এম এ আলিম রিপন,সুজানগর ঃ পরিবর্তিত জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলা এবং পেঁয়াজের উৎপাদন ও সংরক্ষণ ব্যবস্থার উন্নয়নে পাবনার সুজানগরে কৃষকদের নিয়ে দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘বাংলাদেশের পেঁয়াজ উৎপাদন এলাকায় পরিবর্তিত জলবায়ুর প্রতিকূল প্রভাব প্রশমনে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কৃষক পর্যায়ে পেঁয়াজ সংরক্ষণের অভিযোজন প্রকল্প’ এর আওতায় এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন কৃষিবিদ মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ অতিরিক্তি পরিচালক(ডিএই)বগুড়া অঞ্চল।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদের সভাপতিত্বে ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার জাহিদ হোসেনের সঞ্চালনায় এ কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পরিচালক নুরে আলম ও রাফিউল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আসাদুজ্জামান। প্রকল্প বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন পেঁয়াজ সংরক্ষণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মাহফুজুর রহমান।এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উপজেলার ৬০ জন কৃষক অংশগ্রহন করেন।
প্রকল্প পরিচালক ড. মাহফুজুর রহমান জানান , বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৪০ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন হলেও, উপযুক্ত সংরক্ষণ ব্যবস্থার অভাবে প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে একদিকে যেমন বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়, অন্যদিকে পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল থাকে না এবং কৃষকরাও তাদের ন্যায্য দাম পান না। তিনি এয়ার ফ্লো মেশিনকে এই সমস্যার একটি কার্যকর সমাধান হিসেবে উল্লেখ করেন। এই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ার পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব, যা দেশের পেঁয়াজ আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আনবে এবং ভবিষ্যতে পেঁয়াজ রপ্তানির সুযোগ তৈরি করবে। ড. মাহফুজুর রহমান আরও জানান যে এই প্রকল্পের অধীনে সুজানগরসহ দেশের ১৬টি জেলার ১০৭টি উপজেলায় ৩,৭০০টি এয়ার ফ্লো মেশিন বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে কৃষকদের সরাসরি মেশিন না দিয়ে, তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২৭,০০০ টাকা করে প্রদান করা হচ্ছে, যাতে তারা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো কোম্পানির মেশিন কিনতে পারেন। তিনি আশ -প্রকাশ করেন, এই প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে দেশের কৃষক ও ভোক্তাদের মধ্যে একটি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থা তৈরি হবে।
এই প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য ছিল কৃষকদের আধুনিক পদ্ধতিতে পেঁয়াজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ সম্পর্কে ধারণা দেওয়া বিশেষ করে এয়ার ফ্লো মেশিন নামক একটি নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে। প্রশিক্ষণ চলাকালীন দেশীয় ১৩টি কৃষি যন্ত্রপাতি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান তাদের তৈরি এয়ার ফ্লো মেশিনগুলো প্রদর্শন করে এবং এগুলোর কার্যকারিতা তুলে ধরে। প্রশিক্ষণ চলাকালীন দেশীয় ১৩টি কৃষি যন্ত্রপাতি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান তাদের তৈরি এয়ার ফ্লো মেশিনগুলো প্রদর্শন করে এবং এগুলোর কার্যকারিতা তুলে ধরে।
এম এ আলিম রিপন
সুজানগর(পাবনা)প্রতিনিধি।
Leave a Reply