Category: দেশজুড়ে

  • কুমিল্লা ট্রমা সেন্টারে ব্রেস্ট ক্যা-ন্সার সচেতনতার লক্ষে সেমিনার অনুষ্ঠিত

    কুমিল্লা ট্রমা সেন্টারে ব্রেস্ট ক্যা-ন্সার সচেতনতার লক্ষে সেমিনার অনুষ্ঠিত

    তরিকুল ইসলাম তরুন, কুমিল্লা থেকে,

    প্রতি বছর দেশে ৬ হাজার নারীর মৃত্যু হয় স্তন ক্যান্সারে।

    দেশে দুই দশক ধরে স্তন ক্যান্সার সচেতনতা কার্যক্রম চালানো হলেও প্রতিরোধ এবং প্রাথমিক পর্যায়ে স্ক্রিনিং সেবা এখনো যথাযথভাবে গড়ে ওঠেনি। প্রতিবছর কত নারী এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং কতজন মারা যাচ্ছেন এর সঠিক তথ্য সরকারের কাছে নেই। ফলে বাংলাদেশকে এখনও আন্তর্জাতিক সংস্থার পরিসংখ্যানে নির্ভর করতে হচ্ছে।

    আজ শনিবার (১১ অক্টোবর) দুপুরের পর কুমিল্লার সেবা প্রতিষ্ঠান কুমিল্লা ট্রমা সেন্টারের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে “ব্রেস্ট ক্যান্সার অ্যাওয়ারনেস সেমিনার–২০২৫”। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লা ট্রমা সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোঃ আব্দুল হক। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা জেলার সিভিল সার্জন ডা. আলী নূর বশীর আহম্মেদ বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. রেজা মো. সারোয়ার আকবর।

    সেমিনার সঞ্চালনা করেন ও স্বাগত বক্তব্য দেন ট্রমা সেন্টারের প্রধান উপদেষ্টা মো. জহিরুল ইসলাম। এসময় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্রেস্ট ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ কনসালটেন্ট ডা. কাজী ইশরাত জাহান, ডা. কামরুল ইসলাম মামুন (ময়নামতি মেডিকেল কলেজ) এবং ডা. এম.এম.এম. আরিফ হোসেন (ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড অ্যালাইড সায়েন্সেস)।

    এসময় বক্তারা বলেন,“স্তন ক্যান্সার সম্পর্কে সামাজিক ট্যাবু ও ভয় দূর করতে হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে পরীক্ষা ও চিকিৎসা নিশ্চিত করা গেলে এই রোগ থেকে মুক্তি সম্ভব। আমরা চাই কুমিল্লা থেকে শুরু হোক ক্যান্সারবিরোধী সচেতনতার নতুন ধারা।”

    এদিকে বিশ্বব্যাপী অক্টোবর মাসকে ‘ব্রেস্ট ক্যান্সার অ্যাওয়ারনেস মান্থ’ হিসেবে পালন করা হয়।এ বিষয়ে বক্তারা আশা প্রকাশ করেন,অনুষ্ঠানটি নারীদের স্বাস্থ্য সচেতনতায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

    বক্তারা আরও জানান, প্রতি ৮ জন নারীর মধ্যে একজন স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকিতে রয়েছে। ২০২০ সালে বিশ্বে নতুন রোগীর সংখ্যা ২২ লাখ ছাড়িয়েছে এবং মারা গেছেন প্রায় ৬ লাখ ৮৫ হাজার নারী। একই বছরে বাংলাদেশে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ হাজার নারী এবং মারা গেছেন ৬,৭৮৩ জন। অর্থাৎ দেশে প্রতিদিন গড়ে ৩৬ জন নারী নতুন করে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন। প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার শনাক্ত হলে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ।

    বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের আয়োজনে এ সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। , এসময় আরো বক্তব্য রাখেন
    ময়নামতি মেডিক্যালের প্লাস্টিক  সার্জারী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা কামরুল ইসলাম মামুন, ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন  এন্ড এ্যালাইড সাযেন্স কুমিল্লার ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ, সহযোগী অধ্যাপক ও পরিচালক ডা এম এম আরিফ হোসেন।
    ‎মেডিক্যাল ডিরেক্টর ডাঃ সফি উল্লাসহ হসপিটালের কর্মকর্তা ও কর্ম চারী গন।

  • নলডাঙ্গায় নিজ অ-র্থায়নে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বৃক্ষ রোপণ করেন (জাঃসঃপ্রাঃবি) প্রধান শিক্ষক খন্দকার জাহিদ

    নলডাঙ্গায় নিজ অ-র্থায়নে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বৃক্ষ রোপণ করেন (জাঃসঃপ্রাঃবি) প্রধান শিক্ষক খন্দকার জাহিদ

    এ,কে,এম, খোরশেদ আলম ।।
    নাটোর জেলা প্রতিনিধি:

    নলডাঙ্গার পিপরুল ইউনিয়নের পিপরুল গ্রামে জামতৈল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খন্দকার জাহিদ হোসেন বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফলজ বৃক্ষ রোপন করেন।
    ১১ই অক্টোবর রোজ শনিবার পিপরুল গ্রামে লিচু,বেল,ছবেদা,বেদেনা, ও আমড়াসহ প্রায় ১০০টি ফলজ বৃক্ষ রোপণ করেন।
    অসহায় ও দারিদ্র মানুষদের সহযোগিতার জন্য
    তার ব্যক্তিগত মানবিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গরীবদের ভ্যান রিকসা ও অসহায়দের গরু, ছাগল,
    প্রদান করেন।
    তার এ উদ্যোগ এলাকায় সকলের কাছে প্রসংশীয়।

  • দলের সাথে জ-নগণের সাথে যার সম্পর্ক নাই তার নমিনেশন আশা করাও ভুল-আনিসুর রহমান খোকন

    দলের সাথে জ-নগণের সাথে যার সম্পর্ক নাই তার নমিনেশন আশা করাও ভুল-আনিসুর রহমান খোকন

    মোঃ মোঃমিজানুর রহমান, কালকিনি- ডাসার
    (মাদারীপুর) প্রতিনিধিঃ
    দলের সাথে জনগণের সাথে যার সম্পর্ক নাই তার নমিনেশন আশা করাও ভুল। মানুষের সাথে যাদের সম্পর্ক,দলের সাথে তাদের সম্পর্ক,তাদেরই কিন্তু পার্টির চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে ভালো সম্পর্ক। আজ শনিবার দুপুরে কালকিনি ফাযিল মাদ্রাসা মাঠে কালকিনি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়নের ওয়ার্ড ভিক্তিক(বিএনপি) নবায়ন ও ফরম বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

    বীরমুক্তিযোদ্ধা ও কালকিনি উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ ফজলুল হক বেপারীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাহবুব হোসেন মুন্সির সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন পৌরসভা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামাল হোসেন বেপারী, উপজেলা শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি মোঃ মোশারফ হোসেন সরদার,বিএনপি নেতা নরে আলম ছান্টু,বিএম জসিম উদ্দিন, যুবদল নেতা শামীম মোল্লা, তুহিন হাওলাদার, উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মোঃ নজরুল ইসলাম হাওলাদার, সদস্য সচিব মোঃ সাইফুল ইসলাম সহ বিএনপি অঙ্গ সংগঠন ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

  • রাঙ্গাবালী ইসলামী আন্দোলনের নির্বাচনীয় গ-ণসমাবেশ

    রাঙ্গাবালী ইসলামী আন্দোলনের নির্বাচনীয় গ-ণসমাবেশ

    রফিকুল ইসলাম ,
    পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় ইসলামী আন্দোলনের গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুরে উপজেলা সদরের মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে এ সমাবেশ হয়। সকাল থেকে সভা স্থলে ছয়টি ইউনিয়নয় থেকে নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেন। এতে প্রায় ৩ হাজার নেতা-কর্মী অংশ নেন। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি ১১৩ পটুয়াখালী-৪ আসনে ইসলামী আন্দোলন মনোনীত হাত পাখা প্রতীকের প্রার্থী।

    জানা গেছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ইতোমধ্যে ভোটের মাঠে প্রচার-প্রচারণায় সরব হয়ে উঠছে রাজনৈতিক দলগুলো। নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রাঙ্গাবালী উপজেলা কর্তৃক আয়োজিত এ গণসমাবেশ  অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ইসলামী আন্দোলন রাঙ্গাবালী উপজেলার সভাপতি  মাওলানা আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, রাঙ্গাবালী উপজেলা মুজাহিদ কমিটি সদর আলহাজ্ব মো. নজরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম ফরাজী, ইসলামী আন্দোলন সমর্থিত কলাপাড়া উপজেলার ডালবুগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা হেদায়েতুল্লাহ জিহাদী, মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দীন খান দুলাল ও ধুলাসসার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হাফেজ আব্দুর রহিম প্রমুখ।

    পটুয়াখালী-৪ আসনে ইসলামী আন্দোলন মনোনীত হাত পাখা প্রতীকের প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে স্বৈরাচার হাসিনার পতনের পর এদেশে এখন নব্য স্বৈরাচার সৃষ্টি হয়েছে। একটি দল ক্ষমতায় যাবার আগেই সবকিছু দখল করে রেখেছে। তাই আগামী নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন, জামায়াতে ইসলামী সহ সমমনা দল গুলোর নেতৃত্বে এই নব্য স্বৈরাচার হটিয়ে এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নেমেছি আমরা।” বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমি নিজে আজীবন বিএনপির রাজনীতি করলেও ৫ই আগস্টের পরে এই দলটির অব্যাহত চাদাবাজি, লুটপাট আর দখলদারিত্বের ফলে বাধ্য হয়েছি পরিচ্ছন্ন রাজনীতি করা দল ইসলামী আন্দোলনে যোগ দিতে। তারেক রহমান বারবার সতর্ক করেও তার দলের কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না, তাই যে দলের কর্মীরা এখনই তার নেতার আদেশ মানেনা তাদের দ্বারা আগামীর বাংলাদেশ নিরাপদ হতে পারে না।

  • কুমিল্লা নামেই বিভাগ চায় কুমিল্লার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ

    কুমিল্লা নামেই বিভাগ চায় কুমিল্লার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ

    তরিকুল ইসলাম তরুণ,

    কুমিল্লার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ কুমিল্লা নামেই বিভাগ চায়, অন্যথায় কঠোর আন্দোলন করবে, রাজপথ,রেলপথ, মহাসড়ক অবরোধ ব্লকেড, অবরোধ, সহ বিভিন্ন কর্মসূচী নিয়ে আগাবে এমনটাই ১০ ই অক্টোবর বিকালে কুমিল্লার টাউন হলের মাঠে বাংলাদেশ জামাতে ইসলামের নেতৃবৃন্দ হুশিয়ারী দিয়েছে একই ভাবে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মনিরুল হক চৌধুরী ও
    বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াসিন। এছাড়া একই সুরে অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বলেন, কুমিল্লা বিভাগ কুমিল্লাবাসীর প্রাণের দাবি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বিভাগ ঘোষণা না হলে কুমিল্লার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করা হবে। 
    কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড়ের পূবালী চত্বরে বিভাগ ঘোষণার দাবিতে কুমিল্লা জেলা কনটেন্ট ক্রিয়েটর অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজিত এক সমাবেশে এ হুঁশিয়ারি দেন। বিএনপি কুমিল্লা মহানগর সভাপতি উৎবাতুল বারি আবু একাত্মতা প্রকাশ করেন।এছাড়া কুমিল্লা

    বিভাগের দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে একাত্মতা পোষণ করে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিরুজ্জামান আমির। কুমিল্লার জনপ্রিয় দৈনিক কুমিল্লার কাগজের সম্পাদক আবুল কাসেম হৃদয় বক্তব্য রাখেন। এসময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ আন্দোলনে যোগ দেন।

  • সেনবাগে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্মৃতি পৌর ক্রিকেট লীগের শুভ উদ্বোধন

    সেনবাগে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্মৃতি পৌর ক্রিকেট লীগের শুভ উদ্বোধন

    রফিকুল ইসলাম সুমন
    (নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি)

    জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে নোয়াখালীর সেনবাগে ক্রীড়ামোদীদের সরব উপস্থিতিতে শুভ উদ্বোধন হলো,শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্মৃতি পৌর ক্রিকেট লীগ ২০২৫। সেনবাগ ক্রিকেট ক্লাবের উদ্দ্যোগে আয়োজিত, সভাপতি মিজানুর রহমান সুমনের সভাপতিত্বে, ১০ অক্টোবর শুক্রবার বিকেলে পৌরএলাকার আন্জ্ঞু ব্রিকস মাঠে,উক্ত টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়।

    খেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, তরুণ প্রতিভাবান আইনজীবী ও ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, সেনবাগ উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আজিজুর রহমান মিশু।উক্ত টুর্নামেন্টের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন সেনবাগ উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফখরুল ইসলাম টিপু।এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ছাত্রদল নেতা মোঃ মনির আহমেদ জুলেটসহ অনেকেই ।

  • বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ ও সাহসী কলম যো-দ্ধাই হলো সাংবাদিকতা-গোলাম কিবরিয়া পলাশ

    বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ ও সাহসী কলম যো-দ্ধাই হলো সাংবাদিকতা-গোলাম কিবরিয়া পলাশ

    ডেস্ক রিপোর্টঃ
    বর্তমান বিশ্বে যখন গুজব, অপপ্রচার ও পক্ষপাতদুষ্ট তথ্য দিয়ে জনমত প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে, তখন সত্য প্রকাশে অটল থাকা সংবাদকর্মীরা সমাজের সত্যিকারের নায়ক। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে সাংবাদিকেরা কেবল তথ্যই সরবরাহ করেন না, বরং গড়ে তোলেন একটি সচেতন সমাজ। সাহসী কলম যোদ্ধারা হচ্ছেন সেই অদম্য কণ্ঠ, যারা চাপ, হুমকি কিংবা প্রলোভনের তোয়াক্কা না করে নিরপেক্ষ ও সত্য সংবাদ পরিবেশন করেন।

    একজন সাংবাদিকের প্রধান দায়িত্ব হলো সত্য ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ পরিবেশন করা। এটি কখনোই সহজ কাজ নয়, বিশেষ করে যখন সংবাদ প্রকাশের ফলে প্রভাবশালী গোষ্ঠী ক্ষুব্ধ হয় অথবা সাংবাদিকের জীবনের ওপর হুমকি আসে। তা সত্ত্বেও অনেক সাংবাদিক আছেন, যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়েও জনগণকে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়ার কাজে নিয়োজিত আছেন। তারা শুধু পেশাগত দায়িত্বই পালন করছেন না, বরং গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ হিসেবেও কাজ করছেন।

    বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা মানে হচ্ছে, অপ্রিয় হলেও সত্য বলা, পক্ষপাতহীন বিশ্লেষণ তুলে ধরা এবং প্রতিটি ঘটনার পেছনে সত্য অনুসন্ধান করা। আজকের ডিজিটাল যুগে যখন যে কেউ তথ্য তৈরি ও ছড়াতে পারে, তখন এই বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা হয়ে উঠেছে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

    সাহসী কলম যোদ্ধারা শুধু রাজনৈতিক অনিয়ম বা দুর্নীতিই প্রকাশ করেন না, তারা সমাজের গভীরে লুকিয়ে থাকা বৈষম্য, নিপীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্রও তুলে আনেন। তাদের কলম হয়ে ওঠে প্রতিবাদের হাতিয়ার, যা জাগিয়ে তোলে জনসচেতনতা, উন্মোচন করে লুকানো সত্য এবং দাবী তোলে ন্যায়ের।

    তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, দেশে-বিদেশে অনেক সাংবাদিক হুমকি, নিপীড়ন এমনকি জীবন হারানোর ঘটনাও ঘটছে। তবুও তারা পিছু হটছেন না। কারণ তারা বিশ্বাস করেন সত্যের পক্ষে থাকা, ইতিহাসের সাক্ষী হওয়া এবং মানুষের কণ্ঠস্বর হওয়াই সাংবাদিকতার মূল উদ্দেশ্য।

    একজন বস্তুনিষ্ঠ ও সাহসী সাংবাদিক শুধু খবর প্রকাশ করেন না, তিনি হয়ে ওঠেন সমাজ পরিবর্তনের পথিকৃৎ। তাই এই কলম যোদ্ধাদের যথাযথ মর্যাদা দেওয়া, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সত্য-ভিত্তিক সাংবাদিকতা রক্ষার জন্য আমাদের সকলেরই সচেতন হওয়া জরুরি।

  • অ-পরাধীদের আ-তঙ্ক আর সাধারণ মানুষের নির্ভরতার প্রতীক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মামুন

    অ-পরাধীদের আ-তঙ্ক আর সাধারণ মানুষের নির্ভরতার প্রতীক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মামুন

    আরিফ রববানী ময়মনসিংহ।।
    ময়মনসিংহ জেলা এলাকায় এখন অপরাধীরা গা ঢাকা দিচ্ছে , মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে—এ দৃশ্য এক সময় কল্পনাও করা যেত না। অথচ আজ তা বাস্তব। এর পেছনে যিনি সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছেন, তিনি ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) আব্দুল্লাহ আল মামুন। ক্রাইমের সফলতা বিবেচনায় সম্প্রতি তাকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্থ ও প্রশাসনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

    জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তিনি একের পর এক সফল অভিযান পরিচালনা করে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস ও মাদক নির্মূলে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন। জেলাবাসী বলছেন—অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মামুন হচ্ছেন অপরাধীদের জন্য আতঙ্ক, আর সাধারণ মানুষের জন্য নির্ভরতার প্রতীক।

    অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম (এন্ড অপস) আব্দুল্লাহ আল মামুন এর নেতৃত্বে গত কয়েক মাসে ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন থানায় এলাকায় চালানো হয়েছে শতাধিক ছোট-বড় অভিযান। গ্রেফতার করা হয়েছে চিহ্নিত সন্ত্রাসী, মাদক কারবারি ও চাঁদাবাজদের। সম্প্রতি শারদীয় দুর্গাপুজায় নজির বিহীন নিরাপত্তায় কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া দুর্গোৎসবকে উপহার দিয়ে ময়মনসিংহ জেলা এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলে দেন তিনি।

    এছাড়া এক সময় জেলার ময়মনসিংহ নগরীসহ বিভিন্ন থানা এলাকায় বিভিন্ন আবাসিক হোটেল ছিল অসামাজিক কার্যকলাপের কেন্দ্রস্থল। তার নেতৃত্বে ও নির্দেশনায় বিভিন্ন থানার পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালানোর ফলে এখন এসব হোটেল অনেকটাই ‘পরিচ্ছন্ন’। হোটেল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়মিত সভা ও সতর্কীকরণ উদ্যোগে এসেছে দৃশ্যমান পরিবর্তন।

    শুধু অপরাধ দমন নয়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন জোর দিয়েছেন জনবান্ধব পুলিশিংয়ের ওপর। যে কারণে থানায় এসে এখন সাধারণ মানুষ কোনো ভয় বা সংকোচ ছাড়াই অভিযোগ জানাতে পারছেন। তার কঠোরতা ও নির্দেশনায় ওসিরা নিজেই প্রতিদিন বহু মানুষের কথা শোনেন, সমাধান দেন, প্রয়োজনে মামলা গ্রহণ করেন।

    সেবা গ্রহীতাদের অনেকে জানান- আগে থানায় যেতে ভয় লাগত। এখন নিজের সমস্যার কথা বলতে পারি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুনের মতো অফিসার থাকলে জেলার প্রতিটা থানার পুলিশের সেবা ও আইনশৃঙ্খলা এমনিই ভালো থাকবে।

    অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) আব্দুল্লাহ আল মামুন এর নেতৃত্বে অপরাধীদের দমন করে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা জোরদার করার মাধ্যমে জেলার সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরিয়ে দিয়েছে প্রতিটি থানা পুলিশের কার্যক্রম।

    বিভাগীয় জেলা ময়মনসিংহে দায়িত্ব পালন করা যে কোনো পুলিশ কর্মকর্তার জন্য চ্যালেঞ্জিং, কারণ এখানে প্রতিনিয়তই আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে। তবে জেলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসাবে আব্দুল্লাহ আল মামুন যোগদান করার পর থেকেই বদলে যেতে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি।

    ৫ আগস্টের রাজনৈতিক অস্থিরতার পর ময়মনসিংহে জেলায় যখন নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিল, চারদিকে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, চুরি,ছিনতাই বেড়ে চলছিল, চারদিকে পুলিশের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিলো -তখনি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন এর দৃঢ় নেতৃত্ব দিয়ে এক নতুন যুগের সূচনা করেন। তিনি পুলিশের মনোবল ও জনগণের মধ্যে আস্তা ফিরিয়ে আনেন। অপরাধ দমনে কঠোর পদক্ষেপ নেন এবং ময়মনসিংহকে সন্ত্রাস ও মাদকের করাল গ্রাস থেকে মুক্ত করতে নিরলস পরিশ্রম করছেন।

    তার নেতৃত্বে ময়মনসিংহ জেলায় পুলিশের শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। অপরাধ দমনে দৃশ্যমান পরিবর্তন এসেছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, তিনি কখনো কারো কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ করেননি। বরং ঘুষখোরদের দূরে সরিয়ে রেখেছেন এমনটাই মনে করেন সাধারণ মানুষ। “তার এই সততা ও দায়িত্বশীলতার কারণে তিনি ময়মনসিংহের দুর্নীতিবাজ, অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা, অপরাধীদের কাছে” আতঙ্কে পরিণত হয়েছেন।

    তিনি যোগদানের পর থেকে ময়মনসিংহকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ,দূর্নীতি,ইভটিজিং ও মাদকমুক্ত করতে নিরলস ভাবে দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন। এ ছাড়াও তিনি মব, নাশকতা প্রতিরোধ, সন্ত্রাস দমন, অস্ত্র উদ্বার, খুনের রহস্য উদঘাটন, আইনশৃঙ্খলার উন্নতি, অবৈধ পন্য উদ্ধার, জানজট নিরসন, মাদক ব্যবসা নির্মুল সহ ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে কাজ করছেন। যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন থানা এলাকার অপরাধ নির্মুলে তার মাঠে কাজের ব্যাপক সফলতাও দেখিয়েছেন।

    জেলার বিভিন্ন এলাকার নেতৃবৃন্দ ও গণ্যমান্যরা বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন যোগদানের পর থেকে ময়মনসিংহ নগরীসহ সকল উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা, মাদক, চুরি-ডাকাতি বহুলাংশে বন্ধ হয়েছে। উনি মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করার কারণে এখন মাদক অনেকটাই নির্মুলের পথে।সকলেই তার সফলতা কামনা করেছেন।

    জেলা পুলিশের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল ও আধুনিক করার লক্ষ্যে তিনি নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। ময়মনসিংহ জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে এবং সংঘবদ্ধ অপরাধ, মাদক, অস্ত্র ও চোরাচালান বিরোধী অভিযানে তার নেতৃত্ব প্রশংসার দাবীদার হয়ে উঠেছে।

    অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও দায়িত্ববোধকে কাজে লাগিয়ে পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম এর দিক নির্দেশনা মোতাবেক তিনি জেলা পুলিশের কাজে প্রযুক্তিনির্ভরতা, তথ্যভিত্তিক বিশ্লেষণ ও দ্রুত প্রতিক্রিয়ার ব্যবস্থা চালু করার দিকে নজর দিচ্ছেন। ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন থানার ওসিদের পরামর্শ দিয়ে অপরাধ তথ্য বিনিময় আরও শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি অপরাধী চক্রের গতিবিধি শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যাপারেও তিনি অনড় অবস্থান গ্রহণ করেছেন।

    একজন আধুনিক চিন্তাধারার পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) আব্দুল্লাহ আল মামুন ময়মনসিংহে পুলিশ বিভাগে শৃঙ্খলা, দক্ষতা ও স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা রাখছেন বলে দাবী ময়মনসিংহবাসীর।

    তার দিক-নির্দেশনায় বিভিন্ন থানা পুলিশের কঠোর নজরধারীতে বর্তমানে ময়মনসিংহের মানুষ অনেকটাই নিরাপদ, যে কোন প্রয়োজনে নির্ভয়ে পুলিশের সাহায্য নিতে পারে মানুষ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) আব্দুল্লাহ আল মামুন এর মতো সৎ ও কর্মঠ পুলিশ কর্মকর্তারা বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে এক অনন্য উদাহরণ। তার নেতৃত্ব অব্যাহত থাকলে ময়মনসিংহ আরও নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল হবে, এমনটাই মনে করেন সুশীল সমাজের ব্যক্তিরা।

  • কুমিল্লায় জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আলতাফ হোসেনের স্মরণে মিলা-দ মাহফিল ও দো-য়া

    কুমিল্লায় জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আলতাফ হোসেনের স্মরণে মিলা-দ মাহফিল ও দো-য়া

    তরিকুল ইসলাম তরুন।
    শুক্রবার ১০ অক্টোবর রাতে কুমিল্লার জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার উদ্যোগে উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ সাংবাদিক সংগঠন জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মরহুম আলতাফ হোসেন প্রথম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে কুমিল্লা নগরীর রেডরুফ ইনের পার্টি সেন্টারে এক আলোচনা সভা, মিলাদ মাহফিল দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।
    অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লা জেলা জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার সভাপতি মোঃ তরিকুল ইসলাম তরুণ এবং পরিচালনা করেন জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ জুয়েল রানা মজুমদার।
    অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সভাপতি মোঃ হারিছুর রহমান, কুমিল্লা জেলা কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি মোঃ বাবর হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন, বুড়িচং উপজেলা কমিটির সভাপতি সৌরভ মাহমুদ হারুন, মহিলা সম্পাদিকা আয়শা আক্তার, জি এম নজরুল ইসলাম, মাসুদ খান চৌধুরী, এনামুল হক, আবু ইউসুফ তুহিন, সফিকুল ইসলাম প্রমূখ।
    আলোচনা সভা শেষে সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি মোঃ বাবর হোসেন জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত সাংবাদিক আলতাফ হোসেনের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া মিলাদ মাহফিল পরিচালনা করেন।

  • অটিজম আল্লাহ প্র-দত্ত শিশু

    অটিজম আল্লাহ প্র-দত্ত শিশু

    মো: হায়দার আলী।। মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বৃদ্ধির বা পরিপক্বতার হেরফেরের কারণেই একটি শিশু অটিজমে আক্রান্ত হয়। কিন্তু কেন এই হেরফের, তা অজানা।
    অটিজম পুরোপুরি নিরাময় করা আজ পর্যন্ত সম্ভব হয়নি। কিন্তু সঠিক টেস্ট, চিকিৎসা, থেরাপি এবং কাউন্সেলিং এর মাধ্যমে শিশুদের ৯০ থেকে ৯৫ ভাগ জীবন আচরণ স্বাভাবিক গন্ডির মধ্যে নিয়ে আসা সম্ভব।ড়
    তবে গবেষকরা মনে করেন নিচের কারণগুলো অটিজমের জন্য প্রভাবক হিসেবে কাজ করে।

    ১. জিনগত সমস্যা. ২.রোগজীবাণুর সংক্রমণ
    ৩. শরীরের বিপাক প্রক্রিয়ায় গোলমাল
    ৪. পরিবেশগত সমস্যা

    যেহেতু এটি একটি সমষ্টিগত আচরণের সমস্যা, তাই অনেক অটিস্টিক শিশুর সব লক্ষণ থাকে না। তবে ‘অটিজম স্পেকট্রাম অব ডিজঅর্ডার’ বা অটিজমের লক্ষণ গুলোকে তিনটি প্রধান ক্যাটাগরিতে ভাগ করা যেতে পারে:

