দেশের সর্বোচ্চ পতাকা স্ট্যান্ডে উ-ড়লো লাল-সবুজের পতাকা

মোহাম্মদ বাবুল হোসেন জেলা প্রতিনিধি, পঞ্চগড়: বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পতাকা স্ট্যান্ডে আনুষ্ঠানিকভাবে উড়ানো হলো লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা। দেশের সর্বউত্তরের সীমান্ত বাংলাবান্ধায় ১১৭ ফুট উচ্চতায় এখন নিয়মিত উড়বে স্বাধীনতার প্রতীক এই গৌরবের পতাকা।

মঙ্গলবার বিকেলে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা সীমান্তে পতাকাস্ট্যান্ডটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী।

জাতীয় সঙ্গীতের তালে তালে ৩০ ফুট বাই ১৮ ফুট আয়তনের বিশাল লাল-সবুজের পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর ফলক উন্মোচন ও বেলুন উড়িয়ে উদ্বোধন করেন অতিথিরা। অনুষ্ঠানের আগে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর থেকে একটি সুসজ্জিত শোভাযাত্রা বের করা হয়, যা পতাকা বহন করে উদ্বোধনস্থলে পৌঁছায়।

এ সময় বিজিবির কাছে পতাকা উত্তোলনের দায়িত্ব হস্তান্তর করা হয়। অতিথি ও স্থানীয়রা জানান, এটি কেবল একটি পতাকাস্ট্যান্ড নয়, বরং স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক হয়ে উঠবে বাংলাবান্ধা সীমান্তে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সি, ১৮ বিজিবি’র অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরুল ইসলাম, এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ, জেলা বিএনপির আহব্বায়ক জহিরুল ইসলাম কাচ্চু, জেলা জামায়াতের আমির ইকবাল হোসাইন, জেলা জাগপার সহ সভাপতি শামসুজ্জামান বিপ্লব, গণঅধিকার পরিষদের আহব্বায়ক মাহফুজার রহমান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি সহ অনেকে।

জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী বলেন, স্থানীয় মানুষের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে দেশের সর্বোচ্চ এই ফ্ল্যাগস্ট্যান্ড নির্মাণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আমরা নতুন এক ইতিহাসের সাক্ষী হলাম। এই পতাকা আমাদের গৌরব ও অহংকারের প্রতীক।

১৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা এই গৌরবের পতাকা সমুন্নত রাখার অঙ্গীকার করছি।

এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, আগামীর বাংলাদেশে এই স্বাধীন পতাকা সার্বভৌমত্বের প্রতীক হয়ে থাকবে। কেউ আধিপত্যবাদের দৃষ্টিতে তাকালে আমরা চব্বিশের মতো রক্ত দিয়েই তার জবাব দেব।

জানা গেছে, বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টের বিপরীতে ভারতীয় প্রান্তে প্রায় ১০০ ফুট উচ্চতার একটি ফ্ল্যাগস্ট্যান্ডে ভারতীয় পতাকা উড়ানো হয়। তবে বাংলাদেশের প্রান্তে এতদিন বড় কোনো ফ্ল্যাগস্ট্যান্ড ছিল না। স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে গত ১৯ এপ্রিল এ পতাকাস্ট্যান্ডের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।

দেশের সর্বোচ্চ ১১৭ ফুট উচ্চতার এই ফ্ল্যাগস্ট্যান্ড নির্মাণের মধ্য দিয়ে বাংলাবান্ধা এখন নতুন ইতিহাসের সাক্ষী। সীমান্তের আকাশে গর্বভরে উড়ছে লাল-সবুজের পতাকা—স্বাধীন বাংলাদেশের মর্যাদা ও শক্তির প্রতীক হয়ে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *