September 4, 2025, 3:26 am
বাবুল হোসেন,
পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার নাশির মণ্ডল হাট ছালেহীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার ইউসুফ আলীসহ শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষা বৃত্তির অর্থ আত্মসাত ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ সরকারি তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের তিন সদস্যের কমিটি এ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
এর আগে পারফরমেন্স বেজড গ্র্যান্টস ফর সেকেন্ডারি ইন্সটিটিউশনস (পিবিজিএসআই) প্রকল্পের আওতায় বরাদ্দ পাওয়া বৃত্তির অর্থ বণ্টনে অনিয়ম ও আত্মীয়দের প্রাধান্য দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বৃত্তির জন্য নির্বাচিত ২০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫ জন ছিলেন মাদ্রাসার শিক্ষকদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। প্রতিটি শিক্ষার্থীকে ৫ হাজার টাকা করে বৃত্তি দেওয়া হলেও, মাদ্রাসার এক শিক্ষক তার দুই ভাতিজার কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা করে ফেরত নিয়েছেন। এছাড়া নিয়মিত পাঠদান ব্যাহত হয়, কারণ প্রায়ই নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা আগে ক্লাস বন্ধ করে দেওয়া হয়।
‘ অনলাইন পোর্টালে সংবাদ প্রকাশের পর ’ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আইবুলন ইসলামের নেতৃত্বে একাডেমিক সুপারভাইজার ও শিক্ষা প্রকৌশলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার আইবুলন ইসলাম বলেন, “গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দকৃত শিক্ষা বৃত্তি বিতরণে অনিয়মের খবর সংবাদপত্রে দেখে আমি ইউএনও স্যারকে অবগত করি। পরে তদন্তে নেমে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তথ্য পাই যে, তিনজন শিক্ষকের সন্তান ভুয়া পরিচয়ে বৃত্তি নিয়েছে। এমনকি এক শিক্ষক তার ভাতিজাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। তদন্তে এসব অনিয়মের সত্যতা মিলেছে।”
তিনি আরও বলেন, “বৃত্তি বিতরণের আগে আমি সুপারসহ সব শিক্ষকের সঙ্গে বৈঠক করে সতর্ক করেছিলাম, যাতে কোনো ধরনের অনিয়ম না হয়। কিন্তু তারপরও নিয়ম লঙ্ঘিত হয়েছে। এর দায় সুপার কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। শিগগিরই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অভিভাবক ও স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রাপ্য অর্থ আত্মসাত করা লজ্জাজনক ও অনৈতিক। যাদের প্রাপ্য নয়, তাদের বৃত্তি দিয়ে নিয়ম ভাঙা হয়েছে। আমরা চাই দোষীদের কঠোর শাস্তি হোক, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এমন কাজের সাহস না পায়।”
এর আগে অভিযোগ ওঠার পর সুপার ইউসুফ আলী সংবাদ সম্মেলন করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছিলেন। তবে তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁর সেই দাবি এখন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে।