পাইকগাছায় তীব্র শীত ও ঘনকুয়াশায় ব্যাহত স্বাভাবিক জীবনযাত্রা

ইমদাদুল হক, পাইকগাছা (খুলনা)।।
সারা দেশের বিভিন্ন জেলার উপর দিয়ে বয়ে যচ্ছে মৃদু ও মাঝারি ধরনের শৈতপ্রবাহ। তীব্রশীত ও ঘনকুয়াশার কারণে পাইকগাছাসহ উপকূলবাসীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। কয়েকদিন যাবৎ তীব্র শীত আর ঘনকুয়াশার প্রভাব অব্যাহত রয়েছে। গভীর রাত থেকে ঘন কুয়াশায় প্রকৃতি ঢাকা পড়ছে। ভোরবেলা যেন ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ে। ভোর যেন হয়েও হয়না। সূয্যের আলো দেখা যায় না। সকাল ৯ টার পর সূর্যের ক্ষিন আলো প্রকৃতির উপর আচড়ে পড়তে শুরু করে। ঘন কুয়াশার কারণে প্রতিদিনের কাজকর্ম কিছুটা দেরিতে শুরু হচ্ছে। এতে করে শ্রমজীবি মানুষের কাজ শুরু করতে দেরি হওয়ায় আয় রোজগার কম হচ্ছে। তীব্র শৈত প্রবাহের বিশেষ করে দরিদ্র ও শ্রমজীবি মানুষ বেশি দূর্ভোগ পোয়াচ্ছেন। আর শীতের বেলা ছোট হওয়ায় সাথে কাজ করে এগোনই যাচ্ছে না। সে কারণে স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে।

গ্রাম অঞ্চলে তীব্র কুয়াশার পাশাপাশি শহর অঞ্চলেও কুয়াশার প্রভাব পড়ছে। বিকেলের আলো থাকতেই কুয়াশা শুরু হচ্ছে। রাত বাড়তেই ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ে প্রকৃতি। রাত ১১ টার পর থেকে বৃষ্টি পড়ার মতো কুয়াশা পড়া গাছের পাতার পানি পড়তে থাকে সকাল পর্যন্ত। ঘন কুয়াশায় রাস্তায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। সকাল বেলা যানবাহন হেডলাইট চালিয়ে চলাচল করছে। নদীতে ট্রলার নৌকাসহ নৌযান চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। ঘন কুয়াশায় খেয়া পারাপারে যাত্রীরা বিড়ম্বনার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে তারা কর্মস্থানে পৌছাতে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। ঘন কুয়াশার প্রভাবে শিশু, বৃদ্ধরা স্বর্দি জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। শ্বাস কষ্টের রোগীদের কষ্ট বেড়ে যাচ্ছে। সব মিলিয়েই রোগ বালাই বাড়ছে। এ ব্যাপারে পাইকগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এর মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ ইব্রাহিম গাজী জানান, কুয়াশার মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের বের না হওয়া ভাল, গরম কাপড় ব্যবহার করতে হবে এবং ঠান্ডা পানিতে গোসল করা যাবে না। কুয়াশার মধ্যে গরম কাপড় ব্যবহার করে সাবধানে চলাচল করতে হবে।
কুয়াশার প্রভাবে শাক সবজিসহ কৃষি কাজ কর্মের উপর প্রভাব পড়েছে। কুয়াশার কারণে আলু ক্ষেত, পান ও বোরো বীজতলার কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে। পান গাছ থেকে পান হলুদ হয়ে ঝরে পড়ছে, এতে করে পান চাষীরা ক্ষতি শিকার হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো; একরামুল হেসেন জানান, ঘন কুয়াশায় শাক সবজির কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে। বোরো ধানের বীজতলার চারা বড় হয়ে যাওয়ায় তেমন একটা ক্ষতির সম্ভবনা নেই। তবে রোপনকৃত বোরো ক্ষেতের চারা সূর্যের আলো ঠিকমত না পাওয়ায় খাদ্য তৈরী করতে পারছে না। এতে করে চারা হলুদ বর্ণ ধারণ করতে পারে। এব্যাপারে কৃষকদের তীব্রশীতের মধ্যে বোরো চারা রোপন করতে নিষেধ করা হয়েছে শীত একটু কমলে বোরো আবাদ করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া উপজেলার বিভিন্ন ব্লকের চাষিদের কৃষি অফিসের মাধ্যমে কুয়াশার প্রভাব থেকে সবজি ক্ষেত ও বোরো ক্ষেত কুয়াশার প্রভাব থেকে রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন প্রকার পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *