স্টাফ রিপোর্টার ময়মনসিংহ।
ময়মনসিংহে মসজিদ-মাদ্রাসার ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে বড় মসজিদ জামিয়া ফয়জুর রহমান (রহঃ) মাদরাসায় পড়ুয়া কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ক্ষমতার অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করে দুই পক্ষের মাঝে বিরোধ চরম আকার ধারণ করছে। দুপক্ষের প্রথম পক্ষের একাংশ ময়মনসিংহ বড় মসজিদের ঈমাম মাওলানা আব্দুল হক তার একনায়কতন্ত্র কায়েম করতে মসজিদ মাদ্রাসার শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে তারা মেয়ের জামাতাদের শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দিয়েছেন অপর পক্ষ মুফতি শহীদ তার অবস্থান শক্ত করতে তার নিজস্ব আত্মীয় স্বজনদের নিয়োগ দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এনিয়ে গত প্রায় ১বছর যাবৎ নিয়ে দুপক্ষের মাঝে তুমুল আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ায় ময়মনসিংহে অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ময়মনসিংহের মানবিক ও দক্ষ জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম তাদের আন্দোলনকে থামিয়ে দেওয়ার আপ্রাণ চালিয়ে যাচ্ছে। এর আগে মাওলানা আব্দুল হক এর মেয়ের জামাতা
মুফতি মোফাজ্জল হককে শিক্ষক পদ থেকে বহিষ্কার করেন এবং মুফতি সারোয়ার হোসেনকে মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ পদ থেকে অপসারণ ও পরিচালনা কমিটি থেকে সর্বসম্মতিক্রমে সরিয়ে দেয়া হয় একই সাথে
অনৈতিক ভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মাদ্রাসা শিক্ষক আজিজুল হককে সর্ব সম্মতিতে আবারও পুনর্বহাল করেন। এনিয়েই জেলা প্রশাসকের সাথে শত্রুতা শুরু হয় মাওলানা আব্দুল হক গ্রুপের।
এনিয়ে গত জুলাই মাসে বড় মসজিদের ঈমাম মাওলানা আব্দুল হক এর ইন্ধনে ২৬ জুলাই শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা নগরীর জামিয়া ফয়জুর রহমার রহ: বড় মসজিদ মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা শহরের পাটগুদাম থেকে কাচারি সড়কে অবস্থান নিয়ে এই বিক্ষোভ করেন। পরিস্থিতি নাজুক আকার ধারণ করলে আইনশৃঙ্খলা বাহীনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। ঘটনার জেড় ধরে কয়েকমাস ফের ২৭ অক্টোবর রাতে বড় মসজিদ-মাদ্রাসা পরিস্থিতি আবারও অস্থির হয়ে উঠে।যার নেপথ্যে রয়েছে মাওলানা আব্দুল হক। এবার ছাত্ররা তার ইন্ধনে জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলমের অপসারণসহ ৫ দফা দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে।তবে বিষয়টি ময়মনসিংহের অনেকে ভালোভাবে নিচ্ছেনা। আলোচনা-সমালোচনা চলছে বড় মসজিদের ঈমাম সাহেবের একনায়ক তন্ত্র রাজত্বের বলি হিসাবে ভালো একজন জেলা প্রশাসককের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ময়মনসিংহে অস্থিরতা সৃষ্টিতে কোন আওয়ামী ফ্যাসিবাদী চক্র জড়িত থাকতে পারে এমনটাই মনে করছেন ময়মনসিংহের সচেতন মহল।
অন্যদিকে ঘটনাবলিকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসনকে বিতর্কিত করার লক্ষ্যে একটি গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে—এমন অভিযোগও উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নগরীর জামিয়া ফয়জুর রহমান (রহঃ) মাদরাসায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী দ্বন্দ্ব নিরসনে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মফিদুল আলম নিজ উদ্যোগে শান্তিপূর্ণ সমঝোতা সভা আয়োজন করেন। সভায় উভয় পক্ষের প্রতিনিধি, ইসলামি আলেম ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা গঠিত হলে সবাই সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং হাসিমুখে সভা শেষ হয়।
তবে সভা শেষে একপক্ষের হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি রাজনৈতিক প্রভাবশালী মহল ও তাদের সহযোগী চক্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তথ্য প্রচার করতে শুরু করে। অভিযোগ উঠেছে—গোষ্ঠীগত স্বার্থ রক্ষার লক্ষ্যে তারা বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে।
প্রশাসনের একাধিক সূত্র জানায়, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে আইনশৃঙ্খলা ও সামাজিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় নিরপেক্ষ ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে আসছে। অথচ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মহল এসব নিরপেক্ষ অবস্থানকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক কর্মকাণ্ড শুধু প্রশাসনকেই বিব্রত করছে না, বরং শান্তি ও শৃঙ্খলার পরিবেশ নষ্ট করে সমাজে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে। তারা মন্তব্য করেন, “নিরপেক্ষ প্রশাসনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার মানে রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা ও প্রশাসনিক কাঠামো দুর্বল করার প্রচেষ্টা।”
এদিকে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় জানিয়েছে, অপপ্রচারের বিষয়টি নজরে এসেছে এবং এ নিয়ে আইনগত পদক্ষেপের প্রস্তুতি চলছে। পাশাপাশি নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে— বিভ্রান্ত না হয়ে যাচাইকৃত ও প্রামাণ্য তথ্যের ওপর আস্থা রাখার জন্য।

Leave a Reply