February 23, 2025, 11:34 am
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহীঃ নিজে কাঁদলেন, সাবাইকে কাঁদিয়ে বিদায় নিলেন রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ আবুল হায়াত । মাত্র ৭ মাস ১০ দিনের কর্মস্থানে একজন কর্মকর্তা দলমত নির্বিশেষে সবার অন্তরে এতটা জায়গা করে নিতে পারে তাকে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না ।
রাত নেই, দিন নেই ছুটে গেছেন মানুষের বিপদে। দায়িত্বপালন করতে গিয়ে মৃত্যুর মুখামুখি হতে হয়েছে কয়েক বার। তবুও দায়িত্ব পালনে পিছপা হন নি। স্কুল কলেজ মাদ্রাসার কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন করেছেন। মসজিদ, মন্দির, স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানও তার উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে।শিক্ষক, শিক্ষার্থী, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী মুক্তিযোদ্ধা, গরীব,দুঃখী মানুষের কাজ করেছেন মনপ্রান দিয়ে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিরোধ, তাৎক্ষণিক গিয়ে সুন্দর সমাধান দিয়েছেন।
অফিস ও বাসা চত্বরে সাধারণ মানুষের ভিড়। শিক্ষক কর্মচারী, ছাত্র ছাত্রী, এনজিও কর্মী, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক কর্মীরাও এসেছেন উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। কারোরই মন ভালো নেই। কেউ কেউ কাঁদছেন। কারণ একটাই সবার প্রিয় ইউএনও এডিসি হয়ে চলে যাচ্ছেন। সবার চোখে যখন জল। কান্না আটকে রাখতে পারেন নি অনেকে।
উপজেলাবাসী যে কতটা তাকে ভালোবাসেন বিদায়বেলায় চোখের জলই তার বড় প্রমাণ।
গত বৃহস্পতিবার ২০ ফেব্রুয়ারি শেষ কর্মদিবসে সকাল থেকে গোদাগাড়ী উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ ছুটে এসেছেন বিদায় জানাতে। বিদায় বেলায় সকলেই চোখ ভিজিয়েছেন। যাদের সাথে কখনো হয়তো দেখা হয়নি এমন মানুষগুলোও ফোন করে আবেগে আপ্লুত কন্ঠে বিদায় জানিয়েছেন।
গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী আবুল হায়াত বলেন, বিদায় বেশ সুমধুর মাত্র ৭ মাস ১০ দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার, গোদাগাড়ী, রাজশাহী হিসেবে কর্মকাল। আজ ছিলো শেষ কর্মদিবস। পরবর্তী কর্মস্থল অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি), নাটোর জেলায়। আপনারা আসবেন ওখানে।
ভালো থাকুক আমার প্রাণের গোদাগাড়ী উপজেলার মাটি ও মানুষ। বিদায় বেলায় মানুষের যে ভালোবাসা পেলাম তা সারাজীবন আমার নিকট চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। আমি এই ভালোবাসায় সিক্ত। আমি আপনাদের ভালোবাসার কাছে ঋণী। আপনার সবাই ভাল থাকবেন, যে যেখান কর্মরত আছেন কোন সময় অন্যায় আবদারের মাথানত করবেন না জনগনের সেবা করবেন মনপ্রান দিয়ে। গরীব মানুষকে কখন খাটো করে দেখবেন না কেন না তাদের ঘামঝরা টাকা দিয়ে আপনার বেতন হয়। সবার সহযোগিতা চাই। আর যেখানেই থাকি নিজ দায়িত্ব যেন সঠিকভাবে পালন করতে পারি, সেই দোয়া চাই।
উপজেলার একাধিক ব্যক্তি বলেন, নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে তা পালনের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছেন। সে কারণে বিদায় বেলায় সাধারণ মানুষ তাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। আর ইউএনওর কান্নায় হৃদয় বিদারক পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
তারা আরও জানান, ইউএনওর বিদায় উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধিসহ সব পেশার মানুষ কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। আর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিন রাত পরিশ্রম করে সবার ভালোবাসার পাত্রে পরিণত হয়েছেনে তিনি। যার কারণে বিদায় বেলায় সবার সঙ্গে
মোঃ হায়দার আলী
নিজস্ব প্রতিবেদক,
রাজশাহী।