পাসপোর্ট অফিসে অনিয়ম দালালের কথা মতো না চললে বাড়তি ভোগান্তিতে সেবা গ্রহীতারা

মোঃ বাবুল হোসেন পঞ্চগড়।

পঞ্চগড়ে ঘুষ ছাড়া ফাইল নড়ে না দালালের দৌরাত্ম্য বেড়েছে পঞ্চগড়ে পাসপোর্ট করতে গিয়ে নিদারুণ হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। অভিযোগ উঠেছে ঘুষ না দিলে ফাইল জমা নিচ্ছেন না আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা গত কয়েক দিন ধরে ফেসবুক জুড়ে চলছে পাসপোর্ট অফিসের ঘুষ দালাল বাণিজ্য বাবুদের দেখলে মনে হয় অনেকটা ভাজা মাছ উলটে খেতে জানেনা

নানা রকমের অজুহাত দেখিয়ে গ্রহীতাদের কয়েকদিন ঘোরাচ্ছেন তারা। এতে সময় মতো পাসপোর্ট পাচ্ছেন না তারা।

পঞ্চগড় রৌশনাবাক লিমা আক্তার জানান গত কয়েকদিন ধরে ঘুরাচ্ছে তারা কি বলবো ভাষা খুজে পাচ্ছি না

অন্যদিকে খরচও বেড়ে যাচ্ছে দ্বিগুণ।

নিয়ম অনুযায়ী অনলাইনে ফরম পূরণ করে পাসপোর্টের সকল শর্তের কাগজ পত্র সংযুক্ত করে অফিসে জমা দিতে হয়। জমা দেয়ার পরেই তাদের ছবি তোলা হয়। এরপর পাসপোর্ট ডেলিভারি দেয়ার একটি তারিখ দেয়া হয়।

কিন্তু পাসপোর্ট গ্রহীতাদের অভিযোগ নানা জটিলতা সৃষ্টি করে ঘুষ দাবি করা হয় দালালের মাধ্যমে।

জানা গেছে, পঞ্চগড়ের অধিকাংশ পাসপোর্ট প্রত্যাশী শহরের পাসপোর্ট অফিস সংলগ্ন গড়ে ওঠা বিভিন্ন কম্পিউটারের দোকানে অনলাইনে আবেদন পত্র পূরণ করেন। তারপর অফিসে গেলে আবেদন ফরমে নানা ধরনের ভূল বের করা হয়। পরে জমা না নিয়ে ভুল শুধরে আসতে বলা হয়।

ভুল শুধরে আসার পর জমা দেয়ার জন্য আবার একটি তারিখ নির্ধারণ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এভাবে শুধুমাত্র ফরম জমা দেয়ার জন্যই ৩ থেকে ৪ দিন ঘুরতে হয়। কিন্তু অনলাইন ফরম পূরণের ওই দোকানগুলোর মাধ্যমে জমা দিলে তাৎক্ষণিক আবেদন পত্র জমা নেয়া হয়। এ জন্য বাড়তি ১ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। এসব কম্পিউটারের দোকানদাররা বলছেন, এই টাকা দিতে হয় পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারিকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কম্পিউটার দোকানের একজন মালিক বলেন এদের আবার দালালগুলো আরও বেপরোয়া

তেঁতুলিয়া উপজেলার বৈরাগীগজ গ্রামের লুৎফর রহমান জানান, বাবাকে চিকিৎসার জন্য ভারতে নিয়ে যাব। এ জন্য পাসপোর্ট নবায়ন করতে এসে কয়েকদিন ঘুরতে হয়। পরে মামুনি কম্পিউটারের স্বত্বাধিকারি মিলন হোসেন জানায় অফিসে ১ হাজার টাকা দিলে আজকেই জমা নিবে। তাকে ১ হাজার টাকা দিলে ওই দিনই পাসপোর্ট জমা নেয় অফিস কর্তৃপক্ষ।

আমজুয়ানী এলাকার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া জালাল হোসেন জানান, সব কাগজ পত্র ঠিক আছে। তারপরও আমাকে তিন দিন ঘুরতে হয়েছে। আমার কাছে অপরিচিত একজন দালাল ১ হাজার টাকা চেয়েছিল। যাওয়া আসা করতেই আমার ২ হাজার টাকা খরচ। পরে একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির হস্তক্ষেপে ফাইল জমা দিয়েছি।

মামুনি কম্পিউটারের স্বত্বাধিকারী মিলন হোসেন জানান, পাসপোর্ট করতে এসে অনেকে হয়রানির শিকার হয়। তখন তারা আমাদেরকে অনুরোধ করে। আমরা তখন প্রতি পাসপোর্টে ১ হাজার টাকা নিয়ে পঞ্চগড় আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের অফিস সহকারী শাহরিয়ার আহমেদকে দেই। তিনি অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তাদের দেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। আমাদের কম্পিউটারের দোকানগুলো সকলের কাছ থেকে এভাবে অফিস কর্তৃপক্ষ টাকা নেয়। ১ হাজার টাকা তাদের হাতে দিলেই ফাইল জমা নেন তারা।

এ ব্যাপারে শাহরিয়ার আহমেদ ঘুষের বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, আমাদের নাম ভাঙ্গিয়ে অনেকে টাকা নিতে পারেন। এর দায় আমার নয়। অফিসে কেউ টাকা নেয় না। হয়রানির ব্যাপারে তিনি বলেন আমরাই হয়রান হয়ে যাচ্ছি।

পঞ্চগড় আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপসহকারী পরিচালক জাকির হোসেন জানান, আমাদের অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারিরা ঘুষ নেয় এই অভিযোগ সত্য নয়। তারপরও বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।

প্রতিদিন শতাধিক মানুষ পাসপোর্ট করতে এসে এভাবেই প্রতারিত এবং হয়রানির শিকার হচ্ছেন। জেলা মাসিক উন্নয়ন সভায় তুলে ধরেন ভুক্তভোগিরা। এ সময় জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম পাসপোর্ট অফিসের উপসহকারী কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *