Category: কৃষি

  • পাইকগাছায় কাগজি লেবুর বাম্পার ফলন

    পাইকগাছায় কাগজি লেবুর বাম্পার ফলন

    ইমদাদুল হক, পাইকগাছা (খুলনা)।।
    পাইকগাছায় কাগজি লেবুর বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে, লেবুর বাম্পার ফলন হলেও, কৃষকরা ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না, যা তাদের হতাশ করছে। আর বাজারে লেবুর চাহিদা কম থাকায় ব্যবসায়ীদের ব্যবসা মন্দা যাচ্ছে।
    লেবুর মধ্যে কাগজিলেবু তুলনামূলকভাবে ছোট বলে এর অন্য নাম হয়েছে পাতিলেবু। আবার পাত মানে ভাত খাওয়ার থালায় এর ব্যবহার রয়েছে বলেও এর নাম পাতি লেবু হতে পারে। ছোট হলেও কাগজি লেবুর যে সুঘ্রাণ তা আর কোন লেবুতে নেই। এ লেবুর গাছ খুব বড় হয় না, ডালপালা কিছুটা লতানো ও ঝোপাল, কাঁটাময়। পাতা ডিম্বাকার ও ছোট, চকচকে সবুজ। ফুলের রঙ সাদাটে। কাগজিলেবু লম্বাটে, খোসা মসৃণ ও পাতলা, সবুজ ও চকচকে। খোসায় নখের আঁচড় দিলে কাগজিলেবুর বিশেষ ঘ্রাণ পাওয়া যায়, যা অন্য কোন লেবুতে পাওয়া যায় না। প্রায় সারা বছরই গাছে ফুল ফল ধরে। তবে মে থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে বেশি লেবু ধরে। কাগজিলেবু অম্লরসযুক্ত। ভেতরের কোষ হালকা সবুজাভ সাদা ও রসে পরিপূর্ণ থাকে। পরিণত হলে বেশি রস হয়। ভেতরে স্বল্প বীজ হয়। বর্তমানে বীজবিহীন জাতও উদ্ভাবন করা হয়েছে।
    কাগজি লেবু একটি সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ফল। এটি ভিটামিন সি সহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সহায়ক। প্রতিদিন লেবু খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, হজমশক্তি ভালো হয় এবং ত্বক ও দাঁত সুস্থ থাকে। প্রতিদিন লেবুর রস গরম পানিতে মিশিয়ে, ভাতের সাথে বা সালাদে যোগ করে, অথবা লেবুর শরবত বানিয়ে খেলে লেবুর রস হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে। তবে, অতিরিক্ত লেবু খাওয়া এড়িয়ে যাওয়াই ভালো, কারণ এটি কিছু ক্ষেত্রে অ্যাসিডিটি বা গ্যাসের সমস্যা তৈরি করতে পারে। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কাগুজিলেবু যোগ করা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
    উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ছড়ানো ছিটানো ভাবে প্রায় ২২ হেক্টর জমিতে কাগুজি লেবুর চাষ হয়। সব মিলিয়ে উপজেলায় ৫০ হাজারের উপরে লেবুর গাছ আছে। উপজেলার গদাইপুর, হরিঢালী, কপিলমুনি ও রাড়ুলী ইউনিয়নে আংশিক এলাকায় লেবুর বাগান রয়েছে। গদাইপুর ইউনিয়নের মটবাটী, হিতামপুর,গদাইপুর ও গোপালপুর গ্রামে বাণিজ্যিক ভাবে লেবুর বাগান গড়ে উঠছে। বিশেষ করে বাগান মালিকরা বাগানের বেড়া দিতে প্রয়োজনীয় বাঁশের মূল্য বেশি হওয়ায় তারা বাগানের চারপাশে সীমানা দিয়ে লেবু গাছ লাগিয়ে বাগান সুরক্ষা করছে। লেবু গাছে ছোট ছোট কাঁটা থাকায় গরু, ছাগল, ভেড়া প্রবেশ করতে পারে না। একদিকে বেড়া দেয়ার খরচ বাঁচে ও অন্যদিকে আইলে লেবু গাছ লাগিয়ে বাগান মালিকরা লাভবান হচ্ছে।
    জুন ও জুলাই মাস লেবুর ভরা মৌসুম থাকে। আগস্ট মাস থেকে লেবু হলুদ হয়ে ঝরে পড়তে থাকে। এক একটি বড় লেবু গাছে ৫শ থেকে ১ হাজার লেবুর ফলন হয়। উপজেলার চেচুয়া গ্রামের লেবু ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম জানান, এ বছর লেবুর ব্যবসা খুব খারাপ যাচ্ছে। তারা লেবু বাগানে মালিকের কাছ থেকে প্রতিটি লেবু ৭৫ পয়সা বা এক টাকা দরে ক্রয় করে ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে সরবরাহ করছে। এ বছর স্থানীয় বাজরেও লেবুর চাহিদা কম। এলাকার হাট-বাজারে খুচরা ছোট লেবু ১-২ টাকা ও বড় লেবু ৩ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে। গদাইপুর গ্রামের লেবু বাগান মালিক আবুল কাশেম বলেন, এ বছর লেবুর চাহিদা নেই, দামও কম। গাছের লেবু হলুদ হয়ে ঝরে পড়ছে।
    উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: একরামুল হোসেন জানান, পাইকগাছা উপকূলের এ এলাকা লবণাক্ত হওয়ায় ৩/৪টি ইউনিয়নে কাগুজিলেবু আবাদ হয়। কাগজিলেবু লাভ জনক হওয়ায় ক্ষেতের আইলের পাশাপাশি বাণিজ্যিক ভিত্তিকে লেবু বাগান তৈরী শুরু হয়েছে। লেবু বাগান লাগাতে তেমন কোন খরচ হয় না, সামান্য পরিচর্যা করলে লেবু বাগান থেকে প্রচুর ফলন পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে কৃষি অফিস থেকে লেবু বাগান তৈরী করার জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

    ইমদাদুল হক
    পাইকগাছা,খুলনা।

  • তালুকপাড়ার কৃষি জমি এবার  রংবিলাস জাতের আখের বাম্পার ফলনে কৃষক ইয়াছিনে মুখে হাসি

    তালুকপাড়ার কৃষি জমি এবার রংবিলাস জাতের আখের বাম্পার ফলনে কৃষক ইয়াছিনে মুখে হাসি

    তরিকুল ইসলাম তরুন,

    কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলার মতো বরুড়া উপজেলার বাতাইছড়ি ইউনিয়নের তালুকপাড়াতে আখ চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। বাজারে চাহিদা বেশি থাকায় ভালো দামও পাচ্ছেন তারা। উৎপাদন ব্যয় বাদ দিয়েও দ্বিগুণ লাভ হওয়ায় আখ চাষে কৃষকদের মুখে ফুটেছে হসি। কৃষি বিভাগ বলছে,আখ চাষ সম্প্রসারণে সরকারি প্রকল্প নেওয়া হবে, পাশাপাশি প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে কৃষকদের।

     জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, চলতি জরিপ মৌসুমে কুমিল্লার মুরাদনগর, বুড়িচং, দেবিদ্বার, বিপাড়া, চান্দিনা,দাউদকান্দি, চৌদ্দগ্রাম, লাঙ্গল কোট, লালমাই, বরুড়াসহ ১০ উপজেলায় প্রায় ৩০০ শত হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়েছে। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০০ শত হেক্টর জমি।

    অন্য জেলার তুলনায় আখ চাষ একসময় খুবই কম ছিল। তবে গত কয়েক বছরে লাভজনক হওয়ায় অনেক কৃষক আখ চাষে ঝুঁকছেন। বিশেষ করে উঁচু জমি ও বেলে-দোয়াশ মাটি আখ চাষের জন্য উপযোগী বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তা হোসেন মিয়া।

     
    বরুড়া উপজেলার বাতাইছড়ি ইউনিয়নের তালুকপাড়া গ্রামের কৃষক ইয়াছিন,খোকন মেম্বার,খায়ের মেম্বার, ফারুক আহম্মেদ,তারু মিয়া,আলী নেওয়াজ তাদের নিজ ধানি জমিতে গতকয়েক বছর যাবত আখ চাষ শুরু করেন। আখ ফলনে কৃষক ইয়াছিন জানান
    গত বছর ১ লাখ টাকা খরচ করে এবার প্রায় ৩ লাখ টাকার আখ বিক্রি করেন।
    চলতি বছরেও তার আখের বাম্পার ফলন হয়েছে এবং ভালো দামের আশায় রয়েছেন তিনি। বর্তমানে বাজারে প্রতি পিস আখ বিক্রি হচ্ছে ৪০থেকে ৫০ টাকায়। এ আখ চিবিয়ে খাওয়ার পাশাপাশি গুড় তৈরির জন্যও বেশ জনপ্রিয়।

    কৃষক খোকন মেম্বার বলেন “আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর আখের ফলন ভালো হয়েছে। উৎপাদন ব্যয়ের তুলনায় বেশি দাম পাওয়ায় আমরা খুশি।

    এলাকার আরেক কৃষক তারুমিয়া জানান, “আগে শুধু ধান করতাম। কিন্তু ধানে তেমন লাভ নেই। এখন আখ করে দেখছি খরচ কম, লাভ বেশি। তাই আগামীতে আরও বেশি জমিতে আখ চাষ করব। ৯ মাসে ফলন আসে,আমাদের এলাকায় প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে এবার রং বিলাস ২০৮ নম্বর ও ৫৩২ নম্বর জাতের আখের বাম্পার ফলন হয়েছে। এসব আখ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে কুমিল্লা জেলা ও ঢাকা, চট্টগ্রামের খুচরা ব্যবসায়ীরা জমি তে কন্টাক করে ক্রয় করে প্রতিকানি ৩-৪ লাখ টাকা। এতে ধারনা করা হয় প্রতি ১শত আখ ৪০০০-৫০০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে জমিতে।

    স্থানীয় আখ বিক্রেতা খায়ের বলেন“এলাকায় এখন আখের প্রচুর চাহিদা। বাজারে তুললেই বিক্রি হয়ে যায়। প্রতি পিস৬০-৮০ টাকা দরে আখ বিক্রি করছি। এই আখ কার্তিক অগ্রাহায়নে রোপন করা হয়, যত্ন দিয়ে কীটনাশক ছিটানোর পরে দীর্ঘ ৯ মাস অপেক্ষা করে ফলন বিক্রির জন্য রেডি হয়। এই ফলনে কৃষকরা খুশি কারন অল্প খরচে তিনগুণ লাভ। তাই চাষিরা আখ চাষে আগ্রহ বাড়ছে।

     

    কৃষি কর্মকর্তারা বলেন,আখ একটি অর্থকরী ফসল। একসময় আখ চাষ হারিয়ে যাচ্ছিল, তবে গত দুই বছর থেকে আবারও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে প্রতিটি উপজেলায় আখ চাষ হচ্ছে। কৃষকরা আরও বেশি করে আখ চাষে আগ্রহী হন সেজন্য প্রশিক্ষণ ও সরকারি সহায়তা প্রদান করা হবে।

  • পাইকগাছায় জমে উঠেছে মৌসুমী কাঁচা সুপারির হা-ট

    পাইকগাছায় জমে উঠেছে মৌসুমী কাঁচা সুপারির হা-ট

    ইমদাদুল হক, পাইকগাছা (খুলনা)।।
    খুলনার পাইকগাছায় গদাইপুর বাজারে কাঁচা সুপারি বেচা কেনার হাট জমে উঠেছে। এখন সুপারির ভরা মৌসুম চলছে। ফলে বাগান মালিক, খুচরা ও পাইকারী বিক্রেতারা সুপারি ক্রয়-বিক্রয় নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে। উপজেলার গদাইপুর, আগড়ঘাটা, বাকা, নতুন বাজার, কপিলমুনিসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রচুর পরিমাণে সুপারি বিক্রি হচ্ছে। এ বছর সুপারির ফলন খুব বেশি ভাল হয়নি। ব্যবসাহীরা জানান, সুপারি পাকার শুরুতে দাম বেশী ছিলো, এখন দাম কিছুটা কমে গেছে।উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে,উপজেলায় ৪০ হেক্টর জমিতে সুপারি বাগান রয়েছে। গাছের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার ৪শতটি। গাছ প্রতি ২ থেকে ৪ কাধি সুপারির ফলন ধরে। কোন কোন গাছে সর্বনিন্মে ৫০ থেকে ১৫০ আবার কোন কোন গাছে ৫শত থেকে ৬শত সুপারি ফলন হয়। লবণাক্ত এ উপজেলার ভূমির অবস্থান উচু ও বিলান, নিচু ও বিলান জমির পরিমাণ বেশী। উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার মধ্যে গদাইপুর, হরিঢালী,কপিলমুনি, রাড়ুলীতে সুপারি গাছের পরিমাণ বেশী। চাঁদখালী ও পৌরসভার আংশিক এলাকায় সুপারি গাছ রয়েছে। বাকী ইউনিয়নগুলোতে গাছ নেই বললেই চলে।বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন হাটে সুপারি সরবরাহ করে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বাজার থেকে পাইকারী সুপারি ক্রয় করে এলাকার বাইরে মোকাম গুলোতে বিক্রি করছে। তাছাড়া স্থানীয় কিছু ব্যবসায়ীরা সুপারি ক্রয় করে গুদামজাত করছে। যা পরে শুকিয়ে বা পানিতে মজিয়ে পরবর্তীতে বিক্রি করা হবে। গদাইপুর গ্রামের সুপারি বাগান মালিক শফিকুল ইসলাম জানান, এ বছর সুপারির ফলন খুব ভাল হয়নি তবে বাজার মূল্য ভাল। স্থানীয় সুপারি ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলামসহ অন্যান্য ব্যবসায়ীরা জানান, এ বছর বাজারে সুপারির পরিমাণ কিছুটা কম। সুপারির দাম উঠানামা করেছে, প্রথমে ৭শত থেকে ৮ শত টাকা কুড়ি বিক্রি হলেও এখন ২৫০ থেকে ৩শত টাকা দরে কুড়ি বিক্রি হচ্ছে। সুপারির হিসাব অঞ্চল হিসাবে ভিন্ন। এ এলাকায় এক কুড়ি ৫৫গোন্ডা অর্থাৎ ২২০টি সুপারি। ব্যবসায়ীরা স্থানীয় হাট-বাজার থেকে পাইকারী সুপারি কিনে বড়দল, সোলাদানা, শান্তাসহ পাশ্ববর্তী হাট-বাজারের আড়ৎ গুলোতে সুপারি বিক্রয় করেন।সুপারি স্থানীয় সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাড়িয়েছে। সুপারি ছাড়া পানের পূর্ণতার কথা ভাবা যায় না। বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সুপারি ব্যবহার হয়। সুপারি কাঁচা, শুকনা, মজানো-ভিজা পান পাতা দিয়ে মুড়িয়ে খিলি বানিয়ে খাওয়া হয়।অনেকের আবার শুধু সুপারি খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। বিশ্বের মোট জনগোষ্ঠির এক দশমাংশ সুপারি খান। শিশু, নারী ও পুরুষ সুপারি ব্যবহার করেন।এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ একরামুল হোসেন জানান, সুপারি এ অঞ্চলের একটি অর্থকারী গুরুত্বপূর্ণ ফসল। তাছাড়া এ এলাকার সুপারির মানও ভালো। তবে লম্বা সুপারি গাছ গুলো মরে যাওয়ায় অথবা কেঁটে ফেলায় নতুন করে সুপারির বাগান তেমন একটা গড়ে উঠছে না। তাই কৃষি অফিস থেকে নতুন করে সুপারি বাগান তৈরীর জন্য বাগান মালিক ও কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

    ইমদাদুল হক,
    পাইকগাছা খুলনা।

  • মোরেলগঞ্জে লবণাক্ত জমিতেমিষ্টি কুমড়া চাষ করে কোটিপতি জলিল তালুকদার

    মোরেলগঞ্জে লবণাক্ত জমিতেমিষ্টি কুমড়া চাষ করে কোটিপতি জলিল তালুকদার

    শেখ সাইফুল ইসলাম কবির,বিশেষ প্রতিনিধি :দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল মৎস্যভান্ডার নামে খ্যাতবিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূলে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ভাষাদলগ্রামে মৎস্য ঘেরের ভেড়িতে লবণাক্ত জমিতে মুন্না ডেকরেটরের মালিক মো আব্দুল জলিল তালুকদার ডেকরেটরের ব্যবসার পাশা পাশি হাইব্রিড জাতের মিষ্টি কুমড়া,শসা, চাল কুমার করলা চাষ করে কোটিপতি হয়েছেন।ঘেরের ভেড়িতে মিষ্টি কুমড়ার স্বাদ বেশি। ফলে রাজধানী ঢাকার কাওরান বাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মোরেলগঞ্জের মিষ্টি কুমড়া বাজারজাত করা হচ্ছে। তার দেখাদেখি আশপাশের ৩০ গ্রামের অনেক চাষি এগিয়ে এসেছেন। যত দূর চোখ যায় দিগন্ত জোড়া মাঠে সবুজ হলুদের খেলা। মিষ্টি কুমড়া ফুলের সমারোহ আর বড় জাতের মিষ্টি কুমড়ার ফলন মন কারে যে কোন দর্শনার্থীর। এক থেকে পঁচিশ কেজি ওজনের কয়েক হাজার টন মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হয়েছে এই উপজেলায়। যার আনুমানিক বাজার মূল্য দুই থেকে তিন কোটি টাকা।

    খেতেই কুমড়ার কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। প্রতিটি কুমড়া ওজন ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নে মৎস্য ঘেরের ভেড়িতে পুরো গ্রামজুড়ে মিষ্টি কুমড়ার মাঁচা। সবুজ পাতায় ঘেরা এই মাঁচার নিচে ঝুলছে মিষ্টি কুমড়া।

    কৃষকরা মাঁচা থেকে মিষ্টি কুমড়া সংগ্রহ করছেন। শুধু তাই নয়, স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এই গ্রামের মিষ্টি কুমড়া পাইকারদের হাত ধরে চলে যাচ্ছে সারা দেশে।

    গ্রামটির মিষ্টি কুমড়া সারাদেশে বেশ চাহিদা রয়েছে। মৌসুমে উপজেলায় প্রায় কোটি টাকার শীতকালীন আগাম সবজি উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে।

    সবজি উৎপাদনে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারে সফলতা পেয়েছে বলে মনে করছে কৃষক ও কৃষি বিভাগ। ফলে ভালো উৎপাদনের পাশাপাশি মোরেলগঞ্জে গড়ে উঠেছে সবজির বাজার। সারা বছরই মোরেলগঞ্জে সবজির আবাদ হয়।

    ফড়িয়া ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে এসে দরদাম করে ট্রাকযোগে তা নিয়ে যাচ্ছে। বাগেরহাট রিপোর্টার্স ইউনিটি সভাপতি এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির বলেন, কৃষককে সার, বীজ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে বিভিন্ন সময় সহযোগিতা করে কৃষি বিভাগ। বিভিন্ন সীড কোম্পানি পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যে সার ও বীজ দিয়ে গরীব কৃষকদের সহযোগিতা করতে হবে।জেলার প্রান্তিক কৃষকদের সহজ শর্তে কৃষি ঋনের পাশাপাশি আরও প্রশিক্ষন ও উপযুক্ত পরিবেশ সৃস্টি করা গেলে বাগেরহাটেরর ফসলী জমি ভরে উঠবে সবুজ মিস্টি কুমরার সমারোহে এমনটাই দাবী এ অঞ্চলের কৃষকদের।

    মোরেলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, মৎস্য ঘেরের ভেড়িতে মিষ্টি কুমড়া চাষে উপকরণ সহায়তা প্রদান শীর্ষক উপপ্রকল্পের আওতায় ২শ জন চাষি ২০৫ হেক্টর জমিতে কুমড়া চাষ করেছে। তাদের বীজ, রাসায়নিক সার প্রদানসহ পোকামাকড় দমনে নানা উপকরণ সহায়তা করা হয়েছে।

  • পাইকগাছায় কৃষি অফিসের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে  কৃষি অর্থনীতি বদ-লে যাচ্ছে

    পাইকগাছায় কৃষি অফিসের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষি অর্থনীতি বদ-লে যাচ্ছে

    ইমদাদুল হক, পাইকগাছা (খুলনা) ।।
    পাইকগাছা : প্রযুক্তি ও মাল্টিলেয়ার পদ্ধতিতে এক জমিতে একসঙ্গে একাধিক ফসল উৎপাদনে বদলে যাচ্ছে পাইকগাছার কৃষি অর্থনীতি। কৃষকের পুনর্বাসন ও প্রণোদনা, ফসল উৎপাদন এবং তদারকি বাড়ায় বর্তমানে চাহিদার অতিরিক্ত খাদ্যশস্য উৎপাদনে সক্ষম হয়েছেন পাইকগাছার কৃষকেরা।

    সরকার উপকূলীয় অঞ্চলের লবণাক্ত জমিতে বহুমুখী ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে কৃষিভিত্তিক বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করায় এর সুফল পাচ্ছেন প্রান্তিক কৃষকেরা। ফলে পাইকগাছা উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নে খালে-বিলে কৃষকের চালে মৎস্য ঘেরের আইলে শোভা পাচ্ছে লাউ, ঢেঁড়স, করলা, মিষ্টি কুমড়া, তরমুজ, বরবটি, শিম, ঝিঙে, কুমড়া, পেঁপে, শসা, পুঁইশাক, লালশাকসহ নানা ধরনের সবজি।
    কৃষি অফিসের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে মৌসুমভিত্তিক প্রশিক্ষণ ও বিনা মূল্যে সার ও বীজ প্রদান করে কৃষকদের প্রশিক্ষিত করা হয়েছে। ফলে রবি মৌসুমে গম, আলু, মিষ্টি আলু, সরিষা, ভুট্টা, মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন, ধনিয়া, মসুর, মুগ, খেসারি, মটর, মাষকলাই, তরমুজসহ শীতকালীন শাকসবজির উৎপাদন গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। পাইকগাছার কৃষকেরা এখন নিজেরাই নিজেদের পুষ্টি ও খাদ্য তৈরি করছেন।
    উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের কৃষকরা কৃষিবিপ্লব ঘটিয়েছেন। উপজেলার দেলুটির ২২ নং পোল্ডারের ডিহিবুড়া খালের দুই পাড়ে বিধান মণ্ডল মাছ চাষের পাশাপাশি তিনি পতিত জমি চাষের আওতায় এনে আধুনিক কৃষি প্রজেক্ট তৈরি করেছেন। খালের পাড়ে জমিতে চাষ করা হয়েছে দেশি-বিদেশি নানা জাতের ফল-সবজি। গদাইপুর ইউনিয়ানের পুরাইকাটি বিলে ঘেরের আইলে শেখ আহসান উল্লাহ গ্রীষ্মকালীন তরমুজ, লাউ, করলা, শসা, সহ বিভিন্ন ধরনের সবজি ঘেরে আইলে চাষ করেছেন। তারা এক ফসলি জমিতে এখন বহু ফসলি জমিতে রূপান্তরিত করেছেন। ফলে কৃষকরা স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন ।
    পাইকগাছা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, উপজেলায় মাছের ঘেরের আইলে ২৩৪ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। লতা ও দেলুটিতে তরমুজের ফলন খুব ভালো হয়েছে। গত পাঁচ বছরে উপজেলায় রেকর্ড পরিমাণ খাদ্যশস্য উৎপাদন হচ্ছে। বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিপর্যয় কাটিয়েও কৃষকরা খাদ্যশস্য উৎপাদনে উল্লেখ যোগ্যভাবে সফল হয়েছেন। দানা শস্যের পাশাপাশি শাকসবজি উৎপাদনেও রেকর্ড সৃষ্টি করেছে পাইকগাছার কৃষকরা।
    উপকূলীয় উপজেলা হওয়ায় ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, জলাবদ্ধতা, লবণাক্ততা, সেচের পানির দুষ্প্রাপ্যতাসহ বিভিন্ন সমস্যা কৃষি উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায়। ২০০৭ সালে সিডর ও ২০০৯ সালে আইলায় উপকূলীয় এলাকায় কৃষি মারাত্মক ক্ষতির শিকার হয়। এরপরে বুলবুল, আম্পান, ইয়াস ও করোনার প্রভাবে সামগ্রিক কৃষি খাতকে বিপর্যস্ত করে তোলে।
    দুই যুগ আগেও উপকূলীয় এলাকার জমিতে একটি বা দুটি ফসল হতো। বছরের অধিকাংশ সময় কৃষিজমি পতিত অবস্থায় থাকত। এখন সেসব জমিতে তিন থেকে চারটি ফসল উৎপাদন হচ্ছে। আবার একই জমিতে মাল্টিলেয়ার পদ্ধতিতে একসঙ্গে একাধিক ফসলও চাষ হচ্ছে। এভাবে জমির বহুমুখী ব্যবহারে বদলে যাচ্ছে কৃষকের ভাগ্য।
    পাইকগাছা উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ একরামুল হোসেন বলেন, আমাদের বৈজ্ঞানিকরা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন করছেন এ অঞ্চলের কৃষকদের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য। উদ্ভাবিত কার্যকরী প্রযুক্তিগুলো মাঠ পর্যায়ে দ্রুত জনপ্রিয় করতে প্রকল্পের আওতায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সার্বিক সহযোগিতা উচ্চফলনশীল জাতগুলোর উপযোগিতা যাচাইয়ের পর পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় আনা হচ্ছে। ফসল নিবিড়তায় কৃষিতে বৈচিত্রতা অর্জন করা সম্ভাব হয়েছে। দেশের দক্ষিণঞ্চলের লবণাক্ত উপজেলা পাইকগাছায় চাষ উপযোগী সবজি, ফল, ডাল, আলু, তরমুজ, গম, ভুট্টা উৎপাদন বাড়ানো ও কৃষকদের আয় বাড়ানোর পথ সহজ হবে।

  • গোদাগাড়ীতে এবার বর্ষায় কৃষকের আমন চাষে কো-টি টা-কা সাশ্রয়-আমনের সবুজ পাতায় দুল-ছে কৃ-ষকের স্বপ্ন

    গোদাগাড়ীতে এবার বর্ষায় কৃষকের আমন চাষে কো-টি টা-কা সাশ্রয়-আমনের সবুজ পাতায় দুল-ছে কৃ-ষকের স্বপ্ন

    মোঃ হায়দার আলী রাজশাহী থেকেঃ রাজশাহীর গোদাগাড়ীর বরেন্দ্র অঞ্চলে আমনের ভরা মৌসুম চলছে। সবুজ সতেজে ভরে উঠেছে আমনের মাঠ। যতদুর চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ প্রান্ত। কখনো রোদের ঝাপটা আবার কখনো নেমে আসছে মসুলধারে বৃষ্টি। প্রকৃতির এমন রুপে ক্ষেতে সবুজ আমন ধানের পাতাও যেন গাছাড়া দিয়ে বেড়ে উঠছে। আমনের বেড়ে উঠা দেখে সোনালী স্বপ্নে ভরছে কৃষকের মন প্রান।

    মাঠে মাঠে হাওয়ায় দুলছে আমন ধানের সবুজপাতা, সে সাথে আনন্দে দুলছে কৃষকদের মন। কৃষকের মনে উঁকি দিচ্ছে এক ভিন্ন আমেজ। সবুজ ঘেরা রোপা আমনের মাঠ দেখে বারবার ফিরে তাকায় কৃষক, থমকে দাঁড়ায় পথিক। আর কিছু দিনের মধ্যেই সোনালী ধানের শীষে ঝলমল করবে মাঠের পর মাঠ। রাশি রাশি সোনালী ধানে ভরে উঠবে কৃষকের শূন্য কুঠি ও গোলা। পাশাপাশি কৃষকের মুখে ফুটে উঠবে হাসি।

    জানা যায়, এবারে উপজেলার ৯ ইউনিয়নে ২ টি পৌর সভায় ২৪ হাজার ৯৭৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল তার চেয়ে বেশী পরিমান জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছে।

    এসব এলাকার মাঠগুলোতে চাষকৃত আমন ধানের মধ্যে গুটি স্বর্ণা, লাল স্বর্ণা, সুমন স্বর্ণা, পাইজাম, ব্রি ধান ৫১, ব্রি-২৯সহ উচ্চ ফলনশীল অনেক জাতের হাইব্রিড ধানেরও চাষ হয়ে থাকে। এর সাথে গত কয়েক বছর থেকে যোগ হয়েছে সু-ঘ্র্যাণের চিনিআতপ ধানের চাষ।

    উঁচুনিচু সিড়ির মত ঢেও খেলানো বরেন্দ্র অঞ্চলে ভূমি। এ অঞ্চলে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর দিনে দিনে অনেক নিচে নেমে যাচ্ছে। ৪০ ভাগ জমি সেচ নির্ভর হলেও বাকি ৬০ ভাগই বর্ষা পানির উপর নির্ভরে আমন চাষাবাদ হতে থাকে এ অঞ্চলে।

    তবে অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার সেচ ছাড়াই শতভাগ জমিতে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানিতে আমন চাষ করতে পেরেছেন বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকেরা। তাতে কয়েক কোটি টাকা সেচ খরচ বেচেছেন কৃষকেরা।

    কৃষকেরা বলছেন, অন্যবছর গুলোতে আষাড় মাস শেষ হতে গেলেও বৃষ্টি দেখা মেলে ভার। বীজতলা বীজ বয়স হয়ে নষ্ট হয়ে যায় সময়ের মধ্যে আমন চাষ করতে বরেন্দ্রর গভীর নলকূপ, মিনি ডিপ সার্বমাসেবল পাম্প সহ খাল বিল পুকুর হতে সেলো মেশিন দিয়ে সেচ দিতে হতো। যা আমন উৎপাদনের অর্ধেক খরচ সেচে লেগে যেত।

    এবার বাস্তবতা ভিন্ন। এ বছর আষাড়ের শুরু থেকে শ্রাবন মাস পুরো দুইমাস যাবত প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি ঝরছে। ভাদ্র মাস পরেও একের পর এক নিম্ম চাপে কারণে সকাল সন্ধা অঝরে বৃষ্টি নামছে। তাতেই বরেন্দ্র অঞ্চলে উঁচু হিসাবে পরিচিত রাজশাহীর গোদাগাড়ী, তানোর চাঁপাইনবাবগঞ্জে নাচোল, রহনপুর নওগাঁর পোরশা নিয়ামতপুর ও সাপাহার উপজেলার প্রায় চার লাখ হেক্টর জমিতে এবার সেচ ছাড়াই শুধু বৃষ্টির পানিতে আমন চাষ হচ্ছে। এতে করে দেশের বিদুৎ সাশ্রয় ও জালানি তেলের খরচ কম লেগেছে। আর কৃষকের সেচ খরচ বেছেছে কয়েক কোটি টাকা।

    মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কর্মকর্তারা এবার বর্ষাকে কৃষকের জন্য আর্শিবাদ হিসেবে

    দেখছেন। তারা বলছেন, বরেন্দ্র অঞ্চল দেশে উচু অঞ্চল হিসাবে পরিচিতি। এখানে সেচ ছাড়া শতভাগ জমিতে আমন চাষ করা যায়না। এ সেচ খরচ সর্বনিম্ম বিঘাপ্রতি পাঁচশত টাকা খরচ হতো কৃষকের। এবার সেচ ছাড়া শতভাগ জমিতে আমন রোপন করতে পেরেছেন কৃষকেরা। সে খরচ আষাড়ের বৃষ্টিপানি বাঁচিয়ে দিয়েছে কৃষকের।

    উপজেলার মাটিকাটা ইউনিয়েনের হাবাসপুর এলাকার আব্দুল সাত্তার বলেন, চলতি বছর দুই বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছি। প্রতিবিন বৃষ্টি হওয়ার কারণে সেচের জন্য কোন খরচ হয় নি। যেখানে সেচ খরচ প্রায় দেড় হাজার টাকা লেগে যায়। কিন্ত এবছর আকাশে বৃষ্টিতেই তার দুই বিঘা জমিতে আমন রোপন করেছেন।

    শুধু আব্দুর সাত্তার নয়,পুরো বরেন্দ্র অঞ্চলে কৃষকেরা এবার গভীর নলকূপ, মিনি ডিপটিউবল, এলএলএম, পাম্প ও খাল বিল পুকুর হতে কেউ আমন রোপনে সেচ দেওয়া লাগেনি।

    রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রাসরণের উপ-পরিচালক উম্মে সালমা বলেন, বরেন্দ্রে এবার শতভাগ জমিতে আমন চাষ হয়েছে আষাড়ের বৃষ্টিতেই। সেচ খরচ বেচে যাওয়াই কৃষকদের উৎপাদন খরচ কমবে। ফলনও ভাল হবে। কৃষকেরা এবার লাভবান হবে । তবে নিম্ন অঞ্চলে অতি বৃষ্টিতে সবজি চাষীদের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে।

    উপসহকারী কৃষি কর্তকর্তা অতনু সরকার বলেন, এবার এ অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় কৃষক বৃষ্টির পানিতে ধান রোপন করেছেন, এখন পর্যন্ত সেচের জন্য কোন অর্থ ব্যয় করতে হয় নি। অতিবৃষ্টির কারণে শাক সবজির বেশ ক্ষতি হয়েছে বলে জানান মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তা।

    মোঃ হায়দার আলী রাজশাহী।

  • পাইকগাছায় ভাসমান বীজতলায় সফ-লতা পেয়েছে কৃষক

    পাইকগাছায় ভাসমান বীজতলায় সফ-লতা পেয়েছে কৃষক

    ইমদাদুল হক,পাইকগাছা (খুলনা)।।
    খুলনার পাইকগাছায় অতিবৃষ্টি ও জলাবদ্ধতা মোকাবেলায় কলাগাছের ভেলায় ভাসমান ধানের বীজতলা তৈরি করে সফলতা পেয়েছে কৃষক পরিবার। অতিবৃষ্টি, নদীভাঙন ও জলাবদ্ধতায় নাকাল উপকূলের পাইকগাছার কৃষক। সর্বশেষ টানা বর্ষণে শুধু খুলনায়ই ফসল,সবজি ও আমনের বীজতলা নষ্ট হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১৩ সহস্রাধিক কৃষক। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় ভাসমান ধানের বীজতলা তৈরি করে সফলতা পেয়েছে খুলনার এক কৃষক পরিবার।চলতি বর্ষা মৌসুমে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতে কয়েক দফা বীজতলা নষ্ট হওয়ায় এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেন পাইকগাছা উপজেলার নোয়াকাটি গ্রামের কৃষক রোকেয়া পারভীন। দেবর আব্দুল কুদ্দুসকে নিয়ে ফেলে দেওয়া কলাগাছ, বাঁশ ও মাটি ব্যবহার করে তৈরি বীজতলা এখন দুর্যোগকবলিত কৃষকদের আশার আলো দেখাচ্ছে।কৃষাণী রোকেয়া পারভীন বলেন, বৃষ্টির জন্য কয়েক দফায় প্রায় ১০০ কেজি বীজ ধান নষ্ট হয়ে গেছে। কোনো কূল-কিনারা পাচ্ছিলাম না। অ্যাওসেডের কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে কলাগাছের ভেলা বানিয়ে কাদামাটি তুলে ব্রি-৭৫ আমন ধানের বীজ ফেলছি। একটি বীজও নষ্ট হয়নি, মাত্র ১৫ দিনে চারা রোপণের মতো হয়েছে। এখন আশপাশের কৃষকরা ভাসমান বীজতলায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন।রোকেয়ার দেবর আব্দুল কুদ্দুস বলেন, প্রথমে আমাদের কাজ দেখে সবাই পাগল বলত। বলত কলাগাছের ভেলায় ধান হলে তো কারো জমির দরকার ছিল না। কিন্তু এখন সবাই অবাক। এখানে কোনো সার-কীটনাশকও লাগেনি। জমিতেও এমন ধানের চারা আর কখনো হয়নি।শুধু আমরা না, গ্রামের সবাই খুশি।নোয়াকাটি গ্রামের কৃষক কবির মোড়ল বলেন, মাত্র ১০ দিনে তিন-চার ইঞ্চি ধানের চারা। যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না। অথচ আমার বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। কৃষক আবদুল্লাহ মোড়ল জানান, চলতি আমন মৌসুম বৃষ্টির কারণে এক মাস দেরি হয়েছে। সামনে আর সমস্যা হবে না। কলার ভেলা, কচুরিপানা ও প্লাস্টিকের ড্রামের মাধ্যমে মাচা তৈরি করে ধানের বীজতলা করা যাবে।বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অটোক্রোপ কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, কলাগাছের ভেলায় ধানের বীজতলা কৃষকদের স্বপ্ন দেখাবে। ভাসমান ভেলায় ধানের বীজতলা তৈরিতে প্রত্যক্ষভাবে কাজ করেছেন অ্যাওসেডের কমিউনিটি মোবালাইজার শুভঙ্কর বিশ্বাস। তিনি বলেন, এবার পাইকগাছাসহ খুলনা অঞ্চলে আমনের বীজতলা কয়েকবার নষ্ট হয়ে যায়। এ অবস্থা থেকেই ভাসমান বীজতলা তৈরির ভাবনা, কৃষকরা যার সফল বাস্তবায়ন করেছেন।পাইকগাছা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ একরামুল হোসেন বলেন, ইতিপূর্বে পাইকগাছায় ভাসমান বীজতলা তৈরির প্রয়োজন পড়েনি। চলতি বর্ষা মৌসুমে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতে কৃষকের বীজ তলা একাধিকবার নষ্ট হয়েছে। এর মধ্যেও কৃষকরা উচু জায়গায় বীজ তলা তৈরি করেছে। বিগত ২০ বছরে এমন বৃস্টি হয়নি। এনজিও অ্যাওসেডের উদ্যেগে উপজেলার নোয়াকাটিতে কলাগাছের ভেলায় একটি বীজতলা করা হয়েছে।খুলনার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন, এটি ভালো উদ্যোগ। কৃষকের ঝুঁকি কমাতে উঁচু স্থানে বা ভেলা বিকল্পভাবে বীজতলার ব্যবস্থা করতে হবে।

    ইমদাদুল হক
    পাইকগাছা খুলনা।

  • তানোরে আমণখেতে পো-কার আ-ক্রমণ

    তানোরে আমণখেতে পো-কার আ-ক্রমণ

    তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ
    রাজশাহীর তানোরে বিস্তীর্ণ আমণখেতে
    পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে।এতে
    আমণ চাষিরা অনেকটা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কিন্ত্ত কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীদের কাছে থেকে কাঙ্খিত পরামর্শ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।গত কয়েক দিনের একটানা বৃষ্টির কারণে আমণখেতে পোকার আক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
    সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে,উপজেলায় চলতি মৌসুমে আমন চাষেরে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২২ হাজার ৩০০ হেক্টর। এবার স্থানীয় জাতের পাশাপাশি উচ্চ ফলনশীল বিভিন্ন জাতের ধানের চারা রোপণ করছেন। সারা মাঠ ছেঁয়ে গেছে কৃষকের স্বপ্নের গুটি স্বর্ণা, সুমন স্বর্ণা, ব্রি-ধান-৪৯, ব্রি-ধান-৫১, ব্রি-ধান-৭৫, ব্রি-ধান-৮৭, ব্রি-ধান-৯৫, ব্রি-ধান-১০৩ সহ বিভিন্ন জাতের ধান।
    এদিকে গত ২৫ আগস্ট সোমবার সরেজমিন উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের(ইউপি)মাদারীপুর, হাতিশাইল, ছাঐড়, হাতিনান্দামাঠ ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ আমণখেত পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে।কিন্ত্ত অধিকাংশ আমণের জমিতে বৃষ্টির কারণে কীটনাশক প্রয়োগ করতে পারেনি। আবার অনেক কৃষক বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক স্প্রে করেও কাঙ্খিত সুফল পাচ্ছেন না। ছাঐড় গ্রামের কৃষক এমদাদুল হক বলেন,তার তিন বিঘা জমির ধানে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে।তিনি বলেন,কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের পরামর্শ ছাড়াই অনুমান নির্ভর হয়ে বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক স্প্রে করেও কাঙ্ক্ষিত ফল পাচ্ছেন না। কৃষক আয়ুব ও আব্দুল বলেন,তাদের ৫ বিঘা জমির ধানে আমণ পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে।কিন্ত্ত টানা বৃষ্টির কারণে তারা এখানো জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করতে পারেননি। এছাড়াও শহিদুলের ২ বিঘা ও আহমেদ আলীর ৫ বিঘা জমিতে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে।
    স্থানীয কৃষকেরা জানান, এবার আমন
    চাষের মৌসুম থেকে কৃষকদের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কারণ গত বছরের তলনায় এবছর আমন চাষের সময়ে অতি বৃষ্টি ও ছিল সারের সঙ্কট। কিন্ত্ত আমণের ভরা মৌসুমে পোকার আক্রমণ ও নন ইউরিয়া সারের সংকট দেখা দেয়ায় তারা ফলন উৎপাদন নিয়ে রীতিমত শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এদিকে কৃষি পরামর্শ ব্যতিত অনুমান নির্ভর ও কীটনাশক ব্যবসায়ীদের পরামর্শ মতো বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক ব্যবহার করেও তারা কাঙ্খিত সুফল পাচ্ছেন না। উপজেলার বাধাইড় ইউপির কৃষক মতিন ও হিম্মত আলী বলেন, বাজারে যেভাবে নামি-দামি কোম্পানির কীটনাশক বিষ বিক্রি করা হচ্ছে, তাতে কোনটা আসল কোনটা নকল সেটা বোঝা বড় দায়। এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহমেদের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।#

  • গোদাগাড়ীতে বরবটি চাষে কষকদের বাজিমাত। দুই ফসলী জমি তিন ফসলী জমিতে পরিনত

    গোদাগাড়ীতে বরবটি চাষে কষকদের বাজিমাত। দুই ফসলী জমি তিন ফসলী জমিতে পরিনত

    রাজশাহী থেকে মোঃ হায়দার আলী: বাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় বরেন্দ্র উন্নয়ন কতৃপক্ষের সেচসুবিধার উপর কঠোর বিধি নিষেধ দেয়ায় , গোদাগাড়ীতে নতুন করে বরবর্টির চাষ করে ভাগ্যের চাকা ঘুরে গেছে। রোপা আমন ধানের আবাদ কমেছে। প্রায় দু,মাস থেকে প্রতিদিন অব্যাহতভাবে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় লাগানো আমন ধানে ঠিকভাবে সার, কীটনাশক প্রয়োগ করতে না পারায় চিন্তায় পড়েছেন কৃষক। এর সাথে যোগ হয়েছে ভেজাল সার ও কীটনাশক ক্রয় করে প্রতারিত হচ্ছে অনেক কৃষক।

    কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, বিএমডিএ গভীর নলকুপের আওতায় বোরো ধান চাষ সীমিত করার নির্দেশ দেয়ায় গত বোরো ধানের আবাদ কমেছে অনেকগুন । নতুন ফসল হিসেবে বরবর্টি চাষ করেছেন বেশ কিছু কৃষক, এছাড়া, অনেক কৃষক ধান চাষে আগ্রহ হারিয়ে ভুট্টা, টমেটো, বেগুন, ভিন্ডি, শাক, সবজি, ভুট্টা আবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন।

    এটি খাট জাতের বরবটি। সাধারণ বরবটি চাষ করতে হলে মাচা তৈরি করে চাষ করতে হয় কিন্তু এই বরবটি চাষ করতে কোন মাচা লাগে না। জমি বেড করে তৈরি করে বীজ বপন করতে হয়। বীজবপনের ৫৫ -৬০ দিনে ফুল চলে আসে। আর একটি বিষয় হল এই বরবটি সারা বছর চাষ করা যায়। অনেকে সাথী ফসল হিসেবে বরবটির বীজ ইতিমধ্যে বপন করেছে।

    উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অতনু সরকার বলেন, যে সকল জমিতে গম ও আলু, মশুর চাষ করার পর সাময়িক পতিত থাকে সে সকল জমিতে আমন / আউশ লাগানো মাঝের সময়ে এই বরবটি চাষ করে কৃষক বাড়তি আয় করতে পারে। ফলে দুই ফসিল জমি তিন ফসলে পরিনত হতে পারবে।

    উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের গোলাই গ্রামের কৃষকের জিয়ারুল ইসলাম, ১ বিঘা জমিতে বরবটি চাষ করেছেন এতে তার খরচ হয়েছে ১৩ হাজার টাকা টাকা । তিনি খরচ বাদে ৪২ হাজার টাকা আয় করেছেন।

    একই গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম জানান ২৫ কাঠা জমিতে বরবটি চাষ করতে খরচ হয়েছে ১৪ হাজার ৫শ টাকা । তিনি খরচ বাদে ৫৩ হাজার টাকা আয় করেছেন বলে জানা এ কৃষক। ধান বা অন্য ফসল করে কম সময়ে এত আয় করা সম্ভাব হতো না। আমাদেরকে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অতনু সরকার মাঠ পর্যায়ে এসে বিভিন্ন পরামার্শ দিয়েছেন এতে করে খুব উপকার হয়েছে। একই ইউনিয়নের ফুলবাড়ি গ্রামের কৃষক মো: মূসা বরবটি চাষ করে ৩ হাজার ২শ টাকা খরচ করে ৮ হাজার ১শ টাকা আয় করেছেন বলে জানা গেছে।

    নতুন ফসল হিসেবে, গোদাগাড়ী উপজেলায় বরবটি চাষ করা হয়েছে ১০০ বিঘা জমিতে।
    গোদাগাড়ী উপজেলার বরেন্দ্র অঞ্চলের মাটি ও জলবায়ু বরবটি চাষের জন্য উপযোগি। বর্তমানে জনপ্রিয় হচ্ছে এই বরবটি চাষ এবার উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের ঈশ্বরীপর ব্লকে ৮০ বিঘা জমিতে বরবটি চাষ হয়েছে। আগামীতে এর চাষ আরও বাড়বে।

    গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ২ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছিল এবছর আবাদ হয়েছিল ৪ হাজার ২শ ৮০ হেক্টর জমিতে। সেই হিসাবে গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুনের বেশি ভুট্টার আবাদ হয়েছিল। অন্যদিকে গত বছর বোরোর আবাদ হয়েছিল ১৬ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু গত মৌসুমে ১৪ হাজার ৮শ” ৫০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছিল । প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে ধান আবধ কম হয়েছিল।

    এ ছাড়া গত বছর ২২ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে সরিষার অবাদ হলেও তামে হয়েছে ১৭ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছিল। গত বছর ১ হাজার ৯৮৫ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হলেও এবার হয়েছে ২ হাজার ৩৪২ হেক্টর জমিতে। পেঁয়াজ গত বছর এক হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আবাদ হলেও এবার আবাদ কম হয়েছে।

    বিএমডিএ, গোদাগাড়ী অফিস সূত্রে জানা গেছে, গোদাগাড়ী উপজেলায় ভু-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় সেচযন্ত্রে আশানুরুপ পানি/ডিসচার্জ পাওয়া যাচ্ছে না। সেই কারনে সেচযন্ত্র হতে চাহিদা মাফিক বোরো ধানে সেচ প্রদান করা সম্ভব হবে না। সেই প্রেক্ষিতে প্রতিটি সেচযন্ত্র এবং এলএলপি’র কমান্ড এরিয়ার আওতায় বোরো ধান চাষবাদ সীমীত করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। সেই সাথে ধানের পরিবর্তে কম পানি প্রয়োজন হয় বরবটি, গম, সরিষা, চীনা, মষুর, খেসাড়ী, ছোলা, ভুট্টা, টমেটো, পেয়াজ, আলু শীতকালীন সাক-সবজিসহ অন্যান্য ফসল চাষ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

    গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার মরিয়ম আহমেদ বলেন, বরবটি চাষ গোদাগাড়ীতে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ ফসলটি চাষ করার ফলে দু ফসলী জামি তিন ফসলী জমিতে পরিনত হচ্ছে স্বল্প সময়ে কুষক অন্য একটি ফসল ঘরে তুলে লাভবান হচ্ছেন। আগামীতে বরবটি চাষ অনেক হারে বৃদ্ধি পাবে। গোদাগাড়ী উপজেলা বরেন্দ্র অঞ্চল হওয়ায় ভু-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় পানি সংকটের কারনে এ অঞ্চলের কৃষকেরা পানি সাশ্রয়ী ফসল সবজি টমেটো ভুট্টা, গম, আলু, সরিষা, পেয়াজসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করছে কৃষকদের আগ্রহী করা হচ্ছে।। ভুট্টা চাষ করতে ৪ টা সেচ লাগে কিন্তু বোরো ধান চাষে ১২ টা সেচ লাগে। ভুট্টার দাম ভালো পাচ্ছে কৃষকেরা। এতে করে কৃষকেরা ভুট্টার চাষ বেশী করছে। এছাড়াও ভু-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় সেচযন্ত্রে আশানুরুপ পানি/ডিসচার্জ পাওয়া না যাওয়ায় বিএমডিএ বোরো ধানের আবাদ কমিয়ে কম পানি প্রয়োজন গম, সরিষা, চীনা, মশুর, খেসাড়ী, ছোলা, ভুট্টা, টমেটো, পেয়াজসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করতে বলেছে। ফলে এ উপজেলায় বোরো ধানের আবাদ কমেছে, বরবটি, সবজি, মৌসুমী ফসলের আবাধ বেড়েছে ভুট্টার।

    মোঃ হায়দার আলী,
    রাজশাহী।

  • তানোরে মাচায় সবজি চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে

    তানোরে মাচায় সবজি চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে

    আলিফ হোসেন,তানোরঃ
    রাজশাহীর তানোরে বর্ষাকালে মাচায় সবজি চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মাচা ব্যবহারের কারণে সবজির লতা ও ফল মাটিতে লেগে থাকে না, ফলে রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হয়। মাচায় চাষ করার কারণে ফসল পরিষ্কার থাকে এবং সহজে সংগ্রহ করা যায়। মাচায় আবাদ করা সবজি বাজারে ভাল দাম পাওয়ায় আর্ধিকভাবে লাভবান হচ্ছে চাষীরা। মাচায় সবজির আবাদ বলতে সাধারণত, লাউ, চিচিঙ্গা, পল্লা, জিঙ্গে, কুমড়া, শসা, বরবটি, সিম ইত্যাদি সবজি লতানো গাছের জন্য মাচা তৈরি করে চাষ করা হয়। এই পদ্ধতিতে,গাছের লতা উপরে উঠে যায় এবং এর ফলে ফলন বাড়ে, পোকামাকড়ের আক্রমণ কমে এবং জায়গা সাশ্রয় হয়। মাচা পদ্ধতিতে সবজি চাষ করলে ফলন সাধারণত বেশি ও বাজারে ভাল দাম পাওয়া যায়। তানোর পৌরসভার গোকুল, মাসিন্দা, ধানতৈড় ও বাজে আকচা মহল্লায় বেশী মাচায় সবজি দেখা গেছে। এছাড়াও উপজেলার চাঁন্দুড়িয়া, কামারগাঁ, কলমা, বাধাইড়, সরনজাই, তালন্দ ও পাঁচন্দর ইউপির বিভিন্ন এলাকার মাঠে স্বল্প পরিসরে মাচায় সবজি চাষ হচ্ছে। ধানতৈড় গ্রামের কৃষক হিরন ও লাল্টু বলেন,মাচায় সবজি চাষ করলে ফসলের রোগবালাই কম হয় এবং এসব ফসলের বাজারে ভাল দাম পাওয়া যায়।
    স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে
    সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় প্রায় ১৫ হেক্টর জমিতে মাচায় সবজির আবাদ হয়েছে। পুকুর-জলাশয়ের পাড়, নিচু জমি, বাড়ীর আঙ্গিনায়, জমির আইলে ও মাচায় সবজি চাষ করা হচ্ছে। পানির মধ্যে মাচায় সবজি চাষ পদ্ধতি একটি উদ্ভাবনী ও টেকসই কৃষি পদ্ধতি। মাচায় সবজির আবাদ একটি বিশেষ পদ্ধতি, যেখানে সবজির লতানো ও ঊর্ধ্বমুখী বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে মাচা তৈরি করে সবজি চাষ করা হয়। এই পদ্ধতিতে সাধারণত লাউ, কুমড়া, পটল, শসা, সিম, বরবটি, ঝিঙা ইত্যাদি সবজি চাষ করা হয়। মাচা তৈরির ফলে সবজির লতা উপরে উঠে যায় এবং আলো বাতাস ভালোভাবে চলাচল করতে পারে, যা ফলন বৃদ্ধিতে সহায়ক। এছাড়াও, মাচা পদ্ধতিতে সবজি চাষ করলে পোকামাকড়ের আক্রমণ ও রোগবালাই কম হয়। মাচা তৈরির জন্য সাধারণত বাঁশ, কাঠ বা লোহার পাইপ ও নেট জাল ব্যবহার করা হয়। সবজি চাষে বিভিন্ন প্রকার মাচা তৈরি করা হয়। ফসলের ধরনের উপর মাচা তৈরির উচ্চতা নির্ভর করে। কিছু সবজির জন্য ৫-৬ ফুট উচ্চতার মাচা তৈরি করা হয়, আবার কিছু সবজির জন্য ঝুলন্ত মাচা তৈরি করা হয়। মাচা তৈরির পর সবজির লতা মাচার উপর ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
    এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল্লাহ আহমেদ জানান, মাচায় সবজি চাষ একটি লাভজনক এবং পরিবেশ-বান্ধব কৃষি পদ্ধতি। এটি কৃষকদের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে এবং নিরাপদ সবজি উৎপাদনে সহায়তা করে। মাচায় সবজি চাষ করলে বৃষ্টির সময় গাছের ক্ষতি হয় না এবং ফলও পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে। অল্প পরিশ্রমে মাচায় সবজি চাষ লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা আর্থিকভাবে সাবলম্বি হচ্ছে,পাশাপাশি মাচায় সবজি চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।#