কোথায় হা-রিয়ে গেল সেই নোয়াখালী বনাম কুমিল্লা জেলার মানুষের আন্তরিক বন্ধন?

তরিকুল ইসলাম তরুন।।

অগ্রহায়ণের হিমেল হাওয়ায় আজও মনে পড়ে যায় এক সময়ের দৃশ্য—নোয়াখালীর একদল টাউক্কা এসে জমে উঠত বৃহত্তর কুমিল্লার নবীনগর থানার ভিটি বিশাড়া আদমআলী মুন্সি বাড়িতে।
তারা আসলে পুরো গ্রাম যেন প্রাণ ফিরে পেত।

ওরা ছিল পরিশ্রমী, নীরব, নিঃস্বার্থ কর্মী। নিজেদের রান্না নিজেরা করত, ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমাদের আউশধান, আমনধান, তিলবাজালধান, কালা আমন, পরসুম, বিলবাজাল কিংবা খামা ধান কেটে জমিতে শুকিয়ে, ঘরে এনে জাবার, ঢুলী, মটকায় ভরে দিত—তারপর নিয়ে যেত সামান্য মজুরি।

আজ যখন দেখি, সেই নোয়াখালীর মানুষ কেউ কেউ কুমিল্লার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে—মনটা কেমন হাহাকার করে ওঠে।
কেন এমন হলো?
যে মানুষগুলো একসময় কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, সিলেটের নিচু জমিতে প্রাণ ঢেলে কাজ করত, তারা আজ কেন বিভক্তির কথা বলছে?

তখন কিন্তু দেশে অভাব ছিল, ভাতের কণা ছিল না অনেক ঘরে। যার ১০ কানি জমি ছিল, তারও ঘরে ভাত ছিল না। ধান পেকে শুয়ে থাকত জমিতে, কিন্তু কাটার লোক ছিল না। কৃষকরা অপেক্ষা করত—“নোয়াখালীর টাউক্কা” আসবে কবে!
তারা না এলে ধান ঘরে উঠত না।

তাহলে আজ কেন আমরা ভুলে যাচ্ছি সেই ঐতিহাসিক সম্পর্ক?
নোয়াখালীকে আমরা শ্রদ্ধা করতাম, ভালোবাসতাম—আজও করি।
তাই প্রত্যাশা করি, নোয়াখালী যেন সহসাই কুমিল্লার পাশে দাঁড়ায়, বিভেদের নয়—একতার সুর তোলে।

ব্রাহ্মণবাড়ীয়া থেকে কুমিল্লার দূরত্ব যতই হোক, হৃদয়ের দূরত্ব যেন কখনও না বাড়ে। কারণ, আমাদের প্রাণের নাম—কুমিল্লা। সাংবাদিক ও লেখক মোঃ তরিকুল ইসলাম তরুন,কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি দঃ দৈনিক বাংলা, স্টাফ রিপোর্টার দৈনিক কুমিল্লার কাগজ, সভাপতি জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা কুমিল্লা জেলা, সদস্য কুমিল্লা প্রেসক্লাব।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *