ময়মনসিংহ সদরে লটারির মাধ্যমে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১১ ইউনিয়নে ডিলার নি-য়োগ সম্পন্ন

আরিফ রববানী ময়মনসিংহ।।
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সরকারের ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় স্বল্পমূল্যে খাদ্যশস্য সরবরাহের লক্ষ্যে কোনো ধরনের তদবির বা ঘুষ-বাণিজ্য ছাড়াই উন্মুক্ত লটারির মাধ্যমে ডিলার নিয়োগ দিয়েছে ময়মনসিংহ সদর উপজেলা প্রশাসন।

বুধবার (২০আগস্ট ) সকাল ১০টায় উপজেলা পরিষদ ব্রহ্মপুত্র হলরুমে এই উন্মুক্ত লটারি হয়।এর আগে মঙ্গলবার (১৯আগস্ট) উপজেলার তিন ইউনিয়ন ও আজ বুধবার বাকী আট ইউনিয়নে লটারি কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়।ডিলারশিপপ্রত্যাশীদের উপস্থিতিতে লটারির মাধ্যমে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নিয়োগ কমিটির সভাপতি আরিফুল ইসলাম প্রিন্স।

জানা গেছে, এবার উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের ৫৫টি বিক্রয়কেন্দ্রের জন্য ডিলারশিপ পেতে মোট ২৪১ জন প্রার্থীরা আবেদন করেছিলেন। তবে আবেদনকারীদের পক্ষে বিভিন্ন দলের নেতাদের তদবিরের কারণে জেলা প্রশাসকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক লটারির মাধ্যমে ডিলার নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেন ইউএনও। পরে তার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উন্মুক্ত লটারির মাধ্যমে মোট ৫৫ জন ডিলার চূড়ান্ত করা হয়েছে। ইউএনওর এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেকে।

ডিলারশিপপ্রত্যাশীরা বলেন, উপজেলা বা ইউনিয়ন পর্যায় যেকোনো ধরনের সরকারি ডিলার নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হলেই তদবির করে থাকেন ক্ষমতাসীনরা। আবার অনেক সময় লেনদেনও হয়। তবে এবার যেভাবে ডিলার নিয়োগ দিয়েছে, তাতে কোনো বিতর্ক নেই।

ময়মনসিংহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম প্রিন্স বলেন, ‘অনেক সময় ডিলার নিয়োগ নিয়ে নানা ধরনের কথা ওঠে। তাই ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে উন্মুক্ত লটারির আয়োজন করা হয়েছে। আশা করি, নির্বাচিত ডিলাররা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে সরকারের এই গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচির সুফল সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছে দেবেন।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈয়দা তামান্না হোরায়রা,উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন,উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনিরুল হক ফারুক রেজা, উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মাকসুদা খাতুন, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও ভাবখালী ইউনিয়নের প্রশাসক আসমা উল হুসনা ফাতেমা জান্নাতুল ফেরদৌস,
পরিসংখ্যান অফিসার মেহেদী হাসান, উপজেলা আইসিটি কর্মকর্তা হাবিবুুল্লাহ মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারী অধ্যাপক শহীদুল্লাহ কায়সার, কোতোয়ালী বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক হেলাল আহমেদ,বিএনপি নেতা ও বোরর চর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আতাহারুল ইসলাম বুলবুল,সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান, বিভিন্ন ইউনিয়নের দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রশাসক গণ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও গণমাধ্যম কর্মীরা।

উপজেলা খাদ্যবান্ধব কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রেজাউল ইসলামের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত লটারি কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

উপজেলা খাদ্যবান্ধব কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রেজাউল ইসলাম জানান-
১১টি ইউনিয়নের জন্য মোট ২৪১টি আবেদন জমা পড়ে। প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে ১০৯টি আবেদন অযোগ্য বিধায় বাতিল করা হয় এবং ১৩২টি আবেদন চূড়ান্ত বাছাইয়ে যোগ্য উত্তীর্ণ হয়। এতে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ৫৫জন আবেদনকারীকে উন্মুক্ত লটারির মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে ডিলার হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। এর আগে মঙ্গলবার ১৯ আগস্ট লটারি কার্যক্রম শুরু হলে সময় স্বল্পতার কারণে উদ্বোধনী দিনে ৩ ইউনিয়নে লটারী সম্পন্ন করে বাকী ৮ ইউনিয়নের লটারী কার্যক্রম আজ (বুধবার) সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানান উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম। তিনি আরো জানান-
ডিলার নিয়োগের প্রক্রিয়াকে যেন কেউ প্রশ্নবিদ্ধ করতে না পারেন সেলক্ষ্যে জেলা প্রশাসক স্যারের নির্দেশনা মোতাবেক প্রকাশ্যে এই লটারী পদ্ধতিতে ডিলার নিয়োগের কার্যক্রম সম্পন্ন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্যার। সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে লটারি কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় তিনি উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়ার শেষে ১০ নং দাপুনিয়া ইউনিয়নের এক ডিলার বলেন উন্মুক্ত লটারির মাধ্যমে সুযোগ পাওয়ায় আমি খুবই আনন্দিত। উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই যে তারা স্বচ্ছতার সাথে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম প্রিন্স আরো বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি সরকার ঘোষিত একটি কল্যাণমূলক উদ্যোগ। এখানে কোন ধরনের অনিয়ম বা পক্ষপাতের সুযোগ নেই। লটারির মাধ্যমে আজকের নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় সবাই সমান সুযোগ পেয়েছেন।”

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *