Category: কৃষি

  • চা উৎপাদনে রেকর্ড ছাড়িয়েছে উত্তরাঞ্চল

    চা উৎপাদনে রেকর্ড ছাড়িয়েছে উত্তরাঞ্চল

    মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম,তেতুলিয়া প্রতিনিধিঃ সমতল ভূমিতে চা উৎপাদনে রেকর্ড ছাড়িয়েছে উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড় জেলা। শিল্প বিপ্লবে বদলে গেছে উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড়। সিলেটের পরের অবস্থানে সুপরিচিতি পেয়েছে এ প্রান্তিক জেলা। দুই দশকের নীরব চা বিপ্লবে বদলে গেছে অর্থনীতি ও জীবনমানের চিত্র। কয়েক বছর ধরেই রেকর্ড হারে উৎপাদিত হচ্ছে চা।

    গত বছর ২০২২ সালে উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলায় (পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, লালমনিরহাট ও নীলফামারী) চা উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৭৭ লাখ ৫৯ হাজার ২শ’২৬ কেজি। যা বিগত বছরের তুলনায় ৩২ লাখ ১৯ হাজার ২২৬ কেজি বেশি উৎপাদনে সকল রেকর্ড ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে চা বোর্ডের জেলা আঞ্চলিক কার্যালয়।

    চা বোর্ড জানায়, উত্তরাঞ্চলে বেড়েছে চা আবাদ। এবার ১২ হাজার ৭৯ দশমিক ৬ একর সমতল জমিতে ৩০টি বাগান ও ৮ হাজারের বেশি ক্ষুদ্র চা বাগান থেকে চা উৎপাদন হয়ে রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এ বছর এসব বাগান থেকে ৯ কোটি ২ লাখ ৭৪ হাজার ৬৩২ কেজি সবুজ কাঁচা চা পাতা উত্তোলন করা হয়। যা পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও লালমনিরহাটের চলমান ২৫ টি কারখানায় প্রক্রিয়াজাত করে ১ কোটি ৭৭ লাখ ৫৯ হাজার ২শ’২৬ কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। এই উৎপাদন জাতীয় উৎপাদনের ১৮.৯২ শতাংশ।

    চা বোর্ডের তথ্য মতে, ২০২০ সালে উত্তরবঙ্গের পঞ্চগড়সহ পাঁচ জেলায় ১০ হাজার ১৭০ একর জমির ১০টি নিবন্ধিত ও ১৭টি অনিবন্ধিত চা বাগান ও ৭ হাজার ৩১০টি ক্ষুদ্রায়তন চা বাগানে ৫ কোটি ১২ লাখ ৮৩ হাজার ৩৮৬ কেজি সবুজ কাঁচা চা পাতা উত্তোলন করা হয়। সে পাতা থেকে ১৮টি চা ফ্যাক্টরিতে ১ কোটি, ৩ লাখ ১০ হাজার কেজি তৈরি চা উৎপাদিত হয়। ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে ১ হাজার ৪৯০ একর জমি নতুন করে চা চাষের আওতায় আসে। তৈরি চায়ের উৎপাদন বাড়ে ৭.১১ লাখ কেজি।

    ২০২১ সালে এ অঞ্চলে চা আবাদের পরিমাণ ছিল ১১ হাজার ৪৩৩ দশমিক ৯৪ একর। উৎপাদন হয়েছিল ১ কোটি ৪৫ লাখ ৪০ হাজার কেজি। সে তুলনায় গত এক বছরে চা আবাদ বেড়েছে ৬৪৫ দশমিক ১২ একর। উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলার মধ্যে পঞ্চগড়ে ১০ হাজার ২৩৯ দশমিক ৮০ একর জমিতে চা উৎপাদিত হয়েছে। অন্যান্য জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে ১ হাজার ৪৫৭ দশমিক ২৯ একর, লালমনির হাটে ২২২ দশমিক ৩৮ একর, দিনাজপুরে ৮৯ একর ও লালমনিরহাটে ৭০ দশমিক ৫৯ একর জমিতে এই চা আবাদ হচ্ছে। যা ২০২২ সালে বিগত বছরের তুলনায় ৩২ লাখ ১৯ হাজার ২২৬ কেজি চা উৎপাদন বেশি হয়েছে।

    এক সময়ের পতিত গো-চারণ ভূমি এখন সবুজ চা বাগান। সবুজ পাতায় জোগান দিচ্ছে সবুজ অর্থনীতি। এখানকার মানসম্মত উৎপাদিত চা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে প্রবেশ করেছে আন্তর্জাতিক বাজারে। এখন সিলেটের পর চা উৎপাদনে দ্বিতীয় অঞ্চল হয়ে উঠেছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। দুই দশকের বেশি সময় ধরে পঞ্চগড়ের চা শিল্পের বিপ্লবকে অনুসরণ করে এগিয়ে যাচ্ছে রংপুর বিভাগের ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী ও দিনাজপুর জেলা।

    চা শিল্প ঘিরে এ জেলায় ২০ হাজারের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। গড়ে উঠছে দেশের চায়ের তৃতীয় নিলাম মার্কেট। আগামী এপ্রিলের মধ্যে উদ্বোধন হতে পারে বলে জানা গেছে। জেলার ধাক্কামারায় তৃতীয় চা নিলাম কেন্দ্র স্থাপনের কাজ দ্রত এগিয়ে চলেছে। ইতোমধ্যে চা ওয়্যার হাউজ, ব্রোকার হাউজসহ সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো নির্মাণ করে প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ চা-বোর্ডের পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরামর্শে গড়ে উঠছে ওয়্যার হাউজ, ব্রোকার হাউজ, টি টেস্টিং ল্যাব, বায়ার কমফোর্ট জোন। প্রস্তাবিত চা নিলাম কেন্দ্রের অবকাঠামোও প্রস্তুত করা হয়েছে।

    বাংলাদেশ চা বোর্ডের জেলা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উন্নয়ন কর্মকর্তা আমির হোসেন বলেন, ‘সমতল ভূমিতে চা চাষে উত্তরাঞ্চলের জেলা ৫টি জেলা অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। ১৯৯৬ সালে এ জেলায় প্রথম চা চাষের পরিকল্পপনা হাতে নেওয়া হয়। ২০০০ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় ক্ষুদ্র পর্যায়ে চা চাষ। এ অঞ্চলে দিনদিন চা চাষ ও উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে তা আজ সিলেটের পর দ্বিতীয় অবস্থানে পরিচিতি পেয়েছে। পঞ্চগড়ের চা শিল্পকে অনুসরণ করে ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, দিনাজপুর ও নীলফামারীতে চা উৎপাদনে সমৃদ্ধ করেছে রংপুরের পাঁচ জেলা।

    তিনি আরও বলেন, চা শিল্পে এ অঞ্চলে দারিদ্র্য বিমোচন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হয়েছে। চা বোর্ড চা চাষ সম্প্রসারণে চাষিদের বিভিন্ন সহায়তার মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। উন্নত জাতের উচ্চ ফলনশীল ও গুণগতমান সম্পন্ন বিটি সিরিজের চা চারা উৎপাদনের কাজ অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের আওতায় ৮.২১ লাখ চা চারা চাষিদের মাঝে সল্পমূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।

    আর চাষীদের হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দিতে ‘ক্যামেলিয়া খোলা আকাশ স্কুল’র মাধ্যমে কর্মশালা করা হচ্ছে। চাষিদের সমস্যা সমাধানে ‘দুটি পাতা একটি কুঁড়ি’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপস চালু করা হয়েছে। এছাড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ে একটি পেস্ট ম্যানেজমেন্ট ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে চাষিদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান, রোগবালাই ও পোকা দমনে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক সহায়তা দেওয়া হয়।’

  • শুরু হয়েছে সুন্দরবনে গোলপাতা আহরন মৌসুম

    শুরু হয়েছে সুন্দরবনে গোলপাতা আহরন মৌসুম

    ইমদাদুল হক, পাইকগাছা ( খুলনা)
    শুরু হলো চলতি বছরের সুন্দরবনে গোলপাতা আহরণ মৌসুম। সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের ২টি কুপে এখন চলছে গোলপাতা আহরণ। নির্বিঘে গোলপাতা কাটতে পেরে খুশি বাওয়ালিরা। বন বিভাগের কঠোর নিরাপত্তা আর কড়াকড়িতে প্রথম ট্রিপের গোলপাতা কাটতে এখন অধিক ব্যস্ত বাওয়ালীরা। বন বিভাগের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে গোলপাতা আহরণে বনের অভ্যন্তরে যাচ্ছেন বাওয়ালিরা। ৩১ মার্চ পর্যন্ত চলবে এ মৌসুম। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের (মোংলা) স্টেশন অফিসার মো. ওবায়দুর রহমান। তিনি জানান, গোলপাতা আহরণকারী বাওয়ালিদের অনুমতিপত্র দেওয়া হয়েছে। অনুমতি নিয়েই বনে ঢুকছেন উপকূলের বাওয়ালিরা।
    জানা গেছে, সুন্দরবন থেকে বনজদ্রব্যআহরণ সঙ্কুচিত এবং চাহিদা কমে যাওয়ায় গোলপাতা সংগ্রহে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে বাওয়ালীরা। গোলপাতা আহরণের ভরা মৌসুমে এবার বাওয়ালীদের বিএলসি (অনুমতি) দেওয়ার ক্ষেত্রে কঠোর ছিল বন বিভাগ। সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের ২টি কুপ (জোন) থেকে ব্যবসায়ীরা অনুমতি গ্রহণ করে সুন্দরবন অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছে এর উপর নির্ভরশীল শ্রমজীবি মানুষেরা। তবে বনের ওপর থেকে চাপ কমাতে বনজদ্রব্য আহরণ সঙ্কুচিত করার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছে বন বিভাগ।
    বাওয়ালী নুর ইসলাম সানা জানান, ২০ বছর ধরে তিনি সুন্দরবন থেকে গোলপাতা সংগ্রহ করে আসছি। কিন্তু বন বিভাগের এত কড়াকড়ি আগে কখনও দেখেনি। ব্যবসায়ীদের আগ্রহ না থাকায় গোলপাতা আহরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নাও হতে পারে বলে তিনি জানান।
    মোংলা খুচরা গোলপাতা ব্যবসায়ী লিটন বলেন, এখন আগের মতো আর গোলপাতার চাহিদা নেই। বিক্রি কম হওয়ায় অনেক খুচরা বিক্রেতাদের গত বছরের গোলপাতা এখনো রয়ে গেছে। তবে অনেক বাওয়ালী বলেন, গোলপাতায় যে পরিমাণ টাকা লগ্নি করা হয়, সেই তুলনায় ব্যবসা নেই।
    সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের (মোংলা) স্টেশন অফিসার মো. ওবায়দুর রহমান জানান, নিবির্ঘে যাতে বাওয়ালীরা গোলপাতা কাটতে পারে তার জন্য বন বিভাগ থেকে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা। সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জে দুটি গোলপাতার কূপ রয়েছে। একটি হলো শ্যালা গোলপাতা কূপ আরেটি হলো চাঁদপাই গোলপাতা কূপ। সুন্দরবনের ওপর থেকে চাপ কমানোর জন্য বনজদ্রব্য আহরণ সীমিত করা হয়েছে। তিনি প্রতিটি কুপে নিয়মিত তদারকি করে বিএলসি নবায়ন করার অনুমতি দিয়েছেন। পাশাপাশি কুপে নৌকার মিল রেখে গোলপাতা কাটার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
    বন বিভাগের তথ্য মতে, গোলপাতা আহরণের ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে। শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, গোলপাতা আহরণের সময় বনের অন্য কোনো ধরনের গাছপালা কাটা যাবে না, গোলপাতা আহরণের জন্য নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত সময় বনে অবস্থান করা যাবে না, নির্দেশনা সঠিকভাবে পালন করতে হবে, গোলপাতা ঝাড়ের মাইজপাতা ও ঠেকপাতা কোনোভাবেই কাটা যাবে না এবং গোলপাতার আড়ালে যাতে কোনো ধরণের বনজদ্রব্য পাচার না হয় সে বিষয়টি নিবিড় তদারকির মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে। যদা কোনো বাওয়ালি গোলপাতার পাশাপাশি অন্য প্রজাতির গাছ কাটে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
    বন বিভাগের এ কর্মকর্তা বলেন, ২৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া গোলপাতা আহরণ মৌসুম চলবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। এ মৌসুমে শ্যালা কূপ থেকে চার হাজার মেট্রিক টন ও চাঁদপাই কূপ থেকে তিন হাজার মেট্রিক টন গোলপাতা আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। গত মৌসুমে প্রতি কুইন্টাল গোলপাতা আহরণে রাজস্ব নেয়া হয়েছিল ২৫ টাকা। আর এবার তা বাড়িয়ে প্রতি কুইন্টাল ৬৮ টাকা করা হয়েছে।

    ইমদাদুল হক,
    পাইকগাছা(খুলনা) প্রতিনিধি।।

  • পাইকগাছায় বোরো আবাদে ব্যাস্ত সময় পার করছে কৃষকরা

    পাইকগাছায় বোরো আবাদে ব্যাস্ত সময় পার করছে কৃষকরা

    ইমদাদুল হক,পাইকগাছা,খুলনা।।
    পাইকগাছায় শীত ও কুয়াশার মধ্যে কৃষকরা পুরাদমে বোরোর আবাদ করছে। তবে মাঝখানে শীত ও ঘন কুয়াশার কারনে বোরোর বীজতলা ও রোপনকৃত চারা টিকিয়ে রাখতে কৃষকদের হিমশীম খেতে হয়েছে।
    উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলার ৫হাজার ৬২৫হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩ হাজার ৭২৫ হেক্টর জমিতে বোরোর চারা রোপন সম্পন্ন হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সম্পূর্ণ জমিতে বোরো রোপন সম্পন্ন হবে বলে কৃষি অফিস জানিয়েছে। বোরো আবাদের জন্য ৩১০ হেক্টর জমিতে বোরোর বীজতলা তৈরী হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড ৯৫ হেক্টর উফশি ২১৫ হেক্টর।
    জলবায়ু ও আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে উপকূল অ লের কৃষি কাজ অন্য এলাকা থেকে এক থেকে দেড়মাস পরে শুরু হয়। এর ফলে অন্য এলাকার সাথে উপকূলীয় এলাকার চাষাবাদ ব্যবধান তৈরী হচ্ছে। সব মৌসুমেই চাষাবাদ দেরিতে শুরু হচ্ছে। এখনো আমন ধান কর্তন চলছে। ধান কাটার পর এসব ক্ষেত বোরো আবাদের জন্য প্রস্তুত করা হবে। তাছাড়া বৈরী আবহাওয়ার সাথে মোকাবেলা করে ফসল লাগাতে হয়।
    উপজেলার পুরাইকাটী ব্লাকের কৃষক ফারুক হোসেন বালেন, মাঝখানের তীব্র শীত ও কুয়াশায় ধানের চারা কিছুটা লাল হয়েছিলো।পলিথিন দিয়ে ঢেকে,পানি বদলসহ নানারকম পরিচর্যা করে বীজতলা ও রোপনকৃত চারা টিকিয়ে রাখা হয়েছে।তবে শ্রমিকের উচ্চ মূল্যের পরও চাহিদামত বোরো আবাদ করার জন্য শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।এতে করে বোরো আবাদ সম্পন্ন করতে সময় বেশি লাগছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো :জাহাঙ্গীর আলম জানান, মাঝখানে তীব্র শীত ও কুয়াশা পড়লেও বীজতলা কোন ক্ষতি হয়নি। তাছাড়া প্রতিদিন পানি বদল করার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি কৃষি অফিস থেকে সব রকম সহযোগিতা করা হচ্ছে।এখন আবহাওয়া বোরো আবাদের জন্য পুরাপুরি অনুকুলে রয়েছে।

    ইমদাদুল হক,
    পাইকগাছা, খুলনা।

  • বিদ্যুতের অভাবে ৭০ বিঘা জমির চাষাবাদ অনিশ্চিত

    বিদ্যুতের অভাবে ৭০ বিঘা জমির চাষাবাদ অনিশ্চিত

    নওগাঁ প্রতিনিধি:
    একটি গভীর নলকূপে বিদ্যুৎ সংযোগ না দেয়ায় নওগাঁর আত্রাই উপজেলার চাপড়া গ্রামে প্রায় ৭০ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ চাষ অনিশ্চি হয়ে পড়েছে।

    জানা গেছে, আত্রাই উপজেলার চাপড়া গ্রামে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি নওগাঁ-১ এর আওতায়
    প্রায় ৭০ বিঘা কৃষি জমির চাষাবাদে সেচ দেয়ার জন্য প্রকল্পের সংশিস্নষ্ট সব বিষয়াদি সম্পন্ন করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি আত্রাই এর কার্যালয়ে যথানিয়মে বিদ্যুৎ সংযোগ চেয়ে আবেদন করা হয়। পরে কর্তৃপক্ষ এলাকা সার্ভে করে। কিন্তু আজ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়ায় সেচের অভাবে কৃষকরা রোপা আমন ও বোরো ধান রোপণ করতে পারছেন না।

    চাপড়া গ্রামের কৃষক মোতাজুল জানান,গত ইং ১৩/৬/২২তারিখে আত্রাই পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি নওগাঁ-১ অফিসে বৈদ্যুতিক সংযোগ নিতে অফিস কর্তৃপক্ষের নিকট মিটার সংযোগ এর জন্য টাকা জমা প্রদান করা হয় লাইসেন্স নং২৩৩/২০২১-২২ নলকুপ শ্রেনি এসটিডাব্লু কৃষি জমি চাষাবাদের জন্য সব কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। কিন্তু পল্লী বিদ্যুতের গরিমশিতে সংযোগ না দেয়ায় সেচের অভাবে তারা ধানের চারা রোপণ করতে পারছেন না। গভীর নলকূপে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে প্রায় ৭০ বিঘা কৃষি জমিতে চাষাবাদের সুযোগ দেয়ার দাবি জানান তিনি। কিন্তু দরখাস্তকারীর বর্গাদার মোঃ আব্দুল কুদ্দুস পল্লী গত ১০/০১-২৩ তারিখে বিদ্যুত এর খুঁটিতে মিটার সংযোগ দিতে গেলে একই গ্রামের কৃষক (১) মোঃ সহিদুল(২)রতন সরদার পিতা মোঃআত্তাব আলী সরদার (৩)সাইফুল ইসলাম পিতা সহিদুল ইসলাম(৪)মোঃআত্তাব আলী সরদার (৫)সাত্তার সরদার (৬) মোঃ লেবু সরদারগং পল্লী বিদ্যুত এর খুঁটিতে মিটার সংযোগ দিতে বাঁধা সৃষ্টি করে এবং মার পিটের চেষ্টা করে ও প্রাণ নাষের হুমকি দেয়। আমি নিরুপায় হয়ে এ বিষয়ে আত্রাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে একটি লিখিত আবেদন করি। আত্রাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ইকতেখারুল ইসলাম বিষয়টি আত্রাই পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি নওগাঁ-১ ডিজিএম কে ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দ্দেশ দেন তারপরও এখণ পর্যন্ত মিটার সংযোগ দেয়া হয় নাই। এ বিষয়ে আত্রাই পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম কামরুজ্জামান জানান, যথা নিয়মে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে আবেদন করলে তাকে মিটার সহ যাবতীয় যন্ত্রাংশ দেয়া হয় কিন্তু ওই গ্রামে কিছু সংখ্যক কৃষক তাদের পল্লী বিদ্যুৎতের খুটি থেকে সংযোগ নিতে গেলে ইরি- বেরো কৃষকরা বলেন আমরা স্কীম করতে পূর্বে আত্রাই পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নিকট থেকে চারটি পিলার টাকা দিয়ে ক্রয় করতে হয়েছে।আমরা কেন অভিযোগকারীকে বিনা খরচে মিটার সংযোগ দিতে দিবো। এলাকাবাসীরা দাবী এ বিষয় আত্রাই পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি নওগাঁ-১ ডিজিএম দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে একদিকে বিদ্যুতের অভাবে ৭০ বিঘা জমির চাষাবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে অন্যদিকে মিটার সংযোগ নিয়ে বড় ধরনের দূঘটনা ঘটার আশংক করছে।

    রওশন আরা পারভীন শিলা
    নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি

  • নড়াইলে বোরো মৌসুমে আদর্শ বীজতলার জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে কৃষকেদের

    নড়াইলে বোরো মৌসুমে আদর্শ বীজতলার জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে কৃষকেদের

    উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে:

    নড়াইলে বোরো মৌসুমে আদর্শ বীজতলার জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। বীজতলায় ধানের চারা উৎপাদনে ব্যস্ত সময় পার করছেন এ জেলার কৃষক। উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে জানান, জানা গেছে, সনাতনী বীজতলার তুলনায় আদর্শ বীজতলায় উৎপাদিত চারার স্বাস্থ্য ভালো হয় এবং কোল্ড ইনজুরির ঝুঁকিও কম থাকে। চারা তোলার সময় শিকড়ে মাটি না ধরায় চারাগুলো কোনো ধরনের আঘাত পায় না। রোপণের পর প্রায় শতভাগ চারা জীবিত থাকে। খরচ কম এবং ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা বেশি আকৃষ্ট হয়েছে আদর্শ বীজতলায়। আদর্শ বীজতালায় চারা উৎপাদন করলে তা যেকোনো বৈরী আবহাওয়া মোকাবিলা করতে সক্ষম। এ পদ্ধতিতে চারার যত্ন নেওয়া সহজ।
    জেলার কয়েকজন কৃষক জানান, আদর্শ বীজতলায় আড়াই হাত চওড়া জায়গায় বেড তৈরি করা হয়। বেডের দুপাশে ড্রেন থাকে। এ পদ্ধতিতে বীজতলায় বীজ ছিটাতে সহজ হয়। পরিচর্যা করতে সুবিধা হয়। আগের পদ্ধতির তুলনায় এ পদ্ধতিতে বীজ নষ্ট হয় কম।
    তাছাড়া চারার মানও অনেক ভালো হয়। ধানের ফলনও বেশি হয়। ফলে তারা এ পদ্ধতিতে বেশ লাভবান হচ্ছেন। সব কৃষকেরই আগের পদ্ধতি ছেড়ে আদর্শ বীজতলা করা উচিত। জেলা কৃষি অফিস থেকে নিয়মিত সাহায্য সহযোগিতা পান বলেও জানান তারা।
    সনাতন পদ্ধতিতে কৃষক যে বীজতলা করতো তাতে বীজের স্বাস্থ্য খারাপ হতো। চারা পরিচর্যা করতে সমস্যা হতো। এসব সমস্যা থেকে বাঁচতে এবং চাষাবদে ব্যয় কুমিয়ে অধিক লাভবান হতে কৃষকদের আদর্শ বীজতলা পদ্ধতিতে বীজতলা করার পরামর্শ ও সহযোগিতা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
    নড়াইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ দীপক কুমার রায় বলেন, জেলায় এ বছর বীজতলা লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। এ বীজতলার অধিকাংশই আদর্শ বীজতলা। আমরা কৃষকেদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। কৃষকরাও আদর্শ বীজতলায় অভ্যস্ত হয়েছেন। আমরা বীজ, সার ও সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে কৃষকদের পাশে আছি। উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে।

  • তীব্র শীত কুয়াশায় পাইকগাছার বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামারে বোরো আবাদের ব্যাপক ক্ষতি

    তীব্র শীত কুয়াশায় পাইকগাছার বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামারে বোরো আবাদের ব্যাপক ক্ষতি

    ইমদাদুল হক,পাইকগাছা,খুলনা।।
    তীব্র শীত ঘনো কুয়াশা আর শৈত প্রবাহে পাইকগাছার বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামারের বোরো বীজতলা ও রোপনকৃত চারার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শৈত প্রবাহের কারণে চাষকার্যে নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে।
    খামার সুত্রে জানা গেছে, হটাৎ করে তীব্র শীত আর ঘোন কুয়াশা শুরু হওয়ায় কৃষি কাজে যেমন ব্যাহত হচ্ছে তেমনি বীজতলা ও রোপনকৃত ধানের চারা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। খামারে ব্রি ধান ৬৭ এর রোপনকৃত প্রায ৮ বিঘা জমির চারা ও প্রায ৫৫ শতক জমিতে ব্রি ধান ৫০ এর অঙ্কুরৃত বীজ বপণের পরেই শৈত প্রবাহ শুরু হয়। তীব্র শীত আর ঘনো কুয়াশায় থাকায় সূর্যের আলো না পাওয়ায বীজতলার চারা লালছে রং ধারণ করে।
    এ ব্যাপারে বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামারের সিনিয়র সহকারি পরিচালক কৃষিবিদ নাহিদুল ইসলাম বলেন,খামারে প্রায ৮ বিঘা জমির ব্রি ধান ৬৭ এর রোপনকৃত চারা ও ব্রি ধান ৫০ এর বীজ তলা তৈরির পরই তীব্র শীত ঘনো কুয়াশা শুরু হয়। এতে সূর্যের আলো না পাওয়ায চারা খাদ্য তৈরি ও শিকড় বাড়তে না পারায় বীজ তলা ও রোপনকৃত চারা লালছে রং হয়ে মরে যাচ্ছে।প্রতিদিন বীজ তলার পানি বদল ও কুয়াশার পানি চারার পাতা থেকে ফেলে দিয়ে পরিচর্যা করা হচ্ছে তবুও চারার কোন উন্নতি হচ্ছে ন্।া তবে রোপনকৃত চারা ও বীজতলা ভালো করার জন্য সব ধরণের পরিচর্যা ও চেস্টা অব্যহত রয়েছে।

    ইমদাদুল হক,
    পাইকগাছা,খুলনা।

  • গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ভাসমান বেডে সবজি চাষ উদ্বোধন

    গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ভাসমান বেডে সবজি চাষ উদ্বোধন

    নিজস্ব প্রতিবেদক,গোপালগঞ্জঃ গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলায় আজ দুইহাজার চারশ’ মিটার ভাসমান বেডে সবজি চাষের উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে কোটালীপাড়া উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের মাচারতারা গ্রামের কয়েকটি জলাভূমির উপর তৈরী ৬০ মিটার দীর্ঘ ৪০ টি বেডে সবজির চারা রোপণ করে এ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন ‘ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ’ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. বিজয় কৃষ্ণ বিশ্বাস।

    এ সময় কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস ওয়াহিদ, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নিটুল রায়, কান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তুষার মধুসহ এলাকার কৃষক- কৃষাণীরা উপিস্থত ছিলেন।

    উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নিটুল রায় জানান, কোটালীপাড়া উপজেলার কান্দি ইউনিয়নে একহাজার পাঁচশ’ বিঘা জলাবদ্ধ পতিত জমি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এ পতিত জমিতে ফসল উৎপাদনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ জমির যেখানে ধান চাষ করা সম্ভব সেখানে ধান চাষ করা হবে, আর যেখানে ধান চাষ সম্ভব না সেখানে সবজি চাষ করা হবে।

    তিনি আরো জানান, এই একহাজার পাঁচশ বিঘা জলাবদ্ধ পতিত জমিতে ধান ও সবজির চাষ করা হলে ৬০ হাজার মন ধান উৎপাদিত হবে, যার বাজার মূল্য প্রায় ছয়কোটি টাকা। এছাড়া কচুরিপানার ভাসমান বেডে লাউ, কুমড়া, করলাসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করলে অন্তত ৩০ লাখ টাকার সবজি উৎপাদন সম্ভব হবে।

  • সুজানগরে সরিষা চাষে আশার আলো দেখছেন চাষীরা

    সুজানগরে সরিষা চাষে আশার আলো দেখছেন চাষীরা

    এম এ আলিম রিপন সুজানগর(পাবনা)ঃ ভোজ্য তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এবং আমদানী নির্ভর ভোজ্য তেলের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে কৃষি বিভাগের সার্বক্ষণিক পরামর্শ ও প্রণোদনায় সুজানগর উপজেলার কৃষকেরা তাদের জমিতে সরিষা চাষ করে আশার আলো দেখছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী, গত বছর উপজেলায় ৫১০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছিল,এবার তা বৃদ্ধি পেয়ে ১১৪০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। শনিবার(২১ জানুয়ারী) উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে সরিষার হলুদ ফুলের সমাহার। যেন দেখে মনে হচ্ছে মাঠে মাঠে হলুদ-সবুজের আলপনা। সেই সাথে সরিষার ক্ষেতে বেড়েছে মৌমাছির আনাগোনা। এসব সরিষার ক্ষেতে ঝাঁকে ঝাঁকে মুখরিত মৌমাছির গুনগুন শব্দ। আমন ধান কাটার সঙ্গে সঙ্গে ওই জমিতেই সরিষা চাষ করেছেন কৃষকেরা। উপজেলার ভাঁয়না ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের কৃষক রফিক হোসেন হোসেন। তিনি সরকারি প্রণোদনায় সুজানগর উপজেলা কৃষি অফিস হতে সরিষা বীজ নিয়ে প্রায় ৩ বিঘা জমিতে বারি সরিষা-১৪ রোপণ করেছেন। বর্তমানে সরিষার হলুদ ফুলের সমারোহ দেখে তিনি আশার আলো দেখছেন। উপজেলার দুলাই ইউনিয়নের আন্ধারকোঠা গ্রামের কৃষক ইয়াকুব আলী প্রামাণিক বলেন, তেলের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সরিষার দামও বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। ফলে বাড়তি লাভের পশাপাশি পরিবারে তেলের চাহিদা পূরণে সক্ষম হবেন কৃষকেরা। তাই তিনি এবার গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। প্রতি বিঘাতে ৬/৭ মন সরিষার ফলন হতে পারে বলে তিনি আশাবাদী। ভবানীপুর গ্রামের কৃষক মোফাজ্জল হোসেন বলেন,সরিষা চাষাবাদের ফলে আমন ও বোরো ধানের মাঝে উপরি ফসল পেয়ে আমাদের লাভ হয়। পাশাপাশি নিজেদের তেলের চাহিদা পূরণ হয়। খৈল পাওয়া যায়। সরিষার গাছ জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করা হয়। সরিষার শাক বিক্রি হয়। তবে সরিষা চাষাবাদে তেমন খরচ নেই বললেই চলে। পানি ,সেচ ও সার তেমন লাগে না । সরিষা ক্ষেত গরু-ছাগলেও খায় না। এ জন্য বাড়তি কোন চিন্তাও করতে হয় না। কৃষকেরা জানান, সরিষা চাষ বাড়ায় মধু সংগ্রহের পরিমাণ বেড়েছে, যাতে লাভবান হচ্ছে মধু ব্যবসায়ীরাও। সুজানগর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাফিউল ইসলাম জানান,সরিষা চাষে কৃষককে আগ্রহী করে তুলতে এবারে কৃষি প্রণোদনার আওতায় উপজেলার ২৬০০ জন কৃষক-কৃষাণীর প্রত্যেককে বারি-১৪ জাতের ১ কেজি করে সরিষা বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি করে এমওপি সার প্রদান করা হয়েছে। কৃষি অফিস মাঠ পর্যায়ে কর্মীরা ফসলের সার্বক্ষণিক তদারকি করছে। আবাহাওয়া পরিস্থিতির বিপর্যয় না ঘটলে কৃষকেরা সরিষা চাষে ব্যাপক লাভবান হবেন বলে আশাকরি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পাবনার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড.মোঃ সাইফুল আলম বলেন,সরকার পরিকল্পনা নিয়েছে,আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ভোজ্যতেলের আমদানি কমিয়ে আনবে। তেলের ক্ষেত্রে দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার অংশ হিসেবেই সরিষার চাষ বাড়ানো হচ্ছে। বিদেশ থেকে যেন ভোজ্যতেল আমদানি করতে না হয়। সে কারণে কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের সার, বীজ প্রণোদনা হিসেবে দিয়ে উৎসাহিত করা হয়েছে। কৃষকরাও কম খরচে অধিক লাভের সরিষা চাষে উৎসাহিত হচ্ছে। এই কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, আমদানিকৃত ভোজ্যতেল স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকারক। সরিষার তেল স্বাস্থ্যসম্মত। আগে তো দেশের মানুষ সরিষার তেলই ব্যবহার করতো।

    এম এ আলিম রিপন
    সুজানগর(পাবনা)প্রতিনিধি।

  • তানোরে সংগ্রহ অভিযান ভেস্তে যাবার আশঙ্কা

    তানোরে সংগ্রহ অভিযান ভেস্তে যাবার আশঙ্কা

    আলিফ হোসেন,তানোরঃ
    রাজশাহীর তানোরে চলতি মৌসুমে
    সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান ভেস্তে যাবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সরকার নির্ধারিত দামের চাইতে খোলা বাজারে দাম বেশী হওয়ায় কেউ সরকারি ধান দিচ্ছেন না। বিগত ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে সংগ্রহ উদ্বোধন করা হয়েছে। কিন্ত্ত এখন পর্যন্ত এক ছটাক ধান সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ। অপরদিকে তালিকাভুক্ত ২৮টি চালকলের মধ্যে এবার মাত্র ৮টি চালকল চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত প্রয়োজনীয় চাল সরবরাহ করতে পারেনি।
    জানা গেছে, উপজেলায় ৬টি সরকারি খাদ্য গুদাম রয়েছে। তানোর পৌর সদরের গোল্লাপাড়া ৪টি ও কামারগাঁ রয়েছে ২টি খাদ্য গুদাম। বিগত ২০২২ সালের ১৭ নভেম্বর সরকারি সংগ্রহ শুরু হয়েছে আগামি ২৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত চলবে।
    উপজেলা খাদ্য অফিস সুত্রে জানা যায়, উপজেলায় ২৮ টাকা কেজি দরে সরকারি দুটি ক্রয়কেন্দ্রে এক হাজার ৪৫১ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এবং প্রতি কেজি ৪২ টাকা দরে ৩৪৯ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
    উপজেলায় চুক্তিবদ্ধ ৮টি চাল কলের বিপরীতে ১০০ দশমিক ৫০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ হয়েছে।
    স্থানীয় কৃষকেরা বলেন, সরকারি ক্রয়কেন্দ্রে আর্থিক সুবিধা না দিলে কৃষকদের নানাভাবে হয়রানি করা হয়। এসব হয়রানির কারণে কৃষকেরা সরকারি ক্রয়কেন্দ্রে যেতে চাই না। আবার বাজারে যখন ধানের দাম কম থাকে তখন প্রভাবশালীরা ধান সরবরাহ করে সরাসরি কৃষকের ধান নেয়া হয় না। এবিষয়ে জানতে চাইলে তানোর পৌর সদরের সরকারি খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) ওহেদুজ্জামান জানান, ধান সংগ্রহ হয়নি। এই গুদামের সঙ্গে কোনো চালকল মালিক চুক্তিবদ্ধ হয়নি। এবিষয়ে কামারগাঁ সরকারি খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা
    (ওসিএলএসডি) রেজাউল ইসলামের মোবাইলে একাধিক বার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেন নি। এবিষয়ে মোহনপুর উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (টিসিএফ) ও তানোরের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত নুরনবী জানান, আমি চলতি মাসের ১০ জানুয়ারি দায়িত্ব নিয়েছি। ধানের দাম বাজারে বাড়তি থাকার কারনে কৃষকরা ধান দেয়নি। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির আগে যে কোন কৃষক ধান দিলে আমরা নিব। তানোর সদরের খাদ্য গুদামের সঙ্গে কোনো চালকল মালিক চুক্তি করেন নি, তবে কামারগাঁ গুদামের সঙ্গে ৮ জন চালকল মালিক চুক্তি করেছেন। তার মধ্যে ৬ জন ৭৪ মেট্রিক টন চাল দিয়েছেন। বাকি দুজন মেয়াদের আগে দিবেন। আর যে ১৮ মিল মালিক চুক্তি করেন নি তাদের লাইসেন্স বাতিলের নির্দেশনা আছে, বাতিল করা হবে। #

  • মধুপুরে বম্পার ফলে সরিষা চাষে ঝুকছে কৃষক

    মধুপুরে বম্পার ফলে সরিষা চাষে ঝুকছে কৃষক

    হাফিজুর রহমান.টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি:
    চারদিকের দিগন্তজোড়া মাঠে দুলছে সরিষার হলুদ ফুল। সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধে ভরে উঠেছে পুরো এলাকা। মৌ মাছি’র গুন গুন শব্দে মুখরতি পুরো মাঠ। সেই সাথে মধু আহরণে ব্যস্ত সময় পার করছে মৌ চাষীরা। এরকম চিত্রই ফুটে উঠেছে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার সরিষার মাঠ গুলোতে। চলতি রবি মৌসুমে উপজেলায় সরিষা চাষে ব্যাপক ফলন হয়েছে। গাছ ও সরিষা দানা’র ফলন দেখে খুশি কৃষক ও কৃষাণীরা।

    সরিষার ভালো ফলনের পাশাপাশি ন্যায্য মূল্য পাবেন বলে আশা করছেন এ অ লের কৃষকরা। এ মৌসুমে সরিষার চাষ ভালো হওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মৌচাষিদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। ইতিমধ্যেই কিছু কিছু এলাকায় শুরু হয়েছে মাঠে সরিষা কর্তন করে ফসল ঘরে তোলার কাজ।
    উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ শত হেক্টর জমিতে তা অর্জিত হয়ে অতিরিক্ত ১ শত হেক্টর পেরিয়ে ৭২০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। সরিষার ফলন বাড়াতে কৃষকদের মাঝে মৌসুমের শুরুতে বিএডিসি কর্তৃক উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষা বীজ সরবরাহ করা হয়েছে।
    এছাড়া কৃষি প্রণোদনার আওতায় বিনামূল্যে কৃষকদের সরিষা বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে। উন্নত ফলনশীল জাতের বারী-১৪ বিনা- ৪, টরি-৭ জাতের সরিষার চাষ সহ স্থানীয় বিভিন্ন জাতের সরিষার চাষ হয়েছে।
    উপজেলার কুড়ালিয়া ইউনিয়নের চাপড়ী গ্রামের সরিষা চাষী আ: কদ্দুস তিনি ৩ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছেন। ইতিমধ্যে ১ বিঘা সরিষা কর্তন শুরু করেছেন। বাকী সরিষা দু’চারদিনের মধ্যে কাটা শুরু করবেন। এ বছর সরিষার ফলন ভালো হয়েছে। যদি দাম ভালো থাকে তাহলে লাভবান হতে পারবে বলেও জানান।
    উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আল-মামুন রাসেল জানান, লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে এ বছর ৭২০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষাবাদ করা হয়েছে। ফলন ভালো হলে বিঘা প্রতি জমিতে ৫ থেকে ৬ মন সরিষা ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সকল ধরণের পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোনো ধরনের ক্ষতি না হলে মধুপুরে সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।