    ১. সামাজিক সম্পর্ক স্থাপনে অপারগতা
    অটিজম আছে এমন শিশুর ক্ষেত্রে দেখা যায়, স্বাভাবিক একটি শিশু যেভাবে বেড়ে ওঠে, যেভাবে সামাজিক সম্পর্কগুলোর সঙ্গে ধীরে ধীরে যোগাযোগ তৈরি করে, সে তা করতে পারে না।
    বাবা-মা বা প্রিয়জনের চোখে চোখ রাখতে, মুখভঙ্গি ও শারীরিক অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে নিজের চাওয়া বা না-চাওয়া বোঝাতে সে অপারগ হয়।
    সমবয়সী শিশুদের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে না। অমিশুক প্রবণতা থাকে।
    কোন ধরনের আনন্দদায়ক বস্তু বা বিষয় সে অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নেয় না। যেমন, স্বাভাবিক একটি শিশু কোন খেলনা হাতে পেলে তার দিকে অন্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। কিন্তু অটিস্টিক শিশুর ক্ষেত্রে এ ধরনের কোন খেলনার প্রতি তার নিজের কিছু আগ্রহ থাকলেও সেটা নিয়ে কোনো উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে না।
    শারীরিক আদর, চুমু দেওয়া এবং চেপে ধরে কোলে নেওয়া তারা মোটেই পছন্দ করে না।
    ২. যোগাযোগের সমস্যা
    আশপাশের পরিবেশ ও মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করার ক্ষমতা কমে যায়। তবে মনে রাখতে হবে, কেবল কথা শিখতে দেরি হওয়া মানেই অটিজম নয়।
    কোনো কোনো ক্ষেত্রে শিশুটি স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে হয়তো পারে, কিন্তু একটি বাক্য শুরু করতে তার অস্বাভাবিক দেরি হয়। অথবা বাক্য শুরু করার পর তা শেষ করতে পারে না।
    কখনো দেখা যায়, একই শব্দ বারবার সে উচ্চারণ করে যাচ্ছে।
    তিন বছরের কম বয়সী শিশুরা তার বয়সের উপযোগী নানা রকমের খেলা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজেরাই তৈরি করে খেলে। কিন্তু অটিস্টিক শিশুরা এ রকম করে না।
    ৩. আচরণের অস্বাভাবিকতা
    একই আচরণ বারবার করতে থাকে।
    আওয়াজ পছন্দ করে না।
    তারা রুটিন মেনে চলতে ভালোবাসে। দৈনন্দিন কোনো রুটিনের হেরফের হলে তারা মন খারাপ করে।
    কোনো কারণ ছাড়াই দেখা যায় তারা হঠাৎ রেগে ওঠে বা ভয়ার্ত হয়ে যায়।
    কোন বয়সে ও কিভাবে অটিজম প্রথম সনাক্ত করা সম্ভব?
    যত দ্রুত অটিজম রোগটি সনাক্ত করা যায়, শিশুর জন্য ততই মঙ্গল। সাধারণত ৩ বছর বয়সের পর শিশুটি অটিজমে আক্রান্ত কিনা তা দ্ব্যর্থহীনভাবে সনাক্ত করা সম্ভব হয়। তবে মা-বাবারা সচেতন থাকলে ও বাচ্চার আচরণের দিকে ভাল ভাবে লক্ষ্য রাখলে ১২ থেকে ১৮ মাসের মধ্যেই সমস্যাটি আঁচ করতে পারবেন। এই ক্ষেত্রে যে বৈশিষ্ট্যগুলোর মাধ্যমে অটিজম সনাক্তকরণ সম্ভব তা হল:

    শিশুর দেরী করে হাসতে শেখা (সাধারণত শিশু জন্মের ছয় মাসের মধ্যে হাসতে শেখে। কিন্তু অটিস্টিক শিশু ছয় মাসেও হাসে না),
    কথা না বলা বা ঠিকমত না বলা (শিশুরা সাধারণত এক বছর বয়সের মধ্যে কিছু না কিছু শব্দ উচ্চারণ করে, কিন্তু অটিস্টিক শিশুরা এক বছরের মধ্যে মুখে কোনো শব্দ করে না। আঙুল দিয়ে কিছু নির্দেশ করে না, কোনো কিছু চাওয়া বা চাওয়ার ভঙ্গি করে না। ১৬ মাসেও কোনো শব্দ উচ্চারণ না করা। দুই বছরের মধ্যে দুটি শব্দ বলতে না পারা।)
    কানে না শোনা ( শিশুটিকে নাম ধরে ডাকলে সাড়া না দেওয়া)।
    অটিস্টিক শিশুদের বিভিন্ন পর্যায়গুলো কি কি?
    সাধারণত অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের ৪টি পর্যায়ে ভাগ করা হয়। বয়সের সাথে নয় বরং প্রতিটি শিশুর সামর্থের উপর তার পর্যায় নির্ভর করে।

    প্রথম পর্যায় (আত্মকেন্দ্রিক): এই পর্যায়ে শিশুরা আত্মকেন্দ্রিক থেকে এবং আপন মনে একাকী খেলতে পছন্দ করে। এরা সাধারণত কোন আদেশ-নিষেধ অথবা নির্দেশ বুঝতে পারে না ও পালন করে না।

    দ্বিতীয় পর্যায় (অনুরোধকারী): এই পর্যায়ের শিশুরা শারীরিক অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে খুব কাছের লোকদের সাথে অল্প সময়ের জন্য যোগাযোগ স্থাপন করে এবং তাদের চাহিদা পূরণ করার জন্য অনুরোধ করে।

    তৃতীয় পর্যায় (যোগাযোগ স্থাপনকারী ): এই পর্যায়ের শিশুরা কিছু প্রচলিত শব্দ বুঝতে পারে এবং অতি পরিচিত মানুষের সাথে অল্প সময়ের জন্য যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে। তারা ছোটখাট আদেশ-নির্দেশ পালন করতে পারে।

    চতুর্থ পর্যায় (সহযোগী): এই পর্যায়ের শিশুরা পরিচিত সমবয়সী শিশুদের সাথে অল্প সময়ের জন্য খেলা করে। ভাষায় দক্ষতা একটু ভালো এবং অন্যদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হয়।

    অটিস্টিক শিশুরা কিভাবে যোগাযোগ রক্ষা করে?
    অটিস্টিক শিশুদের যোগাযোগে ভিন্নতা থাকে। যেহেতু তারা প্রচলিত সামাজিকতার বিষয়টি অনুধাবন করতে পারে না, তাই তারা নিজস্ব পদ্ধতিতে অনুভূতিগুলো প্রকাশ করে। অনেক অটিস্টিক শিশু সারা জীবনেও কথা বলে না। কিছু শিশু প্রথম দিকে মুখ দিয়ে কোনো শব্দ করে (উহ্, আহ্, বাহ্), কিন্তু হঠাৎ তা বন্ধও করে দেয়। কোন কোন শিশু আবার দেরিতে কথা বলে। কেউবা আবার অগোছালো ও অর্থহীন কথা বলে। কোন কোন শিশু একই কথা বা শব্দ বারবার বলতে থাকে। আসলে সে তার অনুভূতি বোঝাতে চায়, কিন্তু পারে না।

    তাই দেখা যায় অটিস্টিক শিশুরা মাথা নেড়ে, হাত নেড়ে, কোনো নির্দিষ্ট অঙ্গ ভঙ্গিমায় তার মনের ভাব প্রকাশ করে। যেমন হাঁ-বোধক, না-বোধক অনুভূতি মাথা নেড়ে বোঝায় অথবা খিদে পেলে প্লেটের কাছে, ফ্রিজের কাছে, চুলার কাছে অন্যকে টেনে নিয়ে যায়। পেটে হাত দিয়ে বসে থাকে। বাইরে যাওয়ার জন্য দরজার কাছে টেনে নিয়ে যায়, কোনো কিছু চাওয়ার থাকলে চিৎকার করে, রেগে যায়, মন খারাপ করে।

    একটি নিজস্ব রুটিনমাফিক জীবন তারা বেছে নেয়। যেমন একটি নির্দিষ্ট সময় ঘুম থেকে উঠে, খায়, ছবি আঁকে ইত্যাদি। কিন্তু এই রুটিনের ব্যত্যয় ঘটলে তারা মানতে পারে না। রেগে গিয়ে জিনিসপত্র নষ্ট করে।

    অটিস্টিক শিশুটির পরিচর্যা ও চিকিৎসা
    অটিজম রয়েছে এমন শিশুদের মধ্যে ১০ থেকে ২০ শতাংশ চার থেকে ছয় বছর বয়সের মধ্যে মোটামুটি সুস্থ হয়ে ওঠে এবং সাধারণ স্কুলে স্বাভাবিক শিশুদের সঙ্গে পড়ালেখা করতে পারে। আরও ১০ থেকে ২০ শতাংশ শিশু স্বাভাবিক শিশুদের সঙ্গে পড়ালেখা করতে পারে না। তারা বাসায় থাকে বা তাদের জন্য প্রয়োজন হয় বিশেষায়িত স্কুল ও বিশেষ প্রশিক্ষণের। বিশেষায়িত স্কুলে পড়ে, ভাষাসহ বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ নিয়ে তারা সমাজে মোটামুটি স্বাভাবিক অবস্থান করে নেয়। কিন্তু বাদবাকি প্রায় ৬০ শতাংশ শিশু যাদের অটিজম আছে, তারা সহায়তা পাওয়ার পরও স্বাধীন বা এককভাবে জীবন অতিবাহিত করতে পারে না। তাদের জন্য প্রয়োজন হয় দীর্ঘদিন; প্রায় সারা জীবনের জন্য অন্যের ওপর নির্ভরতা। তা ছাড়া বিশেষ আবাসন, নার্সিং কেয়ারের প্রয়োজন হয় তাদের। ধৈর্য সহকারে অটিস্টিক শিশুটিকে যে সব বিষয়ে প্রশিক্ষন দিতে হবে সেগুলো নিম্নরূপ:

    স্বাবলম্বীতা বিকাশঃ বেঁচে থাকার জন্য যে কাজগুলো করা অবশ্যই দরকার সেগুলো প্রশিক্ষণ দিতে হবে যেমনঃ টয়লেট ও ওয়াশ করা, জামা ও জুতা পরিধান করা, দাঁত ব্রাশ করতে পারা, মাথা আচরাতে পারা, নিজে নিজে খেতে পারা ইত্যাদি। খাওয়ার এবং ঘুমের প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে খুব বেশি খেয়ে মুটিয়ে না যায় এবং দিনের বেলা ঘুমিয়ে রাতে নিজে এবং অন্য সকলের ঘুমের ব্যাঘাত না ঘটায়।

    সংবেদনশীলতার সমম্বয়ঃ
    এই ধরনের শিশুদের সংবেদনশীতা অত্যান্ত প্রখর অথবা অপ্রতুল হওয়াতে তাদের সংবেদনশীলতার সমম্বয় না করা হলে কোন কিছু শিখতে কিংবা মনসংযোগ করতে অনেক বিলম্ব হয়। বর্তমানে এ ধরনের শিশুদের প্রশিক্ষণের জন্য এই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচিত হচ্ছে।

    ফিজিও এবং অকুপেশনাল প্রশিক্ষণঃ অনেক অটিষ্টিক শিশুর বিভিন্ন মাংসপেশী, চোখ ও হাতের যথাযথ সমম্বয় এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যথাযথভাবে পরিপক্কতা ও পরিপূর্ণতার ঘাটতি থাকে। যথাযথ ফিজিওথেরাপি এবং অকুপেশনাল থেরাপি প্রয়োগ করলে এসব ক্ষেত্রে বেশ কার্যকরী ফলাফাল পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। প্রশিক্ষণের সাথে সাথে এ বিষয়টিকেও গুরুত্বের সাথে লক্ষ্য রাখতে হবে।

    কথা ও ভাষা বিকাশঃ
    অটিষ্টিক শিশুদের কথা ও ভাষা প্রশিক্ষণ অন্যান্যদের চেয়ে বেশ কঠিন কারণ তারা চঞ্চল এবং বেশিক্ষণ মনসংযোগ করতে পারে না। কথা ও ভাষা শিক্ষণের জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবেঃ

    শিশুদের সাথে মুখোমুখি এবং একই উচ্চতায় ও চোখে চোখ রেখে কথা বলতে হবে।
    ঠোঁটের নাড়াচাড়া এবং চোখের ও হাতের সঞ্চালন অনুসরণ করতে সাহায্য করতে হবে। যে কোন কার্যক্রম করার সময় শিশুর সাথে কথা বলে কাজটি করতে হবে এবং শিশুকে দিয়ে করাবার চেষ্টা করতে হবে।
    স্বাভাবিকভাবে শিশুটি কোন শব্দ উচ্চারণ করলে তাকে অর্থপূর্ণ শব্দে রূপান্তর করার চেষ্টা করতে হবে।
    শুরুতে অতি দরকারি কিছু সহজ এবং এক সেলেবলযুক্ত শব্দ নির্বাচন করে সেগুলো শেখানোর চেষ্টা করতে হবে। যেমন মা, বাবা, পানি, ভাত, জামা, জুত, বই, বল ইত্যাদি।
    শেখানো কথাগুলো বার বার এবং প্রতিদিন পুনরাবৃত্তি করতে হবে যাতে কোনভাবেই শিশুটি শিখে ফেলা শব্দগুলো ভুলে যেতে না পারে। সাথে সাথে এক শব্দের সাথে অরেকটি শব্দ যুক্ত করে দুই শব্দের বাক্য শেখানো চেষ্টা করতে হবে। যেমন- পানি খাব, জামা দাও, বই দাও, বল নেব ইত্যাদি।
    শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, ছবির বই, দরকারি জিনিসপত্র ইত্যাদি দেখিয়ে ধীরে ধীরে শেখানোর চেষ্টা করতে হবে।
    কথা বলতে না পারলে তাকে ছবির ভাষা দেয়ার চেষ্টা করতে হবে যেন ছবি দেখিয়ে তার চাহিদা বুঝাতে পারে।
    এরপর ধীরে ধীরে অক্ষর, সংখ্যা, ছড়াগানের ক্যাসেট, ভিডিও ইত্যাদির প্রতি আকর্ষণ বাড়াতে হবে এবং শেখানোর চেষ্টা করতে হবে।
    যেসব কথাগুলো বলতে পারবে সেগুলো ধীরে ধীরে বাস্তবে ব্যবহার করতে এবং অভ্যাস করতে হবে।
    সামাজিকতা ও আচরণগত বিকাশঃ
    অটিষ্টিক শিশুদের প্রয়োজনীয় সামাজিক আচরণ শেখাতে হবে। এক্ষেত্রে যেসব কার্যক্রম করতে হবে তা নিম্নরূপঃ

    সমবয়সী শিশুদের সাথে মিশতে ও ভাবের আদান-প্রদান করতে সহায়তা করতে হবে।
    কখনই একাকী খেলতে দেয়া যাবে না। অন্য কারো সাথে খেলতে দিতে হবে এবং একে অন্যের মাধ্যমে কোন কিছু আদান প্রাদান করা শেখাতে হবে।
    সম্ভাষণ করতে পারা, হাসির জবাবে হাসি, আনন্দ প্রকাশ, করমর্দন সালাম প্রদান, বিদায় সুচক হাত নাড়া, শরীরিক স্পর্শদ্বারা বন্ধুত্ব করতে পারা ইত্যাদি শেখাতে হবে।
    আদান-প্রদানমূলক খেলা যেমন- বল দেয়া-নেয়া, গাড়ি দেয়া-নেয়া ইত্যাদি নিয়ম করে শিশুদের সাথে খেলতে হবে প্রথমে সহজ যেমন লুকোচুরি, টুকি ইত্যাদি থেকে ধীরে ধীরে গঠনমূলক খেলা খেলতে হবে।
    শিশুকে খেলার মাঠে-পার্কে নিয়ে যেতে হবে এবং সহজভাবে চলাফেরা করতে দিতে হবে।
    তত্ত্বাবধানের সাথে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে অন্যান্যদের সাথে খেলায় সক্রিয় অংশগ্রহনের জন্য অনুপ্রাণিত করতে হবে।
    শিশুটিকে সকল সামাজিক অনুষ্ঠানাদিতে নিয়ে যেতে হবে। এটা ধরো না, ওটা করো না, সারাক্ষণ এই জাতীয় নিয়ন্ত্রন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
    কেউ যেন শিশুটিকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য না করে, বিরূপ সমালোচনা না করে এবং কোন কঠিন আচরণ না করে তার প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
    জরুরী বিষয়গুলো শেখানোর উপায় কি?
    প্রথমেই নিশ্চিত হোন আপনার শিশুটি কি কি জিনিস, বিষয়, খাবার, খেলনা ইত্যাদি খুব পছন্দ করে। এগুলো প্রশিক্ষণ সহায়ক শক্তি হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। প্রশিক্ষণ সহায়ক বিষয়টিকে শিশুর দৃষ্টিসীমার মধ্যে রেখে তাকে আস্বস্ত করতে হবে যে নির্দেশিত কাজটি করলে তার পছন্দের জিনিসটি দেয়া হবে। এভাবে শিক্ষণীয় কাজটি সে নির্ভুল করে একনাগাড়ে ৩-৫ বার করতে পারলে তার চাহিদা পূরণ করতে হবে এবং তাকে পুরস্কৃত করতে হবে। এছাড়া নিম্নলিখিত বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখতে হবেঃ

    কোন প্রকার জোর-জবরদস্তি না করে শিশুটি যা করতে পছন্দ করে তা থেকে তাকে সৃজনশীল কিছু শেখাবার চেষ্টা করতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই শিশুটির পছন্দ- অপছন্দকে গুরুত্ব দিতে হবে। সে যা দিয়ে খেলছে তাতে যুক্ত হয়ে তাকে শেখানোর চেষ্টা করতে হবে।
    প্রথমে এমন কিছু নির্বাচন করতে হবে যা শিশুটি করতে সক্ষম হয়। সফলতার জন্য তাকে পুরস্কৃত করতে হবে। চুমু দেয়া, আদর করা, বেড়াতে নিয়ে যাওয়া, তার পছন্দের খাবার/খেলনা প্রদান করা ইত্যাদি কে পুরস্কার হিসাবে প্রদান করা যেতে পারে।
    সকল প্রকার জটিলতা পরিহার করে একটির বেশি বিষয় একত্রে শেখানোর চেষ্টা করার দরকার নেই। যেমন যখন আপেল শেখানোর চেষ্টা করা হয় তখন শুধুই আপেল শেখাতে হবে। বল, টমাটো ইত্যাদি তখন দূরে রাখাই ভালো।
    শেখার সময় শিশুটিকে উৎসাহ দিতে হবে এবং তার ভালো কাজের প্রশংসা করতে হবে। হাত তালি, আদর ইত্যাদির মাধ্যমে উৎসাহিত করা সম্ভব।
    শিশুর অযৌক্তিক আচরণ এবং ভুল শিক্ষাকে অনুমোদন করা ঠিক নয়। অভিমান কিংবা তার দিক থেকে মনোযোগ অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে তাকে সেটা বুঝিয়ে দিতে হবে।
    কোন ব্যর্থতার জন্য শিশুটিকে মারধর, বকাঝকা, ভয় দেখানো, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা এবং ধৈর্য হারানো যাবে না। তাকে বরং বেশি বেশি স্নেহ-মমতা দিতে হবে।
    অতিরিক্ত চঞ্চলতা, জেদি ও আক্রমণাত্মক আচরণ, নিজেকে আহত করা, ভয় পাওয়া, খিচুনি/মৃগী রোগ ইত্যাদি থাকলে জরুরীভিত্তিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
    অন্যান্য রোগ-বালাই এর ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে এবং কোন লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
    দাঁতের যত্ন, কান পরিষ্কার ও ব্যক্তিগত হাইজিন এর প্রতি সতর্ক হতে হবে।
    এছাড়া মনোযোগ দক্ষতা, অনুকরণ দক্ষতা, ভাষা বোঝা এবং নিজেকে প্রকাশ করার দক্ষতার জন্য যেসব অনুশীলন আছে যেমন-মালাগাঁথা, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে টিপ পরা ইত্যাদি নানাবিধ কার্যক্রম এই ধরনের শিশুদের প্রশিক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

    যেসব খাবার খাওয়াবেন অটিজম শিশুদের
    অটিজম স্নায়ুতন্ত্র ও মস্তিষ্কের বিকাশজনিত সমস্যা। এতে শিশু অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠে। এর সুনির্দিষ্ট কারণ এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। শিশুর জন্মের তিন বছরের মধ্যে এর প্রকাশ ঘটে। তবে যত দ্রুত এ সমস্যা শনাক্ত করা যায় ততই মঙ্গল। পরিবারের অন্যদের চেয়ে এ শিশুদের খাবারে যদি কিছুটা পরিবর্তন আনা যায় তবে তাদের উপসর্গগুলো থেকে যতটা সম্ভব ভালো রাখা যায়।

    এদের খাবার ঠিক করার সময় দেখতে হবে, রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক আছে কি না। ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের কোনো ঘাটতি আছে কি না। তাদের খাবার এমন হবে, যাতে থায়রয়েডের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। তাদের খাবার হবে গ্লুটেন ও কেজিন ফ্রি এবং সহজ শর্করামুক্ত।

    গ্লুটেন ফ্রি খাবার : গ্লুটেন থাকে আটা, ময়দা, বার্লি, ইস্ট ও ভুট্টার মধ্যে। সুতরাং আটা-ময়দার তৈরি খাবার যেমন-রুটি, বিস্কুট, নুডলস, কেক, সুজি, সেমাই, পাস্তা, পাউরুটি, পিৎজা ইত্যাদি বাদ দিতে হবে। তাহলে বাচ্চাদের কি ধরনের খাবার দিতে হবে এ প্রশ্ন অভিভাবকদের। তাদের দিতে হবে চাল ও ডালের তৈরি খাবার। এ জন্য দিতে হবে-চালের রুটি, ভাত, খিচুড়ি, পিঠা, চালের সেমাই, ধানের খই, মুড়ি, চিড়া, চালের সুজি, পেঁয়াজু। এছাড়া দিতে হবে আলুর তৈরি খাবার। যেমন-ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, আলুভর্তা, আলুর চপ, আলুর দম ইত্যাদি। প্রতি বেলায় তাদের ভাত দিতে হবে এমন কোনো কথা নেই।

    গ্লুটেন হলো-জটিল প্রোটিন। এর অন্য নাম প্রোলামিন। যাদের গ্লুটেন সংবেদনশীলতা থাকে তাদের তলপেটে ব্যথা, ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, চুলকানি, মাথাব্যথা হতে পারে।
    .
    কেজিন মুক্ত খাবার : কেজিন থাকে দুধের মধ্যে। এটি দুধের প্রধান প্রোটিন। এ কেজিনের জন্যই দুধ জমাট বেঁধে যায়। কেজিন মুক্ত খাবারের জন্য অটিজমের ক্ষেত্রে দুধ বাদ দিতে হয়। এতে শিশুদের মায়েরা বিপাকে পড়েন। কারণ দুধ ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস। এ কারণে দুধ ছাড়া অন্যান্য ক্যালসিয়াম তাদের দিতে হবে। যেমন-সব রকমের ডাল, বাদাম, ছোটমাছ, পোস্তদানা, সমুদ্রের মাছ, শালগম, কালো কচুর শাক, সজনে পাতা, বাঁধাকপি, ব্রকলি, খেজুর, ডুমুর, ধনেপাতা, সীমের বিচি, মটরশুটি।

    * সহজ শর্করা : শর্করা দুই রকম। জটিল শর্করা ও সহজ শর্করা। জটিল শর্করা হলো-ভাত-রুটি, চিড়া, মুড়ি, খই, আলু ইত্যাদি। সহজ শর্করা হলো-চিনি, মিষ্টি, গুড়, মধু, গ্লুকোজ ইত্যাদি। অটিজমের ক্ষেত্রে যাতে রক্তে শর্করা বেড়ে না যায় সে জন্য সহজ শর্করা বাদ দিতে হবে। এ জন্য চিনি ও গুড়ের তৈরি খাবার যেমন-মিষ্টি, হালুয়া, পুডিং, আইসক্রিম, কোমল পানীয়, মিষ্টি পিঠা বাদ দিতে হবে।

    যদি কোনো বাচ্চার হাইপোথায়রডিজম থাকে তাহলে তাদের খাবার থেকে মুলা, বাঁধাকপি, ফুলকপি ও ব্রকলি বাদ দিতে হবে। এদের খাবারে সামুদ্রিক মাছ ও আয়োডিনযুক্ত খাবার দিলে ভাল হয়

    অটিজম সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা:
    ১. অটিজম একটি আচরণগত/ আবেগ অনুভূতিগত/ মানসিক স্বাস্থ্যঘটিত ডিজঅর্ডার। এখানে শারীরিক কোন সমস্যা সম্পৃক্ত নয়।
    অটিজমের সঙ্গে বিকাশগত অক্ষমতা ও নিউরো-বায়োলজিক্যাল ডিজঅর্ডার জড়িত। জন্মের তিন বছরের মধ্যেই এটা প্রকাশ পায় এবং আক্রান্ত ব্যক্তি আজীবন এই অক্ষমতার সমস্যায় ভোগে।

    ২. শিশু বয়সে নেয়া টিকা অটিজমের জন্য দায়ী
    অনেকের ধারনা মাম্পস-মিসেলস-রুবেলা (গগজ) ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধকের ব্যবহারে অটিজম হয়। কিন্তু এটি নিছকই ভুল ধারণা। এ নিয়ে বহু গবেষণা হয়েছে, কিন্তু কোন যোগসূত্র পাওয়া যায়নি। তাই ভয় পেয়ে এই ভ্যাকসিন ব্যবহার থেকে বিরত না থেকে বরং বাচ্চাকে ভ্যাকসিন দিলে সে এই রোগগুলো থেকে নিরাপদ থাকবে।

    ৩. পিতামাতার দুর্বল অভিভাবকত্ব সন্তানের অটিজমের জন্য দায়ী।
    জন্ম পরবর্তীকালের কোন জটিলতা কিংবা শিশুর প্রতি অমনোযোগিতার ফলে এই রোগের সৃষ্টি হয় না। কাজেই কোন বাবা মা ও আত্মীয়-স্বজন নিজেদের দোষী ভাবা অথবা বাবা-মাকে দায়ী করার কোন যৌক্তিকতা নেই।

    ৪. অটিস্টিকদের সবার সমস্যাই একরকম।
    আক্রান্ত ব্যক্তিদের লক্ষণ ও উপসর্গের মাত্রা বিচিত্র। একজনের সঙ্গে আরেকজনের হুবহু মিল নেই। যেমন কারও আচরণ অ্যাগ্রেসিভ আবার কেউ অতিরিক্ত গুটিয়ে-থাকা স্বভাবের।

    ৫. এটা একটা সাময়িক সমস্যা; বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেরে যাবে। কোন বিশেষ ব্যবস্থা নেয়ার দরকার নেই।
    অটিস্টিক শিশু কখনোই পুরোপুরি সেরে উঠবে না। তারপরও, মৃদু মাত্রার অটিজম, যেমন অ্যাসপারগার সিনড্রোমের ক্ষেত্রে যথাযথ সহযোগিতা, সমর্থন ও শিক্ষা পেলে পরিণত বয়সে আত্মনির্ভরতা অর্জন করা সম্ভব। বাকীদের বেলায়, উচ্চমাত্রার অটিজমের ক্ষেত্রে পরিণত বয়সেও অন্যের সাহায্য ছাড়া কখনোই স্বনির্ভর দৈনন্দিন জীবনযাপন সম্ভব নয়।

    ৬. অটিজম নিরাময়যোগ্য, চিকিৎসা করালে অটিস্টিক ব্যক্তি স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।
    কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস এবং অতি নিবিড় ইনটারভেনশন ও থেরাপির মাধ্যমে সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্যতার এই প্রচারণার সঙ্গে চিকিৎসক-গবেষকরা এখনও একমত হননি।

    ৭. অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের সবারই কোন কিছু শিখতে সমস্যা হয়।
    অটিজমে আক্রান্তদের মধ্যে কারো কারো শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে মারাত্মক সমস্যা থাকে। কিন্তু কেউ কেউ, বিশেষত অ্যাসপারগার সিনড্রোম আক্রান্তদের অনেকেই, গণিতের মতো বিষয়ে মূলধারার শিশুদের মতোই দক্ষতা অর্জন করতে পারে। (স্মর্তব্য: অটিস্টিকদের ২০-৩০% অ্যাসপারগার সিন্ড্রোমে ভোগে)।

    ৮. অটিজমে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সুপ্ত প্রতিভার অধিকারী।
    আইনস্টাইনের অটিজম থাকার প্রসঙ্গ অনেকেই জানেন এবং প্রাসঙ্গিক আলোচনায় রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করতে ভালবাসেন। বাস্তবতা হলো আমেরিকায় শিশুদের প্রতি ১৫০ জনে একজন এবং অস্ট্রেলিয়ায় ১৬০ জনে একজন শিশু অটিজমে আক্রান্ত। যাদের অধিকাংশই ম্যাথ-জিনিয়াস হওয়া দূরে থাক, খুব সাধারণ দৈনন্দিন কাজকর্মেও অন্যের উপর নির্ভরশীল।

    ৯. অটিজম থাকলে অন্য কোন ধরণের ডিজঅর্ডার থাকেনা।
    অটিস্টিকদের ক্ষেত্রে ডাউন সিনড্রোম, সেরিব্রাল পালসি, অন্ধত্ব, বধিরতা, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতা কিংবা অন্য কোন শারীরিক সমস্যা থাকার ঘটনা অস্বাভাবিক তো নয়ই; বরং সাধারণ।

    ১০. একই পরিবারে অটিজম থাকার ঘটনা একবারের বেশী ঘটেনা।
    অটিজম কেন হয়, তার সুস্পষ্ট কারণ এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। তবে জেনেটিক প্রভাব এ রোগের ওপর আছে। সাধারণ যেকোনো শিশুর চেয়ে যাদের ভাই বা বোনের অটিজম আছে, তাদের এ রোগ হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৫০ গুণ বেশি। ধারণা করা হয়, ক্রোমোজোম নম্বর 7q-এর অস্বাভাবিকতার সঙ্গে অটিজমের সম্পর্ক আছে।

    সঠিক টেস্ট, চিকিৎসা, থেরাপি এবং কাউন্সেলিং এর মাধ্যমে শিশুদের ৯০ থেকে ৯৫ ভাগ জীবন আচরণ স্বাভাবিক গন্ডির মধ্যে নিয়ে আসা সম্ভব। বর্তমানে দেশের অনেক শিশুই অটিস্টিক হওয়া সত্তেও স্বাভাবিক জীবনের সাথে মানিয়ে চলতে সক্ষম হচ্ছে। এই জন্য আপনাকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করতে পারে নিউরোজেন। আমাদের আছে দেশের সেরা থেরাপিস্ট, জেনেটিক এক্সপার্ট এবং কাউন্সিলর। তারা আপনার শিশুর সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে বদ্ধ পরিকর।

    লেখকঃ মোঃ হায়দার আলী
    গোদাগাড়ী, রাজশাহী।