আল্লাহ ও নবীকে নিয়ে ক-টুক্তিতে পঞ্চগড়ে মু-সল্লিদের ক্ষো-ভ

মোঃ বাবুল হোসেন পঞ্চগড় প্রতিনিধি :

পঞ্চগড় জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামানের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ভিডিওতে তিনি দাবি করেছেন, “আসমানে গিয়ে আল্লাহর দিদার পেয়েছেন, ফেরেস্তা ও হুরদের সাথে কথোপকথন করেছেন এবং হুরদের সাথে ছোঁয়াছুঁয়ি খেলেছেন। এমনকি নবী মুহাম্মদ (সা.) স্বয়ং এসে তাকে সালাম দিয়ে ও পরিচয় দিয়ে গেছেন এবং আগাম জান্নাতের আশ্বাস দিয়েছেন।”

ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পরই মুসল্লি ও ইসলামী সংগঠনগুলোর মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় অনেকেই তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন আখ্যা দিয়েছেন, আবার কেউ কেউ গ্রেপ্তারের দাবি তুলেছেন।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার কামাতকাজলদিঘী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তোফায়েল প্রধান বলেন, “আমাকেও তিনি একই গল্প শুনিয়েছেন।”
কারাতে প্রশিক্ষক সোয়েব আলী সবুজ জানান, “আমি একবার তার অফিসে গেলে তিনি আমাকেও এমন গল্প শোনান।”

তরুণ সমাজকর্মী মানিক উদ্দীন তার ফেসবুকে লিখেছেন, “সে একজন মানসিক রোগী। তার জায়গা পঞ্চগড়ে না, তাকে পাবনাতে পাঠাতে হবে।”

ডা. রেজওয়ান রেজা মন্তব্য করেছেন, “হয় তিনি একজন ভন্ড প্রতারক, না হলে চরম বিকারগ্রস্ত মানসিক রোগী। আল্লাহ আমাদের এ ধরণের প্রতারক থেকে হেফাজত করুন।”

নুরে মদিনা ক্বেরাতুল কুরআন মডেল মাদরাসার শিক্ষক এইচ এম লিয়াকত আলী বলেন, “মুসা (আ.) আল্লাহর নুর দেখেই অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন। অথচ এই কর্মকর্তা দাবি করছেন তিনি আল্লাহকে দেখেছেন এবং নবী (সা.) এসে তার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। এর চেয়ে বড় মিথ্যাচার আর কিছু হতে পারে না। এতে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। আমরা তার গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানাই।”

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামান ২০২০ সালে রাজশাহী থেকে বোদা উপজেলায় উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। শাস্তিমূলক বদলি হলেও তিনি দাবি করেন, আল্লাহর নির্দেশে তিনি পঞ্চগড়ে এসেছেন। এরপর থেকেই নানা ধরনের অদ্ভুত দাবি ও বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন। পরবর্তীতে তিনি দেবীগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা এবং জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে আলাপে এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, “আল্লাহ ও নবী মুহাম্মদ (সা.) কে আমি দেখেছি এবং কথা বলেছি। আল্লাহ আমাকে বলেছেন—‘তুই চিন্তা করিস না, আমি তোর পাশে আছি।’ এমনকি এক রমজানে আসরের নামাজ পড়তে গিয়ে দেখি আসমান থেকে নবীজি (সা.) নেমে এসে আমাকে সালাম দিয়ে পরিচয় দেন। আমি আবেগে কেঁদে ফেলেছিলাম। আসমান থেকে ইশারা আসায় আমি দাঁড়ি রেখেছি।”

এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর পঞ্চগড়ে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই প্রশাসনের কাছে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *