Category: দেশজুড়ে

  • ১২ অক্টোবর থেকে কঠো-র আন্দোলনে যাচ্ছে বেসরকারি শিক্ষকগণ

    ১২ অক্টোবর থেকে কঠো-র আন্দোলনে যাচ্ছে বেসরকারি শিক্ষকগণ

    লেখকঃ মো: হায়দার আলী।। মাদকের নেশায় যুবসমাজ ধ্বংশের দ্বার প্রান্তে এ বিষয়ে লেখার জন্য খাতা কলম তথ্য, কম্পিউটার নিয়ে বসলাম কিন্তু স্থানীয়, জাতীয়, অনলাইন পত্রিকা, টিভি চ্যালেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ১২ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শিক্ষক আন্দোলন ও অবস্থান কর্মসূচি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্ম বিরোতির বিষয়টি ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লক্ষাধিক শিক্ষক কর্মচারীর উপস্থিতি ঘটানো হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্ম বিরোতী পালন করা হবে।

    নতুনভাবে দ্বিতীয়বার দেশ স্বাধীন হয়েছে, হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন, বিভিন্ন সেক্টরে সংস্কার কাজ চলছে, বৈষম্য দূর হচ্ছে, বেসরকারী শিক্ষক, কর্মচারী এবং সরকারী শিক্ষক কর্মচারীদের সাথে বাড়ীভাড়া, মেডিকেল ভাতা বেতনের আকাশ পাতাল পার্থক্য রয়েছে। সুযোগ সুবিধারও অনেক বৈষম্য রয়েছে, তাই লিখার থিম পরিবর্তন করে বেসরকারী শিক্ষক কর্মচারীদের আন্দোলন, তাদের সুযোগ সুবিধার বৈষম্যের ব্যাপারে তথ্য উপাত্ত নিয়ে আল্লাহ্‌র নাম নিয়ে লিখা শুরু করলাম জানি না বেসরকারী শিক্ষক সমাজের কতটা উপকারে আসে।

    বিগত দিনে জাতীয় প্রেসক্লাবে এমপিওভুক্ত বেসরকারী শিক্ষক, কর্মচারীগণ জাতীয়করণের জন্য দিনের পর দিন আন্দোলন করছেন, স্কুলে স্কুলে তালা ঝুঁলিছেন, বেশীরভাগ শিক্ষক আন্দোলনে ঢাকায় অবস্থান করছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় নি দুর্নীতিবাজ লুটপাটকারী সাবেক প্রধানমন্ত্রী তার দোসর আমলা ও শিক্ষামন্ত্রীদের কারণে।

    প্রথমে শিক্ষা কি এ বিষয়ে আগে জানা দরকার। সক্রেটিসের ভাষায়, ‘শিক্ষা হল মিথ্যার অপনোদন ও সত্যের বিকাশ। এরিস্টটলের মতে ”সুস্থ দেহে সুস্থ মন তৈরি করাই হল শিক্ষা’’। বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, ‘শিক্ষা হল তাই যা আমাদের কেবল তথ্য পরিবেশনই করে না বিশ্বসত্তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের জীবনকে গড়ে তোলে’।

    এ থেকে স্পষ্ট শিক্ষা কোন সাধারন বিষয় নয়। আর একটি আসাধারণ বিষয়কে সাধারন, সাবলীল ভাবে যিনি তুলে ধরেন তিনিই শিক্ষক। এই শিক্ষকই যখন তাদের অধিকার আদায়ের জন্য স্বোচ্চার হন তখন হয়ে যান পাগল। কারন শিক্ষকরাতো শুধু দিয়েই যাবেন। তারা চাইবেন কেন?!

    একটি উন্নয়নশীল দেশের উন্নতি নির্ভর করে প্রথমত সে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর। আমাদের দেশের উন্নয়ন নির্ভর করে শিক্ষকদের ত্যাগের উপর। বেসরকারী এমপিও ভুক্ত শিক্ষকদের কথা। ছোটবেলায় শিক্ষকদের দেখেছি তাদের বেতন বৃদ্ধির জন্য আন্দোলন করতে। এস.এস.সি পরীক্ষা বর্জন করেছিলেন। ওই সরকারী অফিসের পিওন, কর্মচারীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করতে।

    এখন দেশ এগিয়ে গিয়েছে। সবার মাথাপিছু আয় বেড়েছে। কিন্তু বেসরকারী শিক্ষকদের অবস্থার পরিবর্তন হয় নি। অষ্টম পে-স্কেলে শিক্ষকদের বেতন বেড়ে দ্বিগুন হয়েছে। তবুও কেন আন্দোলন? হতাশার শুরু ঐখান থেকেই। অষ্টম পে-স্কেলের আওতায় শুরু হলো বৈশাখী ভাতা। পহেলা বৈশাখের বাজারে সরকারি চাকরিজীবীদের হাতে ঝোলানো রূপালি ইলিশের ঝলকানিতে শিক্ষকরা চোখে ঝাপসা দেখছেন প্রতিবছর, সেখনে কয়েক বছর পরে বৈশাখী ভাতায় যুক্ত করায় বেসরকারি শিক্ষকগণ বেরিয়ে এসেছেন বৈষম্য কিছুটা দূর হয়েছে।

    ৫ অক্টোবর, শিক্ষক দিবসে সরকার এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা ৫০০ টাকা বাড়িয়েছেন,যা ফলাও করে মিডিয়ায় প্রচারিত হয়েছে। আগে ছিল ১ হাজার টাকা। এখন বাড়িভাড়া ভাতা পাবেন ১৫০০ টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে। তবে ৫০০ টাকা বৃদ্ধির সরকারি এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন বেসরকারি শিক্ষকরা। ৫০০ টাকা বাড়ী ভাড়া প্রত্যাখান, ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা, উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন প্রতিবাদ জানিয়েছেন বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক সমাজ।

    অর্থ বিভাগের প্রবিধি অনুবিভাগের উপসচিব মোছা. শরীফুন্নেসা গত রোববার গণমাধ্যমকে বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া ভাতা বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করে আদেশ জারি করে তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগে পাঠানো হয়েছে। তবে শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করে মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫০০ টাকা করার দাবিতে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন। দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্ম বিরোতি পালন করবেন।

    অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও বাস্তব সত্য
    এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের জাতীয় পে স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী বেতনের আনুপাতিক হারে বাড়ি ভাড়া-ভাতা বাড়াতে ও চাকরির অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

    গত বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া এ নোটিশ পাঠান আদালত নোটিশে বলা হয়, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৩০ হাজার এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেখানে প্রায় ৬ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত। ২০০৬ সাল থেকে তারা সরকারি কোষাগার থেকে শতভাগ বেতন পেলেও বাড়িভাড়া ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা থেকে তারা বঞ্চিত। অথচ সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা জাতীয় পে স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী বাড়িভাড়া ভাতা পাচ্ছেন।

    নোটিশে আরও বলা হয়েছে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে মাত্র ৫০০ টাকা বাড়িভাড়া ভাতা নির্ধারণ করে, যা বর্তমান বাজার পরিস্থিতি ও জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে সম্পূর্ণ অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং শিক্ষক সমাজের প্রতি অবমাননাকর।

    অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া নোটিসে উল্লেখ করেন, আমি মনে করি— এই বৈষম্যমূলক আচরণ বাংলাদেশ সংবিধানের ২৭, ২৯ ও ৩১ অনুচ্ছেদের পরিপন্থি। এছাড়া অন্যান্য সরকারি চাকরিজীবীরা বেতনভাতার হারে বাড়ি ভাড়া ও অন্যান্য সুবিধাদি পাচ্ছেন, কিন্তু এমপিভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের এ অধিকার থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত করা হচ্ছে, যা বৈষম্যমূলক। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক কর্মচারীরা আন্দোলন সংগ্রাম করলেন, কিন্তু তাদের প্রতি কোনও ন্যায়বিচার করা হচ্ছে না, এটা তাদের প্রতি অবিচার এবং আমলাতান্ত্রিক ষড়যন্ত্র বলে আমি মনে করি। বেতনের আনুপাতিক হারে কর্মচারীদের ন্যায় এমপিভুক্ত শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া পাবে, এটা তাদের চাকরির আইনে অধিকার এবং মৌলিক অধিকার, যখন সারা বাংলাদেশ জাতীয় নির্বাচনমুখি, সে সময় শিক্ষক কর্মচারীদের রাস্তায় আন্দোলন করতে বাধ্য করা অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি করবে।

    তাই এ অবস্থায় সব কর্তৃপক্ষের প্রতি আমার জোর অনুরোধ থাকবে আগামী ৩ দিনের মধ্যে সারা বাংলাদেশে কর্মরত এমপিভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের পে-স্কেল অনুযায়ী প্রাপ্য বেতনের হারে, যা অন্যান্য সব সরকারি কর্মচারীদের দেওয়া হয়, সে অনুযায়ী এমপিভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী বাড়ি ভাড়া নির্ধারণ করার অনুরোধ করছি। অন্যথায়, উচ্চ আদালতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

    দেশে ২০ হাজার ৯৬০টি মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। বিপরীতে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে ৬৮৪টি। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় এক কোটিরও বেশী। শিক্ষক রয়েছেন সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ছয় লাখের মত। বেসরকারী শিক্ষকেরা যে পরিমাণ বেতন–ভাতা পেয়ে থাকেন, তা দিয়ে পরিবার চালানো বেশ কষ্টসাধ্য—মাধ্যমিক শিক্ষকদের এই আহাজারি দীর্ঘদিনের। এমপিওভুক্ত একজন সহকারী শিক্ষক এম.এ পাস করে বেতন ভাতা পান মাত্র ১২৫০০/- টাকা এবং শিক্ষকেরা ৫০ শতাংশ উৎসব ভাতা, ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া এবং ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। এককই কারিকুলামের অধীনে থেকেও সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষকদের মধ্যে বৈষম্য রয়েছে পহাড়সম।

    এসব বৈষম্যের মাঝে হাবুডুবু খাচ্ছে এ শিক্ষক সমাজ। পাঠদান করাবেন কি বাতাস খেয়ে। শিক্ষপ্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন, ক্লাস বর্জন, আমরণ অন্বেষণ ইত্যাদি। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পড়ে থাকে পলিথিনে মোড়ানো বিবেকের লাশ। কেউ দেখার নেই, কেউ শোনারও নেই। বুদ্ধিজীবী সুশীল সমাজ বুদ্ধি বিক্রি করেন টেলিভিশনের টকশোতে। বেসরকারি শিক্ষকদের নিয়ে ভাববার সময় ছিল না, এখনও নেই।

    জাতীয়করণ নিয়ে অনেক লেখালেখি হয়েছে। আমি নিজেও লিখেছি বহুবার বিগত সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিটি উপজেলায় একটি স্কুল ও ১টি কলেজ জাতীয়করণের জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি, দলীয় করণের প্রভাবে ওই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কোটি কোটি টাকা উৎকোচ নিয়ে করা হয়েছে সরকারীকরন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতি এক থেকে দেড়কোটি টাকা, যা শিক্ষক কর্মচারী নিকট থেকে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা চাঁদাবাজী করা হয়েছে। এদের কেউ কেউ সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মত বেতন ভাতা সুযোগ সুবিধাও পাচ্ছেন। কিন্তু অনেক অযোগ্য প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্ত হওয়ায় বেড়েছে দ্বিমত, সংঘাত, আন্দোলন, হাইকোর্টে রীট এবং প্রাণ গিয়েছে শিক্ষকের। এভাবে বিক্ষিপ্ত জাতীয়করণ শিক্ষাক্ষেত্রে আসলেই কি সুফল বয়ে আনতে পারে কী? নতুন বৈষম্যমুক্তি বাংলাদেশ গড়তে হলে শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ করতেই হবে।

    গত বছর আমরণ অন্বেষন থেকে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ছিলেন একশ পঞ্চাশ জন শিক্ষক কিন্তু তাতে কি হয়েছে? মারা গেছেন কয়েকজন শিক্ষক, তারপরেও টনক নড়েনি স্বৈরাচারী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দুর্নীতিবাজ আমলা ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনির। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য কমানো নিয়ে শিক্ষকদের দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু এই বৈষম্য কমানোর বিষয় বিগত সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কোন সাড়া পাননি শিক্ষকরা। এ কারণে ধীরে ধীরে শিক্ষকদের ক্ষোভ বেড়েছে ।

    শুধু কী তাই, প্রধান শিক্ষক ও সহকারি প্রধান শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল প্রদান না করার ফলে উচ্চতর স্কেলপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষকদের বেতন স্কেল ও সহকারি প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল সমান হওয়ায় সহকারি প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে। তাদের চাকুরী করায় বিপদ হয়েছে। বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। ফলে অনেক শিক্ষক/কর্মচারী টাকা পাওয়ার আগেই অর্থাভাবে বিনা চিকৎসায় মৃত্যুবরণ করেন। তাছাড়া কয়েক বছর ধরে কোনো প্রকার সুবিধা না দিয়েই অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন করা হয়েই যা অত্যন্ত অমানবিক। তাই অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তনের প্রতিবাদে শিক্ষক সমাজ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলসহ অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্ট অফিস ঘেরাও করতে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু অদ্যাবধি কোনো প্রতিকার পাননি।

    শিক্ষা নামক মৌলিক অধিকারটি আজ পণ্যে পরিণত হতে চলেছে। সরকারীকরণের বর্তমান প্রক্রিয়া চলতে থাকলে শিক্ষা সাধারণের নাগালের বাইরে চলে যাবে। বিরাজমান শিক্ষার মানের বৈষম্য আরও বেড়ে যাবে। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, এতে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে গোটা জাতি।

    এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তথা শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ। নিশ্চিত হবে রাষ্ট্রীয় সম্পদের সুষম বন্টন। আর জনগনই তো রাষ্ট্রের মালিক!
    আপনাদের শিক্ষা, জ্ঞান যদি কোন শিক্ষক দিয়ে থাকেন তবে দয়া করে সেই মহান শিক্ষকের উছিলায়, বেসরকারি শিক্ষকদের কথা ভাবুন। শিক্ষকদের গাছে তুলে দিয়ে মই টান দিবেন না। মই না থাকলে দেশের নব্বই শতাংশ শিক্ষার্থীও গাছে উঠতে পারবে না। এই শিক্ষার্থীদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলে একটি সুন্দর জাতি গঠন করে দেশকে সমৃদ্ধ করায় আমরাও অঙ্গিকারবদ্ধ। আমরা আবেগ দিয়ে বিবেক বিসর্জন দিতে চাই না।

    শিক্ষকরা যদি জাতি গড়ার কারিগর হয়ে থাকেন তবে এই আন্দোলন জাতির বিবেকের আন্দোলন। মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ ও শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য দূরিকরণের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি আব্যাহতভাবে করে থাকেন।

    বেসরকারি যেসব শিক্ষক-কর্মচারী এখনও জাতীয়করণের আওতায় আসেননি, তাদের আর্থিক দুর্দশার বিষয়টি না বোঝার কথা নয়। কিন্তু জাতীয়করণের দাবি পূরণের জন্য আন্দোলন একটি সময় উপযোগি পদক্ষেপ।
    বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের পরিবারের সদস্যদের দুঃখ, কান্নার কথা, দ্রব্যমূল্যের বাজারে উদ্ধোগতির কথা ভেবে মানবতার ফেরিওয়ালা শান্তিতে নবেল বিজয়ী এব্যপারে একটি গ্রহনযোগ্য পদক্ষেপ নিতে পারেন, কেন আপনি শিক্ষকদের শেষ আশ্রয়স্থল।

    প্রধান উপদেষ্টাসহ সকল উপদেষ্টা গণের কাছে বেসরকারী মাধ্যমিক শিক্ষক সমাজের আকুল আবেদন, সমস্যাটি মানবিক কারণে সহৃদয়তার সঙ্গে বিবেচনা করুন। সাড়ে ছয় লাখ বেসরকারী শিক্ষকদের জীবন স্বচ্ছন্দময় হয়ে উঠতে পারে। তারা তো ছাত্রছাত্রী পড়াচ্ছেনই। তাদের শ্রম ও মেধার মূল্যায়ন করা রাষ্ট্রের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে।
    শিক্ষাভবনের প্রভাবশালি কর্মকর্তাগণ কিছু মনগড়া সৃষ্টি করে রেখেছেন, সকল শিক্ষকগণ ১৬ বছরে দ্বিতীয় উচ্চতর স্কেল পেলেও প্রধান শিক্ষক, সহকারি প্রধান শিক্ষক, অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, সুপার, সহঃ সুপারগণ দ্বিতীয় উচ্চতর স্কেল পাচ্ছেন না। এটা কি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সহঃ প্রধানদের সাথে চরম অপমানজনক, একদেশে দুই নিয়ম এ যেন একচোখে তেল অন্য চোখে লবন দেয়ারমত অবস্থা।

    একটি পরিসংখ্য তুলে ধরিঃ দেশে সর্বমোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৬৫ হাজার ৫৬৫ টি। সরকারি ইবতেদায়ী মাদ্রাসার সংখ্যা: ০০টি।
    সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা: ৬২৮ টি। সরকারি দাখিল মাদ্রাসার সংখ্যা: ০০টি।
    সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজের সংখ্যা: ৬৩ টি। সরকারি দাখিল অ্যান্ড আলিম মাদ্রাসা: ০০টি। সরকারি কলেজের সংখ্যা: ৫৪ টি।
    সরকারি আলিম মাদ্রাসার সংখ্যা: ০০টি।
    সরকারি ডিগ্রি (পাস)+ অনার্স কলেজের সংখ্যা: ৪৪৬ টি। সরকারি ফাজিল মাদ্রাসার সংখ্যা: ০০টি। সরকারি স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) কলেজের সংখ্যা: ১৯৮ টি।
    সরকারি স্নাতকোত্তর (কামিল) মাদ্রাসার সংখ্যা : ০৩ টি। একমাত্র সরকারি আলিয়া তিনটি হলো যথাক্রমে- সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া, ঢাকা, সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া, সিলেট, সরকারি মুস্তাফাবিয়া আলিয়া মাদ্রাসা, বগুড়া।

    এ সরকারই পারেন বৈষম্য দূর করতে প্রধান শিক্ষক, সহঃ প্রধানদের মাঝে হতাশা কাটিয়ে সুদিন ফিরিয়ে আন্তে। শিক্ষকগণ নানামূখি সমস্যায় মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। তাদের নুন আন্তে পান্তা ফুরায় অবস্থা। বেসরকারী শিক্ষকদের প্রাণের দাবী, বেসরকারী শিক্ষকদের শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ ঘোষনা হউক, এ কাজ টি করতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা।

    শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড হলে শিক্ষকরা শিক্ষার মেরুদন্ড। কিন্তু আজ শিক্ষক সমাজ অবহেলিত ও বিভিন্নভাবে হয়রানি-নির্যাতনের শিকার। শিক্ষকদের চাকরির নিরাপত্তা, আর্থিক স্বচ্ছলতা, সামাজিক মর্যাদা নেই বলে মেধাবীরা এই পেশায় আসতে চান না। বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিক্ষকরা রাজনৈতিক হয়রানির শিকার হয়ে চাকরি হারিয়ে পথে পথে ঘুরছেন। শিক্ষকদের চাকরির নিরাপত্তা নেই বলেই আজ শিক্ষার বেহাল অবস্থা।
    শিক্ষাক্ষেত্রে আজ পর্বতসম বৈষম্য বিদ্যমান। সরকারি বেসরকারি স্কুল কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষক-কর্মচারীদের সমযোগ্যতা ও সমঅভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও সরকারি স্কুল ও বেসকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেলে পার্থক্য রয়েছে। সরকারি স্কুল-কলেজের ছাত্রদের যে সিলেবাস বেসরকারি স্কুল-কলেজের ছাত্রদের ও একই সিলেবাসে পড়ানো হয়। কিন্তু তাদের পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা ও বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট দেয়া হয়। বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারীদের ৫০% উৎসব ভাতা দেওয়া হয়। বেসরকারি স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষকদের সাথে ইহা বিমাতাসুলভ আচরণের বহিঃপ্রকাশ।

    শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সর্বপ্রথম বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারীদের ১/১/১৯৮০ থেকে জাতীয় বেতনর স্কেলের অন্তুর্ভূক্ত করেন এবং ৫০% বেতন স্কেল প্রদান করেন। পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট হুসাইন মুহম্মদ এরশাদ ১০%+১০% = ২০% প্রদান করেন। ১৯৯৪ সালের শিক্ষক আন্দোলনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ১০%, ২০০০ সনে আন্দোলনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০% এবং সর্বশেষ ২০০৬ সনে প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ১০% বেতন প্রদান করে ১০০% এ উন্নীত করেন। এখন চাকুরী জাতীয়করণের কোন বিকল্প নেই। চাকুরী জাতীয়করণের জন্য সরকারের অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন নেই।
    বর্তমানে শিক্ষক কর্মচারীরা সরকার থেকে ১০০% বেতন পান। এজন্য সরকারকে প্রদান করতে হয় প্রতি মাসে প্রায় ১০০০ কোটি টাকা মাত্র। ১২ মাসে সরকারকে দিতে হয় ১২০০০ কোটি টাকা মাত্র।
    প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ হলে সরকারকে প্রদান করতে হবে মোট প্রায় ১৭৮২০ কোটি টাকা প্রায়।

    বর্তমান সরকার বেতন বাবদ প্রদান করছে ১২০০০ কোটি টাকা। অতিরিক্ত প্রদান করতে হবে প্রায় ৫৮২০ কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠান থেকে সরকারের আয় হবে প্রায় ৫ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।
    শিক্ষকগণ হচ্ছেন জাতির বিবেক ও মূল্যবোধ সংরক্ষণের ধারক ও বাহক। শিক্ষার সংস্কার, সম্প্রসারণ ও মান উন্নয়নে সরকার বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিবেন বলে শিক্ষক সমাজ প্রত্যাশা করে।

    মানসম্মত শিক্ষা ও মেধাবী জাতি গঠনে জাতীয়করণের বিকল্প নেই। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য স্বল্পোন্নত দেশের তুলনায় শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে আমাদের অবস্থান তলানীতে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা হাস্যরসের খোরাক হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।

    সর্বোচ্চ পর্যায়ে শিক্ষাখাতকে প্রাধান্য দেয়া, মাধ্যমিক শিক্ষাকে গতিশীল করা, মাধ্যমিক পর্যায়ে মেধাবিকাশে প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা চালুকরণ জাতীয়করণ ছাড়া সম্ভব নয়।
    বর্তমানে শিক্ষকতার পেশাটাকে মুখে মুখে সম্মানজনক পেশা বলা হলেও গ্রেড অনুপাতে বেতন, কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর বোর্ডের আচরণ, বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা আর সিঁকি উৎসবভাতা কিন্তু অন্যটা প্রমাণ করে। আমরা যে শতভাগ অবহেলা আর বঞ্চনার শিকার তা কিন্তু এই বেতন ও সামান্য সুবিধা প্রমাণ করে। অন্যান্য চাকরি বঞ্চিত হলে একান্ত বাধ্য হয়ে তারা এ পেশায় এলেও বেতন, ভাতা ও মূর্খ পরিচালনা কমিটি দেখে পড়ানোর মানসিকতা পরিবর্তন করে তারা এটাকে চাকরি হিসেবে বেছে নেয় সেবা হিসেবে নয়। এটা জাতির জন্য অশনিসংকেত।
    অভাবগ্রস্ত শিক্ষকরা মানসিক ভাবেও বিপদগ্রস্ত। অভাব যখন চারদিকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে থাকে তখন নিদারুণ কষ্টের ভান্ডার থেকে সৃজনশীল কিছু পাওয়ার চিন্তাই বৃথা। তাই অতিশীঘ্র জাতীয়করণ না হলে এ শিক্ষা ব্যবস্থায় অরাজকতা বৃদ্ধি পাবে, শিক্ষায় প্রতিযোগিতা আরও কমবে এবং এসব সেক্টরে প্রচন্ড অসন্তুষ্টি দেখা দেবে। আমাদের দেশের চেয়েও অনুন্নত বেশ কয়েকটি এশিয়ান রাষ্ট্রে শিক্ষা খাতে সর্বনিম্ন জিডিপি ৩.৫০ বা ৪ শতাংশ সেখানে উন্নয়নশীল রাষ্ট্র হয়েও আমাদের জিডিপি ২.০৯ শতাংশ। এটা জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক। দেশের মাধ্যমিক, উচ্চ শিক্ষাসহ সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রাণবন্ত করতে, আশানুরূপ ফলাফল পেতে জাতীয়করণ একান্ত প্রয়োজন। বিশাল বাজেটের আংশিক এবং প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের আয় জমা নিয়ে জাতীয়করণ করলে শিক্ষক/শিক্ষার্থী/ অভিভাবকগন যেমন উপকৃত হবে তেমনি আমাদের শিক্ষায় আন্তর্জাতিক মান ও কৌশল অবলম্বন করে বাস্তবিক প্রয়োগ সম্ভব হবে। বেসরকারি শিক্ষকদের হাহাকার নিরসনে এখনই জাতীয়করণের মোক্ষম সুযোগ।

    বেসকারী শিক্ষকদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে বেসরকারী শিক্ষক সমাজের প্রাণের দাবী একটা সেটা হলো, সরকারী ও বেসরকারী শিক্ষকদের পাহাড়সম বৈষম্য দূর করতে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একযোগে জাতীয়করণ করার । এ ঘোষনার অপেক্ষায় শিক্ষক সমাজ তীর্থের কাকের ন্যায় চেয়ে আছেন। কঠিন কাজটি করার জন্য বেসরকারী শিক্ষক পারিবারের লাখ লাখ সদস্য আপনাদের জন্য জায়নামাজে দাঁড়িয়ে মহান আল্লাহ্‌র দরবারে প্রার্থনা করবেন। দেশে বিদেশে বেসরকারী শিক্ষকদের জীবনধারার উন্নয়নের জন্য প্রশাংসিত হবেন। এর জন্য যেটা বিনিয়োগ করবেন সেটা হবে শ্রেষ্ঠ বিনিয়োগ। কোটি কোটি শিক্ষার্থীদের আর ক্ষতি হবে না। বেসরকারি শিক্ষকসমাজ শ্রেণীকক্ষে ফিরে যাবেন।

    লেখক: মো. হায়দার আলী
    গোদাগাড়ী,রাজশাহী ।

  • গোদাগাড়ীতে গ্যাসের বেলুন বি-স্ফোরণে ৭ জন গু-রুতর দ-গ্ধ

    গোদাগাড়ীতে গ্যাসের বেলুন বি-স্ফোরণে ৭ জন গু-রুতর দ-গ্ধ

    নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহীঃ রাজশাহী রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কলিপুর এলাকায় গ্যাসের বেলুন বিস্ফোরণে ৭জন গুরুতর দগ্ধ হয়েছেন। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বেলা সোয়া ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

    দগ্ধরা হলেন-গোদাগাড়ী উপজেলার সহাপানিয়া গ্রামের জলাশ্বরী (৩৫), মাটিকাটা গ্রামের রাজিকুল (৬৫), নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার হাজরাপুকুর গ্রামের একরামুল (৫৪), এককই উপজেলার পুড়াপাড়া গ্রামের রনি (২৫) এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ এলাকার হামিম (২০)। তাঁদের সবাইকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

    এ ছাড়া তানোর উপজেলার বৈদ্যপুর গ্রামের সখিনা (৩৫) ও গোদাগাড়ী পৌরসভার ফাজিলপুর গ্রামের রায়হান প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন বলে জানিয়েছেন গোদাগাড়ী ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের কর্তব্যরত সিনিয়র নার্স আব্দুস সালাম।

    প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গোদাগাড়ী থেকে আমনুরাগামী একটি অটোরিকশার পেছনে প্রায় ৪০টি গ্যাসের বেলুন বেঁধে নেওয়া হচ্ছিল। পথে কলিপুর এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ করে বেলুনগুলো বিস্ফোরিত হয়। এতে বিকট শব্দে অটোরিকশার ভেতরের যাত্রীরা দগ্ধ হন। এ অবস্থায় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। হোন্ডা, সাইকেল, আটো, ভ্যানে করে হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা করেন এলাকার মানুষ।

    মোঃ হায়দার আলী
    রাজশাহী ।

  • মহেশপুরে পানিতে ডু-বে শিশুর মৃ-ত্যু

    মহেশপুরে পানিতে ডু-বে শিশুর মৃ-ত্যু

    শহিদুল ইসলাম,

    মহেশপুর (ঝিনাইদহ) সংবাদদাতাঃ-
    ১০ অক্টোবর দুপুরে বাড়ীর পাশের পুকুরে বন্ধুদের সাথে গোসল করতে গিয়ে পুকুরের পানিতে ডুবে ইয়াকিম (৭) নামে এক শিশুর মৃ*/ত্যু হয়েছে! (ইন্না লিল্লহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)
    ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার নেপা ইউপির সেজিয়া তাল বাগান পাড়া গ্রামে। সে ঐ গ্রামের রেজাউল ইসলামের ছেলে। তার এমন মৃ-/ত্যু তে পরিবার ও এলাকা জুড়ে বইছে শোকের মাতম বইছে
    সবাই বাচ্চাটির জন্য দোয়া করবেন, মহান আল্লাহ তাআ’লা যেনো তাকে জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করেন আমিন।

  • তরুণদের ক-ণ্ঠে জলবায়ু বার্তা: ‘ভয়েস অফ ক্লাইমেট’ ফ্ল্যাশমবে স্থানীয় দা-বি বিশ্ব মঞ্চে

    তরুণদের ক-ণ্ঠে জলবায়ু বার্তা: ‘ভয়েস অফ ক্লাইমেট’ ফ্ল্যাশমবে স্থানীয় দা-বি বিশ্ব মঞ্চে

    মো.খাইরুল ইসলাম মুন্না।।

    জলবায়ু পরিবর্তনের স্থানীয় সমস্যা ও দাবিগুলোকে বৈশ্বিক নীতিনির্ধারণের আলোচনায় তুলে ধরার উদ্দেশ্যে বরিশালে অনুষ্ঠিত হয়েছে এক অনন্য ফ্ল্যা ‘Voices of Climate: Our Climate, Our Future’। এই কার্যক্রমের আয়োজন করে জাগো ফাউন্ডেশন-এর যুব শাখা ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ বরিশাল জেলা টিম।

    শুক্রবার বিকাল ৫টায় বরিশাল শহরের প্রাণকেন্দ্র চৌমাথা লেকপাড়ে আয়োজিত এই ফ্ল্যাশমবটি ছিল ‘Voices of Climate’ ক্যাম্পেইনের অংশ, যা ব্রাজিলে আসন্ন COP-30 সম্মেলনে বাংলাদেশের তরুণদের কণ্ঠস্বর পৌঁছে দেওয়ার বৃহত্তর উদ্যোগের একটি অংশ।
    ফ্ল্যাশমবে অংশগ্রহণকারী তরুণরা সৃজনশীল পরিবেশনা, বার্তা ও প্রতীকী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জলবায়ু সংকট, স্থানীয় সমস্যা ও টেকসই সমাধানের দাবি প্রকাশ করেন। সাধারণ মানুষের ভিড়ে তরুণদের এ উদ্ভাবনী প্রচারণা ব্যাপক সাড়া তোলে।
    ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ বরিশাল জেলা সভাপতি সুমন রহমান বলেন, “বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ প্রতিদিন জলবায়ু সংকটের প্রভাব অনুভব করছেন, কিন্তু তাদের কণ্ঠস্বর সচরাচর আন্তর্জাতিক পরিসরে পৌঁছায় না। আমাদের এই ফ্ল্যাশমবের উদ্দেশ্য ছিল সেই গল্পগুলোকে জীবন্তভাবে উপস্থাপন করা, যাতে বিশ্বনেতারা তরুণদের বার্তা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেন।”

    জাতীয় পর্যায়ে ক্যাম্পেইনের প্রভাব ‘Voices of Climate: Our Climate, Our Future’ ক্যাম্পেইনটি দেশের আটটি বিভাগের ১৬টি যুব নেতৃত্বাধীন সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত হচ্ছে। ফ্ল্যাশমবের পাশাপাশি ক্যাম্পেইনের আওতায় ১১২টিরও বেশি শিক্ষামূলক ভিডিও তৈরি হচ্ছে, যা জলবায়ু পরিবর্তন ও আচরণগত পরিবর্তন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করবে।

    সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ অংশ হিসেবে তরুণদের সম্মিলিত দাবি ও সুপারিশসমূহকে একত্র করে একটি বিশেষ ‘Climate Capsule’ তৈরি করা হবে, যা COP-30-এ বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হবে।

    এই ক্যাম্পেইনে পোশাক প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ‘Gildan’ সহযোগী হিসেবে এবং ‘একশনএইড বাংলাদেশ’ নলেজ পার্টনার হিসেবে যুক্ত রয়েছে।

    সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, তরুণদের এমন সক্রিয় অংশগ্রহণ ও সচেতনতামূলক উদ্যোগ বাংলাদেশের পরিবেশ আন্দোলনকে আরও গতিশীল করে তুলবে এবং জলবায়ু ন্যায়বিচারের দাবিকে শক্তিশালী করবে।

  • ময়মনসিংহে জামায়াতে যোগ দিলেন  বিএনপি স-মর্থিত কয়েকজন আইনজীবী

    ময়মনসিংহে জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি স-মর্থিত কয়েকজন আইনজীবী

    ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

    ময়মনসিংহের বিএনপির ত্যাগী কয়েকজন নেতা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দিয়েছেন। এদের মধ্যে একজন গৌরীপুর উপজেলা বিএনপির
    যুগ্ন আহ্বায়ক-২।

    বৃহস্পতিবার (৯অক্টোবর) ময়মনসিংহ আইনজীবী সমিতিতে বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিল ময়মনসিংহ বার ইউনিট কর্তৃক আয়োজিত পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন বিষয়ক সেমিনারে আনুষ্ঠানিক ভাবে তিনি বিএনপি থেকে জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেন।
    ময়মনসিংহ আইনজীবী সমিতির অন্যান্য আইনজীবীগণের উপস্থিতিতে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দলটিতে যোগ দেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রধান অতিথি মহানগর জামায়াতের আমির, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ময়মনসিংহ মহানগর এর আমীর, ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা কামরুল আহসান এমরুল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

    জামায়াতে যোগ দেওয়া ওই বিএনপি নেতার নাম
    অ্যাডভোকেট আব্দুস সুবাহান সুলতান। তিনি
    গৌরীপুর উপজেলা ছাত্রদল এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক, ময়মনসিংহ জেলা উত্তর বিএনপির সাবেক সদস্য,গৌরীপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক (২য়), পেশায় একজন সিনিয়র আইনজীবি।
    বিগত সময়ে আওয়ামী বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় তিনি বহু অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। এলাকায় তিনি ত্যাগী নেতা হিসেবেই পরিচিত।

    এডভোকেট সাকিন মোঃ শহিদুল্লাহর সঞ্চালনায় এডভোকেট এ.কে.এম আমানউল্লাহ বাদল এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে আরো এডভোকেট আমিনুল ইসলাম, এডভোকেট শামিম হাসান, এডভোকেট মিজানুর রহমান সহ বেশ কয়েকজন আইনজীবীরাও যোগদান করেছেন।

    নতুন যোগদানের পর তাদেরকে ফুল দিয়ে বরন করে নেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি, সভাপতি, বিশেষ অতিথিবৃন্দ। নতুন যোগদানকৃত সদস্যগণ তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। তারা ময়মনসিংহে আইনজীবীদের অধিকার, বিচার প্রার্থীদের সেবা নিশ্চিত, ইনসাফ ভিত্তিক একটি রাষ্ট্র গঠনের ভুমিকা রাখার কথা ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ব্যাংকার এটিএম সারোয়ার হোসেন , মহানগর জামায়াত এর বায়তুল মাল সেক্রেটারি গোলাম মহসিন খান সহ ল’ইয়ার্স কাউন্সিল, ময়মনসিংহ ইউনিট এর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

    জামায়াতে যোগ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে সদ্য সাবেক বিএনপি নেতা সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুস সুবাহান সুলতান বলেন, ‘আমি অনেক চিন্তা-ভাবনা করে স্বেচ্ছায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দিয়েছি। বিএনপির সকল পর্যায় থেকে লিখিতভাবে ইস্তফা দিয়েছি। কারও প্রতি কোনও বিদ্বেষ কিংবা মনোমালিন্য থেকে বিএনপি বাদ দেইনি। নেতা হতে নয়, জেনে বুঝে ভালো লাগা থেকে জামায়াতে যোগ দিয়েছি। এখন থেকে জামায়াতের সঙ্গেই থাকতে চাই।’

    মহানগর জামায়াতের আমির মাওলানা কামরুল আহসান এমরুল বলেন, সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুস সুবাহান সুলতান
    কয়েকদিন আগে থেকে জামায়াতে যোগদান করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকায় আমরা তাকে আগে সেখান থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরামর্শ দেই। তিনি ইস্তফা দিয়ে বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেছেন।’

    বিএনপি থেকে এসে জামায়াতে নেতৃত্ব পাওয়া নিয়ে প্রশ্নে মাওলানা এমরুল বলেন, ‘প্রশ্নই আসে না। জামায়াতে যোগ দিলেই নেতা হওয়া যায় না। এখানে কর্মী হতে হলে নিয়মিত নামাজ আদায়সহ সিলেবাসভুক্ত বই পড়তে হয়, ব্যক্তিগত রিপোর্ট রাখতে হয়। ব্যক্তিগত মানোন্নয়নসহ সাংগঠনিক নিয়মকানুন মেনে যোগ্যতা প্রমাণ করতে হয়। নেতৃত্বের যোগ্যতা তৈরি হলে তখনই নেতা হতে পারবেন, অন্যথায় নয়।
    অ্যাডভোকেট আব্দুস সুবাহান সুলতান সব জেনে বুঝে জামায়াতে যোগ দিয়েছেন।’

    যোগদানকারী সদস্যরা জানান, আইনজীবীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, বিচারপ্রার্থী মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত এবং ইনসাফনির্ভর রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দিয়েছেন তারা।

    ময়মনসিংহ মহানগর জামায়াতের আমির মাওলানা কামরুল আহসান এমরুল আরো বলেন, তারা যে লক্ষ্য নিয়ে এসেছেন– ইনসাফপূর্ণ সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, আইনজীবীদের অধিকার নিশ্চিত করা এবং বিচারপ্রার্থী মানুষের পাশে থাকা– এই লক্ষ্য অর্জনে জামায়াতে ইসলামী সবসময় আপসহীন। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, তাদের মতো জ্যেষ্ঠ ও বিজ্ঞ পেশাজীবীদের যুক্ত হওয়া আমাদের এই সংগ্রামকে আরও শক্তিশালী ও বেগবান করবে।’

    ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রোকনুজ্জামান সরকার রোকন বলেন, ‘বিষয়টি আমার ভালো করে জানা নেই। তবে যারা যোগদান করেছে বলে শুনেছি, তারা বিএনপিতে গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদে ছিলেন না। ৫ আগস্টের পরে তারা হয়তো বিএনপিতে সুবিধা নিতে চেয়েছিলেন। ব্যক্তিগত সুবিধা না পেয়ে তারা হয়তো জামায়াতে চলে গেছেন।’

  • বাংলাদেশে জুলাই জাতীয় স-নদ স্বাক্ষর হবে ১৫ অক্টোবর-২০২৫

    বাংলাদেশে জুলাই জাতীয় স-নদ স্বাক্ষর হবে ১৫ অক্টোবর-২০২৫

    হেলাল শেখঃ জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় আগামী (১৫ অক্টোবর ২০২৫ইং) অনুষ্ঠিত হবে জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান।

    অনুষ্ঠানটি নেতৃত্ব দেবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

    বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) জাতীয় সংসদ ভবনের ঐকমত্য কমিশনের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়।

    কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা পবন চৌধুরী জানিয়েছেন, অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।

    সভায় জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের পাঁচটি বৈঠকে পাওয়া প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করা হয়। আশা করা হচ্ছে, এই বিশ্লেষণের ভিত্তিতে খুব শিগগিরই বাস্তবায়ন সংক্রান্ত সুপারিশ তৈরি করা হবে এবং চূড়ান্তকৃত সনদ সরকারের কাছে পাঠানো হবে।

    বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও ড. মো. আইয়ুব মিয়া। এছাড়া, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারও ঐকমত্য গঠন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের জন্য সভায় উপস্থিত ছিলেন আরও অনেকেই।

  • বিএনপি বিশ্বা-স করে রাজনীতি মানে ক্ষ-মতা  প্রতিযোগিতা নয়, বরং মানুষের পাশে দাঁড়ানো- সোবাহান

    বিএনপি বিশ্বা-স করে রাজনীতি মানে ক্ষ-মতা প্রতিযোগিতা নয়, বরং মানুষের পাশে দাঁড়ানো- সোবাহান

    কে এম সোহেব জুয়েল :

    বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সব সময় মানুষের পাশে থাকে। ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে আমরা সবাই একই ঁ অংশ। বিএনপি বিশ্বাস করে রাজনীতি মানে কেবল ক্ষমতার প্রতিযোগিতা নয়, বরং মানুষের কল্যাণে পাশে দাঁড়ানো। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে হিন্দু-মুসলমান এক হয়ে লড়াই করেছে। ৯০ সালের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনেও আমরা একসঙ্গে ছিলাম। আজও সেই ঐক্যের ধারাবাহিকতায় আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায়। আগামী জাতীয় নির্বাচনে আপনারা ধানের শীষের প্রতীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করুন যেন সবাই মিলেমিশে সত্যিকারের একটি গণতান্ত্রিক দেশ গড়ে তুলতে পারি। ১/১১ মত ভয়াবহ দুর্যোগ পরিস্হিতিতেও আপনাদের ফেলে চলে যাই নাই অবিরাম আপনাদেরকে নিয়েই মাঠে কাজ করে গেছি। শহীদ জিয়ার আদর্শকে বুকে ধারন করে কাজ করে গেছি। এছারাও আমি সব সময় আপনাদের সুখ-দুঃখে পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকবো তার আগৈলঝাড়ার নির্বাচনি এলাকার এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন , বি এন পির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বরিশাল -১ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশি আলহাজ্ব ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সোবাহান।

  • গৌরনদীতে কলেজ ছাত্রকে ব-লাৎকার মাম-লার প্রধান আ-সামিকে গ্রে-প্তার করেছে র‌্যাব

    গৌরনদীতে কলেজ ছাত্রকে ব-লাৎকার মাম-লার প্রধান আ-সামিকে গ্রে-প্তার করেছে র‌্যাব

    কে এম সোয়েব জুয়েল।
    গৌরনদী প্রতিবেদক।
    বরিশালের গৌরনদীতে এক কলেজছাত্রকে (১৭) বলাৎকার করার অভিযোগে গৌরনদী মডেল থানায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি কিং মাসুদকে গ্রেপ্তার করেছে বরিশাল র‌্যাব-৮ এর সদস্যরা। বৃহস্পতিবার র‌্যাব সদস্যরা বরিশাল কোতোয়ালী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে ওই দিন রাতে গৌরনদী মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। গ্রেপ্তারকৃত কিং মাসুদ কলেজ ছাত্র বলাৎকার মামলার প্রধান আসামি। মাসুদ সরদার ওরফে কিং মাসুদ খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোসলেম সরদারের ছেলে ও নিজেও বিএনপির স্থানীয় নেতা। ভিকটিম মাদারীপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র।

    খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য কিং মাসুদ সরদারসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মডেল একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার (৮ অক্টোবর) সকালে ভিকটিম কলেজ ছাত্রের বাবা বাদী হয়ে গৌরনদী মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশ বুধবার ভোর রাতে প্রধান আসামির সহযোগী মো. নিলয় আহম্মেদকে গ্রেপ্তার করেছে। প্রধান আসামি কিং মাসুদ ইতালী প্রবাসী খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য পলাতক ছিল।

    এজাহার সুত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অভিযুক্ত খঞ্জাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য কিং মাসুদ সরদার প্রথমে ফেসবুকে মেসেজ দিয়ে মাদারীপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র (১৭)র সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে। পরবর্তীতে মাসুদের পরিকল্পনা মোতাবেক সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ভিকটিমের সহপাঠী ইমন সরদার কৌশল অবলম্বন করে কলেজ ছাত্রকে গৌরনদী উপজেলার সমরসিংহ বাজারে একটি দোকানের সামনে ডেকে নিয়ে যায় এবং মোবাইল ফোনে কিং মাসুদের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন। এরপর মাসুদের সহযোগী ইমন কলেজ ছাত্রকে ভ্যানযোগে ইল্লা বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে যায় এবং সেখান থেকে হাঁটা পথে অন্যএকটি চায়ের দোকানে নিয়ে গিয়ে চা পান করায়। সেখানে কিং মাসুদ উপস্থিত হয়ে চায়ের বিল পরিশোধ করে। চা পানের পর কিং মাসুদ তার সহযোগী ইমনের সহায়তায় ভিকটিমকে মাসুদের আরেক সহযোগী নিলয় আহম্মেদের বসত ঘরের পেছনে বারান্দায় নিয়ে আটকে জোর পূর্বক বলৎকার করে। কলেজ ছাত্র অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি নেতা কিং মাসুদ তার দুই সহযোগী ইমন ও নিলয়ের সহায়তায় আমাকে নিলয়ের ঘরে আটকে রেখে বিবস্ত্র করে অস্ত্রের মুখে ভয়ভীতি দেখিয়ে জিম্মি করে আমাকে জোরপূর্বক বলৎকার করেছে। খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য কিং মাসুদ সরদারসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মডেল একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার (৮ অক্টোবর) সকালে ভিকটিম কলেজ ছাত্রের বাবা বাদী হয়ে গৌরনদী মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

    বলৎকারের শিকার কলেজ ছাত্রর বাবা মামলার বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন, নিলয় ও ইমনের সহায়তায় কিং মাসুদ আমার কলেজছাত্র পুত্রকে অস্ত্র দেখিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এরপর বিবস্ত্র করে ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে জোরপূর্বক যৌনসঙ্গমে বাধ্য করা হয় এবং এতে তার শরীরে আঘাত লাগে। শারীরিক নির্যাতনের পর আসামি কিং মাসুদ ঘটনাটি কাউকে না জানানোর জন্য ছেলেকে নানা ধরনের ভয়ভীতি সহ প্রাণনাশের হুমকি দেয়। পরবর্তীতে বাড়ি ফিরে কলেজ ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়লে আমরা বিষয়টি অবগত হই এবং থানায় মামলা দায়েরে করি।
    গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা বাদি হয়ে কিং মাসুদকে প্রধান আসামিসহ তিন জনকে আসামি করে বুধবার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। মামলার এজাহারনামীয় আসামি বাড়ির মালিক নিলয় আহম্মেদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রধান আসামি কিং মাসুদ পলাতক ছিল। বরিশাল র‌্যাব-৮ এর সদস্যরা বৃহস্পতিবার বরিশাল কোতোয়ালী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে রাতে থানায় সোপর্দ করেছে। আজ তাকে আদালতে প্রেরন করা হবে। মামলার অপর আসামি ইমন সরদারকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে। স্থানীয়রা জানান, ইতালী প্রবাসী মাসুদ সরদার ওরফে কিং মাসুদ ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর নিজ এলাকায় আসেন। পরবর্তীতে তিনি (মাসুদ) ইতালী প্রবাসী বিএনপি নেতা দাবি করে স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন নেতার ছবি সম্মিলিত ব্যানার ও পোস্টারের মাধ্যমে এলাকায় বিএনপির ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে নানান অপকর্মে লিপ্ত হন।

  • মাত্র ১৬ মাসে পবিত্র কোরআন মুখস্থ, হাফেজ শিহাবকে রাজকীয় বিদায়

    মাত্র ১৬ মাসে পবিত্র কোরআন মুখস্থ, হাফেজ শিহাবকে রাজকীয় বিদায়

    পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি।।
    মাত্র ১৬ মাসে পবিত্র কোরআনুল কারিম মুখস্থ করে হাফেজ হওয়ার অনন্য কৃতিত্ব অর্জন করেছে পঞ্চগড়ের শাহরিয়া প্রধান শিহাব (১১)। তার এই অসাধারণ অর্জনকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের সাহেববাজার এলাকার হলি কোরআন নুরানী কিন্ডারগার্টেন মাদরাসায় অনুষ্ঠিত হয় এক আবেগঘন ও বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। মাদরাসার পক্ষ থেকে তাকে দেওয়া হয় রাজকীয় বিদায়, যা এলাকাজুড়ে আনন্দ-উল্লাসের সৃষ্টি করেছে।

    শিহাব পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের নালাগছ গ্রামের মনিরুজ্জামান প্রধানের ছেলে।

    মাদরাসা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের জুন মাসে শিহাব ওই মাদরাসায় ভর্তি হয়। নিয়মিত পরিশ্রম, অধ্যবসায় ও শিক্ষকদের যত্নে মাত্র ১৬ মাসের মধ্যেই সে পবিত্র কোরআনের ৩০ পারা মুখস্থ করতে সক্ষম হয়। তার এই অসাধারণ সাফল্যে শিক্ষক, সহপাঠী ও অভিভাবক সবাই মুগ্ধ ও গর্বিত।

    শিহাবের এই কৃতিত্বকে স্মরণীয় করে রাখতে মাদরাসার উদ্যোগে আয়োজন করা হয় এক বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা ও দোয়া মাহফিলের। অনুষ্ঠানে ফুলেল শুভেচ্ছা ও উপহারসামগ্রী প্রদান করা হয় তাকে। শিক্ষার্থীরা ‘নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবার’, ‘আহলান সাহলান মারহাবা মারহাবা’ স্লোগানে প্রকম্পিত করে তোলে মাদরাসার প্রাঙ্গণ।

    পরে এক সুসজ্জিত মাইক্রোবাসে তাকে বসিয়ে মোটরসাইকেল বহরের মধ্য দিয়ে রাজকীয় সম্মানে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। এ সময় মাদরাসা থেকে মাইক্রোবাস উঠার মুহূর্ত পর্যন্ত দুই পাশে সারিবদ্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা তাকে বিদায় জানায়।

    অনুষ্ঠানে শিহাবের বাবা মনিরুজ্জামান প্রধানকেও সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

    নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে শিহাব বলেন, আমাদের মাদরাসার শিক্ষকরা অনেক যত্নসহকারে পড়ান। তাদের আন্তরিকতার কারণেই আমি এত অল্প সময়ে কোরআনের হাফেজ হতে পেরেছি। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন আমি বড় হয়ে একজন আলেম হতে চাই।

    তার বাবা মনিরুজ্জামান প্রধান বলেন, এই মাদরাসার পরিবেশ খুবই ভালো। অল্প সময়ের মধ্যে আমার ছেলে ৩০ পারা কোরআনের হাফেজ হয়েছে এটা আমাদের পরিবারের জন্য গর্বের। আমরা আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি এবং সবার কাছে দোয়া চাইছি যেন সে বড় হয়ে একজন খাঁটি আলেম হতে পারে।

    মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মাওলানা মো. আব্দুর রহমান বলেন, ২০২১ সালে হলি কোরআন নুরানী কিন্ডারগার্টেন মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। শিহাব শুরু থেকেই মেধাবী ও মনোযোগী ছিল। কঠোর পরিশ্রমের ফলেই সে মাত্র ১৬ মাসে কোরআনের হাফেজ হতে পেরেছে। বর্তমানে আমাদের মাদরাসায় নুরানী বিভাগে ২২০ জন এবং হেফজ বিভাগে ২৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।

  • সাংবাদিক নির্যা-তনের বিরু-দ্ধে ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংবাদিক ইউনিয়নের অবস্থান

    সাংবাদিক নির্যা-তনের বিরু-দ্ধে ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংবাদিক ইউনিয়নের অবস্থান

    স্টাফ রিপোর্টারঃ
    সাংবাদিকদের উপর হামলা, হয়রানি ও মিথ্যা মামলার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে নানা ধরনের হুমকি, চাপ ও সহিংসতার। এই পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা এবং অধিকার রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা রাখছে সাংবাদিক সংগঠনগুলো।

    ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংবাদিক ইউনিয়ন এসব বিষয়ে শুরু থেকেই সোচ্চার ভূমিকা পালন করছে। সংগঠনটি সাংবাদিকদের পাশে দাঁড়িয়ে নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলছে, আইনি সহায়তা প্রদান করছে এবং ন্যায়বিচারের জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।

    এ বিষয়ে ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সাংবাদিকরা জাতির বিবেক। যখন একজন সাংবাদিক সত্য প্রকাশের জন্য নিপীড়নের শিকার হন, তখন সেটা শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির ওপর হামলা নয়, সেটা গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর হামলা।

    এ ছাড়াও তিনি বলেন, আমরা সবসময় সাংবাদিকদের পাশে আছি, এবং থাকব। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা, হামলা কিংবা যেকোনো হয়রানির বিরুদ্ধে আমরা আইনগত ও সামাজিকভাবে রুখে দাঁড়াবো। প্রশাসনের প্রতি আমাদের আহ্বান, দোষীদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা হোক এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা বিধান করা হোক।

    ইতিমধ্যে সংগঠনটি বেশ কয়েকটি ঘটনায় নির্যাতিত সাংবাদিকদের পাশে দাঁড়িয়ে আইনি সহায়তা, সংবাদ সম্মেলন ও প্রতিবাদ কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের অধিকার রক্ষার চেষ্টা করেছে।

    সাংবাদিকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। এ দায়িত্ব কেবল সংগঠনের নয়, বরং রাষ্ট্র, প্রশাসন ও সাধারণ মানুষেরও। সাংবাদিক ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংবাদিক ইউনিয়নের মতো সংগঠনগুলো সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় যে ভূমিকা রাখছে, তা সত্য প্রকাশে উৎসাহী সাংবাদিকদের সাহস জোগাবে।