ময়মনসিংহ সদরে উপজেলা পর্যায়ে মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বি-তরণ

আরিফ রববানী ময়মনসিংহ।।
শিক্ষার মানোন্নয়নে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার ৯ক্লাস্টারের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১১ইউনিয়নে অবস্থিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা-২০২৫ এর উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচিত সেরা মেধাবীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে।

সোমবার ২২সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় ময়মনসিংহ সদর উপজেলা পরিষদের ব্রহ্মপুত্র হলরুম মিলনায়তনে সদর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের যৌথ ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত প্রতিযোগিতানুষ্ঠানে বিজয়ী সেরা মেধাবীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন স্থানীয় সরকার ময়মনসিংহ বিভাগের উপ-পরিচালক বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুল ইসলাম প্রিন্স এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) লুৎফুন নাহার, সহকারী কমিশনার ভূমি সৈয়দা তামান্না হুরায়রা।

স্থানীয় সরকার ময়মনসিংহ বিভাগের উপ-পরিচালক বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস এ সময় বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে সার্বিক পরিবর্তন হয়েছে। বাংলাদেশে শিক্ষা ব্যবস্থা অনেক এগিয়েছে। সব পরিবারের ছেলেমেয়েরা এখন স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। তিনি বলেন, শিক্ষাকে একটি সৃজনশীল ধারায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। এজন্য শিক্ষকদের পাঠদানের কৌশল, শ্রেণীকক্ষের পরিবেশ বদলাতে হবে। শিক্ষার লক্ষ্য হচ্ছে, পড়ার আগ্রহ ও মেধা বিকাশের সুযোগ তৈরি করা এবং নিজের শক্তিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করা । শুধুমাত্র পাঠ্যবইয়ের শিক্ষায় নিজেদের সীমাবদ্ধ না রেখে নিজেকে পরিপূর্ণ বিকাশের সুযোগ নিতে হবে।

তিনি বলেন প্রতিটা মানব-সন্তান বিস্ময়কর প্রতিভা নিয়ে জন্মায়। সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করতে পারার মধ্যেই রয়েছে জীবনে সাফল্য কিংবা ব্যর্থতা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হাত ধরেই আমরা নিজেকে জাগাই, বড় হই।

শুভেচ্ছা বক্তব্যে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মনিকা পারভীন বলেন-এ ধরনের প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বাড়াবে। বিশেষ করে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা ছোটবেলা থেকেই প্রতিযোগিতামূলক চেতনায় গড়ে উঠবে।”

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বলেন, “আজকের এই আয়োজন শিক্ষার্থীদের জ্ঞানচর্চার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তাদের দক্ষতা যাচাইয়ের সুযোগ পেয়েছে, যা ভবিষ্যতে তাদের আত্মবিশ্বাসী হতে সহায়তা করবে।

সভাপতির সমাপনী বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুল ইসলাম প্রিন্স বলেন-মেধা প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীর জীবনে অনেক সুফল বয়ে আনে। এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস, অধ্যবসায়, মনোযোগ এবং প্রতিযোগিতার মানসিকতা গড়ে তোলে, যা তাদের ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে এবং তা অর্জনে অনুপ্রাণিত করে। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিজেদের জ্ঞান, মেধা ও সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটাতে পারে এবং এর ফলে তারা ভালো ফলাফল অর্জন করে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হয়। তিনি বলেন- ছোটবেলায় প্রাথমিকে আমিও এ ধরনের মেধা প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করেছিলাম। আমার নিজের অভিজ্ঞতা কে কাজে লাগিয়ে বর্তমান প্রজন্মের শিশুদের আগামী দিনের জন্য তৈরী করে তুলতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামীতে আরো পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজার নারায়ণ চন্দ্র দাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বেলায়েত হোসেন, উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মাকসুদা আক্তার,উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মেহেদী হাসান, উপজেলা আইসিটি কর্মকর্তা হাবিবুল্লাহ,
উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম,উপজেলা সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মেরিনা সুলতানা,মো: হারুন সিকদার,রুবি খান,আশীষ কুমার তরফদার,মিতালী বণিক,মো: সাদ্দাম হোসেনসহ উপজেলার সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগণ উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা সভা শেষে উপজেলায় সেরা মেধাবীদের খুঁজে বের করে তাদের মধ্যে সনদপত্র প্রদান করা হয়।

উল্লেখ্য- এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর উপজেলার ৯টি ক্লাস্টারের ১১টি ইউনিয়ন ও ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ৯১০ জন শিক্ষার্থী এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা মেধা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে, সেখান থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১০ জন করে বিজয়ী হয়ে উপজেলায় অংশ নিয়েছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *