নোয়াখালীর সেবারহাটে সম্পত্তিগত বিরোধের জেরে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত – ৩

রফিকুল ইসলাম সুমন (নোয়াখালী)

নোয়াখালীর সেনবাগে ঐতিহ্যবাহী সেবারহাট বাজারে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকানা সংক্রান্ত দীর্ঘ মেয়াদী বিরোধের জেরে দু’পক্ষের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় ৩ জন আহত এবং এক পক্ষ অপর পক্ষকে মারধরের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে।সংঘাত এড়াতে ও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সেনবাগ থানা পুলিশ,স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দগন।সরজমিনে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সেবারহাট খাদ্য ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী আবুল খায়ের ও তারই সহোদর সেবারহাট বানিজ্য বিতানের স্বত্বাধিকারী আবুল কালামের মধ্যে ওয়ারিশান সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছিলো।বিগত সময়ে দফায় দফায় শালিস ও দু’পক্ষের দায়েরকৃত থানা- কোর্টে বেশকিছু মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে এবং বর্তমানে আরো ২ টি মামলা রায়ের অপেক্ষায় চলমান রয়েছে।
তারই ফলশ্রুতিতে ৭ অক্টোবর শুক্রবার সকালে সেবারহাট খাদ্য ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী আবুল খায়ের ও সেবারহাট বানিজ্য বিতানের স্বত্বাধিকারী আবুল কালাম এবং তার পুত্র সৌরভসহ মালিকানা সংক্রান্ত বিষয়ে পুনরায় বাকবিতন্ডা ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।এসময় আবুল খায়ের, আবুল কালাম ও সাইফুল ইসলাম সৌরভ গুরুতর আহত হওয়ার অভিযোগ উঠে।

এবিষয়ে জানতে চাইলে সেবারহাট খাদ্য ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী আবুল খায়ের জানান,শালিসদারদের সিদ্ধান্তক্রমে আমি সেবারহাট বানিজ্য বিতানের অর্ধেক সম্পত্তির মালিকানা প্রাপ্ত হই।আজ সকালে আমি আমার উক্ত মালিকানাধীন
দোকানে সাইনবোর্ড লাগানো ও দোকান খুলতে গেলে,আমার প্রতিপক্ষ আবুল কালামের পুত্র বানিজ্য বিতানের পরিচালক সাইফুল ইসলাম সৌরভ ও তার ৫-৭ জন ভাড়াটে সন্ত্রাসী আমার কাজে বাধা সৃষ্টি করে এবং আমার উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে- আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বেদড়ক মারধর করে।পরে স্থানীয় জনতা সন্ত্রাসীদের হাত থেকে আমাকে উদ্ধার করে। এসময় সৌরভ আমার নিকট ৭০ ( সত্তর) লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। সৌরভ বলে আমি দোকানে প্রবেশ করতে হলে তাকে ৭০ লক্ষ টাকা দিয়ে তার পরে প্রবেশ করতে হবে।

অপরদিকে সেবারহাট বানিজ্য বিতানের পরিচালক সাইফুল ইসলাম সৌরভ গণমাধ্যমকে জানান,আমার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন।সর্বশেষ শালিসি বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেবারহাট বানিজ্য বিতানের পশ্চিমের অর্ধেকাংশ সম্পত্তির মালিক হন আমার চাচা খাদ্য ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী আবুল খায়ের। পাশাপাশি উক্ত দোকানের পিছনের দিকে গোডাউনসহ ৫ শতাংশ সম্পত্তির মালিক হই আমরা। শালিসের রায় হলো তিনি আমাদের পিছনের ৫ শতাংশ সম্পত্তি বুঝিয়ে দিয়ে তারপর দোকানের ভিতরের অংশের অর্ধেক সম্পত্তির দখলে যাবেন।কিন্তু তিনি তা না করে আজ সকালে হঠাৎ করে তার বহিরাগত লোকজন নিয়ে আমাদের অনুপস্থিতিতে অদ্যবধি পর্যন্ত আমার দখলে থাকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সাইনবোর্ড
ঝুলানো,দোকানের তালা ভেঙে উনাদের তালা লাগানো, আমি ও আমার বাবাকে উপর্যুপরি মারধর সহ স্বপরিবারে হত্য করার হুমকি প্রদর্শন করে।উনি দোকানের অর্ধেক সম্পত্তির দখলে আসতে হলে আমাদেরকে পিছনের ৫ শতাংশ সম্পত্তি বুঝিয়ে দিয়ে তারপর দখলে আসতে হবে।এদিকে বাজারের থমথমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও পুনঃ সহিংসতা এড়াতে উভয় পক্ষকে তাদের নিজ নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিরোধকৃত দোকান পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সেনবাগ থানা পুলিশ।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *