ইমদাদুল হক,পাইকগাছা,খুলনা।।
পাইকগাছায় পাটের আবাদ ভাল হয়েছে। বিগত বছর পাটের দাম ভাল পাওয়ায় কৃষকদের পাট চাষে আগ্রহ বেড়েছে। গত বছর পাটের দাম ভাল পাওয়ায় এ বছর পাইকগাছা উপজেলায় পাটের আবাদও বেড়েছে। পাটের বীজ বপনের সময় বৃষ্টি হওয়ায় পাইকগাছায় পাটের আবাদ ভাল হয়েছে। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৩৯০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে।উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৩৯০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। যা গত বছর ছিল ৩৭৫ হেক্টর। লবনাক্ত পাইকগাছার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে গদাইপুর, হরিঢালী, কপিলমুনি, রাড়ুলী, পৌরসভার জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। উপজেলার গোপালপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম জানান, পাট চাষের শুরুতে বৃষ্টি হওয়ায় পাটের আবাদ ভাল হয়েছে। কৃষক সবুর জানান, পাট আবাদ করার পরে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। কারণ দিন দিন ডোবা ও জলাশয়গুলি ভরাট হয়ে যাওয়ায় পাট জাগ দেওয়া জায়গা পাওয়া যায় না। একই স্থানে একাধিকবার পাট জাগ দিতে হয়। এতে সময়মত পাট জাগ দিতে না পারায় পাটের আশ ভাল পাওয়া যায় না। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতির শিকার হতে হয়।আবহাওয়া ভালো থাকলে পাটের আশ ভালো হবে বলে আশা করছেন পাট চাষিরা।
Category: কৃষি
-

পাইকগাছায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে
-

বারি আম-১৪ রাজশাহী ফল গবেষণার সাফল্য
মোঃ হায়দার আলী রাজশাহী থেকে।। দেশে এখন মধুমাস চলছে, বাহারি ফলের সমাহার। আম, জাম, কাঁঠাল, তালের শাঁসসহ এমন কোন ফল নেই যে এমধু মাসে পাওয়া যায় না। আমের রাজা ল্যাংড়া পাঁকতে শুরু করেছে। দেশের ফলের তালিকায় নতুন দুটি জাত যুক্ত করেছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএআরআই) এর রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্র।
যার একটি রঙিন আমের জাত ‘বারি আম-১৪’, যার বৈজ্ঞানিক নাম Mangifera indica। এটির উৎস সৌদি আরব। প্রয়োজনীয় গবেষণা প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এই জাতটি বাংলাদেশে চালু করা হয়েছে।
সর্বশেষ খবর দ্য ডেইলি স্টার বাংলার গুগল নিউজ চ্যানেলে। অন্যটি হলো স্থানীয় ফলসা ফলের জাত ‘বারি ফলসা-১’। যা Grewia asiatica নামে পরিচিত, ফলসা জাম পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। অপ্রচলিত এই ফল দেশজুড়ে ছোট গাছে জন্মালেও এবারই প্রথম এটি দেশের একটি ফল হিসাবে স্বীকৃতি পেলো।
জাতীয় বীজ বোর্ড ৩১ ডিসেম্বর এ দুটি ফলের জাতের নিবন্ধনের সনদ দিয়েছে। সনদ দুটি চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে রাজশাহীতে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলিম উদ্দিন।
এই দুটি জাতের মাধ্যমে রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্র থেকে দেশের ফল ভান্ডারে মোট নয়টি জাতের ফলের সংযোজন হলো।
ড. আলিম বলেন, দেশে এখন মোট ৩৬ প্রকারের ফলের ৯২টি জাত নিবন্ধিত আছে। ‘আমরা গর্বিত এবং আনন্দিত। আমরা বিশ্বাস করি যে এই ফলগুলি স্বাদ, পুষ্টির মান এবং বাণিজ্যিক সম্ভাবনার জন্য কৃষক এবং সবার কাছে জনপ্রিয় হবে,’ বলেন তিনি।
২০১০ সালে, বারির বিজ্ঞানী গোলাম মর্তুজা সৌদি আরব থেকে একটি আমের গাছের ডাল সংগ্রহ করে রাজশাহীর গবেষণা কেন্দ্রে দেন।
কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা ডালের কলম করে দশটি চারা গাছ তৈরি করেন। চারা গাছগুলোর মধ্যে একটি মাত্র গাছ বাঁচানো যায়।ড. আলিম বলেন, সেই একটি গাছ থেকে কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা গত দশ বছরে মোট পাঁচটি মাতৃ গাছ তৈরি করেছেন। এগুলোই বারি আম-১৪। এই গাছগুলো প্রতি বছর জুলাইয়ের শেষে ফল দেয়। ফলগুলি পাকার সময় আকর্ষণীয় লাল খয়েরি রঙ হয়। আয়তাকার এই আমের প্রতিটির ওজন প্রায় ৫৬৯ গ্রাম। এর ৭৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ খাওয়া যায় এবং এতে ২২ দশমিক ৮৩ শতাংশ মিষ্টতা আছে।
এর ফলন হেক্টর প্রতি ১৪ টন হবার সম্ভাবনা আছে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে ফলসা গাছ নিয়মিত মে এবং জুন মাসে ফল দেয়। এই ছোট গোলাকার ফলগুলি প্রায় শুন্য দশমিক ৬৬ গ্রাম ওজনের হয় এবং পাকলে বেগুনি হয়। এর মিষ্টতার পরিমাণ ২৪ শতাংশ। প্রতিটি গাছে বছরে ২০ কেজি ফল ধরে। ড. আলিম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা এখন ফলের জাতগুলোর সম্প্রসারণের কাজ করবো।’
মোঃ হায়দার আলী
রাজশাহী। -

পাইকগাছায় নার্সারীতে জোড় কলম তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছে শ্রমিকরা
ইমদাদুল হক,পাইকগাছা,খুলনা।।
পাইকগাছার নার্সারী গুলিতে চারা উৎপাদনে মালিক ও শ্রমিকরা জোড় কলম তৈরীর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে।তিব্র গরম ও রোদের মধ্যে শ্রমিকরা মাথার উপর ছাতা দিয়ে কাজ করছে। মাতৃগুণ বজায় রাখা, দ্রুত ফলন, রোগ প্রতিরোধে ক্ষমতা বাড়ানো এবং অধিক ফলন পেতে অঙ্গজ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। গাছের চারা তৈরীর পদ্ধতির নাম কলম। এ কলম তৈরীতে রয়েছে নানা নাম ও পদ্ধতি। যেমন, গুটি কলম, শাখা কলম (কাটিং), চোখ কলম বা বাডিং। তবে কলম তৈরীতে গ্রাফটিং বা জোড় কলম, কাটিং বা উপজোড় কলম উল্লেখযোগ্য পদ্ধতি।যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গাছ যৌন কোষ বা তার অঙ্গজ কোষ থেকে নতুন স্বতন্ত্র গাছ সৃষ্টি করে তাকে বংশবিস্তার বলা হয়। যেমন যৌন বংশবিস্তার ও অযৌন বংশবিস্তার। গাছ রোপনের মুল উদ্দেশ্য হলো ভাল, উন্নতমান ও মাতৃগুণ সম্পন্ন ফল পাওয়া। এ কারনে ফল গাছ রোপনের ক্ষেত্রে যৌন পদ্ধতির তুলনায় অযৌন পদ্ধতির চারা/কলম গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ পদ্ধতিতে উৎপাদিত চারা/কলম রোপন করলে মাতৃগুণ সম্পন্ন ফল পাওয়া যায়। গাছে তাড়াতাড়ি ফল ধরে এবং গাছ ছোট হয় বিধায় অল্প জায়গায় অনেক গাছ লাগানো যায়। অযৌন বংশবিস্তার পদ্ধতিগুলোর মধ্যে ব্লেফট গ্রাফটিং বা ফাটল জোর কলম একটি অন্যতম পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে একাধিক ফল গাছে কলম করা যায়। অন্যান্য জোড় কলমগুলোর তুলনায় ফাটল জোড় কলম পদ্ধতিতে কাটা স্থানের দুই পাশ দিয়ে জোড়া লাগে বিধায় জোড়াটি সবল হয় এবং সহজে জোড়া স্থানটি ভাঙ্গা সম্ভবনা থাকে না। তুলনা মুলক ভাবে এ পদ্ধতি অন্যান্য জোড় কলম পদ্ধতিগুলোর তুলনায় সহজ। সফলতার হার বেশি এবং খরচ ও কম পড়ে। এ কলম তৈরী করতে গ্রাফটিং চাকু, ব্লেড, সিকাচার, পলিথিন ক্যাপ, পলিথিন ফিতা, সুতলী, গাছের ডগা বা সায়ন এবং কলম তৈরীতে দক্ষ কারিগর বা মালির প্রয়োজন হয়। মে থেকে জুলাই পর্যন্ত কলম করার উপযুক্ত সময়। কারণ এ সময় বাতাসের আদ্রতা ও গাছের কোষের কার্যকারিতা বেশি থাকে। তাড়াতাড়ি জোড়া লাগে এবং সফলতার হারও বেশি থাকে।
উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ছোট-বড় প্রায় ৫ শতাধিত নার্সারী গড়ে উঠেছে। যার উল্লেখযোগ্য সংখ্যা রয়েছে গদাইপুর গ্রামে। মৌসুম শুরুতে চারা তৈরীর জন্য নার্সারী মালিক ও কর্মচারীরা ব্যস্ত হয়ে ওঠে। জোড় কলম তৈরী করতে গাছের ডালের সঙ্গে গাছের ডাল জোড়া লাগিয়ে জোড় কলম তৈরী করা হয়। তেজপাতার সঙ্গে কাবাবচিনি, আম সঙ্গে আম, ছবেদার সঙ্গে খিরখাজুর, আতা সঙ্গে দেশী আতা জোড় দিয়ে জোড় কলম তৈরী করা হয়। কাঁটা জাতীয় কুল সহ বিভিন্ন ফলের চারা চোখ বসিয়ে বাডিং কলম তৈরী করা হয় এবং ফুল জাতীয় গাছের ডাল কেঁটে সরাসরি মাটিতে পুতে কমল তৈরী করা হয়।
জানাগেছে, উপজেলার বিভিন্ন নার্সারীতে চলতি মৌসুমে আম, পেয়ারা, জামসহ বিভিন্ন ফলের ১০ লাখ ও কুলের প্রায় ১৫ লাখ কলম তৈরী হচ্ছে। গদাইপুর গ্রামের নার্সারী মালিক হাবিবুর রহমান জানান, গত বছর তার নার্সারীতে উৎপাদিত চারা বিক্রি করতে না পারায় ক্ষেতে শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ বছরও তিনি নার্সারীতে চারা উৎপাদনে ব্যস্ত রয়েছে। হিতামপুর গ্রামের রজনীগন্ধা নার্সারীর মালিক সুকনাথ পাল জানান, তার নার্সারীতে দেড় লাখ জোড় কলম তৈরী করা হয়ে গেছে আর ৫০ হাজার তৈরীর কাজ চলছে। গদাইপুর গ্রামের অবস্থিত সততা নার্সারীর মালিক অঞ্জনা রানী পাল জানান তার নার্সারীতে বিভিন্ন জাতের কুলের প্রায় এক লাখ কলম তৈরী করছেন। শ্রমিকের অভাবে কলম তৈরী করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে কলম তৈরীর সময় পার হয়ে গেলে এ মৌসুমের আর কলম তৈরী করা যাবে না। সে কারনে কলম তৈরীতে অধিক পয়সা খরচ হচ্ছে। নার্সারীতে বিভিন্ন জাতের হাইব্রীড জাত কাটিমন আম, মাল্টা, পিয়ারা, সফেদা, জামরুল। তাছাড়া এ সব কলমের মধ্যে থাই পেয়ারা, জামরুল, মালাটা, কদবেল, কমলালেবু, আমসহ বিভিন্ন জাতের কলম রয়েছে।
পাইকগাছা উপজেলা নার্সারী মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অশোক কুমার পাল জানান,বিগত বছর চারা বিক্রি না হওয়ায় ক্ষেতে চারা শুকিয়ে নস্ট হয়েছে। এতে নার্সারী মালিকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সে কারণে এবছর কলম কম হচ্ছে। তাছাড়া কলম তৈরীর শ্রমিক ঠিকমত না পাওয়ায় উচ্চ মূল্যে শ্রমিক নিয়ে কলম তৈরী করতে হচ্ছে। কারণ সময় চলে গেলে এ মৌসুমে আর কলম তৈরী করা যাবে না। গদাইপুর এলাকার তৈরী কলম বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, রংপুর, সিলেট, বরিশাল, কুমিল্লা, রাজশাহী সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হচ্ছে। তবে ঠিকমত বাজার দর না পাওয়ায় নার্সারী মালিকরা আশানারুপ ব্যবসা করতে পারছে না।
নার্সারী ব্যবসায়ীরা জানান, চারা উৎপাদনে সরকারি ভাবে লোনের ব্যবস্থা করলে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে নার্সারী শিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, পাইকগাছার নার্সারী শিল্প খুলনা জেলা শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছে। নার্সারী ব্যবসায়ীরা চারা বিক্রি করার আশানারুপ বাজার ধরতে না পারায় তারা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। নার্সারী ব্যবসা করে মালিক, ব্যবসায়ীরা সাবলম্বী হচ্ছে। তেমনি নার্সারীতে নিয়জিত হাজার হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হচ্ছে। নার্সারীতে উৎপাদিত চারা সবুজ বননায়নে উল্লেখ যোগ্য ভূমিকা রেখে পরিবেশের ভারশাম্য রক্ষা করছে। তেমনি ভাবে দেশের আর্থ-সামাজিক অবদান।
-

পাইকগাছায় লতা আমের রংঙ সফেদার মতন হওয়ায় বিক্রি হচ্ছে না;হতাস চাষীরা
ইমদাদুল হক,পাইকগাছা,খুলনা।।
পাইকগাছায় লতা আম বাদামি ধুসর বর্ণের হয়ে গেছে। লতা আম গাছের সব আম বাদামি ধুসর বর্ণের সফেদার মতন। দেথলে মনে হয় আম গাছে সফেদা ধরেছে। আমের রং ধুসর হওয়ায় আম বিক্রি হচ্ছে না। বাজারে লতা আমের ক্রেতা নেই।
গদাইপুরের বোম্বাই লতা আম অর্থকরী ফসল হিসেবে জনপ্রিয়।তবে এবছর লতা আমে ধুসর বর্ণের হওয়ায আমের কোন ক্রেতা নেই। লতা আমের আর চাহিদা নেই বাজারে ও বিক্রি হচ্ছে না। লতা আমের বাগান মালিক ও ব্যবসাহীরা আম নিয়ে বিপাকে পড়েছে।গাছ থেকে আম পাড়ার খরচ উঠছে না। এর ফলে গাছে আম নষ্ট হচ্ছে।লতা আমের বাগান মালিক গদাইপুরের মোবারক ঢালী বলেন,গাছে সার ঔষধ প্রয়োগ করার পরও লতা আমে ধুসর রঙের হয়েছে। কেউ লতা আম কিনছে না।আম বিক্রি না হওয়ায় অনেক টাকার ক্ষতি হয়েছে।
আম বাদামি ধুসর বর্ণের হওয়া এটা আমের দাদ রোগ বা স্ক্যাব রোগ।আমের স্ক্যাব রোগ হলে কচি আমের গুটি আক্রান্ত হয় ঝড়ে যায় ।আক্রান্ত আমের খোসা বাদামি ধুসর বর্ণের হয়ে যায়, খোসা খসখসে ও কিছুটা ফাটাফাটা মনে হয় ছোট অবস্থায় আক্রান্ত হলে আম ঝরে পড়ে, বড় আমে আক্রমণ থাকলে পুরা আম ধুসর বর্ণে ঢেকে যায়।আমের রং ধুসর হওয়ায় বাজার দর কমে যায়।
পাইকগাছা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো: জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বোম্বাই লতার বাদামি ধুসর বর্ণের হওয়া এটা আমের দাদ রোগ বা স্ক্যাব রোগ। আম গুটি অবস্থায় থাকতে কার্বেন্ডাজিম বা ম্যানকোজেব ২ গ্রাম / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে ১৫ দিন পরপর ৩-৪ বার স্প্রে করলে আমের ধুসর রং থাকবে না আর ফলও ভালো পাওয়া যায়। ফল সংগ্রহ শেষ হলে গাছের মরা ডালপালা, ফলের বোটা, রোগ বা পোকা আক্রান্ত ডাল পালা ও অতিঘন ডাল পালা ছাটাই করে পরিস্কার করে রাখতে হবে।পরিস্কার করার পর একাট ছত্রাক নাশক ও একটি কীটনাশক দ্বারা পুরো গাছ ভালভাবে স্প্রে করতে হবে।
আম বাংলাদেশের সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় এবং উপাদেয় ফল। তাই আমকে ফলের রাজা বলা হয়। বাংলাদেশের প্রায় সব জেলাতেই আম জন্মে। তবে উৎকৃষ্টমানের আম প্রধানত উত্তর পশ্চিমা লের জেলাগুলোতে যেমন-চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, রংপুর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা,খুলনা, সাতক্ষীরা ও যশোর জেলাতে ভালো জন্মে। তবে গদাইপুর এলাকায় লতা আমের ব্যাপক পরিচিতি ছিলো।লতা আম এ অ লে একটি অর্থকরী ফসল হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল।তবে লতা আমের মান নষ্ট হওয়ায় এর চাহিদা ও বিক্রি হচ্ছে না।ইমদাদুল হক,
পাইকগাছা,খুলনা। -

পাইকগাছায় গাছে গাছে রং ছড়াচ্ছে হলুদ পাঁকা খেজুর
ইমদাদুল হক,পাইকগাছা,খুলনা।।
পাইকগাছার পথের পাশে, জমির আইলে, খাল-বিল পাড়ে এবং বাড়ির আনাচেকানাচে নজরে পড়ছে কাঁচা-পাকা হলুদ খেজুর। বলা হয়, বছরে দুই ফলন আসে খেজুর গাছে, শীতকালে মিষ্টি সুস্বাদু রস, আর গরমকালে খেজুর ফল। খেজুর শুষ্ক ও মরু অ লের উদ্ভিদ হওয়ায় গঙ্গার নি¤œ অববাহিকার খেজুর গাছে যথেষ্ট শাঁসযুক্ত উৎকৃষ্ট মানের খেজুর হয় না। তাই এটি খাদ্য হিসেবে খুব একটা ব্যবহার হয় না। তবে এই গাছের রস আকর্ষণীয় ও সু-মিষ্ট।
দেশি খেজুরকে কেউ কেউ বুনো বা জংলি খেজুর নামে ডাকেন। কেননা এটা কেউ চাষ করে না, জঙ্গলের গাছ। দেশি খেজুর এ দেশের একটি অন্যতম প্রাচীন ফল। এ দেশেই উৎপত্তি, এ দেশেই বিস্তার। চৈত্র মাসে ফুল ফোটে। কাঁদিতে পুরুষ ও স্ত্রী ফুল ফোটে। পুরুষ ফুল সাদা ক্ষুদ্রাকার। ফল হয় গ্রীষ্মকালে। ফল প্রায় ডিম্বাকৃতি, হলুদ রঙের, লম্বায় প্রায় ২.৫ সেন্টিমিটার। ভেতরে হালকা বাদামি রঙের একটি বীজ থাকে। বীজের ওপরে পাতলা আবরণের মতো শাঁস থাকে। কাঁচা শাঁস কইষট্যা-নোনতা। কিন্তু পাকলে তা বেশ মিষ্টি হয়। পাকা খেজুরের রঙ লালচে বাদামি থেকে খয়েরি হয়। বীজ দিয়েই খেজুরের বংশবৃদ্ধি হয়।
দেশি খেজুরকে চিনি বা গুড় উৎপাদনকারী ফসল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। খেজুর গাছের প্রধান ব্যবহার রস ও গুড় উৎপাদন করা। তবে এর ফলও খাওয়া যায়। দেশি খেজুুরের ফল খুব নিম্ন মানের হওয়ায় তা ফল হিসেবে অনেকেই খায় না। দেশি খেজুরের ফলের শাঁস পাতলা, বিচি বড়, পাকা ফলের সংরক্ষণ ক্ষমতা খুবই কম। তবু পাকা ফলের সুমিষ্ট গন্ধ ও মিষ্টি স্বাদ অনেককেই আকৃষ্ট করে।পাকা খেজুর গ্রাম বাংলার শিশুদের কাছে খুব প্রিয়।
সরল গোলাকার কান্ড বিশিষ্ট, শাখা প্রশাখা বিহীন, একবীজ পত্রী উদ্ভিদ খেজুর গাছ। গাছ সাধারণত ৪-১৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। রসের জন্য প্রতিবছর কাটা হয়ে বলে গাছগুলো বিশেষ আকৃতি ধারণ করে। গাছের মাথা একগুচ্ছ বড় লম্বাটে পাতা দ্বারা সজ্জিত। প্রতিটি পাতার বোঁটার দুই প্রান্তে লম্বা লম্বা কাঁটা থাকে। পাতার অগ্রভাগ সুচালো। ফল সাধারণত বীজ প্রধান। বীজের উপর পাতলা আবরণের মতো শাঁস থাকে। কাঁচা খেজুর ‘কইস্ট্যা’ লাগলেও পাকা খেজুর বেশ মিষ্টি। আমাদের দেশের খেজুর গাছগুলো ‘দেশী খেজুর, খাজুর কিংবা খেজুর’ গাছ নামে পরিচিত। ইংরেজিতে একে ওয়াইল্ড ডেট পাম বা সুগার ডেট পাম বলা হয়।
সারা বাংলাদেশেই খেজুর গাছ দেখতে পাওয়া যায়। তবে ফরিদপুর, যশোর, খুলনা, কুষ্টিয়া, রাজশাহী ও নাটোর অ লে এ গাছের আধিক্য দেখা যায়। দেশে যে খেজুর গাছ দেখতে পাওয়া যায় তার ফল গ্রামীণ জনপদে বেশ জনপ্রিয়। পাইকগাছা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান জানান, গাছির অভাবে খেজুর গাছ থেকে রস আহরণ করা যাচ্ছে না। এ কারণে প্রতি বছর শত শত খেজুর গাছ কেটে ফেলছে। বর্তমানে এ উপজেলায় প্রায় ৫০ হাজার খেজুর গাছ রয়েছে। যা প্রায় সবই ছোট। বড় গাছের সংখ্যা কম। তবে কয়েক বছর আগেও এ উপজেলা লক্ষাধিক খেজুর গাছ ছিল।
পাইকগাছার বিভিন্ন স্থানে খেজুর গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে খেজুর। অনেক খেজুরে রঙ ধরেছে। তা দেখে প্রতিটি মানুষের চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছে। খেজুর পাকতে শুরু করেছে। আর ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে সব খেজুর পেকে যাবে। সড়কের পাশে খেজুর গাছের খেজুরগুলো স্থানীয় ছেলে-মেয়েরা পেড়ে খেতেও শুরু করেছে। অনেকেই পাকা খেজুর বাজারে বিক্রি করছে। বিশ টাকা কেজি দরে খেজুর বিক্রি হচ্ছে। তবে মৌসুমী ফলের ভিড়ে দেশী খেজুরের কদর খুবই কম বাজারে।
খেজুর গাছ দুরে্যাগ প্রতিরোধী উদ্ভিদ, প্রতিকূল পরিবেশেও এটি টিকে থাকতে পারে। রাস্তার দু’ধারে, পুকুর পাড় কিংবা ক্ষেতের আইলে এ গাছ বেশী দেখা যায়। পাকা খেজুর দোয়েল, বুলবুলি, শালিক পাখিসহ অন্যান্য পাখিদের খুব প্রিয়। পিঁপড়া ও মৌমাছিরাও এ পাকা খেজুরের স্বাধ নিতে দেখা যায়। -

বানারীপাড়া কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট এলাকায় না থাকার অভিযোগ
এস মিজানুল ইসলাম, বিশেষ সংবাদাতা: বানারীপাড়া কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সংশ্লিস্ট এলাকায় না থাকার অভিযোগ রয়েছে। এজন্য কৃষকরা দারুণ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এ বিষয়ে এলাকার কৃষকরা অভিযোগ করেন, উপজেলার সৈয়দকাঠী উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার দে তিনি বাওয়ালিয়া ব্লকের দায়িত্বে রয়েছেন। সপ্তাহে চার দিন ওই এলাকায় কৃষকদের সাথে কৃষি সম্পর্কিত যোগাযোগ এবং পরামর্শ করার কথা থাকলে ও তিনি কর্মক্ষেত্রে থাকেন না। তবে কয়েকটি কৃষি প্রদর্শনীর জন্য জমি বেশি দেখিয়ে অর্ধেকের সার, বীজ ও কীটনাশক ব্যবহার করে। অতিরিক্ত সার, বীজ ও কীটনাশক এলাকার মধ্যস্বত্যদের মাধ্যমে ভাগ বাটোয়ারা করে করেন।
সৈয়দকাঠীর একই এলাকায় দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন তিনি তার কর্ম এলাকায় থাকেন না। শুধু এলাকায় মনিটরিং থাকলে তখন এলাকায় থাকেন।
উপজেলার ইলুহার ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম তিনি পশ্চিম মলুহার ব্লকের দায়িত্বে কাজ করার কথা থাকলেও তিনি এলাকায় যান না। তিনি উজিরপুরের গুঠিয়ায় ঔষুধ ফার্ম্মেসীর ব্যবসা করেন। তাও অফিস সময়ে। একই ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি নারী কর্মকর্তা তিনি বরিশাল শহরে থাকেন। মাসে দু’এক দিন যখন মনিটরিং পরে সেদিন থাকেন।
উপজেলার ৮ টি ইউনিয়নে ২৪ জন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রয়েছেন। পৌরসভায় রয়েছেন একজন। বিশারকান্দি ইউনিয়নে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার পোস্ট শূন্য রয়ছে। তাদের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে নির্ধারিত অফিস কক্ষ রয়েছে। এর পরও উপস্থিত থাকে না।
কৃষকদের এ অভিযোগ বিষয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ মাহফুজুর রহমান ঢাকায় প্রশিক্ষণে থাকায় যোগাযোগ করা যায়নি। তবে সহকারী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তনয় সিং জানান, কৃষকদের অভিযোগ সম্পূর্ণ সঠিক নয়। আমার পরিদর্শনে তাদেরকে এলাকায় পাওয়া যায়। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামকে ইতিপূর্বে সতর্ক করা হয়েছে। অন্যদের বিষয়ে আমরা বিষয়টি দেখব।# -

গোপালগঞ্জে পরীক্ষামুলক আবাদ : কৃষিতে বিপ্লব আনবে প্রিমিয়াম কোয়ালিটির নতুন ব্রি-১০২ ধান
স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ : বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত পুষ্টি সমৃদ্ধ উচ্চ ফলনশীল ব্রি-১০২ জাতের নতুন ধান খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি কৃষিতে বিপ্লব ঘটাব। এরই মধ্যে গোপালগঞ্জে ধানটির পরীক্ষামূলক চাষে মিলেছে সাফল্য। প্রতি শতাংশে এই জাতের ধান এক মন ফলন দিয়েছে। ব্রি ধান-১০২ চাষে কৃষকের গোলা ভরে যাবে। নতুন জাতের এই ধান দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
গোপালগঞ্জের ৫টি প্রদর্শনী প্লটে এই জাতের ধান হেক্টরে ৮.১০ থেকে ৯.৫ টন পর্যন্ত ফলন দিয়েছে। সেই হিসাবে শতাংশে ফলন দিয়েছে প্রায় এক মন বা তারও বেশি। ব্রি ধান-২৯ এর বিকল্প হিসেবে এই ধানের আবাদ করা যায়। নতুন এই জাতের ধানে প্রচলিত জাতের ধানের মতো রোগবালাই নেই। লম্বা, চিকন প্রিমিয়াম কোয়ালিটির এই ধানের ভাত ঝরঝরে এবং খেতে সুস্বাদু। স্বল্প খরচে ধানের বাম্পার ফলন পেয়ে কৃষক লাভবান হয়েছেন ।
ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান ও উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, ২০২২ সালে বীজ বোর্ড এই বীজধান ছাড় করে। এই বছর বোরো মৌসুমে গোপালগঞ্জের ৫টি প্রদর্শণী প্লটে প্রথম বারের মতো এই ধানের আবাদ করেন কৃষক। চিকন ধানের জাতের মধ্যে এই জাতই সর্বোচ্চ ফলন দিয়েছে। চিকন ধানে এটি নতুন আশা জাগিয়েছে। প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ধান বাজারে অনেক বেশি দামে বিক্রি হয়। এটি আমাদের কৃষি ও কৃষকরে জন্য সু-সংবাদ। এই জাতের ধান এসডিজি অর্জণে সহায়তা করবে। এই ধানের চাষ ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশ ধানে আরো বেশি সমৃদ্ধ হবে। কৃষকের আয় বড়িয়ে দেবে এই জাতের ধান।
ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সৃজন চন্দ্র দাস বলেন, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত একটি ক্লাইমেট স্মার্ট জাত ব্রি ধান-১০২। বোরো মৌসুমের এই ধানটি জিংক সমৃদ্ধ। কারণ মাছে-ভাতে বাঙ্গালীর ধানেই সমৃদ্ধি। এই সমৃদ্ধি নিশ্চিত করবে ব্রি ধান-১০২। এটি আমাদের প্রত্যাশা।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক মুহিব শেখ (৫০) বলেন, লম্বা ও চিকন জাতের ব্রি ধান-১০২ আমার প্রদর্শনী প্লটে সবচেয়ে বেশি ফলন দিয়েছে। আমি জীবনে চিকন ধানে এত বেশি ফলন দেখিনি। এই ধানে রোগ বালাই নেই বললেই চলে। আমার জমিতে শুধু ধান ছাড়া আর কিছুই দেখা যায়া নি। এমন ধান কৃষক, পখচারী সহ সবাইকে মুগ্ধ করেছে। অনেক কৃষকই এই ধান দেখে ভবিষ্যতে চাষাবাদের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তারা আমরা কাছে এই ধানের বীজ চাইছেন। এই ধান লম্বা ও চিকন। তাই বাজারে মোটা ধানের তুলনা মনে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা বেশি দাম পাওয়া যাবে। এই ধান চাষ করে গোলা ভরেব। অধিক ফলন পেয়ে আমরা লাভবান হতে পারব। এই ধান আমাদের জন্য নতুন দিশা হয়ে এসেছে।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, ‘প্রতি বছর আমাদের জনসংখ্যার সঙ্গে ২০-২২ লাখ লোক যোগ হচ্ছে। ১৭ কোটি জনসংখ্যার এ দেশে খাবারের নিশ্চয়তা দিতে হলে অবশ্যই ব্রি উদ্ভাবিত নতুন জাতের উফশী ধানগুলো চাষ করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। কেননা ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত নতুন জাতগুলোর ফলন আগের পুরনো জাত ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯-এর চেয়ে অনেক বেশি। এগুলো যদি ভালো পরিচর্যা করা যায়, তাহলে আরও বেশি ফলন পাওয়া সম্ভব।
তিনি আরো বলেন, কাজেই এখন পুরনো জাত বাদ দিয়ে নতুন জাতের ধান ব্রি-৮৯, ব্রি-৯২, বঙ্গবন্ধু-১০০ এবং ব্রি-১০২ চাষ করতে হবে। উপরন্তু বঙ্গবন্ধু-১০০ এবং ব্রি-১০২ চিকন, উচ্চজিংকসমৃদ্ধ, জিরা টাইপের, যা আমাদের পুষ্টির চাহিদাও পূরণ করবে। এগুলো প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ধান হওয়ায় বাজারমূল্যও অন্য ধানের তুলনায় বেশি।
গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুল কাদের সরদার বলেন, বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ ও উদ্বৃত্ত। কিন্তু এখনো দেশের বিপুল জনগোষ্ঠীর পুষ্টি চাহিদা এখনও পূরণ করা সম্ভব হয়নি। ফলে সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয় উচ্চফলনশীল (উফশী) জাতের পাশাপাশি পুষ্টিসমৃদ্ধ ধান উৎপাদনে বিশেষ নজর দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশর মানুষ ভাত খেতে অভ্যস্থ। তাই ভাতের মধ্যে পুষ্টি গুন থাকলে সহজেই মানুষ পুষ্টি পাবে। ব্রি উদ্বাবিত জিংক সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধু ধান-১০০ ও ব্রিধান-১০২ জাতের ধানের চাষাদ আমরা সম্প্রসারণ করবো। এতে একদিকে যেমন কৃষক অধিক ফলন পেয়ে লাভবান হবেন,তেমনি দেশের সাধারণ মানুষের পুষ্টির ঘাটতি পুরণ করবে এই ধান।এই ধান উদ্ভাবনে সরকারের উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। #
-

উচ্চ ফলনশীল মিষ্টি আলু চাষে চরাঞ্চলের কৃষকের মুখে হাসি
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃপুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ও উচ্চ ফলনশীল মুড়াসাকি ও ওকিনামা জাতের মিষ্টি আলু লাভের আশায় চাষ করেছেন চরাঞ্চলের কৃষকরা। অল্প খরচে ও কম পরিচর্যায় বেশি ফলন এবং অধিক লাভ হওয়ায় মিষ্টি আলু চাষে আগ্রহী বেশি এ অঞ্চলের কৃষকদের। ফলন ভালো হওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকদের মুখে।
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা জগদল নাগর নদীর পতিত বালুর চরে মিষ্টি আলু চাষ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন কৃষক হাসান আলী।
কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সার্বিক সহায়তায় কৃষকরা জমিতে মুড়াসাকি ও ওকিনামা জাতের মিষ্টি আলু চাষ করেন। কৃষক হাসান আলীর জমিতে যে আলু বসেছে তার মধ্যে কোন কোন আলুর ওজন ৩ থেকে ৪ কেজি। উৎপাদিত এতো বড় আকারের মিষ্টি আলু দেখতে দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই ভিড় করছেন, নিচ্ছেন পরামর্শ।
সরেজমিনে গিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে মিষ্টি আলু চাষের ভালো ফলনের চিত্র দেখা যায়।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় মোট ৫ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে মিষ্টি আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ায় নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে।
ধর্মগড় এলাকার কৃষক জমির উদ্দীন জানান, চরের বালু মাটিতে এত সুন্দর ফসল হবে ভাবতেও পারিনি। এত বড় মিষ্টি আলু জীবনেও দেখিনি। দেখে খুব ভালো লাগছে। যত্ন করলে যে রত্ন পাওয়া যায় হাসান আলী তার উদাহরণ।
কৃষক হাসান আলী জানান, প্রথমে যখন শুরু করি হতাশা কাজ করছিল। এমন ফলনে আমি সত্যিই আনন্দিত। প্রথম বারেই এত সাফল্য পাব ভাবতে পারিনি। এ যাবৎ ৫০ হাজার টাকার মিষ্টি আলু বিক্রি করেছি জমিতে আরো তিনশত মনের উপরে আলু রয়েছে যার বাজার দর ৩ লক্ষ টাকার বেশি বিক্রি হবে বলে আশা করছি। তবে পানির সেচ বেশি দিতে হয়েছে কারণ চরের জমি মানেই বালু। আশা রাখি এবারও মিষ্টি আলু চাষে লাভবান হয়ে লাভের টাকায় কিছু একটা করবো।
একই এলাকার দেলদার হোসেন বলেন, আমাদের এলাকা চরাঞ্চল হওয়ায় এখানে অনান্য ফসলের চেয়ে মিষ্টি আলু চাষ করলে ফলন বেশি হয়। মিষ্টি আলু চাষে পরিশ্রম কম ও লাভ বেশি। ফলন ভালো হওয়ায় আশা রাখি এবারও লাভবান হবো। মিষ্টি আলু চাষে তেমন রোগবালাই নেই। এতে লেদা পোকা নামের এক ধরনের পোকার আক্রমণ হয়, যা থেকে পরিত্রাণের জন্য অনুমোদিত কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, কৃষক হাসান আলী ৩ থেকে ৪ কেজি ওজনের মিষ্টি আলু উৎপাদন করে উপজেলায় তাক লাগিয়ে দিয়েছে। বাজারে এ বিশেষ পুষ্টি গুন সম্পন্ন মিষ্টি আলুর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে । আশা করছি অন্য কৃষকেরা ও তার এ চাষ দেখে উদ্বুদ্ধ হবেন।
তিনি আরও বলেন, ভালো ফলন পেতে হলে আগাছা পরিষ্কার, সুষম সারের ব্যবহার ও প্রয়োজনীয় সেচ দিতে হয়। সাধারণত বেলে-দোঁ-আশ মাটিতে মিষ্টি আলুর চাষ ভালো হয়। বীজ রোপণের ১৫০ থেকে ১৬০ দিন পর মিষ্টি আলুর ফলন ঘরে তোলার উপযোগী হয়। প্রতি শতকে ৬০০ থেকে সাড়ে ছয়শ আলুর কাটিং ব্যবহার করার প্রয়োজন হয়। এবার জেলায় মিষ্টি আলুর ফলন ভালো হওয়ায় লাভবান হবেন কৃষকরা।
গৌতম চন্দ্র বর্মন
ঠাকুরগাঁও -

রাজশাহীর তানোরে অঞ্চলে বোরো কাটা-মাড়াই শুরু
আলিফ হোসেন,তানোরঃ
