Category: কৃষি

  • গোদাগাড়ীতে বরবটি চাষে কষকদের বাজিমাত। দুই ফসলী জমি তিন ফসলী জমিতে পরিনত

    গোদাগাড়ীতে বরবটি চাষে কষকদের বাজিমাত। দুই ফসলী জমি তিন ফসলী জমিতে পরিনত

    রাজশাহী থেকে মোঃ হায়দার আলী: বাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় বরেন্দ্র উন্নয়ন কতৃপক্ষের সেচসুবিধার উপর কঠোর বিধি নিষেধ দেয়ায় , গোদাগাড়ীতে নতুন করে বরবর্টির চাষ করে ভাগ্যের চাকা ঘুরে গেছে। রোপা আমন ধানের আবাদ কমেছে। প্রায় দু,মাস থেকে প্রতিদিন অব্যাহতভাবে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় লাগানো আমন ধানে ঠিকভাবে সার, কীটনাশক প্রয়োগ করতে না পারায় চিন্তায় পড়েছেন কৃষক। এর সাথে যোগ হয়েছে ভেজাল সার ও কীটনাশক ক্রয় করে প্রতারিত হচ্ছে অনেক কৃষক।

    কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, বিএমডিএ গভীর নলকুপের আওতায় বোরো ধান চাষ সীমিত করার নির্দেশ দেয়ায় গত বোরো ধানের আবাদ কমেছে অনেকগুন । নতুন ফসল হিসেবে বরবর্টি চাষ করেছেন বেশ কিছু কৃষক, এছাড়া, অনেক কৃষক ধান চাষে আগ্রহ হারিয়ে ভুট্টা, টমেটো, বেগুন, ভিন্ডি, শাক, সবজি, ভুট্টা আবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন।

    এটি খাট জাতের বরবটি। সাধারণ বরবটি চাষ করতে হলে মাচা তৈরি করে চাষ করতে হয় কিন্তু এই বরবটি চাষ করতে কোন মাচা লাগে না। জমি বেড করে তৈরি করে বীজ বপন করতে হয়। বীজবপনের ৫৫ -৬০ দিনে ফুল চলে আসে। আর একটি বিষয় হল এই বরবটি সারা বছর চাষ করা যায়। অনেকে সাথী ফসল হিসেবে বরবটির বীজ ইতিমধ্যে বপন করেছে।

    উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অতনু সরকার বলেন, যে সকল জমিতে গম ও আলু, মশুর চাষ করার পর সাময়িক পতিত থাকে সে সকল জমিতে আমন / আউশ লাগানো মাঝের সময়ে এই বরবটি চাষ করে কৃষক বাড়তি আয় করতে পারে। ফলে দুই ফসিল জমি তিন ফসলে পরিনত হতে পারবে।

    উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের গোলাই গ্রামের কৃষকের জিয়ারুল ইসলাম, ১ বিঘা জমিতে বরবটি চাষ করেছেন এতে তার খরচ হয়েছে ১৩ হাজার টাকা টাকা । তিনি খরচ বাদে ৪২ হাজার টাকা আয় করেছেন।

    একই গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম জানান ২৫ কাঠা জমিতে বরবটি চাষ করতে খরচ হয়েছে ১৪ হাজার ৫শ টাকা । তিনি খরচ বাদে ৫৩ হাজার টাকা আয় করেছেন বলে জানা এ কৃষক। ধান বা অন্য ফসল করে কম সময়ে এত আয় করা সম্ভাব হতো না। আমাদেরকে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অতনু সরকার মাঠ পর্যায়ে এসে বিভিন্ন পরামার্শ দিয়েছেন এতে করে খুব উপকার হয়েছে। একই ইউনিয়নের ফুলবাড়ি গ্রামের কৃষক মো: মূসা বরবটি চাষ করে ৩ হাজার ২শ টাকা খরচ করে ৮ হাজার ১শ টাকা আয় করেছেন বলে জানা গেছে।

    নতুন ফসল হিসেবে, গোদাগাড়ী উপজেলায় বরবটি চাষ করা হয়েছে ১০০ বিঘা জমিতে।
    গোদাগাড়ী উপজেলার বরেন্দ্র অঞ্চলের মাটি ও জলবায়ু বরবটি চাষের জন্য উপযোগি। বর্তমানে জনপ্রিয় হচ্ছে এই বরবটি চাষ এবার উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের ঈশ্বরীপর ব্লকে ৮০ বিঘা জমিতে বরবটি চাষ হয়েছে। আগামীতে এর চাষ আরও বাড়বে।

    গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ২ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছিল এবছর আবাদ হয়েছিল ৪ হাজার ২শ ৮০ হেক্টর জমিতে। সেই হিসাবে গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুনের বেশি ভুট্টার আবাদ হয়েছিল। অন্যদিকে গত বছর বোরোর আবাদ হয়েছিল ১৬ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু গত মৌসুমে ১৪ হাজার ৮শ” ৫০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছিল । প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে ধান আবধ কম হয়েছিল।

    এ ছাড়া গত বছর ২২ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে সরিষার অবাদ হলেও তামে হয়েছে ১৭ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছিল। গত বছর ১ হাজার ৯৮৫ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হলেও এবার হয়েছে ২ হাজার ৩৪২ হেক্টর জমিতে। পেঁয়াজ গত বছর এক হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আবাদ হলেও এবার আবাদ কম হয়েছে।

    বিএমডিএ, গোদাগাড়ী অফিস সূত্রে জানা গেছে, গোদাগাড়ী উপজেলায় ভু-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় সেচযন্ত্রে আশানুরুপ পানি/ডিসচার্জ পাওয়া যাচ্ছে না। সেই কারনে সেচযন্ত্র হতে চাহিদা মাফিক বোরো ধানে সেচ প্রদান করা সম্ভব হবে না। সেই প্রেক্ষিতে প্রতিটি সেচযন্ত্র এবং এলএলপি’র কমান্ড এরিয়ার আওতায় বোরো ধান চাষবাদ সীমীত করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। সেই সাথে ধানের পরিবর্তে কম পানি প্রয়োজন হয় বরবটি, গম, সরিষা, চীনা, মষুর, খেসাড়ী, ছোলা, ভুট্টা, টমেটো, পেয়াজ, আলু শীতকালীন সাক-সবজিসহ অন্যান্য ফসল চাষ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

    গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার মরিয়ম আহমেদ বলেন, বরবটি চাষ গোদাগাড়ীতে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ ফসলটি চাষ করার ফলে দু ফসলী জামি তিন ফসলী জমিতে পরিনত হচ্ছে স্বল্প সময়ে কুষক অন্য একটি ফসল ঘরে তুলে লাভবান হচ্ছেন। আগামীতে বরবটি চাষ অনেক হারে বৃদ্ধি পাবে। গোদাগাড়ী উপজেলা বরেন্দ্র অঞ্চল হওয়ায় ভু-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় পানি সংকটের কারনে এ অঞ্চলের কৃষকেরা পানি সাশ্রয়ী ফসল সবজি টমেটো ভুট্টা, গম, আলু, সরিষা, পেয়াজসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করছে কৃষকদের আগ্রহী করা হচ্ছে।। ভুট্টা চাষ করতে ৪ টা সেচ লাগে কিন্তু বোরো ধান চাষে ১২ টা সেচ লাগে। ভুট্টার দাম ভালো পাচ্ছে কৃষকেরা। এতে করে কৃষকেরা ভুট্টার চাষ বেশী করছে। এছাড়াও ভু-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় সেচযন্ত্রে আশানুরুপ পানি/ডিসচার্জ পাওয়া না যাওয়ায় বিএমডিএ বোরো ধানের আবাদ কমিয়ে কম পানি প্রয়োজন গম, সরিষা, চীনা, মশুর, খেসাড়ী, ছোলা, ভুট্টা, টমেটো, পেয়াজসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করতে বলেছে। ফলে এ উপজেলায় বোরো ধানের আবাদ কমেছে, বরবটি, সবজি, মৌসুমী ফসলের আবাধ বেড়েছে ভুট্টার।

    মোঃ হায়দার আলী,
    রাজশাহী।

  • তানোরে মাচায় সবজি চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে

    তানোরে মাচায় সবজি চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে

    আলিফ হোসেন,তানোরঃ
    রাজশাহীর তানোরে বর্ষাকালে মাচায় সবজি চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মাচা ব্যবহারের কারণে সবজির লতা ও ফল মাটিতে লেগে থাকে না, ফলে রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হয়। মাচায় চাষ করার কারণে ফসল পরিষ্কার থাকে এবং সহজে সংগ্রহ করা যায়। মাচায় আবাদ করা সবজি বাজারে ভাল দাম পাওয়ায় আর্ধিকভাবে লাভবান হচ্ছে চাষীরা। মাচায় সবজির আবাদ বলতে সাধারণত, লাউ, চিচিঙ্গা, পল্লা, জিঙ্গে, কুমড়া, শসা, বরবটি, সিম ইত্যাদি সবজি লতানো গাছের জন্য মাচা তৈরি করে চাষ করা হয়। এই পদ্ধতিতে,গাছের লতা উপরে উঠে যায় এবং এর ফলে ফলন বাড়ে, পোকামাকড়ের আক্রমণ কমে এবং জায়গা সাশ্রয় হয়। মাচা পদ্ধতিতে সবজি চাষ করলে ফলন সাধারণত বেশি ও বাজারে ভাল দাম পাওয়া যায়। তানোর পৌরসভার গোকুল, মাসিন্দা, ধানতৈড় ও বাজে আকচা মহল্লায় বেশী মাচায় সবজি দেখা গেছে। এছাড়াও উপজেলার চাঁন্দুড়িয়া, কামারগাঁ, কলমা, বাধাইড়, সরনজাই, তালন্দ ও পাঁচন্দর ইউপির বিভিন্ন এলাকার মাঠে স্বল্প পরিসরে মাচায় সবজি চাষ হচ্ছে। ধানতৈড় গ্রামের কৃষক হিরন ও লাল্টু বলেন,মাচায় সবজি চাষ করলে ফসলের রোগবালাই কম হয় এবং এসব ফসলের বাজারে ভাল দাম পাওয়া যায়।
    স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে
    সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় প্রায় ১৫ হেক্টর জমিতে মাচায় সবজির আবাদ হয়েছে। পুকুর-জলাশয়ের পাড়, নিচু জমি, বাড়ীর আঙ্গিনায়, জমির আইলে ও মাচায় সবজি চাষ করা হচ্ছে। পানির মধ্যে মাচায় সবজি চাষ পদ্ধতি একটি উদ্ভাবনী ও টেকসই কৃষি পদ্ধতি। মাচায় সবজির আবাদ একটি বিশেষ পদ্ধতি, যেখানে সবজির লতানো ও ঊর্ধ্বমুখী বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে মাচা তৈরি করে সবজি চাষ করা হয়। এই পদ্ধতিতে সাধারণত লাউ, কুমড়া, পটল, শসা, সিম, বরবটি, ঝিঙা ইত্যাদি সবজি চাষ করা হয়। মাচা তৈরির ফলে সবজির লতা উপরে উঠে যায় এবং আলো বাতাস ভালোভাবে চলাচল করতে পারে, যা ফলন বৃদ্ধিতে সহায়ক। এছাড়াও, মাচা পদ্ধতিতে সবজি চাষ করলে পোকামাকড়ের আক্রমণ ও রোগবালাই কম হয়। মাচা তৈরির জন্য সাধারণত বাঁশ, কাঠ বা লোহার পাইপ ও নেট জাল ব্যবহার করা হয়। সবজি চাষে বিভিন্ন প্রকার মাচা তৈরি করা হয়। ফসলের ধরনের উপর মাচা তৈরির উচ্চতা নির্ভর করে। কিছু সবজির জন্য ৫-৬ ফুট উচ্চতার মাচা তৈরি করা হয়, আবার কিছু সবজির জন্য ঝুলন্ত মাচা তৈরি করা হয়। মাচা তৈরির পর সবজির লতা মাচার উপর ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
    এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল্লাহ আহমেদ জানান, মাচায় সবজি চাষ একটি লাভজনক এবং পরিবেশ-বান্ধব কৃষি পদ্ধতি। এটি কৃষকদের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে এবং নিরাপদ সবজি উৎপাদনে সহায়তা করে। মাচায় সবজি চাষ করলে বৃষ্টির সময় গাছের ক্ষতি হয় না এবং ফলও পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে। অল্প পরিশ্রমে মাচায় সবজি চাষ লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা আর্থিকভাবে সাবলম্বি হচ্ছে,পাশাপাশি মাচায় সবজি চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।#

  • অসহায় কৃষকের ভুট্টা ভেঙ্গে প্রশংসায় আনসার ভিডিপির সদস্যরা

    অসহায় কৃষকের ভুট্টা ভেঙ্গে প্রশংসায় আনসার ভিডিপির সদস্যরা

    খলিলুর রহমান খলিল ,নিজস্ব প্রতিনিধি:
    রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের চাপড়াপাড়া গ্রামের একজন হতদরিদ্র অসহায় কৃষকের ভুট্টা ক্ষেত হতে ভুট্টা ভেঙ্গে দিলেন আনসার ভিডিপির সদস্যরা । অভাবের সংসার স্বামী বাড়ির বাইরে থাকেন ভুট্টা ক্ষেতের ভুট্টা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন আমিরুলের স্ত্রী জোসনা বেগম। জোসনার এই দূর্রাবস্থা দেখে তার পাশে এসে দাড়িয়েছেন উপজেলার হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের আনসার ভিডিপির নারী পুরুষ সদস্যরা। এর আগেও একজন গরিব কৃষকের ধান কেটে দিয়ে শুনাম কুড়িয়েছেন হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়ন আনসার ভিডিপির সদস্যরা। শুক্রবার সকালে উপজেলার হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের চাপড়ার পাড়ার গ্রামের আমিরুলের ভুট্টা ক্ষেতে ভুট্টা ভেঙ্গে ঘর পর্যন্ত তুলে দিয়ে আবারো প্রসংসায় ভাসছেন তারা। উপজেলা আনসার ভিডিপির কর্মকর্তাদের নির্দেশে হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়ন সহকারী আনসার ও ভিডিপি কমান্ডার নারায়ণ চন্দ্র রায়ের নেতৃত্বে ১০/১২ জন পুরুষ আনসার সদস্য ও ১০/১২ জন মহিলা আনসার সদস্যদের নিয়ে এই ভুট্টা ক্ষেতে ভুট্টা ভেঙ্গে দিলেন।
    সুবিধাভোগী কৃষক আমিরুলের স্ত্রী জোসনা বেগম জানান, আমার অভাবের সংসার স্বামী বাড়ির বাইরে থাকায় এই ভুট্টা নিয়ে বিপাকে পড়ে গিয়েছিলাম।আমার এই অবস্থা দেখে আনসার ভাইয়েরা আমার পাশে এসে দাড়িয়েছে। তারা ভুট্টা ক্ষেত থেকে ভুট্টা ভেঙ্গে বাড়ি পর্যন্ত দিয়ে গেছে। তাদেরকে আমি ধন্যবাদ জানাই এই অভাবের সময় আমার পাশে দাড়ানোর জন্য।
    হাড়িয়ারকুটি ইউনিয়ন সহকারী আনসার কমান্ডার নারায়ণ চন্দ্র রায় বলেন, এর আগে আমরা উপজেলা আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর স্যারদের নির্দেশনায় বিনা পারিশ্রমিকে একজন অসহায় কৃষকের ধান কেটে দিয়েছিলাম। এবারও এক্কেবারে বিনা পারিশ্রমিকে আরো একজন অসহায় গরিব কৃষকের ভুট্টা ক্ষেত হতে ভুট্টা ভেঙ্গে দিচ্ছি। নারী আনসারদেরও সাথে নিয়েছি। তারাও পুরুষ আনসারদের পাশাপাশি আনন্দের সাথে কাজ করেছে। এই মহতি কাজটি চলমান থাকবে।

  • আকস্মিক বন্যায় চলনবিল প্লাবিত : ডুবে গেছে ধানক্ষেত

    আকস্মিক বন্যায় চলনবিল প্লাবিত : ডুবে গেছে ধানক্ষেত

    সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : 

    আকস্মিক বন্যায় চলনবিলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় সরিষা পরবর্তী নাবিজাতের বোরো ধান ডুবে যাওয়ায় এ এলাকার কৃষকের কোরবানি ঈদের আনন্দ  ম্লান হয়ে গেছে। ঈদ কে সামনে রেখে মৌসুমী শ্রমিকেরা বাড়ি চলে যাওয়ার পরপরই আকস্মিক বন্যায় চলনবিলের তাড়াশ, উল্লাপাড়া,শাহজাদপুর, সিংড়া ও গুরুদাসপুর উপজেলার বিস্তৃর্ণ্  অঞ্চল তলিয়ে যায়। ধান ডুবে যাওয়ায় দিশেহারা কৃষক  ধান কাটার শ্রমিক না পেয়ে হারভেস্টার মেশিন এনে ধান কাটার চেষ্টা চালায়। কিন্তু পানি অব্যাহত বৃদ্ধি পাওয়ায় সে চেষ্টাও বিফলে যায়। নিরুপায় অনেককেই ঈদের আনন্দ ফেলেই নৌকা নিয়ে ডুবে যাওয়া ধান কাটতে দেখা গেছে। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, এ অঞ্চলে প্রায় ৯০ ভাগ ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। সরিষার জমিতে নাবি জাতের ব্রিধান-২৯ থাকায় এ সমস্যা দেখা দিয়েছে।

    পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্র জানায়, উজানে ঢলগড়া পানি ও স্থানীয়ভাবে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে চলনবিল অঞ্চলে এ বন্যা দেখা দিয়েছে। চলনবিলে মাঝ দিয়ে প্রবাহিত ১৬ টি নদনদীর মধ্যে আত্রাই ও ভদ্রাবতী নদী দিয়ে উজানের ঢলের পানি নিম্নধারা যমুনায় গিয়ে মিশে যায়। কিন্তু বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ৫ দিন যমুনার পানি বিপৎসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হবে।

    সরেজমিনে নাটোরের সিংড়া উপজেলার বিয়াস , গুরুদাসপুর উপজেলার রুহাই, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাগুড়াবিনোদ, উল্লাপাড়া উপজেলার রহিমপর ও শাহজাদপুর এলাকার পোতাজিয়া পয়েন্টে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটতে নেয়া হচ্ছে বিঘা প্রতি ৬ হাজার টাকা। কিন্তু পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে মেশিন ডুবে যাওয়ায় তা দিয়েও আর ধান কাটা সম্ভব হচ্ছেনা।

    সিংড়ার বিয়াস গ্রামের বাসিন্দা রোজিনা আক্তার মিতু বলেন, অনেক কৃষক ধানকাটার শ্রমিক না পেয়ে ধানের আশা ছেড়ে দিয়েছেন। আবার কেউ কেউ অর্ধেক  ভাগ দিয়ে  ধান ঘরে তুলছেন। একই রকম কথা বলেন, শাহজাদপুরের পোতাজিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বাচ্চু। রাউতারা বাঁধের কারণে কিছু রক্ষা হলেও বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে ফসল তলিয়ে যাচ্ছে। তাড়াশ উপজেলার মাগুড়া মুকন্দ গ্রামে গিয়ে দেখা যায় গলা পানিতে নেমে কৃষক ধান কাটার চেষ্টা চালচ্ছেন। সেই সঙ্গে বৃষ্টি পানি তাদের দুর্ভোগ আরো বৃদ্ধি করেছে।

     সিংড়া-তাড়াশ সংযোগস্থলের রানী ভবানী ব্রিজের উজানে গিয়ে দেখা যায়, ভদ্রাবতী নদীর উপর নির্মিত জলকপাট উপচে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

    নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এমরান হোসেন বলেন, ঈদের আগে ২৪ ঘণ্টায় আত্রাইয়ে ৩ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেলেও ঈদ পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ৩ সেন্টিমিটার পানি কমেছে। তবে স্থানীয় ভাবে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় চলনবিলের নিম্নাঞ্চলে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

    তাড়াশ কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সূত্র বলছে, আগামী ৫ দিন এ অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে এবং তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পারে।

  • পাইকগাছায় আম গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে চাষীরা

    পাইকগাছায় আম গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে চাষীরা

    ইমদাদুল হক, পাইকগাছা, (খুলনা)।।
    মাঘের শীতে আম গাছের পল্লবে মুকুল বের হতে শুরু করেছে। আম চাষীরা গাছের প্রাথমিক পর্যায়ের পরিচর্যা শেষ করে দ্বিতীয়বার ঔষধ প্রয়োগ করছে।।
    পাইকগাছা উপজেলার আম বাগানের গাছে মুকুল ধরা শরু করেছে। হপার পোকা দমনে আম চাষীরা গাছের প্রাথমিক পর্যায়ের পরিচর্যা শেষ যে সব গাছে মুকুল বের হয়েছে তার পরিচর্যা চলছে। ভালো ফলন পেতে বাগান মালিক ও আম চাষীরা আম বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে আমের বাম্পার ফলনের আশা করছে আম চাষী ও বাগান মালিকরা। পাইকগাছা বড় আম বাগানের মালিক বিরাশির অখিলবন্ধু ঘোষ, সনাতন কাঠির আমিন সরদার, মোমিন সরদার, গদাইপুরের সামাদ ঢালী, মোবারক ঢালী, গোপালপুরের আবুল হোসেন জানান, তাদের রুপালী, বোম্বাই লতা ও হিম সাগর জাতের গাছের সংখ্যা বেশি। বাগানের আম গাছে গাছে মুকুল এসেছে এবং পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে। তারা ভালো ফলনের আশা করছে।

    পাইকগাছার কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মধ্যে ৪টি ইউনিয়ন গদাইপুর, হরিঢালী, কপিলমুুনি, রাড়ুলী ও পৌরসভা ছাড়া বাকী ইউয়িনগুলিতে একেবারে সীমিত আমের গাছ রয়েছে। উপজেলায় ৫৮৫ হেক্টর জমিতে মোট আম গাছের সংখ্যা ১৪ হাজার ১শ ৮০ টি। তাছাড়া বিভিন্ন ইউনিয়নে ছড়ানো ছিটানো আম গাছ আছে। আম বাগান থেকে ২২ হাজার ১৮০ মেট্রিকটন আমের ফলন পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ একরামুল হোসেন জানান, আম গাছে মুকুল ধরা শুরু করেছে। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক আম চাষী ও বাগান মালিকদের আমগাছ পরিচর্যায় পরামর্শ দিচ্ছে। ভালো ফলন পেতে বাগান মালিক ও আম চাষীরা আম বাগান পরিচর্যা করছেন। বড় কোন ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হলে, তিনি আমের ভালো ফলন আশা করছেন।

    ইমদাদুল হক,
    পাইকগাছা, খুলনা।

  • গোদাগাড়ীতে টমেটো চাষে বিপ্লব। বানিজ্য হয় ১৫শ কোটি টাকা। হয়  ১০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান

    গোদাগাড়ীতে টমেটো চাষে বিপ্লব। বানিজ্য হয় ১৫শ কোটি টাকা। হয় ১০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান

    রাজশাহী থেকে মোঃ হায়দার আলী।। রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে প্রতিবছরের ন্যয় এবারও টমেটো চাষে বিপ্লব ঘটেছে। কাঁচা পাঁকা টমেটো ক্রয় বিক্রয় হচ্ছে । মৌসুমের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দাম ভাল থাকায় জমজমাটভাবে চলছে টমেটোর কারবার। গোদাগাড়ী হেলিপ্যাড, সিএন্ডবি, রেলগেট, হাবাসপুর, গোপালপুর, কাঁকনহাট, মহিশালবাড়ী, বসন্তপুর, রেলগেট, চর আষাড়িয়াদহ, পিরিজপুরসহ বিভিন্ন এলাকা পরিণত হয়েছে পাঁকানোর কারবার, টমেটো পাঁকাতে টমেটো রোদে শুকানো হচ্ছে। আবার কোনো কোনোগুলো স্তুপ করে রেখে খড় দিয়ে ঢেঁকে রাখা হয়েছে।
    যেগুলোতে প্রায় পুরোপুরি লাল রং ধারণ করবে, সেগুলো আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে বাজারজাত করণ হবে। এই টমেটোগুলোই চলে যাবে নাটোর, বগুড়া, নওগা, ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
    এভাবে টমেটো প্রক্রিয়াজতের মাধ্যমে বাজারজাত করা হয়।

    বিভিন্ন এলাকার মানুষ এসে অস্থায়ী বাড়ি করে বা বাড়ি ভাড়া নিয়ে ফাঁকা জমি বর্গা নিয়ে সেখানে কাঁচা টমেটো পাঁকিয়ে বাজারজাত করছেন। এভাবে গোদাগাড়ীর অন্তত ৫০টি স্থানে চট্রগ্রাম, সিলেট, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসে এই টমেটো ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। গত প্রায় একমাস ধরে এবারকার মৌসুমের টমেটো বেচাকেনা শুরু করে অব্যাহতভাবে চলছে। এই দুই মাস টমেটোর চরণভূমি বলে খ্যাত গোদাগাড়ীতে শুধুমাত্র টমেটো মৌসুমে প্রায় ১৫ শ থেকে ১৮ শ কোটি টাকার। অস্থায়ীভাবে ৮ থেকে ৯ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এখানে।

    পদ্মা নদীর ওই পার চরাঞ্চলের কৃষকরা দিন দিন টমেটো চাষের দিকে ঝুঁকছে। প্রতি বছর চরাঞ্চলে বাড়ছে টমেটোর চাষ। চরাঞ্চলের জমি পলিমাটি হওয়ায় বরেন্দ্র অঞ্চলের চাইতে টমেটোর সাইজ বড় হচ্ছে এবং দাম বেশী পাচ্ছে এ অঞ্চলের টমেটো চাষিরা।

    রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে গোদাগাড়ীতে টমেটোর আবাদ হয় ২ হাজার ৬শ” ৫০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন হয়েছিল ৫৮ হাজার ৫শ” ৯৫ মেট্রিক টন। ২০১৯-২০ অর্থবছরে আবাদ হয়েছিল ২ হাজার ১শ” ৫০ হেক্টর, উৎপাদন হয়েছিল ৪৯ হাজার ৫শ” ২৫ টন; ২০২০-২১ অর্থবছরে আবাদ হয়েছিল ২ হাজার ৪শ” ৬০ হেক্টর, উৎপাদন হয়েছিল ৫৯ হাজার ৪০ টন; ২০২১-২২ অর্থবছরে আবাদ হয়েছিল ২হাজার ৮শ” ৫০ হেক্টর, উৎপাদন হয়েছিল ৭১ হাজার ২শ” ৫০ টন; ২০২২-২৩ অর্থবছরে আবাদ হয়েছিল ৩ হাজার ১৫ হেক্টর, উৎপাদন হয়েছিল ৮৭ হাজার ৪ শ” ৩৫ টন; ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আবাদ হয়েছিল ২ হাজার ২শ” ৪৫ হেক্টর; উৎপাদন হয়েছিল ৬৫ হাজার ১শ” ৫ টন এবং সবশেষ ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে টমেটোর আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৬ শ”৭০ হেক্টর জমিতে। এসব জমিতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৪ হাজার ৭৬০ টন।
    এ উপজেলায় ১৭-২০ জাতের টমেটোর চাষ হয়। যার মধ্যে বেশিরভাগই হাইব্রিড। তবে অন্য যেকোনো ফসলের চেয়ে টমেটো চাষ অত্যন্ত লাভজনক। তবে ভালো ফলন, বীজ ও দাম নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ভয়ে কোনো বছর চাষের হার বেড়েছে আবার কোনো বছর কমেছে। এসব টমেটো চাষের সঙ্গে সরাসরি জড়িত প্রায় ১৫ হাজার কৃষক ও কৃষি শ্রমিক।

    গোদাগাড়ী উপজেলার মাদারপুর এলাকার বড় টমেটো চাষী সুমন আলী বলেন, ‘এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে, দামও ভাল পাচ্ছি, চাঁদাবাজি নেই। ব্যবসায়ীরা জমিতে থেকেই টমেটো কিনে নিচ্ছে। ৮ বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করেছি গত বছরের চেয়ে বেশী ইনকাম হয়ে গেছে।

    টমেটো ব্যবসায়ী নূরুল ইসলাম জানান, এবার ভালো টমেটো আছে। ভালো দাম আছে। প্রতিদিন এক ট্রাক করে টমেটো ঢাকায় পাঁঠায়। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও কুমিল্লায় যাচ্ছে এসব টমেটো। দাম কমে গেল ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছ।

    উপজেলা কৃষি অফিসার মরিয়ম আহমেদ বলেন, এই অঞ্চলে দুবার টমেটোর চাষ হয়। এরমধ্যে গ্রীষ্মকালীন টমেটো রয়েছে। এই টমেটোর বেশি দাম পান চাষিরা। এবছর এই টমেটো ১৫-১৬০ টাকা কেজি দরে বাজারে বিক্রি হয়েছে।
    শত শত কোটি টাকার এখানে বানিজ্য হয়। শুধু তাই নয়, টমেটো বেচাকেনাকে কেন্দ্র অস্থায়ীভাবে ৯ থেকে ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

    মোঃ হায়দার আলী
    রাজশাহী।

  • মাধবপুরে সরিষার বাম্পার ফলন,কৃষকের মুখে হাসি

    মাধবপুরে সরিষার বাম্পার ফলন,কৃষকের মুখে হাসি

    শেখ ইমন আহমেদ মাধবপুর(হবিগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জের মাধবপুরে এবার সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। মাধবপুর উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় বিস্তৃর্ণ ফসলের মাঠে এখন হলুদের ঢেউ। সরিষার এই ফলনে কৃষকের চোখেমুখে আনন্দের আভা ফুটে উঠেছে।  

    উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়- ফসলের মাঠগুলো সরিষা ফুলের হলুদ রঙে অপরূপ শোভা ধারণ করেছে। মাঠে পরিচর্চার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা।
    বীজ বপনের দুই মাসের মধ্যেই সরিষা ঘরে উঠে আসে। সরিষা উঠিয়ে ধান চাষ করতে কোনো সমস্যা হয় না এবং ধানের ফলনেও কোনো প্রভাব পড়ে না। তার মতে সরিষার আবাদ করা মানেই অতিরিক্ত লাভের মুখ দেখা। একইভাবে অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন অসংখ্য কৃষক। আশার আলো দেখে তাঁরা উল্লসিত। 

    মাধবপুর উপজেলার উজ্জ্বলপুর গ্রামের সরিষা চাষি মনির হোসেন বলেন, দেশে ভোজ্য তেলের দাম বেড়েই চলছে, তাই তেলের চাহিদা মেটাতে আমি সরিষার চাষ করছি। প্রতি বছর বাড়ির জন্য ৩০শতক সরিষা চাষ করতাম। কিন্তু মানুষের চাহিদা পূরন করতে আরও ৪বিঘা বেশি সরিষার চাষ করেছি।

    উপজেলার বুল্লা ইউনিয়নের বুল্লা গ্রামের আব্দুল কাদির বলেন, প্রতি বছর আমি জমিতে সরিষা চাষ করি। এ বছর পাঁচ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছি। তেলের চাহিদা মেটাতে আমি বেশি করে সরিষার চাষ করছি।তিনি আরও বলেন,আমরা যেন সরিষা ন্যায্য দামের বিক্রয় করতে পারি কৃষি অফিসার কাছে অনুরোধ জানান।

    মাধবপুর উপজেলা কৃষি অফিসার সজীব সরকার বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১০৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করেছে কৃষকেরা। আমরা মোট সরকারি প্রণোদনা ৮১০ জন কৃষককে বিনামূল্যে সরিষার বীজ ও সার প্রদান করেছি।বাকিটুকু কৃষকরা নিজে সরিষা বীজ রোপণ করেছে।

  • চারঘাটে গাছে গাছে উঁকি দিচ্ছে আমের মুকুল 

    চারঘাটে গাছে গাছে উঁকি দিচ্ছে আমের মুকুল 

    মোজাম্মেল হক, চারঘাট (রাজশাহী):

    রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গাছে গাছে উঁকি দিতে শুরু করেছে দৃষ্টিনন্দন আমের মুকুল। গাছে গাছে মৌমাছির গুঞ্জন আর মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে প্রকৃতিতে সৃষ্টি হবে এক নতুন ছন্দের।

    রবিবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে সরেজমিনে উপজেলার আম চাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আম গাছে আসতে শুরু করেছে আগাম মুকুল। আগাম মুকুলে আম চাষিদের মনে আশার প্রদীপ জ্বলে ওঠেছে। মাঘের হিমেল হাওয়ায় সবুজ পাতার ফাঁকে দোল খাচ্ছে মুকুল। গাছের কচি শাখা-প্রশাখায় ফোটা ফুলগুলোর উপরে সূর্যের আলো পড়তেই চিকচিক করে উঠছে। এবার মধ্য জানুয়ারিতেই কিছু কিছু গাছে আমের মুকুল চলে এসেছে। এখন ঘন কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া না হলেই ভালো হয় বলে জানান আম চাষিরা।

    আম ব্যবসায়ী রবিউল বলেন, এর মধ্যে অনেক গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। আশা করা যাচ্ছে, ফাল্গুন মাসের মধ্যে উপজেলার আম গাছগুলোতে পর্যাপ্ত মুকুল আসবে। তবে এ সময় মাঝে-মধ্যেই আকাশে মেঘ জমে উঠে। শিলাবৃষ্টি হলে আমের মুকুলের ক্ষতি হবে। তাই আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে যথেষ্ট শঙ্কাও কাজ করছে। তবে পরিস্থিতি অনূকূলে থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে বলে জানান তিনি।

    বাগান মালিকরা বলেন, মুকুল আসার পর থেকেই তারা গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করেছেন। মুকুল রোগবালাইয়ের আক্রমন থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করছেন তারা।

    এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আল মামুন হাসান বলেন, উপজেলায় বর্তমানে ৪ হাজার ৯৪৫ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফলন ভালো হবে। তবে এখন আম গাছে, সাইপার মেথ্রিন অথবা ল্যামডা সাইহ্যালোথ্রিন, স্প্রে করতে হবে। এবং ম্যানকোজেব /মনুবর বোরন দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান। 

    মোঃ মোজাম্মেল হক
    চারঘাট, রাজশাহী। 

  • মাঠে মাঠে হলদে ফুলের চাদরে ঢাকা,  বরেন্ত্র অঞ্চলে সরিষার  কম আবাদ  হলেও  বাস্পার ফলন আশা করছেন কৃষক

    মাঠে মাঠে হলদে ফুলের চাদরে ঢাকা, বরেন্ত্র অঞ্চলে সরিষার কম আবাদ হলেও বাস্পার ফলন আশা করছেন কৃষক

    রাজশাহী থেকে মো. হায়দার আলী: রাজশাহীর গোদাগাড়ীর ফসলের মাঠ সরিষার হলুদ ফুলে ছেঁয়ে গেছে। অগ্রহায়ণের হিমেল বাতাসে দোল খাচ্ছে হলুদ সরিষার ফুল। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত যেমন মাঠ, তেমনি বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষকেরা । এক সাথে ফোটা ফল গুলো রোদ ঝলমল আলোয় প্রকৃতির মাঝে অপরুপ সৌন্দর্যর শোভা ছড়াচ্ছে। আর তা দেখতে ভীড় করছেন প্রকৃতি প্রেমীরা ।

    কৃষকরা আগে এসব জমিতে শুধু ইরি-বোরো এক ফসলী আবাদ করে হাজার হাজার হেক্টর জমি পতিত রাখত। কালের বিবর্তনের সাথে সাথে এ অঞ্চলের কৃষকদেরও কৃষি ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটেছে।

    তারা বিগত দু, যুগ ধরে ইরি-বোরো, আমন, টমেটো করোলা. লাউ, পটল, শীম, ভূট্টা, তরমুজ আবাদের পাশাপাশি সরিষার আবাদেও ঝুঁকেছে। তাই এখন সরিষার হলুদ ফুলে ফুলে ঢাকা বরেন্দ্র অঞ্চলের বিস্তীর্ণ মাঠ।

    রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলানসহ বরেন্দ্র অঞ্চলে চলতি রবি মৌসুমে সরিষা আবাদ কম হয়েছে। । এবছর ৭৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। তবে আবাদ করা হচ্ছে ৬৫ হাজার ২৯৭ হেক্টর জমিতে। গেল বছর তেলবীজ জাতীয় ফসলটি আবাদ হয়েছিল ৭৭ হাজার হেক্টর জমিতে।

    রাজশাহী কৃষি অধিদপ্তর জানিয়েছে, চাষের জমি কমলেও উৎপাদনে খুব একটা প্রভাব পড়বে না। এখন পর্যন্ত ছত্রাক বা রোগবালাই না থাকায় এবার উচ্চ ফলন পাওয়া যাবে। গত বছর উৎপাদন হয়েছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৪৬০ টন। এ বছর ফলন ৬০ হাজার টন উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

    সরিষা চাষে জমির উর্বরতা বাড়ে। প্রতি বিঘা জমি থেকে চলতি মৌসুমে গড়ে ছয়-সাত মণ সরিষা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বীজ বপন থেকে ৭০-৭৫ দিনে ফসলটিতে তেমন সেচ দিতে হয় না। বপনের সময় মাটির নিচে সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সার দিলেই চলে। অন্যান্য ফসলের তুলনায় সরিষা চাষে কম খরচ, কম শ্রম ও দ্রুত ফলন পাওয়া যায়। এ কারণে চাষিরা লাভ বেশি পান। ভোজ্যতেল হিসেবে সরিষার চাহিদা থাকলেও চলতি বছর চাষের জমি কমেছে।

    রাজশাহীর গোদাগাড়ীসহ ৯টি উপজেলায় সরিষার চাষ করা হচ্ছে। আমন ধান কাটার পর উপজেলার কৃষকরা বোরো মৌসুমের আগেই সরিষা চাষ করেছেন। চলতি বছর বারি-১৪, বারি-১৫, বারি-১৭, বিনা-৯, বিনা-৪, টরি-৭ জাতের সরিষা চাষ করেছেন তারা।

    সরেজমিন গোদাগাড়ী উপজেলার কমলাপুর, ভাজনপুর, রেলগেট বিল, বিলপাতিকলা, দুর্গাদহ বিল, রেলগেট বিল, সুশাডাং, বোগদামারী, কালিদীঘিসহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সরিষার হলুদ ফুলে ভরে গেছে পুরো মাঠ। ভোরের কুয়াশা, সকালের মিষ্টি রোদ কিংবা বিকেলের শীতের স্নিগ্ধতার মধ্যে দিগন্তজোড়া হলুদ সরিষা ফুল এক অন্য রকম সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলছে মাঠে মাঠে। কোথাও কোথাও সরিষাখেতে মৌ-বক্স বসিয়ে মৌমাছির মাধ্যমে মধু সংগ্রহের কাজ চলছে।

    গোদাগাড়ীর বালিয়াঘাট্টা গ্রামের চাষি শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছরই তিনি চার বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেন। এবার কৃষি কর্মকর্তারা আরও বেশি জমিতে চাষ করার পরামর্শ দেন। গত বছর ভালো লাভ হওয়ায় তিনি রাজি হয়ে যান। এবার চাষ করেছেন সাত বিঘা জমিতে। এই জমি থেকে ইতোমধ্যে দুই হাজার টাকার শাক বিক্রি করেছেন তিনি।

    চব্বিশনগর গ্রামের আব্দুল লতিফ মাষ্টার জানান, এবার তিনি নয় বিঘা জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষা চাষ করেছেন। গত বছর তিনি প্রতি বিঘায় সাত-নয় মণ ফলন পেয়েছিলেন। প্রতি মণ সরিষা শুরুতে ২ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা বিক্রি করেছিলেন। এবারো তেমনটিই আশা করছেন।

    চাষী আব্দুল মাতিন জানান, সরিষা চাষে বিঘাপ্রতি খরচ ৫-৬ হাজার টাকা। চাষের ৭০-৭৫ দিনের মধ্যে ফলন পাওয়া যায়। গত বছর সরিষা বিক্রি হয়েছে প্রতি মণ ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা। বাজারে এখনো ভালো মানের সরিষা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার টাকা। কৃষি অফিসের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করছেন।

    রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক উম্মে ছালমা বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার সরিষার উচ্চ ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এবার চাষের জমি কমেছে। প্রতি হেক্টরে ফলন ধরা হয়েছে ১ দশমিক ৬ টন। সে হিসাবে চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৪ হাজার ৪৭৫ হাজার টন সরিষা উৎপাদন হতে পারে।

    মোঃ হায়দার আলী
    নিজস্ব প্রতিবেদক,
    রাজশাহী।

  • বরিশালে চার হাজার একর জমির সেচ প্রকল্প বন্ধের হুমকিতে, বিপাকে স্থানীয়  কৃষকরা

    বরিশালে চার হাজার একর জমির সেচ প্রকল্প বন্ধের হুমকিতে, বিপাকে স্থানীয় কৃষকরা

    কে এম সোয়েব জুয়েল,
    বরিশালের গৌরনদীতে ৪০০০ চার হাজার একর জমির সেচ প্রকল্প বন্ধ করে দেয়ার হুমকিতে হতাশায় দিন পাড় করছে স্থানীয় কৃষকরা। গৌরনদী উপজেলার নলচিড়া ইউনিয়নের সাতটি ও বাটাজোর ইউনিয়নের পাঁচটি বোরো প্রকল্পের সেচ বন্ধ করে দেওয়ার অব্যাহত হুমকির মুখে দুই ইউনিয়নে ১২টি বোরো প্রকল্পের তিন হাজার কৃষকের চার হাজার একর জমিতে বোরোর আবাদ বন্ধ হওয়ার আশঙ্কায় হিমসিম খাচ্ছে সেচ প্রকল্পের মালিক মোঃ ছানাউল হক মৃধা

    ছানাউল হক জানায়, দীর্ঘ ১২ বছর যাবত তার (ছানাউল) বাবার ফুপাতো ভাইর ছেলে নলচিড়া ইউনিয়নের স্হানীয় মোঃ মাসুদ মীর বিএডিসি থেকে সেজ প্রকল্প বরাদ্দ নেন কিন্তুু বর্তমান সময় আর্থিক সমস্যার কারনে তার (মাসুদ) আত্বিয় বাটাজোর ইউনিয়নের বাসুদেব পাড়ার ছানাউলকে সেচ প্রকল্প চালানোর জন্য প্রয়োজনিয় কাগজ পত্র হস্তান্তর করেন প্রকল্পের মালিক মাসুদ। প্রকল্পের ২৭ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ ছাড়া ছানাউল প্রকল্প চালু করতে প্রয়োজনীয় বৈদ্যতিক সামগ্রিক বাবদ আরো দের লক্ষাধিক টাকা খরচ করে গৌরনদী উপজেলার সরিকল ইউনিয়নের হোসনাবাদ উত্তর সীমানায় আড়িয়াল খাঁর শাখা নদী পালরদী নদীর স্টিমারঘাট এলাকায় সেচপাম্প বসিয়ে প্রাইমারি প্রকল্পের মাধ্যমে নলচিড়া খাল ও বাটাজোর ইউনিয়নের বাসুদেবপাড়া খালে সেচ প্রকল্প গত ১৩ জানুয়ারি সোমবার চালু করেন বাটাজোর ইউনিয়নের বাসুদেবপারা গ্রামের কাঞ্চন আলী মৃধার পুত্র ছানাউল হক মৃধা। অপরদিকে বাছার গ্রামের আব্দুল হামিদ সরদারের পুত্র মোঃ জাকির সরদার বিএডিসি থেকে সদ্য প্রকল্পটি বরাদ্দ নিলেও সেখানে সেজ প্রকল্প চালনোর মত সরকারের বেঁধে দেয়া নিতিমালার কোন ব্যাবস্হা লক্ষ করা যায়নি । ফলে জাকিরের ভাই আনোয়ার সরদারের বিভিন্ন দপ্তরে দেয়া অভিযোগ সম্পুন্ন ভিত্তিহীন বলে প্রতিয়মান হওয়ার দৃশ্য লক্ষ করা গেছে।

    প্রকল্পটি তদারকি করেন তার বড় ভাই মোঃ আনোয়ার হোসেন। আনোয়ারের অভিযোগ, গত ২ জানুয়ারি তিনি সেচপাম্প বসিয়ে প্রাইমারি প্রকল্প থেকে সেকেন্ডারি ১২টি প্রকল্পে সেচ দিয়ে পানি সরবারহ শুরু করেন। এ সময় উপজেলার বাসুদেবপাড়া গ্রামের কাঞ্চন মৃধার ছেলে মোঃ সানাউল মৃধা ও শংকরপাশা গ্রামের কালাম খানের ছেলে মামুন খানের নেতৃত্বে সাত-আটজন সন্ত্রাসী এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় সেচপাম্প বন্ধসহ বিভিন্ন হুমকি দেয়।

    সন্ত্রাসীদের হুমকির মুখে গত ৫ জানুয়ারি পাঁচ হাজার টাকা পরিশোধ করলে বাকি টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। এরপর গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাকি টাকা না দেওয়ায় পাম্প বন্ধ করে দেয় এবং তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে তাকে লাঞ্ছিত করা হয়। সন্ত্রাসী সানাউল চলে যাওয়ার সময় তাদের নির্দেশ ছাড়া সেচযন্ত্র চালু করলে হত্যার হুমকি দেন।
    নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রকল্পের একাধিক ব্যবস্থাপক বলেন, বোরোর চলতি মৌসুমে জমিতে পানি সরবারহ শুরু হলে আমরা জমি প্রস্তুত করি। কিন্তু হঠাৎ পানি সরবারহ বন্ধ হওয়ায় চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে।

    মোঃ রুস্তুম সরদার, সান্টু খলিফা, নজরুল খলিফাসহ কয়েকজন কৃষক বলেন, গুটিকয়েক চাঁদাবাজদের জন্য কয়েক হাজার কৃষক জমিতে সেচ দিতে পারছে না। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মো. সানাউল মৃধা বলেন, ‘আগের সেচ প্রকল্পের মালিকের কাছ থেকে আমি লিখিতভাবে প্রকল্প পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছি। সেই প্রকল্প জাকির হোসেন দখল করতে চান বলে আমি তাতে বাধা দিয়েছি।

    চাঁদা দাবির অভিযোগ সঠিক নয়।’ তিনি বলেন, ‘কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে সরকারি নদীর পানি তুলে যে কেউ সেচ দিতে পারে। সেখানে কেউ প্রকল্প ইজারা দেওয়ার ক্ষমতা রাখে না। আমি যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে প্রকল্প চালু করেছি।

    গৌরনদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ সেকেন্দার শেখ এ প্রসঙ্গে বলেন, এ ব্যাপারে আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কৃষকদের স্বার্থ সংরক্ষণে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’

    গৌরনদী মডেল থানার ওসি মোঃ ইউনুস মিয়া বলেন, এ ঘটনায় প্রাইমারি সেচ প্রকল্পের তদারককারী মোঃ আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে গত শুক্রবার ১০ জনকে আসামি করে গৌরনদী থানায় মামলা দাখিল করেছে। চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে তদন্ত পুর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।