Category: কৃষি

  • নড়াইলের চাষীরা চলতি মৌসুমে পাট চাষ করে লোকসান গুনতে হচ্ছে

    নড়াইলের চাষীরা চলতি মৌসুমে পাট চাষ করে লোকসান গুনতে হচ্ছে

    উজ্জ্বল রায় জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে:
    চলতি মৌসুমে পাটের চাষ করে লোকসানের মুখে পড়েছে চাষীরা। বাজারে পাটের যে দাম তাতে লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের। গত দুই মৌসুমে পাটের ভালো দাম পেলেও, এবার দাম না পেয়ে দুশ্চিন্তায় পাট চাষীরা। পাট বিক্রি করে খরচের টাকা উঠছে না। তাই পাটের দাম বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন চাষীরা। উজ্জ্বল রায় জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে জানান,
    পাট চাষীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পাট চাষে গত বছরের তুলনায় এবার খরচ বেড়েছে। মজুরি ব্যায়, সার, কীটনাশক ও বীজসহ চাষাবাদের খরচ বেড়েছে। সব মিলিয়ে প্রতি বিঘা পাটের উৎপাদন খরচ প্রায় ১৪-১৬ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় পাট উৎপাদন হচ্ছে ৬ থেকে ৭ মণ। এক মণ পাট বিক্রি হচ্ছে ১৭০০ থেকে ১৯০০ টাকায়। এতে প্রতি বিঘা পাট চাষে লোকসান হচ্ছে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা।
    বাজারে পাটের দাম পড়তির দিকে, গত বছর এ সময় পাটের দাম ছিল শ্রেনী ভেদে ২ হাজার ৪শ থেকে ৩ হাজার টাকা মণ। এক বছরের ব্যবধানে পাটের দাম প্রত মণে প্রায় এক হাজার টাকা কমেছে। এতে লোকসানে পড়েছেন চাষীরা। উজ্জ্বল রায় জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে জানান, জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় মোট ২৩ হাজার ৬৪৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে; যার বিপরীতে দুই লাখ ৭০ হাজার ১৪০ বেলপাট উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
    লোহাগড়া উপজেলার মিটাপুর গ্রামের বাবু নামের নামের এক পাট চাষী বলেন, আমার এক বিঘা জমিতে পাটের বীজ, সার, কীটনাশক, মজুরির ব্যায়, লিজ খরচ ও পুকুর ভাড়া দিয়ে মোট খরচ হয়েছে প্রায় ১৬ হাজার টাকা। পাট উৎপাদন হয়েছে ৬ মণ। ১৭০০ টাকা দরে ৬ মণ পাট বিক্রি করে ১০ হাজার ২০০ টাকা হয়েছে। আমার ৬ হাজার টাকা লোকসান। গত বছরের তুলনায় পাটের দাম অর্ধেকে নেমে এসেছে। আমার মতো সকল পাট চাষীর লোকসান হচ্ছে। পাটের দাম বৃদ্ধির দাবি জানাচ্ছি। এসম তিনি আক্ষেপ করে বলেন, যে ফসলে লোকসান সেই ফসল উৎপাদন বন্ধ করে দিবে কৃষক।
    সদর উপজেলার ভবানিপুর কয়েকজন পাট চাষী বলেন, পাট চাষ করে আমাদের পোষাচ্ছে না। পাটের দাম গত মৌসুমের অর্ধেক। সকল পাট চাষীর লোকসান হচ্ছে। বাজারে ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকা মণ পাট বিক্রি হচ্ছে। এবার পাটের চাহিদাও কম। ব্যবসায়ীরা পাটের প্রতি তেমন আগ্রহী না। পাট চাষিদের প্রতি সরকার নজর দিক, দাম বৃদ্ধি করে দিক। লোকসানের ঝুঁকি নিয়ে আগামীতে আমরা পাট চাষ করতে পারবোনা।
    পাট ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম বলেন, পাট চাষী ও ব্যবসায়ীরা উভয়েই বিপাকে পড়েছে। কৃষকদের লোকসান হচ্ছে, খরচের টাকাও তুলতে পারছে না। গত বছরের চেয়ে দাম এ বছর প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। মিল মালিকরা পাটের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছো না।
    সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান জানান, নড়াইলে প্রধানত ভারতীয় জে আর ও ৫২৮ জাতের পাটের আবাদ হয়। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বি জে আর আই তোসা পাট ৮ জাতের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। অনুকূল আবহাওয়ার পাশাপাশি যথাযথ পরিচর্যা ও অন্যান্য পারিপার্শ্বিকতায় এবার পাটের ভালো ফলনও হয়েছে। ফসলের উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আধুনিক নানা চাষাবাদ পদ্ধতি ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এছাড়া পাট চাষ সম্প্রসারণে উৎপাদন খরচের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বাজার দর নিশ্চিত জরুরি। উজ্জ্বল রায় জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে।

  • নড়াইলে অসময়ে তরমুজ চাষ করে সফল ভালো দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা

    নড়াইলে অসময়ে তরমুজ চাষ করে সফল ভালো দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা

    উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে:
    নড়াইলে অসময়ে তরমুজ চাষে সফল হয়েছেন। নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার চাষিরা। উৎপাদন খরচ কম লাগায় ভালো দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। যার ফলে অনেক চাষিরা তরমুজ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে জানান,
    কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে কালিয়া উপজেলায় ৭ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে। ফলন হয়েছে হেক্টর প্রতি ১৫ টন।
    তরমুজ চাষি অধ্যাপক শেখ কামাল হোসেন বলেন, উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ নিয়ে তরমুজ চাষ শুরু করেছি। গত বছর গাছবাড়িয়া বিলের ৭ একর মৎস্য ঘেরের পাড়ে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে ২০০টি গাছ রোপণ করে মাত্র ১৫ হাজার খরচ করে ১ লাখ টাকা বিক্রি করি।
    তিনি আরও বলেন, চলতি মৌসুমে ৭ একর মৎস্য ঘেরের পাড়ে ১ বিঘার মতো জমিতে তরমুজ আবাদ করেছি। এরপর ৩৫ দিনের মাথায় ফুল ও ফল আসে এবং ৭০ দিনের মাথায় প্রথমবার ফল সংগ্রহ শুরু করি। তরমুজ আবাদে মোট খরচ হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। আর এ পর্যন্ত বিক্রি করেছেন ২ লাখের মতো। তবে এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আরও লক্ষাধিক টাকা লাভ হতে পারে বলে আশা করছি।
    তরমুজ চাষি কাউন্সিলর প্রদীপ কুমার বর্মণ বলেন, জমি প্রস্তুত, চারা লাগানো, মাচা তৈরি করা ও পরিচর্যাসহ তার খরচ হচ্ছে আনুমানিক ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা। ৩৫ দিনের মাথায় ফল আসে ৬০ দিনে সংগ্রহ করা হয়। ২টি করে ৪৮ হাজার তরমুজ ফলন হবে। প্রতিটি চারায় দুটি করে তরমুজ হয়। সে হিসেবে বাগানে ৪৮ হাজার তরমুজের ফলন হওয়ার প্রত্যাশা করছি।
    কালিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবির কুমার বিশ্বাস বলেন, তরমুজ এখন আর মৌসুমি ফল নয়। সারাবছরই তা চাষ করা যায়। বীজ বপনের ৪০ থেকে ৫০ দিনের মাথায় ফুল আসে, আর ফুল থেকে পরিপুষ্ট তরমুজ হতে সময় লাগে ৭০ থেকে ৮০ দিন। মোট ৮০ থেকে ৯০ দিনের জীবনকাল। বাইরে অংশ কালো ও ভেতরে অংশ টকটকে লাল। ব্লাক বেবি জাতের এ তরমুজ ওজনে প্রায় ৩ থেকে ৪ কেজি হয়ে থাকে।

    উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল। থেকে

  • পাথরঘাটায়  ১৭শ ৯০ শিক্ষার্থী পেল ফলজ ও বনজ গাছের চারা

    পাথরঘাটায় ১৭শ ৯০ শিক্ষার্থী পেল ফলজ ও বনজ গাছের চারা

    পাথরঘাটা (বরগুন)প্রতিনিধি ,
    বরগুনার পাথরঘাটায় ১০ সেপ্টেম্বর রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের ৫নং রুহিতা বাজারে রুহিতা মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন সেল্টাররের নিচতলায় ফলজ ও বনজ চারা গাছ বিতরণ করা হয়।

    পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর অর্থায়নে এবং সংগঠিত গ্রামোন্নায়ন কর্মসূচি (সংগ্রাম) এর বাস্তবায়নে বৈকালীন শিক্ষা সহায়তা কেন্দ্রের ১৭শ ৯০ শিক্ষার্থী পরিবারের মাঝে ১ টি ফলজ ও একটি বনজ গাছ ভিতরণ করা হয়েছে। রবিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে রুহিতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে শিক্ষার্থীদের এ গাছের চারা তুলে দেন সংগ্রাম এর প্রতিষ্ঠাতা চৌধুরী মোহাম্মদ মাছুম।

    সম্মনিত গ্রামোন্নায়ন কর্মসূচি (সংগ্রাম) এর প্রতিষ্ঠাতা চৌধুরী মোহাম্মদ মাছুম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পাথরঘাটা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মাদ মহাসিন কবির। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মোঃ সিদ্দিকুর রহমান, সদর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. রেজাউল করিমসহ সংগ্রামের কর্মকর্তাগণ ও সাংবাদিক এস এম জসিম,মো:জিয়াউল ইসলাম প্রমুখ।

    এ সময় বক্তারা বলেন, গাছ আমাদের ছায়া, অক্সিজেন ও ফল দেয়। গাছ ধ্বংস না করে বেশি করে গাছ লাগাতে হবে। শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। শিশুরা যেনো আগামীতে সুন্দর পৃথিবীতে গড়তে করতে পারে, তাই বেশি করে গাছ লাগাতে হবে। আজ আপনাদের মাঝে চারা গাছ দিচ্ছি। সবুজ পৃথিবীর জন্য সংগ্রাম করতে হবে, যাতে করে সুস্থ ভাবে নিঃস্বাস নিতে পারি।

    অমল তালুকদার ।

  • বাগেরহাটে শসার বাম্পার ফলন ভাল দাম পেয়ে   চাষির মুখে হাসির ঝিলিক

    বাগেরহাটে শসার বাম্পার ফলন ভাল দাম পেয়ে চাষির মুখে হাসির ঝিলিক

    এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট:চলতি মৌসুমী বাগেরহাটে শসার বাম্পার ফলন হয়েছে। ভাল দাম পেয়ে কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। জেলার নয়টি উপজেলায় সবজি ক্ষেতে ও মৎস্য ঘেরের পারে বিপুল পরিমাণ শসার চাষ হয়েছে। প্রতিদিন এই জেলা থেকে শতাধিক ট্রাকে শসা যাচ্ছে দেশের বড় শহর গুলোতে। নিজ বাড়ির সামনে বসে নায্যমূল্যে ব্যবসায়ীদের কাছে শসা বিক্রি করতে পেরে খুশি কৃষকরাও।

    কৃষকরা জানান, শসা একটি স্বল্প সময়ের সবজি। বিজ রোপণের ৩০ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে ফল আসে। ফল আসার পরে ৩৫ থেকে ৪০ দিন পর্যন্ত গাছে ফল দেয়। পরিচর্যা এবং প্রয়োজনীয় সার দিলে এক একর জমি থেকে প্রতিদিন ৬ থেকে ৯ মন পর্যন্ত শসা বিক্রি করা যায়।বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী জেলার বাগেরহাট কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ৯টি উপজেলার চিতলমারী মোল্লাহাট ফকিরহাট মংলা রামপাল বাগহাট কচুয়ায় মোরেলগঞ্জ ও শরনখোলা উপজেলায় শসার বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে এর মধ্যে সব থেকে বেশি শসা উৎপাদন হয় মোরেলগঞ্জ উপজেলায়।এই উপজেলা থেকে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাকে করে শসাসহ বিভিন্ন সবজি যায় দেশের বড়বড় শহরে। এবছর ৯০ হাজার টনের বেশি শসা উৎপাদন হবে এই জেলায়।জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় এই শসা যাচ্ছে কোন প্রকার দালাল ছাড়া সরাসরি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করায় কৃষকরাও লাভবান হচ্ছেন।চিতলমারী উপজেলার উমাজুরি গ্রামের মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এক একর জমিতে শসার চাষ করেছি। গেল দশ দিন থেকে বিক্রি শুরু করেছি। প্রতিদিন ৫ থেকে ৮ মন পর্যন্ত শসা বিক্রি করি। এবার ফলনও যেমন বেশি হয়েছে।দামও মোটামুটি ভাল পাচ্ছি।’

    ১৩ নং নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের গুয়াতলা গ্রামের মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনের ছেলে শসা চাষকারী কৃষক সাব্বির হোসেন সুমন সহ কয়েক জন বলেন, বিভিন্ন সবজির বীজ বপন করেছি। আবহাওয়া অনুকুল থাকায় এবার শসার ফলন খুব ভাল হয়েছে।জেলা কৃষি বিভাগও আমাদের অনেক সহযোগিতা করেছেন। পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে ১৩থেকে ১৫ টাকা কেজি অথবা ৫‘শ থেকে ৬‘শ টাকা মন বিক্রি করছি। এরকম দাম থাকলে এবার আমাদের মোটামুটি ভালই লাভ হবে।

    চিতলমারী উপজেলার অশোকনগর গ্রামের বিশ্বজিত বড়াল বলেন, ‘এবছর ১০ একর জমিতে শসার চাষ করেছি। তিন লাখ টাকা ব্যয় করেছি। বর্তমানে প্রতিদিন একশ মনের উপরে শসা বিক্রি করছি। আমার কৃষিতে ও মাছের ঘেরে নিয়মিত আটজন শ্রমিক কাজ করেন।সব খরচ দিয়ে এবছর শসায় দশ লক্ষাধিক টাকা লাভ হবে বলে মনে করছি ‘

    বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শঙকর কুমার মজুমদার বলেন, ‘বাগেরহাট জেলায় সবজি আবাদের উপর অতিরিক্ত জোর দেওয়া হয়েছে। সরকার সময়মত বীজ, সার ও ঋণ প্রবাহ সচল রেখেছেন। যার ফলে এবছর বিভিন্ন সবজি বিশেষ করে শসার বাম্পার ফলন হয়েছে। এছর বাগেরহাটের কয়েকটি উপজেলায় ৯০ হাজার টন শসার ফলন হবে। আমরাও কৃষকদের সব ধরণের কারিগরি সহযোগিতা ও বাজারজাত করণের পরামর্শ দিয়েছি।যাতে কৃষকরা লাভবান হতে পারে সেজন্য আমাদের সব ধরণের চেষ্টা রয়েছে।

    এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির
    বাগেরহাট সংবাদদাতা

  • লালমনিরহাটে সবুজ রঙের ধানের পাতায় মাঠ জুড়ে শোভা পাচ্ছে

    লালমনিরহাটে সবুজ রঙের ধানের পাতায় মাঠ জুড়ে শোভা পাচ্ছে

    মো.হাসমত উল্লাহ,লালমনিরহাট।।।
    লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলায় অগ্রহায়ণ মাসে পুরোদমে আমন ধান কাটা-মাড়াই শুরু হবার আগে ঝিরিঝিরি বাতাসে দোল খাচ্ছে সবুজ রঙের ধানের পাতায় মাঠে মাঠে। লালমনিরহাটের কৃষকের এখন স্বপ্ন মাঠে মাঠে সোনালী ধানের পাতা ঝিরিঝিরি বাতাসে দোল খাচ্ছে। সোনালী ধানের পাতা ভরে উঠেছে মাঠ। সেই সাথে রঙিন হয়ে উঠছে প্রান্তিক চাষিদের স্বপ্ন মাঠ ঘুড়ে এখন সোনালী স্বপ্নের ছড়াছড়ি। চলতি ভাদ্রমাসে ধান ক্ষেতে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ায় লালমনিরহাটের কৃষকরা ধান ক্ষেতে কীটনাশক ব্যবহার করেছেন। মধ্যবর্তী অগ্রাহয়ণে পুরোদমে ধান কাটা-মাড়াই শুরু করবেন তারা। চলতি মৌসুমে অনুকূল আবহাওয়া থাকায় অন্যান্য বছরের চেয়ে ধরনের আবাদ ভালো হবে বলে আশানুরূপ ফলনের সম্ভাবনাও করছে কৃষকরা।লালমনিরহাট জেলার ৫টি (লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম) উপজেলার ৪৫টি ইউনিয়ন এলাকার মাঠগুলোতে যতদূর চোখ যায়, চারদিকে শুধু সোনালী রঙের ধানের সবুজ পাতার সমারোহ। পুরো মাঠ যেন সবুজ রঙে সেজেছে। মাঠে গেলে বাতাসের দোলে মন-প্রাণ জুড়িয়ে যায়। চলতি মৌসুমে মাঠে অন্য সব বাহারের চেয়ে ধানের সবুজ পাতার বাহার বেশি হয়েছে। আশা করা হচ্ছে এবার ধানের বাম্পার ফলন হবে। লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার সতীরপাড় গ্রামের কৃষক শ্রী হরিপদ রায় হরি বলেন, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ধানের বাম্পার ফলন হবে বলে আশ করছি। কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদা খাতুন,বলেন ভালো বীজে ভালো ফলন হয়। এবং রোগ বালাই কম হয়।ভালো জায়গাতের বীজ বপন করেন। অনুকূল আবহাওয়া থাকায় এবং নিবিড় পরিচর্যাসহ যথা সময়ে জমিতে সার কীটনাশক ব্যবহার করায় এবার লক্ষ মাত্রা পূরন হবে বলে আশা করছি।

    হাসমত উল্লাহ ।

  • বাগেরহাটে  বিপুল উৎসাহে আমন ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত কৃষক

    বাগেরহাটে বিপুল উৎসাহে আমন ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত কৃষক

    এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির,বাগেরহাট সংবাদদাতা: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের বিপুল উৎসাহে আমন ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। কয়েক দিন টানা বৃষ্টি হওয়ায় স্বস্তিতে আমন আবাদ করছেন তারা। এরই মধ্যে মোরেলগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় চারা রোপণের জন্য পুরোদমে কাজ শুরু হয়ে গেছে। বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার ১৬ ইউনিয়নের মাঠে মাঠে রোপা আমন ধান রোপনের ধুম লেগেছে। পূর্ব আকাশে সূর্য উদয় হলেই দল বেঁধে কৃষক ছুটে চলে মাঠের প্রাণে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠে তারা রোপা আমন ধান রোপনের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন, কেউ জমিতে পানি দিচ্ছেন কেউ বীজতলা থেকে চারা তুলছেন, কেউবা চারা রোপন করছেন। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক বীজ তলা তৈরীর কারনে চারার সংকট নেই। ফলে অতিরিক্ত চারা পুরন করতে পারে বন্যা কবলিত এলাকার ঘাটতি। সরজমিন দেখা যায়, কৃষকরা আমন ধানের চারা রোপণে সকাল-সন্ধ্যা ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ জমির আইলে কোদাল দিয়ে কোপাচ্ছেন, কোথাও মাঠ সমান করার জন্য শ্যালোইঞ্জিন চালিত পাওয়ার টিলার দিয়ে চলছে মইয়ের কাজ। কোনো কোনো স্থানে পাওয়ার টিলার ছাড়াও কৃষকরা নিজেই মই টেনে জমি সমান করছেন। আবার কোথাও আমন ধান রোপণের জন্য বীজতলা থেকে তোলা হচ্ছে ধানের চারা। কেউ আবার জৈব সার জমিতে দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। অনেকে তৈরি জমি বৃষ্টির পানি দিয়ে ভিজিয়ে রাখছেন। রোদের গরমে কৃষকদের শরীর থেকে বইছে ঘাম, মাথায় বেঁধে রেখেছেন গামছা। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকরা আমন চাষে অধিক আগ্রহী। শুকিয়ে থাকা খাল, বিল, জলাশয়ে ভরছে পানিতে। তীব্র খরায় শুকিয়ে যাওয়া ফসলের ক্ষেতেও ফিরে এসেছে আর্দ্রতা। নিচু জমিতে জমেছে বৃষ্টির পানি। আর এই সময়টায় রোপা আমন চাষে ব্যস্ত হয়ে কৃষকেরা উঠছেন। জমি প্রস্তুত, চাষাবাদ এবং ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় কাটছে চাষিদের।

    এই অঞ্চলে বর্ষা মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টি পাত হওয়ায় পানি সেচ ছাড়াই এই অঞ্চলের কৃষকরা রোপা আমন ধান চাষ করে থাকেন। এখানকার কৃষকরা জুলাই মাসের শেষে এই রোপা আমন ধানের চাষ করে থাকে। উপজেলার খাউলিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাঠ জুড়ে সবজু ধানের কচি চারায় মাঠ ভরে উঠেছে। উপজেলার নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নে সরোজমিনে দেখা যায়, রোপা আমন ধানের জমি চাষের ক্ষেত্রে আধুনিক যন্ত্রের যুগে প্রয়োজনের তাগিদে পাওয়ার টিলারের পাশা পাশি গরুর লাঙ্গল দিয়ে কিছু পরিমাণে জমি চাষ করছে কৃষক।

    চাষী হাবিবুর রহমান, মোস্তফা, সিরাজ, ইসলাম, রিপন, শফিকুলের সঙ্গে কথা বলে জানা গছে, এ বছর বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই আশানুরূপ বৃষ্টিপাত হয়েছে তাই এই অঞ্চলের প্রায় কৃষকেরা উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে রোপা আমন ধান রোপন করছেন। তারা আরো জানায় পানি সেচ না লাগায় এ অঞ্চলের কৃষক অনেকটা কম খরচেই রোপা আমন ধান চাষ করতে পারছে। চারা বিক্রির ব্যাপারে তারা বলেন, এবছর ধান চারার সংকট নেই। মোরেলগঞ্জউপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, উপজেলা কৃষি বিভাগের নির্দেশনায় আমরা মাঠ পর্যায়ে আমন চারা রোপণে কৃষককে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি। মোরেলগঞ্জসদর ইউনিয়নে এবারে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ১২৫০হেক্টর ধরা হয়েছে।

    মোরেলগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অফিসার আকাশ বৈরাগী জানান, এবছর উপজেলার ১৬ ইউনিয়নে ২৬ হাজার৩৯৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানে চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে।এর মধ্যে রয়েছে উফশী জাতের ৫হাজার৮৫০হেক্টর, হাইব্রিড ১০ হেক্টর ও স্থানীয়২০হাজার ৫৩৫হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ। মূলত জুন-জুলাই মাস আমন ধান রোপণের সময়। এ বছর বৃষ্টিপাতও পিছিয়েছে। আগস্ট এর মাঝামাঝি থেকে কৃষকরা আমনের চারা রোপণ শুরু করেছেন।কৃষি প্রণোদনার আওতায় ধান, গম, ভুট্টা ও সরিষার বীজ এবং সার বিতরণসহ বিভিন্ন প্রদর্শনী দিয়ে কৃষকদের পাশে সব সময় রয়েছে কৃষি বিভাগ। উপজেলাজুড়ে কৃষকরা এখন আমনের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

  • বাগেরহাটে কলার বাম্পার ফলন দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকের মুখে সোনালী হাসি

    বাগেরহাটে কলার বাম্পার ফলন দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকের মুখে সোনালী হাসি

    এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির,বাগেরহাট সংবাদদাতা:বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে কলার বাম্পার ফলন হয়েছে। জমিতে বসেই কলার দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকের মুখে ফুটেছে সোনালী হাসি।কলা চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। অল্প খরচে লাভ বেশি হওয়ায় খুশি চাষিরা। অনেক কৃষকের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পেছনে রয়েছে কলা চাষ। শুধু জৈব সার ব্যবহার করে কলা চাষ করা যায়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমেএ উপজেলায় ১ হাজার ২৯’শ হেক্টর জমিতে কলার চাষ করা হয়েছে।এখানে অনুপম, সাগর, সবরি, চিনিচাম্পা, উন্নত জাতের কাঁচকলা, আনাজিসহ বিভিন্ন প্রজাতির কলা চাষ হচ্ছে। গত মৌসুমে মোরেলগঞ্জ উপজেলায় কলা চাষ হয়েছিল ১ হাজার ২৯’শ হেক্টর জমিতে। উপজেলার চারটি ইউনিয়ন চিংড়াখালী, রামচন্দ্রপুর, বনগ্রাম ও হোগলাপাশায় কলা সুস্বাধু হওয়ায় মোরেলগঞ্জের কলা এখন ব্র্যান্ডে রূপ নিয়েছে। সে কারণে চলতি মৌসুমে কলা আবাদে জমির পরিমান আরো ৭ শত ৫০ হেক্টর বেড়েছে। আগামী মৌসুমে এ চাষ আরো বৃদ্ধি পাবে।কৃষি বিভাগ বলছে, অনুকূল আবহাওয়ায় গাছে ব্যাপক কলা ধরেছে। কলার ভাল ফলন পেতে কলা চাষীরা দিন রাত পরিচর্যা করে যাচ্ছে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে প্রচুরকলা রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হবে বলে আশা করছেন চাষীর সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় উপজেলার বিস্তৃর্ণ জমিতে এবার কলার বা¤পার ফলন হয়েছে। বর্তমানে প্রচলিত ফসল চাষে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান না হওয়ায় তারা এই সব ফসলের বিকল্প হিসেবে বেছে নিয়েছেন অধিক লাভজনক ফসল কলা চাষ। কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে জমিতে বিভিন্ন জাতের কলার চাষ হয়েছে। বিভিন্ন জাতের কলার মধ্যে রয়েছে কুলপাত, সাগর ও সবরি কলা। তরে সিংহভাগ জমিতে চাষ করা হয়েছে সর্বি কলা। ধান, পাট ও আখসহ প্রচলিত অন্যান্য ফসলের তুলনাই কলাচাষে শ্রম ব্যয় হয় কম, বিক্রি করতেও ঝামেলা নেই বাগান থেকেই বিক্রি হয়। অন্যদিকে কলার বাজারে সহজে ধস নামে না। চড়াঞ্চলের এসব জমিতে অন্যকোন ফসল ভাল না হওয়ায় পুষ্টিকর ফল কলার চাষ দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কলাচাষের পাশাপশি এখানকার কৃষকরা সাথী ফসল হিসেবে ওল এবং পটল চাষ করে বাড়তি আয় করছে। একই সময়ে একাধিক ফসল চাষের ফলে কৃষকরা বেশী লাভবান হচ্ছেন । ফলে এখানকার কৃষকরা জমির জন্য তিকর তামাক ও ভুট্টা চাষের প্রতি দিন দিন আগ্রহ হারাচ্ছে।সফল কলা চাষী আব্দুল আজিজ বলেন, অন্যান্য ফসলের চেয়ে কলা চাষে লাভ বেশি এবং খরচ কম। জৈব সার ব্যবহার করার কারণে এখানে ফলন ভালো হয়। এ বছর ১০ বিঘা জমিতে সাগর কলা, অমৃত সাগর, মেহর সাগরসহ বিভিন জাতের চারা রোপণ করেছিলাম। প্রতি বিঘা জমিতে ৩০০-৪০০ চারা রোপণ করা যায়। বছর খানেকের মধ্যেই রোপণকৃত গাছ থেকে কলা পাওয়া যায়। আমার কলাচাষে সফলতা দেখে এলাকার কৃষকরা কলা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। স্বল্প বিনিয়োগে ও কম পরিশ্রমে কলা চাষে অধিক মুনাফা হওয়ায় তিনি এ ফসলকেই বেছে নিয়েছেন। তার কলা চাষের এ সাফল্য দেখে এলাকার অন্যান্য কৃষকরা এখন কলা চাষের দিকে ঝুঁকছেন। কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, কলাচাষের জন্য স্বল্পপুঁজি বিনিয়োগ করে অধিক লাভ হয় এবং একবার কলা গাছ লাগালে সেই খরচেই দুই বছর ফল পাওয়া যায়। এক বিঘা জমিতে আড়াইশ থেকে তিন শত কলার গাছ লাগাতে ব্যয় হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। যা থেকে বছর শেষে আয় হবে প্রায় লাখ টাকা। কলার চাষ করলে কলা বিক্রির পাশাপাশি কলা গাছের চারাও বিক্রি করা যায়। কৃষক হেমায়েত হোসেন বলেন, কলা বিক্রি করতে তাদের কোন সমস্যা হয় না। কারণ হিসাবে তিনি জানান, পাইকারী ব্যবসায়ীরা কলার বাগান থেকেই ন্যায্য মূল্যে কলা ক্রয় করে নিয়ে যায়। কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর থেকে তাদেরকে কলা চাষের উপর প্রশিণ দেওয়া হলে আরো অধিক ুবই লাভ জনক। এই মাটিতে বাংলা কলা, চাঁ¤পা কলা সহ সাগড় কলা বেশি চাষ হয়। আরো জানান, আমার গ্রামের ৫০এরও বেশি রয়েছে একেক পরিবারে ১ থেকে ৩ একর জমিতে কলা চাষ রয়েছে। তবে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলায় কলাসহ উৎপাদিত ফল-ক্রিয়াজাতকরণ ও রক্ষণাবেক্ষণের হিমাগারের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে ব্যবসায়ীদের কাছে তুলনামূলক কম দামে কলা বিক্রি করতে বাধ্য হয়। কলা চাষ করে আনেকে ভাগ্য বদলেছে। বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে জমিতে কলা বাগানের পাশাপাশি মিশ্র ফলের গাছ রয়েছে প্রতিটি বাগানে। কলা ব্যবসায়ী বলেন, কলা ফরমালন ও রাসায়নিক মুক্ত হওয়ায় দেশের বিভিন্ন হাটে এর জনপ্রিয়তা ও চাহিদে বাড়ছে। ছড়াপ্রতি ১ থেকে ৩৫ টাকা লাভ হয়। তবে গাড়িতে করে কলা নেওয়ার পথে অনেক কলার ছড়া নষ্ট হয়ে যায় এজন্যে অনেক সময় বড় অঙ্কের ক্ষতিও গুনতে হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ অঞ্চলের মাটি ও আবাহাওয়া কলা চাষের উপযোগী। অনেক জাতের হলেও বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে মূলত কাঁঠালিকলা,শোবড়ি কলাও চাঁপা কলার উৎপাদন বেশি। দুটি জাতের মধ্যে কাঁঠালিকলা পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। এছাড়া এ জাতের কলাটি বেশি দিন টেকসই থাকে। দ্রুত নষ্ট হয় না। মোরেলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকাশ বৈরাগী জানান আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার কলার বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে কলার দাম বেশি থাকায় এবার কলাচাষিরা লাভের মুখ বেশি দেখছেন।কলা অত্যন্ত পুষ্টিকর হওয়ায় এর ফলন বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফলে কলার চাষ বাড়াতে প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। কলা চাষিদের সকল পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন কৃষি বিভাগ। কৃষি বিভাগের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ মাঠপর্যায়ে কৃষকদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করে যাচ্ছে।##** ছবি সংযুক্ত আছে ** ## **

  • শার্শার উলাশিতে ১২ মাসি কাটিমন আম চাষ করে লাখপতি রাজু

    শার্শার উলাশিতে ১২ মাসি কাটিমন আম চাষ করে লাখপতি রাজু

    আজিজুল ইসলাম : যশোরের শার্শার উলাশী ইউনিয়ন এর সম্মন্ধকাটি গ্রামের একটি বাগানে বারোমাসি কাটিমন জাতের আম চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন রাজু আহমেদ নামের এক যুবক। তিনি উত্তরপাড়ার সিরাজুল ইসলামের ছেলে।

    কৃষি পরিবারের সন্তান হওয়ায় রাজু আহম্মেদ বিগত ১৫ বছর যাবৎ চাষ আবাদের সাথে জড়িত। এই বিশ্বয়ানের যুগে কৃষিতে যুগ উপোযগি চাষের সন্ধানে যোগাযোগ রাখেন স্থানীয় কৃষি অফিসে। যার ফলে গত চার বছর পূর্বে শার্শা কৃষি অফিসের সহওয়াতায় ঘুরতে যান চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবন নগর উপজেলার আবুল কাসেমের বারোমাসি আমের বাগানে। তখন কাসেমের চোখ জুড়ানো আমের বাগান দেখে বারো মাসি আম চাষের সিদ্ধান্ত নেন রাজু। এরপর কাসেমের বাগান থেকে চারা সংগ্রহ করে ৩ বিঘা জমি লিজ নিয়ে তাতে বাগান লাগান রাজু।

    চারা রোপণের দুই বছর বয়স হতেই বাগানে ফল আসতে শুরু করে। চলতি বছরের আগষ্ট হতেই রাজু তার বাগানে আম ভাঙতে শুরু করেন। প্রতি বিঘা জমিতে প্রয় পঁয়ত্রিশ মন আম উৎপাদন হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজু ,প্রতি কেজি আম বাগান হতে বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫৫ টাকা কেজি দরে।বর্তমানে ১ বিঘা জমি হতে রাজুর এক সিজনে আয় ৪০ হাজার টাকা।তিন সিজনে আয় প্রয় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা।দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আম ব্যাবসায়ীরা রাজু’র বাগান থেকে আম কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।কুরিয়ারের মাধ্যমেও রাজু আম ও আমের চারা পাঠাচ্ছেন বিভিন্ন স্থানে। টিভি ও পত্রপত্রিকায় অসময়ে মিষ্টি আমের সংবাদ শুনে দূরদূরান্ত হতে আম বাগান পরিদর্শনে আসছেন দর্শনাথীরা।

    এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি অফিসার দিপক কুমার শাহ্ বলেন অসময়ে আম উৎপাদন একটি ঝুকি পূর্ণ কাজ,তাই আমি প্রতি নিয়ত রাজু আহম্মেদের বাগানের খোজ রাখি,ও পরামর্শ দিচ্ছি। তিনি আরও বলেন রাজু আহম্মেদের মত কৃষক আমাদের গর্ব,যদি কেউ নতুন ফল ও ফসল উৎপাদন করতে চায় আমরা সব সময় তাদের পাশে আছি।

  • বাগেরহাটে ডাবের বাম্পার ফলন, ন্যায্য মূল্য পেয়ে কৃষকের মুখে হাসি

    বাগেরহাটে ডাবের বাম্পার ফলন, ন্যায্য মূল্য পেয়ে কৃষকের মুখে হাসি

    এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির:বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের ডাবের বাম্পার ফলন, ন্যায্য মূল্য পেয়ে কৃষকের মুখে হাসি। প্রতিদিন এ উপজেলার ডাব যাচ্ছে রাজধানী ঢাকা সহ চট্টগ্রাম,রাজশাহী দেশের বেশ কয়েকটি জেলায়। টাকার হিসেবে প্রতিদিন প্রায় লাখ টাকার ডাব পাঠানো হচ্ছে এসব স্থানে। জানা যায়, দেশের বিভিন্ন জেলাতে পাঠানোর জন্য প্রতিদিন মোরেলগঞ্জের অন্তত৩০টি গ্রাম থেকে ডাব সংগ্রহ করা হয়। প্রতিদিন বিকেল হলেই ফেরিঘাটে ফেরি পার হওয়ার জন্য ডাবভর্তি নসিমন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়,নদীর পুর্বপারে কয়েকটি স্পর্ট থেকে যেমন আমতলী, কালিকাবাড়ি,মহেশপুর,পোলরহাট,দৈবজ্ঞহাটি বাজার থেকে এই ডাব ট্রাক বা বাসে করে পাঠিয়ে দেয়া হয় দেশের বিভিন্ন স্হানে, প্রতিদিন প্রায় দুইশ‍‍দর মতো হকার উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মালিকদের কাছ থেকে ডাব সংগ্রহ করেন। পরে তাদের সংগ্রহ করা ডাব নসিমনে করে নির্দিস্ট স্হানে পৌছান।

    মোরেলগঞ্জ পৌরশহরের ফেরিঘাটে ফেরি পার হওয়ার সময় কথা হয় ডাব বিক্রেতা সাইদুল ইসলামের সাথে, তিনি বলেন প্রতিদিন আমরা ডাবের সন্ধানে নসিমন নিয়ে গ্রামের পর গ্রাম ঘুরে বেড়াই উপজেলার প্রায় ৩০টি গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এসব ডাব সংগ্রহ করেন তারা। তারপর আড়তের মাধ্যমে বা নিজেরাই সেই ডাব ট্রাক,বাসের ছাদে করে রাজধানীতে পাঠিয়ে দেই,এই ডাব বিক্রি করেই আমাদের সংসার চলে। হকাররা মালিকদের কাছ থেকে প্রতি পিস ডাব ৩০-৩৫ টাকা দরে কিনে আনেন। ঢাকার বড় বড় পার্টি আমাদের প্রতি পিস ডাবের মূল্য দেওয়া হয় ৫০-৬০ টাকা করে। মোরেলগঞ্জ ফেরিঘাটের ইজারাদার শহিদুল ইসলাম বলেন ,প্রতিদিন সকালে শতাধিক ডাব হকার ছোলমবাড়িয়া ঘাট থেকে ফেরি পার হয়ে বারইখালীর পারে আসেন,আবার বিকেলে ডাবভর্তি নসিমন-করিমন বারইখালী ফেরিঘাটে লম্বা লাইন দেন পার হওয়ার জন্য।

    বছরের চার মাস বাজারে ডাবের ব্যাপক চাহিদা থাকে। তখন দামও ভালো পাওয়া যায়। মোরেলগঞ্জ থেকে প্রতিদিন প্রায় লাখ টাকার ডাব ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে পাঠায়। সব খরচ বাদে প্রতি পিস ডাবে গড়ে প্রায় ১০-২০ টাকার মতো লাভ হচ্ছে। ডা.কামাল হোসেন মুফতি বলেন, ডাবের পানিতে মিনারেল ওয়াটার, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম থাকে, যা হৃৎপিন্ডের কার্যক্রম ঠিক রাখে এবং হৃৎপিন্ডের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
    ডাবের পানিতে অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল কার্যকারিতা থাকায় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ডাবের পানিতে অ্যান্টি-এজিংপ্রপার্টিস থাকে।তিনি আরো বলেন, ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করতে ডাবের পানি অনেক বেশি কার্যকরী। এতে আছে ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ও ভিটামিন সি যা ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণ করে। ডাবে আছে কার্বোহাইড্রেড যা শক্তি বাড়ায়। এবং শরীরে পানি শূন্যতা পূরণ করে। ডাবের পানি খেলে দীর্ঘ সময় পেট ভরা থাকে এবং ক্ষুধার প্রবণতা কমে আসে। ফলে কম খাওয়া হয়। এতে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। ডাবের পানি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়। ডাবের পানিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা আমাদের পাচনতন্ত্রকে সুস্থ রাখে। হজমশক্তি অনেক বাড়িয়ে তোলে। এছাড়া নিয়মিত ডাবের পানি খেলে অ্যাসিডিটির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায় বলে জানান তিনি। মোরেলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকাশ বৈরাগী বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ডাবের ফলন ভালো হওয়ায় ও তীব্র পরিমাণ গরম পড়ায় ডাব কাটা হয়েছে বেশি। তবে ডাবের কারণে নারিকেলের ফলন কম হয়েছে। নারিকেল সমৃদ্ধ এ জেলায় নারিকেল ভিত্তিক শিল্প কারখানা গড়ে উঠলে চাষীরা নায্য দাম পাওয়ার পাশাপাশি বিপুল মানুষের কর্মসস্থান হবে। সে জন্য এ জেলায় নারিকেল ভিত্তিক কারখানা গড়ে তোলার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ডাব উৎপাদনে খরচ অনেক কম। মোরেলগঞ্জে এবার ৬৫০ হেক্টর জমিতে প্রায় সাড়ে ১৫ কোটি ডাব উৎপাদন হয়েছে যার বাজার মুল্য প্রায় ৪২ কোটি টাকা। ডাব উৎপাদনে এ এলাকার অর্থনীতি সমৃদ্ধ হচ্ছে। কর্মসংস্থানও হচ্ছে অনেকের।তিনি বলেন, ভিয়েতানামের নারিকেলের প্রতি আগ্রহের কারণে চাষীরা সে দিকে ঝুঁকছেন। বড় গাছের চেয়ে ছোট গাছের ফলনের প্রতি নজর বেশি তাদের। আমরাও চাহিদামতো সরবারহের চেষ্টা করছি। এছাড়াও নারিকেলের ছোবড়া বেশ চাহিদাসম্পন্ন। তাই গোডাউন, ফ্যাক্টরি গড়ে তোলার বিকল্প নেই।

  • পাটের বাম্পার ফলন হলেও দাম নিয়ে হতাশা পাট চাষিরা

    পাটের বাম্পার ফলন হলেও দাম নিয়ে হতাশা পাট চাষিরা

    রওশন আরা শিলা, নওগাঁ প্রতিনিধিঃ- নওগাঁর আত্রাইয়ে চলতি মৌসুমে পাটের ভালো ফলন হলেও দাম নিয়ে হতাশা পাট চাষিরা। পাট জাগ ও দাম নিয়ে চিন্তার ভাঁজ দেখা দিয়েছে পাট চাষি কৃষকের কপালে। এ ছাড়া শ্রমিক ও পানির অভাবে জাগ দিতে না পারায় অনেক কৃষকের পাট এখনও ক্ষেতেই রয়ে গেছে। কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এক মন পাট ঘরে তুলতে প্রায় দুই হাজার পাঁচ শত টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমান বাজারে দুই হাজার চার শত টাকা দরে পাট বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
    উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ অঞ্চলের কৃষকের প্রধান ফসল পাট। গত দুই বছরে কাঙ্খিত দাম পেয়ে এবার অধিক জমিতে পাট চাষ করেছেন কৃষকেরা। চলতি মৌসুমে আত্রাই উপজেলায় প্রায় ছয় হাজার পাঁচ শত হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। প্রতি বিঘায় ফলন হয়েছে বারো থেকে চৌদ্দ মন পর্যন্ত ফলন। নদী তীরবতী ও বিল অঞ্চলের আশ পাশের কৃষকরা পাট কেটে জাগ দিতে পারলেও উপজেলার বেশি ভাগ কৃষক এখনও পাট কেটে ক্ষেতেই রেখে দিয়েছেন। সাধারনত পাটের মৌসুম শেষ হলে কৃষকরা জমিতে ধান আবাদ করে থাকেন। কিন্তু জাগ দেওয়ার সমস্যা, শ্রমিক সংকট ও বাজারে প্রত্যাশিত দাম না থাকায় অনেকে পাট বিক্রি করতে পারছেন না। ফলে বীজতলা প্রস্তুত থাকলেও চাষিদের অনেকে এখনও ধান রোপন করতে পারেননি। এতে কৃষকদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে।
    পাঁচুপুর ইউনিয়নের নবাবেরতাম্বু গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গির হোসেন বলেন, গত দুই বছরে পাটের দাম ভালো থাকায় এ বছর এনজিও থেকে লোন নিয়ে তিনি পাঁচ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। বীজ রোপন থেতে শুরু করে এ পর্যন্ত প্রতিমন পাট ঘরে তুলতে প্রায় চব্বিশ-পঁচিশ শত টাকা খরচ হয়েছে। সে পাট এখন বাজারে বিক্রি হচ্ছে মন প্রতি দুই হাজার চারশত টাকা। লোকসান দিয়েই পাট বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের। একই ইউনিয়নের জয়সারা গ্রামের জালাল উদ্দিন জানান, দাম কম থাকায় এ বছর ক্ষেত থেকে পাট কাটতে ইচ্ছে করছে না তাঁর। তিনি জানান একজন শ্রমিককে রোজ সাত শত থেকে আট শত টাকা দিয়ে পাট কাটতে হচ্ছে। ক্ষেতের আশপাশে পানি না থাকায় দূরে নিয়ে জাগ দিতে হচ্ছে। এতে পরিবহন ব্যয় বাবদ আঁটি প্রতি পাঁচ- ছয় টাকা খরচ হচ্ছে। অনেকে পুকুর ভাড়া করে পাট জাগ দিচ্ছেন। সব মিলিয়ে এ বছর পাট চাষে কৃষকদের কোন লাভ হবে না। একই ইউনিয়নের মধ্য বোয়ালিয়া গ্রামের মকলেছুর রহমান চাঁদ বলেন, কয়েক বছরের তুলনায় এ বছরই পাটের দাম অনেক কম। পানি না থাকায় পাট জাগ দেওয়া অনেক কষ্টের ব্যাপার। এসব কষ্ট কথা বলে শেষ নাই।
    উপজেলা কৃষি অফিসার তাপস কুমার রায় ফোন আলাপে তিনি জানান, গত দুই বছর পাটের দাম ভালো হওয়ায় এ বছর পাটের দাম ভালো হওয়ায়। এ বছর সে আমায় কৃষকেরা পাট চাষ করেছেন। উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়েছে।পানির অভাবে কৃষকের পাট জাগ দিতে সমস্যা হচ্ছে।তবে কয়েক দিন ভারী বৃষ্টি হলে এ সমস্যা থাকবে না।পাটের দাম কিছু দিনের মধ্যে বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে#

    রওশন আরা পারীন শিলা
    নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি।