের জনগণের স্বার্থে সরকার যেখানে চাইবে এখানেই আমাদের যেতে হবে তবে গোদাগাড়ীবাসীর ভালোবাসার কথা সারাজীন মনে থাকবে। আমি আপনাদের প্রশাসক হিসেবে নয় কামলার মত কাজ করেছি। দিন রাত সেবা দেয়ার চেষ্টা করেছি। এখানে যতদিন রিজিক ছিল ততদিন ছিলাম, ভালকাজ করার চেষ্টা করেছি।
এব্যাপরে গোদাগাড়ী সরকারী স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক আশরাফুজ্জামান মাসুম বলেন, উনি অনেক ভালো মনের মানুষ। আল্লাহ তাকে হেফাজত করুন। তার বদলীর আদেশ স্থগিতের জোর দাবী জানান।
সেলাই প্রশিক্ষনের মাষ্টার ট্রেনার শাহানারা বিশ্বাস শাহিনুর বলেন, গতকাল ফয়সাল আহমেদ স্যারের বদলীর আমাদের সাবার
মনখারাপ হয়েছে। তাইতো আমরা গোদাগাড়ীর সর্বস্তরের গন স্যারের বদলীর আদেশ স্থগিতের দাবীতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করচ্ছি, উদ্ধোর্তন কতৃপক্ষের নিকট স্মারকলিপি দেয়া হবে ইনসাল্লাহ। গোদাগাড়ী সার্বিক উন্নয়নে কারো সাথে তুলনা করা যাবে না। সাত মাসে উনি যা করেছেন ১৭ বছরে তা করতে পরেন নি।বিধবা সুরভী বলেন, দেড় বছর আগে স্বামী মারা গেছেন, দুইটি ছেলে নিয়ে কষ্ট করে সংসার চালাই। অনেক আশাভরসা নিয়ে সেলাই প্রশিক্ষনে অংশ গ্রহন করেছিলাম স্যারের বদলীতে সবশেষ। স্যারের বদলীর আদেশ স্থগিতের জোরদাবী জানাচ্ছি।
কুলসুম বেওয়া জানান, স্বামী ঢাকায় কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনা মারা যান।
১ ছেলে ও ১ মেয়ে কষ্ট করে হাঁস – মুরগী পুষে ( পালন করে) ডিম বিক্রি করে সংসার চালাই। বাড়ীতে সেলাই মেশিন নেই। কেনার সামর্থ নেই। মাষ্টার ট্রেনার শাহানারা বিশ্বাস শাহিনুর ম্যাডাম যে কাজ দেন সেই কাজ সুঁই সুতা ব্যবহার করে করি। ফয়সাল আহমেদ স্যারের বদলীতে সব স্বপ্ন ভঙ্গ হলো, স্যার যেন গোদাগাড়ীতে থাকতে পারেন সে দাবী জানাই সরকার প্রধানের নিকট।সমাজসেবক, মাহাফুজুল বারী বলেন, এই দেশের সিস্টেমই খারাপ। কারো ভালো কাজ সহ্য হয় না। ১৭ বছরে কেউ যেটা করেনি টাকার লোভ না করে ইউ এনও ফয়সাল আহমেদ সেটা করে ৪৫০ টির বেশি খাস পুকুর অবমুক্ত করেছেন। এই দেশে ভালো মানুষের জায়গা নেই এটাই তার প্রমাণ। অবিলম্বে বদলী আদেশ স্থগিতের দাবী জানাই।
প্রতিবন্ধী কামরুল ইসলাম ও ঝর্না বলেন, আমি কাজ জানি, কিন্তু শিখার শেষ নেই। তাই তো উচ্চতর সেলাই প্রশিক্ষণে অংশ গ্রহন করেছি। ইউএনও মহোদয়ের বদলীতে আমরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছি। আমাদের সেলাই প্রশিক্ষনের ভবিষ্যৎ শেষ। এমন কোন বিভাগ নেই যেখানে উন্নয়নের ইউএনও মহোদয় এর ছোঁয়া লাগেনি। তাই ইউএনও বদলীর স্থগিতের জোর দাবী জানাই।
সাংবাদিক মুন বলেন, অনেক ভালো মানুষ ছিল। একজন যোগ্য অফিসারকে গোদাগাড়ীবাসী হারাতে চাই নি তাইতো আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন।
গোদাগাড়ীবাসী এখনো আসায় বুকবেঁধে আছেন যে হয়তো তাহার বদলির আদেশটি স্থগিত হবে। যদি হয় তবে মাদক ব্যবসায়ী, খাসপুকুর, ভেজাল সিন্ডকেট হেরে যবে। বেঁচে যাবে গোদাগাড়ী বাসী। উন্নয়ন কাজগুলি সঠিকভাবে শেষ হবে। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী বলেন দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে।
মোঃ হায়দার আলী
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজশাহী ।। -
নেছারাবাদে সড়কের গাছ কা-টার রশিতে ফাস লেগে চলন্ত মটর সাইকেল আরোহীর মৃ-ত্যু
নেছারাবাদ(পিরোজপুর)প্রতিনিধি:
নেছারাবাদে গাছ কাটার রশিতে আটকে মো: তানিম(২৩) নামে এক যুবকের নির্মম মৃত্যু হয়েছে। রবিবার সকালে উপজেলার শেহাংগল এলাকায় স্বরূপকাঠি পিরোজপুর সড়কে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। ওই যুবকের বাড়ী উপজেলার পানাউল্লাহপুর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মো: জাহাঙ্গির হোসেনের ছেলে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানাগেছে, রবিবার সকালে পিরোজপুর যাওয়ার উদ্দেশ্য তানিম ও আনিসুর রহমান নামে দুই যুবক বাড়ী থেকে মটরসাইকেলে বের হয়। তারা মটরসাইকেল নিয়ে শেহাংগল এলাকায় পৌছায়। এসময় ওই সড়কের পাশে বেলায়েত নামে এক ব্যক্তি গাছ কাটছিল। তারা গাছ নামানোর জন্য রাস্তায় আড়াআড়িভাবে রশি বাধে। এসময় চলন্ত মটরসাইকেলের ড্রাইভার রশি দেখে মাথা নিচু করে কিন্তু পিছনের আরোহী তানিম রশি খেয়াল করেনি। একারনে সে ওই রশিতে পেচিয়ে গাড়ী থেকে রাস্তায় পড়ে যায়। এতে তানিমের নির্মম মৃত্যু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী মো: রায়হান ফয়সাল বলেন, গাড়ীটি শেহাংগল এলাকায় পৌছে। রাস্তায় আড়াআড়ি রশি দেখে গাড়ির চালক আনিছ মাথা নিচু করে। পিছনের আরোহী তানিম তা খেয়াল করতে না পেরে গলাশ রশি পেচিয়ে গাড়ী থেকে রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে।
নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের ডাক্তার লিমা আক্তার জানান, ওই যুবককে হাসপাতালে আনার পূর্বেই মৃত্যু হয়েছে। তার মাথায় প্রচুর আঘাত পেয়ে অনেক রক্তক্ষরন হয়েছে। হয়তো এতেই তার মৃত্যু হয়েছে।
নেছারাবাদ থানার অফিসার ইন চার্জ(ওসি) মো. বনি আমিন জানান, “আমরা খবর পেয়ে হাসপাতালে লাশের কাছে পুলিশ পাঠিয়েছি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
নেছারাবাদ উপজেলা প্রতিনিধি ।।
-
বন্দরটিলায় ইপিআই অফিসে অ-গ্নিকাণ্ড—ঘটনাস্থল পরিদর্শনে চসিক মেয়র ডা.শাহাদাত
বিশেষ প্রতিনিধিঃ
চট্টগ্রাম নগরীর বন্দরটিলাস্থ ইপিআই জোনাল অফিসে পরশু রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। শর্ট সার্কিট থেকে সৃষ্ট এই অগ্নিকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র, আসবাবপত্র ও অফিস সামগ্রী পুড়ে ছাই হয়ে যায়। দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার কারণে এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
রোববার দুপুরে মেয়র ক্ষতিগ্রস্ত ইপিআই অফিস ছাড়াও বন্দরটিলার মাতৃসদন হাসপাতাল, ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয় এবং চসিক রাজস্ব অফিস পরিদর্শন করেন। অফিস কক্ষের ছেঁড়া তার, পুরনো বৈদ্যুতিক সংযোগ এবং নিরাপত্তাহীন ব্যবস্থা দেখে তিনি বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, “বিদ্যুৎ ব্যবস্থার নিরাপত্তায় চরম গাফিলতি রয়েছে। অব্যবস্থাপনার দায় কেউ এড়াতে পারবে না। নাগরিক সেবার অফিস যদি নিরাপদ না থাকে, তবে সাধারণ মানুষ কীভাবে নিরাপত্তা পাবে?” তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, “আগামীতে এমন অবহেলা ধরা পড়লে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এসময় উপস্থিত ছিলেন-চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, চীফ পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা লে. কর্নেল ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, প্রকৌশলী বিভাগ, নির্বাহী কর্মকর্তা, সচিব মো. আশরাফুল ইসলাম, একান্ত সচিব এডভোকেট মো. মারুফ পাটোয়ারী, জোনাল মেডিকেল অফিসার ডা. আ. মজিদ শিকদার, মাতৃসদন হাসপাতালের ইনচার্জ ডা. জিএম মামুন উদ্দিন, সহকারী ইনচার্জ ডা. ইসরাত জাহান সুমাইয়া, সাবেক কাউন্সিলর সরফরাজ কাদেরসহ ওয়ার্ড সচিব ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ—জাবেদ আনসারী, মুজিবুর রহমান, মো. শরীফ, মিজানুর রহমান পারুল, মো. হোসেন টিটু, রাশেদুজ্জামান রাসেল, মো. রাশেদুল আলম (রাসেদ), আকিব জাভেদ, মো. শাহজাহান প্রমুখ।
মেয়র ঘটনাস্থলেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দ্রুত ক্ষয়ক্ষতির হিসাব তৈরি, অবকাঠামো সংস্কার, বৈদ্যুতিক সংযোগের ঝুঁকি অপসারণ এবং জরুরি বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানান—“চট্টগ্রামবাসীর জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো ধরনের খেলোয়াড়ি সহ্য করা হবে না। এখন থেকে সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত বৈদ্যুতিক পরিদর্শন বাধ্যতামূলক করতে হবে।”
স্থানীয় সচেতন মহল অভিযোগ করেছে, চসিকের বিভিন্ন অফিস ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বছরের পর বছর রক্ষণাবেক্ষণহীন তারের জট, ভাঙা প্লাগ, অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রের অনুপস্থিতি এবং অবহেলার কারণে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি বাড়ছে। অথচ প্রশাসন সময়মতো ব্যবস্থা নেয় না। বন্দরটিলার অগ্নিকাণ্ড যেন সেই দীর্ঘদিনের গাফিলতির নগ্ন প্রমাণ।
-
চাচা ভাতিজা ধ-ন্দে বাড়ির গাছ কাটা-কে কেন্দ্র করে আদালতে মাম-লা
দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে চাচা ও ভাতিজার মধ্যে গাছ কাটার ঘটনাকে কেন্দ্র করে জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে সিআর নং ৩২৬/২০২৫ মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার মান্নারগাও ইউনিয়নের কাটাখালী আহমদ নগর গ্রামে। মৃত কমর আলীর পুত্র শামসুদ্দিন তার আপন বড় ভাই চান্দ আলীর পুত্র মোঃ জয়নাল ওরূপে মনাই, তার স্ত্রী তাছলিমা বেগম, শশুর আসকর আলীর বিরুদ্ধে নাশকতা সহ বাড়ির গাছ কাটার অভিযোগ এনে সুনামগঞ্জ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন।রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) কাটাখালী আহমেদ নগর গ্রামে সরেজমিনে উপস্থিত হয়ে স্থানীয় সূত্র ও মামলার বিবরণে জানা যায়, আসামিদের অত্যাচারে বাদী তার মূল ভিটা বাড়ী ফেলে অন্যবাড়িতে বসবাস করছে। বর্তমানে বাড়ি দখল নেওয়ার উদ্দেশ্যে ভাতিজা ও তার বউ মিলে বাদীর লাগানো বিভিন্ন জাতের ফলজ ও বনজ বৃক্ষ কেটে লাখ টাকার ক্ষতি করে। এসব বিষয়ে বাধা নিশেধ করলে ২ নং বিবাদী অশ্লীল ও অশ্রাব্য ভাষায় গালি গালাজ করে প্রাণে মারার হুমকি দেয়। পরবর্তীতে চাচা শামসুদ্দিন বিষয়টি গ্রাম পঞ্চাত কে জানালেও সমাধান না হওয়ায় আইনগতভাবে সমাধানের জন্য সুনামগঞ্জ আদালতে মামলা দায়ের করা হয়।
এব্যাপারে বাদী শামসুদ্দিন বলেন, আমার ভাতিজা জয়নাল ওরূপে মনাই তার স্ত্রী তাছলিমা তার শশুর আসকর আলী আমার বাড়িতে দখলের পায়তারা সরূপ বাড়ির সব গাছপালা কেটে ফেলছে। এতে আমার লাখ টাকা ক্ষতি করেও আমাকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে।
বিবাদী জয়নাল ওরূপে মনাই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,আমি রাজ মিস্ত্রী কাজ করি গাছ কাটার সময় কোথায়, একদিন আমার স্ত্রী তাছলিমা জানায় আমার প্রতিবন্ধী শিশু পুত্র দুটি গাছ কেটে ফেলে। পরে মামলার বাদী আমার চাচা অন্যান্য বাপ চাচাকে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে রাতের আঁধারে আমার চাচা নিজেই গাছ কেটে আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
এ ব্যাপারে মামলার আইনজীবী জানিয়েছেন, এটি সম্পত্তি সংক্রান্ত একটি বিরোধ, যা আদালতে বিচারের মাধ্যমে সমাধান হবে। আদালত ইতিমধ্যে ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে দোয়ারাবাজার থানাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
মামলার তদন্ত কারী কর্মকর্তা দোয়ারাবাজার থানার এসআই মিজানুর রহমান কে মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান দূর্গা-পুজায় অতিরিক্ত দায়িত্ব থাকায় পুজা শেষে তদন্ত করা হবে।
-
নড়াইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের নিষে-ধাজ্ঞা অ-মান্য করে খাল-বিলসহ বিভিন্ন জলাশয় থেকে অবাধে শামুক-ঝিনুক আ-হরণ
উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:
নড়াইলে অবাধে চলছে শামুক-ঝিনুক নিধন
দ্রুত শামুক-ঝিনুক আহরণ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নড়াইলের খাল-বিলসহ বিভিন্ন জলাশয় থেকে অবাধে শামুক-ঝিনুক আহরণ করা হচ্ছে। স্থানীয় ও দক্ষিণাঞ্চলীয় বিভিন্ন জেলার চিংড়ি ঘেরগুলোতে এসব শামুক-ঝিনুক সরবরাহ করা হয়। নড়াইল জেলার প্রায় ৪০টি বিল ও জলাশয় থেকে প্রতিদিন শামুক আহরণ করা হচ্ছে। উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি জানান,
সরেজমিন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার নাকশি, আউড়িয়া, বাড়িরডাঙ্গা, সীতারামপুর, তুলারামপুর, মুলিয়া,বামনহাট, মাইজপাড়া, শাহাবাদ, বরাশুলা, নলামারা, কাড়ারবিল, ফেদি, রতডাঙ্গা, কমলাপুর, কালিরডোব, হাড়িভাঙ্গা গোবরা, মির্জাপুর, আগদিয়া, বাসগ্রাম।
লোহাগড়া উপজেলার ঝুকটিয়া, গিলেতলা, এড়েন্দা, ব্রম্মণডাঙ্গা, নলদী, মিঠাপুর, লাহুড়িয়, কালনা, ইতনা, বাতাসি, দিঘলিয়া, কুমড়ি, তালবাড়িয়া।
কালিয়া উপজেলার চাচুড়ি, ইছামতি, বেন্দারচর, হামিদপুর, কুলশুর, চাদেরচর, কলাবাড়িয়া, বিভিন্ন বিল ও জলাশয় থেকে স্থানীয় দরিদ্র্য মানুষরা ডিঙিনৌকা ও তালের ডোঙা নিয়ে শামুক আহরণ করে নির্দ্দিষ্ট স্থানে জমা করেন। পরে সেখানে বসে শামুকগুলোর খোল থেকে মাংশ ও ঘিলু বের করে একটি পাত্রে রাখেন। ব্যবসায়ীরা এসব শামুক ২৫ টাকা কেজি দরে কিনে নিয়ে যান।
লোহাগড়া উপজেলার নলদী ইউনিয়নের ব্রাম্মণডাঙ্গা গ্রামের সুকুমার বিশ্বাসের স্ত্রী রমলা বালা বলেন, ‘গ্রামের মানসির (মানুষ) দেহাদেহি আমিও তালের ডোঙা নিয়ে ইছামতির বিলি শামুক কুড়োতি যাই। বেলা মাথার পর উঠলি শামুক নিয়ে বাড়ী ফিরে আসি। বাড়ী আসে সেগুলোর খোল থেকে মাংশ ও ঘিলু বের করি। পরে সেগুলো ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে দি। তিনি বলেন, দিন গিলি ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা পাই। তাই দিয়ে সংসার চালাই।’
কালিয়া উপজেলার চাচুড়ি গ্রামের খুশি রানী মালো বলেন, ‘পূব আকাশে ভোরের আলো ফুটার আগেই তালের ডোঙ্গা নিয়ে ঘরেরতে বার হই। বেলা মাথার উপর গিলি বিলিরতে শামুক-ঝিনুক নিয়ে ঘরে ফিরি। পরে সেগুলোর ভিতরেরতে ঘিলু আর মাংশু বার করে ব্যবসায়ীগে কাছে বিক্রি করি। তিনি বলেন, শামুক আর ঝিনুকের খুসা অন্য মানুষগে কাছে বেঁচে দেই। সেখানেরতে আমরা তিন-চারশো টাকার মত পাই। শুনিছি তারা ওই গুলো পুরায়ে চুন বানায়।’
নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও জীববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক বরুন মজুমদার বলেন, বিভিন্ন জলাশয়ের শামুক-ঝিনুকগুলো মিষ্টি পানিতে ভাসমান রসালো জলজ উদ্ভিদ খেয়ে জীবনধারণ করে থাকে। শামুক-ঝিনুকের বালুচর গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এছাড়া শুকনো মওসুমে শামুকের খোলস জমির আদ্রতা কমিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনে। অবিলম্বে শামুক-ঝিনুক আহরণ বন্ধ করা প্রয়োজন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বদরুল আলম বলেন, জলাভূমির জীববৈচিত্র রক্ষার স্বার্থে পরিবেশ অধিদপ্তর জলাশয় থেকে শামুক-ঝিনুক আহরণ নিষিদ্ধ করেছে। এর পরও এক শ্রেণির ঘেরমালিক ও ব্যবসায়ীরা শামুক-ঝিনুক নিধন করে চলেছেন। তিনি দাবি করেন, চিংড়ির জন্য শামুক আহরণের ব্যাপারে ঘেরমালিকদের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি।
-
শারদীয় দুর্গোৎসব ২০২৫, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি-(বিএমজেপি)’র মন্দির পরিদর্শন
কে এম সোয়েব জুয়েল।
শারদীয় দুর্গোৎসব- ২০২৫ উপলক্ষে গতকাল ২৭ সেপ্টেম্বর শনিবার মহাপঞ্চমীতে বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি- (বিএমজেপি) বিভিন্ন মন্দির পরিদর্শন শেষে ঢাকা রামপুরা হাতিরঝিল শ্রী শ্রী রাধাগোবিন্দ মন্দির সার্বজনীন দূর্গা মন্ডপে পূজা উদযাপন কমিটির সাথে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর নেন বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি-(বিএমজেপি)’র সহ-সভাপতি- আর কে মন্ডল (রবিন), এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন পূজা উদযাপন কমিটি নেতৃবৃন্দ ও বাংলাদেশ সরকারের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সম্মানিত কর্মকর্তাগণ।
বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি’র সহ-সভাপতি আর কে মন্ডল রবিন সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে শারদীয় দুর্গাপূজার প্রতিপাদ্য বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন
শাস্ত্রীয় দুর্গোৎসবের ঐতিহ্য দুর্গাপূজা কেবল একটি উৎসব নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিক চেতনার প্রতিচ্ছবি। মুণ্ডমালাতন্ত্রে বলা হয়েছে, “দুর্গার সমান পূজ্যা নেই,” যা এই পূজার গভীরতা ও গুরুত্বকে তুলে ধরে। তবে বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রেই এই উৎসব তার শাস্ত্রীয় তাৎপর্য হারিয়েছে, যা আমাদের সমাজের জন্য কল্যাণকর নয়। আমাদের উচিত, উৎসবকে সাত্ত্বিক চেতনার মাধ্যমে আবার তার সঠিক পথে ফিরিয়ে আনা।
সাত্ত্বিক পূজার মূলমন্ত্র: সরলতা এবং উদ্দেশ্য
শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার সপ্তদশ অধ্যায়ে সুস্পষ্টভাবে তিন প্রকার যজ্ঞ বা পূজার কথা বলা হয়েছে: সাত্ত্বিক, রাজসিক এবং তামসিক। সাত্ত্বিক পূজা হলো সেই পূজা, যা কোনো ফল বা দম্ভের প্রত্যাশা না করে কেবল ঈশ্বরের সন্তুষ্টির জন্য করা হয়। এর বিপরীতে রাজসিক পূজা হলো লোক-দেখানো ও ফল-কামনার জন্য, আর তামসিক পূজা হলো নিয়ম-নীতি, ভক্তি ও শ্রদ্ধা ছাড়া পরিচালিত। আমাদের সবারই প্রচেষ্টা থাকা উচিত, যেন প্রতিটি পূজা সাত্ত্বিক মনোভাব নিয়ে সম্পন্ন হয়। এর মধ্য দিয়ে আমরা নিজেদের আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধন করতে পারব।অর্থের সদ্ব্যবহার: জনকল্যাণে দুর্গোৎসব
দুর্গাপূজার নামে অনেক সময় অর্থের অপচয় হয়, যা শাস্ত্রীয় ভাবনার পরিপন্থী। যদি আমরা শাস্ত্রীয়ভাবে পূজা করি, তাহলে অপ্রয়োজনীয় বাহুল্য পরিহার করে অনেক অর্থ সাশ্রয় করা সম্ভব। এই সাশ্রয়কৃত অর্থ জনকল্যাণে ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন:
শিক্ষাবৃত্তি: অভাবগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা করা।অভাবগ্রস্তদের সহায়তা: দুস্থ ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো।
ধর্মীয় গ্রন্থ প্রচার: বেদ, গীতা এবং সপ্তশতী চণ্ডীর মতো শাস্ত্রগ্রন্থগুলো ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া, যাতে সবাই নিজ ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে পারে।এভাবে দুর্গাপূজা কেবল ব্যক্তিগত উপাসনা নয়, বরং সামগ্রিক সামাজিক কল্যাণের উৎস হয়ে উঠতে পারে।
ঐতিহ্য রক্ষা এবং সুস্থ পরিবেশ
পূজার সময় উচ্চস্বরে গান-বাজনা, ডিজে ও শব্দদূষণ আমাদের উৎসবের পবিত্রতাকে নষ্ট করছে। আমরা এই ধরনের কর্মকাণ্ড পরিহার করে এর পরিবর্তে ধর্মীয় সংগীত, ঐতিহ্যবাহী ধুনুচি নৃত্য এবং ঢাকের ব্যবহারকে উৎসাহিত করতে পারি। এটি একদিকে যেমন আমাদের সংস্কৃতির ঐতিহ্য রক্ষা করবে, অন্যদিকে তেমনি এই উৎসবের ওপর নির্ভরশীল গরিব ঢাকি সম্প্রদায়ের প্রতিও আমাদের মানবিক দায়িত্ব পালন করা হবে। মনে রাখতে হবে, তাদের আর্থিক সুরক্ষা আমাদেরই নিশ্চিত করা উচিত, কারণ তাদের ঢাকের শব্দ ছাড়া পূজার পূর্ণতা আসে না।
পূজার প্রতিমা ও ভাবনার পবিত্রতা
প্রতিমা তৈরি ও বিসর্জনের ক্ষেত্রেও আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। আধুনিকতার নামে রুচিহীন বা কুরুচিপূর্ণ প্রতিমা তৈরি করা থেকে বিরত থাকতে হবে। প্রতিমা এমনভাবে তৈরি করা উচিত, যা দেবীর মাতৃরূপ এবং আধ্যাত্মিক ভাবকে প্রকাশ করে। একইভাবে, প্রতিমা বিসর্জনের সময় উচ্ছৃঙ্খলতা বা অশ্লীলতা নয়, বরং একটি আবেগঘন ও পবিত্র ভাব বজায় রাখা জরুরি। সবশেষে, পূজার পবিত্র দিনে কোনো ধরনের মাদক সেবন থেকে বিরত থাকা এবং শুদ্ধ হৃদয়ে দেবীর আরাধনায় নিজেকে নিবেদন করা উচিত।
আমি বিশ্বাস করি, এই পরিবর্তনগুলো আনার মাধ্যমে আমরা আমাদের দুর্গাপূজাকে আরও অর্থপূর্ণ ও সার্থক করে তুলতে পারব। এই উৎসব যেন কেবল আনন্দ-উচ্ছ্বাসের নয়, বরং আধ্যাত্মিক চেতনা, সামাজিক দায়িত্ববোধ এবং মানব কল্যাণের প্রতীক হয়ে ওঠে।
পরিশেষে বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি-(বিএমজেপি)’র পক্ষ থেকে সকলের প্রতি সর্বজনীন শারদীয় দুর্গাপূজার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন, শারদীয় দুর্গাপূজা সুশৃংখল, উৎসবমুখর ও সার্বজনীন পূজায় রূপান্তরিত হোক দেশবাসীর কাছে এই আহ্বান রাখেন। -
শারদীয় দুর্গাপূজায় শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছে আইউব আলী ফাহিম
পুবাইল প্রতিনিধি:
হিন্দুধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও দুর্গাপূজায় শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছে লতা গ্রুপ অফ কোম্পানির চেয়ারম্যান আইউব আলী ফাহিম।
গাজীপুর মহানগরীর পূবাইলসহ সারা দেশের সকল ধর্মাবলম্বীদের প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, শারদীয় দুর্গা পূজা হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আনন্দ উদ্দীপনা বিরাজ করছে। ধনী, গরিব নির্বিশেষে সবাই যেন এ আনন্দ সমান ভাগে ভাগাভাগি করে এই প্রত্যাশা রাখেন তিনি। কোন বৈষম্য যেন এই উৎসব পালনে স্থান করতে না পারে সে দিকে সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহবান জানিয়েছেন।
তিনি শুভেচ্ছা বার্তায় আরও বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এদেশে সবসময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জল দৃষ্টান্ত চলমান। এখানে সকল ধর্মের মানুষ তাদের ধর্মীয় উৎসব পালন করে। সকলের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন তিনি। -
মানবকণ্ঠের ১৪ বছর পূর্তি:পাঠক, সুশীল সমাজ ও সাংবাদিকদের মিলনমেলা চট্টগ্রামে
শহিদুল ইসলাম,
বিশেষ প্রতিনিধিঃচট্টগ্রামে:দৈনিক মানবকণ্ঠের ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম ব্যুরোর উদ্যোগে পাঠক, সুশীল সমাজ ও বিভিন্ন পেশাজীবীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মানবকণ্ঠ চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান ও চট্টগ্রাম রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর নুর। সঞ্চালনা করেন প্রেস ক্লাব সদস্য নজরুল ইসলাম।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব ও দৈনিক আমারদেশ পত্রিকার আবাসিক সম্পাদক জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও বাসস ব্যুরো প্রধান মোহাম্মদ শাহনওয়াজ, সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সাবেক সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মঈনুদ্দীন কাদেরী শওকত, চট্টগ্রাম রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি কিরন শর্মা, দৈনিক পূর্বদেশ বার্তা সম্পাদক আবু মোশারফ রাসেল, চট্টগ্রাম এডিটরস ক্লাব সভাপতি এম. আলী হোসেন, বাংলাদেশ মানবাধিকার উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এডভোকেট জাফর হায়দার, তরুণ রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার ফয়সাল দস্তগীর, চসিকের সাবেক প্যানেল মেয়র নিয়াজ খানসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন—মানবকণ্ঠের চট্টগ্রাম স্টাফ কোয়ার্টারের দিদারুল আলম, মনিরুজ্জামান টিটু, মো. হোসেন, লায়ন ইমরান, নূর হোসেন, মামুন খান, শিক্ষাবিদ নজরুল ইসলাম খান, মহানগর মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আকলিমা আকতার রিমা, ইয়াসমিন আক্তার, শ্রাবণ তাহুরা কলি, সাংবাদিক এম হোসাইন, তৌহিদুল ইসলাম, জাসাস নেতা আমিনুল ইসলাম রিপন, বাংলাদেশ সাংবাদিক ক্লাবের (বিজেসি) মহাসচিব এম নজরুল ইসলাম খান, বিজেসির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মোঃ খলিলুর রহমান, বিজেসি চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক মোঃ শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পরিবেশনা করেন—বেতার ও টিভি শিল্পী বেবি মজুমদার নুপুর, মৌ চৌধুরী, এসকে মানিক, জিলাল উদ্দীন, বাউল মোজাহের, কবি ও আবৃত্তিকার সোমা মুৎসূর্দ্দীসহ আরও অনেকে।
বক্তারা বলেন, দৈনিক মানবকণ্ঠ ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে একের পর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে চট্টগ্রামজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এ ধরনের সাহসী সাংবাদিকতা জাতীয় ও স্থানীয় কোনো সংবাদমাধ্যম এত দৃঢ়ভাবে উপস্থাপন করতে পারেনি।
পাঠক, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের প্রাণবন্ত উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানটি এক অনন্য মিলনমেলায় রূপ নেয়। মানবকণ্ঠের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা ও দায়িত্বশীল ভূমিকার প্রশংসা করেন উপস্থিত অতিথিরা।
-
আজ শুরু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার
থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি:মথি ত্রিপুরা।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আজ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে শারদীয় দুর্গাপূজার উৎসব । এই উৎসবকে কেন্দ্র করে বান্দরবানের থানচিতেও সারাদেশে ন্যায় বয়ে চলেছে উৎসবের দুর্গাপূজার।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা আজ ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে আগামী ২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গাপূজার উৎসব।
সরেজমিনে দেখা যায়, হিন্দু পাড়া কালি মন্দির ও থানচি কালিমা মন্দিরে ইতোমধ্যে মণ্ডপগুলো রং করাসহ পূজার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়। এই সব তথ্য জানিয়েছেন আয়োজক কমিটির সদস্যরা।
আরও জানা যায়, থানচি উপজেলায় দুইটি পূজা মণ্ডপ রয়েছে।
বলী বাজার হিন্দু পাড়া কালি মন্দির কার্যকরী কমিটির সভাপতি সজল কর্মকার বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে সাজসজ্জার মধ্যে দিয়ে কাজ সম্পন্ন করছি। আজ থেকে শুরু হবে শুভ শারদীয় দুর্গাউৎসব। এই শুভ শারদীয় দুর্গাপূজা সার্বজনীন এখানে পাহাড়ি বাঙালি কোন বিভেদ নেই। সকল ধর্মের মানুষের জন্য পূজা উন্মুক্ত থাকবে, ধর্ম যার যার উৎসব সবার।
আরও জানান,কালি মন্দির কার্যকরী কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডালিম ঘোষ, লোকনাথ পঞ্জিকা অনুযায়ী আজ ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠী, ২৯ সেপ্টেম্বর মহাসপ্তমী, ৩০ সেপ্টেম্বর মহাষ্টমী, ১ অক্টোবর মহানবমী ও ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটবে শারদীয় দুর্গোৎসব। এবছর দেবী দুর্গার মর্ত্যে হাতি দিয়ে আগমন এবং দোলায় পালকিতে গমন হবে।
এই নিয়ে থানচি থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ নাসির উদ্দিন মজুমদার বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পুলিশসহ অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবক দল দুর্গাপূজার মন্ডপে কঠোর ভাবে দায়িত্ব পালন করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।