August 14, 2025, 8:19 pm
এস এম মিলন জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদের সিএ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ডাকাতি/দস্যুতা মামলা দায়েরের অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, গত ৬ (অক্টোবর) জয়পুরহাট চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ক্ষেতলাল উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের মুহরী আলী মর্তুজা চৌধুরী রবিনের ২য় স্ত্রী ফজিলাতুন নেছা বাদী হয়ে উপজেলা পরিষদের সিএ এস,এম শওকত, তার স্ত্রী জুলেখা পারভীনসহ সূর্যবান মহল্লার ইয়াসমিন এর নামে ৩৯৪/৩৪ ধারায় ৮৩ পি/২২ নং একটি ডাকাতি/দস্যুতা মামলা দায়ের করেছেন।
ঘটনার বিবরনে জানা যায় যে, বাদী ক্ষেতলাল সদরের মেইন রোড সংলগ্ন সেকেন্দার আলীর বাসার নীচ তলাতে ভাড়া থাকে। সে ও তার স্বামী রবিন উপজেলা ক্যাম্পাসের উত্তর পশ্চিম পার্শ্বে বাড়ী নির্মান করতেছে। উপজেলা পরিষদের সিএ শওকত পরিষদের বাসা-বাড়ীর শ্যামলী ভবনে বসবাস করেন। সেই ভবনের সামনে রবিন বাসা নির্মাণের সামগ্রী রাখলে চলাচলে কিছুটা সমস্যা হয় বিধায় রবিন ও তার স্ত্রীকে সে সব মালামাল সরিয়ে নিতে বললে তাদের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে রবিনে স্ত্রী গত ২৭/০৯/২০২২ তারিখ দুপুর ১২:৩০ ঘটিকায় তার ক্ষেতলাল বাজারের সদর রাস্তা সংলগ্ন ভাড়া বাসায় ডাকাতি/দস্যুতা করে নগদ ৪ লক্ষ টাকা ও ২লক্ষ ৪০ হাজার টাকার গহনা ডাকাতি করে নিয়ে আসে মর্মে আদালতে মামলা দায়ের করেছে।
মামলার বিবাদী উপজেলা পরিষদের সিএ এসএম শওকত বলেন, আমাকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি সঠিক তদন্ত পূর্বক এর সুষ্ঠু আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নিকট আবেদন জানান।
এ বিষয়ে বাসার মালিক সেকেন্দার আলী জানান যেহেতু আমার বাসায় আমি নিজেও বসবাস করি সেহেতু আমি জানি এ রকম কোন ঘটনা ঘটেনি। একই বাসার অপর ভাড়াটিয়া প্যাথলজিস্ট এনামুল হক জানান, তাদের বাসায় এর রকম কোন ডাকাতি বা দস্যুতার ঘটনা ঘটেনি।
মামলায় উল্লেখিত বাসা সংলগ্ন ক্ষেতলাল বাজারের বিভিন্ন দোকান মালিক, আত্তাব হোসেন, খায়রুল, জার্যিস সহ অনেকে সাথে কথা বললে তারা বলেন, ক্ষেতলাল বাজারে দিনের বেলা এত বড় কোন ঘটনা ঘটেনি ঘটলে আমরা নিশ্চয় জানতাম। বাজারে হই হই পড়ে যেত। এ রকম কোন ঘটনা আদৌ ঘটেনি এসব সাজানো।
এ বিষয়ে একই বাসার ভাড়াটিয়া ক্ষেতলাল উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও আলমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ারুজ্জাম তালুকদার নাদিম বলেন, ডাকাতির কোন ঘটনা ঘটেনি তারপরেও রবিন ও তার স্ত্রীর এ রকম একটি মিথ্যে মামলা দায়ের করা উচিত হয়নি।
ক্ষেতলাল বাজারে বসবাসকারী পৌর মেয়র সিরাজুল ইসলাম বলেন তার পৌর এলাকার ক্ষেতলাল বাজারে দিনের বেলা এ রকম কোন ডাকাতি/দস্যুতার ঘটনা ঘটেনি।
এ বিষয়ে ক্ষেতলাল থানার সদ্য বদলী হওয়া সাবেক অফিসার ইনচার্জ রওশন ইয়াজদানীর সাথে মোবাইলে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান যে, তিনি থাকাকালিন কোন ডাকাতি/দস্যুতার ঘটনা ঘটেনি। এ রকম কোন ঘটনা ঘটলে পুলিশ নিশ্চয় বিষয়টি সম্পর্কে অবগত থাকত ও প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করত।
থানার বর্তমান অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুল হক জানান, কোর্ট থেকে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে সঠিক প্রতিবেদনই প্রেরণ করবে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাকিম মন্ডল বলেন, আমার পরিষদের সিএ এসএম শওকত উক্ত তারিখে পুরো সময় (সকাল ৮:০০-বিকাল ০৩:টা) অফিসে থেকে আমাকে ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দাপ্তরিক কাজে সহযোগিতা করেছে।
এ ব্যপারে বাদীর স্বামী আলী মর্তুজা চৌধুরী রবিনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ঘটনার দিন অভিযুক্ত ও তার স্ত্রী মিলে আমার ভাড়া বাসায় এসে স্ত্রী কে মারধর করে নগদ ৪ লক্ষ টাকা ও ২লক্ষ ৪০ হাজার টাকার গহনা ডাকাতি করে নিয়ে যায় পরে আমি বাসায় গিয়ে আমার স্ত্রী কে হাসপাতালে ভর্তি করায়। এতো বড় ডাকাতির ঘটনা অথচ ওই বাসার মালিক ও স্থানীয়রা কেউ বলতে পারেনা এবিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাসা মালিক কি সব সময় বাসায় থাকে যে ডাকাতির সময় তিনি ঘটনাটি দেখবেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন গণমাধ্যম কর্মী কে আমি বলিনি, এই নিউজ আপনাদেরকে করতে করতে হবে না।