রাজশাহীর তানোরসহ বরেন্দ্র অঞ্চলে বোরো ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। কৃষি বিভাগ বলছে রাজশাহী অঞ্চলে বোরো ধান আবাদের যে লক্ষ্য মাত্রানির্ধারণ করা হয়েছিলো তা ছাড়িয়ে গেছে এবং ফলনও বেশ ভালো হচ্ছে। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সুত্রে জানা গেছে, রাজশাহী জেলায় চলতি মৌসুমে বোরো চাষাআবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো ৬৫ হাজার ৩০০ হেক্টর। কিন্ত্ত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে ৬৮ হাজার ৬০০ হেক্টর। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩০০ হেক্টর বেশী। রাজশাহীর তানোরে চলতি মৌসুমে বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১২ হাজার ৪৫০ হেক্টর এবং ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রায় ৭০ হাজার মেট্রিকটন।কিন্ত্ত লক্ষ্যমাত্রা থেকে বেশী জমিতে বোরো চাষ হয়েছে।বিগত প্রায় ১০ বছরের মধ্যে বোরোর এমন ফলন হয়নি। গোদাগাড়ী উপজেলায় চলতি মৌসুমে বোরো দের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছিলো ১৬ হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে। কিন্ত্ত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গিয়ে আবাদ হয়েছে ১৬ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৪০ হেক্টর বেশী। বোরো চাষি কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন আশা করা যাচ্ছে বেশ ভালই হবে। তবে ঈদের আগের তাপদাহের কারণে জমিতে বেশী পরিমাণ সেচ দিতে হয়েছে। এতে খরচ কিছুটা বেশী হয়েছে গভীর নলকুপ গুলোতে পানি কম উঠায় কৃষকদের দিনরাত জেগে পানি দিতে হচ্ছে। গোদাগাড়ী উপজেলার গোগ্রাম, রিশিকুল ইউনিয়ন(ইউপি) ও কাঁকনহাট পৌরসভার বেশ কিছু এলাকায় ইদ পরবর্তী সময়ে শিলা বৃষ্টিতে আম, লিচু ও ধানের ফলন কমে যাওয়ায় আশঙ্কা প্রকাশ করছেন কৃষকরা। অপরদিকে সব ধরণের সারের দাম বস্তাপ্রতি ২৫০ টাকা বেড়ে যাওয়ায় ধানের আবাদের খরচ বেড়েছে ধান চাষে এবার কৃষকরা তেমন লাভবান হবেন না বলে জানান।এছাড়াও এবার ধানের যে দাম তা নিয়েও খুশি নন কৃষকরা। তানোর পৌর এলাকার কৃষক আনারুল ইসলাম বলেন, এবার তিনি ৮ বিঘা জমিতে ব্রি-২৮ ও জিরা শাইল জাতের ধান আবাদ করেছেন। বিঘাপ্রতি ৭-৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় ধানের ফলন বেশ ভালই হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আশা করছি বিঘাপ্রতি ধানের ফলন ২০-২২ মণ হবে। তবে ধানের যে দাম, তা থাকলে তেমন ভাবে লাভবান হবেন না বলে জানান। গোদাগাড়ী উপজেলার গোগ্রাম
ইউনিয়নের (ইউপি) কৃষক আদিল হোসেন বলেন, বোরো ধানের ফলন বেশ ভালই হবেই বলে আশায় ছিলাম কিন্তু ঈদের পরে যে শিলাবৃষ্টি হলো তাতে এই ইউনিয়নের, ধাতমা, বরশিপাড়া, বলিয়াডাইংসহ বেশ কিছু এলাকায় শিলা বৃষ্টিতে ধানের ক্ষতি হয়েছে। এতে ধানের ফলন কমে যাবে। তবে বিঘাপ্রতি এবার ধানের ফলন হচ্ছে ১৮ থেকে ২২ মণ। মোহনপুর উপজেলার ঘাষিগ্রাম
ইউনিয়নের (ইউপি) কৃষক আব্দুল কাদের জানান, ব্রি-৮৮ জাতের ধান ৭ বিঘা জমিতে লাগিয়েছেন। বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে ৮ থেকে সাড়ে ৯ হাজার টাকা। প্রতিবিঘায় ধানের ফলন হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ মনের মধ্যে। তবে ধানের যে বর্তমান বাজার মূল্য মণ প্রতি সাড়ে ১১শ’ থেকে ১২শ’ টাকা। এই মূল্য নিয়ে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আমন ধানের দাম ১৩শ’ টাকা মণ আমরা পেয়েছি। বোরো ধানের আবাদে খরচ বেশী এর দাম ১২শ’ টাকা মণ যদি হয় তাহলে আমাদের চলবে না। এছাড়াও হঠাৎ করে সারসহ কৃষি উপকরণের দাম বৃদ্ধিতে আগামী আবাদে খরচ বেড়ে যাবে এবং দাম কম পেলে কৃষক ধান চাষে আগ্রহ হারাবে।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ এপ্রিল গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের (ইউপি) কদমশহর এলাকায় বোরো ধানের কাটা-মাড়াইয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোজদার হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন সোহেল ও কৃষি কর্মকর্তা মরিয়ম আহম্মেদপ্রমুখ। এবিষয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মরিয়ম আহমেদ বলেন, ইতোমধ্যে গোদাগাড়ীতে বোরো ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ শুরু হয়েগেছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। ধান কাটার আগের মুহূর্তে ধানের জমিতে সেচের জন্য কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে। প্রচন্ড তাপদাহের কারণে জমিতে পানি বেশী লেগেছে। গভীর নলকুপগুলোতে পানি কম উঠায় কৃষকরা সমস্যায় পড়ে। তবে তিনি বলেন, ধানের ফলন বেশ ভালই হয়েছে। আশা করা যায় কৃষকরা যথাসময়ে তাদের ফসল ঘরে তুলতে পারবেন।# -

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে ধান কাটা-মাড়াই শুরু, কৃষক ও কৃষি শ্রমিকগণ ব্যস্ত সময় পার করছেন
মোঃ হায়দার আলী, গোদাগাড়ী, রাজশাহী থেকেঃ শস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা। এই উপজেলায় চলতি মৌসুমে আগাম ইরি-বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। একদিকে তাপদাহ অন্যদিকে অতিরিক্ত গরমে কৃষকদের কষ্ট হলেও ধান কেটে মাড়াই কাজ করছেন তারা। পাশাপাশি বসে নেই কৃষাণীরাও। তারাও মনের আনন্দে ধান শুকিয়ে কুঠি, গোলায় তোলার কাজে সহযোগিতা করছেন। আগাম বোরো ধান কাটা শুরু হলেও আগামী সপ্তাহে পুরো দমে ধান কাটা শুরু হবে বলে জানান কৃষকরা।
চলতি মৌসুমে এ উপজেলার কৃষকরা রোদ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে হাল চাষ দিয়ে বোরো ধান আবাদ করেন। বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং কারণে কৃষকরা জমিতে সঠিক সময় পর্যাপ্ত পানি দিতে পারে নি। তবে কৃষি অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে থেকে কৃষকদের সব রকম পরামর্শ প্রদান, পর্যাপ্ত সার পাওয়ায় এবার কোনো কিছুতেই কৃষকদের বেগ পেতে হয়নি।
তবে শুরুতেই কালবৈশাখী হানা, দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট। ধান কাটা ও মাড়াইয়ের শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানাচ্ছেন চাষিরা। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, এখনও ধান কাটা পুরোদমে শুরু হয়নি। তবে মাত্র ঈদ শেষ হলো তাই শ্রমিকেরা কাজ শুরু করেনি। ধান পুরোপুরি কাটা শুরু হলে শ্রমিক সংকট থাকবে না। তবে এ অঞ্চলের কৃষকরা ঝড়ো হাওয়া ও শিলা বৃষ্টিতে ধানের ক্ষতির আশঙ্কা করছে।
এদিকে গত বুধবার কাঁকনহাট, চব্বিশনগর, মান্ডইলসহ কয়েকটি এলাকায় ঝড়ো হাওয়া ও শিলা বৃষ্টিতে পাঁকা ধান, আম, সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ওই এলাকার কৃষকরা।এছাড়াও ঈদের দুই দিন পরে গোদাগাড়ীর ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি, আবার আদারপাড়া, ধাতমা, বরশিপাড়া, বলিয়াডাইং, মধুমাঠসহ বেশ কিছু এলাকায় শিলা বৃষ্টিতে এ অঞ্চলে মাঠে পাঁকা ধানের ক্ষতি হয়েছে বলে কৃষকরা জানিয়েছে।
গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, উপজেলায় এ বছর ১৬ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। কিছু কিছু জমির ধান কাটা শুরু হয়েছে এক সপ্তাহ ধরেই। গড়ে ফলন হচ্ছে বিঘা প্রতি ২২ থেকে ২৩ মণ। এখন পর্যন্ত প্রায় ২০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি অফিস।
ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিতে পাঁকা ধানের ক্ষতির কথা কৃষকরা জানালেও কৃষি অফিস বলছে ধানের ক্ষতি হয়নি। গভীর নলকুপ থেকে ঠিকমত পানি পাচ্ছে না কৃষকরা। ডিপটিউবল গুলি পানি কম উঠায় সেচচার্জ বৃদ্ধি পেয়েছে, যে সকল জমিতে ধানের নরম দানা রয়েছে সেই জমিতে বৃষ্টির পানিতে বেশ উপকার হয়েছে।গোদাগাড়ী উপজেলার কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই বোরো মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ধানের ফলন আশা করা যাচ্ছে বেশ ভালই হবে। তবে তাপদাহের কারণে জমিতে বেশী পরিমাণ সেচ দিতে হয়েছে। একদিন সেচ দিলে ৭/১২ দিন পর আবার জমিতে সেচ দিতে পেরেছে কৃষকগন, পানি না পেয়ে আবারো বিষ পান করেছেন এক আদিবাসী কৃষক । ধানের জমিতে পানি ধরে রাখতে পারছে না।
গোদাগাড়ী পৌরসভার কৃষক আলহাজ্ব আব্দুল মাতিন বলেন, ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিতে আমার ক্ষেতের পাঁকা ধানের কিছু ঝড়ে গেছে ও ধান গাছ মাটিতে পড়ে গেছে। ধান কাটতে সময় লাগছে ৯ বিঘা জমির মধ্যে ৪ বিঘা জমির ধান কাটা হয়েছে। দ্রুত ধান উঠানে তুলতে না পারলে ক্ষেতের ধান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ভাজনপুর এলাকার কৃষক দুলুদেব বলেন, কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টি নিয়ে আতঙ্কে আছি, ধান কাটা ও মাড়াই না হওয়া পর্যন্ত শান্তি নেই।তবে গোদাগাড়ীর কয়েকজন চাষি জানিয়েছেন, শ্রমিক সংকট কিছুটা হলেও যদি ঝড়ো হাওয়া ও শিলা বৃষ্টি হয় তাহলে পাঁকা ধানের ব্যাপক ক্ষতি হবে।
এ অঞ্চলে ধান লাগানো থেকে কাটা-মাড়াইয়ের বেশিরভাগ শ্রমিকই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শ্রমিকরা এখন ধান লাগানো থেকে কাটা-মাড়াই ছেড়ে দিয়ে অন্য কাজের সন্ধানে ছুটছে। কারন হিসাবে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শ্রমিকরা বলছে ধান লাগানো থেকে কাটা-মাড়াইয়ে যে মজুরি পাওয়া যায় তার চাইতে অন্য কাজে বেশী মজুরি পাওয়া যাচ্ছে।গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার মরিয়ম আহমেদ বলেন, ইতোমধ্যে গোদাগাড়ীতে বোরো ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ শুরু হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ২০ভাগ ধান কাটা হয়েছে। এবার ধানে কোন প্রকার রোগ ও পোকামাকড় না থাকায় এবার কৃষকরা ধানের আশানারুপ ফলন পাচ্ছে। সাথে দামও ভাল পাচ্ছে। আশা করা যায় কৃষকরা যথাসময়ে তাদের ফলস ঘরে তুলতে পারবে।
মোঃ হায়দার আলী
গোদাগাড়ী, রাজশাহী।