খলিলুর রহমান খলিল, নিজস্ব প্রতিনিধি :
স্ত্রীর মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ডের আশায় দেড় বছর আগে ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে ৮ হাজার টাকা দিয়েছিলেন এক অটোচালক। দীর্ঘদিনেও কার্ড না হওয়ায় সেই টাকা ফেরত চাইতেই তিনি মারধরের শিকার হয়ে এখন হাসপাতালে ভর্তি। এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার চেয়ারম্যানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ইউএনও ও থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার ইউনিয়ন পরিষদের। এ ঘটনায় আহত ভুক্তভোগী মো. রশিদুল কাজী (৩৭) ওই ইউপির চেয়ারম্যান আল ইবাদত হোসেন পাইলটসহ তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের দামোদরপুর সরকারপাড়ার অটোচালক মো. রশিদুল কাজী তাঁর স্ত্রী রাবেয়া বেগমের মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড করার জন্য দেড় বছর আগে সয়ার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আল ইবাদত হোসেন পাইলটকে ৮ হাজার টাকা দেন। তবে দীর্ঘদিনেও ভাতার কার্ড না করায় রশিদুল টাকা ফেরত চাইলে চেয়ারম্যান নানা অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন।
রশিদুল কাজীর অভিযোগ, গত ১৪ অক্টোবর বিকেল ৪টার দিকে চেয়ারম্যান টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তাঁকে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে নেন। সেখানে উপস্থিত হলে চেয়ারম্যান আল ইবাদত হোসেন পাইলট, আকবার হোসেন ও সাদেকুল মিলে ইউনিয়ন পরিষদের কক্ষে তাঁকে বেদম মারধর করেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, চেয়ারম্যান রশিদুলের পেটে লাথি মারেন, অন্যরা ঘুষি ও কিলঘুষিতে তাঁর নাক-মুখ ফাটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন। এসময় ইউনিয়ন পরিষদের কিছু চৌকিদারও মারধরে অংশ নেয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী মো. রশিদুল কাজী বলেন, “আমি একজন অটোচালক। স্ত্রীর জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড করতে গেলে ৮ হাজার টাকা নেয় চেয়ারম্যান। কিন্তু দীর্ঘদিনেও কার্ড করে দেয়নি। টাকা চাইতে যাওয়া আমাকে মারধর করা করেছে। প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। বলেছে-আর যদি টাকা চাইতে যাই, হাত-পা ভেঙে পঙ্গু করে দেব, এমনকি খুন করে লাশ গুম করে ফেলব।”
এ বিষয়ে জানতে সয়ার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আল ইবাদত হোসেন পাইলটের মুঠোফোন একাধিকবার ফোন দিল তিনি ফোন রিসিভ করেননি ।
ইউএনও রুবেল রানা বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। চেয়ারম্যানকে শোকজ করা হয়েছে। ভুক্তভোগীরা চাইলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।”
তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক বলেন, “ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ ডিউটি অফিসারে কাছে এনেছিল। সেটি ইউএনও বরাবর হওয়ায় তাদের সেটি ইউএনওকে দিতে বলা হয়। থানায় অভিযোগ দিলে বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Leave a Reply