August 20, 2025, 7:12 pm
বাবুল হোসেন,
পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
নানা কৌশলে দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা। তথ্য চাইতে গেলে তা পাচ্ছেনা সাংবাদিকরা। এক অনিশ্চয়তায় বদলে গেছে বন্দরটির চিত্র। অজানায় রয়ে যাচ্ছে সরকারের রাজস্ব আদায়ের সঠিক হার। জন কল্যাণ ও জাতীয় উন্নয়নে এক বহুমুখীয়-চতুর্থ দেশীয় স্থলবন্দর বাংলাবান্ধা। তথ্য সরবরাহেরে ক্ষত্রে নানা প্রতিকূলতায় রয়েছে স্থানীয় সাংবাদিকরা। জনসাধারনের দাবী বন্দরটিতে স্বচ্ছতা এখন প্রশ্নবিব্ধ! গত এক বছর ধরে নানা প্রতিকূলতা থাকলেও চলছে আমাদনী-রপ্তানী কার্যক্রম। তবে বাৎসরিক লক্ষ্যমাত্রার সঠিক তথ্য দিতে চায়না রাজস্ব কর্মকর্তারা।
এনিয়ে সোমবার ঘটনাও ঘটেছে সেখানে। জানা যায়, বন্দরটির তথ্য নিতে গেলে কাস্টমসের সহকারী কমিশনার ইসাহাক আলী সাংবাদিকদের সঙ্গে অসদাচরণ এবং তিনি তার কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয় ।
সাংবাদিকরা গত অর্থবছরে আমদানী -রপ্তানি খাতে রাজস্ব আয়ের তথ্য জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘আমার কাজ নেই আপনাদের তথ্য দিয়ে চাকরী হারাবোনা-কি।’ কমিশনারের অনুমতি নিয়ে আসুন, তারপর তথ্য পাবেন।’ এরপর তিনি তিনি উত্তেজিত হয়ে সাংবাদিকদের কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।
এরপরে বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে রংপুর কাস্টমস কমিশনারকে অবহিত করতে গেলে তাকে অফিসে পাওয়া যায়নি। তবে কমিশনারের প্রটোকল কর্মকর্তা দুঃখ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের জানান, ‘গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে এমন আচরণ করা ঠিক হয়নি।বিষয়টি কমিশনারকে অবহিত করা হবে।’
তবে এর আগে জানা যায়, সহকারী কমিশনার ইসাহাক আলীর বদলীর আদেশ ইতিমধ্যেই হয়েছে।বন্দরের ব্যবসায়ী ও সিএন্ডএফ এজেন্টদের অভিযোগ, দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি নিয়মিতভাবে অবৈধ টাকা আদায় করে আসছেন। যা নিয়ে নানা গুঞ্জন রয়েছে বন্দরটিতে।
জানা যায়, অতি সম্প্রতি তিনি ব্যবসায়ীদের ডেকে নিয়ে ঘুষের বকেয়া টাকা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দেন। ব্যবসায়ীরা তা মানতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এনিয়ে ব্যবসায়িদের মাঝে ক্ষোভ দেখা রয়েছে।
অভিযোগের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিটি রপ্তানীকৃত কনসাইনমেন্ট থেকে কাস্টমস কর্মকর্তারা ৫ হাজার টাকা ঘুষ নেন। এছাড়া প্রতিটন পাথরের ওপর ১০ টাকা হারে অবৈধ আদায় করা হয়। প্রতিদিন বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ৫ হাজার থেকে ১৫ হাজার টন পাথর প্রবেশ করে। এ ছাড়া বিপুল পরিমাণ পণ্য রপ্তানিও হয়। ফলে প্রতিদিন কাস্টমস কর্মকর্তাদের পকেটে যাচ্ছে প্রায় ৪০ থেকে ৭০ হাজার টাকা।
ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, এ টাকা না দিলে কাস্টমস নানা অজুহাতে বিড়ম্বনায় ফেলে। ফলে বাধ্য হয়েই তারা এই ঘুষ দিয়ে আসছেন। দীর্ঘদিন ধরে এ ধারাবাহিকতা চলছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।বাংলাবান্ধা দেশের একমাত্র চতুর্দেশীয় স্থলবন্দর। ভারত, ভুটান, নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যে এই বন্দরের মাধ্যমে আমদানি–রপ্তানি কার্যক্রম হয়। প্রধান আমদানির পণ্য পাথর, আর রপ্তানির মধ্যে রয়েছে আলু, পাট, ঔষধ ও গ্রামীণ ঝুটসহ অনুমোদিত অন্যান্য পণ্য।
তবে কি কি কতোগুলো পণ্য বাংলাদেশ থেকে রপ্তানী হয় পাশাপাশি নেপাল ভারত ও ভ’ট্রান থেকে কতোগুলো পণ্য আসে তা রাজস্ব কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের দিতে চান না।অধিকাংশ সাংবাদিকরাই ভুক্তভোগি।
কিন্তু কাস্টমস কর্মকর্তাদের এই সীমাহীন ঘুষ–-দুর্নীতির কারণে ব্যবসায়ীদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়ে আসছে। এতে অনেক ব্যবসায়ী এই বন্দরটি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। ফলে সরকারের রাজস্ব আদায় আশঙ্কাজনক মাত্রায় কমে যাচ্ছে।