July 19, 2025, 10:50 pm
জেলা প্রতিনিধি, পঞ্চগড়:
পঞ্চগড়ে ঈদ উৎসব উপলক্ষে দুই শতাধিক শিশু-কিশোরদের নিয়ে হারিয়ে যেতে বসা বাংলার ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলার আয়োজন করেছে ষড়ঋতু-জগদল নামের একটি সংগঠন।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দিনব্যাপী পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাবেক গাড়াতি ছিটমহলের মফিজার রহমান ডিগ্রী কলেজ মাঠে গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচয় করে দিতেই এই শিশু-কিশোর ঈদ উৎসবের আয়োজন করা হয়।
উৎসবে গ্রামীণ খেলাধুলা ‘জোর-বাড়ি-ঘর,’ ‘রুমাল চুরি,’ ‘গুটিগোল্লা’ এবং ‘মা বলেছেন’ খেলার পাশাপাশি শিশু-কিশোরদের নিয়ে গঠিত ৪টি দলের তিনটি ফুটবল ম্যাচ এবং যুব ও তরুণ খেলোয়াড় নিয়ে গঠিত দুটি দলের ১টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়।
খেলায় অংশ নেওয়া ফাহিম ইসলাম নামে এক শিশু বলেন, আমি এইসব গ্রামীণ খেলা কোনদিন খেলিনাই। আজকে প্রথম রুমাল চুরি খেলা করলাম। অনেক ভালো লাগলো।
খেলায় অংশ নেওয়া মৌসুমি নামে এক কিশোরী বলেন, আমি এই গ্রামীণ খেলা গুলো মোবাইলে দেখছি। আজকে আমি এখানে এসে খেলায় অংশগ্রহণ করলাম। আমাদের গুটিগোল্লা খেলা হলো।
খেলা দেখতে আসা আব্দুল হাই বলেন, গ্রামীণ খেলাগুলো সচরাচর এখন আর দেখা যায় না। আকাশ সংস্কৃতি আর ইন্টারনেটের প্রভাবে তরুণ প্রজন্ম আজ ভুলতে বসেছে খেলাগুলোকে। আজকে নতুন করে খেলাগুলো দেখে আমি খুব আনন্দিত।
খেলা দেখতে আসা সহিদুল ইসলাম বলেন, মাঠে বসে খেলাগুলো উপভোগ করে অতীত স্মৃতিতে যেন ফিরে গিয়েছিলেন। এমন খেলা যেনো বারবার আয়োজন করা হয়।
মফিজার রহমান ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ নূর উল্লাহ বলেন, এই গ্রামীণ খেলাধুলা আয়োজন করায় সাবেক ছিটমহলের অবহেলিত শিশুদের মাঝে তারুণ্য সৃষ্টি হচ্ছে। এই খেলাধুলা মাধ্যমে তারা শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধুলা প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করছে। পাশাপাশি এলাকার মধ্যে বাল্যবিবাহ ও মাদক থেকে দূরে থাকতে পারতেছে।
ষড়ঋতু-জগদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, আমি এই এলাকায় ঘুরে দেখেছি শিশু-কিশোরা সব কিছুতেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সব সুযোগসুবিধা পাচ্ছে, কিন্তু খেলাধুলায় ক্রিড়া কালচারে এখনো অনগ্রসর রয়েছে। আমি আমার এই দ্বায় বদ্ধতা থেকে আমি এখানে গ্রামীণ খেলাধুলার আয়োজন করেছি। শিশুদের চেহারা দেখে বুঝা যাচ্ছে তারা অনেক পিছিয়ে আছে ক্রিড়া কালচারে। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সাথে সুবিধাভোগী শিশুদের বন্ধুত্ব করিয়ে দেওয়ার জন্যই আমার এই অনুষ্ঠান।