আরিফ রববানী ময়মনসিংহ।।
ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় শেডাউনের মাধ্যমে ময়মনসিংহ জেলার ১১টি সংসদীয় আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মোট ৯৪ জন প্রার্থী।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. সাইফুর রহমান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান-জেলার ১১টি আসনে মোট ১১৭ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও তার মাঝে জমা পড়েছে ৯৪ টি। তার মাঝে
ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট–ধোবাউড়া) আসনে ১১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও শেষ পর্যন্ত জমা পড়েছে নয়টি। এদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপির দলীয় প্রার্থী সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, স্বতন্ত্র প্রার্থী সালমান ওমর রুবেলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা।
ময়মনসিংহ-২ (ফুলপুর–তারাকান্দা) আসনে বিএনপির প্রার্থী মোতাহার হোসেন তালুকদারসহ মোট ১৩ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা দিয়েছেন নয়জন। এই তালিকায় বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা রয়েছেন।
ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার এম. ইকবাল হোসাইন। একই সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন উপজেলা বিএনপির সদ্য বহিষ্কৃত আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আহম্মেদ তায়েবুর রহমান হিরন। এই আসনে মোট সাতজন মনোনয়নপত্র জমা দেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন জামায়াতের মাওলানা বদরুজ্জামান, নেজামে ইসলাম পার্টির হাফেজ মাওলানা আবু তাহের খান এবং এনসিপির কবি সেলিম বালা। যদিও এখানে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন মোট আটজন।
ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসন বিভাগীয় শহর হওয়ায় মনোনয়ন দাখিলে ছিল বাড়তি আগ্রহ। ১২ জন মনোনয়ন সংগ্রহ করলেও জমা দিয়েছেন ১০ জন। উল্লেখযোগ্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন ধানের শীষের প্রার্থী ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ, জামায়াতের কামরুল আহসান এমরুল, খেলাফত মজলিসের মুফতি কাজী মোশতাক আহমাদ ফারুকী এবং সিপিবির অ্যাডভোকেট এমদাদুল হক মিল্লাত,গণসংহতি আন্দোলন,মোস্তাফিজুর রহমান, জাতীয় পার্টি,আবু মোঃ মুসা সরকার, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর মোঃ নাসির উদ্দিন,বাংলাদেশ সুপ্রিম পাটি (বি.এস.পি) মোঃ লিয়াকত আলী, ন্যাশনাল পিপলসপার্টি (এনপিপি)মোঃ হামিদুল ইসলাম,বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসকাদী) শেখর কুমার রায়,
ময়মনসিংহ-৫ (মুক্তাগাছা) আসনে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবলু মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তার বিপরীতে রয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা। এখানে আটজন মনোনয়ন সংগ্রহ করলেও জমা দিয়েছেন ছয়জন।
ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়ীয়া) আসনে ১০ জন মনোনয়ন সংগ্রহ করলেও জমা দিয়েছেন নয়জন। উল্লেখযোগ্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপির আকতারুল আলম ফারুক, জামায়াতের অধ্যক্ষ কামরুল হাসান মিলন
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মোঃ নূরে আলম সিদ্দিকী, খেলাফত মজলিস এরব মোঃ রফিকুল ইসলাম এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক জসীম উদ্দিন,আখতার সুলতানা, তানভীর আহমেদ রানা,মোহাম্মদ আব্দুল করিম প্রমুখ।
ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. মাহাবুবুর রহমান লিটন প্রার্থী হয়েছেন। এখানে ১২ জন মনোনয়ন সংগ্রহ করলেও জমা দিয়েছেন নয়জন, যারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন।
ময়মনসিংহ-৮ (ঈশ্বরগঞ্জ) আসনে মনোনয়ন সংগ্রহ করা সাতজন প্রার্থীই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাদের মধ্যে ধানের শীষের প্রার্থী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক প্রকৌশলী লুৎফুল্লাহেল মাজেদ বাবু এবং বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হওয়া শাহ নূরুল কবীর শাহীন,বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ মনজুরুল হক হাসান, এডিপি’র মনোনীত প্রার্থী ড. আওরঙ্গজেব বেলাল এডভোকেট, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মনোনীত প্রার্থী সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আহম্মদ হোসেন উল্লেখযোগ্য।
ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল) আসনে ১৪ জন মনোনয়ন সংগ্রহ করলেও জমা দিয়েছেন ১০ জন। তাদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপির ইয়াসের খান চৌধুরী এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান এ কে এম আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ এর সাইদুর রহমান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের শামসুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির হাসমত মাহমুদ, গণ ফোরাম এর লতিফুল বারী হামিম
স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রফেসর ড এ আর খান,পিন্টু চন্দ্র বিশ্বশর্মা,মোঃ মামুন বিন আব্দুল মান্নান,হাসিনা খান চৌধুরী সহ অন্যান্য দলের প্রার্থীরা।
ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনে বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আখতারুজ্জামান বাচ্চু। এখানে ১৫ জন মনোনয়ন সংগ্রহ করলেও জমা দিয়েছেন ১২ জন। তালিকায় একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থীও রয়েছেন।
ময়মনসিংহ-১১ (ভালুকা) আসনে বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফখরুদ্দিন আহম্মেদ বাচ্চু,জামায়াতে ইসলামির মোহাম্মদ ছাইফ উল্লাহ পাঠান,ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ এর মোস্তফা কামাল,জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির জাহিদুল ইসলাম, গণঅধিকার পরিষদ এর মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন মুহাম্মদ মোর্শেদ আলম।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রেজা মো. গোলাম মাসুম প্রধান জানান, জেলায় মোট ১১৭ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন, যার মধ্যে ৯৪ জন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মনোনয়ন দাখিল করেছেন। তিনি বলেন, এখন নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী নির্বাচনি কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া হবে। নির্বাচনী আচরণবিধি কঠোরভাবে মানা হবে এবং সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্ক থাকবে।

Leave a Reply