বাবুল হোসেন,
পঞ্চগড় প্রতিনিধি :
জোটে বদলে যেতে পারে ভোটের হিসাবনিকাশ ছবিতে ব্যারিস্টার নওশাদ জমির, ইকবাল হোসাইন, সার্জিস আলম, নাজমুল হক প্রধান ও রাশেদ প্রধান
উত্তরের শুরুর জেলা পঞ্চগড়ে সংসদীয় আসন দুটি। এর মধ্যে দেশের ৩০০ আসনের এক নম্বর আসন হিসেবে তেঁতুলিয়া, আটোয়ারী ও সদর উপজেলা নিয়ে পঞ্চগড়-১ আসনটি নানান কারণে গুরুত্বপূর্ণ। জেলা সদরের এই আসন থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দল গোছাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ওয়ার্ড থেকে ইউনিয়ন এবং উপজেলা থেকে জেলা পর্যায়ে কমিটি গঠনে চলছে জোড় তৎপরতা। সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে নানান উদ্যোগ নিতে দেখা যায় বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের।
নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন পরবর্তীসময়ে পঞ্চগড়-১ আসনটি বিএনপির ঘাঁটি বলে পরিচিতি পায়। পঞ্চগড়-১ আসনে ১৯৯১ সালে বিএনপির তৎকালীন বর্ষীয়ান নেতা ও সাবেক স্পিকার মরহুম মির্জা গোলাম হাফিজ এবং ৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত আরেক বর্ষীয়ান নেতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মজাহারুল হক প্রধান সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বিএনপির হাতছাড়া হয় এই আসনটি। মাঝে ২০১৪ সালে জাসদের নাজমুল হক প্রধান সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও পরবর্তী দুটি সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আর হাতছাড়া করেনি আসনটি। ২০১৮ সালে আবারও আওয়ামী লীগের মো. মজাহারুল হক প্রধান এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নাঈমুজ্জামান ভূঁইয়া মুক্তা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এই আসনে আগামী নির্বাচনে জয়ী হতে নারী ভোটারের পাশাপাশি তরুণদের ভোট বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে বলে ধারণা স্থানীয়দের। এছাড়া নির্বাচনে না থাকলে আওয়ামী লীগের ভোটারদেরও একটা ভূমিকা থাকবে এই নির্বাচনে।
জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দেশের অন্য এলাকার মতো পঞ্চগড়ের আওয়ামী নেতাকর্মীরাও এলাকা ছাড়া। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পঞ্চগড়-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নূরুল ইসলাম সুজনসহ বেশ কিছু নেতাকর্মী একাধিক মামলায় জেলহাজতে। এর বাইরে প্রথম সারির নেতাসহ ছোটবড় নেতাদের এলাকায় দেখা যায় না। এছাড়া দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার পর স্বাভাবিক কারণেই এলাকায় দলটির কোনো কার্যক্রম বা তৎপরতা নেই। কর্মকাণ্ড নেই জাতীয় পার্টিরও। তবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীদের মাঠে সরব দেখা যায়। এছাড়া বাংলাদেশ জাসদ, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), জাকের পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলনসহ বিভিন্ন দলের পক্ষ থেকেও নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখতে নানান কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
বিএনপি-জামায়াত দুই দলই আশাবাদী
বিএনপির চ্যালেঞ্জ জামায়াত-ইসলামী আন্দোলন
পঞ্চগড়-১ আসনে গত বছরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ৪ লাখ ৩৬ হাজার ৯২৬। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ১৯ হাজার ৩৩৯ ও নারী ভোটার ২ লাখ ১৭ হাজার ৫৮৬ এবং তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ভোটার ছিলেন একজন। তবে সবশেষ হালনাগাদ ভোটার তালিকায় মৃত ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার পর বর্তমানে জেলার দুটি আসনে ভোটার বেড়েছে ২৯ হাজার ৬১৪। এদের মধ্যে পঞ্চগড়-১ আসনে ভোটার বেড়েছে ১৬ হাজার ৩৪৭। এদের মধ্যে তিন উপজেলা নিয়ে এ আসনে হিন্দু ভোটার রয়েছেন ৭৫ থেকে ৮০ হাজার এবং তরুণ ভোটার ৪০ থেকে ৪৫ হাজার। এই আসনে আগামী নির্বাচনে জয়ী হতে নারী ভোটারের পাশাপাশি তরুণদের ভোট বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে বলে ধারণা স্থানীয়দের। এছাড়া নির্বাচনে না থাকলে আওয়ামী লীগের ভোটারদেরও একটা ভূমিকা থাকবে এই নির্বাচনে।
Leave a Reply