নাচোলে পুকুরে কেটে গেছে রাস্তা ভোগান্তিতে শিশু শিক্ষার্থীরা

মোঃ মনিরুল ইসলাম,নাচোল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার নেজামপুরে একটি পাকা রাস্তার অংশ পুকুরের পানিতে ভেঙে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শিশু শিক্ষার্থীরা। ওই রাস্তা পাড়ি দিয়েই শিক্ষার্থীদের নেজামপুর বিনোদ বিহারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেতে হয়। শুধু শিক্ষার্থীরা নয়, রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ায় গ্রামবাসীকেও দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি নাচোল উপজেলার নেজামপুর বাজার সংলগ্ন গুয়াবাড়ী দীঘিপাড়া গ্রামে অবস্থিত। এই গ্রামেই রয়েছে বিনোদ বিহারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বিদ্যালয় যেতে পুকুরটির অবস্থান। পুকুরটিতে দীর্ঘদিন থেকে স্থানীয় খাইরুল আলম মাস্টার মাছচাষ করে আসছেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, নেজামপুর ইউয়িনের ৪নং ওয়ার্ডের গুয়াবাড়ী দীঘিপাড়া গ্রামের এই রাস্তাটি নাচোল-আমনুরা প্রধান সড়কের নেজামপুর বাজার থেকে কয়েকশ ফুট দক্ষিণ দিক থেকে শুরু হয়ে পূর্ব দিকে গ্রামের মধ্য দিয়ে বিদ্যালয় ঘেঁষে নেজামপুর-হাটবাকইল সড়কে মিলিত হয়েছে। রাস্তাটির দৈর্ঘ্য প্রায় এক কিলোমিটার। এর মধ্যে স্কুলের উত্তর পাশে প্রায় ২৫ ফুট পর্যন্ত এখনো কাঁচা রয়ে গেছে। রাস্তাটি পুকুরের পাশ দিয়ে নির্মিত হয়েছে। রাস্তাটির প্রায় চারশত ফুট পুকুরের পানিতে ভেঙে গেছে। আট ফিট চওড়া রাস্তাটির কোনো কোনো জায়গায় ৫-৭ ফুট পর্যন্ত পুকুরে তলিয়ে গেছে। ফলে এই রাস্তা দিয়ে রিকশা, ভ্যান, অটোরিকশা এমনকি বাইসাইকেলও চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। তাই বাধ্য হয়েই গ্রামের শতাধিক পরিবারকে এই পথ দিয়ে হেঁটেই যাতায়াত করতে হচ্ছে।
সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে বিনোদ বিহারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। হেঁটে এই পথ পেড়িয়েই তাদের বিদ্যালয়ে যেতে হয়। যানবাহনে চলাচলের কোনো উপায় নেই। বেশি দুর্ভোগে পড়ে বর্ষাকালে। ওই সময় অভিভাবকদের পাশাপাশি শিক্ষকরাও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকেন শিক্ষার্থীদের নিয়ে, পা পিছলে পুকুরে পড়ে যাওয়ার ভয়ে।
গুয়াবাড়ী দীঘিপাড়া গ্রামের নাসিরুল জানান, অনেক দিন থেকেই নেজামপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার, চেয়ারম্যান ছাড়াও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে রাস্তা এবং পুকুরের প্রটেকশন ওয়াল বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে; কিন্তু এখনো কাজ হয়নি।
বিনোদ বিহারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনারুল ইসলাম জানান, রাস্তাটি পুকুরের পানিতে ভেঙে যাওয়ার কারণে ছাত্র-ছাত্রীরা হেঁটে আসা ছাড়া কোনো ধরনের যানবাহন ব্যবহার করতে পারে না। তিনি বলেন, বর্ষাকালে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকি। কারণ পা পিছলে গেলে পুকুরে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এছাড়া রাস্তাটির ২৫ ফুট পর্যন্ত কাঁচা থেকে যাওয়ার কারণেও বর্ষাকালে সবাইকে ভোগান্তি পোহাতে হয়।
নেজামপুর ইউপির ৪নং ওয়ার্ড সদস্য আবু তাহের জানান, আমি স্বচক্ষে রাস্তাটি দেখেছি। তবে আমি এবার নতুন মেম্বার হয়েছি। চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে যতটুকু পারি ঠিক করার চেষ্টা করব।
ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল হক জানান, এই বিষয়ে এর আগে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা সুলতানার সামনে নিজ খরচে পুকুরের প্রটেকশন ওয়াল বেঁধে দেওয়ার করার কথা বলেছিলেন খাইরুল আলম মাস্টার। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেন হয়নি, সেটা আমার জানা নেই।
এবিষয়ে খাইরুল মাষ্টার জানান রাস্তার পাশের পুকুর পাড়ের ধার গুলো ইউনিয়ন বা উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে বেঁধে দেয়া হয়, তবে এইটা কেন বেঁধে দিচ্ছে না সেটা বুঝতে পারছি না।

আপনার বেঁধে দেওয়ার কথা আছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন কথা একটা হয়েছিল, সেটা ইউনিয়ন পরিষদের সমন্বযে কিন্তু ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আর কোন পদক্ষেপ নেই নি।
ঐ অবস্থায় থেকে গেছে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদেরের সাথে যোগাযোগ করলে বিষয়টি নিয়ে এলজিইডির সাথে কথা বলে ঠিক করার ব্যবস্থা করবেন বলে জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাইমেনা শারমীন জানান, আমি নতুন এসেছি, বিধায় বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে যারা ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা আবেদন নিয়ে এলে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *