ইমদাদুল হক, পাইকগাছা(খুলনা)।।
ঘন কুয়াশা আর হালকা বাতাসে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। শীতের তীব্রতা বাড়ায় পাইকগাছাসহ উপকূল অঞ্চলের সাধারণ মানুষের ভূগান্তি বাড়ছে। তাই শীত নিবারণে পাইকগাছায় ফুটপথের দোকান গুলোতে নতুন-পুরাতন শীত বস্ত্র বিক্রির ধুম লেগেছে। সারাদেশে শীত জেকে রসেছে। প্রচন্ড শৈত প্রবাহ ও হাঁড় কাঁপানো শীতে মানুষ সহ প্রাণী কুল জুবথুব হয়ে পড়েছে। এই শীতে প্রত্যেকের জন্য শীতবস্ত্র আবশ্যক হয়ে পড়েছে। নিন্ম আয়ের মানুষ ও দরিদ্রদের ভরসা কমদামের ফুটপথের শীতবস্ত্রের দোকান। যে যার সাধ্যমত শীতবস্ত্র ক্রয় করছে। তীব্র শীতে নতুন শীতবস্ত্রের পাশাপাশি পুরাতন শীতবস্ত্র বিক্রি হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে।
পাইকগাছায় ২-৩টি স্থায়ী পুরাতন কাপড়ের দোকান থাকলেও শীতের এ সময় পাইকগাছা মাছ কাটা রোড ও পৌরসভার পাশের ৬/৭টি পুরাতন শীতবস্ত্রের দোকান বসে। তাছাড়া উপজেলার বিভিন্ন সাপ্তিহিক হাটে শীত বস্ত্র বিক্রি হচ্ছে। এসব দোকানে শীতের জ্যাকেট, সুয়েটার, কোর্ট, মাফলার, গেঞ্জী, মোজা ও মেয়েদের বিভিন্ন ডিজাইনের গরম কাপড়ের পরসা সাঁজিয়ে বসেছে। শীতের তীব্রতা বাড়ায় শীত বস্ত্রের বিক্রি ও বেড়েছে।
পুরাতন কাপড়ের দোকানে অনেক ভাল মানের পোশাক পাওয়া যায়। যা কিনা নতুন কাপড়ের দোকানে পাওয়া যায় না। সে জন্য মাঝে মধ্যে এসব দোকানে উচ্চ বিত্তদের উকি ঝুঁকি দেখা যায়। গরীব মানুষ পুরাতন কাপড় কম দামে কেনার জন্য ফুটপথের দোকানে ভীড় করে বেশি। পুরাতন কাপড় ব্যবসায়ী সরোয়ারা গাজী, মনির ও আবুল হোসেন জানায়, শীত বেড়ে যাওয়ায় বেচাকেনা ভাল হচ্ছে। বাচ্চাদের শীতবস্ত্র বিক্রেতা ইউছুপ আলী জানান, শুরুতে শীত কম থাকায় বিক্রি তেমন একটা ছিল না। তবে তীব্র শীত শুরু হওয়ায় বাচ্চাদের পোশাকের চাহিদা বেড়েছে, তেমনি বিক্রি হচ্ছে প্রচুর পরিমাণ। ২০-৩০ টাকা থেকে শুরু করে ৫শ থেকে ৮শ টাকা দর থেকে বিভিন্ন দামের পোশাক রয়েছে। তারা আরও জানায় উচ্চবিত্ত ক্রেতাদের কোন পোশাকটি পছন্দ হলে এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকায় বিক্রি করা যায়। শীতে বস্তিবাসী, দরিদ্র, ও নিম্ন আয়ের মানুষের পছন্দ কম দামের পুরাতন শীতবস্ত্রের ফুটপথের দোকান। তাই শীত জেঁকে বসায় দরিদ্র ও অল্প আয়ের মানুষ শীতের হাত থেকে বাঁচতে শীতবস্ত্র কিনছে ফুটপথ থেকে।
পাইকগাছায় কুমড়া বড়ি তৈরীর করতে মিশ্রণ মেশিনে উপচে পড়া ভীড়
ইমদাদুল হক, পাইকগাছা (খুলনা)।।
পাইকগাছায় মেশিনে মাসকালাই মাড়াইয়ের ভিড় বাড়ছে। আগে ঢেঁকি বা শিলপাটায় পেশাই করে বড়ি তৈরি করা হতো, কিন্তু এখন মেশিন ব্যবহার করে দ্রুত ও কম পরিশ্রমে মাষকলাই এবং কুমড়ো একসাথে মিহি করা হচ্ছে, যা সময় ও শ্রম বাঁচায়। এই মেশিন ব্যবহারের ফলে বাণিজ্যিকভাবে বড়ি উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে।
কুমড়া বড়ি তৈরির এই যান্ত্রিক পদ্ধতি শ্রমিক সংকট দূর করে, উৎপাদন খরচ কমায় এবং সময় সাশ্রয় করে। ধান মাড়াইয়ের মতো মাসকালাই মাড়াইয়েও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে, যা গ্রামের নারীদের জন্য একটি সুবিধাজনক সমাধান।
কুমড়া বড়ি তৈরির জন্য পাইকগাছার বিভিন্ন হাট- বাজারে মেশিন বসানো হয়েছে। এই মেশিনে মাষকলাইয়ের ডাল ও চালকুমড়া মাড়াই করে মসৃণভাব তৈরি করা হয়। খুব ভোর থেকে এই মেশিনে মাষকলাইয়ের ডাল ও চালকুমড়া মাড়াই করা শুরু হয়। মেশিনে মাষকলাইয়ের ডাল ও চালকুমড়া মাড়াই করে মসৃণ বাড়িতে নিয়ে পেস্ট মতন তৈরি করে বড়ি দেওয়া হয়। পাইকগাছার নতুন বাজারে কুমড়া বড়ি মাড়াই মেশিন পরিচালক নুর ইসলাম বলেন, কেজি প্রতি মাষকলাই ১৫ টাকা ও টালকুমড়া ১০ টাকা দরে মাড়াই করা হয়।
কুমড়া বড়ি তৈরির জন্য মাষকলাইয়ের ডাল ও চালকুমড়া একসঙ্গে মেশাতে হবে। প্রথমে মাষকলাইয়ের ডাল সারারাত ভিজিয়ে বেটে, বেলেন্ডারে বা মেশিনে পেস্ট তৈরি করতে হবে। এরপর চালকুমড়ার পেস্ট একসঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে অনেকক্ষণ ধরে মাখাতে হবে, যাতে মিশ্রণটি ফ্লাপি হয়ে ওঠে।
কুমড়ার বড়ি তৈরির মিশ্রণ মেশিনের দোকানে ভিড় বাড়ার কারণ হলো শীতকালে বড়ির চাহিদা বৃদ্ধি এবং হাতে তৈরির তুলনায় মেশিনের সাহায্যে দ্রুত ও সহজে বড়ি তৈরি করার সুবিধা।
মেশিনের সাহায্যে বড়ি তৈরি সহজ হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন বাড়ছে, যার ফলে মেশিন ব্যবহারের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাধারণত চাল কুমড়া ও মাসকলাই ডালের মিশ্রণে বড়ি তৈরি হয়। শীতকালে কুমড়া বড়ির চাহিদা অনেক বেশি থাকে, তাই এই সময়ে উৎপাদন বাড়াতে মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে।
ইমদাদুল হক,
পাইকগাছা খুলনা।

Leave a Reply