পাইকগাছার গদাইপুর বাজারে গা-ছের চারার হাট জমে উঠেছে

ইমদাদুল হক, পাইকগাছা (খুলনা)।। পাইকগাছা উপজেলার গদাইপুর বাজারে ভোর বেলার গাছের চারার হাট জমে উঠেছে। হাটে প্রচুর পরিমানে বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ-বনজ, ফুল ও ঔষধী গাছের চারা উঠছে। ক্রেতা-বিক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের সমাগমে নার্সারী চারার হাট জমে উঠেছে। ভোরের হাট সকাল ১০টার মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। তবে স্থানীয় ক্রেতাদের জন্য বিকাল বেলাও আংশিক এলাকায় চারার হাট বসেবর্ষাকাল বৃক্ষরোপনের উপযুক্ত সময়। পরিবেশ সুরক্ষায় বৃক্ষের অবদান অপরিসীম। বৃক্ষ ছাড়া পরিবেশ সুরক্ষা অসম্ভব। আষাঢ়-শ্রাবন বর্ষাকাল শেষ হলেও এখনও বর্ষাকালের মতো বৃস্টি হচ্ছে। এতে চারা রোপনের উপযুক্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। তাই গদাইপুরে ভোরবেলার চারার হাটে বিভিন্ন প্রকারের চারা ক্রয়- বিক্রয়ের হিড়িক পড়েছে।গদাইপুরে ভোরবেলার চারার হাট দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের মধ্যে সাড়া ফেলেছে। কয়রা, দেবহাটা, তালা ও আশাশুনিসহ দক্ষিণ অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ী ও খুচরা ক্রেতারা ভোরবেলার হাট থেকে পছন্দমত বিভিন্ন প্রজাতির চারা ক্রয় করছেন।দক্ষিণ অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী একটি বাজার পাইকগাছার গদাইপুর। এ বাজারে সপ্তাহে শুক্রবার, সোমবার ও বুধবার হাট বসে। হাটে পাইকারী ও খুচরা বিভিন্ন মালামাল বিক্রয় হয়। বর্ষাকালে ভোরবেলা বাজারে চারার হাট দক্ষিণ অঞ্চলে ব্যবসায়ী ক্রেতাদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। গদাইপুর নার্সারীর জন্য বিখ্যাত। গদাইপুরের নার্সারীর চারা দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে। দেশ ব্যাপি গদাইপুর নার্সারীর নাম ছড়িয়ে পড়েছে। গদাইপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে প্রায় সাাড়ে ৪শত নার্সারী প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এ সকল নার্সারীতে উৎপাদিত বিভিন্ন চারা ও কলম নার্সারী মালিকরা ভোরবেলা গদাইপুর হাটে তুলছে। ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা খুব ভোরে এসে পছন্দমত চারা ক্রয় করে দক্ষিণ অঞ্চলের বিভিন্ন হাটে বিক্রয় করছে। হাটে আম, কাঁঠাল, জাম, জামরুল, লিচু, কদবেল, বিভিন্ন জাতের কুল, পেয়ারা, বাতাবি লেবু, মাল্টা, কমলা লেবু, দেশী বিদেশী নারিকেল চারা, সুপারী, মেহগনি, সিরিশ, লম্বুসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশী বিদেশী ফুলের চারা হাটে ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। ক্রেতারা বাজার ঘুরে পছন্দমত গাছ কিনছে। সর্বনিন্মে ২০ টাকা থেকে ৬শ টাকা দরে কলম বিক্রি হচ্ছে। মাল্টা ও কমলা লেবুর চারা ও বিদেশী নারিকেলের চারা দাম বেশী। বিদেশী নারিকেলের চারা ৫শ টাকা, বড় মাল্টা ও কমলা লেবুর চারা প্রায় ৬শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া চারা বড় ও মানের উপরে বিভিন্ন দামে চারা বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রচুর পরিমানে গাছের চারা উঠেছে। বাজার ঘুরে পছন্দমত চারা ক্রয় করা যাচ্ছে এবং বাজারের চারা দামও কম।কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশী গ্রামের ব্যবসাহী আব্দুল করিম জানান, সোহবান, রহিম, রহমতসহ সাত-আটজন রাত দুইটায় রওনা দিয়ে সকালে গদাইপুর চারার হাটে এসেছে। চারা কিনে তারা কাশীর হাটে বিক্র করবেন। তাছড়া পাটকেলঘাটা, কুলিয়া, আাঠার মাইলসহ বিভিন্নস্তান থেকে ব্যবসাহীরা কলমের চারা কিনতে বাজারে এসেছে। গদাইপুর গ্রামের চারা ব্যবসাহী মোবারক হোসেন ও মিজানুর রহমান জানান, এবছর প্রচুর বৃস্টি হচ্ছে আর বৃস্টি শুরু হওয়ায় চারার চাহিদা ও বিক্রি বেড়েছে ।পাইকগাছা উপজেলা নার্সারী মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অশোক কুমার পাল জানান, গদাইপুর এলাকায় ছোট বড় প্রায় সাড়ে ৪শ নার্সারী রয়েছে। এ সকল নার্সারী থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় চারা সরবরাহ করা হয়। তবে গদাইপুর বাজারে ভোরবেলার হাটে প্রচুর পরিমাণ চারা উঠছে। ক্রেতারা তাদের পছন্দমত চারা ক্রয় করতে পারছে।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ একরামুল হোসেন জানান, পরিবেশ সু-রক্ষায় বৃক্ষের অবদান অপরিসীম। সারাদেশে সরকারি ভাবে প্রচুর পরিমাণে বৃক্ষরোপন করা হচ্ছে। পরিবারের পুষ্টি চাহিদা পুরণে বাড়ির আঙ্গিনায় চার-পাঁচটি ফলদ বৃক্ষ রোপন করার জন্য কৃষকদেও প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। গদাইপুরে ভোরবেলা হাট থেকে ক্রেতারা চারা ক্রয় করে সূর্যের তাপ ছাড়াই সুস্থ্য ও সবল চারা চারা গন্তব্যস্থানে নিয়ে যেতে পারে। এতে চারার মানও ভাল থাকে। এ কারণে ভোরবেলার গদাইপুর হাটে চারার হাট থেকে ক্রেতাদের চারা ক্রয়ের আগ্রহ বাড়ছে।

ইমদাদুল হক,
পাইকগাছা, খুলনা।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *