বেড়া ভাঙার অভিযোগে থানায় অভিযোগ, কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ
মোঃ বাবুল হোসেন পঞ্চগড় প্রতিনিধি :
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় প্রবাসীর ফলের বাগানের বেড়া ভেঙে দিয়ে উল্টো মালিকপক্ষের লোকজনকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের সরকারপাড়া এলাকায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা বোদা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বড়শশী ইউনিয়নের সরকারপাড়া এলাকার প্রবাসী ও রেমিট্যান্স যোদ্ধা নবীউল আলম সুজন এবং নাসির উল আলম সুমন তাদের পৈতৃক জমিতে সম্প্রতি কদবেলের বাগান গড়ে তোলেন। জমিতে গাছ লাগিয়ে বেড়া নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করা হয়। কিন্তু বেড়া লাগানোর পরদিন ২২ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টার দিকে পার্শ্ববর্তী জমির মালিক নাজমুন নাহারের নির্দেশে একই এলাকার লালু, শফিকুল, হুমায়ূন, শাহজাহান, দুলাল, মউর, মনির, মহিদুল, রুপা, শাহিনুর, খতিবর, রতনসহ প্রায় ৩০ জন লাঠিসোটা নিয়ে এসে বেড়াটি ভেঙে ফেলেন।
এ সময় তারা জমি দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা আশরাফ আলীকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে বেধড়ক মারধর করেন। লাঠির আঘাতে তার হাতে গুরুতর জখম হয়। আশরাফ আলীর অভিযোগ, হামলাকারীরা তাকে হত্যার হুমকিও দেয় এবং বলেন, “আবার বেড়া দিলে তা ভেঙে ফেলবো।” পরে তিনি ৯৯৯ এ ফোন করে বিষয়টি পুলিশকে অবগত করেন।
ভুক্তভোগী আশরাফ আলী বলেন, “আমার মালিকের জমিতে কদবেলের বাগান করেছি। দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত জমিতে আমরা চাষাবাদ শুরু করি ও বেড়া দিই। কিছু মানুষ ওই জমির উপর দিয়ে চলাফেরা করত, তাই হয়তো তারা ক্ষিপ্ত হয়েছে। কিন্তু এজন্য বাগানের বেড়া ভেঙে দেওয়া বা আমাকে মারধর করার অধিকার তাদের নেই। আমি এর বিচার চাই।”
অন্যদিকে স্থানীয় মনির হোসেন বলেন, “আমরা নাজমুন নাহারের জমি চাষ করি। তবে সুমন ও সুজনের জমির উপর দিয়েই আমাদের চলাচলের পথ। আমাদের কয়েকটি ভ্যান আছে, ওই পথে না চললে ইনকাম বন্ধ হয়ে যাবে। মহাজন নাজমুন নাহার আমাদের রাস্তাটি খুলে দিতে বলেছেন, না হলে বাড়ি ছাড়ার হুমকি দেন। আমরা বাধ্য হয়ে বেড়া ভেঙেছি, যদিও এটা ভুল ছিল।”
বিতর্কিত জমির মালিক দাবিদার নাজমুন নাহার বলেন, “জমি ভাগবাটোয়ারা হয়নি, ওখানে আমারও অংশ আছে। তারা রাস্তা বন্ধ করে দিলে মানুষ চলবে কোথা দিয়ে? ভাগ হয়ে গেলে তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। আমি কোনো সংঘাতে যেতে চাই না।”
বড়শশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বলেন, “আমরা মানবিক কারণে রাস্তাটি খুলে দিতে বলেছি। ওই জমির পশ্চিমে নদী ও বাঁশঝাড় আছে, বিকল্প পথ নেই। তাই আপাতত রাস্তাটি খোলা রাখতে বলা হয়েছে।”
এ বিষয়ে বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিম উদ্দীন বলেন, “একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা, হচ্ছে।”
Leave a Reply