শ্রমিকলীগ নেতার বাঁ-ধায় থম-কে আছে সরকারি ভবন নি-র্মাণের কাজ

কে এম সোয়েব জুয়েল,
শ্রমিকলীগ নেতার বাঁধায় মডেল গ্রাম সমবায় সমিতির ভবন নির্মানের কাজ থমকে আছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই শ্রমিকলীগ নেতা ঢাকায় বসে ভবন নির্মান বন্ধে মামলা ও বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করার কারণে নির্মান কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। এনিয়ে স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি বরিশালের গৌরনদী উপজেলার হোসনাবাদ গ্রামের।

হোসনাবাদ মডেল গ্রাম সমবায় সমিতির সদস্য আজিম আকন, মনিরুজ্জামান আকনসহ একাধিক সদস্যরা বলেন, সমিতির ভবন নির্মানের জন্য জমির মালিক স্থানীয় শাহ আলম রাড়ী ২০২২ সালে ১৫ শতক জমি দান করে দিয়েছেন। পরবর্তীতে ২০২৪ সালে ২ কোটি ৪ লাখ টাকা ব্যয়ে মাদার ইঞ্জিনিয়ারিং নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে ভবন নির্মানের কাজ শুরু করা হয়।

নির্মান কাজ শুরুর দুইদিন পরই স্থানীয় বাসিন্দা শ্রমিকলীগ নেতা রবিউল ইসলাম সুমনের আবেদনের প্রেক্ষিতে বরিশাল সহকারী জজ আদালত থেকে জমির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এতে ভবন নির্মানের কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

তারা আরও বলেন-একই বছরের ৭ নভেম্বর নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে পূনরায় ভবন নির্মানের কাজ শুরু করা হয়। পরবর্তীতে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রæয়ারি হাইকোর্ট থেকে ৬ মাসের জন্য স্ট্যাটাস-কো আদেশ জারি করা হয়। গত ১২ আগস্ট স্ট্যাটাস-কো’র মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এরপরও সে (রবিউল) বিভিন্ন প্রভাব খাটিয়ে সরকারি ভবন নির্মান কাজ বন্ধের পাঁয়তারা চালাচ্ছে।

অভিযোগ করে তারা আরও বলেন, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে রবিউল ইসলাম সুমন নিজেকে ঢাকা মহানগর শ্রমিকলীগের সহসভাপতি পরিচয় দিয়ে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে ভবন নির্মানে বাঁধা প্রদান করেছেন। বিভিন্ন কৌশলে এখনো সেই ধারা তিনি অব্যাহত রেখেছেন।

স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রবিউলের দাদা মোহসিন আকন স্থানীয় শাহ আলম রাড়ীর কাছে জমি বিক্রি করে গেছেন। ওই জমির দলিল পর্চা সব শাহ আলমের নামে। এরপরও সে (রবিউল) আদালতে মামলা দিয়ে হয়রানি করে যাচ্ছে। তার বাঁধার কারনে উন্নয়ন কাজ ব্যাহত হচ্ছে।

তারা আরও জানিয়েছেন-নিজের রাজনৈতিক পরিচয় গোপন রেখে রবিউল ইসলাম সুমন বর্তমান ক্ষমতাসীন কতিপয় কেন্দ্রীয় নেতার মাধ্যমে হোসনাবাদ মডেল গ্রাম সমবায় সমিতির ভবন নির্মানের কাজ বন্ধ করার চেষ্টা করছেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে রবিউল ইসলাম সুমন বলেন, জমি দানকারী শাহ আলম রাড়ীর সাথে জমি নিয়ে আমাদের বিরোধ রয়েছে। জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান থাকায় আদালত থেকে জমির ওপর স্থিতিবস্থা জারি করা হয়েছে। যে কারনে ভবন নির্মান কাজ বন্ধ ছিলো। সর্বশেষ ন্যায় বিচারের জন্য আমরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছি। হাইকোর্ট বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য নিন্ম আদালতকে নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতে মামলা চলমান থাকার পরেও সেখানে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

উপজেলা প্রকৌশলী মো. অহিদুর রহমান জানিয়েছেন, চলতি বছরের জুন মাসে ভবন নির্মান শেষ হওয়ার কথা ছিলো। তবে আদাতলের নিষেধাজ্ঞা থাকায় এতোদিন নির্মান কাজ বন্ধ ছিলো। বর্তমানে নিষেধাজ্ঞা না থাকায় কাজ শুরু করা হয়েছে। দ্রুত কাজটি সমাপ্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *