হবিগঞ্জ প্রতিনিধি।। হবিগঞ্জের বাহুবলে কথিত প্রেমিকার বাড়িতে চীনা যুবকের আগমনের পর হঠাৎ আত্মগোপনে রহস্য আরও ঘনিভুত হচ্ছে। তাই ইয়ং (৩৭) নামের চীনা যুবক চিচুয়ান প্রদেশের নাগরিক। তার পিতার নাম তা ইন চুং। সে গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে বাহুবল উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের খিলবামৈ গ্রামের দিনমজুর মোহাম্মদ আলীর বাড়িতে আসে।
বাহুবলের পল্লীতে চীনা নাগরিকের আগমনে এলাকায় সৃষ্টি হয় চাঞ্চল্য । আশপাশের লোকজনের মাধ্যমে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের গোচরে আসে। লোক মারফত খবর জানতে পেরে খিলবামৈ গ্রামের ওই বাড়িতে যান সংবাদ কর্মীরা। এ সময় দিনমজুর মোহাম্মদ আলীর মেয়ে সাদিয়া সুলতানা মীম (১৯) জানায়, তার সাথে অনলাইনে পরিচয়ের সূত্র ধরে তাই ইয়ং তাদের এখানে এসেছে এবং বিয়ে করে সাথে নিয়ে যেতে চায় চীনে দেশে । অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়া সাদিয়া সুলতানা মীমও জানায়, গুগল ট্রান্সলেশনের মাধ্যমে কথোপকথন হয় তাই ইয়ং ও মীমের। স্থানীয় ভাষা ছাড়া ইংরেজি সহ অন্য কোন ভাষাও বুঝতে পারে না চীনা যুবক।
পুলিশ অবগত হওয়ার পরও নেওয়া হয়নি কার্যকর পদক্ষেপ। পরদিন বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় বাহুবলে চীনা নাগরিকের আগমনের খবর প্রকাশ হওয়ার পর দুইজন পুলিশ মীমের পিত্রালয়ে যান বলে স্থানীয়রা জানান। কিন্তু ২৫ সেপ্টেম্বর মধ্য রাতেই ওই বাড়ি ছাড়েন চীনা নাগরিক। সাথে নিয়ে যান মীমসহ তার মাকে। নোহা গাড়িযোগে গোপনে চলে যেতে সহযোগিতা করেন একই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে অটো চালক রাজু মিয়া।
শনিবার বিকেলে মোহাম্মদ আলীর বাড়িতে গেলে দেখা যায় দরজায় তালা। ফোনে যোগাযোগ করলে মোহাম্মদ আলী জানান তিনি চুনারুঘাটে। চীনা নাগরিক তাই ইয়ং এবং মীম সম্পর্কে জানতে চাইলে মোহাম্মদ আলী বলেন সে চলে গেছে তার দেশে। মীম ও তা মা কোথায় এর উত্তর দিতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।
স্থনাীয় একাধিক সূত্র জানায়, চীনা এ যুবক মাস খানেক আগেও এ বাড়িতে এসে গেছে। প্রথম বিষয়টি এভাবে সারা পড়েনি। এবার স্থানীয়দের কানাঘুষা ও মিডিয়ার লোকদের জেনে যাওয়ায় মীমের পরিবার সতর্কতা হিসেবে চলে গেছে আত্মগোপনে। তারা নাকি বর্তমানে অবস্থান করছে ঢাকার পল্লবী থানার মিরপুর কালাপানি এলাকায়। সরকারি একাধিক সংস্থাও অনুসন্ধান শুরু করেছে এ ব্যাপারে। একটি গোয়েন্দা সূত্র জানায়, বেশ কিছু দিন আগে বিদেশি প্রতারক চক্র সম্পর্কে সরকারিভাবে সতর্কতা জারী করা হয়। এতে বলা হয়, বিদেশি এ চক্রটি প্রেম অথবা লোভনীয় অফারের মাধ্যমে বাংলাদেশের সুন্দরী নারীদের বিয়ের ফাঁদে ফেলে মাফিয়া চক্রের হাতে তুলে দেয়। এধরনের ঘটনা দেশের একাধিক স্থানে সংঘটিত হয়েছে বলে সতর্ক বার্তায় বলা হয়।
এ ধরনের আশঙ্কার কথা বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলামও জানান।
Leave a Reply