June 6, 2025, 10:56 am
হেলাল শেখঃ শিশুদের খাদ্য ও নকল পণ্যসহ জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ভেজাল-স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে দেশের কোটি কোটি জনগণ। ঢাকার আশুলিয়ার কাঠগড়া বেক টাইম স্পেশাল বিস্কুট কারখানাসহ সারাদেশে শিশুদের খাদ্যে ভেজাল, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বেকারী পণ্য তৈরি হচ্ছে। সেই সাথে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ভেজাল এবং উন্নতমানের ওষুধও মেয়াদ উত্তীর্ণ।
মঙ্গলবার (২ জুন ২০২৫ইং) জানা গেছ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়াধীন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কতর্ৃক ঢাকা মহানগর ও ঢাকার আশুলিয়াসহ সারা দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। অভিযানে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হলেও পুরোপুরিভাবে বন্ধ হচ্ছে না ভেজাল। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কতর্ৃক প্রদত্ত ক্ষমতাবলে ঢাকা মহানগরীর কদমতলী থানা এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন এই দপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক বিকাশ চন্দ্র দাস ও ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ আব্দুল জব্বার মন্ডল, তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান।
এ ছাড়াও ঢাকার বাইরে বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক ও জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালকের নেতৃত্বে বিভিন্ন বাজার তদারকি ও সচেতনতা মূলক ভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করেন তারা। তদারকিকালে চাল, পেঁয়াজ, ভোজ্য তেল, আদাসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য, বেকারী পণ্যসহ যৌক্তিক মূল্যে বিক্রয় হচ্ছে কি না, তা মনিটরিং করা হয়। এছাড়া পণ্যের মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা, মূল্য তালিকার সাথে বিক্রয় রশিদের গরমিল, পণ্যের ক্রয় রসিদ সংরক্ষণ না করা, অনিবন্ধিত ঔষধ ও পণ্য, নকল পণ্য, ওজনে কারচুপিসহ ভোক্তাস্বার্থ বিরোধী বিভিন্ন অপরাধে সারাদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়। উক্ত অভিযানে তদারকিকালে ওষুধ, চাল,পেঁয়াজ ও ভোজ্য তেলের মূল্য নিয়ে কারসাজি না করা এবং বাধ্যতামূলকভাবে পণ্যের ক্রয় রসিদ ও মূল্য তালিকা প্রদর্শনের বিষয়ে ব্যবসায়ীদেরকে সচেতন ও সতর্ক করা হয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, নিয়মতান্ত্রিক ও নৈতিকতার সাথে ব্যবসা পরিচালনাকারী সকল ব্যবসায়ীকে এ অধিদপ্তর সবসময় সাধুবাদ জানায়। ভোক্তা ও ব্যবসাবান্ধব একটি সুশৃঙ্খল বাজারব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য ব্যবসায়ীগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান এই কর্মকর্তা।
এর আগে গত (১ মার্চ ২০২২ইং) আশুলিয়ার জিরাবো এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বেক টাইম স্পেশাল বিস্কুট এর কারখানায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে শিশু খাদ্য, বেকারী পণ্যসহ বিভিন্ন পণ্য তৈরি করছেন। সেখানে ১৮ বছরের নিচে কিশোরদের কাজে নিয়ে তাদের দিয়ে কাজ করাচ্ছে। এ বিষয়ে সজীব ও মামুন নামের দুইজন ম্যানেজারের সাথে কথা বললে তারা বলেন, আমাদের এখানে এক দুইজন শিশু কাজ করছে, তারা নতুন আসছে। এই প্রতিষ্ঠানের মালিক আলমগীর হোসেন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি ঢাকার বাহিরে আছি। আশুলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গেলে বেকারী মালিককে পাওয়া যায়না। অনেকেই জানান, উক্ত ব্যাপারে আগে নিয়মিত অভিযান করলেও এখন প্রশাসন আগের মতো অভিযান চালাচ্ছেন না কেন জানিনা।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা সহকারী আব্দুল জলিল মন্ডল জানান, আমাদের লোকবল কম থাকায় অনেক সময় ঠিকমত অভিযান পরিচালনা করা সমস্যা হয়, আমরা চেষ্টা করছি নিয়মিত অভিযান করার জন্য। ঢাকা জেলা ৮ বার সেরা করদাতা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ্ব তানভীর আহমেদ রোমান ভুঁইয়া বলেন, খাদ্যে যারা ভেজাল করে তাদেরকে কঠিন সাজা দিলে আর এমন অপরাধ করবে না। সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী সাইফুল ইসলাম জয় বলেন, যারা খাদ্য পণ্যের ভেতরে ভেজাল করছে তারা দেশ ও জাতির শক্র, তাদেরকে আটক করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। উক্ত ব্যাপারে ধারাবাহিক ভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।##