চাঁদা প্র-ত্যাখান করায় স-ন্ত্রাস তা-ন্ডবে আহত সহিদ হাসপাতালে

মোঃ তরিকুল ইসলাম তরুন | কুমিল্লা
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন হায়দরাবাদ গ্রামে জমিতে মাটি ভরাটকে কেন্দ্র করে চাঁদা দাবির জেরে প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী হামলা, মারধর ও নগদ অর্থ ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অন্তত দুইজন ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ভুক্তভোগীদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় এবং হত্যার পর লাশ গুম করার ভয় দেখানো হয়েছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
ঘটনার শিকার মৃত জব্বর মিয়ার ছেলে সহিদ মিয়া (৪২), হায়দরাবাদ গ্রামের বাসিন্দা, এ বিষয়ে বাঙ্গরা বাজার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত রবিবার (২১ ডিসেম্বর ২০২৫) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে হায়দরাবাদ সামছুল হক কলেজের দক্ষিণ পাশে হারুন মিয়ার বাড়ির সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
সহিদ মিয়ার খালাতো ভাই আলমগীর হোসেন মনির তার ক্রয়কৃত জমিতে মাটি ভরাটের উদ্দেশ্যে শ্রমিকসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় একই গ্রামের হারুন মিয়া, ময়নাল, হান্নান, দেলোয়ার, রুবেল ও আবু কালামসহ আরও ৪–৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি সেখানে এসে কাজ চালিয়ে নিতে হলে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে হান্নান মিয়ার হাতে থাকা ধারালো ছেনি দিয়ে আলমগীর হোসেনের মাথায় কোপ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। আত্মরক্ষার সময় তিনি মাটিতে পড়ে গেলে ওই কোপ ভুক্তভোগী মো. বাবুর পায়ে লাগে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। একই সময় ময়নালের হাতে থাকা লোহার রড এবং অন্য বিবাদীদের হাতে থাকা বাঁশ ও কাঠ দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, হামলার একপর্যায়ে বিবাদীরা মো. বাবুর পকেট থেকে ড্রেজার মেশিনে মাটি কাটার কাজে ব্যবহারের জন্য রাখা নগদ ৯০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। আহতদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। যাওয়ার সময় তারা ভবিষ্যতে চাঁদা না দিলে হত্যা এবং এলাকা ছাড়তে বাধ্য করার হুমকি দেয়।
পরে আহতদের উদ্ধার করে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাজনিত ব্যস্ততার কারণে অভিযোগ দায়েরে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাদী সহিদ মিয়া।
ভুক্তভোগীদের দাবি, ঘটনাস্থলের আশপাশের বাজার এলাকায় স্থাপিত সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করলে পুরো ঘটনার দৃশ্যমান প্রমাণ পাওয়া যাবে, যা তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত হারুন মিয়ার বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকের পরিচয় জানতে পেরেই চরম অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। তিনি অকথ্য ভাষায় গালাগালি, কটু মন্তব্য করেন এবং একপর্যায়ে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করেন। ঘটনার বিষয়ে কোনো সদুত্তর না দিয়ে সাংবাদিকের প্রতি এমন আগ্রাসী আচরণ পেশাদার সাংবাদিকতার স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের অধিকারের প্রতি চরম অবজ্ঞার বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
এ প্রসঙ্গে বাঙ্গরা বাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল কাদের বলেন, “ঘটনার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। অভিযোগের বিষয়বস্তু গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *