Category: জাতীয়

  • দুর্গোৎসবকে ঘিরে গু-জব রটানোর চেষ্টা করলে ক-ঠোর ব্য-বস্থা নেয়া হবে, রংপুরে  র‌্যাব-এর মহাপরিচালক

    দুর্গোৎসবকে ঘিরে গু-জব রটানোর চেষ্টা করলে ক-ঠোর ব্য-বস্থা নেয়া হবে, রংপুরে র‌্যাব-এর মহাপরিচালক

    খলিলুর রহমান খলিল, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
    শারদীয় দুর্গোৎসবকে ঘিরে গুজব রটিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-এর মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘যারা পূজা মণ্ডপে হামলা চালায় তারা কাপুরুষ ছাড়া আর কিছু নয়। এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে র‍্যাব সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকবে।’

    মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রংপুর শহরের জাহাজ কম্পানি মোড়ের করুণাময়ী কালীবাড়ি মন্দিরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

    মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান বলেন, ‘সারা দেশে ৩৫ হাজার পূজা মণ্ডপ ও মন্দিরে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রায় সাত হাজার পূজা মণ্ডপ রয়েছে। এসব মণ্ডপসহ দেশের সব ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকবে।’

    র‍্যাব প্রধান বলেন, ‘২৪ সেপ্টেম্বর থেকে দেশের প্রতিটি পূজা মণ্ডপ ও মন্দিরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে।

    পূজা মণ্ডপে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ রাখার ওপর জোর দেন তিনি। তার মতে, প্রযুক্তির মাধ্যমে দ্রুত আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
    এ সময় রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী, র‍্যাব ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

  • ইয়্যুথ ভ-লান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড পেলেন (রাবি) শিক্ষার্থী ও সুজানগরের কৃতি সন্তান দ্বীপ মাহবুব

    ইয়্যুথ ভ-লান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড পেলেন (রাবি) শিক্ষার্থী ও সুজানগরের কৃতি সন্তান দ্বীপ মাহবুব

    এম এ আলিম রিপন,সুজানগরঃ দেশপ্রেম, বীরত্ব ও সাহসিকতার ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ‘ইয়্যুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড- ২০২৫’ এ ভূষিত হলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইবিএ শিক্ষার্থী দ্বীপ মাহবুব।
    গত সোমবার রাজধানীর তেজগঁাওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
    দ্বীপ মাহবুব পাবনার সুজানগর উপজেলার তঁাতিবন্দ ইউনিয়নের কামারদুলিয়ার আব্দুল হাই শেখের ছোট ছেলে। গ্রামের তঁাতীবন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও তঁাতিবন্দ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হোন রাজশাহী শাহ মাখদুম কলেজের মানবিক শাখায়। সেখান থেকে জিপিএ ৫ নিয়ে সফলতার সঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেন।
    বর্তমানে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদে (আইবিএ) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে বিবিএ অষ্টম ব্যাচে অধ্যায়নরত। দ্বীপ মাহবুব ২০২৪ এর জুলাই বিপ্লবে আওয়ামী লীগের গুলিতে একটি চোখ হারান। এ সময় একটি গুলি তার মস্তিষ্কে আঘাত হানে। দীর্ঘ ৫ মাস চিকিৎসা শেষে সুস্থ হলেও শরীরের একপাশ অবশ হয়ে যায়।
    ইয়ুথ ভলানটিয়ার অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তির বিষয়ে জানতে চাইলে দ্বীপ মাহবুব বলেন, সকল শুকরিয়া মহান রাব্বুল আলামীনের প্রতি, যিনি আমাকে এতটা সম্মানিত করেছেন। চব্বিশের জুলাইয়ে দেশের একজন সাধারণ শিক্ষার্থী এবং সচেতন নাগরিক হিসেবে নিজের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে আন্দোলনে অংশগ্রহণ, অন্য কোনো চাওয়া-পাওয়া ছিল না। কোটার যৌক্তিক সংস্কার ও আমার ভাইয়েদের খুনের বিচারের দাবিতে রাজপথে নামা, সবশেষ দেশের জন্য নিজের একটা অঙ্গ (চোখ) উৎসর্গ করার সৌভাগ্য হয়। আজকে আমি যে সম্মান পেয়েছি, সেটা জুলাইয়ে একটি বলিদানের প্রতিফলন হিসেবে দেখছি। ধন্যবাদ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে আমার এ ক্ষুদ্র ত্যাগকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য।
    তিনি আরও বলেন, জুলাই পরবর্তীতে বিভিন্ন শারীরিক প্রতিবন্ধকতা আমাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। সমস্যা নিয়েই আবারও পড়াশোনা এবং পূর্বের ন্যায় সকল কাজে অংশগ্রহণ করি। তারই অংশ হিসেবে বর্তমানে রাকসু নির্বাচনে শিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে লড়ছি। এছাড়া ইউনিস্যাব রাজশাহী ডিভিশনের স্বেচ্ছাসেবী হিসেবেও কাজ করছি।

    এম এ আলিম রিপন
    সুজানগর(পাবনা) প্রতিনিধি।।

  • রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার সাথে সেনাবাহিনী প্রধানের সৌজন্য সাক্ষাৎ

    রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার সাথে সেনাবাহিনী প্রধানের সৌজন্য সাক্ষাৎ

    সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।
    ঢাকা, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ (সোমবার): বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, এসবিপি, ওএসপি, এসজিপি, পিএসসি আজ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার সাথে এবং পরবর্তীতে বঙ্গভবনে মহামান্য রাষ্ট্রপতির সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

    সাক্ষাৎকালে, সেনাবাহিনী প্রধান সম্প্রতি তাঁর চীন সফরকালীন অনুষ্ঠিত বিভিন্ন বৈঠকের অভিজ্ঞতা ও আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ দিকসমূহ তুলে ধরেন। পাশাপাশি, দেশের সামগ্রিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং তা উন্নয়নে সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত মতবিনিময় হয়। আলোচনায় সেনাবাহিনী প্রধান আশ্বস্ত করেন যে, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। এছাড়াও, সেনাবাহিনী প্রধান সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ চলমান উন্নয়নমূলক কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন।

  • কাকরাইলে দুটি রাজনৈতিক দলের সং-ঘর্ষে সেনার সংবা-দ বিজ্ঞপ্তি

    কাকরাইলে দুটি রাজনৈতিক দলের সং-ঘর্ষে সেনার সংবা-দ বিজ্ঞপ্তি

    ঢাকা, ২৯ আগস্ট ২০২৫ (শুক্রবার): আজ রাত আনুমানিক ৮ টায় রাজধানীর কাকরাইল এলাকায় দুটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় বেশ কয়েকজন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়। প্রথমে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। তবে একপর্যায়ে সংঘর্ষ বেড়ে গেলে তারা সেনাবাহিনীর সহযোগিতা কামনা করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাদের উপর আক্রমণ চালানো হয় এবং এতে কয়েকজন সদস্য আহত হন।

    ঘটনার শুরুতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উভয় পক্ষকে শান্ত থাকতে এবং শান্তিপূর্ণ ভাবে স্থান ত্যাগ করার জন্য ও দেশের বিদ্যমান আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়া নিজেদের মধ্যে মতপার্থক্য দূর করার অনুরোধ জানায়। তবে বারংবার অনুরোধ সত্ত্বেও কতিপয় নেতাকর্মীরা তা উপেক্ষা করে মব ভায়োলেন্সের মাধ্যমে পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা করে। তারা সংগঠিতভাবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর আক্রমণ চালায় এবং আনুমানিক রাত ৯ টার দিকে মশাল মিছিলের মাধ্যমে সহিংসতা আরও বৃদ্ধি করে। এ সময় তারা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে এবং বিভিন্ন স্থাপনায় আগুন দেওয়ারও চেষ্টা চালায়। এছাড়াও বিজয়নগর, নয়াপল্টন ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সাধারণ জনগণের চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয় এবং জনদুর্ভোগ বৃদ্ধি পায়। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী শান্তিপূর্ণ সমাধানের সকল চেষ্টা তারা অগ্রাহ্য করে। ফলস্বরূপ, জননিরাপত্তা রক্ষার্থে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বল প্রয়োগে বাধ্য হয়। উল্লেখ্য আজকের উদ্ভূত ঘটনায় সেনাবাহিনীর ৫ জন সদস্য আহত হয়।

    সকল ধরনের মব ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সরকারের এই সিদ্ধান্ত পুনর্ব্যক্ত করছে এবং জনমনে স্বস্তি ও নিরাপত্তা আনয়নে সকল ধরনের মব ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করতে সদা প্রস্তুত রয়েছে। জননিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা ও শান্তি বজায় রাখতে সেনাবাহিনী সর্বদা বদ্ধপরিকর।

  • আসন্ন কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতা-য়েন প্রসঙ্গে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

    আসন্ন কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতা-য়েন প্রসঙ্গে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

    ঢাকা, ২৮ আগস্ট ২০২৫ (বৃহস্পতিবার): সম্প্রতি, বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের আসন্ন কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মোতায়েন সংক্রান্ত বিবিধ সংবাদ প্রচারিত হচ্ছে যা সেনাবাহিনীর দৃষ্টিগোচর হয়েছে।

    এ বিষয়ে জানানো যাচ্ছে যে, সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে এ সকল নির্বাচন সমূহে দায়িত্ব পালনের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা প্রদান করা হয়নি এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো দায়িত্বে সম্পৃক্ত হবার সুযোগ নেই।

    বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মনে করে, বিদ্যমান আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতা এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে আসন্ন কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন সমূহ একটি শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সকলের জন্য শুভকামনা রইল।

  • আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের  ৪৯ তম মৃ-ত্যুবার্ষিকী

    আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯ তম মৃ-ত্যুবার্ষিকী

    লেখকঃ মো: হায়দার আলীঃ কি নিয়ে লিখবো ভাবছিলাম, যেন ঠিক করতে পারছিলাম না। আজ বুধবার টিভি, স্থানীয় ও জাতীয়, অনলাইন পত্রিকা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাবে প্রচারিত হচ্ছিল বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯ তম মৃত্যু বাষির্কী বিষয়ে। তাই এবিষয়ে আল্লাহর নাম নিয়ে লিখা শুরু করলাম। জানি না পাঠকগন কতটা উপকৃত হবেন।

    আজ ১২ ভাদ্র, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী। বাংলার বিদ্রোহী কবি নামে পরিচিত কাজী নজরুলের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ কুমিল্লা। নজরুলের রাজনীতি, প্রেম, বিয়ে, ব্যক্তিজীবন, সঙ্গীত ও সাহিত্যের বর্ণিল অধ্যায় জুড়ে রয়েছে কুমিল্লা।

    কাজী নজরুল ইসলাম তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো কাটিয়েছেন শিক্ষা-সাহিত্যের পাদপীঠ কুমিল্লায় ১৯২১ সালের এপ্রিলে প্রথমবারের মতো কুমিল্লায় এসেছিলেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। এরপর ১৯২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি কুমিল্লায় মোট পাঁচবার এসেছেন। প্রায় তিন বছরে পাঁচবার কুমিল্লায় এসে অবস্থান করেছেন ১১ মাসেরও বেশি সময়। কুমিল্লায় বিভিন্ন সময় অবস্থানকালে সৃষ্টিশীল নানা গান, কবিতা লিখেছেন তিনি। কবি নজরুলের রাজনৈতিক জীবনেও কুমিল্লার প্রভাব রয়েছে। তিনি ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ কবিতা লিখে শহরের রাজগঞ্জে গ্রেফতার হয়েছিলেন। কবি নজরুলের প্রাণের শহর কুমিল্লায় নজরুল প্রেমিরা কবিকে স্মরণ করে আপন মহিমায়।

    কবি নজরুলকে কেন্দ্র করে কুমিল্লায় সাংস্কৃতিক কর্মকা- ১৯৪৫ সালের মাঝামাঝিতেই শুরু হয়। এর আগে ১৯২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে কুমিল্লা ঈশ্বর পাঠশালায় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা আবৃত্তি ও নজরুল সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। কুমিল্লার সঙ্গে কবি নজরুলের সম্পর্কগুলো স্মৃতিফলক ও নামকরণে আজও চিরজাগরুক হয়ে আছে। কবি নজরুল কুমিল্লার মুরানগরসহ শহরের যেসব এলাকায় অবস্থান করেছেন, আড্ডা দিয়েছেন, গল্প করেছেন, সঙ্গীত-সাহিত্য চর্চা করেছেন সেসব স্থানে নামফলক, স্মৃতিফলক নির্মাণ করে চেতনায় কবি নজরুলকে ধারণ করে আছে কুমিল্লাবাসী।

    ১৯৮৩ সালে কুমিল্লার তৎকালিন জেলা প্রশাসক সৈয়দ আমিনুর রহমানের উদ্যোগে নজরুল স্মৃতিরক্ষা পরিষদের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় কুমিল্লায় কবির স্মৃতিবিজড়িত স্থানে স্থাপন করা হয় স্মৃতিফলক। এরমধ্যে মুরাদনগরের দৌলতপুরে কবি নজরুল মঞ্চ, মুরাদনগরের কোম্পানীগঞ্জ-নবীনগর সড়কের পাশে নজরুল তোরণ, আলী আকবর খানের দ্বিতল বাড়ি আঙ্গিনায় ‘আম তলা’ (যেখানে বসে কবি বাঁশি বাজাতেন), কুমিল্লা শহরের ঝাউতলা মসজিদের কাছে, ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের উচ্চমাধ্যমিক শাখার পূর্ব-দক্ষিণ কোণে (রানীর দিঘির পাড়ে), নজরুল এভিনিউ সড়কের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে, ফরিদা বিদ্যায়তনের সামনে, দারোগা বাড়ি, মুরাদপুর জানু মিয়া চৌধুরীর বাড়ি, দারোগা বাড়ি, চর্থায় শচীন দেববর্মনের বাড়ি, কান্দিরপাড় বসন্ত স্মৃতি পাঠাগারসহ বিভিন্ন এলাকায় স্মৃতিফলক রয়েছে।

    অবিভক্ত বাংলার (বর্তমানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ) বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া গ্রামে তিনি জন্মেছিলেন। তাঁর ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুন।

    প্রেমের, বিরহ-বেদনা ও সাম্যের কবি নজরুল বাংলা সাহিত্য-সংগীত তথা সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান পুরুষ। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে তার লেখনী ধূমকেতুর মতো আঘাত হেনে ভারতবাসীকে জাগিয়ে দিয়েছিল। তিনি পরিণত হন বিদ্রোহী কবিতে। সাম্ররাজ্যবাদ, ফ্যাসিবাদ, নিপীড়ন, অনাচার, বৈষম্য, শোষণ ও পরাধীনতার বিরুদ্ধে অগ্নিকণ্ঠে সোচ্চার হয়ে কবি লিখে গেছেন অসংখ্য কবিতা, গল্প, উপন্যাস, গান।
    চির প্রেমের কবি নজরুল। তিনি যৌবনের দূত। তিনি প্রেম নিয়েছিলেন, প্রেম চেয়েছিলেন। মূলত তিনি বিদ্রোহী, কিন্তু তার প্রেমিক রুপটিও প্রবাদপ্রতিম। তাই তিনি অনায়াসে বলে গেছেন, ‘আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন খুঁজি তারে আমি আপনায়।’ পৃথিবীতে এমন কম মানুষই আছেন যিনি প্রেমের টানে রক্তের সম্পর্কে অস্বীকার করে পথে বেরিয়ে পরতে পারেন।
    বাংলা কবিতায় নজরুলের আবির্ভাব একেবারেই উল্কার মত। হঠাৎ করে একদিন তিনি বাংলা সাহিত্যে আবির্ভুত হয়ে সমস্ত আকাশকে কীভাবে রাঙ্গিয়ে গেলেন অথবা উজ্জ্বল করে দিলেন তা নিয়ে এখনো গবেষণা হতে পারে।
    কোন সঞ্জীবনি মন্ত্রে তিনি উচ্চকন্ঠে বলতে পারেন ‘বল বীর, বল উন্নত মম শির’ অথবা মহা-বিদ্রোহী রণ-ক্লান্ত/ আমি সেই দিন হব শান্ত/ যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না /অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণভূমে রণিবে না’।
    বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের বস্তুনিষ্ঠ জীবনী লেখার ইচ্ছে অনেক দিনের, অনেকেই লিখেছেন কিন্তু আমার সময় হয়ে উঠেনি। বর্ণাঢ্য কবিজীবনকে সব শ্রেণির পাঠকের জন্য সহজ করে, প্রামাণ্যতা অক্ষুন্ন রেখে উপস্থাপনের চেষ্টা মাত্র। তাঁর নজরুল জীবনকথা (প্রথমা প্রকাশন, প্রথম প্রকাশ ২০১৬, ২য় মুদ্রণ, মার্চ ২০১৭) বইয়ে। ৩২টি অধ্যায়ে সাতাত্তর বছরের এক মহাজীবনকে তিনি ধাপে ধাপে বর্ণনা ও ব্যাখ্যা করেছেন।

    নজরুলের জন্মগ্রাম চুরুলিয়ার নিকটবর্তী সাঁওতাল পরগনার বিদ্রোহী প্রতিবেশকে লেখক বিদ্রোহী নজরুলের প্রাথমিক চেতনাভূমি হিসেবে শনাক্ত করেন: ‘নজরুলের জন্মের দশ বছর আগেই এই অঞ্চলে ঘটে মুন্ডা বিদ্রোহ। এসব বিদ্রোহের গল্প ও গান চুরুলিয়া ও এর আশপাশের অঞ্চলের, বিশেষ করে একটু বেশি বয়সী মানুষের মুখে মুখে ফিরত। বিদ্রোহী কবি নজরুল তাঁর ছোটবেলায় এসব লড়াই-সংগ্রামের গল্প শুনেছেন বলে মনে হয়। তাঁর মনের গঠনে নিশ্চয়ই তা কমবেশি প্রভাব ফেলেছিল।’
    শিয়ারশোল স্কুলের দুজন শিক্ষক-সতীশচন্দ্র কাঞ্জিলাল ও হাফিজ নূরন্নবীর কথা আমাদের বিশেষভাবে মনে করিয়ে দেন লেখক; যাঁদের কাছ থেকে হিন্দুপুরাণ ও মুসলিম ঐতিহ্যের সমন্বয়ী সুর উপহার পেয়েছেন কবি।
    এ বছরের ডিসেম্বরে নজরুলের ‘বিদ্রোহী’ কবিতা রচনার শতবর্ষ পূর্ণ হবে। ১০০ বছর আগে এই কবিতা লেখার সেই স্মরণীয় রজনী যেন ছবির মতো অক্ষরে এঁকেছেন মোরশেদ শফিউল হাসান:
    ‘বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির যে ঘরটিতে নজরুল ও মুজফফর আহমদ থাকতেন, সেখানে বসেই ১৯২১ সালের বড়দিনের ছুটির সময় এক রাতে নজরুল তাঁর “বিদ্রোহী” কবিতাটি লেখেন। কবিতাটি তিনি প্রথমে লেখেন পেনসিল দিয়ে। সেকালে বলপেন এমনকি ফাউন্টেন পেনেরও চল ছিল না। দোয়াতে বারবার কলম ডুবিয়ে লিখতে হতো। মুজফফর আহমদের মতে, এভাবে লিখতে গিয়ে পাছে তাঁর ভাবনায় ছেদ পড়ে, তাই নজরুল পেনসিল দিয়েই পুরো কবিতাটি লিখেছিলেন।’

    এ বছর নজরুলের কুমিল্লা আগমনেরও শতবর্ষ। তাঁর জীবন ও সৃষ্টিতে ‘কুমিল্লা’ এক বিশিষ্ট অধ্যায় হয়ে আছে। ১৯২১ সালে কয়েক দফা কুমিল্লা আগমন ও অবস্থান, দুই ভুবনের দুই নারীÑনার্গিস ও প্রমীলার সঙ্গে সহৃদয় সংযোগের পাশাপাশি তৎকালীন কুমিল্লার বিপ্লবী আবহে লেখক তুলে ধরেছেন নজরুল ইসলামকে:
    ‘সময়টা তখন অসহযোগ আন্দোলনের। মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সারা দেশে ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়েছে। সে আন্দোলনের ঢেউ ত্রিপুরার মহকুমা শহর কুমিল্লাতেও এসে লেগেছে। নজরুলকেও এ সময় রাজনৈতিক নানা সভা-মিছিলে অংশ নিতে দেখা গেল। মিছিলের সামনে গলায় হারমোনিয়াম ঝুলিয়ে নিজের লেখা গান গাইতে গাইতে শহর প্রদক্ষিণ করছেন তিনি। সেই গানের কথা ছিল:
    ভিক্ষা দাও! ভিক্ষা দাও!
    ফিরে চাও ওগো পুরবাসী
    সন্তান দ্বারে উপবাসী…’
    লেখক নজরুলের জীবনী লিখতে গিয়ে তাঁর সমসাময়িক কাল সম্পর্কেও সম্পূর্ণ সচেতন। তাই ধূমকেতু পত্রিকায় ১৯২২-এর ১৩ অক্টোবর ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতা চেয়ে লেখা নজরুলের সম্পাদকীয় প্রবন্ধের কথা উল্লেখ করতে ভোলেননি উর্দু কবি ও রাজনীতিক হসরত মোহানির প্রসঙ্গ, যিনি এর আগে ১৯২১-এর ডিসেম্বরে একই দাবি উত্থাপন করেছিলেন: ‘যত দূর জানা যায়, বাঙলা দেশে নজরুলই প্রথম, এমনকি সমগ্র ভারতবর্ষেও মওলানা হসরত মোহানির পর দ্বিতীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি, যিনি প্রকাশ্যে পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি জানান।’
    হুগলিতে বসবাসকালে হুগলি, নৈহাটির শ্রমিকদের কবিতা পড়ে শোনানো, তাঁদের শ্রান্তি বিনোদনের জন্য বাংলা ও হিন্দি গান গাওয়া, চটকল শ্রমিকদের ধর্মঘটের সমর্থনে মিছিলে নামার তথ্য প্রমাণ করে নজরুল শুধু লেখাতেই নয়, বাস্তবেও ছিলেন মাটির কাছাকাছি কবি। ১৯২৭ সালে গণ-বাণী পত্রিকায় ‘অন্তর-ন্যাশনাল সঙ্গীত’ শিরোনামে শ্রমিকশ্রেণির আন্তর্জাতিক সংগীতের নজরুল-কৃত বাংলা রূপান্তর প্রকাশ পায়: ‘জাগো অনশন-বন্দী, ওঠ রে যত/ জগতের লাঞ্ছিত ভাগ্যাহত।’
    নজরুলের প্রাণছোঁয়া অনুবাদ বিষয়ে লেখকের পর্যবেক্ষণ: ‘এই অনুবাদটি করার সময় নজরুল ইউজেন পত্তিয়েরের লেখা মূল ফরাসি গানটির কিংবা তার ইংরেজি বা অন্য কোনো অনুবাদের নোটেশন বা স্বরলিপি দেখার সুযোগ পাননি। তার পরও নজরুলের অনুবাদ সম্পর্কে মুজফফর আহমদ বলেছেন: “বাংলা ভাষায় সর্বোৎকৃষ্ট তো বটেই, আমার বিশ্বাস ভারতীয় ভাষাগুলিতে যতসব অনুবাদ হয়েছে সে-সবের সেরা”।’
    নজরুল-জীবনের অনেক অজ্ঞাত বা স্বল্পজ্ঞাত তথ্যের সমাহার এই বই। যেমন ১৯২৯ সালে এক কৃষক সম্মেলনে কুষ্টিয়া সফরকালে চারণকবি মুকুন্দ দাসের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ ও সখ্যের বিবরণ পাই: ‘নজরুলের কুষ্টিয়া অবস্থানকালীন কুমারখালীতে তাঁকে একটি সংবর্ধনা দেওয়া হয়। চারণকবি মুকুন্দ দাস সে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সংবর্ধনার উত্তরে দেওয়া বক্তৃতায় নজরুল মুকুন্দ দাসকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, “যাঁরা গান বা বক্তৃতা দ্বারা দেশের জাগরণ আনতে চেষ্টা করেন তাঁরা সকলেই চারণ। আপনি, আমি, আমরা সবাই চারণ, তবে আপনি আমাদের স¤্রাট, অর্থাৎ চারণস¤্রাট”।’
    বাংলা গানের বুলবুল নজরুলের সংগীতজীবন নিয়ে তিনি বিশদ ও মনোহর আলোচনা করেছেন। নজরুলের রাগরাগিণীর তত্ত্বীয় প্রসঙ্গের সমান্তরালে অনায়াসে আসে ১৯৩৪ সালে কলকাতার বিবেকানন্দ রোডে ‘কলগীতি’ নামে নজরুলের গ্রামোফোন যন্ত্র ও রেকর্ড বিক্রির দোকান খোলার অনুষঙ্গ। দাবা খেলার আমুদে খতিয়ানের সঙ্গে সঙ্গে এসেছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষার গুরুদায়িত্ব পালনের কথাও। রঙ্গমঞ্চের নজরুলও থাকেননি অনালোচিত। নজরুল জীবনকথায় পাই সর্বত্রগামী এমন নজরুলকে:
    ‘নজরুলের লেখা গীতিনাট্য মধুবালার অভিনয় দিয়েই ১৯৪০-এর দশকের গোড়ায় নাট্যভারতী থিয়েটার তার যাত্রা শুরু করে। এতে গানগুলোতে কণ্ঠ দিয়েছিলেন হরিমতী ও রাধারাণী দেবী। মধুবালা যে চল্লিশ রজনী চলেছিল, তা এই গানগুলোর আকর্ষণেই।’
    এই বইয়ে কিছু প্রচলিত ভ্রান্তি দূর করেছেন মোরশেদ শফিউল হাসান। ‘যদি আর বাঁশি না বাজে’ শিরোনামে ১৯৪১-এর এপ্রিলে বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির রজতজয়ন্তী উৎসবে প্রদত্ত সভাপতির অভিভাষণকে অনেকেই তাঁর জীবনের শেষ ভাষণ বা বক্তৃতা হিসেবে চিহ্নিত করে থাকেন। তবে নজরুল জীবনকথায় লেখক জানাচ্ছেন, এর কয়েক মাস পর ১৯৪১-এর সেপ্টেম্বরে হাওড়ায় রবীন্দ্র-স্মরণ অনুষ্ঠানে এবং একই সালের ২৯ নভেম্বর হাজী মোহাম্মদ মুহসীনের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সভাতেও তিনি বক্তৃতা প্রদান করেন।
    এরপর ৩৫ বছরের নিস্তব্ধতা। নজরুল বেঁচেছিলেন ১৯৭৬ পর্যন্ত কিন্তু ১৯৪২ থেকেই তাঁর অসুস্থতার শুরু। লেখক এই সময়কালে নজরুলের চিকিৎসা তৎপরতা এবং ১৯৪৭-এ বিভক্ত বাংলার দুই অংশে নজরুলচর্চার আদ্যোপান্ত তুলে ধরেছেন। একদিকে কায়েমি স্বার্থবাদী পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর খ-িত নজরুলকে সাম্প্রদায়িক অভিসন্ধিতে ব্যবহারের চেষ্টা আর অন্যদিকে পঞ্চাশ ও ষাটের দশকজুড়ে পূর্ব বাংলার স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়-পাড়া-মহল্লায় ‘রবীন্দ্র-নজরুল-সুকান্তজয়ন্তী’ পালনের মধ্য দিয়ে অসাম্প্রদায়িক জাতীয়তাবাদী চেতনা শাণিত করার বিষয়টিও উঠে এসেছে।
    ১৯৭২ সালের ১১ জ্যৈষ্ঠ ‘জ্যৈষ্ঠের ঝড়’ নজরুল কলকাতা থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় আসেন। ঝোড়ো জীবনের শেষভাগে ঢাকায় অবস্থান, সংবর্ধনা ও কবিকে ঘিরে জনতার বিপুল আগ্রহের কথা সবিস্তার এসেছে বইয়ের শেষ দুই অধ্যায়ে। ঢাকার বাইরে কবিকে প্রদত্ত দুটো সংবর্ধনার কৌতূহলোদ্দীপক বিবরণ দিয়েছেন লেখক:
    ‘১৯৭৪ সালেই ঢাকার বাইরে টাঙ্গাইলে ও নারায়ণগঞ্জেও কবিকে দুটি সংবর্ধনা দেওয়া হয়। নারায়ণগঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটির আয়োজক ছিল সেখানকার “শাপলা” নামক একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন। নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে রণেশ দাশগুপ্ত, অধ্যাপক করুণাময় গোস্বামী প্রমুখ বক্তব্য দেন। সেদিন কবিকে দেখতে আসা মানুষের ভিড়ের চাপে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের দেয়াল ভেঙে পড়েছিল।’
    বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পরই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশে তাঁর বসবাসের ব্যবস্থা করেন। ধানমন্ডিতে কবির জন্য একটি বাড়ি প্রদান করেন।
    ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের শোকাবহ ঘটনার এক বছর পর ১২ই ভাদ্র ১৯৭৬ সালের শোকের মাসেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (সাবেক পিজি হাসপাতাল) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন নজরুল।
    কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। এখানেই তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন।
    কবি নজরুল তাঁর ৭৭ বছরের জীবনকালের ৩৪ বছরই ছিলেন নির্বাক (১৯৪২-১৯৭৬)। বেঁচে থাকার জীবন সংগ্রাম, অভাব-অনটন, নানা প্রতিকূলতা, জেলজুলুম ও হুলিয়ার মধ্যেই তাঁর সাহিত্যচর্চার সময় ছিল মাত্র ২৪ বছর (১৯১৯-১৯৪২)।
    এই ২৪ বছরে নজরুল সৃষ্টি করে গেছেন ২২টি কাব্যগ্রন্থ, সাড়ে ৩ হাজার, মতান্তরে ৭ হাজার গানসহ ১৪টি সংগীত গ্রন্থ, ৩টি কাব্যানুবাদ ও ৩টি উপন্যাস গ্রন্থ, ৩টি নাটক, ৩টি গল্পগ্রন্থ, ৫টি প্রবন্ধ, ২টি কিশোর নাটিকা, ২টি কিশোর কাব্য, ৭টি চলচ্চিত্র কাহিনীসহ অসংখ্য কালজয়ী রচনা।
    তাই তো একাধারে তিনি ছিলেন কবি, গল্পকার, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, শিশু সাহিত্যিক, অনুবাদক, প্রাবন্ধিক, সম্পাদক, সাংবাদিক, গীতিকার, সুরকার, স্বরলিপিকার, গীতিনাট্যকার, গীতালেখ্য রচয়িতা, চলচ্চিত্র কাহিনীকার, চলচ্চিত্র পরিচালক, সঙ্গীত পরিচালক, গায়ক, বাদক, সঙ্গীতজ্ঞ ও অভিনেতা।

  • শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে হিন্দুদের আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তারেক রহমান

    শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে হিন্দুদের আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তারেক রহমান

    নিউজ ডেস্ক।।
    হিন্দুদের ভগবান শ্রীকৃষ্ণ হিন্দুধর্মের একজন প্রধান দেবতা এবং বিষ্ণুর অষ্টম অবতার। তাঁকে স্বয়ং ভগবান হিসেবেও পূজা করা হয়। তিনি সুরক্ষা, করুণা, কোমলতা এবং প্রেমের দেবতা হিসেবে পরিচিত। হিন্দুরা কৃষ্ণ জন্মাষ্টমীতে তাঁর জন্মদিন পালন করে আর তার জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে হিন্দুদের প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে হিন্দুদের প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানান। যা নিচে হুবুহু তুলে ধরা হলো।

    “শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আমি হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভাই বোনদের জানাই আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা। আমি তাদের অব্যাহত কল্যাণ, সমৃদ্ধি ও শান্তি কামনা করি।

    হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মতে জন্মাষ্টমী ভগবান বিষ্ণুর অষ্টম অবতার শ্রী কৃষ্ণের জন্মদিন। ভগবান শ্রী কৃষ্ণ একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং দুষ্টদের বধ করে এই পৃথিবীকে পাপ থেকে মুক্ত করেছিলেন। আবহমানকাল ধরে এই ধর্মীয় উৎসবটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়ে আসছে। উৎসব সার্বজনীন ও সম্প্রদায়গত বিভাজনকে সংযুক্ত করে মানুষকে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের নিবিড় বন্ধনে আবদ্ধ করে। মানব সমাজকে এক শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করায়। তাদের মধ্যে সৃষ্টি করে এক অনন্য সংহতিবোধ। আনন্দরুপ বিনম্রতায় সমাজে সকলকে এক অভিন্ন আন্তরিকতায় আপ্লুত করে।

    সকল ধর্মের মর্মবাণী সম্প্রীতি, মানব কল্যাণ ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। যুগে যুগে ধর্ম প্রচারকগণ মানুষকে সত্য ও ন্যায়ের পথ দেখিয়ে গিয়েছেন। ভগবান শ্রী কৃষ্ণ পাপিদের দুর করার জন্য অনেক মহৎ কাজ করেছেন, তাদের সাথে সম্পর্কিত প্রতিটি ইতিহাস বর্তমানে মানবসমাজের ওপর গভীর প্রভাব বিস্তার করে আছে। তিনি অন্যায়, অনাচার ও দুঃশাসনকে দমন করে পৃথিবীতে ন্যায়, সত্য ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠা করে সমাজে সদাচারী ও নিরপরাধ মানুষদের শান্তি, নিরাপত্তা ও স্বস্তি দান করেছিলেন। গণবিরোধী স্বৈরশক্তি দেশে দেশে মানুষের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ণের খড়গ নামিয়ে আনে। শ্রীকৃষ্ণের বাণী ও কৃতকর্ম অনুসরণে অত্যাচারীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধের শিক্ষা থেকে অসহায় ও মজলুম মানুষ প্রেরণা লাভ করবে।

    ধর্মীয় সহিষ্ণুতা বাংলাদেশের সংস্কৃতির অনুষঙ্গ। সুপ্রাচীনকাল থেকেই বাংলাদেশীরা কখনোই ঔদার্য, পারস্পরিক শুভেচ্ছাবোধ ও অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা হারায়নি। এখানে সকল ধর্মের মানুষেরা যুগ যুগ ধরে সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বসবাস করে আসছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি সেই বন্ধন অটুট রাখতে দৃঢ় অঙ্গিকারাবদ্ধ।

    জন্মাষ্টমীর এই শুভদিনে আমি হিন্দু সম্প্রদায়ের সকলের প্রতি প্রাণঢালা শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।”

  • গোদাগাড়ীতে চেয়ারম্যান টিটুর বিরু-দ্ধে প্রকল্পের টাকা হ-রিলুটের অ-ভিযোগ

    গোদাগাড়ীতে চেয়ারম্যান টিটুর বিরু-দ্ধে প্রকল্পের টাকা হ-রিলুটের অ-ভিযোগ

    নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী : রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার ৪ নং রিশিকুল ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মাহাবুবুর রহমান টিটুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা হরিলুটের অভিযোগ উঠেছে। গত বছরের ৫ আগস্ট পববর্তী সময়ের পর ওই ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম আওয়ামী লীগ সমর্থিত হওয়ায় তার নামে একাধিক মামলা দায়ের হয়। এর পর তিনি কারাগারে যান। বর্তমানে সব মামলায় জামিনে রয়েছেন। এই সময়ে মাহাবুবুর রহমান টিটু ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

    এর পর থেকেই তিনি বিভিন্ন ভূয়া প্রকল্প ও নামমাত্র কাজ করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। তিনি ওই ইউনিয়ের যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদে রয়েছেন।

    জানা গেছে, বিএনপির একটি ছত্রছায়ায় তিনি কৌশলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিতে মরিয়া হয়ে উঠেন। পরে তিনি সেই কৌশলে জয়ী হয়ে দায়িত্বও নিয়ে নেন। এর পরে তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হায়াতের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেন।

    রিশিকুল ইউনিয়নের ডিজিটাল সেন্টারের নামে ল্যাপটপ সরবরাহের নামে তা ক্রয় না করে টাকা মেরে দেওয়া। মসজিদের উন্নয়ন নামে প্রকল্প গ্রহণ করে পুরো টাকা না দেওয়া। ইউনিয়ন পরিষদের টয়লেট সংস্কার না করে নামমাত্র কাজ করা। এডিপি বরাদ্দের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেঞ্চ সরবরাহের নামে তা না দেওয়া। বিভিন্ন ওয়ার্ডে রিং পাইপ স্থাপন নামে বরাদ্দ নিয়ে তা না করাসহ নানান অনিয়ম ও দুর্নীতির জড়িয়ে পড়েছেন।

    এর পর ওই সব প্রকল্প কোনা কিছুই না করে আবার কিছু কাজ করে পুরো টাকা উঠিয়ে নিয়ে নিজের পকেট মোটা করেছেন।

    গত ৯ জুুলাই এসব অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিতে গিয়ে সত্যতাও পাওয়া যায়। এডিপি বরাদ্দের রিশিকুল ইউনিয়নের ডিজিটাল সেন্টারের নামে ল্যাপটপ সরবরাহের নামে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে ওই ডিজিটাল সেন্টারে গিয়ে নতুন ল্যাপটপের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

    ডিজিটাল সেন্টারের দায়িত্বরত শাহিনুর ইসলামকে নতুন ল্যাপটপের কথা বললে ভ্রু কুচকে অবাক চোখে তাকিয়ে থাকেন। পরে তিনি বলেন কোন নতুন ল্যাপটপ এখানে আসেনি। টেবিলে যে ল্যাপটপে কাজ করা হচ্ছে তা কতদিন আগের জানতে চাওয়া হলে ২০১৬ সালের বলে জানান। ল্যাপটপের নামে নতুন ১ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দের কথা জানালে তিনি তা জানেন না বলে জানিয়ে দিন। তবে এসব বিষয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি শাহিনুর ইসলাম।

    এছাড়াও ১% প্রকল্প কাজের ওই ইউনিয়নের টয়লেট সংস্কারের জন্য ১ লাখ টাকা এবং ইউপির টয়লেট টাইলস দ্বারা সংস্কারের ১ লাখ ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ নেন। শুধু মাত্র টয়লেট সংস্কার ও টাইলসদ্বার টয়লেট সংস্কার সামান্য ভিন্ন নামে মোট ২ লাখ ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ নিলেও টয়লেট সংস্কার দেখতে গিয়ে দৃশ্যমান সংস্কার দেখাতে পারেনি ইউনিয়ন পরিষদে কর্তব্যরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। প্রশ্ন করা হলে বলেন, পাইন লাগানো হয়েছে। অপর দিকে টাইলসদ্বারা টয়লেট সংস্কার দেখতে চাইলে তারা বলেন, চেয়ারম্যানের সাহেবের রুমে তালা লাগানো তা দেখা সম্ভব হচ্ছে না। তাদের কাছে চাবি নেই বলে জানান।

    তবে ওই ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তার রুমে শুধু মাত্র মেঝেতে টাইলস লাগানো দেখা গেছে। ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ওই প্রকল্পেরই টাকায় মেঝেতে টাইলস বসাতে হয়েছে। শুধু মাত্র মেঝেতে এতো টাকা খরচ হবে না জানালে প্রশাসনিক কর্মকর্তার চোখে মুখে দুর্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্বলতার ছাপ দেখা যায়।

    এছাড়াও ১% প্রকল্প বরাদ্দের বিভিন্ন ওয়ার্র্ডে রিং পাইপ স্থাপনে ১ লাখ ৬১ হাজার টাকা, রিশিকুল ইউনিয়নের সকল ওয়ার্ডে রিং পাইপ স্থাপনে ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা নেন ইউপি চেয়ারম্যান। বরাদ্দের জন্য সামান্য নাম পরিবর্তন করে এসব টাকা নেওয়া হয়। তবে ইউনিয়নের পরিষদের কোন ওয়ার্ডে ও কোথায় এসব বিতরণ করা হয়েছে তার তালিকা দেখতে চাইলে তা দেখাতে পারেন নি। এসব তালিকা ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যান করে এবং তারাই জমাদেন। এগুলো পরিষদেই থাকার নিয়ম এমন প্রশ্ন করা হলে প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাফ সাজিয়ে দেন এসব তালিকা আমাদের কাছে থাকে না সরাসরি উপজেলা প্রকৌশলীর (এলজিইডি) অফিসে জমা আছে।

    তবে এসব বিষয়ে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী মুনসুর রহমান বলেন, এসবের জন্য আমরা স্টীমেট তৈরী করে দেয়। এখান পর্যন্তই শেষ তবে কোন তালিকা আমাদের অফিসে থাকার নিয়ম নেই এবং থাকেনা।

    এদিকে, ওই ইউনিয়নের টিআর প্রকল্পের ভানপুর উপরপাড়া জামে মসজিদের উন্নয়নের জন্য ২ লাখ ১১ হাজার টাকা বরাদ্দ নেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য সেলিম রেজা। তবে সরেজমিনে গিয়ে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক রকিব হোসেনের সাথে বলে বলে জানা যায়, ঈদ-উল-আযহার আগে চেয়ারম্যান মসজিদের ক্যাশিয়ার এনামুল হককে ডেকে মাত্র ৪০ হাজার টাকা দিয়েছে। মোট বরাদ্ধের পুরো বরাদ্দ পাইনি। তবে আমরা এসব বিষয়ে আগে জানতাম না।

    ইউপি সদস্য সেলিম আহমেদের মাধ্যমে জেনেছি কিছু বরাদ্দ হয়েছে নিয়ে যাবেন। চেয়ারম্যান সাহেব ক্যাশিয়ারকে ডেকে মাত্র ৪০ হাজার টাকা দিয়েছে। ২ লাখ ১১ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে পেয়েছে মাত্র ৪০ হাজার টাকা এসব জেনে মসজিদ কমিটির সদস্যগণ অবাক হন এবং তারা দাবি জানান যেহেতু মসজিদের উন্নয়নের জন্য অনেক টাকা প্রয়োজন তাদের উচিত হবে পুরো টাকাটি দেওয়া। মসজিদের টাকা এভাবে নিজেদের পকেটে রেখে দেওয়া মোটেও ঠিক নয় বলে জানান।

    এলাকাবাসী মসজিদের টাকা মেরে দেওয়ার বিষয়টি জানান পর ব্যাপক ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। এসব বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাহাবুবুর রহমান জানান, ২ লাখ ১১ হাজার টাকা কয়েকটি মসজিদে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। পরে মসজিদ গুলোর নাম দেওয়া হবে বলে জানান। তবে চেয়ারম্যান পরে আর কোন নাম দিতে পারেন নি।

    সংবাদকর্মী ওই এলাকায় যাওয়ারপর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তোড়জোর শুরু করে। পরবর্তিতে জানা গেছে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজে মসজিদ কমিটিকে ডেকে সমঝোতা করেছেন।

    এছাড়াও একই ওয়ার্ডের ভানপুর তরিকুলের বাড়ী থেকে আমিনের দোকান পর্যন্ত ড্রেন নির্মানের নামে ২ লাখ টাকা বরাদ্দ নেন। তবে সেই ড্রেন নির্মাণ না করে টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠে। ভানপুর গ্রামের বাসিন্দা মুনজুর আলম অভিযোগ করেন, যে ড্রেন নির্মান করা হয়েছে সেটি ১০ বছর আগের করা। ড্রেনের এক মাথা মাত্র ২০-২৫ ফিটের মতো কাজ করেছে এছাড়া আর কোন কাজ হয়নি। তাও আবার কাজের মান খুব নিম্নমানের বলে অভিযোগ করেন।

    এছাড়াও ৬ নং ওয়ার্ডের হাজীপাড়া আনোয়ারের বাড়ী হইতে মালকাহার পর্যন্ত মাটি দ্বারা রাস্তা নিমাণে ২ লাখ টাকা বরাদ্দ হলেও সরেজমিতে গিয়ে এর সত্যতা পাওয়া যায়নি।

    আনোয়ারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, যে নামে প্রকল্প হয়েছ তা মোটেও হয়নি। রাস্তা যখন নতুন করা হয় তখন নতুন মাটি তোলা হয়েছিলো। পরবর্তিতে আর কোন মাটি দিয়ে রাস্তা হয়নি। আর এরাস্তার জন্য প্রকল্প বরাদ্দ হয়েছে সেটিও আমি জানিনা।

    এছাড়ও ওই ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদের নামে আগে বরাদ্দকৃত প্রকল্প একই নামে পরে দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে। এছাড়াও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নিজের ওয়ার্ড ৯ নং ওয়ার্ডে বিভিন্ন কাজে অনিয়ম করে টাকা হাতিয়ে নেন।

    এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় উপজেলা চেয়ারম্যান ও যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের সাথে দহরম মহরম সম্পর্ক থাকায় উপজেলার বিশেষ বরাদ্দ নিয়ে কাজ না করে নয়ছয় করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কেউ ভয়ে প্রতিবাদ করতে পরেনি। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে সে কৌশলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করে আবারো লাটা পয়সা লুটে নিচ্ছে। এর পেছনের ইদ্ধনদাতা কে এই নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তার এসব কাজের সহযোগী হিসেবে ইউপি পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান তাকে সহযোগিতা করছেন বলে জানান গেছে।

    ল্যাপটপ না কেনা, মসজিদের টাকা না দেওয়া বিষয়ে রিশিকুল ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাহাবুবুর রহমান টিটু বলেন, ল্যাপটপ তো ডিজিটাল সেন্টারে আছে বলে দাবি করেন। এই প্রতিবেদক বলেন, আমি নিজে এখন পরিষদে আছি কেউ নতুন ল্যাপটপ দেখাতে পরেনি জানালে তিনি চুপ হয়ে যায়। মসজিদের টাকা পুরো কেনো দেননি বললে , তিনি জানান বিভিন্ন মসজিদে দেওয়া হয়েছে। এক মসজিদের নামে বরাদ্দকৃত টাকা অন্য মসজিদে দেওয়া এটা নিয়মের মধ্যে হয়েছে কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন এভাবে দেওয়া হয়। রিংপাটসহ নানান অনিয়েমের বিষয়ে জানাতে চাওয়া হলে তালিকা গুলো পরে দেওয়ার কথা জানালেও আর দেয়নি ওই চেয়ারম্যান।

    এসব বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফয়সাল আহমেদ বলেন, আমার কাছে অভিযোগ আছে আমি বিষয় গুলো দেখছি।
    ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যানের এমন কান্ডে এলাকাবাসী ফুঁসে উঠেছেন। এর আগেও মাদ্রাসার টাকা আত্মসাৎ করায় এলাকাবাসী তাকে ধরে রেখেছিলো। পরবর্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনা স্থলে এসে মাদ্রাসার পুরোটাকা পরিশোধ সাপেক্ষে ছাড় দেওয়া হয়।

    মোঃ হায়দার আলী
    নিজস্ব প্রতিবেদক
    রাজশাহী।

  • লক্ষ্মীপুরে সায়ানের কব-রে বিমান বাহিনীর শ্র-দ্ধা – স্মৃতি-স্তম্ভ স্থাপনের দাবি

    লক্ষ্মীপুরে সায়ানের কব-রে বিমান বাহিনীর শ্র-দ্ধা – স্মৃতি-স্তম্ভ স্থাপনের দাবি

    নাজিম উদ্দিন রানা:
    মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে বিমান দূর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী লক্ষ্মীপুরের সায়ান ইউছুপের কবর জিয়ারত ও শ্রদ্ধা জানিয়েছে বিমান বাহিনী। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের বশিকপুর গ্রামের সায়ানের বাড়ীতে যান বাহীনীর ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। এসময় নিহতের কবর জিয়ারত ও পুস্পস্তবক অর্পণ করে তার আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয়।পরে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন বাহিনীর সদস্যরা।
    এসময় বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে সবধরণের সহযোগীতার আশ্বাস দেয়া হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন- বিমান বাহিনীর উইন কমান্ডার মো. রেজাউল হক।
    নিহতের পিতা এ এফ এম ইউসুফ গণমাধ্যমকে বলেন, এমন দুর্ঘটনা যেন কারো জীবনে না আসে এবং স্বাভাবিক জীবন যাপনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি। স্বজনরা নিহত সায়ান এর স্মৃতিস্তম্ভের স্থাপনের দাবি জানান।
    বিমান বাহিনীর উইন কমানন্ডার মো. রোজাউল হক বলেন,আমরা বিমান বাহিনীর প্রধানের নির্দেশে নিহত শিক্ষার্থীর কবর জিয়ারত করতে এসেছি। এবং তার পরিবারকে গভীর সমবেদনা জানিয়েছি। এই দুর্ঘটনা

  • নতুন বাজার পত্রিকার বার্তা সম্পাদক এস মিজানের মৃ-ত্যুতে নতুন বাজার পরিবারে শো-ক

    নতুন বাজার পত্রিকার বার্তা সম্পাদক এস মিজানের মৃ-ত্যুতে নতুন বাজার পরিবারে শো-ক

    নতুন বাজার পত্রিকার বার্তা সম্পাদক এস মিজানুল ইসলাম (৬০) মৃত্যুবরন করেছেন। বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল ৬টা ১০ মিনিটে স্ট্রোকজনিত কারনে তিনি ইন্তেকাল করেন।(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

    তিনি দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস সহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভূগছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও এক ছেলেসহ বহু গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। নতুন বাজার পত্রিকার বার্তা সম্পাদক এস মিজানুল ইসলাম দৈনিক ইত্তেফাক ও ডেইলী বাংলাদেশ টুডে,দৈনিক ইনকিলাব,দৈনিক যুগান্তর,আজকের কাগজ,নিউ নেশন সহ বহু মিডিয়ায় তিনি কাজ করেছেন।

    এছাড়াও তিনি প্রগতি লেখক সংঘ ও খেলাঘর আসরসহ বিভিন্ন প্রগতিশীল সংগঠনের নেতৃত্বের সম্মুখভাগে ছিলেন। কবি, লেখক ও সাংবাদিক এস মিজানুল ইসলাম সন্ত্রাস, অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লিখতে গিয়ে বহুবার হামলা মামলার শিকার হয়েছেন।

    আজ (সোমবার) বাদ জোহর তার নিজ গ্রাম বানারীপাড়া কেন্দ্রীয় ঈদগাঁহ মাঠে প্রথম ও বাদ আসর উপজেলার সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের দিদিহার গ্রামের ওলিয়ার বাড়িতে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে চির নিন্দ্রায় শায়িত করা হয়।

    নতুন বাজার পত্রিকার বার্তা সম্পাদক এস মিজানুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন নতুন বাজার পরিবারের সকল সদস্যবৃন্দ ও প্রতিনিধিগন।