কোটালীপাড়ায় ক্ষ-তিপূরণ না দিয়ে দোকান মালিককে বিপাকে ফেলার অভিযোগ ভা-ড়াটিয়ার বিরু-দ্ধে

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার ঘাঘর বাজার পুরনো ব্যাংক ভবন মার্কেটে ভাড়াটিয়া রহিম দাড়িয়া বোরখার দোকানের জন্য মাহাবুব সুলতানের নিকট থেকে ভাড়া নেয়। ভাড়াটিয়া রহিম দাড়িয়া তিন বছরের চুক্তিনামায় দুটি দোকানকে একটি দোকান বানিয়ে গত ১-৪-২২ ইং তারিখ থেকে ৩০-৯-২৪ ইং তারিখ ৩ বছরের চুক্তিনামা ৪ লক্ষ টাকা অগ্রীম, মাসিক ৫০০০ টাকার ১ হাজার টাকা প্রতি মাসে কর্তন বাদে মাসিক ৪ হাজার টাকা ভাড়ায় চুক্তিনামা হয়। দোকান মালিক মাহাবুব সুলতান প্রথমে মার্কেটের কথা ভেবে দুটি দোকানকে একটা দোকান বানাতে চাইনি। কিন্তু ভাড়াটিয়া রহিম দাড়িয়া দীর্ঘ বছর ব্যবসার আশ্বাস দেওয়ায় দুটি দোকান একটি দোকান করে ভাড়া নেয়। কিছুদিন পর ভাড়াটিয়া রহিম দাড়িয়া দোকান খুলেন তো খুলেন না। এক সময় স্থায়ীভাবে দোকান বন্ধ রেখে গা-ঢাকা দেয় ভাড়াটিয়া রহিম দাড়িয়া। শোনা যায় এলাকায় এবং বাজারের বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে টাকা ধার আনে। ধারের টাকা ফেরত না দিতে পারায় এলাকা থেকে পালিয়ে যায় সে এবং টাকার মামলায় হাজত খেটেছে।

এদিকে দোকান মালিক মাহাবুব ভাড়াটিয়াকেও পাচ্ছে না, দোকান ঘরের মাসিক ভাড়াও পাচ্ছেন না। হঠাৎ করে দোকান মালিক মাহবুব সুলতানের নামে ২২-০৯-২৫ ইং তারিখে কোটালীপাড়া থানায় ভাড়াটিয়া রহিম দাড়িয়া দোকান মালিক মাহবুব সুলতানের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে উল্লেখিত দোকানের অগ্রিম ফেরত না দিয়ে ভাড়া দিয়েছে মর্মে।

পরে এ বিষয়ে কোটালীপাড়া থানার তদন্ত অফিসার এস আই সাইফুর রহমান সরেজমিনে এসে দেখেন দোকানটি রহিম দাড়িয়ারই রয়েছে এবং রহিম দাড়িয়ার নামের সাইনবোর্ড দেখতে পান। পরে তদন্তে অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা না মেলায় ভাড়াটে দোকান ঘর মালিকের বিরুদ্ধে গত ২৮-১০-২৫ ইং তারিখে গোপালগঞ্জ আদালতে একই অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।

দোকানের চুক্তিনামায় যে সকল সাক্ষী উপস্থিত ছিলেন তাদের কাছে জানতে চাইলে কেরামত আলী হাওলাদার বলেন, দোকানটি রহিম দাড়িয়ার অনুরোধে ভাড়া এনে দেওয়া হয়েছিল। দুঃখের বিষয় আমাদের বা ঘাঘর বাজার বনিক সমিতিকে না জানিয়ে হঠাৎ করে মামলা দেওয়াটা ঠিক হয়নি। দ্বিতীয় সাক্ষী, মতি মুন্সী বলেন, থানায় বসে রহিম দাড়িয়াকে জিজ্ঞেস করেছিলাম দোকান নেওয়ার সময় আমাদের হাত পা ধরেছিলে আর এখন মামলা দিয়েছো আমরা জানলামও না। তৃতীয় সাক্ষী, নান্নু হাওলাদার বলেন, দোকান মালিককে দিয়ে অনেক টাকা খরচ করে দুইটি দোকান ভেঙে একটি দোকানে পরিণত করে। হঠাৎ করে দোকান বন্ধ রেখে দেনার কারণে পালিয়ে যায়।এদিকে দোকান বন্ধ থাকায় মার্কেটের ক্ষতি হচ্ছে অন্যদিকে মালিক কোন ভাড়া পাচ্ছে না। এ বিষয়টি বাজারের অধিকাংশ ব্যবসায়ী জানেন। আইনগতভাবে এবং সামাজিকভাবে দোকান মালিককে ক্ষতিপুরণ না দিতে এই মিথ্যে অভিযোগ করে থাকতে পারে। ঘাঘর বাজার বনিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল বলেন মার্কেটের এই দোকানটি কয়েক বছর বন্ধ দেখতেছি। ভাড়াটিয়া রহিম দাড়িয়াকেও দেখিনা।দোকান মালিক অসামাজিক ব্যক্তি নয় যে কারণে মামলা দায়ের করতে হবে। তাছাড়া বিষয়টি বাজারের ব্যবসায়ীদের সহ বণিক সমিতিকে জানাতে পারতো।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী দোকান মালিক মাহাবুব সুলতান বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। এতোদিন সে আমাকে অর্থনৈতিক ক্ষতি করেছে এখন আমার মানসম্মান ক্ষুন্ন করতেছে। সরেজমিনে তদন্ত করে দেখেন তার অভিযোগের সামান্য একটি বাক্য যদি সত্য হয়, তাহলে আমি কয়েক গুণ টাকা সহ যেকোন শাস্তি মেনে নেব। আমাকে দিয়ে দোকানে প্রায় ২ লক্ষ টাকা খরচ করিয়েছে এবং প্রায় তিন বছর আমার ভাড়া দেয়নি। এছাড়াও দোকানের ডেকোরেশনে এবং কয়েক বছর বন্ধ থাকায় ওয়ালগুলো নষ্ট হয়েছে। তাছাড়া দোকান বন্ধ থাকায় মার্কেটের অনেক ক্ষতি হয়েছে। আর এই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বলে একবার থানায়, একবার আদালতে মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করে। দোকানের বিষয়ে ভাড়াটিয়া রহিম দাড়িয়া বলেন বাজারে আমার সমস্যা থাকায় আদালতে গিয়েছি। হিসাব কিতাব করে আদালত যে বিচার করবে আমি তা মেনে নেব।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *