কুমিল্লায় জেলা ক্রীড়া সংস্থা ছা-ড়া গ্রাম বাংলা থেকে হারি-য়ে যাচ্ছে হাডুডু, ফুটবল

কুমিল্লা থেকে তরিকুল ইসলাম তরুন,

সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলাগুলো। প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে ছেলেমেয়েরা হয়ে উঠেছে অনেকটা যান্ত্রিক। একসময়  হাডুডু, কাবাডি, দাড়িয়াবান্ধা, গোল্লাছুট, ডাংগুলি, বৌ-বুড়িচি , কানামাছি ভৌ ভৌ,সাতার, নৌকা বাইচ খেলা গুলোতে মুখরিত ছিল গ্রামের মাঠ ও অলিগলি সহ বর্ষা মৌসুমে ভরা পানি নদীগুলোর মধ্যে, ছেলে, বুড়ো সকলের মন ছিলো ঐতিহ্যবাহী সে খেলায়। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েরা স্কুলের  বিরতিতে মাঠের মধ্যে এ গ্রামীন খেলাগুলো খেলত। স্কুল ছুটি শেষে বাড়ি ফিরে উঠান ও খোলা মাঠে চলতো উপকরণ বিহীন এসব গ্রামীণ খেলা। প্রযুক্তির উন্নতির ছোঁয়ায় এখন  মোবাইল গেমের কারণে, বিকালবেলা মাঠে দেখা যায় না কাউকে। মোবাইল গেমস ও টিভি কার্টোনের কারণে গ্রামীণ খেলাধূলার প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে না ছেলেমেয়েরা। তাই বিলুপ্ত হতে চলেছে গ্রামীন ঐতিহ্যবাহী এসব খেলা।

বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা গ্রামবাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্য এসব গ্রামীণ খেলাধুলা তো করেই না, এমনকি এসব খেলাধুলার নাম জানে কিনা সেটি এখন প্রশ্ন হয়ে দাড়িয়েছে। অথচ এক সময় এ সমস্ত খেলাধুলাকে বাদ দিয়ে বাঙালি ঐতিহ্যের পূর্ণতাকে কল্পনাও করা যেত না। বর্তমানে এসব ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার প্রচলন না থাকায় গ্রামীণ জনপদ থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে হাজার বছরের বাঙালী’র ঐতিহ্য। এমটি মনে হচ্ছে গতকাল বিকেলে বি পাড়ার গ্রামের ফুটবল মাঠের দৃশ্য দেখে।কুমিল্লা জেলা ক্রীড়া সংস্থা ছাড়া তেমন সক্রিয় ভূমিকা কোন গ্রামে চোখে পরে না

এক সময় কৃষকরা সারাদিন মাঠে কাজ করে ক্লান্তিবোধ করলেও পরন্ত বিকেলে সব বয়সের মানুষ খেলার মাঠে জড়ো হতো। মাঠে এসে করতালী আর শোরগোলে হাডুডু, কাবাডি, দাড়িয়াবান্ধা, গোল্লাছুট খেলা শুরু করতো। দলবদ্ধ এ সকল খেলা হারিয়ে যাওয়ার কারণে মানুষের মাঝে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও ভ্রাতৃত্ব বোধ হারিয়ে যাওয়ার পথে। পড়াশোনার পাশাপাশি বিকেলে খোলা মাঠে দস্যিপনা চলতো শিশু-কিশোরদের। যুবরা দলবেঁধে খেলত হা-ডু-ডু, দাঁড়িয়াবান্ধা, কাবাডিসহ বিভিন্ন গ্রামীণ খেলা। এমনকি সেখানে স্থান পেত বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেট, ফুটবলও। বর্তমান আধুনিক প্রযুক্তি কেড়ে নিয়েছে অতীতের ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলাকে। আর প্রজন্মকে ক্রমেই ঠেলে দিচ্ছে যান্ত্রিকতার দিকে। কেবল যান্ত্রিকতায় যদি সঙ্গী হতো তবুও মেধাবী এক ভবিষ্যতের প্রজন্মের পাওয়ার জোর সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু খেলাধুলার প্রতি অনাসক্তি কিশোর-যুবকদের ঠেলে দিচ্ছে ভয়ঙ্কর মাদকতার দিকে। ফলে ভবিষ্যত বাংলাদেশ হচ্ছে মেধাশূন্য।

এ বিষয়ে কথা হয় কুমিল্লা জজকোর্টের এডভোকেট আব্দুল আলীম খান এর সাথে তিনি বলেন, বর্তমানে গ্রামাঞ্চলেও খোলা জায়গা বা খেলার মাঠের স্বল্পতার কারণে অনেক গ্রামীণ খেলার বন্ধের পথে। ফলে বর্তমানে ভিডিও গেম, টেলিভিশন, মোবাইল ফোন ইত্যাদি গ্রামীণ খেলাধুলার সে স্থান দখল করে নিয়েছে। ছেলেমেয়েরা একটু সময় পেলেই মেতে ওঠে এসব যান্ত্রিক জিনিস নিয়ে। ফলে ছেলেমেয়েরা হয়ে পড়েছে অলস ও খিটখিটে মেজাজের। যান্ত্রিক এসব টিভি বা মোবাইল স্কিন দেখতে দেখতে তৈরি হচ্ছে চোখের ভিবিন্ন প্রদাহ। শাররীক কসরতের এ সকল খেলা না খেলার কারণে ছেলেমেয়েদের শাররীক ও মানুষীক  বিকাশ সঠিক ভাবে তৈরি হচ্ছেনা, ফলে তৈরি হচ্ছে আগামী দিনের অলস এক জাতী। তাই আমাদের গ্রামীণ খেলার দিকে সকলের নজর দেওয়া জরুরি।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *